সূরা আল মুমিনুন তাফসীর আল কোরআন

সূরা আল মুমিনুন তাফসীর আল কোরআন

সূরা আল মুমিনুন তাফসীর আল কোরআন >> তিরমিজি শরিফের তাফসিরুল কোরআন অধ্যায়ের অন্যান্য সুরার তাফসীর পড়ুন >> সুরা মু’মিনুন আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ

অধ্যায়ঃ ৪৪, অনুচ্ছেদ-২৪ঃ সূরা আল মুমিনুন তাফসীর

৩১৭৩. আবদুর রহমান ইবনি আবদুল কারী [রঃ]হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ আমি উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর উপর যখন ওয়াহী অবতীর্ণ হত সে সময় তাহাঁর মুখমণ্ডলের নিকট হইতে মৌমাছির আওয়াজের মত গুনগুন আওয়াজ শোনা যেত। একদিন তাহাঁর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হল। আমি কিছুক্ষন প্রতীক্ষা করলাম। তাহাঁর উপর হইতে ওয়াহীর বিশেষ অবস্থা সরে গেলে তিনি কিবলামুখী হয়ে তাহাঁর দুই হাত তুলে দুআ করলেনঃ “হে আল্লাহ্‌! আমাদেরকে বেশি দান কর, আমাদেরকে কম দিও না, আমাদেরকে সম্মান ও মর্যাদা দাও, আমাদেরকে লাঞ্ছিত করো না, আমাদেরকে দান কর, বঞ্চিত করো না, আমাদেরকে অগ্রগামী কর, আমাদের উপর অন্য কাউকে অগ্রগামী করো না, আমাদেরকে সুপ্রসন্ন কর এবং আমাদের উপর সুপ্রসন্ন থাক।” তারপর তিনি বললেনঃ আমার উপর এমন দশটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে, যার মানদণ্ডে কেউ কৃতকার্য হলে সে জান্নাতে যাবে। তারপর তিনি “কাদ আফলাহাল মুমিনূন” হইতে শুরু করে দশটি আয়াত তিলাওয়াত করেন।

জঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [২৪৯৪] মুহাম্মাদ ইবনি আবান-আবদুর রাযযাক হইতে তিনি ইউনুস ইবনি সুলাইম হইতে তিনি ইউনুস ইবনি ইয়াযীদ হইতে তিনি যুহরী [রঃ]হইতে এই সূত্রে উক্ত মর্মে একই রকম হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেনঃ পূর্ববর্তী সূত্রের তুলনায় এই সনদসূত্রটি অনেক বেশি সহীহ। আমি ইসহাক ইবনি মানসূরকে বলিতে শুনিয়াছি, আহমাদ ইবনি হাম্বল, আলী ইবনিল মাদীনী ও ইসহাক ইবনি ইবরাহীম-আবদুর রাযযাক হইতে তিনি ইউনুস ইবনি সুলাইম হইতে তিনি ইউনুস ইবনি ইয়াযীদ হইতে তিনি যুহরী [রঃ]সূত্রে এই হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। যিনি প্রথমে আবদুর রাযযাকের নিকট এ হাদীস শুনেছেন তিনি ইউনুস ইবনি সুলাইম-এর পরে ইউনুস ইবনি ইয়াযীদের উল্লেখ করিয়াছেন এবং কিছু রাবী ইউনুস ইবনি ইয়াযীদের উল্লেখ করেননি। সুতরাং যারা ইউনুস ইবনি ইয়াযীদের উল্লেখ করিয়াছেন তাহাদের রিওয়ায়াতই অনেক বেশি সহীহ। আর আবদুর রাযযাক কখনও তার উল্লেখ করিয়াছেন এবং কখনও করেননি। হাদীসটি মুরসাল। পূর্বের অনুরূপ দুর্বল।  সূরা আল মুমিনুন তাফসীর এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩১৭৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাযর এর মেয়ে রুবাই [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] এর সামনে উপস্থিত হলেন। উক্ত মহিলার পুত্র হারিসাহ ইবনি সুরাকাহ বদরের যুদ্ধে অদৃশ্য তীরের আঘাতে শহীদ হন। তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিলেন, আমাকে হারিসাহ এর অবস্থা সম্পর্কে বলুন। সে যদি কল্যানের অধিকারী হয়ে থাকে তবে আমি পুন্যের আশাবাদী থাকব এবং ধৈর্য ধারন করবো। আর সে যদি কল্যাণ লাভ না করে থাকে তবে আমি তাহাঁর জন্য দুআ করিতে আপ্রান চেষ্টা করবো। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হে হারিসাহর মা! জান্নাতের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর উদ্যান রয়েছে। তোমার ছেলে সু উচ্চ উদ্যান জান্নাতুল ফেরদাউদ লাভ করেছে। ফিরদাউস হল জান্নাতের উচ্চ ভুমি, জান্নাতের কেন্দ্রভূমি এবং সর্বশ্রেষ্ঠ উদ্যান।

সহীহঃ সহীহাহ [১৮১১, ২০০৩], মুখতাসারুল উলুবি [৭৬], বোখারি। আবু ঈসা বলেন, হাদিসটি হাসান সহীহ।  সূরা আল মুমিনুন তাফসীর এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৭৫. রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর স্ত্রী আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে এই আয়াত প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলামঃ “তারা যা কিছুই দান করে তাতে তাহাদের অন্তর প্রকম্পিত থাকে”-[সূরা মূমিনূন ৬০]। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, এরা কি মদখোর ও চোর? তিনি বললেনঃ হে সিদ্দীকের মেয়ে! না এরা তা নয়, যারা নামাজ আদায় করে, রোযা রাখে, দান-খয়রাত করে এবং মনে মনে এই ভয় পোষণ করে যে, তাহাদের পক্ষ হইতে এগুলো কবুল করা হল কি না? এরাই “কল্যাণের কাজ দ্রুত শেষ করে এবং তাতে অগ্রগামী হয় “- [সূরা মূমিনূন ৬১]।

সহীহঃ ইবনি মা-যাহ [৪১৯৮] আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি আব্দুর রহমান ইবনি সাঈদ- আবু হাযিম হইতে, তিনি আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে, তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে এই সূত্রেও একই রকম বর্ণিত আছে।  সূরা আল মুমিনুন তাফসীর এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৭৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] “তারা জাহান্নামে থাকিবে বীভৎস চেহারায়” [সূরাঃ আল-মুমিনুন- ১০৪] আয়াত প্রসঙ্গে বলেনঃ আগুন তাহাদেরকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ঝলসিয়ে দিবে। ফলে তাহাদের উপরের ঠোঁট কুঞ্চিত হয়ে মাথার মাঝখানে পৌঁছে যাবে। আর নীচের ঠোঁট এত ঢিলা হয়ে যাবে যে, তা নাভী পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।

জঈফ, ২৭১৩ নং হাদীস পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব। সূরা আল মুমিনুন তাফসীর  এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “সূরা আল মুমিনুন তাফসীর আল কোরআন”

Leave a Reply