হায়িয অধ্যায়। ইস্তিহাযা তায়াম্মুম মযী ও মনী বর্ণনা

হায়িয অধ্যায়। ইস্তিহাযা তায়াম্মুম মযী ও মনী বর্ণনা

হায়িয অধ্যায়। লুঙ্গির উপর নারীর সাথে শরীর মেশানো , এই পর্বের হাদীস =৮৫ টি (৫৬৭ – ৬০০) >> আল লুলু ওয়াল মারজান এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্ব-৩ঃ হায়িয

৩/১. লুঙ্গির উপর হায়িযওয়ালী নারীর সাথে শরীর মেশানো।
৩/২. একই লেপের তলে হায়িযওয়ালী নারীর সাথে শয়ন।
৩/৩. হায়িযওয়ালী নারী তার স্বামীর মাথা ধুয়ে দিতে এবং মাথার চুল আঁচড়ে দিতে পারবে।
৩/৪. মযী প্রসঙ্গে
৩/৬. জুনুবী ব্যক্তির ঘুমিয়ে থাকা বৈধ তবে তার জন্য উযূ করা মুস্তাহাব।
৩/৭. মনী নির্গত হওয়ার দরুন নারীর উপর গোসল করা ওয়াজিব।
৩/৯. ফরয গোসলের বর্ণনা।
৩/১০. ফরয গোসলে কী পরিমাণ পানি ব্যবহার করা মুস্তাহাব।
৩/১১. মাথায় এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে তিনবার পানি বইয়ে দেয়া মুস্তাহাব।
৩/১৩. হায়িয থেকে পবিত্রতা অর্জনকারিণী নারীর জন্য রক্ত মাখা গুপ্তাঙ্গে কস্তুরী মিশ্রিত নেকড়া দ্বারা মুছে ফেলা মুস্তাহাব।
৩/১৪. ইস্তিহাযা পীড়িত নারীর গোসল ও সলাত।
৩/১৫. সলাত ছাড়া হায়িযওয়ালী নারীর উপর সওম কাযা করা ওয়াজিব।
৩/১৬. গোসলকারী কাপড় ইত্যাদি দ্বারা পর্দা করিবে।
৩/১৮. নির্জনে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়িয।
৩/১৯. ভালভাবে সতর ঢাকার ব্যাপারে সতর্কতা।
৩/২১. মনী নির্গত হলে গোসল অপরিহার্য [যা পরবর্তী অধ্যায়ে উল্লেখিত হাদীস দ্বারা রহিত হয়ে গেছে]।
৩/২২. [মনী নির্গত হলে গোসল ফরয] এটি রহিত; দু যৌনাঙ্গের মিলনের দ্বারা গোসল ওয়াজিব।
৩/২৪. আগুনে রান্না করা খাবার খেলে পুনরায় উযূ করিতে হইবে না।
৩/২৬. যে ব্যক্তি উযূ আছে বলে দৃঢ় বিশ্বাসী অতঃপর সে হাদাসের দ্বারা উযূ ভঙ্গের সন্দেহে পতিত হয় সে পুনরায় উযূ না করেই সলাত আদায় করে তার প্রমাণ।
৩/২৭. দাবাগাতের মাধ্যমে মৃত জন্তুর চামড়া পবিত্রকরণ।
৩/২৮. তায়াম্মুম।
৩/২৯. মুসলিম অপবিত্র হয় না এর দলীল।
৩/৩২. যখন পায়খানায় প্রবেশ করিবে তখন কী বলবে।
৩/৩৩. উপবিষ্ট অবস্থায় ঘুমালে উযূ ভঙ্গ হয় না তার প্রমাণ।

৩/১. লুঙ্গির উপর হায়িযওয়ালী নারীর সাথে শরীর মেশানো।

১৬৮. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের কেউ হায়য অবস্থায় থাকলে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] তাহাঁর সাথে মিশামিশি করিতে চাইলে তাকে প্রবল হায়যে ইযার পরার নির্দেশ দিতেন। তারপর তার সাথে মিশামিশি করিতেন। তিনি {আয়েশা [রাদি.]} বলেনঃ তোমাদের মধ্যে নাবী [সাঃআঃ]-এর মত কাম-প্রবৃত্তি দমন করার শক্তি রাখে কে?

[বোখারী পর্ব ৬ : /৫ হাঃ ৩০২, মুসলিম ৩/১, হাঃ ২৯৩] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৯. মায়মূনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

মায়মূনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলাল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] তাহাঁর কোন স্ত্রীর সাথে হায়য অবস্থায় মিশামিশি করিতে চাইলে তাকে ইযার পরতে বলিতেন। শায়বনী[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে সুফিয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ বর্ণনা করিয়াছেন।

[বোখারী পর্ব ৬ : /৫ হাঃ ৩০৩, মুসলিম ৩/১, হাঃ ২৯৪] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/২. একই লেপের তলে হায়িযওয়ালী নারীর সাথে শয়ন।

১৭০. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ.

উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে একই চাদরের নীচে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমার হায়য দেখা দিলে আমি চুপি চুপি বেরিয়ে গিয়ে হায়যের কাপড় পরে নিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কি নিফাস দেখা দিয়েছে? আমি বললাম, হাঁ। তখন তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি তাহাঁর সঙ্গে চাদরের ভেতর শুয়ে পড়লাম।

[বোখারী পর্ব ৬ : /২২ হাঃ ২৯৮, মুসলিম ৩/২, হাঃ ২৯৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৭১. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ …….. আমি ও নাবী [সাঃআঃ] একই পাত্র হইতে পানি নিয়ে জানাবাতের গোসল করতাম।

[বোখারী পর্ব ৬ : /২১ হাঃ ৩২২, মুসলিম ৩/২, হাঃ ২৯৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/৩. হায়িযওয়ালী নারী তার স্বামীর মাথা ধুয়ে দিতে এবং মাথার চুল আঁচড়ে দিতে পারবে।

১৭২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী সহধর্মিণী আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] মাসজিদে থাকাবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ইতিকাফে থাকতেন তখন [প্রাকৃতিক] প্রয়োজন ব্যতীত ঘরে প্রবেশ করিতেন না।

[বোখারী পর্ব ৩০ : /৩ হাঃ ২৪৮, মুসলিম ৩/৯ হাঃ ৩১৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর নাবী [সাঃআঃ] আমার হায়য অবস্থায় আমার সাথে মিশামিশি করিতেন। আর তিনি ইতিকাফরত অবস্থায় মাসজিদ হইতে তাহাঁর মাথা বের করে দিতেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় তা ধুয়ে দিতাম।

[বোখারী পর্ব ৩৩ : /৪ হাঃ ৩০১, মুসলিম ৩/ হাঃ ৩১৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] আমার কোলে হেলান দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করিতেন। আর তখন আমি ঋতুবতী ছিলাম।

[বোখারী পর্ব ৬ : /৩ হাঃ ২৯৭, মুসলিম ৩/৩, হাঃ ৩০১] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/৪. মযী প্রসঙ্গে

১৭৫. মুহাম্মদ ইবনিল হানফিয়্যাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

মুহাম্মদ ইবনিল হানফিয়্যাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আলী [রাদি.] বলেছেন, আমার অধিক পরিমাণে মযী বের হতো। কিন্তু আমি আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতে লজ্জাবোধ করছিলাম। তাই আমি মিকদাদ ইবনি আসওয়াদ [রাদি.]-কে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট জিজ্ঞেস করেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি বলেনঃ এতে শুধু উযূ করিতে হয়।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৩৪ হাঃ ১৭৮, মুসলিম ৩/৪ হাঃ ৩০৩] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/৬. জুনুবী ব্যক্তির ঘুমিয়ে থাকা বৈধ তবে তার জন্য উযূ করা মুস্তাহাব।

১৭৬. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] যখন জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতে ইচ্ছে করিতেন তখন তিনি লজ্জাস্থান ধুয়ে সলাতের উযূর মত উযূ করিতেন।

[বোখারী পর্ব ৫ : /২৭ হাঃ ২৮৮, মুসলিম ৩/৬, হাঃ ৩০৫] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৭. উমার ইবনিল-খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনিল-খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমাদের কেউ জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতে পারবে কি? তিনি বললেনঃ হাঁ, উযূ করে নিয়ে জানাবাতের অবস্থায়ও ঘুমাতে পারে।

[বোখারী পর্ব ৫ : /২৬ হাঃ ২৮৭, মুসলিম ৩/৬, হাঃ ৩০৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উমর ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে বলিলেন, রাতে কোন সময় তাহাঁর গোসল ফার্‌য হয় [তখন কী করিতে হইবে?] রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাঁকে বলিলেন, উযূ করিবে, লজ্জাস্থান ধুয়ে নিবে, তারপর ঘুমাবে।

[বোখারী পর্ব ৫ : /২৭ হাঃ ২৯০, মুসলিম ৩/২১, হাঃ ৩৪৭] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] একই রাতে পর্যায়ক্রমে তাহাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হইতেন। তখন তাহাঁর নয়জন স্ত্রী ছিলেন।

বোখারী পর্ব ৫ : /৩৪ হাঃ ২৮৪, মুসলিম ৩/৬, হাঃ ৩০৯] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/৭. মনী নির্গত হওয়ার দরুন নারীর উপর গোসল করা ওয়াজিব।

১৮০. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট উম্মু সুলায়মান [রাদি.] এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল ! আল্লাহ্ হক কথা প্রকাশ করিতে লজ্জাবোধ করেন না। মহিলাদের স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করিতে হইবে? নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখিতে পাবে। তখন উম্মু সালমা [লজ্জায়] তার মুখ ঢেকে নিয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! মহিলাদেরও স্বপ্নদোষ হয় কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তোমার ডান হাতে মাটি পড়ুক! [তা না হলে] তাহাদের সন্তান তাহাদের আকৃতি পায় কিভাবে?

[বোখারী পর্ব ৩ : /৫০ হাঃ ১৩০, মুসলিম ৩/৭, হাঃ ৩১৩] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/৯. ফরয গোসলের বর্ণনা।

১৮১. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। নাবী [সাঃআঃ] যখন জানাবাতের গোসল করিতেন, তখন প্রথমে তাহাঁর হাত দুটো ধুয়ে নিতেন। অতঃপর সলাতের উযূর মত উযূ করিতেন। অতঃপর তাহাঁর আঙ্গুলগুলো পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে চুলের গোড়া খিলাল করিতেন। অতঃপর তাহাঁর উভয় হাতের তিন আঁজলা পানি মাথায় ঢালতেন। তারপর তাহাঁর সারা দেহের উপর পানি ঢেলে দিতেন।

[বোখারী পর্ব ৫ : /১ হাঃ ২৪৮, মুসলিম ৩/৯, হাঃ ৩১৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৮২. মায়মূনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

মায়মূনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর জন্য গোসলের পানি ঢেলে রাখলাম। তিনি তাহাঁর ডান হাত দিয়ে বাঁ হাতে পানি ঢাললেন এবং উভয় হাত ধুলেন। অতঃপর তাহাঁর লজ্জাস্থান ধৌত করিলেন এবং মাটিতে তাহাঁর হাত ঘষলেন। পরে তা ধুয়ে কুলি করিলেন, নাকে পানি দিলেন, তারপর তাহাঁর চেহারা ধুলেন এবং মাথার উপর পানি ঢাললেন। পরে ঐ স্থান হইতে সরে গিয়ে দু পা ধুলেন। অবশেষে তাঁকে একটি রুমাল দেয়া হল, কিন্তু তিনি তা দিয়ে শরীর মুছলেন না।

[বোখারী পর্ব ৫ : /৭ হাঃ ২৫৯, মুসলিম ৩/৯ হাঃ ৩১৭] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৮৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] যখন জানাবাতের গোসল করিতেন, তখন হিলাবের অনুরূপ পাত্র চেয়ে নিতেন। তারপর এক আঁজলা পানি নিয়ে প্রথমে মাথার ডান পাশ এবং পরে বাম পাশ ধুয়ে ফেলতেন। দুহাতে মাথায় পানি ঢালতেন।

[বোখারী পর্ব ৫ : /৬ হাঃ ২৫৮, মুসলিম ৩/৯, হাঃ ৩১৮] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/১০. ফরয গোসলে কী পরিমাণ পানি ব্যবহার করা মুস্তাহাব।

১৮৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ও নাবী [সাঃআঃ] একই পাত্র [কাদাহ] হইতে [পানি নিয়ে] গোসল করতাম। সেই পাত্রকে ফারাক বলা হতো।

[বোখারী পর্ব ৫ : /২ হাঃ ২৫০, মুসলিম ৩/১০, হাঃ ৩১৯] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৮৫. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তাহাঁর ভাই তাঁকে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন। তখন তিনি প্রায় এক সাআ এর সমপরিমাণ এক পাত্র আনালেন। তারপর তিনি গোসল করিলেন এবং স্বীয় মাথার উপর পানি ঢাললেন। তখন আমাদের ও তাহাঁর মাঝে পর্দা ছিল।

[বোখারী পর্ব ৫ : /৩ হাঃ ২৫১, মুসলিম ৩/১০, হাঃ ৩২০] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৮৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এক সা [৪ মুদ] হইতে পাঁচ মুদ পর্যন্ত পানি দিয়ে গোসল করিতেন এবং উযু করিতেন এক মুদ দিয়ে।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৪৭ হাঃ ২০১, মুসলিম ৩/১০, হাঃ ৩২৫] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/১১. মাথায় এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে তিনবার পানি বইয়ে দেয়া মুস্তাহাব।

১৮৭. জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি তিনবার আমার মাথায় পানি ঢালি। এই বলে তিনি উভয় হাতের দ্বারা ইঙ্গিত করেন।

[বোখারী পর্ব ৫ : /৪ হাঃ ২৫৪, মুসলিম ৩/১১, হাঃ ৩২৭] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৮৮. আবু জাফর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আবু জাফর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি ও তাহাঁর পিতা, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.]-এর নিকট ছিলেন। সেখানে আরো কিছু লোক ছিলেন। তাঁরা তাঁকে গোসল সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি বলিলেন, এক সাআ তোমার জন্য যথেষ্ট। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠলঃ আমার জন্য তা যথেষ্ট নয়। জাবির [রাদি.] বললেনঃ তোমার চেয়ে অধিক চুল যাঁর মাথায় ছিল এবং তোমার চেয়ে যিনি উত্তম ছিলেন {আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]} তাহাঁর জন্য তো এ পরিমাণই যথেষ্ট ছিল। অতঃপর তিনি এক কাপড়ে আমাদের ঈমামত করেন।

[বোখারী পর্ব ৫ : /৩ হাঃ ২৫২, মুসলিম ৩/১১, হাঃ ৩২৯] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/১৩. হায়িয থেকে পবিত্রতা অর্জনকারিণী নারীর জন্য রক্ত মাখা গুপ্তাঙ্গে কস্তুরী মিশ্রিত নেকড়া দ্বারা মুছে ফেলা মুস্তাহাব।

১৮৯. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। জনৈকা মহিলা আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে হায়যের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি তাকে গোসলের নিয়ম বলে দিলেন যে, এক টুকরা কস্তুরী লাগানো নেকড়া নিয়ে পবিত্রতা হাসিল কর। মহিলা বললেনঃ কিভাবে পবিত্রতা হাসিল করব? আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বললেনঃ তা দিয়ে পবিত্রতা হাসিল কর। মহিলা [তৃতীয়বার] বললেনঃ কিভাবে? আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! তা দিয়ে তুমি পবিত্রতা হাসিল কর। আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ তখন আমি তাকে টেনে আমার নিকট নিয়ে আসলাম এবং বললামঃ তা দিয়ে রক্তের চিহ্ন বিশেষভাবে মুছে ফেল।

[বোখারী পর্ব ৬ : /১৩ হাঃ ৩১৪, মুসলিম ৩/১৩, হাঃ ৩৩২] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/১৪. ইস্তিহাযা পীড়িত নারীর গোসল ও সলাত।

১৯০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবায়শ [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমি একজন রক্ত-প্রদর রোগগ্রস্তা [ইস্তিহাযাহ] মহিলা। আমি কখনো পবিত্র হইতে পারি না। এমতাবস্থায় আমি কি সলাত পরিত্যাগ করবো? আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বললেনঃ না, এতো শিরা হইতে নির্গত রক্ত, হায়য নয়। তাই যখন তোমার হায়য আসবে তখন সলাত ছেড়ে দিও। আর যখন তা বন্ধ হইবে তখন রক্ত ধুয়ে ফেলবে, তারপর সলাত আদায় করিবে।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৬৩ হাঃ ২২৮, মুসলিম ৩/১৪, হাঃ ৩৩৩] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৯১. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] এর স্ত্রী আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উম্মু হাবীবাহ [রাদি.] সাত বছর পর্যন্ত ইস্তিহাযায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি এ ব্যাপারে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি তাঁকে গোসলের নির্দেশ দিলেন এবং বললেনঃ এটা রগ থেকে বের হওয়া রক্ত। অতঃপর উম্মু হাবীবাহ [রাদি.] প্রতি সলাতের জন্য গোসল করিতেন।

[বোখারী পর্ব ৬ : /২৬ হাঃ ৩২৭, মুসলিম ৩/১৪, হাঃ ৩৩৪] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/১৫. সলাত ছাড়া হায়িযওয়ালী নারীর উপর সওম কাযা করা ওয়াজিব।

১৯২. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

জনৈকা মহিলা আয়েশা [রাদি.]-কে বললেনঃ হায়যকালীন কাযা সলাত পবিত্র হওয়ার পর আদায় করলে আমাদের জন্য চলবে কি-না? আয়েশা [রাদি.] বললেনঃ তুমি কি হারূরিয়্যাহ? [খারিজীদের একদল] আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সময়ে ঋতুবতী হতাম কিন্তু তিনি আমাদের সলাত কাযার নির্দেশ দিতেন না। অথবা তিনি {আয়েশা [রাদি.]} বলেনঃ আমরা তা কাযা করতাম না।

[বোখারী পর্ব ৬ : /২০ হাঃ ৩২১, মুসলিম ৩/১৫, হাঃ ৩৩৫] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/১৬. গোসলকারী কাপড় ইত্যাদি দ্বারা পর্দা করিবে।

১৯৩. উম্মু হানী বিনতু আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মু হানী বিনতু আবু তালিব [রাদি.] বলেনঃ আমি ফতহে মক্কার বছর আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট গিয়ে দেখলাম যে, তিনি গোসল করছেন আর তাহাঁর মেয়ে ফাতিমাহ [রাদি.] তাঁকে আড়াল করে রেখেছেন। তিনি বলেনঃ আমি তাঁকে সালাম প্রদান করলাম। তিনি জানতে চাইলেনঃ এ কে? আমি বললামঃ আমি উম্মু হানী বিনতু আবু তালিব। তিনি বললেনঃ মারহাবা, হে উম্মু হানী! গোসল শেষ করে তিনি এক কাপড় জড়িয়ে আট রাকআত সলাত আদায় করিলেন। সলাত সমাধা করলে তাঁকে আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার সহোদর ভাই {আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.]} এক ব্যক্তিকে হত্যা করিতে চায়, অথচ আমি তাকে আশ্রয় দিয়েছি। সে ব্যক্তিটি হুবায়রার ছেলে অমুক। তখন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বললেনঃ হে উম্মু হানী! তুমি যাকে নিরাপত্তা দিয়েছ, আমিও তাকে নিরাপত্তা দিলাম। উম্মু হানী [রাদি.] বলেনঃ এ সময় ছিল চাশতের ওয়াক্ত।

[বোখারী পর্ব ৮ : /৪ হাঃ ৩৫৭, মুসলিম ৩/১৬, হাঃ ৩৩৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/১৮. নির্জনে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়িয।

১৯৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বনী ইসরাঈলের লোকেরা নগ্ন হয়ে একে অপরকে দেখা অবস্থায় গোসল করতো। কিন্তু মূসা [আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একাকী গোসল করিতেন। এতে বনী ইসরাঈলের লোকেরা বলাবলি করছিল, আল্লাহ্‌র কসম, মূসা [আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কোষবৃদ্ধি রোগের কারণেই আমাদের সাথে গোসল করেন না। একবার মূসা [আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একটা পাথরের উপর কাপড় রেখে গোসল করছিলেন। পাথরটা তাহাঁর কাপড় নিয়ে পালাতে লাগল। তখন মূসা [আলাইহি ওয়া সাল্লাম] “পাথর! আমার কাপড় দাও,” “পাথর! আমার কাপড় দাও” বলে পেছনে পেছনে ছুটলেন। এদিকে বনী ইসরাঈল মূসার দিকে তাকাল। তখন তারা বলিল, আল্লাহ্‌র কসম মূসার কোন রোগ নেই। মূসা [আলাইহি ওয়া সাল্লাম] পাথর থেকে কাপড় নিয়ে পরলেন এবং পাথরটাকে পিটাতে লাগলেন। আবু হুরাইরা [রাদি.] বলেনঃ আল্লাহ্‌র কসম, পাথরটিতে ছয় কিংবা সাতটা পিটুনীর দাগ পড়ে গেল।

[বোখারী পর্ব ৫ : /২০ হাঃ ২৭৮, মুসলিম ৩/১৮, হাঃ ৩৩৯] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/১৯. ভালভাবে সতর ঢাকার ব্যাপারে সতর্কতা।

১৯৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] [নবুওয়াতের পূর্বে] কুরাইশদের সাথে কাবার [মেরামতের] জন্যে পাথর তুলে দিচ্ছিলেন। তাহাঁর পরিধানে ছিল লুঙ্গি। তাহাঁর চাচা আব্বাস [রাদি.] তাঁকে বললেনঃ ভাতিজা! তুমি লুঙ্গি খুলে কাঁধে পাথরের নীচে রাখলে ভাল হত। জাবির [রাদি.] বলেনঃ তিনি লুঙ্গি খুলে কাঁধে রাখলেন এবং তৎক্ষণাৎ বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। এরপর তাঁকে আর কখনো নগ্ন অবস্থায় দেখা যায়নি।

[বোখারী পর্ব ৮ : /৮ হাঃ ৩৬৪, মুসলিম ৩/১৯, হাঃ ৩৪০] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/২১. মনী নির্গত হলে গোসল অপরিহার্য [যা পরবর্তী অধ্যায়ে উল্লেখিত হাদীস দ্বারা রহিত হয়ে গেছে]।

১৯৬. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিত। আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] এক আনসারীর নিকট লোক পাঠালেন। তিনি আসলেন। তখন তাহাঁর মাথা থেকে পানির ফোঁটা ঝরছিল। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ সম্ভবত আমরা তোমাকে তাড়াহুড়া করিতে বাধ্য করেছি। তিনি বলিলেন, জী। আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বললেনঃ যখন তাড়াহুড়ার কারণে মনী বের না হইবে [অথবা বলিলেন], মনীর অভাবজনিত কারণে তা বের না হইবে তখন উযূ করে নিবে।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৩৪ হাঃ ১৮০, মুসলিম ৩/২১, হাঃ ৩৪৫] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৭. উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ ইয়া আল্লাহর রসূল ! স্ত্রীর সাথে সংগত হলে যদি বীর্য বের না হয় [তার হুকুম কী?] তিনি বললেনঃ স্ত্রী থেকে যা লেগেছে তা ধুয়ে উযূ করিবে ও সালাত আদায় করিবে। আবু আব্দুল্লাহ {বোখারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]} বলেনঃ গোসল করাই শ্রেয়। আর তা-ই সর্বশেষ হুকুম। আমি এই শেষের হাদীসটি বর্ণনা করেছি মতভেদ থাকার কারণে। কিন্তু পানি [গোসল] অধিক পবিত্রকারী।

[বোখারী পর্ব ৫ : /২৯ হাঃ ২৯৩, মুসলিম ৩/২১, হাঃ ৩৪৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৮. যায়দ ইবনি খালিদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

যায়দ ইবনি খালিদ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি উসমান ইবনি আফফান [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ কেউ যদি স্ত্রী সহবাস করে, কিন্তু মনী [বীর্য] বের না হয় [তবে তার হুকুম কী]? উসমান [রাদি.] বললেনঃ সে সলাতের ন্যায় উযূ করে নেবে এবং তার লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে। উসমান [রাদি.] বলেন, আমি এ কথা আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] থেকে শুনিয়াছি।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৩৪ হাঃ ১৭৯, মুসলিম ৩/২১, হাঃ ৩৪৭] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/২২. [মনী নির্গত হলে গোসল ফরয] এটি রহিত; দু যৌনাঙ্গের মিলনের দ্বারা গোসল ওয়াজিব।

১৯৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি স্ত্রীর চার শাখার মাঝে বসে তার সাথে সংগত হলে, তার উপর গোসল ওয়াজিব হয়ে যায়।

[বোখারী পর্ব ৫ : /২৮ হাঃ ২৯১, মুসলিম ৩/২২, হাঃ ৩৪৮] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/২৪. আগুনে রান্না করা খাবার খেলে পুনরায় উযূ করিতে হইবে না।

২০০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বকরীর কাঁধের গোশত খেলেন। অতঃপর সলাত আদায় করিলেন, কিন্তু উযূ করিলেন না।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৫০ হাঃ ২০৭, মুসলিম ৩/২৪, হাঃ ৩৫৪] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২০১. আমর বিন উমাইয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমর বিন উমাইয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে একটি বকরীর কাঁধের গোশ্‌ত কেটে খেতে দেখলেন। এ সময় সলাতের জন্য আহ্বান হল। তিনি ছুরিটি ফেলে দিলেন, অতঃপর সলাত আদায় করিলেন; কিন্তু উযূ করিলেন না।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৫০ হাঃ ২০৮, মুসলিম ৩/২৪, হাঃ ৩৫৫] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২০২. উম্মুল মুমিনীন মাইমূনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মুল মুমিনীন মাইমূনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিত। একদা নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর নিকট [বকরীর] কাঁধের গোশত খেলেন, অতঃপর সলাত আদায় করিলেন অথচ অযূ করিলেন না।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৫১ হাঃ ২১০, মুসলিম ৩/২৪, হাঃ ৩৫৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২০৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত। একদা আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] দুধ পান করিলেন। অতঃপর কুলি করিলেন এবং বললেনঃ এতে রয়েছে তৈলাক্ত বস্তু।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৫২ হাঃ ২১১, মুসলিম ৩/২৪, হাঃ ৩৫৮] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/২৬. যে ব্যক্তি উযূ আছে বলে দৃঢ় বিশ্বাসী অতঃপর সে হাদাসের দ্বারা উযূ ভঙ্গের সন্দেহে পতিত হয় সে পুনরায় উযূ না করেই সলাত আদায় করে তার প্রমাণ।

২০৪. আবদুল্লাহ ইবনি যায়দ ইবনি আসিম আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি যায়দ ইবনি আসিম আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণিত। একদা আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হল যে, তার মনে হয়েছিল যেন সলাতের মধ্যে কিছু হয়ে গিয়েছিল। তিনি বললেনঃ সে যেন ফিরে না যায়, যতক্ষণ না শব্দ শোনে বা দুর্গন্ধ পায়।

[বোখারী পর্ব ৪ : /৪ হাঃ ১৩৭, মুসলিম ৩/২৬, হাঃ ৩৬১] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/২৭. দাবাগাতের মাধ্যমে মৃত জন্তুর চামড়া পবিত্রকরণ।

২০৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মায়মূনা [রাদি.] কর্তৃক আযাদকৃত জনৈকা দাসীকে সদাকাহস্বরূপ প্রদত্ত একটি বকরীকে মৃত অবস্থায় দেখিতে পেয়ে নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা এর চামড়া দিয়ে উপকৃত হও না কেন? তারা বললেনঃ এটা তো মৃত। তিনি বলিলেন, এটা কেবল ভক্ষণ হারাম করা হয়েছে।

[বোখারী পর্ব ২৪ : /৬১ হাঃ ১৪৯২, মুসলিম ৩/২৭, হাঃ ৩৬৩] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/২৮. তায়াম্মুম।

২০৬. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কোন সফরে বের হয়েছিলাম যখন আমরা বায়যা অথবা যাতুল জায়শ নামক স্থানে পৌঁছলাম তখন আমার একখানা হার হারিয়ে গেল। আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] সেখানে হারের খোঁজে থেমে গেলেন আর লোকেরাও তাহাঁর সঙ্গে থেমে গেলেন, অথচ তাঁরা পানির নিকটে ছিলেন না। তখন লোকেরা আবু বকর [রাদি.]-এর নিকট এসে বললেনঃ আয়েশা কী করিয়াছেন আপনি কি দেখেন নি? তিনি রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ও লোকদের আটকিয়ে ফেলেছেন, অথচ তাঁরা পানির নিকটে নেই এবং তাঁদের সাথেও পানি নেই। আবু বকর [রাদি.] আমার নিকট আসলেন, তখন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] আমার উরুর উপরে মাথা রেখে ঘুমিয়েছিলেন। আবু বকর [রাদি.] বললেনঃ তুমি আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর লোকদের আটকিয়ে ফেলেছ! অথচ আশেপাশে কোথাও পানি নেই। এবং তাহাদের সাথেও পানি নেই। আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ আবু বকর আমাকে খুব তিরস্কার করিলেন আর, আল্লাহ্‌র ইচ্ছা, তিনি যা খুশি তাই বলিলেন। তিনি আমার কোমরে আঘাত দিতে লাগলেন। আমার উরুর উপর আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর মাথা থাকায় আমি নড়তে পারছিলাম না। আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] ভোরে উঠলেন, কিন্তু পানি ছিল না। তখন আল্লাহ তাআলা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করিলেন। অতঃপর সবাই তায়াম্মুম করে নিলেন। উসায়্দ ইবনি হুযায়্‌র [রাদি.] বললেনঃ হে আবু বকরের পরিবারবর্গ! এটাই আপনাদের প্রথম বরকত নয়। আয়েশা [রাদি.] বলেনঃ তারপর আমি যে উটে ছিলাম তাকে দাঁড় করালে দেখি আমার হারখানা তার নীচে পড়ে আছে।

[বোখারী পর্ব ৭ : /১ হাঃ ৩৩৪, মুসলিম ৩/২৮, হাঃ ৩৬৭] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২০৭. শাক্বীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

শাক্বীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আবদুল্লাহ [ইবনি মাসউদ] ও আবু মূসা আশআরী [রাদি.]-এর সঙ্গে বসা ছিলাম। আবু মূসা [রাদি.] আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে বললেনঃ কোন ব্যক্তি জুনুবী হলে সে যদি এক মাস পর্যন্ত পানি না পায়, তা হলে কি সে তায়াম্মুম করে সলাত আদায় করিবে না? শাক্বীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবদুল্লাহ [রাদি.] বললেনঃ একমাস পানি না পেলেও সে তায়াম্মুম করিবে না। তখন তাঁকে আবু মূসা [রাদি.] বললেনঃ তাহলে সুরা মায়িদার এ আয়াত সম্পর্কে কী করবেন যে, “পানি না পেলে পাক মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করিবে”- [আল-মায়িদাহঃ ৬]। আবদুল্লাহ [রাদি.] জবাব দিলেন মানুষকে সেই অনুমতি দিলে অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছার সম্ভাবনা রয়েছে যে, সামান্য ঠাণ্ডা লাগলেই লোকেরা মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করিবে। আমি বললামঃ আপনারা এ জন্যেই কি তা অপছন্দ করেন? তিনি জবাব দিলেন, হাঁ। আবু মূসা [রাদি.] বললেনঃ আপনি কি উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-এর সম্মুখে আম্মার [রাদি.]-এর এ কথা শোনেননি যে, আমাকে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] একটা প্রয়োজনে বাইরে পাঠিয়েছিলেন। সফরে আমি জুনুবী হয়ে পড়লাম এবং পানি পেলাম না। এজন্য আমি জন্তুর মত মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম। পরে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমার জন্য তো এটুকুই যথেষ্ট ছিল- এই বলে তিনি দু হাত মাটিতে মারলেন, তারপর তা ঝেড়ে নিলেন এবং তা দিয়ে তিনি বাম হাতে ডান হাতের পিঠ মাসহ করিলেন কিংবা রাবী বলেছেন, বাম হাতের পিঠ ডান হাতে মাসহ করিলেন। তারপর হাত দুটো দিয়ে তাহাঁর মুখমণ্ডল মাসহ করিলেন। আবদুল্লাহ [রাদি.] বললেনঃ আপনি দেখেন নি যে, উমার [রাদি.] আম্মার [রাদি.]-এর কথায় সন্তুষ্ট হননি?

[বোখারী পর্ব ৭ : /৮ হাঃ ৩৪৭, মুসলিম ৩/২৮, হাঃ ৩৬৮] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২০৮. আম্মার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আম্মার [রাদি.] হইতে বর্ণিত। এক ব্যক্তি উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-এর নিকট এসে জানতে চাইলঃ একবার আমার গোসলের দরকার হল অথচ আমি পানি পেলাম না। তখন আম্মার ইবনি ইয়াসার [রাদি.] উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-কে বললেনঃ আপনার কি সেই ঘটনা মনে আছে যে, একদা আমরা দুজন সফরে ছিলাম এবং দুজনেরই গোসলের প্রয়োজন দেখা দিল। আপনি তো সলাত আদায় করিলেন না। আর আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে সলাত আদায় করলাম। তারপর আমি ঘটনাটি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বর্ণনা করলাম। তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমার জন্য তো একটুকুই যথেষ্ট ছিল এ বলে নাবী [সাঃআঃ] দু হাত মাটিতে মারলেন এবং দুহাতে ফুঁ দিয়ে তাহাঁর চেহারা ও উভয় হাত মাসহ করিলেন।*

[বোখারী পর্ব ৭ : /৪ হাঃ ৩৩৮, মুসলিম ৩/২৮, হাঃ ৩৬৮] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২০৯. আবু জুহাইম আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু জুহাইম আল-আনসারী [রাদি.] উমাইর আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস [রাদি.] এর গোলাম হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] মাদীনার কাছে অবস্থিত বিরে জামাল হইতে আসছিলেন। পথিমধ্যে তাহাঁর সাথে এক ব্যক্তির সাক্ষাত হলো। লোকটি তাঁকে সালাম করলো। নাবী [সাঃআঃ] জবাব না দিয়ে দেয়ালের নিকট অগ্রসর হয়ে তাতে [হাত মেরে] নিজের চেহারা ও হস্তদ্বয় মাসহ করে নিলেন, তারপর সালামের জবাব দিলেন।

[বোখারী পর্ব ৭ : /৩ হাঃ ৩৩৭, মুসলিম ৩/২৮, হাঃ ৩৬৯] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/২৯. মুসলিম অপবিত্র হয় না এর দলীল।

২১০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার সাথে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর সাক্ষাত হলো, তখন আমি জুনুবী ছিলাম। তিনি আমার হাত ধরলেন, আমি তাহাঁর সাথে চললাম। এক স্থানে তিনি বসে পড়লেন। তখন আমি সরে পড়ে বাসস্থানে এসে গোসল করলাম। আবার তাহাঁর নিকট গিয়ে তাঁকে বসা অবস্থায় পেলাম। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন আবু হুরাইরা! কোথায় ছিলে? আমি তাঁকে [ঘটনা] বললাম। তখন তিনি বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! মুমিন অপবিত্র হয় না।

[বোখারী পর্ব ৫ : /২৪ হাঃ ২৮৫, মুসলিম ৩/২৯ হাঃ ৩৭১] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/৩২. যখন পায়খানায় প্রবেশ করিবে তখন কী বলবে।

২১১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] যখন প্রকৃতির ডাকে শৌচাগারে যেতেন তখন বলিতেন, اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ

“হে আল্লাহ্! আমি মন্দ কাজ ও শয়তান থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি।]”

[বোখারী পর্ব ৪ : /৯ হাঃ ১৪২, মুসলিম ৩/৪২, হাঃ ৩৭৫] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩/৩৩. উপবিষ্ট অবস্থায় ঘুমালে উযূ ভঙ্গ হয় না তার প্রমাণ।

২১২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সলাতের ইক্বামাত হয়ে গেছে তখনও নাবী [সাঃআঃ] মাসজিদের এক পাশে এক ব্যক্তির সাথে একান্তে কথা বলছিলেন, অবশেষে যখন লোকদের ঘুম আসছিল তখন তিনি সলাতে দাঁড়ালেন।*

[বোখারী পর্ব ১০ : /২৭ হাঃ ৬৪২, মুসলিম ৩/৩৩, হাঃ ৩৭৬] হায়িয -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


by

Comments

Leave a Reply