সুরা জিন এর তাফসির – তাফসিরুল কুরান
সুরা জিন এর তাফসির – তাফসিরুল কুরান >> তিরমিজি শরিফের তাফসিরুল কোরআন অধ্যায়ের অন্যান্য সুরার তাফসীর পড়ুন >> সুরা জ্বীন আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
অধ্যায়ঃ ৪৪, অনুচ্ছেদ-৭০ঃ সুরা জিন এর তাফসির
৩২২৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জিনদেরকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] না কিছু [কুরআন] পাঠ করে শুনিয়েছেন আর না তাহাদেরকে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন। [বরং ঘটনা এই যে, একদিন] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার একদল সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে উকায নামক বাজারে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন। ইতোমধ্যে আকাশের সংবাদ শোনার বিষয়ে জিনদের জন্য বাধা হয়ে দাড়ায় এবং তাহাদের বিরুদ্ধে উল্কাপিন্ড নিক্ষিপ্ত হয়। অতঃপর শাইতান জিনেরা নিজেদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসলে তখন তাহাদের অপরাপর জিনেরা প্রশ্ন করে, কি বিষয়! তারা বলে, আকাশের সংবাদ সংগ্রহ করিতে আমাদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা হচ্ছে এবং আমাদের প্রতি উল্কাপিন্ড নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। তারা বলল, অবশ্যই নতুন কিছু ঘটার কারণে আমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধার সৃষ্টি হয়েছ। পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম সব জায়গায় তোমরা ঘুরে দেখ, কি ব্যাপার ঘটেছে যার কারণে তোমাদের ও আকাশের সংবাদের মাঝে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং পৃথিবীর পূর্ব হইতে পশ্চিম পর্যন্ত তারা তাহাদের আকাশের সংবাদের মাঝে বাধার কারণ বের করার জন্য বেরিয়ে পড়ল। যারা তিহামার উদ্দেশে বেরিয়েছিল তারা “নাখলা” নামক জায়গায় রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট হাযির হয়। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উকাযের বাজারে যাওয়ার পথে এখানে অবস্থান করছিলেন। সে সময় সাহাবীদেরকে নিয়ে তিনি ফাজরের নামায আদায় করছিলেন। জিনদের ঐ দলটি কুরআন মাজীদের তিলাওয়াত শুনতে পেয়ে গভীর মনোযোগের সাথে তা শুনে। তারা বলল, আল্লাহর ক্বসম! এইটা সেই জিনিস যা তোমাদের ও আকাশের খবরের মধ্যে বাধার কারণ ঘটিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, সে সময় তারা তাহাদের গোত্রে ফিরে গিয়ে বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এক বিস্ময়কর কুরআন শুনিয়াছি, আমাদেরকে যা কল্যাণের পথ দেখায়। তাই তার উপর আমরা ঈমান এনেছি। আর কখনো আমরা আমাদের প্রভুর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করব না। আল্লাহ তাআলা তাহাঁর নাবীর নিকট আয়াত অবতীর্ণ করেন [অনুবাদ]ঃ “আপনি বলুন, আমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, জিনদের একদল মনোযোগ সহকারে [কুরআন] শুনেছে”- [সূরা জিন ১]। এভাবে ওয়াহী দ্বারা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিনদের আলাপচারিতা প্রসঙ্গে জানানো হয়।
সহীহঃ বোখারি [হাঃ ৪৯২১], মুসলিম [হাঃ ২/৩৫, ৩৬]। একই সনদে ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে আরো বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ এটাও জিনদের কথা যা তারা তাহাদের গোত্রকে বলেছিল, “আল্লাহ তাআলার বান্দা যখন তাঁকে ডাকার জন্য দৃঢ়বদ্ধ হয় সে সময় তারা তার নিকট ভিড় জমায়”- [সূরা জিন ১৯]। আর যখন এই জিনেরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে নামায আদায় করিতে ও তাহাঁর সাহাবীদেরও তাহাঁর সঙ্গে নামায আদায় করিতে দেখে সে সময়েই তারা তাহাঁর প্রতি সাহাবীদের এ আনুগত্যে অবিভূত হয়। তারা তাহাদের সম্প্রদায়কে বলে, আল্লাহ তাআলার বান্দা যখন তাঁকে [আল্লাহ তাআলাকে] ডাকার জন্য দৃঢ়বদ্ধ হয় তখন তারা তার নিকট জড়ো হয়”। হাদীসটির সানাদ সহীহ। আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। সুরা জিন এর তাফসির – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৩২৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ঊর্ধ্ব জগতে জিনেরা যাতায়াত করত আকাশের সংবাদ সংগ্রহের জন্য। একটি কথা শুনতে পেলে তার সঙ্গে তারা নিজেদের পক্ষ হইতে আরো নয়টি কথা সংযুক্ত করত। যার কারণে সেই একটি কথা সত্য হত এবং বাকি নয়টি কথা হত মিথ্যা। তারপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নবূওয়াতপ্রাপ্ত হলে ঊর্ধ্ব জগতে তাহাদের উপবেশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। সুতরাং [জিনেরা] এ ব্যাপারটি তারা ইবলিসকে অবহিত করে। আর ইতোপূর্বে কখনো তাহাদের প্রতি উল্কাপিণ্ড নিক্ষিপ্ত হয়নি। ইবলিস তাহাদেরকে বলল, পৃথিবীতে অবশ্যই নতুন কিছু ঘটেছে, যার কারণে এই প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং ইবলিস তার দলকে প্রেরণ করে। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তারা দুটি পাহাড়ের মাঝামাঝিতে নামায আদায় করিতে দেখে। [ইমাম তিরমিজি বলেন,] আমার ধারণা হয় মুহাম্মাদ ইবনি ইয়াহইয়া বলেছেন, মাক্কায় [নামায আদায় করিতে দেখে]। তারপর তারা ইবলিসের সঙ্গে দেখা করে তাকে ব্যাপারটি জানায়। সে বলল, সেই নতুন ঘটনা এটাই যা দুনিয়াতে ঘটেছে।
আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। সুরা জিন এর তাফসির – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply