সিলসিলা সহিহা হাদিস -নাসিরুদ্দীন আলবানী রহঃ
সিলসিলা সহিহা হাদিস -নাসিরুদ্দীন আলবানী রহঃ >> সিলসিলা সহিহা হাদিস মুল সুচিপত্র দেখুন
অদ্ধায়-১ঃ উত্তম চরিত্র, অনুকম্পা ও (আত্মীয়তার) সম্পর্ক বজায় রাখা প্রসংগ
১- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আনাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুল (সাঃআঃ) যুবায়ের ও আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃআঃ)- এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন রচনা করে দেন।
(আস্-সহীহাহ-৩১৬৬) হাদিসটির মান সহিহ। আল আদাবুল মুফরাদ হাদিস নং ৫৬৮ (ইফা. ঢাকা হা. ৫৭০) বাইহাক্বী তাহাঁর আস-সুনান’ -এ ৬/২৬২ নং। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদিসটি সহীহ্ মুসলিম ও মুস্তাদরাক হাকিমের শর্তে সহীহ্। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ মাসউদ বদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবূ মাসউদ বদরী (রাঃআঃ) হইতে মারফূ সূত্রে বর্ণিত। পূর্ববর্তী নাবুওয়াতের বাণীসমূহ হইতে মানুষেরা সর্বশেষ যা পেয়েছে তা হলো যখন তোমার লজ্জা-শরম নেই তখন তুমি যা ইচ্ছা তা-ই কর। (আস-সহীহাহ-৬৮৪)
হাদিসটির মান সহিহ। ইবনু আকাসীর তাহাঁর তারীখে দামেশ্ক’-এ ইবনু মাসউদ (রাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। মুনাভী (রাহিমাহুল্লাহ) ফয়যুল ক্কাদীর’ এ বলেনঃ “এর সানাদটি যঈফ। কেননা এর (সানাদে) ফাতহুল মিসরী বর্ণনাকারী যঈফ। কিন্তু এর সাক্ষ্য রয়েছে ইমাম বায়হাক্বী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর “শু’আবুল ঈমানে”। তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) ইবনু মাসউদ (রাঃআঃ) থেকে উক্ত শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৩- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ কা’ব ইবনু উজহার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী কারীম (সাঃআঃ) কা’বকে দেখিতে না পেয়ে তাহাঁর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সাহাবীগণ বলিলেন, তিনি অসুস্থ। অতঃপর মহানবী (সাঃআঃ) হেঁটে তার নিকট গেলেন। যখন তাহাঁর কাছে গিয়ে পৌঁছলেন, তখন বললেনঃ হে কা’ব! সুসংবাদ গ্রহণ কর। (তা শুনে) তার মা বলিলেন, হে কাব! তোমার জন্য জান্নাতের অভিনন্দন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ আল্লাহর (ফায়সালার) ব্যাপারে এই তাড়াহুড়াকারিণী কে? সে (কা’ব) বলিল,ইয়া রাসুলুল্লাহ! উনি আমার মা’। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, হে কা’বের মা! তুমি কিভাবে জানবে? হয়ত কা’ব এমন উক্তি করেছে যা তার জন্য সমীচীন ছিল না। অথবা এমন ব্যাপারে নীরব ছিল যা তার জন্য ক্ষতির কারণ হত না। (আস্-সহীহাহ-৩১০৩)
হাদিসটি হাসান। আল্লামা হায়ছামী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এর সানাদ হাসান (মাজমাউয যাওয়ায়েদ- ১০/৩১৪০০)। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৪- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আয়িশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী কারীম (সাঃআঃ) বলেনঃ অতি ঝগড়াটে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট ব্যক্তি। (আস্ সহীহাহ-৩৯৭০)
হাদিসটির মান সহিহ। হাদিসটি আয়িশা (রাঃআঃ) মারফু’ সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। আর ইমাম বুখারী তাহাঁর “সহীহ বুখারি” হা. ৪৫২৩, ফাতহুল বারী হা. ৭১৮৮; সহীহ মুসলিম- ৮/৫৭; তার -এর(১/৮১) তার কিতাবের ২৭৩; (১২৪৩) তিরমিযী হা. ২৯৭২; নাসাঈ- ২/৩১১ (হা. ৫৪২৩); ইবনু হিব্বান হা. ৫৬৬৭; বায়হাক্বী-১০/১০৮; বায়হাক্বীর আল-আসমা ওয়াস-সিফাত’ হা. ৫০১; আহমাদ ৬/৫৫, ৬৩ ২০৫; মিশকাত (এমদাদিয়া লাইব্রেরী, ঢাকা) ৭/৩৫৮৯। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলেনঃ তোমরা জান (চোগলখুরী) কী? তারা (সাহাবীগণ) বললেনঃ আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসুলই (তা) সঠিকভাবে অবগত রয়েছেন। রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ (তা হলো) বিশৃংখলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একের কথা অন্যের নিকট লাগানো। (আস্-সহীহাহ-৮৪৫)
হাদিসটি হাসান। আল আদাবুল মুফরাদ হা. ৪২৫ (ইফা. ঢাকা হা. ৪২৭; সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ হা ৩২৭), ত্বহাবী তাহাঁর “শরহু মুশকিলিল আছার” -এ ৩/১৩৯; সুনানে বায়হাক্বী- ১০/২৪৬-৪৭।
আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ “হাদিসটির সানাদ হাসান এবং এর সমস্ত বর্ণনাকারী ছিক্বাহ।” তাছাড়া হাদিসটির আরো সাক্ষ্য থাকার কথা তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৬- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ মুহাম্মাদ ইবনু জিহাদাহ হইতে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ ইবনু জিহাদাহ বনী আনবারের এর বন্ধুর নিকট থেকে বর্ণনা করেন। আর তিনি তাহাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহাঁর উপাধি ছিল, আবুল মুনতাফিক। তিনি বলেন, আমি মক্কায় গিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে (সাহাবীগণ) বললেনঃ তিনি আরাফায় অবস্থান করছেন। আমি সেখানে গেলাম। অতঃপর তাহাঁর নিকট যেতে চাইলে সাহাবীগণ আমাকে বাধা প্রদান করিলেন। (এটা দেখে) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তাকে ছেড়ে দাও (আসতে দাও)। তখন আমি তাহাঁর নিকটে গেলাম। (আলোচনার পর) যখন তাহাঁর উট ও আমার উটের ঘাড় পরস্পর হইতে বিচ্ছিন্ন হইতে লাগল। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন বিষয় সম্পর্কে অবহিত করুন যা আমাকে আল্লাহর আযাব থেকে দূরে রাখবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (উত্তরে) তিনি বললেনঃ (ক) আল্লাহর ইবাদাত করো (কোন কোন বর্ণনায় (আরবি)এর স্থানে (আরবি) ব্যবহার হয়েছে।) তাহাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না। (খ) ফরজ সালাতসমূহ আদায় কর। (গ) ফরজ যাকাত আদায় কর। (ঘ) রামাযানের রোজা পালন কর। (ঙ) হাজ্জ ও উমরাহ পালন কর। (চ) মানুষের সাথে ঐরূপ আচরণ কর, যেমন আচরণ তাহাদের নিকট থেকে তুমি পেতে পছন্দ কর। একইভাবে তাহাদের সাথে এরূপ আচরণ পরিহার কর; যেরূপ আচরণ তাহাদের পক্ষ থেকে তুমি অপছন্দ করে থাক। (আস্-সহীহাহ- ৩৫০৮)
হাদিসটির মান সহিহ। ইমাম তাবারানী তার -এর (৪/১৬) পৃষ্ঠা হা. ৩২২২। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এছাড়া আরো বর্ণনা করিয়াছেন সহীহার হা (৩/১৩৭৭)। বিভিন্ন ভিত্তিতে হাদিসটিকে সহীহ্ গণ্য করা হয়েছে। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৭- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে প্রশ্ন করা হলো, সর্বোত্তম মানব কে? তিনি বললেনঃ যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু (সেই সর্বোত্তম মানব)। সাহাবীগণ বলিলেন, আমরা এ ব্যাপারে প্রশ্ন করিনি। তিনি (রাসুলুল্লাহ) বলিলেন, সর্বোত্তম মানব ইউসুফ আলাইহিস সালাম যিনি আল্লাহর নাবী, আবার নাবীর পুত্র অনুরুপভাবে তাহাঁর পিতাও নাবীর পুত্র। তাহাঁর দাদা আবার খালিলুল্লাহ (ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম) -এর পুত্র। সাহাবীগণ আরজ করিলেন, আমরা এ ব্যাপারেও প্রশ্ন করিনি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তবে আরবের সম্ভ্রান্তদের (মর্যাদার উৎস বা আকর) সম্পর্কে জানতে চাও? মানুষ সম্ভ্রান্ত (মর্যাদার আকর) জাহেলী যুগের সম্ভ্রান্তগণ ইসলামী যুগেও সম্ভ্রান্ত যদি তারা বিদ্যায় অগ্রগামী হয় (অর্থাৎ, ঈলম ও আমালে প্রাবল্যতা লাভ করে)। (আস্-সহীহাহ/৩৯৯৬)
হাদিসটির মান সহিহ। হাদিসটি আবূ হুয়ায়রা (রাঃআঃ) মারফূ’ সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। হাদিসটির শায়খাইনের শর্তে সহীহ্। হাদিসটি ইমাম দারেমী তার -এর হা. ২২৩, সহীহ্ বুখারী হা. ৩৩৫৩, ৩৪৯০ এবং সহীহ মুসলিম- ৭/১০৩; হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৮- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃআঃ) থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণিত; তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ। (আস্-সহীহাহ- ৭৬৯)
হাদিসটির মান যঈফ। তাবারানী তাহাঁর “আল-আওসাত” -এ (৬/১৮), আত্-তারগীব (মুহাম্মাদ তামির বলেন, “হাদিসটি যঈফুন জিদ্দান (আত্-তারগীব দারু ইবনে রজব, মিসর) ৩/৭ পৃষ্ঠা; হা ৩০১৯) আত-তারগীব (ইফা. ঢাকা) ৩/১১৮ পৃষ্ঠা। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটির সানাদকে যঈফ বলেছেন। (যঈফ আত্-তারগীব-২/১২৪৫ নং, আয-যঈফাহ- ৫/৫৩৬৯ নং) তিনি সহীহাতেও যঈফ বলার সাথে সাথে অপর একটি বর্ণনা সম্পর্কে বলেছেনঃ ইবনু জারীর ও আবাদ বিন হুমায়িদ ক্বাতাদাহ থেকে অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন, অতঃপর লিখেছেন- (এটি হাসান মানে উত্তীর্ণ)।
শেষে লিখেছেনঃ হাদিসটি (সূরা আন-নিসা- ১) আয়াতের ব্যাখ্যা করে। (আস্-সহীহাহ্ হা. ৮৬৯) অবলম্বনে। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
৯- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ দারদা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবূ দারদা (রাঃআঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, মিযানে (কিয়ামাত দিবসে পাপ-পুণ্য মাপার পাল্লায়) সর্বাপেক্ষা ভারী বস্তু হলো, উত্তম চরিত্র। (আস্-সহীহাহ-৮৭৬)
হাদিসটির মান সহিহ। হাদিসটি আবূ দারদা (রাঃআঃ) মারফূ’ সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। হাদিসটি ইমাম ইবনু হিব্বান তার সহিহা-এর হা. (২/৪৮১)। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
১০- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর এক সাহাবী হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে বলিলেন, আমাকে এমন কতিপয় বাক্য সম্পর্কে অবহিত করুন যে অনুযায়ী আমি জীবন-যাপন করিতে পারি। অধিক কিছু বলবেন না, যার দরুণ আমি তা ভুলে যাই। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ কর। লোকটি পুনরায় প্রশ্ন করলে (আবার উক্ত বাক্যের প্রার্থনা করলে) তিনি বলিলেন, ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ কর। (আস্-সহীহাহ- ৮৮৪)
হাদিসটির মান সহিহ। হাদিসটি (আরবি)-এর সূত্রে বর্ণিত। হাদিসটির ইসনাদ সহীহ্। সানাদের (আরবি) হলেন আর (আরবি) হলেন হাদিসটি ইমাম আহমাদ তার -এর হা. ২৩৪৬৮ ও ২৩১৭১ এ (আরবি) -এর সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
১১- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ রবিয়াহ আসলামী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর খিদমাত করতাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে একখণ্ড জমি প্রদান করেন এবং আবূ বকর (রাঃআঃ)-কে একখণ্ড জমি প্রদান করেন। এক ফলবান খেজুর গাছ নিয়ে আমাদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। আবূ বাকর বলেন, গাছটি আমার সীমানাতে রয়েছে। আর আমি বললাম, গাছটি বরং আমার সীমানায় পড়েছে। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা (বাদানুবাদ) চলল। আবূ বকর (রাঃআঃ) আমাকে এমন কথা বলিলেন, যা আমার অপছন্দ হল এবং তিনি লজ্জিত হলেন। তিনি আমাকে বলিলেন, হে রাবিয়াহ আমার প্রতি ঐরূপ কথা (যেমন আমি বলেছি) ফিরিয়ে দাও, যেন তা বদলা (প্রতিশোধ) হয়ে যায়। আমি বললাম, আমি এমন করব না (অর্থাৎ, ঐরূপ কথা বলব না)। আবু বকর (রাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, তুমি তা বল। অন্যথায় আমি তোমার বিপক্ষে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সাহায্য নিব। আমি বললাম, আমি তা করব না।
তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, আবূ বকর (রাঃআঃ) জমি ছেড়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট গেলেন। আমিও তাহাঁর পিছনে পিছনে চললাম। তখন আসলাম গোত্রের মানুষজন আসলো। তারা বলিল, আল্লাহ্ তায়ালা আবূ বকর (রাঃআঃ)-এর উপরে রহম করুন। তিনি (আবূ বকর (রাঃআঃ)) কোন ব্যাপারে আপনার বিপক্ষে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সাহায্য প্রার্থনা করছে। আর তিনি আপনাকে কী বলেছে? আমি বললাম, আপনারা জানেন না ইনি কে? (অর্থাৎ তাহাঁর মর্যাদা কত অধিক) ইনি আবূ বাকর সিদ্দীক। তিনি দুজনের দ্বিতীয়জন (অর্থাৎ হিজরাতকালে রাসুল (সাঃআঃ)-এর গুহায় অবস্থানকালের সঙ্গী) তিনি মুসলমানদের মর্যাদাবান ব্যক্তি। তোমরা তার বিপক্ষে আমাকে সাহায্য করার ব্যাপারে সাবধান হও! তিনি দেখলে রাগান্বিত হইবেন (অর্থাৎ, তোমরা আমাকে সাহায্য করা হইতে বিরত থাক) এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকটে গেলে তিনিও তাহাঁর রাগের দরুণ রাগান্বিত হইবেন। আর তাঁদের রাগান্বিত হওয়ার কারণে আল্লাহ্ তায়ালাও রাগান্বিত হইবেন। ফলে রাবিয়াহ ধ্বংস হইবে। তারা (গোত্রের লোকেরা) বলিল, আপনি আমাদের কী করিতে বলছেন? তিনি (রাবিয়াহ) বলিলেন, তোমরা ফিরে যাও। আবু বকর (রাঃআঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকটে গেলেন। আমি একাকী তাহাঁর পিছু পিছু চলতে লাগলাম। তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে গিয়ে ঘটনাটি আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার দিকে মাথা উঠিয়ে বলিলেন, হে রাবিয়াহ! তোমার ও তোমার বন্ধুর কী হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এমন এমন হয়েছে। তিনি (আবূ বাকর) আমাকে এমন এক কথা বলেছেন যা আমি অপছন্দ করি। তিনি আমাকেও ঐরূপ কথা বলিতে বলেন, যেন তা বদলা (প্রতিশোধ) হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ ঠিক আছে। তুমি তার প্রতিশোধ নিও না বরং তুমি বল, হে আবূ বাকর! আল্লাহ্ তোমাকে ক্ষমা করুন। হে আবূ বাকর আল্লাহ্ তোমাকে ক্ষমা করুন। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেনঃ আবূ বকর (রাঃআঃ) কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলেন। (আস্-সহীহাহ- ৩২৫৮)
হাদিসটির মান সহিহ। আহমাদ- ৪/৫৮-৫৯, তাবারানী আল-মুজামুল কাবীর’ – ৫/৫৮ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ৪৫৭৭।
শুআয়িব আল-আরনাউত বলেনঃ হাদিসটি আল-মুবারক বিন ফাযালাতের গোপনীয়তার কারণে যঈফুন জিদ্দান। তিনি ব্যাপকভাবে তাদলীস করিতেন। যা তাদলীসের ক্ষেত্রে খুবই নিকৃষ্ট। আর তিনি আনআনাহ করিয়াছেন। (তাহক্বীক্বকৃত মুসনাদে আহমাদ- ৪/১৬৬২৭) উল্লেখ্য যে, হাদিসটি আন শব্দে বর্ণিত হয় নি। বরং হাদ্দাছানা শব্দে বর্ণিত হয়েছে। এ কারণে আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ “এর সানাদ সহীহ্ ও বর্ণনাকারীগণ ছিক্বাহ। নিশ্চয় এতে ইবনু ফাযালাতের আনআনাহ’র ভয় থাকে। এ পর্যায়ে সঠিকভাবেই বর্ণনা এসেছে। তাছাড়া সবাই ছিক্বাহ। ইমাম আবূ যুরআহ বলেনঃ যখন হাদ্দাছানা বলে তখন সে ছিক্বাহ। হায়ছামী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ হাদিসটি হাসান (মাজমায়ুয যাওয়ায়িদ- ৯/৪৫)। (আস্-সহীহাহ্-৩১৪৫) হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
১২- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)- কে প্রশ্ন করা হলো, কোন ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেনঃ সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী (-ই সর্বোত্তম ব্যক্তি)। (আস্-সহীহাহ-১৮৩৭)
হাদিসটির মান যঈফ। তাবারানী হাদিস নং ১৩৩২৬। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদিসটির মান যঈফ। কেননা, ফারওয়াতা বিন ক্বায়িস ও নাফি’ বিন আব্দুল্লাহ মাজহুল (অজ্ঞাত)। কিন্তু হাদিসটির সাক্ষ্য রয়েছে ইবনু আমর এর মারফূ হাদীসে ইমাম বুখারী আল আদাবুল মুফরাদে’ হা. ২৭১ (ইফা. ঢাকা হা. ২৭২; সহীহ্ আল আদাবুল মুফরাদ হা. ২০৫) এবং ইমাম মুসলিম তাহাঁর সহীহাতে হা. ৬১৭৭ উল্লেখ করিয়াছেন। (আস্-সহীহাহ- ১/২৮৬) হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
১৩- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ উসামা ইবনু শারীক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা নাবী কারীম (সাঃআঃ)-এর নিকট এমনভাবে বসে ছিলাম মনে হয় আমাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে। আমাদের কেউই কোন কথা বলছিল না। হঠাৎ কিছু মানুষ এলো এবং বলিল, আল্লাহর নিকট কোন্ বান্দা সবচেয়ে প্রিয়? রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ যে সবচেয়ে বেশি চরিত্রবান (সে-ই আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় বান্দা)। (আস্-সহীহাহ- ৪৩২)
হাদিসটির মান সহিহ। হাদিসটি উসামা ইবনু শারীক- এর সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। হাদিসটি ইমাম সুয়ূতী তাহাঁর আল-জামেউস সগীর’ -এর হা. ১৭৯ এ ইমাম তাবারানীর সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। ইমাম আলমুনাইয়্যু তাহাঁর ফাইজুল ক্বাদীর’-এ রিওয়ায়াত করিয়াছেন। আল্লামা সুয়ূতী তাহাঁর আল-জামেউস সগীর’ -এ (হাদিস নং ১৭৯) তাবারানীর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
১৪- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ হাসান হইতে বর্ণিতঃ
হাসান থেকে মুরসাল সানাদে বর্ণিত; তোমরা জিহ্বা সংযত কর। হে মুয়াজ! তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক। জিহ্বাই মানুষকে অধোমুখী করে। (অর্থাৎ জিহ্বা তথা বাকচারিতার দরুণই মানুষ অধিকাংশ সময় বিপদে পড়ে)। (আস্-সহীহাহ- ১১২২)
হাদিসটির মান সহিহ। আল্লামা সুয়ূতী তাহাঁর জামেউস সগীর-এ (হা. ২০৫) আল-খারায়িতী’র মাকারিমুল আখলাক্ব’- এর সূত্রে হাসান বসরী থেকে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন। বিভিন্ন হাদিসের সম্মিলিত বর্ণনা ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে হাদিসটিকে আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) সহীহ্ বলেছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
১৫- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
যখন তোমাদের খাদেম (কর্মচারী বা সেবক) তোমাদের কারোর জন্য খাবার নিয়ে আসে, যে (খাবার প্রস্তুত করিতে গিয়ে আগুনের) তাপ ও কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করেছে। তাকে (খাওয়ার জন্য) সাথে বসাবে; যদি সে অস্বীকৃতি প্রদর্শন করে (অর্থাৎ খেতে না চায় তবে) তার হাতে এক লোকমা (গ্রাস) দিবে। (আস্-সহীহাহ-১২৮৫)
হাদিসটির মান সহিহ। হাদিসটি আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) থেকে মারফূ’ সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। আস-সহীহাতে হাদিসটি আল্লামা আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) ২৫৬৮ নং হাদীসে পুনরুল্লেখ করিয়াছেন। এ কিতাবের ২৩৮ নং হাদীসে তা বর্ণিত হইবে ইনশাআল্লাহ। -তাজরীদদারক। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
১৬- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আলী ইবনু হুসাইন হইতে বর্ণিতঃ
আলী ইবনু হুসাইন থেকে মারফূ (মুরসাল) সানাদে বর্ণিত। যখন তোমাদের কেউ তার ভাইকে আল্লাহ্র জন্য ভালবাসে তখন সে যেন তাকে বলে দেয় (অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তার ভালবাসার বিষয় তাকে জানাতে হইবে।) কারণ তা হৃদ্যতার জন্য উত্তম এবং বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য উপযোগী। (আস্-সহীহাহ- ১১৯৯)
হাদিসটি মুরসাল। ওয়াকী’ তাহাঁর কিতাবুয্ যুহ্দে’ ২/৬৭/২ সহীহ্ সানাদে আলী বিন হুসাইন থেকে মারফূ সূত্রে। আলবানী বলেনঃ আলী বিন হুসাইন বিন আলী (রাঃআঃ) সম্মানিত ছিক্বাহ বর্ণনাকারী এবং সহীহ্ বুখারী ও সহীহ্ মুসলিমের রাবী। মূলত হাদিসটি মুরসাল সহীহ্ সানাদে বর্ণিত। এর সাক্ষ্য হিসেবে মুজাহিদের মুরসাল বর্ণনা আছে ইবনু আবীদ দুনিয়ার কিতাবুল ইখওয়ানে’ যেভাবে ফাতহুল কাবীরে’ ১/৬৭ বর্ণিত হয়েছে। এর সাক্ষ্যমূলক হাদিসও রয়েছে। হাদিস এর মানঃ মুরসাল
১৭- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আয়িশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আয়িশা (রাঃআঃ) থেকে মারফু’ সূত্রে বর্ণিত; যখন আল্লাহ তায়ালা কোন গৃহবাসীর মঙ্গল চান তখন তাহাদের মধ্যে হৃদ্যতা সৃষ্টি করে দেন। (আস-সহীহাহ- ১২১৯)
হাদিসটি সহীহ। আহমদ; আর বাযযার জারিব (রাঃআঃ) থেকে বর্ননা করিয়াছেন। ইমাম মুনযিৱী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: তাঁদের উভয়ের বর্ণনাকারীদের বর্ণনা সহীহ। (আত্-তারগীব (ইফা, ঢাকা) ৩/৪৭৪ পৃষ্ঠা; হা. ৭; আলবানীর সহীহ্ আত্-তারগীব-৩/২৬৬৯) আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর কয়েকটি সানাদের কথা বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
১৮- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ) বলেনঃ (ক) যখন কিয়ামাত নিকটবতী (আসন্ন) হইবে তখন মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা হইবে না। (খ) তাহাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সত্যবাদীই অতিসত্য স্বপ্ন দেখিতে পাবে। (গ) মুসলিমের স্বপ্ন নবুওতের ছয়চল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (রাসূল (সাঃ আঃ) আরো) বলেন, (ঘ) স্বপ্ন তিন প্রকার। প্রথমতঃ শুভ স্বপ্ন, যা আল্লাহর পক্ষ হইতে সুসংবাদ। দ্বিতীয়তঃ শাইত্বানের পক্ষ হইতে পেরেশনীমূলক স্বপ্ন। তৃতীয়তঃ মানুষের কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন। (অর্থাৎ, সে দিনে বা জাগ্রত অবস্থায় যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা-ই দেখে।) (ঙ) যখন তোমাদের কেউ স্বপ্নে অপ্রীতিকর কিছু দেখে; তখন সে যেন তা কারো নিকট বর্ণনা না করে এবং দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করিতে থাকে। (রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ) ) বলেন, (চ) আমি স্বপ্নে বেড়ি (অর্থাৎ পায়ে বেড়ি পরানো)-কে পছন্দ করি এবং শৃঙ্খল (অর্থাৎ গলায় শৃঙ্খল বা বেড়ি পরানো কিংবা হাতকড়া)-কে অপছন্দ করি। (পায়ের) বেড়ি দ্বীনের উপর অটল থাকা বুঝায়। (আস-সহীহাহ-৩০১৪)
হাদিসটি সহীহ। মুসনাদে আহমাদ- ২/৫০৭৷ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: হাদিসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ্ । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
১৯- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণিত; যখন তোমাদের কারো খাদেম (সেবক) তার নিকট খাবার নিয়ে আসে- যে (আগুনের) গরম ও (কাজের) কষ্ট সহ্য করেছে। যদি তার সাথে খেতে না বস তবে যেন তার খাবার হইতে এক লোকমা (গ্রাস) হলেও তাকে (খাদেমকে) দেয়। (আস-সহীহাহ- ১০৪৩)
হাদিসটি সহীহ। আহমাদ- ২/২০৪; ৪৬৪। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: হাদিসটি সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ্। সহীহ মুসলিমে কিছুটা ভিন্নভাবে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২০- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ বাকরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলেন: যখন কোন মুসলিম তার (অপর মুসলিম) ভাইয়ের উপর (তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে) তরবারী উত্তোলন করিবে; তখন ফেরেশতারা তরবারী কোষাবদ্ধ না করা পর্যন্ত তার উপর অভিসম্পাত করিতে থাকে। (অর্থাৎ, হত্যার বাসনা ত্যাগপূর্বক তরবারী খাপে না রাখা পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তার উপর লানাত করিতে থাকে)। (আস-সহীহাহ-৩৯৭৩)
হাদিসটি হাসান। বাযযার তাহাঁর মুসনাদে’ ৩/১০৩/৩৬৪১। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর কাছে হাদিসটি হাসান, তিনি এর উপর আপত্তির জবাব দিয়েছেন। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
২১- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ জাবির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ) বলেন: যখন তোমরা সন্দেহ পোষণ কর তখন তোমরা তাতে অটল থেকো না। যখন হিংসা করিবে, তখন সীমাতিক্রম করিবে না। যখন কিছু অশুভ মনে করিবে তখন তা সম্পাদন করিবে এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখবে। যখন ওজন করিবে তখন (পাল্লা) হেলিয়ে দিবে (অর্থাৎ বেশি দিবে)। (আস-সহীহাহ-৩৯৪২)
হাদিসটি যঈফুন জিদ্দান। সুয়ূতী (রাহিমাহুল্লাহ) তাহাঁর আল-জামেউস সগীর’ ও কবীর’-এ বর্ণনা করিয়াছেন। আলবানীর আয-যঈফাহ হাদিস নং ২৪৯৩; যঈফ জামেউস সগীর ওয়া যিয়াদাতাহু হাদিস নং ৪৬৫৷ হাদিস এর মানঃ খুবই দুর্বল
২২- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণিত; যখন কোন ব্যক্তি ক্রুব্ধ হয় তখন যদি সে (আউযুবিল্লাহ) বলে তবে তার ক্ৰোধ প্রশমিত হয়ে যাবে। (আস-সহীহাহ-১৩৭৬)
হাদিসটি সহীহ । আস-সাহমী তাহাঁর তারীখে জুরজান’-এ পৃষ্ঠা ২৫২; আল-কামেল লি ইবনু আদী- ১/২৯৭; বিভিন্ন হাদিসের সাক্ষ্য ও সম্মিলিত বর্ণনার ভিত্তিতে শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২৩- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ
আবদাতা ইবনু আবূ লিবাবাহ মুজাহিদ থেকে এবং তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃআঃ) থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণনা করেন যে, যখন কোন মুসলিম ব্যক্তি অপর মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং তার হাত ধরে মুসাফাহা (করমর্দন) করে তখন তাহাদের অঙ্গুলিসমূহ হইতে গুনাহ এমনভাবে ঝরতে থাকে যেমন শীতকালে গাছ থেকে পাতা ঝরতে থাকে। আবদাহ বলেন, আমি মুজাহিদকে বললাম, এটা তো খুবই সহজ ব্যাপার। মুজাহিদ বলিলেন, এমন বলো না। কারণ, আল্লাহ তায়ালা তাহাঁর কিতাবে (কুরআন মাজীদে) বলেনঃ যদি আপনি তাহাদের মাঝে বন্ধুত্ব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ ব্যয় করিতেন তথাপি তাহাদের মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপন করিতে সক্ষম হইতেন না। বরং আল্লাহ তা’আলা তাহাদের মাঝে হৃদ্যতা ছড়িয়ে দিয়েছেন। (সূরা-আল-আনফাল-৬৩ আয়াত) তখন আমি ইলমের (বিদ্যার) গভীরতা অন্যান্যদের তুলনায় অনুভব করলাম। (আস-সহীহাহ-২০০৪)
হাদিসটি সহীহ। হাদিসটি আবদাতা ইবনু আবূ লিবাবাহ মুজাহিদ থেকে আর মুজাহিদ ইবনে আব্বাস থেকে মারফূ’আন রিওয়ায়াত করিয়াছেন। হাদিসটি ইমাম বুখারী তার “আত্-তারিখুল আওসাত” পৃষ্ঠা ১৬৫-তে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ শাওয়াহিদ’ ও মুনাবি’য়াত’ -এর ভিত্তিতে হাদিসটি সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২৪- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ ইবনু আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ)-এর কাছে এসে বলিল, আমার বাবা হাজ্জ পালন না করেই মৃত্যুবরণ করেছে। আমি কি তার পক্ষ হইতে হাজ্জ করিতে পারব? রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ) বললেনঃ তুমি কী বল, যদি তোমার বাবার উপর কোন ঋণ থাকত তা তুমি পরিশোধ করিতে না? সে বলিল, হ্যা। রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ) বলিলেন, কাজেই তুমি তোমার বাবার পক্ষ হইতে হাজ্জ পালন কর। (আস-সহীহাহ-৩০৪৭)
হাদিসটি সহীহ। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: এর সানাদ সহীহ্, ছিক্বাহ ও সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের বর্ণনাকারী। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২৫- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী করীম (সাঃ আঃ) মৃত্যু শয্যায় বলেন, তোমাদের আত্মীয়দের ব্যাপারে সতর্ক থেকো। তোমাদের আত্মীয়দের ব্যাপারে সতর্ক থেকো। (অর্থাৎ, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখো তা ছিন্ন করো না)। (আস-সহীহাহ-১৫৩৮,৭৩৬)
হাদিসটি সহীহ । ইবনু হিব্বান হা ২০৩৭; হাফিয ইরাকী “আল-মাজলিস ৮৬ মিনাল আমালী”। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২৬- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃআঃ) থেকে মারফু’ সূত্রে বর্ণিত; তোমরা (মানুষের উপর) অনুগ্রহ কর (তাহলে আল্লাহর পক্ষ হইতে) তোমাদের অনুগ্রহ করা হইবে। তোমরা (মানুষকে) ক্ষমা কর (তবে) আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করবেন। ধ্বংস কৰ্কশভাষীদের জন্য (অর্থাৎ কঠোরভাষী যারা তাহাদের জন্য মঙ্গল নেই) এবং ধ্বংস ঐ সকল দৃঢ়পদ ব্যক্তির জন্য যারা জেনে-শুনে স্বীয় (মন্দ) কর্মসমূহের উপর অটল থাকে। (আস-সহীহাহ-৪৮২)
হাদিসটি সহীহ। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) তাহাঁর আদাবুল মুফরাদে’ হাদিস নং ৩৮০ (ইফা, ঢাকা, হা. ৩৮২); আহমাদ- ২/১৬৫, ২১৯৷ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: এই হাদিসটির সানাদ সহীহ্ এবং বর্ণনাকারীগণ ছিব্বাহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২৭- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ ইয়াযিদ ইবনু জারিয়াহ হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ) বিদায় হাজ্জের দিন বলেছেন, তোমাদের দাসদাসীদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। তোমরা তোমাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে সাবধান থেকো, তোমরা তোমাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। (অর্থাৎ, তাহাদের অধিকার আদায় করো, তাহাদের প্রতি অত্যাচার কর না এবং আল্লাহকে ভয় কর) তোমরা যা খাও তাহাদেরও তা খাওয়াও, তোমরা যা পর তাহাদেরও তা পরাও। যদি তারা কোন অপরাধ করে যা তোমরা ক্ষমা করিতে ইচ্ছা কর না। তবে আল্লাহর বান্দাদের বিক্রয় করিবে। তাহাদের কষ্ট দিবে না। (আস-সহীহাহ- ৭৪০)
হাদিসটি সহীহ। আল-মাজমায়’- ৪/২৩৬; আহমাদ- ৪/৩৫-৩৬ । শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটির বিভিন্ন দুর্বলতা উল্লেখ করার সাথে সাথে অন্যান্য সাক্ষ্যের ভিত্তিতে হাদিসটিকে সহীহ গণ্য করিয়াছেন। (আস-সহীহাহ-৪৩২) অন্যত্র তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। (আহমদ, তাবাক্বাতু ইবনু সা’দ সূত্রে: সহীহ্ আল-জামেউস সগীর ওয়া যিয়াদাতাহু- ১/৯০৫ নং) হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২৮- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ) বলেছেন: তোমরা লজ্জা পোষণ করে থাক । আল্লাহ তা’আলা সত্য বলিতে লজ্জাপোষণ করেন না। তোমরা স্ত্রীদের পায়ুপথ ব্যবহার করো না। (আস-সহীহাহ-৩৩৭৭)
হাদিসটি সহীহ। নাসাঈ তাহাঁর আস-সুনানুল কুবরাতে’ ৫/৩২২/৯০০৯; বাযযার তাহাঁর মুসনাদ- ১/৪৭৪/৩৩৯, শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) একই মর্মে বর্ণিত বিভিন্ন হাদিসের পর্যালোচনার পর অন্যান্য সাক্ষ্যমূলক বর্ণনার ভিত্তিতে হাদিসটিকে সহীহ্ বলেছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
২৯- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আব্বাস (রাঃআঃ) থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণিত; তুমি নম্রতা প্রদর্শন কর তোমার প্রতি নম্রতা প্ৰদৰ্শন করা হইবে। (আস-সহীহাহ-১৪৫৬)
হাদিসটি সহীহ। আহমাদ- ১/২৪৮; মুহাম্মাদ বিন সুলাইমান আর-রাবি’য়ী তাহাঁর জুজ’উ মিন হাদীসিহু’ ২/২১২।
আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: “এর বর্ণনাকারীগণ ছিক্বাহ, যদিও ওয়ালিদ আন’আনাহ বর্ণনা করিয়াছেন।” অতঃপর এর সমর্থনে অন্যান্য মুত্তাসিল ও সহীহ্ সানাদের হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৩০- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ উবাদাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
উবাদাহ (রাঃআঃ) থেকে মারফূ’ সূত্রে বর্ণিত আছে যে, তোমরা আমাকে ছয়টি জিনিসের নিশ্চয়তা দিলে আমি তোমাদের জান্নাতের নিশ্চয়তা দিব। (ক) যখন তোমরা কথা বলবে সত্য বলবে; (খ) ওয়াদা করলে তা পালন করিবে; (গ) আমানত গ্ৰহণ করলে তা আদায় করিবে; (ঘ) লজ্জাস্থানের হিফাজত করিবে; (ঙ) দৃষ্টি অবনত রাখবে এবং হাতকে (অন্যায় কর্ম থেকে) সংযত রাখবে। (আস-সহীহাহ- ১৪৭০)
হাদিসটি হাসান। ইবনু খুযাইমাহ- ৩/৯১; ইবনু হিব্বান হা. ১০৭; হাকিম- ৪/৩৫৮-৫৯; আল-খারায়ত তাহাঁর আল-মাকারিম’-এ পৃষ্ঠা ৩১; আহমাদ- ৫/৩২৩; ত্বাবারানী আল-মুনত্বাকা’ ১/৪৯; বায়হাক্বী তাহাঁর শু’আবুল ঈমান’-এ ২/৪৭/১। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটি পর্যালোচনার শেষে হাদিসটিকে হাসান ও সহীহ মানে উত্তীর্ণ বলেছেন। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৩১- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ হামযাহ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ হামযাহ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃআঃ) তাহাঁর বাবার সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি (ইবনু উমার) বলেন, আমার এক স্ত্রী ছিল যাকে আমি ভালবাসতাম। উমার (রাঃআঃ) তাঁকে অপছন্দ করিতেন। উমার (রাঃআঃ) বলিলেন, তাকে তালাক দাও। আমি অস্বীকৃতি জানালাম। তিনি নাবী (সাঃ আঃ)-কে তা অবগত করিলেন। নাবী (সাঃ আঃ) বললেনঃ তোমার পিতার আনুগত্য কর এবং তাকে তালাক দাও। (আস-সহীহাহ-৯১৯)
হাদিসটি হাসান। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৩২- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
মুয়াজ ইবনু জাবাল (রাঃআঃ) সফরে যাওয়ার প্রাক্কালে রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ)-কে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে উপদেশ দিন। তিনি (সাঃ আঃ) বললেনঃ আল্লাহর ইবাদাত কর এবং তাহাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর নাবী। আরো অধিক কিছু বলুন। তিনি (সাঃ আঃ) বললেনঃ যখন (কোন) মন্দ কর্ম করিবে তখন (তার পরিবর্তে) সৎ কাজ করিবে। তিনি (মুয়াজ ইবনু জাবাল) বলিলেন, হে আল্লাহর নাবী! আরো অধিক কিছু নসীহত করুন। তিনি (সাঃ আঃ) বললেনঃ (এগুলোর উপর) দৃঢ়পদ (অটল) থাক এবং তোমার আচরণ উত্তম কর। (আস-সহীহাহ- ১২২৮)
হাদিসটি হাসান । ইবনু হিব্বান হা, ১৯২২; হাকিম- ৪/২৪৪। হাকীম বলেছেন- এর সানাদ সহীহ। আর যাহাবী চুপ থেকেছেন। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এর বর্ণনাকারীগণ ছিক্বাহ ও সহীহ মুসলিমের রাবী। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৩৩- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ ইসহাক ইবনু সাঈদ (রাহিমাহুল্লাহ) হইতে বর্ণিতঃ তিনি বলেন: আমাকে আমার পিতা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃআঃ)-এর নিকট ছিলাম। তাহাঁর নিকট এক ব্যক্তি এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করিল, তুমি কে? তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন: তিনি (ইবনু আব্বাস (রাঃআঃ)) অনেক দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়তার সম্পর্ক তার সাথে আবিষ্কার করিলেন এবং তার সাথে নম্রভাবে কথাবার্তা বলিতে লাগলেন। তিনি বলেন: রসূলুল্লাহ(সাঃ আঃ) বলেছেন, তোমরা তোমাদের বংশ পরম্পরা জেনে রেখ। আত্মীয়তার বন্ধন সুদৃঢ় রেখ। কারণ, আত্মীয়তার সম্পর্ক যখন ছিন্ন হয় তখন তা যতই নিকটবর্তী হোক না কেন, নিকটবর্তী থাকে না। আর যখন সম্পর্ক স্থাপিত হয় তখন তা যত দূরবর্তীরই হোক না কেন, দূর থাকে না। (আস-সহীহাহ-২৭৭)
হাদিসটি সহীহ। আর হাকিম বলেন: সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ্ । যাহাবী এতে চুপ থেকেছেন। আর আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন; এটা এককভাবে সহীহ মুসলিমের শর্তে উত্তীর্ণ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৩৪- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্বাস ইবনু জুলাইদ আল হাজরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন: আমি আব্দুল্লাহ ইবনু আমরকে বলিতে শুনিয়াছি যে, এক ব্যক্তি নাবী (সাঃআঃ) এর কাছে এসে বলিলঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমরা খাদেমকে কতবার ক্ষমা করব? রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) নীরব থাকলেন। অতঃপর লোকটি আবারো ঐ বাক্যটি পুনরাবৃত্তি করলে রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) চুপ থাকলেন। তৃতীয়বার যখন প্রশ্ন করা হল। তখন রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলিলেন: দৈনিক সত্তরবার তাকে ক্ষমা কর। (আস-সহীহাহ-৪৮৮)
হাদিসটি হাসান। আবু দাউদ হা. ৫১৬৪; আহমাদ- ২/৯০। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, “এর সানাদ সহীহ।” ইমাম মুনযিরী (রাহিমাহুল্লাহ) আত্-তারাগীবের’ ৩/১৬৩-তে বলেন: আবূ ইয়ালা জাইয়্যেদ সানাদে বর্ণনা করিয়াছেন। আর তিরমিযীও তা বর্ণনা করিয়াছেন। আমি (আলবানী) বলছি: “তিরমিযীতে উক্ত শব্দে হাদিসটি বর্ণিত হয়নি।” হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৩৫- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ মুয়াজ ইবনু জাবাল হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) তাঁকে (প্রতিনিধি হিসেবে) এক গোত্রের প্রতি প্রেরণ করছিলেন। তখন তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে উপদেশ দিন। রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলিলেন: সালামের প্রসার ঘটাবে এবং খাবার বিতরণ করিবে (অর্থাৎ মানুষদের আহার করাবে) তোমার পরিবারের লোকদের ব্যাপারে যেমন লজ্জাপোষণ করা তদ্রূপ আল্লাহর ব্যাপারে লজ্জাপোষণ করিবে। যখন কোন ত্রুটি কর তখন (তার বিনিময়ে) সৎ কাজ করিবে। যতটুকু সম্ভব তোমার আচরণ উত্তম করিবে। (আস-সহীহাহ-৩৫৫৯)
হাদিসটি হাসান লিগাইরিহী। ইবনু নাসর আল-মারুযীর আল-ঈমান’ ১/৩২৬; বাযযার তাহাঁর কাশফুল আসতারে’ হাদিস নং ২১৭২ ৷ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর বিভিন্ন সানাদ সম্পর্কে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। তবে একই মর্মে কিছু ভিন্ন শব্দে বর্ণিত হাদিসকে তিনি যঈফও বলেছেন। (যঈফ জামে’ সগীর হা, ৯৯৩; আয-যঈফাহ হা. ২৭৩০) হাদিস এর মানঃ হাসান লিগাইরিহি
৩৬- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণিত; সার্বোত্তম আমাল হলো তোমার ভাইয়ের সাথে তুমি প্রফুল্লচিত্তে সাক্ষাৎ করিবে এবং তার ঋণ পরিশোধ করিবে এবং তাকে রুটি (আহাৰ্যদ্রব্য) খাওয়াবে। (আস-সহীহাহ-১৪৯৪)
হাদিসটি হাসান । শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটিকে হাসান ও বর্ণনাকারীদের ছিক্বাহ বলেছেন। সর্বশেষ তিনি হাদিসটিকে বিভিন্ন হাদিসের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে গ্ৰহণ করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৩৭- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ ইবনু আমর হইতে বর্ণিতঃ
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণিত; সর্বোত্তম সাদাকা হল, পরস্পরের মাঝে সমঝোতা করা। (আস্-সহীহাহ-২৬৩৯)
হাদিসটি হাসান লিগাইরিহী। আল- মুন্তাখাব মিনাল মাসানিদ-২/৪৩; বায্যার- হা. ২০৫৯ প্রভৃতি। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) লিখেছেন- তিনি প্রথমে হাদিসটি যঈফ হওয়া দেখে তা যঈফুল জামেতে (হাদিস নং ১০১২) আনেন। অতঃপর দেখেন হাফেয মুনযিরী (রাহিমাহুল্লাহ) এটিকে হাসান লিগাইরিহী বলে উল্লেখ করিয়াছেন। তখন তিনি এটি সহীহাতে সংযোজিত করেন। হাদিস এর মানঃ হাসান লিগাইরিহি
৩৮- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃআঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন; আরবদের একে অন্যকে সফরের সময় সেবা (খেদমত) করত। আবূ বকর ও উমর (রাঃআঃ)- এর সাথে এক ব্যক্তি ছিল যিনি তাহাদের খেদমত করত। তারা উভয়ে ঘুমিয়েছিল। অতঃপর তারা জাগ্রত হলেন। (কিন্তু খাদেম) তাহাদের জন্য খাবার প্রস্তুত করেনি (বরং সে ঘুমিয়েছিল) তাহাদের একজন অন্যকে বলছিল, এ (খাদেম) তোমাদের নবীর ঘুমের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করেছে (অন্য এক রিওয়ায়াতে আছে, তোমাদের গৃহের ঘুমের সাথে সাদৃশ্যতা রেখেছে)। অতঃপর তারা তাকে (খাদেমকে) জাগিয়ে দিয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) এর নিকট গিয়ে তাঁকে বল, যে আবূ বাকার ও উমার (রাঃআঃ) আপনাকে সালাম জানিয়েছেন এবং আপনার কাছে তরকারী (অর্থাৎ খাবার) চেয়েছে। রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলিলেন, তাহাদের সালাম জানাবে এবং বলবে যে, তারা উভয়েই খাবার গ্রহণ করেছে। (এ কথা শুনে) তারা ঘাবড়িয়ে গেলেন এবং (উভয়েই) নাবী (সাঃআঃ) এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনার নিকট খাদেমকে খাবার চেয়ে পাঠিয়েছিলাম। আপনি বলেছেন যে, আমরা খাবার খেয়েছি। তো আমরা কী দিয়ে খাবার খেলাম? রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলিলেন, তোমাদের ভাইয়ের গোশ্ত দিয়ে। আল্লাহর শপথ! আমি তার গোশ্ত তোমাদের নখের মধ্যে দেখছি। তারা (আবূ বাকার ও উমার (রাঃআঃ)) বলিলেন, আমাদের ক্ষমা করুন। রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলিলেন, সে তোমাদের ক্ষমা করিবে। (আস্-সহীহাহ-২৬০৮)
হাদিসটির মান সহিহ। হাদিসটি আনাস ইবনু মালিক (রাঃআঃ) সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। হাদিসটি আল-খারায়িতী “(আরবী)” হা. ১৮৬; যিয়া আল-মাকদেসী তাহাঁর আলমুখতারাহ’ –এ (২/৩৩/২)-এ হাদিসটি রিওয়ায়াত করিয়াছেন। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এর সানাদ সহীহ্। সমস্ত বর্ণনাকারী ছিক্বাহ আবূ বদর আল-গাবারী ছাড়া অন্যান্যরা সহীহ্ মুসলিমের বর্ণনাকারী। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৩৯- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃআঃ) হয়ে মারফূ সূত্রে বর্ণিত; মুমিনদের মধ্যে পরিপূর্ণ ঈমানদার ঐ ব্যক্তি; যে তাহাদের মধ্যে চরিত্রগত দিক দিয়ে সবচেয়ে উত্তম, নম্র স্বভাবী, অতিথিপরায়ণগণ, যারা (অন্যকে) ভালবাসে এবং (অন্যের) ভালবাসা পায়। ঐ ব্যক্তিদের মাঝে কল্যাণ নেই- যারা অন্যকে ভালবাসে না এবং (অন্যের) ভালবাসা পায় না। (আস্-সহীহাহ- ৭৫১)
হাদিসটি হাসান। হাদিসটি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃআঃ) মারফূ সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অসংখ্য সাক্ষ্যের ভিত্তিতে হাদিসটি হাসান মানে উত্তীর্ণ। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৪০- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলেছেনঃ মুমিনদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই পরিপূর্ণ ঈমানদার যিনি তাহাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা চরিত্রবান। তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি- যে তার স্ত্রীর কাছে সবচেয়ে ভাল। (আস্-সহীহাহ-২৮৪)
হাদিসটি হাসান। তিরমিযী -১/২১৭-১৮; আহমাদ-২/২৫০, ৪৭২; আবূ দাঊদ হা. ৪৬৮২; মুসান্নাফে আবী শায়বাহ ১২/১৮৫/১; আবূ নাঈম তাহাঁর আল-হিলইয়া’ –এর ৯/২৪৮; হাকিম-১/৩)। হাকিম বলেছেনঃ হাদিসটি সহীহ্ মুসলিমের শর্তে সহীহ্। যাহাবী চুপ থেকেছেন। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ বরং এটি হাসান হাদিস। কেননা, মুহাম্মদ বিন আমর সামান্য যঈফ। আর এটি সহীহ্ মুসলিমের শর্তে উত্তীর্ণ। সুতরাং তিনি এটিকে সমার্থক (হাদিস) হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৪১- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমি তোমাদের ঐ ব্যক্তির সংবাদ দিব না? যে (জাহান্নামের) আগুনের জন্য হারাম অথবা যার জন্য (জাহান্নামের) আগুন হারাম?(রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলিলেন) প্রত্যেক হিতৈষী, নম্র ও শান্তের জন্য (জাহান্নামের আগুন হারাম)। (আস্-সহীহাহ-৯৩৮)
দিসটির মান সহিহ। তিরমিযী- ২/৮০; ইবনু হিব্বান- ১০৯৬, ১০৯৮; আল-খারায়িতী মাকারিমুল আখলাক্ব’ ১১, ২৩; আহমাদ-১/৪১৫; তাবারানীর আল-মুজামুল কাবীর’ ৩/৮৩/২; আবূল কাশেম কুশায়রী আল-আরবাঈন’ ১/১৯২; বাগাভী শরহে সুন্নাহ’ ১/৯৪। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বিভিন্ন সানাদে বর্ণিত হাদিসগুলো দুর্বলতার উল্লেখ করার পর লেখেন- (আরবী) “উক্ত বাক্যে সম্মিলিতভাবে সাক্ষ্যস্বরূপ হাদিসটি সহীহ্- আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।” হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৪২- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃআঃ) থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণিত; আমি কি তোমাদের ঐ সাদাকার প্রতি পথনির্দেশ করব না! আল্লাহ তাআলা যার পাত্রকে ভালবাসেন? (রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) নিজেই উত্তর দিয়ে বলেন) মানুষের মাঝে সমঝোতা (সন্ধি স্থাপন) করিবে। কারণ, তা এমন এক সাদাকা আল্লাহ তায়ালা তাহাঁর পাত্রকে পছন্দ করেন। (আস্-সহীহাহ-২৬৪৪)
হাদিসটি হাসান লিগাইরিহী। ইস্বাহানী/ইস্পাহানী তাহাঁর আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীবে’ পৃষ্ঠা ৫০; মুনযিরীর তাহাঁর আত্-তারগীব’ (ইফা. ঢাকা) ৩/৫৪২ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ৮। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটির বিভিন্ন রাবীর দুর্বলতার কথা উল্লেখ করিয়াছেন। সহীহ্ আত্-তারগীব (৩/৪৬/২৮২০) তিনি হাদিসটিকে হাসান লিগাইরিহী’ বলেছেন। সম্ভবত অনেক হাদীসে সমার্থক ও সাক্ষ্য হিসেবে তিনি হাদিসের উক্ত হুকুমটি দিয়েছেন। হাদিস এর মানঃ হাসান লিগাইরিহি
৪৩- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আনাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী কারীম (সাঃআঃ) এমন সম্প্রদায়ের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা পাথর বহন করছিলেন। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, এ লোকগুলো কী করছে? তারা (সাহাবীগণ) বলিলেন, তারা পাথর বহন করছে এর দ্বারা তারা বীরত্ব প্রদর্শন করার ইচ্ছা পোষণ করে থাকে। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আমি কি তোমাদের ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে সংবাদ দান করব না! যে এদের চেয়ে অধিক বীরত্বের অধিকারী? অথবা এরূপ কোন বাক্য বলেছেন। (উত্তরে রাসূল (সাঃআঃ) জানান) যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করিতে পারে। (সে-ই সবচেয়ে বড় বীর-বাহাদুর)
অপর এক বর্ণনায় এসেছে, নাবী (সাঃআঃ) এমন এক সম্প্রদায়ের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা (পরস্পরে) কুস্তিতে মত্ত ছিল। রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বলিলেন, এ কী? তারা (সাহাবীগণ) বলিলেন, এ অমুক কুস্তিগীর। তার সাথে যে কুস্তিতে লড়ে সে-ই ভুপাতিত হয়। রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) বললেনঃ আমি কি তোমাদের ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে সংবাদ দিব না? যে তার (ঐ কুস্তিগীরের) চেয়ে অধিক শক্তিশালী? (রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) জবাবে বলেন) ঐ ব্যক্তি যার উপর অন্য ব্যক্তি অত্যাচার করেছে অতঃপর সে রাগ নিয়ন্ত্রণ করেছে। ফলে সে তার শত্রুর উপর বিজয়ী হয়েছে এবং তার শাইত্বনের উপর বিজয়ী হয়েছে এবং তার বন্ধুর শাইত্বনের উপরও বিজয়ী হয়েছে। (আস্-সহীহাহ-৩২৯৫)
হাদিসটি হাসান। বায্যার তাহাঁর মুসনাদে’ ২/৪৩৮-৩৯/২০৫৩ ও ২০৫৪। ইমাম হায়ছামী (রাহিমাহুল্লাহ) তাহাঁর মাজমাউয যাওয়ায়েদে’ ৮/৬৮ বলেনঃ হাদিস দু’টি বায্যার একই সানাদে বর্ণনা করিয়াছেন। এতে শুআয়িব বিন বায়ান ও ইমরান কাত্তান আছেন। উভয়ে ইবনু হিব্বানের নিকট সহীহ্। তবে অন্যান্যরা যঈফ বলেছেন। বাকী বর্ণনাকারীগণ সহীহ্। আমি (আলবানী) বলছি, “বরং এর সানাদ হাসান। যেভাবে হাফিয ইবনু হাজার ফাতহুল বারী’তে (১০/৫১৯) বলেছেন।” অতঃপর আলবানী সাক্ষ্যস্বরূপ আরো হাদিস উল্লেখ করেন। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৪৪- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ ইয়াজ ইবনু হিমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) একদিন তাহাঁর ভাষণে বললেনঃ জেনে রেখ! আল্লাহ তাআলা আমাকে আদেশ করেছে আমি যেন তোমাদের ঐসকল বিষয় শিক্ষা দেই যা তোমরা জান না। ঐসকল বিষয় হইতে যা আজ আমাকে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন। (আল্লাহ তাআলা বলেনঃ) আমি বান্দাহ্কে যেসকল সম্পদ দান করেছি তা সবই হালাল। আমি আমার বান্দাদের সকলকে একশ্বরবাদে (অর্থাৎ হিদায়তের উপর) সৃষ্টি করেছি। (অতঃপর) শাইত্বান তাহাদের কাছে আগমন করে এবং তাহাদের স্বীয় (মূল) ধর্ম হইতে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আমি (তাহাদের) মানুষদের জন্য যা হালাল করেছি সে (শাইত্বান) তাহাদের জন্য তা হারাম করে দেয়। আমি তাহাদের আদেশ করেছি যে, তারা আমার সাথে ঐসকল বস্তুকে শরীক করেছে যে ব্যাপারে আমি কোন প্রমাণ নাযিল করিনি। আল্লাহ তাআলা পৃথিবীবাসীর প্রতি দৃষ্টি দেন এবং আরব-আজম সকলকে অপছন্দ করেন। তবে আহলে কিতাবদের অবশিষ্টদের (অপছন্দ করেননি) এবং তিনি (আল্লাহ তাআলা) (আমাকে) বলেনঃ আমি তোমাকে (পৃথিবীতে) প্রেরণ করেছি যে, তোমাকে পরীক্ষা করব এবং তোমার দ্বারা (অন্যকে) পরীক্ষা করব। তোমার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছি যাকে পানি ধ্বংস করিতে পারবে না। জাগ্রত ও ঘুমন্ত ব্যক্তি তা পাঠ করিবে। আর আল্লাহ তাআলা আমাকে আদেশ দিয়েছেন যে, আমি কুরাইশদের জ্বালিয়ে দিব।
আমি বললাম, হে আমার রব! (যখন আমি তাহাদের জ্বালাতে যাব) তখন তারা আমার মাথা পিষে ফেলবে এবং তারা তা আটা বানিয়ে ফেলবে। তিনি (আল্লাহ) বলেন, তাহাদের বের করে দাও যেমন তারা তোমাকে (দেশ থেকে) বের করে দিয়েছে। তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; আমি তোমাকে সাহায্য করব। তুমি ব্যয় (আল্লাহর পথে খরচ) কর। সত্বর আমি তোমাকে খরচে সাহায্য করব। (তাহাদের বিপক্ষে) বাহিনী প্রেরণ কর আমি (তোমার) পাঁচগুণ (বাহিনী) প্রেরণ করব। যারা তোমার অনুগত তাহাদের সাথে নিয়ে তোমার অবাধ্যদের বিপক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও। তিনি বলেন, জান্নাতের বাসিন্দা তিন প্রকার- (ক) ক্ষমতার অধিকারী, ন্যায়পরায়ণ, দানবীর ও (আল্লাহর পক্ষ হইতে) সাহায্যপ্রাপ্ত। (খ) দয়ালু ব্যক্তি- প্রত্যেক নিকটাত্মীয় ও মুসলিমের প্রতি সুহৃদয়বান ব্যক্তি ও (গ) সচ্চরিত্র (দানবান) ও পরিবার-পরিজনের অধিকারী।
আর জাহান্নামের অধিবাসী পাঁচ প্রকার- (ক) ঐ দুর্বল ব্যক্তি; যার কোন জ্ঞান নেই। যারা তোমাদের (সমাজের) মধ্যে অনুগত (অর্থাৎ অন্যের আনুগত্যকারী) পরিবার-পরিজন ও মাল-সম্পদের ধার ধারে না। (খ) ঐ খিয়ানাতকারী যার লোভ-লালসা গোপন হয় না (মিটে না) যদি সামান্য বস্তু (আমানাত হিসেবে) রাখা হয় তথাপি সে খিয়ানত করে। (গ) এবং ঐ ব্যক্তি যে সকাল-সন্ধ্যায় (সদা-সর্বদা) তোমার পরিবার-পরিজন অর্থ-সম্পদের (যাবতীয়) ব্যাপারে তোমাকে ধোঁকা দেয়। (ঘ) আর তিনি কৃপণতা কিংবা মিথ্যাবাদীতার কথা উল্লেখ করেন (অর্থাৎ বখীল ও মিথ্যুকদের জাহান্নামীদের মধ্যে গণ্য করেছে)। (ঙ) এবং অসচ্চরিত্রের অধিকারী অশ্রাব্যভাষী।
আল্লাহ তায়ালা আমার নিকট ওহী প্রেরণ করেন যে, তোমরা বিনয়ী হও একজন অন্যজনের উপর যেন গর্ব না করে এবং একে অন্যের প্রতি অত্যাচার না করে। (আস্-সহীহাহ-৩৫৫৯)
হাদিসটির মান সহিহ। সহীহ্ মুসলিম- ৮/১৫৯ পৃষ্ঠা, হা. ৭৩৮৬; (আরবী);নাসাঈ তাহাঁর আল-কুবরাতে’ হা. ৮০৭০-৭১, আব্দুর রাজ্জাক হা. ২০০৮৮; তায়ালিসী হা. ১০৭৯; ইবনু হিব্বান হা. ৫৬৩-৫৪; আহমাদ হা. ১৬২, ২৬৬ প্রভৃতি। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৪৫- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) বলেনঃ আমি কি তোমাদের অবহিত করব না? (আরবী) (আল-আজহ) কী? (তিনি জবাবে বলেনঃ) তা হলো, মানুষের ভাল-মন্দ কথা নিয়ে চোগলখুরী করা। অপর রিওয়ায়াতে এসেছে, চোগলখুরী তা-ই যা মানুষের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃস্টি করে। (আস্-সহীহাহ-৮৪৬)।
হাদিসটির মান সহিহ। হাদিসটি আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃআঃ) মারফূ সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৪৬- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) মাসজিদে (নাববীতে) প্রবেশ করেন। সেখানে আনসারী রমনীগণ ছিলেন। রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ) তাহাদের ওয়াজ করিলেন ও উপদেশ দিলেন এবং তাহাদের সাদাকা করার জন্য আদেশ করিলেন; যদিও তা তাহাদের অলংকার দ্বারা হয়। অতঃপর তিনি (নাবী (সাঃআঃ)) বলিলেন, সাবধান থাকিবে কোন মহিলা গোত্রকে (অন্যদের) তার স্বামীর সাথে একাকীত্বে যা হয় তার সংবাদ দান করিতে সাবধান! কোন পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে একাকীত্বে তাহাদের মধ্যে যা হয়েছে তার খবর গোত্রকে (অন্যান্যদের) জানানোর ব্যাপারে (অর্থাৎ, এব্যাপারে কিছু বলা যাবে না)। অতঃপর এক মহিলা তাহাদের মধ্য হইতে দাঁড়াল যার গালে ফোড়া (ব্রণ জাতীয় রোগ) ছিল। সে বলিল, আল্লাহর শপথ! পুরুষেরা এরূপ করে থাকে (অর্থাৎ, স্বামী-স্ত্রীর একান্তের কথা অন্যদের বলে থাকে)। তিনি (রসূলুল্লাহ(সাঃআঃ)) বললেনঃ তোমরা এমন করো না। আমি তোমাদের জানাবো না ঐরূপ করার উদাহরণ কী? (উদাহরণ হলো) সে শাইত্বানের মত যে এক স্ত্রী শাইত্বানের সাথে রাস্তায় সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছে আর মানুষজন তা দেখছে। (আস্-সহীহাহ-৩১৫৩)
হাদিসটি হাসান। হাদিসটি আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) রিওয়ায়াত করিয়াছেন। ইমাম আল-খারায়িতী (আরবী)-এর (২/৩৯)-এ রিওয়ায়াত করিয়াছেন। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদিসটি হাসান বা (আরবী) (হাসানের কাছাকাছি) বলেছেন। আর হাদিসটির একাধিক (আরবী) হাদিস রয়েছে যার আলোকে (আরবী) পর্যন্ত উত্তীর্ণ। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৪৭- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আনাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বনি নাজ্জার গোত্রের এক মহল্লার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন অকস্মাৎ কিছু কিশোরী দফ (এক প্রকার ছোট্ট ঢোল) বাজাচ্ছিল। তারা (কবিতাকারে) বলছিল- আমরা বনী নাজ্জারের কিশোরী, কতই না উত্তম, আমাদের প্রতিবেশী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অতঃপর নাবী (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) বলিলেন: আল্লাহ তা’আলা জানেন আমার হৃদয় তোমাদের ভালবাসে। (আস-সহীহা-৩১৫৪)
হাদিসটি সহীহ। তাবারানী আল-মুজামুল কাবীরে’ ১৫ পৃষ্ঠা (অন্য সংস্করন ২৫); বায়হাক্বী দালালেয়ুন নবুয়্যাতে’ ২/৫০৮। বুসীরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন: এর সনদ সহীহ এবং বর্ননাকারীগন ছিক্বাহ। অতঃপর শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটির প্রতি বিভিন্ন আপত্তির জবাব দিয়েছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৪৮- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ ইবনু আমির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের বাড়িতে আসলেন। আমি তখন বালক ছিলাম। (অর্থাৎ, ছোট ছিলাম) আমি খেলাধুলা করিতে যাচ্ছিলাম তখন আমার আম্মা আমাকে বলিলেন, হে আব্দুল্লাহ! এদিকে এসো, তোমাকে কিছু দিব। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলিলেন: তুমি তাকে কী দেয়ার ইচ্ছা করেছ? সে বলিল, আমি তাকে খেজুর দিব। তিনি (বর্ননাকারী) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলিলেন: যদি তুমি তাকে কিছু না দিতে তবে তোমার জন্য (আমালনামায়) একটি মিথ্যা (বলার পাপ) লেখা হত। (আস-সহীহাহ-৭৪৮)
হাদিসটি হাসান লিগাইরিহী। আবু দাউদ- ২/৩১৩; আহমাদ- ৩/৪৪৭: যিয়া আল মাকদেসী তার আলমুখতারাহ’–এ ৫৮/১৮৪/১, আলখারায়িতী ৩৩ পৃষ্ঠা। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসগুলোর বিভিন্ন সাক্ষ্য উল্লেখ করার সাথে সাথে ত্রুটিগুলোও উল্লেখ করিয়াছেন। সহীহ আত-তারগীব (৩/৭৩/২৯৪৩) তিনি হাদিসটিকে হাসান লিগাইরিহী’ বলেছেন। হাদিস এর মানঃ হাসান লিগাইরিহি
৪৯- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ ইবনু উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (মাক্কা) বিজয়ের দিন তার কান কাটা উটে চড়ে (বায়তুল্লাহ) তাওয়াফ করেন এবং তাহাঁর লাঠি দিয়ে পাথর স্পর্শ করেন (অর্থাৎ, হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেন) মাসজিদে উট বসাতে না পেরে (অর্থাৎ, বসানোর স্থান না থাকায়) উট বাতনে ওয়াদীতে যান এবং সেখঅনে উট বসানো হয়। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার প্রসংশা জ্ঞাপন করেন এবং ছানা পড়েন। এরপর বলেন, হে লোকসকল! আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জাহেলী যুগের গৌরব-অহংকার দূর করে দিয়েছেন। মানুষ দু’শ্রেনীর- (ক) সৎ, পরহেজগার ও আল্লাহর পছন্দনীয়। (খ) এবং অসৎ, হতভাগ্য ও আল্লাহর অপছন্দনীয়। অতঃপর তিলাওয়াত করেন- (আরবী)
অর্থাৎ, হে মানব সম্প্রদায়! আমি তোমাদের (কাউকে) পুরুষ (আবার কাউকে) মহিলা হিসেবে সৃষ্টি করেছি। তোমাদের বিভিন্ন গোত্র ও দলে বিভক্ত করেছি। যেন তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার।
এক পর্যায়ে আয়াতটি পড়েন। অতঃপর বলেন, আমি (এ বক্তব্য) বললাম এবং আমার জন্য ও তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। (আস-ছহীহাহ-২৮০৩)
হাদিসটি সহীহ। ইবনু হিব্বান হাদিস নং ৩৮১৭। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: এর সানাদ সহীহ। মাকহুল ও তাহাঁর শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন ইয়াযীদ ছাড়া অন্যান্যরা সহীহ মুসলীমের রাবী। তারা দু’জনে মা’রূফ(প্রসিদ্ধ)। এই হাদিসটির অপর একটি সূত্র ইবনু দিনার বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫০- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ বিশর ইবনু আকরবাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে কোন এক যুদ্ধে (গিয়ে) আমার বাবা শাহাদাতবরন করেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার পাশ দিযে যাচ্ছিলেন আর আমি তখন কাদঁতে ছিলাম। (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বলিলেন, চুপ হও (শান্ত থাক) তুমি কি খুশি হইবে না যদি আমি তোমার পিতা হই আর আয়েশা তোমার মা হন? (আস-সহীহাহ-৩২৪৯)
হাদিসটি হাসান। হাদিসটি বিশর ইবনু আকরবাহ তার পিতা থেকে রিওয়াত করিয়াছেন। হাদিসটি ইমাম বুখারী তার (আরবী) এর (২/৭৮); ইমাম ইবনু আসাকীর তার তারিখে দিমাশক’ (৩/২৬৯, ৩৮৯, ১০, ১৬০); ইমাম (আরবী) তার (আরবী) -এর হাদিস নং ৩৬৮৬২-তে রিওয়াত করিয়াছেন। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: “এর সানাদ বা হাসানের কাছাকাছি।” হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৫১- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ ইবনু আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক সারিয়া (ছোট সৈন্যবাহিনী) প্রেরণ করেন। তারা গানীমাত লাভ করে এবং তাহাদের মধ্যে (গানীমতের বস্তুর মধ্যে) এক ব্যক্তি ছিল। সে তাহাদের বলিল, আমি তাহাদের সদস্য নই। আমি এক মহিলার প্রেমে পড়েছি ফলে তার সাথে সাক্ষাৎ করেছি। আপনারা আমাকে সুযোগ দেন আমি তাকে একনজর দেখব। এরপর আমার সাথে আপনাদের যা মনে চায় তাই করুন। তারা দেখিতে পেল, এক দীর্ঘকায় গৌরবর্ন রমনী সে (লোকটি) তাকে (মহিলাকে) বলিল-
যদি আমি তোমার অনুগামী হতাম তবে তোমার সাথে অবস্থান করতাম অলংকারে ঝলমলে, কিংবা তোমাকে পেতাম গলায় রশি বদ্ধাবস্থায়। প্রেমিকের কি অধিকার নেই যে (প্রেমিকাকে) শান্তি ও মিলনের প্রাপ্য দিবে।
(রমণীটি) বলিল: হ্যা, আমাকে আমি তোমার জন্য উৎসর্গ করলাম। অতঃপর তারা (সৈন্যবাহিনী) অগ্রসর হয়ে তার গর্দান কেটে ফেলে। অতঃপর মহিলাটি তার নিকট এসে উচ্চ আওয়াজে চিৎকার করে মৃত্যুবরন করে। যখন তারা (সৈন্যবাহিনী) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়সাল্লাম)-এর নিকট আসে তখন তাকে এ ব্যাপারে অবহিত করানো হয়। তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) বলেন, তোমাদের মধ্যে কি কোন দয়ালু ব্যাক্তি ছিল না? (আস-সহীহাহ-১৫৯৪)
হাদিসটি হাসান। তাবারানী তার (আরবী)-এ ১/৩১৬; সুনানে নাসাঈ আল-কুবরা- ৫/২০১; তাবারানী আল-মু’জামুল কাবীর- ১১/৩৬৯/১২০৬৬; তাবারানী আল-মুজামুল আওসাত-১/১৯৬/১৬৯৮ (মাকতাবাহ শামেলা সংস্করন); বায়হাকীর দালায়েলুন নবুওয়্যাত’ ৫/১১৭-১৮; ইবনু মানদাহ তার আল-মারিফাহ’ ২/৮৯/২। তাবারানী বলেন: “এই সনদটি ছাড়া ইবনু আব্বাস (রাঃআঃ) থেকে আর কিছু বর্ণিত হয়নি। মুহাম্মাদ বিন আলী বিন হারব একক বর্ননাকারী।” শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: নাসাঈ তাকে ছিক্বাহ বলেছেন। হাদিসটি হাসান, যেভাবে হায়ছামী (রাহিমাহুল্লাহ) তার মাজমাউয যাওয়ায়েদ’-এ ৬/২১০ বলেছেন। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
৫২- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ সা’দ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যেদিন মাক্কা বিজয় হয় আব্দুল্লাহ ইবনু সা’দ ইবনু আবূ সরাহ উসমান ইবনু আফফান (রাঃআঃ)-এর নিকট আত্মগোপন করেছিল। তিনি (উসমান (রাঃআঃ)) তাকে নিয়ে আসলেন এবং নাবী (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) এর নিকট দাঁড় করিয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আব্দুল্লাহকে বাইআত করান। অতঃপর তিনি তার দিকে মাথা উঠালেন। অতঃপর তার দিকে তিনবার দৃষ্টিপাত করিলেন। প্রত্যেকবার তিনি (বাইআত করিতে) অস্বীকৃতি জানান। তৃতীয়বারের পরে তাকে বাইআত করান। অতঃপর সাহাবীদের নিকট আসলেন এবং বলিলেন, তোমাদের মাঝে কি কোন সঠিক পথপ্রাপ্ত ব্যক্তি নেই, যে এই ব্যক্তির নিকট দাঁড়িয়ে যখন আমাকে দেখেছে যে, আমি তাকে বাইআত করা থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছি? তখন তাকে হত্যা করিবে? তারা (সাহাবীগন) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার মনের কথা আমরা জানতে পারিনি। কেন আপনি চোখ দিয়ে আমাদের দিকে ইশারা করিলেন না? তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কোন নবীর জন্য সমীচীন নয় যে, তার চোখের খিয়ানত থাকিবে। (অর্থাৎ, আড়চোখে কিছু বলবে) (আস-সহীহাহ-১৭২৩)
হাদিসটি সহীহ। আবূ দাউদ হাদিস নং ২৬৮৩, ৪৩৫৯; নাসায়ী-২/১৭০; হাকিম-৩/৪৫; মুসনাদে আবু ইয়ালা-১/২১৬-১৭। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: বিভিন্ন সাক্ষ্যের ভিত্তিতে হাদিসটি সহীহ- ইনশাআল্লাহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫৩- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ যার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বন্ধু (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে সাতটি কাজ করিতে আদেশ করিয়াছেন। (ক) আমাকে দরিদ্রদের ভালবাসতে এবং তাহাদের সহাবস্থান করিতে আদেশ করিয়াছেন। (খ) আমার চেয়ে নিম্নস্তরের ব্যক্তিদের প্রতি তাকাতে আর আমার আমার চেয়ে উচ্চস্তরের ব্যক্তিদের প্রতি না তাকাতে আদেশ করিয়াছেন। (গ) আমাকে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করিয়াছেন যদিও তা (আত্মীয়তা) শীতল হয়ে যায়। (অর্থাৎ, তারা তেমন গুরুত্ব না দেয়)। (ঘ) আমাকে আদেশ করিয়াছেন যে, আমি যেন কারো কাছে কিছু না চাই। (ঙ) আমাকে সত্য বলিতে আদেশ করেছন, যদিও তা তিক্ত হয়। (চ) এবং আমাকে আদেশ করিয়াছেন, আমি যেন আল্লাহর পথে কোন ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনাকে পরওয়া না করি। (ছ) আমাকে আদেশ করিয়াছেন যে, আমি যেন অধিক হারে বলি- (লা- হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) কারণ, এ বাক্যগুলো আরশের খনি হইতে নেয়া হয়েছে।
অপর এক রিওয়ায়াতে এসেছে, কারণ এই বাক্যটি জান্নাতের খনিসমূহ হইতে একটি খনি। (আস-সহঅহাহ-২১৬৬)
হাদিসটি সহীহ। আহমাদ- ৫/১৫৯; সহীহ ইবনু হিব্বান হা. ২০৪১; তাবারানীর আল-মু’জামুস সগীর ৫ পৃষ্ঠা; আলখায়রাতী তার মাকারিমুল আখলাক্ব’ ২৫ পৃষ্ঠা; সুনানে বায়হাক্বী- ১০/৯১; আবু নাঈমের হিলইয়া- ২/৩৫৭; খতীবের তারিখ’ ৫/২৫৪। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: “এর সানাদ সহীহ এবং সমস্ত বর্ননাকারী ছিক্বাহ।” হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫৪- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ যার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবূ যার (রাঃআঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিশ্চয় তোমাদের ভাইগণ (দাস-দাসীগন) তোমাদের উপহার স্বরূপ। আল্লাহ তাহাদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। যার অধীনে তার ভাই থাকিবে তাকে যেন সে তা-ই খাওয়ায় যা সে খায়। আর তাকে তা-ই পরায় যা সে পরে। তাহাদের সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দিও না। যদি তাকে এমন কাজ করিতে দাও যা তার সাধ্যাতীত তবে তাকে সাহায্য কর। (আস-সহীহাহ- ২৮৪২)
হাদিসটি সহীহ। হাদিসটি আবূ যার (রাঃআঃ) মারফূ’ সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। সহীহ বুখারী- কিতাবুল ইতক্ব (আরবী); এবং তাহাঁর আল আদাবুল মুফরাদ’ হা. ২৯-এ হাদিসটি রিওয়ায়াত করিয়াছেন। আর আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫৫- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আনাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ মুমিনদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই পরিপূর্ণ ঈমানদার; যে তাহাদের মধ্যে সর্বাধিক চরিত্রবান। উত্তম চরিত্র অবশ্যই সালাত ও সাওমের মর্যাদায় পৌঁছে যাবে। (অর্থাৎ, উত্তম চরিত্রের মর্যাদা সালাত ও সাওমের তুলনায় নগন্য নয়।) (আস-সহীহাহ-১৫৯০)
হাদিসটি সহীহ। বাযযার তার মুসনাদে হা. ৩৫। তিনি বলেন: এটা যাকারিয়া ছাড়া আর কারো থেকে আমাদের জানা নেই। আমি (আলবানী) বলছি, তিনি ছিক্বাহ ও ইমাম বুখারীর শাইখদের একজন। হায়ছামী (রাহিমাহুল্লাহ) তার মাজমা’উয যাওয়ায়েদে’ ১/৫৮ বলেনঃ এটি বাযযার বর্ননা করিয়াছেন। এর বর্ননাকারীগন ছিক্বাহ।’ হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫৬- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ ইয়াজ ইবনু হিমার হইতে বর্ণিতঃ
ইয়াজ ইবনু হিমার নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি (নাবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাহাদের উদ্দেশ্য করে বলেনঃ আল্লাহ তাআলা আমার কাছে ওহী প্রেরন করিয়াছেন যে, তোমরা নম্রতা অবলম্বন কর। একজন যেন অন্যজনের উপর গর্ব-অহংকার না করে এবং একে অন্যের প্রতি জুলুম-অত্যাচার না করে। (আস- সহীহাহ- ৫৭০)
হাদিসটি সহীহ। সহীহ মুসলিম ৮/১৬০/৭৩৮৯ কিতাবুল জান্নাত ওয়াসিফাত না’য়ীমুল আহলিহা; ইবনু মাজাহ- ২/৫৪৫; আবু নাঈম তার আল-হিলইয়াহ’ ২/১৭। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫৭- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ সাহল ইবনু সা’দ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা দয়ালু। দয়ালু ও উন্নত চরিত্রবান ব্যক্তিকে তিনি ভালবাসেন আর অনর্থক উক্তিকারীকে (বাচালকে) অপছন্দ করেন। (আস-সহীহাহ- ১৩৭৮)
হাদিসটি সহীহ। হাকিম- ১/৪৮; আবু নাঈম তার আল-হিলইয়াহ’ ৩/২৫৫; ৮/১৩৩; আস-সালাফী তার মুজামুস সফর’ ১৮/১; হাকিম হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। অতঃপর শাইখ আলাবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটির বিভিন্ন সনদের বিশ্লেষণ শেষে বলেন “বিভিন্ন ইমামদের এই সমস্ত বক্তব্য দ্বারা বুঝা যায়, হাদিসটি যঈফুন জিদ্দান। যাকে কোন সাক্ষ্যমূলক হাদিস দ্বারা সংশোধন করা যায় না। সুতরাং পরবর্তী কথার উপরই নির্ভর করিতে হইবে।” শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) তার সহীহ জামেউস সগীরে’-ও (হাদিস নং ১৮০১) হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫৮- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যখন সৃষ্টি জগত সৃষ্টি করেন তখন দয়া আল্লাহ তা’আলার পাশে অবস্থান করিতে থাকে। (অতঃপর তিনি বলেন থেমে যাও) দয়া বলিল, এই স্থানটি বিচ্ছিন্নতা হইতে (আপনার নিকট প্রার্থিত) আশ্রয়ের স্থান। তিনি (আল্লাহ তা’আলা) বলিলেন, হ্যা। তুমি কি সন্তুষ্ট নও যে, তোমার সাথে যে সম্পর্ক গড়ে তুলবে আমি তার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলব। আর তোমার সাথে যে সম্পর্ক ছিন্ন করিবে তার থেকে তোমার সম্পর্ক আমি ছিন্ন করব? সে (দয়া) বলিল, (অবশ্যই) হ্যা, হে আমার প্রভু। তিনি বলেন, তা-ই (তোমার জন্য)। আবূ হুরাইরাহ (রাঃআঃ) বলেনঃ অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ তোমরা যদি চাও তবে পাঠ কর-
(আরবী) তোমরা কি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিবে (সত্য হইতে ফিরে যাবে) যে, যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করিবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করিবে? (তবে জেনে রেখ) ঐ সকল ব্যক্তিদের আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন। আল্লাহ তাহাদের অভিশাপ দিয়েছেন এবং তাহাদের দৃষ্টি অন্ধ করে দিয়েছেন। তারা কুরআন অনুধাবন করে না নাকি তাহাদের অন্তরে মোহর মারা হয়েছে? (আস-সহীহাহ- ২৭৪১)
হাদিসটি সহীহ। হাদিসটি আবূ হুরাইরা (রাঃআঃ) মারফূ’ সূত্রে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ “এর সানাদ সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের শর্তে সহীহ।” হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৫৯- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমার মিথ্যা ক্ষমা করে দিয়েছেন- (আরবি)-কে সত্যপ্রতিপন্ন করার কারণে। আনাস, ইবনু উমার, ইবনু আব্বাস ও হাসান বসরী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মুরসাল সূত্রে হাদিস বর্নিত হয়েছে। এই হাদিসের শব্দগুলো আনাস (রাঃআঃ)-এর হাদীছ থেকে নেয়া হয়েছে। আনাস (রাঃআঃ) থেকে বর্নিত; তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বলেনঃ হে অমুক! তুমি এমন কাজ করছ? সে বলিল, না। ঐ সত্তার শপথ! “যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।” নাবী (সাঃআঃ) জানতেন যে, সে ঐ কাজটি করেছে। তখন তিনি তাকে বলেছেন… অতঃপর তা (হাদিসটি) উল্লেখ করেন। (আস-সহীহাহ- ৩০৬৪)
হাদিসটি সহীহ। আবদ বিন হুমায়িদ তার আল-মুনতাখাব মিনাল মুসনাদ’ ৩/১৭৫/১৩৭৪; আবু ইয়ালা তাহাঁর মুসনাদে ৬/১০৪/৩৩৬৮; বাযযার- ৪/৭/৩০৬৮; উক্বায়লী তার আয-যুয়াফা’-তে ১/২১৩; ইবনু আদী তার কামীল’- ২/৬০৮; সুনানে বায়হাক্বী ১০/৩৭। এর সানাদ সালেহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
৬০- সিলসিলা সহিহা হাদিসঃ আব্দুল্লাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের মধ্যে উত্তম চরিত্র বন্টন করে দিয়েছেন। যেমন তিনি তোমাদের মাঝে রিজিক বন্টন করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা যাকে ভালাবাসেন তাকে দুনিয়া দিয়ে থাকেন, আবার যাকে অপছন্দ করেন তাকেও দিয়ে থাকেন। (অর্থাৎ, ভাল-মন্দ নির্বিশেষে সকলকে তিনি পার্থিব সম্পদ দিয়ে থাকেন।) আর তিনি ঐ ব্যক্তিকেই ঈমান দিয়ে থাকেন যাকে তিনি ভালবাসেন। যে ব্যক্তি অর্থ-সম্পদ খরচ হওয়ার ভয়ে কৃপনতা করে, দুশমনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে ভয় পায় এবং রাতে সফর করিতে আশংকা করে তবে সে যেন অধিক হারে পাঠ করে “সুবহানআল্লাহ” “ওয়াল হামদুলিল্লাহ” “ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার”। (আস-সহীহাহ- ২৭১৪)
হাদিসটি সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply