ঈমান সম্পর্কে হাদিস । পাঁচটি ভিত্তির উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত
ঈমান সম্পর্কে হাদিস । পাঁচটি ভিত্তির উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত , এই অধ্যায়ে মোট ২৯ টি হাদীস (২৬০৬ -২৬৪৪) >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়-৩৮ঃ ঈমান, অনুচ্ছেদঃ (১-১৮)=১৮টি
১. অনুচ্ছেদঃ যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ না বলবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাহাদের বিরুদ্ধে কিতাল করিতে আমি আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি ।
২. অনুচ্ছেদঃ আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ বলবে এবং নামাজ আদায় করিবে
৩. অনুচ্ছেদঃ পাঁচটি ভিত্তির উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত
৪. অনুচ্ছেদঃ জিবরীল [আঃ] কর্তৃক রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে ঈমান ও ইসলামের পরিচয় প্রদান
৫. অনুচ্ছেদঃ ঈমানের মৌলিক বিষয়ের সাথে ফরয কাজসমূহ সংশ্লিষ্ট
৬. অনুচ্ছেদঃ ঈমানের পূর্ণতা ও হ্রাসবৃদ্ধি
৭. অনুচ্ছেদঃ লজ্জা ও সম্ভ্রমবোধ ঈমানের অঙ্গ
৮. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মাহাত্ম্য
৯. অনুচ্ছেদঃ নামাজ ত্যাগের পরিণতি
১০. অনুচ্ছেদঃ ঈমানের স্বাদ লাভকারী ব্যক্তি
১১. অনুচ্ছেদঃ কেউ যিনায় লিপ্ত থাকা অবস্থায় মুমিন থাকে না
১২. অনুচ্ছেদঃ যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে সে-ই প্রকৃত মুসলিম
১৩. অনুচ্ছেদঃ ইসলামের সূচনা হয়েছে অপরিচিত অবস্থায় এবং অচিরেই অপরিচিত হইবে
১৪. অনুচ্ছেদঃ মুনাফিক্বের আলামত [নিদর্শন]
১৫. অনুচ্ছেদঃ মুমিনকে গালি দেয়া ফাসিক্বী [পাপ]
১৬. অনুচ্ছেদঃ কেউ তার ভাইকে কুফ্রীর অপবাদ দিলে
১৭. অনুচ্ছেদঃ “আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্রভু নেই” এই সাক্ষ্যে অটল থেকে যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে
১৮. অনুচ্ছেদঃ এই উম্মাতের অনৈক্য
১. অনুচ্ছেদঃ যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ না বলবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাহাদের বিরুদ্ধে কিতাল করিতে আমি আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি ।
২৬০৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানুষ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই”-এর স্বীকারোক্তি না করা পর্যন্ত আমি তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি। তারা এটা বললে [একত্ববাদে ঈমান আনলে] তাহাদের রক্ত [জান] ও সম্পদ আমার থেকে নিরাপদ হইবে। তবে ইসলামের অধিকার সম্পর্কে ভিন্ন কথা [অর্থাৎ- অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হইবে]। আর তাহাদের চূড়ান্ত হিসাব আল্লাহ তাআলার দায়িত্বে।
সহীহ মুতাওয়াতিরঃ ইবনি মা-জাহ [৭১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। জাবির, আবু সাঈদ ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬০৭. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মৃত্যুর পর আবু বকর [রাদি.] যখন খালীফা নির্বাচিত হন, তখন আরবের কিছু সংখ্যক লোক কাফির হয়ে যায়। উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] আবু বকর [রাদি.]-কে বলিলেন, আপনি এদের বিরুদ্ধে কিভাবে অস্ত্ৰধারণ করবেন, অথচ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানুষ যে পর্যন্ত না
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই” এই কথার স্বীকৃতি দিবে সেই পর্যন্ত আমি তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হয়েছি। আর যে ব্যক্তি বললো, “আল্লাহ ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই” সে আমার থেকে তার মাল ও রক্ত [জীবন] নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামের অধিকার সম্পর্কে ভিন্ন কথা। আর তাহাদের প্রকৃত হিসাব-নিকাশ রহিয়াছে আল্লাহ তাআলার দায়িত্বে। আবু বকর [রাদি.] বললেনঃ আল্লাহ্র শপথ! নামাজ ও যাকাতের মধ্যে যে ব্যক্তি পার্থক্য করে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবোই। কেননা যাকাত সম্পদের হাক্ব। কেউ উটের একটি রশি দিতেও যদি অস্বীকার করে, যা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দিত, আল্লাহ্র কসম! আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবোই। তারপর উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি দেখিতে পেলাম আল্লাহ যেন যুদ্ধের জন্য আবু বাক্রের অন্তর উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। অতঃপর আমি বুঝতে পারলাম যে, তার সিদ্ধান্তই যথার্থ।
সহীহঃ সহীহাহ্ [৪০৭], সহীহ আবু দাঊদ [১৩৯১-১৩৯৩], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ । শুআইব ইবনি আবী হামযা [রঃ] যুহ্রী হইতে, তিনি উবাইদুল্লাহ ইবনি আব্দিল্লাহ হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সূত্রে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন । এই হাদীস মামার-যুহ্রী হইতে, তিনি আনাস [রাদি.] হইতে, তিনি আবু বাক্র [রাদি.] হইতে এই সূত্রে ইমরান আল-কাত্তান বর্ণনা করিয়াছেন । এ বর্ণনাটি ভুল । ইমরানের ব্যাপারে মামার হইতে বর্ণিত বর্ণনাতে বিরোধিতা করা হয়েছে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২. অনুচ্ছেদঃ আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ বলবে এবং নামাজ আদায় করিবে
২৬০৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দিবে যে,
اَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই এবং মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] আল্লাহ তাআলার বান্দা ও তাহাঁর রাসূল এবং আমাদের কিবলামুখী হয়ে নামাজ আদায় করিবে, আমাদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাবে এবং আমাদের মতো নামাজ আদায় করিবে। তারা এগুলো করলে তাহাদের জান ও মালে হস্তক্ষেপ করা আমাদের জন্য হারাম হয়ে যাবে। কিন্তু ইসলামের অধিকারের বিষয়টি ভিন্ন। মুসলিমদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা তারাও পাবে এবং মুসলিমদের উপর অর্পিত দায়-দায়িত্ব তাহাদের উপরও বর্তাবে।
সহীহঃ সহীহাহ্ [৩০৩] ও [১/১৫২], সহীহ আবু দাঊদ [২৩৭৪], বুখারী অনুরূপ। মুআয ইবনি জাবাল ও আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব । ইয়াহ্ইয়া [রঃ],হুমাইদ হইতে, তিনি আনাস [রাদি.]-এর সূত্রে একই রকম হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩. অনুচ্ছেদঃ পাঁচটি ভিত্তির উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত
২৬০৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পাচটি ভিত্তির উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিতঃ [১] এই কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই এবং মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] আল্লাহ্র রাসূল, [২] নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, [৩] যাকাত প্রদান করা, [৪] রামাযানের রোযা রাখা ও [৫] বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ্ব সম্পাদন করা।
সহীহঃ ইরওয়াহ্ [৭৮১], ঈমান আবী উবাইদ [২], রাওযুন নায়ীর [২৭০]। জারীর ইবনি আব্দুল্লাহ [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ । ইবনি উমার [রাদি.]-এর বরাতে একাধিক সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে একই রকম হাদীস বর্ণিত আছে । সুআইর ইবনি খিম্স হাদীস বিশারদগণের মতে সিকাহ বর্ণনাকারী । আবু কুরাইব-ওয়াকী হইতে, তিনি হানযালা ইবনি আবু সুফ্ইয়ান আল-জুমাহী হইতে, তিনি ইকরিমাহ্ ইবনি খালিদ আল-মাখযূমী হইতে, তিনি ইবনি উমার [রাদি.] হইতে উপরোক্ত হাদীসের সমার্থক হাদীস বর্ণিত আছে । এই সনদে বর্ণিত হাদীসটিও হাসান সহীহ । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪. অনুচ্ছেদঃ জিবরীল [আঃ] কর্তৃক রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে ঈমান ও ইসলামের পরিচয় প্রদান
২৬১০. ইয়াহ্ইয়া ইবনি ইয়ামার [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তাক্বদীর মতবাদের ব্যাপারে সর্বপ্রথম মাবাদ আল-জুহানীই কথা বলেন। কোন এক সময় আমি ও হুমাইদ ইবনি আব্দুর রাহমান আল-হিময়ারী মাদীনায় আসলাম এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলাম, আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কোন সাহাবীর সাক্ষাৎ পেলে এসব লোকেরা যে নতুন কথা বের করেছে সেই বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করতাম। আমরা আব্দুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-এর দেখা পেলাম। তিনি মাসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন। আমি ও আমার সাথী গিয়ে তার পাশে পাশে চললাম। আমি মনে করলাম আমার সঙ্গী আমার উপরি কথা বলার দায়িত্ব দিবেন। তাই আমি বললাম, হে আবু আব্দুর রাহমান! কিছু সংখ্যক লোক কুরআন তিলাওয়াত করে, জ্ঞানও অন্বেষণ করে, কিন্তু তাহাদের ধারণায় তাক্বদীর বলিতে কিছু নেই, যা কিছু হচ্ছে তা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটে। ইবনি উমার [রাদি.] বলিলেন, তাহাদের সাথে তোমার দেখা হলে বলবে, তাহাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই এবং তারাও আমার হইতে সম্পর্ক মুক্ত। তারপর ইবনি উমার [রাদি.] আল্লাহ তাআলার নামে শপথ করে বলেন, তাহাদের কেউ উহূদ পাহাড় সমান স্বর্ণ দান-খাইরাত করলেও তা গ্রহণ করা হইবে না, তাক্বদীরের ভাল-মন্দের উপর যে পর্যন্ত না সে ঈমান আনবে। তারপর তিনি বলিলেন, উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] বলেছেনঃ কোন এক সময় আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে বসে ছিলাম। এমন সময় সাদা ধব্ধবে জামা পরা এবং কালো কুচকুচে চুলধারী এক লোক এসে উপস্থিত। তার মধ্যে সফরের কোন চিহ্নও ছিল না এবং আমাদের মধ্যে কেউই তাকে চিনতে পারলো না। তারপর তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর সামনে এসে তার হাঁটুদ্বয় রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাঁটুদ্বয়ের সাথে মিলিয়ে বসলেন। অতঃপর তিনি প্রশ্ন করেন, হে মুহাম্মাদ! ঈমান কি? তিনি বললেনঃ ঈমান হলো-তুমি আল্লাহ, তাহাঁর ফেরেশতাকুলে, কিতাবসমূহে, রাসূলগণে, পরকালে এবং তাক্বদীরের ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস স্থাপন কর। আগন্তুক প্রশ্ন করিলেন, ইসলাম কি? তিনি বললেনঃ এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই এবং মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] আল্লাহ্র বান্দা ও তার রাসূল, নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ্ব আদায় করা এবং রামাযানের রোযা রাখা। তিনি আবার প্রশ্ন করেন, ইহ্সান কি? তিনি বললেনঃ তুমি [এমনভাবে] আল্লাহ তাআলার ইবাদাত করিবে যেন তুমি তাঁকে দেখছো। তুমি যদি তাঁকে না দেখ তাহলে অবশ্যই তিনি তোমাকে দেখেন। বর্ণনাকারী বলেন, প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরেই তিনি বলিতেন, আপনি সত্যই বলেছেন। তার এই আচরণে আমরা অবাক হলাম যে, তিনিই প্রশ্ন করছেন আবার তিনিই তা সমর্থন করছেন। তিনি আবার প্রশ্ন করেন, কখন ক্বিয়ামাত সংঘটিত হইবে? তিনি এবার বললেনঃ জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি এই ব্যাপারে প্রশ্নকারীর চাইতে বেশি কিছু জানে না। তিনি আবার প্রশ্ন করেন, এর নিদর্শনগুলো কি কি? তিনি বললেনঃ যখন দাসী তার মনিবকে প্রসব করিবে এবং খোলা পা, উলঙ্গ শরীরের অভাবী মেষপালক রাখালগণকে বিশাল দালান-কোঠার প্রতিযোগিতায় গর্ব করিতে দেখবে। উমার [রাদি.] বলেন, তারপর নাবী [সাঃআঃ] তিনদিন পর আমার সাক্ষাৎ পেয়ে প্রশ্ন করেনঃ হে উমার! তুমি কি জানো, ঐ প্রশ্নকারী কে ছিলেন? তিনি ছিলেন জিবরীল [আঃ], তোমাদেরকে ধর্মীয় অনুশাসন শিখাতে এসেছিলেন।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [৬৩], মুসলিম। উক্ত মর্মে আহ্মাদ ইবনি মুহাম্মাদ-ইবনিল মুবারাক হইতে, তিনি কাহ্মাস ইবনিল হাসান [রঃ] সূত্রে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন । মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না-মুআয ইবনি হিশাম-কাহ্মাস [রাদি.] সূত্রে উক্ত মর্মে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন । তালহা ইবনি উবাইদুল্লাহ, আনাস ইবনি মালিক ও আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ । এ হাদীসটি একাধিকসূত্রে উমার [রাদি.] হইতে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে । ইবনি উমার [রাদি.]-এর সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে হাদীসটি বর্ণিত হলেও সঠিক সনদসূত্র হলো ইবনি উমার-উমার [রাদি.]-এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫. অনুচ্ছেদঃ ঈমানের মৌলিক বিষয়ের সাথে ফরয কাজসমূহ সংশ্লিষ্ট
২৬১১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আব্দুল কাইস বংশের একটি প্রতিনিধিদল এসে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলে, আমরা রাবীআ বংশের লোক। আমরা আপনার নিকট হারাম মাসগুলো ছাড়া আসতে পারি না। সুতরাং আমাদেরকে এমন কতগুলো বিষয়ের আদেশ করুন, যা আমরা ধারণ করিতে পারি এবং যারা আমাদের পিছনে আছে তাহাদেরকেও সেগুলোর দাওয়াত দিতে পারি। তিনি বলিলেন, আমি তোমাদেরকে চারটি বিষয়ের আদেশ করছিঃ আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান আনয়ন, তারপর এই কথার ব্যাখ্যা করে বললেনঃ এই সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্রভু নেই, আমি আল্লাহ্র রাসূল, নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত দেয়া এবং গানীমাতের সম্পদের এক-পঞ্চমাংশ [বাইতুল মালে] প্রদান করা।
সহীহঃ ঈমান আবী উবাইদ, পৃষ্ঠা [৫৮-৫৯], মুসলিম। কুতাইবাহ্-হাম্মাদ ইবনি যাইদ হইতে, তিনি আবু হামযা হইতে, তিনি ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে এই সূত্রে উপরের হাদীসের মতো বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ । আবু হামযা আয্-যুবাঈর নাম নাসর ইবনি ইমরান । এই হাদীসটি আবু হামযার সূত্রে শুবাহ [রঃ]ও বর্ণনা করিয়াছেন । তবে তাতে এভাবে আছে, তোমরা কি অবগত আছো যে, ঈমান কি? এই সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্ৰভু নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল….. তারপর পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন । কুতাইবা ইবনি সাঈদ বলেন, আমি নিম্নবর্ণিত চারজন উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ফাকীহ্র মতো আর দেখিনিঃ মালিক ইবনি আনাস, আল-লাইস ইবনি সাদ, আব্বাদ ইবনি আব্বাদ আল-মুহাল্লাবী ও আব্দুল ওয়াহ্হাব আস্-সাকাফী [রঃ] । কুতাইবাহ্ আরো বলেন, আমরা এতে সন্তুষ্ট যে, আমরা প্রতি দিন আব্বাদ ইবনি আব্বাদের নিকট হইতে দুটি করে হাদীস সংগ্রহ করে ফিরবো । আব্বাদ হলেন আল-মুহাল্লাব ইবনি আবু সুফ্রার বংশধর । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬. অনুচ্ছেদঃ ঈমানের পূর্ণতা ও হ্রাসবৃদ্ধি
২৬১২. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যার চরিত্র ভালো এবং যে নিজ পরিবার-পরিজনের সাথে দয়ার্দ্র ব্যবহার করে সে-ই ঈমানের দিক হইতে পরিপূর্ণ মুমিন।
যঈফ, সহীহা [২৮৪] হাদীসের আওতায়। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি সহীহ। আবু কিলাবা [রঃ] আইশা [রাদি.] হইতে হাদীস শুনেছেন বলে আমাদের জানা নাই। অবশ্য তিনি আইশা [রাদি.]-এর দুধভাই আব্দুল্লাহ ইবনি ইয়াযীদ-আইশা [রাদি.] হইতে অন্যান্য হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। আবু কিলাবার নাম আব্দুল্লাহ ইবনি যাইদ আল-জারমী। ইবনি আবু উমার-সুফিয়ান ইবনি উয়াইনা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন তিনি বলেন, আইয়ূব আস-সিখতিয়ানী [রঃ] আবু কিলাবার আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, আল্লাহ্ তাআলার শপথ! তিনি ছিলেন প্রজ্ঞাবান ফাকীহগণের অন্তর্ভুক্ত। উমারাহ ইবনি গাযিয়্যাহ এই হাদীসটি আবু সালিহ হইতে আবু হুরাইরার সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এই শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন “আল-ঈমানু আরবায়াতুন ওয়া সিত্তুনা বাবান” ঈমানের ৬৪টি দরজা আছে। এ শব্দটি শাজ। ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২৬১৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
জনতার উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নাসীহাতপূর্ণ খুতবাহ প্রদান করেন এবং বলেনঃ হে নারী সম্প্রদায়! তোমরা বেশি পরিমাণে দান-খয়রাত কর। কেননা, জাহান্নামে তোমাদের সংখ্যাই বেশি হইবে। তাহাদের মধ্যকার এক মহিলা প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! তা কেন? তিনি বললেনঃ তোমাদের মাঝে অভিশাপ দানের প্রবণতার আধিক্যের কারণে, অর্থাৎ- তোমাদের স্বামীদের অনুগ্রহের প্রতি অকৃতজ্ঞ হবার কারণে। তিনি আরো বলেনঃ আমি তোমাদের স্বল্পবুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যাপারে সংকীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বুদ্ধিমান বিচক্ষণদের উপর বিজয়ী হইতে পারঙ্গম আর কাউকে দেখিনি। জনৈকা মহিলা প্রশ্ন করলো, তার বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যাপারে কমতি হলো কি করে? তিনি বললেনঃ তোমাদের দুজন স্ত্রীলোকের সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান। এটা হলো বুদ্ধির স্বল্পতা। আর তোমাদের হায়িয [ঋতুস্রাব] হলে তিন-চার দিন তোমরা নামাজ আদায় কর না। এটা হলো দ্বীনের স্বল্পতা।
সহীহঃ ইরওয়াহ্ [১/২০৫], আয্যিলাল [৯৫৬], মুসলিম। আবু সাঈদ ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ । এই সনদ সূত্রে গারীব । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬১৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঈমানের দরজা [স্তর] হলো সত্তরের অধিক। তার সর্বনিম্ন স্তর হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা এবং সর্বোচ্চ স্তর হলো লা- ইলাহা ইল্লাল্লা-হ বলা।
সহীহঃ সহীহাহ্ [১৩৬৯], বুখারীর বর্ণনায় ষাটের অধিক এবং মুসলিমের বর্ণনায় সত্তরের অধিক উল্লেখ আছে। আর এটাই অগ্রগণ্য। তাখরীজুল ঈমান [২১/৬৭]। আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ । সুহাইল ইবনি আবী সালিহ [রঃ] আব্দুল্লাহ ইবনি দীনার হইতে, তিনি আবু সালিহ হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সূত্রে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন । এ হাদীসটি আবু সালিহ-আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এই সূত্রে উমারাহ্ ইবনি গাযিয়্যাহ্ [রঃ] বর্ণনা করিয়াছেন । তাতে আছেঃ “ঈমানের চৌষট্টিটি দরজা [স্তর] আছে” । এই অর্থে হাদীসটি শাজ । কুতাইবা-বাক্র ইবনি মুযার হইতে, তিনি উমারাহ্ ইবনি গাযিয়্যাহ্ হইতে, তিনি আবু সালিহ হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এই সূত্রে তা বর্ণিত হয়েছে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭. অনুচ্ছেদঃ লজ্জা ও সম্ভ্রমবোধ ঈমানের অঙ্গ
২৬১৫. সালিম [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন একজনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে তার ভাইকে লজ্জা সম্পর্কে উপদেশ দিচ্ছিল। তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ লজ্জা ও সম্ভ্রমবোধ ঈমানের অঙ্গ।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [৫৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আহ্মাদ ইনবু মানি কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে আছে, নাবী [সাঃআঃ] কোন একজনকে তার ভাইকে লজ্জা সম্পর্কে উপদেশ দিতে শুনলেন । এ হাদীসটি হাসান সহীহ । আবু হুরাইরাহ্, আবু বাকরাহ্ ও আবু উমামাহ্ [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮. অনুচ্ছেদঃ নামাযের মাহাত্ম্য
২৬১৬. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি কোন এক ভ্রমণে নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। একদিন যেতে যেতে আমি তার নিকটবর্তী হলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]! এমন একটি কাজ সম্পর্কে আমাকে জানিয়ে দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম হইতে দূরে রাখবে। তিনি বললেনঃ তুমি তো আমাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশ্ন করেছো। তবে সেই ব্যক্তির জন্য এ ব্যাপারটা অতি সহজ যে ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তাআলা তা সহজ করে দেন। তুমি আল্লাহ তাআলার ইবাদাত করিবে, কোন কিছুকে তাহাঁর সাথে শরীক করিবে না, নামাজ প্রতিষ্ঠা করিবে, যাকাত দিবে, রামাযানের রোযা রাখবে এবং বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ করিবে। তিনি আরো বললেনঃ আমি কি তোমাকে কল্যাণের দরজাসমূহ সম্পর্কে বলে দিব না? রোযা হলো ঢালস্বরূপ, দান-খাইরাত গুনাহ্সমূহ বিলীন করে দেয়, যেমনিভাবে পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয় এবং কোন ব্যক্তির মধ্যরাতের নামাজ আদায় করা। তারপর তিনি এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ “তাহাদের দেহ পাশ বিছানা থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং তারা তাহাদের প্রভুকে ডাকে আশায় ও ভয়ে এবং আমি তাহাদেরকে যে রিয্ক দান করেছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। কেউই জানে না তাহাদের জন্য নয়নপ্রীতিকর কি লুকিয়ে রাখা হয়েছে তাহাদের কৃতকর্মের পুরস্কারস্বরূপ।” [সূ-রা আস-সাজদাহ ১৬, ১৭]
তিনি আবার বলেনঃ আমি কি সমস্ত কাজের মূল, স্তম্ভ ও সর্বোচ্চ শিখর সম্পর্কে তোমাকে অবহিত করবো না? আমি বললাম, হ্যাঁ, ইয়া রসুলুল্লাহ! তিনি বললেনঃ সকল কাজের মূল হলো ইসলাম, স্তম্ভ হলো নামাজ এবং সর্বোচ্চ শিখর হলো জিহাদ। তিনি আরো বললেনঃ আমি কি এসব কিছুর সার সম্পর্কে তোমাকে বলব না? আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহ্র রাসূল! তিনি তাহাঁর জিহ্বা ধরে বললেনঃ এটা সংযত রাখ। আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ্র নাবী! আমরা যে কথা-বার্তা বলি এগুলো সম্পর্কেও কি পাকড়াও করা [জবাবদিহি] হইবে? তিনি বললেনঃ হে মুআয! তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক! মানুষকে শুধুমাত্র জিহ্বার উপার্জনের কারণেই অধঃমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হইবে।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [৩৯৭৩]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬১৭. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা কাউকে মাসজিদের খিদমতে নিয়োজিত দেখলে তাকে ঈমানদার বলে সাক্ষ্য দিও। কেননা আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلاَةَ وَآتَى الزَّكَاةَ
“আল্লাহ়র মাসজিদসমূহের তো তারাই রক্ষনাবেক্ষণ করে, যারা আল্লাহ্ ও পরকালে ঈমান রাখে, নামাজ কায়িম করে এবং যাকাত প্রদান করে”। [সূরাদি. তাওবা – ১৮]
যঈফ, ইবনি মাযাহ [৮০২] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব হাসান। ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৯. অনুচ্ছেদঃ নামাজ ত্যাগের পরিণতি
২৬১৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কুফর ও ঈমানের মধ্যে পার্থক্য হল নামাজ ত্যাগ করা।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [১০৭৮], মুসলিম। ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬১৯. আমাশ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আমাশ [রঃ] হইতেও উপরোক্ত সনদে একই রকম হাদীস বর্ণিত আছে। এতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বান্দাহ্ ও শির্কের মধ্যে অথবা বান্দাহ্ ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হল নামাজ ত্যাগ করা।
সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস। আবু ঈসা বলেন, এ হদীসটি হাসান সহীহ । আবু সুফ্ইয়ানের নাম তালহা ইবনি নাফি । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬২০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [মুমিন] বান্দাহ্ ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হল নামাজ ত্যাগ করা।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ, মুসলিম. আবু ঈসা বলেন, এ হদীসটি হাসান সহীহ । আবুয যুবাইরের নাম মুহাম্মাদ ইবনি মুসলিম ইবনি তাদরুস । তিনি তাদলীস করেন বলে প্রসিদ্ধ । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬২১. বুরাইদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাদের ও তাহাদের [কাফিরদের] মধ্যে [মুক্তির] যে প্রতিশ্রুতি আছে তা হল নামাজ। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেয়, সে কুফ্রী কাজ করে।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [১০৭৯] আনাস ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এ হাদীস টি হাসান সহীহ গারীব । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬২২. আবদুল্লাহ ইবনি শাক্বীক্ব আল-উক্বাইলী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]–এর কোন সাহাবী নামাজ ব্যতীত অন্য কোন আমাল ছেড়ে দেয়াকে কুফুরী কাজ মনে করিতেন না।
সহীহঃ সহীহুত্ তারগীব [১/২২৭-৫৬৪] আবু ঈসা বলেন, আমি আবু মুসআব আল-মাদানীকে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি বলে যে, “শুধুমাত্র মৌখিক স্বীকৃতির নামই ঈমান” তাকে ত্বাওবাহ করিতে বলা হইবে, ত্বাওবাহ না করলে তাকে হত্যা করিতে হইবে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১০. অনুচ্ছেদঃ ঈমানের স্বাদ লাভকারী ব্যক্তি
২৬২৩. আল-আব্বাস ইবনি আবদিল মুত্তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে বলিতে শুনেছেনঃ সেই ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ লাভ করেছে, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তাআলাকে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-কে নাবী হিসেবে খুশী মনে মেনে নিয়েছে।
সহীহঃ মুসলিম [১/৪৬] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬২৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তির মধ্যে তিনটি গুণ রয়েছে সে ঈমানের স্বাদ লাভ করেছে। [১] যে ব্যক্তির কাছে আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই অন্য সকল কিছু হইতে প্রিয়তর, [২] যে আল্লাহ্ তাআলার ওয়াস্তে কোন মানুষকে ভালবাসে এবং [৩] আল্লাহ্ তাআলা কাউকে [ঈমানের মাধ্যমে] কুফ্রী হইতে মুক্তিদানের পর সে আবার তাতে ফিরে যেতে এতটা অপছন্দ করে যতটা অপছন্দ করে আগুনে নিক্ষিপ্ত হইতে।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [৪০৩৩], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । কাতাদাহ [রাদি.] এ হাদীসটি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]–এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করা করিয়াছেন । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১১. অনুচ্ছেদঃ কেউ যিনায় লিপ্ত থাকা অবস্থায় মুমিন থাকে না
২৬২৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যিনাকারী যিনায় লিপ্ত থাকা অবস্থায় মুমিন থাকেনা, চোর চুরি করার সময় মুমিন থাকেনা। তবে তাওবাহ্ করার সুযোগ আছে।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [৩৯৩৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। ইবনি আব্বাস, আয়িশা ও আবদুল্লাহ ইবনি আবী আওফা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, আবু হুরায়রা্ [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ এবং এ সূত্রে গারীব। অধিকন্তু আবু হুরায়রা্ [রাদি.] হইতে বর্ণিত, নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ “বান্দা যখন যিনায় লিপ্ত থাকে, তখন ঈমান তার থেকে বেরিয়ে যায় এবং ছায়ার মত তার মাথার উপর অবস্থান করে। তারপর সে যখন সেই দুষ্কর্ম হইতে সরে আসে তখন ঈমান ও তার মাঝে ফিরে আসে।”
আবু জাফর মুহাম্মাদ ইবনি আলী [রঃ] হইতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, “অপরাধী ব্যক্তি এ ধরনের পরিস্থিতিতে ঈমানের স্তর হইতে বেরিয়ে ইসলামের স্তরে নেমে আসে”। একাধিক সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত , তিনি যিনা ও চুরি সম্পর্কে বলেন, “যে ব্যক্তি যিনা ও চুরির অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছে এবং তার উপর হদ্দ [নির্ধারিত শাস্তি] কার্যকর করা হয়েছে, তাতে তার গুনাহ্র কাফফারা হয়ে গেছে। আর কেউ এ অপরাধে লিপ্ত হলে এবং আল্লাহ্ তাআলা তা গোপন রাখলে এটা আল্লাহ্ তাআলার ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। তিনি চাইলে কিয়ামাত দিবসে তাকে শাস্তি ও দিতে পারেন, ক্ষমাও করিতে পারেন।” সহীহঃ সহীহাহ্ [২৩১৭], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। তাছাড়া এ হাদীসটি আলী ইবনি আবু তালিব, উবাদাহ ইবনিস সামিত ও খুযাইমাহ্ [রাদি.] প্রমুখগণ নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
২৬২৬. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তি হাদ্দযোগ্য অপরাধ করলে এবং দুনিয়াতেই তার উপর হাদ্দ কার্যকর হলে আল্লাহ্ তাআলা তার বান্দাকে পরকালে আবার শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে অবশ্যই ন্যায়বিচারক। আর কোন ব্যক্তি হাদ্দযোগ্য অপরাধ করলে, আল্লাহ তাআলা তার অপরাধ গোপন রাখলে এবং ক্ষমা করলে তিনি তাকে ক্ষমা করার পর আবার শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে অবশ্যই অধিক দয়াপরবশ।
যঈফ, ইবনি মাযাহ [২৬০৪] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। বিশেষজ্ঞ আলিমগণও ও মতই পোষণ করেন। তাহাদের কেউ যেনা, চুরি, ইত্যাদি অপরাধের দরুন তাকে কাফির বলে ফতোয়া দিয়েছেন বলে আমাদের জানা নাই। ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১২. অনুচ্ছেদঃ যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে সে-ই প্রকৃত মুসলিম
২৬২৭. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে সে ব্যক্তিই প্রকৃত মুসলিম। আর যাকে মানুষ তাহাদের জান ও মালের জন্য নিরাপদ মনে করে সে-ই প্রকৃত মুমিন।
হাসান সহীহঃ মিশকাত তাহক্বিক্ব সানী [৩৩], সহীহাহ্ [৫৪৯] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । অপর বর্ণনায় আছে, নাবী [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করা হল যে, কোন ব্যক্তি মুসলমানদের মধ্যে সবচাইতে উত্তম ? তিনি বললেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে । জাবির, আবু মূসা ও আব্দুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৬২৮. আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ]–কে প্রশ্ন করা হল, কোন ব্যক্তি মুসলিমদের মধ্যে সবচাইতে উত্তম? তিনি বললেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে।
সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এটি ২৫০৪ নং হাদীসের পুনরুক্তি। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং আবু মূসা [রাদি.]–এর সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত হাদীস হিসেবে গারীব । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩. অনুচ্ছেদঃ ইসলামের সূচনা হয়েছে অপরিচিত অবস্থায় এবং অচিরেই অপরিচিত হইবে
২৬২৯. আব্দুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অপরিচিত অবস্থায় ইসলামের সূচনা হয়েছে এবং যে অবস্থায় তার সূচনা হয়েছিল আবার সে রকম অপরিচিত অবস্থায় ইসলাম ফিরে আসবে। সুতরাং অপরিচিতদের জন্যই সু-সংবাদ।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ[৩৯৮৮], মুসলিম। সাদ, ইবনি উমার, জাবির, আনাস ও আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ, ইবনি মাসউদ [রাদি.]–এর বর্ণনা হিসেবে গারীব । আমরা এ হাদীস শুধুমাত্র হাফ্স ইবনি গিয়াস হইতে আমাশের সুত্রেই জেনেছি । আবুল আহ্ওয়াসের নাম আওফ ইবনি মালিক ইবনি নাযলা আল-জুশমী । হাফ্স এ হাদীসটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬৩০. কাসীর ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আওফ ইবনি যাইদ ইবনি মিলহা [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সাপ যেভাবে [সংকুচিত] হয়ে তার গর্তে ফিরে যায় তেমনি দ্বীন ইসলামও এক সময় সংকুচিত হয়ে হিজাযে ফিরে আসবে। পাহাড়ী বকরী যেমন পাহাড় শৃংগে আশ্রয় নেয়, দ্বীন ইসলামও তেমন হিজাযে আশ্রয় নিবে। দ্বীন ইসলাম তো অপরিচিত অবস্থায় যাত্রা শুরু করছিল এবং অচিরেই অপরিচিত অবস্থায় ফিরে আসবে অর্থাৎ অপরিচিত হয়ে যাবে। সুতরাং অপরিচিতদের জন্য সুসংবাদ, যারা আমার সুন্নাত বিপর্যস্ত হয়ে যাবার পর তা পুনরুজ্জীবিত করে।
অত্যন্ত দূর্বল, সহীহা [১২৭৩] নং হাদীসের আওতায়। মিশকাত [১৭০] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১৪. অনুচ্ছেদঃ মুনাফিক্বের আলামত [নিদর্শন]
২৬৩১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুনাফিক্বের আলামত বা নিদর্শন তিনটি। সে [১] কথা বললে মিথ্যা বলে, ; [২] ওয়াদাহ্ করলে তা ভঙ্গ করে এবং [৩] তার নিকট আমানাত রাখা হলে সে তার খিয়ানত করে।
সহীহঃ ঈমান আবী উবাইদ, পৃষ্ঠা [৯৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং আল-আলার বর্ণনা হিসেবে গারীব । আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে একাধিক সূত্রে এই মর্মে নাবী [সাঃআঃ] এর হাদীস বর্ণিত আছে । আব্দুল্লাহ ইবনি মাসউদ, আনাস ও জাবির [রাযিঃ ] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । উপরোক্ত হাদীসের মত হাদীস আলী ইবনি হুজ্র-ইসমাইল ইবনি জাফার হইতে, তিনি আবু সুহাইল ইবনি মালিক হইতে, তিনি তার বাবা হইতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে এই সূত্রে বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এ সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি সহীহ । আবু সুহাইল হলেন মালিক ইবনি আনাস [রঃ]–এর চাচা, তার নাম নাফি । ইবনি মালিক ইবনি আবী আমির আল-আসবাহী আল-খাওলানী । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬৩২. আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তির মধ্যে চারটি অভ্যাস রয়েছে সে মুনাফিক্ব। আর যার মধ্যে এগুলোর কোন একটি অভ্যাস থাকে, তা ত্যাগ করার পূর্ব পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিক্বীর একটি স্বভাব থাকে। যে কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদাহ্ করলে তা ভঙ্গ করে, ঝগড়া করলে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে এবং চুক্তি করলে বিশ্বাসঘাতকতা করে।
এ হাদীসটি হাসান সহীহ। হাসান ইবনি আলী আল-খাল্লাল-আবদুল্লাহ ইবনি নুমাইর হইতে, তিনি আমাশ হইতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনি মুর্রাহ [রঃ]–এর সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের সমার্থক হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এ সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি ও হাসান সহীহ । বিশেশজ্ঞ আলিমগণ মনে করেন এ হাদীসের তাৎপর্য হল, কার্যকলাপে মুনাফিক্বী, এখনো যা বিদ্যমান আছে । আর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর যুগে মুনাফিক্বী ছিল ইসলামকে অস্বীকার করার মুনাফিক্বী । হাসান বাস্রী [রঃ] হইতে একই রকম ব্যাখ্যা বর্ণিত আছে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৬৩৩. যাইদ ইবনি আরকাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কেউ যদি কোন ওয়াদা করে এবং তা পুরা করার নিয়াত করে; কিন্তু কোন কারণে তা পুরা করিতে না পারে, তাহলে এজন্য তার কোন গুনাহ হইবে না।
যঈফ, মিশকাত [৪৮৮১], যঈফা [১৪৪৭] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। এর সনদ মজবুত নয়। আলী-ইবনি আব্দুল আলা নির্ভরযোগ্য রাবী। আবু নুমান এবং আবু ওক্কাস এ দুইজন অপরিচিত রাবী। ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১৫. অনুচ্ছেদঃ মুমিনকে গালি দেয়া ফাসিক্বী [পাপ]
২৬৩৪. আবদূল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলিমের বিরুদ্ধে লড়াই করা কুফ্রী এবং তাকে গালি দেয়া ফাসিক্বী।
সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। অন্য সনদে ১৯৮৩ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। সাদ ও আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ । এ হাদীসটি ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬৩৫. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিক্বী এবং তার বিরুদ্ধে লড়াই করা বা তাকে হত্যা করা কুফরী।
সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। ইহা ১৯৮৩ নং হাদীসের পুনরুক্তি। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । কোন মুসলিম তার মুসলিম ভাইকে হত্যা করা কুফ্রী । তবে এর দ্বারা সে মুরতাদ [কাফির] হয় না । এর দলীল নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত হাদীস “যাকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয় তার উত্তরাধিকারীগণ ইচ্ছা করলে হত্যাকারীকে হত্যা ও করিতে পারে, ইচ্ছা করলে ক্ষমাও করিতে পারে” । মুরতাদ হয়ে গেলে হত্যা করা ওয়াজিব হয়ে যেত । ইবনি আব্বাস, তাউস, আতা এবং আরো অনেক বিশেষজ্ঞ আলিমগণ উক্ত অভিমত ব্যক্ত করিয়াছেন । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬. অনুচ্ছেদঃ কেউ তার ভাইকে কুফ্রীর অপবাদ দিলে
২৬৩৬. সাবিত ইবনিয্ যাহ্হাক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন বান্দার যে জিনিসের মালিকানা নেই সে সেই জিনিসের মানত করলে তা পূরণ করা তার জন্য অপরিহার্য নয়। মুমিনকে অভিশাপকারী তাকে হত্যাকারীর অনুরূপ। যে লোক মুমিন ব্যক্তিকে কুফরীর অপবাদ দেয়, সেও তার হত্যাকারীর অনুরূপ। আর যে ব্যক্তি যে জিনিসের সাহায্যে আত্মহত্যা করে, আল্লাহ্ তাআলা তাকে সেই জিনিস দ্বারাই কিয়ামাত দিবসে শাস্তি দিবেন।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [২০৯৮] আবু যার ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬৩৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোক তার ভাইকে কাফির বললে তা এ দুজনের যে কোন একজনের উপর বর্তায়।
সহীহঃ মুসলিম [১/৫৭]। এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব । বায়া অর্থাৎ- স্বীকার করলো । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭. অনুচ্ছেদঃ “আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্রভু নেই” এই সাক্ষ্যে অটল থেকে যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে
২৬৩৮. আস্-সুনাবিহী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি উবাদাহ্ ইবনিস সামিত [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত হলাম, সে সময় তিনি অন্তিম অবস্থায় ছিলেন। আমি [তাঁকে এ অবস্থায় দেখে] কেঁদে ফেললাম। তিনি বলিলেন, থামো, কাঁদছো কেন? আল্লাহ্র শপথ! যদি আমার সাক্ষ্য চাওয়া হয় তবে আমি অবশ্যই তোমার [ঈমানের] পক্ষে সাক্ষ্য দিব, যদি সুপারিশের অনুমতি আমাকে দেয়া হয় তবে অবশ্যই তোমার জন্য আমি সুপারিশ করবো; আর আমার পক্ষে সম্ভব হলে আমি অবশ্যই তোমার উপকার করবো। তিনি আবার বলিলেন, আল্লাহ্র কসম! আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে তোমাদের জন্য কল্যাণকর যেসব কথা শুনিয়াছি তার সবই তোমাদেরকে বলেছি। শুধুমাত্র একটি কথা বলা বাকি আছে, যা আমি আজ তোমাদেরকে এমন অবস্থায় বলছি যে, মৃত্যু আমাকে বেষ্টন করে ফেলেছে। আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্র রাসূল, তার জন্য আল্লাহ তাআলা জাহান্নামকে হারাম করে দিবেন।
হাসানঃ মুসলিম [১/৪৩] আবু বাক্র, উমার, উসমান, তালহা, জাবির, ইবনি উমার ও যাইদ ইবনি খালিদ [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । ইবনি উয়াইনাহ্ বলেন, মুহাম্মাদ ইবনি আজলান নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী এবং হাদীস শাস্ত্রে বিশ্বস্ত ব্যক্তি । আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং এ সূত্রে গারীব । আস্-সুনাবিহী হলেন আবদুর রহমান ইবনি উসাইল উপনাম আবু আবদুল্লাহ ।
যুহরী [রঃ] হইতে বর্ণিত যে, তাকে নাবী [সাঃআঃ]-এর বানী- “যে ব্যক্তি বলবে আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্রভু নেই, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে”-এর তাৎপর্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগে যখন ফরযসমূহ, আদেশ-নিষেধ ইত্যাদি বিধান পুরাপুরি অবতীর্ণ হয়নি, তখন হাদীসের এ অর্থ প্রযোজ্য ছিল । কিছু আলিমের মতে এ হাদীসের অর্থ এই যে, তাওহীদপন্থিরা জান্নাতে যাবেই, যদিও তাহাদের গুনাহের কারণে কিছু দিন জাহান্নামে শাস্তি দেয়া হইবে, কিন্তু তারা চিরদিন জাহান্নামে থাকিবে না ।
আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ, আবু যার, ইমরান ইবনি হুসাইন, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ, ইবনি আব্বাস, আবু সাঈদ আল-খুদরী ও আনাস [রাদি.] প্রমুখ সাহাবী নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ তাওহীদপন্থিরা জাহান্নাম থেকে বেরিয়ে আসবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করিবে । একইভাবে সাঈদ ইবনি জুবাইর, ইবরাহীম নাখঈ প্রমুখ তাবিঈগণ- “কখনো কখনো কাফিররা আকাঙ্ক্ষা করিবে যে, তারা যদি মুসলিম হত”- [সূরা হিজরঃ ২] আয়াতের তাফসীরে বলেন, যখন তাওহীদপন্থিদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করা হইবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হইবে তখন কাফিররা আফসোস করে বলবে যে, তারাও যদি মুসলিম হতো । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৬৩৯. আবদুল্লাহ ইবনি আম্র ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামাত দিবসে আমার উম্মাতের একজনকে সমস্ত সৃষ্টির সামনে আলাদা করে উপস্থিত করবেন। তিনি তার সামনে নিরানব্বইটি আমলনামার খাতা খুলে ধরবেন। প্রতিটি খাতা দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত হইবে। তারপর তিনি প্রশ্ন করবেন, তুমি কি এগুলো হইতে কোন একটি [গুনাহ] অস্বীকার করিতে পার? আমার লেখক ফেরেস্তারা কি তোমার উপর যুল্ম করেছে? সে বলবে, না, হে প্রভু! তিনি আবার প্রশ্ন করিবেনঃ তোমার কোন অভিযোগ আছে কি? সে বলবে, না, হে আমার প্রভু! তিনি বলবেনঃ আমার নিকট তোমার একটি সওয়াব আছে। আজ তোমার উপর এতটুকু যুলুমও করা হইবে না। তখন ছোট একটি কাগজের টুকরা বের করা হইবে। তাতে লিখা থাকবেঃ “আমি সাক্ষ্য প্রদান করি যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্রভু নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিই যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আল্লাহ্র বান্দা ও তাহাঁর রাসূল”। তিনি তাকে বলবেনঃ দাড়িপাল্লার সামনে যাও। সে বলবে, হে প্রভূ! এতগুলো খাতার বিপরীতে এই সামান্য কাগজটুকুর কি আর ওজন হইবে? তিনি বলবেনঃ তোমার উপর কোন যুলুম করা হইবে না। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তারপর খাতাগুলো এক পাল্লায় রাখা হইবে এবং উক্ত টুকরাটি আরেক পাল্লায় রাখা হইবে। ওজনে খাতাগুলোর পাল্লা হালকা হইবে এবং কাগজের টুকরার পাল্লা ভারী হইবে। আর আল্লাহ তাআলার নামের বিপরীতে কোন কিছুই ভারী হইতে পারে না।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [৪৩০০] আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব । কুতাইবা-ইবনি লাহীআ হইতে, তিনি আমির ইবনি ইয়াহ্ইয়া [রঃ] হইতে এই সনদে উক্ত মর্মে অনুরূপ বর্ণিত আছ । বিতাকা অর্থ টুকরা বা খণ্ড । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৮. অনুচ্ছেদঃ এই উম্মাতের অনৈক্য
২৬৪০. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [রাদি.] বলেছেনঃ ইয়াহূদীরা একাত্তর অথবা বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল এবং খৃষ্টানেরাও অনুরূপ দলে বিভক্ত হয়েছিল। আর আমার উম্মাত বিভক্ত হইবে তিয়াত্তর দলে।
হাসান সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [৩৯৯১] সাদ, আবদুল্লাহ ইবনি আম্র ও আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন, আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৬৪১. আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বানী ইসরাঈল যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মাতও সেই অবস্থার সম্মুখীন হইবে, যেমন একজোড়া জুতার একটি আরেকটির মতো হয়ে থাকে। এমনকি তাহাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে ব্যভিচার করে থাকে, তবে আমার উম্মাতের মধ্যেও কেউ তাই করিবে। আর বানী ইসরাঈল বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উম্মাত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হইবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাহাদের সবাই জাহান্নামী হইবে। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেনঃ আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত।
হাসানঃ মিশকাত, তাহক্বীক্ব সানী [১৭১], সহীহাহ্ [১৩৪৮]। আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব ও সব্যাখ্যায়িত [মুফাস্রার] । এই সনদসূত্র ব্যতীত উপরোক্ত প্রকৃতির কোন বর্ণনা প্রসঙ্গে আমাদের জানা নেই । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৬৪২. আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহ তাআলা অন্ধকারে তাহাঁর মাখলূকাতের সৃষ্টি করিয়াছেন। তারপর তিনি এদের উপরে তাহাঁর নূরের আলোকপ্রভা ঢেলে দিয়েছেন। সুতরাং সেই নূরের আলোকপ্রভা যে ব্যক্তির উপর পড়েছে সে সৎপথ পেয়েছে এবং যে ব্যক্তির উপর তা পড়েনি সে পথভ্রষ্ট হয়েছে। এ জন্যেই আমি বলিঃ আল্লাহ তাআলার ইল্ম অনুযায়ী ক্বলম [তাক্বদীরের লিখন] শুকিয়ে গেছে।
সহীহঃ মিশকাত [১০১], সহীহাহ্ [১০৭৬], আয্যিলা-ল [২৪১-২৪৪]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬৪৩. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রশ্ন করেনঃ তুমি কি জানো বান্দার উপর আল্লাহ তাআলার কি হক্ব [অধিকার] রয়েছে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেনঃ তাহাদের উপর তাহাঁর হক্ব এই যে, তারা তাহাঁর ইবাদাত করিবে এবং তাহাঁর সাথে আর কোন কিছুকে অংশীদার স্থাপন করিবে না। তিনি আবার প্রশ্ন করেনঃ তারা এগুলো করলে আল্লাহ তাআলার উপর তাহাদের কি হক্ব [অধিকার] রয়েছে তুমি কি তা জানো? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলার উপর তাহাদের হক্ব এই যে, তিনি তাহাদেরকে শাস্তি দিবেন না।
সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [৪২৯৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ হাদীসটি হাসান সহীহ । এ হাদীসটি মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬৪৪. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জিবরীল [আঃ] আমার নিকট এসে এই সুসংবাদ দেন যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাথে কিছু শারীক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আমি প্রশ্ন করলাম, সে যদি ব্যভিচার করে থাকে, সে যদি চুরি করে থাকে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ [তবুও সে জান্নাতে যাবে]।
সহীহঃ সহীহাহ্ [৮২৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । এ অনুচ্ছেদে আবু দারদা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে । ঈমান সম্পর্কে হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply