সুরা আল মুজাদালাহ তাফসির । তাফসিরুল কুরান

সুরা আল মুজাদালাহ তাফসির । তাফসিরুল কুরান

সুরা আল মুজাদালাহ তাফসির । তাফসিরুল কুরান >> তিরমিজি শরিফের তাফসিরুল কোরআন অধ্যায়ের অন্যান্য সুরার তাফসীর পড়ুন >> সুরা মুজাদালাহ আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ

অধ্যায়ঃ ৪৪, অনুচ্ছেদ-৫৯ঃ সুরা আল মুজাদালাহ তাফসির

৩২৯৯. সালামাহ্ ইবনি সাখ্‌র আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এমন এক পুরুষ, যাকে এত যৌনশক্তি দেয়া হয়েছে যা অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। রমাযান মাস এলে আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে যিহার করি, যাতে রমাযান মাসটা অতিক্রম হয়ে যায় এবং রাতে সহবাসের আশংকা হইতে বেঁচে থাকতে পারি। একই ধারাবাহিকতায় আমার দিনগুলো [সঙ্গমহীন] অতিক্রম হইবে এবং তাকে আমি ত্যাগও করিতে পারি না। এ পরিপ্রেক্ষিতে একদিন সে রাতের বেলা আমার সেবা করছিল, হঠাৎ তার কোন জিনিস আমার সম্মুখে উন্মুক্ত হয়ে গেলে আমি তার উপর ঝাপিয়ে পড়ি [সঙ্গম করি]। সকালে উপনিত হয়ে আমি আমার গোত্রের লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে তাহাদেরকে আমার বিষয়টি জানাই। আমি বললাম, আমাকে নিয়ে তোমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে চলো এবং আমার বিষয়টি তাঁকে জানাই। তারা বলল, না আল্লাহ্‌র ক্বসম! আমরা তা করিতে অপারগ। আমাদের মনে হচ্ছে যে, আমাদের প্রসঙ্গে কুরআনে আয়াত অবতীর্ণ হইবে কিংবা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের প্রসঙ্গে এরূপ মন্তব্য করবেন আমাদের আমাদের জন্য যা লজ্জার বিষয় হয়ে থাকিবে। বরং তুমি একাই যাও এবং যা তোমার উপযুক্ত মনে হয় তাই কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমি রওয়ানা হয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে গিয়ে উপস্থিত হলাম এবং তাঁকে আমার বিষয়টি জানালাম। তিনি বললেনঃ এ কাজ তুমি করেছ! আমি বললাম, এমন কাজ আমি করেছি। তিনি আবার বললেনঃ এ কাজ তুমি করেছ! আমি বললাম, এমন কাজ আমি করেছি। তিনি বললেনঃ এ কাজ তুমি করেছ! আমি বললাম, এমন কাজ আমি করেছি। আমি উপস্থিত। অতএব আল্লাহ্‌র বিধান আমার উপর কার্যকর করুন, আমি ধৈর্য ধারণ করব। তিনি বললেনঃ একটি দাসী মুক্ত কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আমার ঘাড়ের উপরাংশে আমার হাত দিয়ে আঘাত করে বললাম, না সেই সত্তার ক্বসম, আপনাকে যিনি সত্যসহ প্রেরণ করিয়াছেন! তাকে ছাড়া আমি আর কিছুর মালিক নই। তিনি বললেনঃ তাহলে ধারাবাহিকভাবে দুই মাস রোযা রাখ। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! যে বিপদ আমার উপর এসেছে তা তো এ রোযার কারণেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ষাটজন দরিদ্রকে আহার করাও। আমি বললাম, সেই সত্তার ক্বসম, আপনাকে সত্যসহ যিনি পাঠিয়েছেন! আজ রাতে আমরাই অভুক্ত ছিলাম, আমাদের কাছে রাতের খাবার ছিল না। তিনি বললেনঃ যে লোক যুরাইক্ব গোত্রের যাকাত আদায় করে, তার কাছে তুমি যাও এবং তাকে বল, তাহলে তোমাকে সে কিছু দিবে। তার এক ওয়াসাক এর মাধ্যমে তুমি ষাটজন মিসকীনকে আহার করাবে এবং বাকি যা থাকে তা তুমি ও তোমার পরিজনের জন্য খরচ করিবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আমি আমার গোত্রের কাছে প্রত্যাবর্তন করলাম এবং তাহাদেরকে বললাম, তোমাদের কাছে আমি পেয়েছি সংকীর্ণতা ও কুপরামর্শ, আর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট পেয়েছি প্রশস্ততা ও প্রাচুর্য। তিনি তোমাদের যাকাত আমাকে দান করার আদেশ দিয়েছেন। অতএব তা আমার কাছে তোমরা অর্পন কর। অতএব তারা আমার কাছে তা অর্পণ করে।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ [হাঃ ২০৬২]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। মুহাম্মাদ বলেন, আমার মতে সুলাইমান ইবনি ইয়াসার সালামাহ্‌ ইবনি সাখ্‌র-এর কোন বর্ণনা শুনেননি। তিনি আরো বলেন, তার নাম সালামাহ্‌ ইবনি সাখ্‌র, তবে সালমান ইবনি সাখ্‌র নামেও পরিচিত। এ অনুচ্ছেদে সালাবাহ্‌ [রাদি.]-এর কন্যা ও আওস ইবনিস সামিত [রাদি.]-এর সহধর্মিণী খাওলাহ্ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত রয়েছে। সুরা আল মুজাদালাহ তাফসির – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৩০০. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল : “ হে ঈমানদারগণ! তোমরা রাসূলের সাথে চুপি চুপি কথা বলার ইচ্ছা করলে তার পূর্বে সদাকা দেবে” [সূরা : আল-মুজাদালাহ-১২] , তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ এক দীনার নির্ধারণের ব্যাপারে তোমার কি মত? আমি বললাম , লোকদের সামর্থ্যে কুলাবে না। তিনি বললেনঃ তাহলে অর্ধ দীনার? আমি বললাম , তাও তাহাদের সামর্থ্যে কুলাবে না। তিনি বললেনঃ তাহলে কত নির্ধারণ করা যায়? আমি বললাম , এক বার্লির দানা পরিমাণ [সোনা]। তিনি বললেনঃ তুমি খুব কম নির্ধারণকারী। রাবী বলেন , তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় : “ তোমরা কি চুপে চুপে কথা বলার পূর্বে সদাকা প্রদানকে কষ্টকর মনে কর?” [সূরা : আল-মুজাদালাহ-১৩] আলী [রাদি.] বলেন , আমার কারণে আল্লাহ তাআলা এই উম্মতের জন্য বিধানটি হালকা [বাতিল] করেন।

সনদ দুর্বল। সুরা আল মুজাদালাহ তাফসির – এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৩০১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ইয়াহূদী নাবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীগণের কাছে এসে বলল, “আস-সামু আলাইকুম” [তোমাদের মরণ হোক]। লোকেরা তার উত্তর দিল। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ সে কী বলেছে তোমরা কি তা বুঝতে পেরেছ? তারা বলেন, আল্লাহ তাআলা ও তাহাঁর রাসূল ভালো জানেন। হে আল্লাহ্‌র নাবী! সে সালাম দিয়েছে। তিনি বললেনঃ না, অথচ সে এই এই কথা বলেছে। আমার কাছে তাকে তোমরা ফিরিয়ে নিয়ে আস। অতঃপর তারা তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসলে তিনি বললেনঃ তুমি কি বলেছ আস-সামু আলাইকুম? সে বলল, হ্যাঁ। নাবী [সাঃআঃ] সে সময় বললেনঃ তোমাদেরকে আহলে কিতাবের কেউ সালাম করলে তোমরা বলবে, “আলাইকা মা কুলতা” [যা তুমি বলেছ তোমার উপর তা-ই বর্ষিত হোক]। তারপর এ আয়াত তিনি পাঠ করেন[অনুবাদ]-ঃ “যখন এরা তোমার কাছে আসে তখন তোমাকে এরূপ কথা দ্বারা অভিবাদন করে যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তোমাকে অভিবাদন করেননি”-[সুরা মুজাদালাহ্ ৮]।

সহীহঃ ইরওয়া [হাঃ ৫/১১৭], মুসলিম আয়াতের উল্লেখ ব্যতীত। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সুরা আল মুজাদালাহ তাফসির – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply