হাস্সান ইবনি সাবিত [রাদি.]-এর ফযিলত
হাস্সান ইবনি সাবিত [রাদি.]-এর ফযিলত >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৩৪. অধ্যায়ঃ হাস্সান ইবনি সাবিত [রাদি.]-এর ফযিলত
৬২৭৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একবার উমর [রাদি.] হাস্সান [রাদি.]-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি তখন মাসজিদে কবিতা আবৃত্তিতে মত্ত ছিলেন। উমর [রাদি.] তাহাঁর দিকে তাকালেন। তখন তিনি বলিলেন, এমন অবস্থায় মাসজিদে আমি কবিতা আবৃত্তি করছিলাম, যখন তাতে আপনার চাইতে ভাল লোক উপবিষ্ট ছিলেন। তারপর হাস্সান [রাদি.] আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-এর দিকে তাকিয়ে বলিলেন, আল্লাহর শপথ! আপনি কি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, “তুমি আমার পক্ষ হইতে উত্তর দাও। হে আল্লাহ! তাকে পবিত্র আত্মা [জিব্রীল] দ্বারা সহযোগিতা করো।” আবু হুরায়রা্ [রাদি.] বলিলেন, “ইয়া আল্লাহ! হ্যাঁ।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৬২০৩]
৬২৭৯. ইবনিল মুসায়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একবার হাস্সান [রাদি.] আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-সহ সহাবীদের এক মাজলিসে বলেছিলেন, হে আবু হুরায়রা্! আল্লাহর শপথ! আপনি কি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন? তারপর তিনি উপরোল্লিখিত হাদীসের হুবহু বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৬২০৪]
৬২৮০. আবু সালামাহ ইবনি আবদুর রহমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি হাস্সান ইবনি সাবিত আনসারী [রাদি.]-কে আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-কে সাক্ষী করিতে শুনেছেন যে, হে আবু হুরায়রা্! আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি, আপনি কি নবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন যে, হে হাস্সান! তুমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর পক্ষ হইতে উত্তর দাও। হে আল্লাহ! তাঁকে রূহুল কুদুসের [জিব্রীলের] মাধ্যমে সাহায্য করুন। তখন আবু হুরায়রা্ [রাদি.] বলিলেন, আচ্ছা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৬২০৫]
৬২৮১. বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি হাস্সান ইবনি সাবিতের উদ্দেশে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, তুমি তাদের [কাফিরদের] বিরুদ্ধে বিদ্রূপ কবিতা রচনা করো কিংবা বলেছেন, তুমি তাদের ব্যঙ্গ কবিতার জবাব দাও। জিব্রীল [আঃ] তোমার সাথে আছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬২০৬]
৬২৮২.শুবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উপরোক্ত সূত্রে অবিকল রিওয়ায়াত করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬২০৭]
৬২৮৩. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
হাস্সান ইবনি সাবিত [রাদি.] সেসব ব্যক্তির মাঝে শামিল ছিলেন, যাঁরা আয়িশার বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছেন [দুর্নাম করিয়াছেন]। তাই আমি তাকে ভর্ৎসনা করেছিলাম। তখন আয়েশাহ [রাদি.] বলিলেন, হে আমার ভগ্নিপুত্র! তাকে ছেড়ে দাও। কারণ তিনি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর পক্ষ হইতে কাফিরদের বিরুদ্ধে বিদ্রূপ কবিতা দিয়ে উত্তর দিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬২০৮]
৬২৮৪,. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্রে রিওয়ায়াত রয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬২০৯]
৬২৮৫. মাসরূক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমি আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট গেলাম। তখন তাহাঁর নিকট হাস্সান ইবনি সাবিত [রাদি.] উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি তখন তাহাঁর জন্য কবিতা তৈরি করছিলেন এবং তাহাঁর কবিতাটির কয়েকটি পংক্তি দ্বারা গান গাইছিলেন। তিনি বলেছিলেন:
“তিনি পবিত্র আত্মা! বুদ্ধিমতী, সন্দেহজনক বিষয়ে তাঁকে কোন অপবাদ দেয়া যায় না।
তিনি উদাসীনদের গোশ্ত হইতে অভুক্ত হইতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় শয্যা ত্যাগ করেন।”
তখন আয়িশা [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, কিন্তু আপনি তো এমন নন। মাসরূক [রাদি.] বলেন, আমি তাঁকে [আয়িশাকে] বললাম, আপনি তাঁকে আপনার নিকট ঢুকার অনুমতি দিলেন কেন? অথচ আল্লাহ বলেছেন-
وَالَّذِي تَوَلَّى كِبْرَهُ مِنْهُمْ لَهُ عَذَابٌ عَظِيمٌ
“এবং তাদের মাঝে যে এ বিষয়ে বড় ভূমিকা গ্রহণ করিয়াছেন, তার জন্য আছে মহাশাস্তি”-
[সূরাহ্ আন্ নূর ২৪:১১]।
তখন আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, এর চাইতে ভয়ঙ্কর শাস্তি আর কি হইতে পারে যে, সে অন্ধ হয়ে গেছে? অতঃপর তিনি বলিলেন, তিনি তো রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর তরফ হইতে তাদের [কাফিরদের] বিরুদ্ধে উত্তর দিতেন অথবা বিদ্রূপ করে কবিতার মাধ্যমে সমুচিত জবাব দিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬২১০]
৬২৮৬. শুবাহ সূত্রে এ সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল রিওয়ায়াত করিয়াছেন। তিনি বলেন, আয়িশা [রাদি.] বলেছেন, তিনি রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ]-এর তরফ হইতে উত্তর দিতেন। তবে তিনি এ বর্ণনায় ………. [পবিত্র] ও …………. [পবিত্র আত্মা, বুদ্ধিমতী] শব্দটুকু বর্ণনা করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬২১১]
৬২৮৭. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হাস্সান [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আমাকে আবু সুফ্ইয়ানের তিরস্কার করার অনুমতি দিন। তিনি বলিলেন, কিভাবে অনুমতি দিব? তার সাথে আমার আত্মীয়তার বন্ধন রয়েছে? তখন তিনি বলিলেন, সে মহান সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সম্মানিত করিয়াছেন, আটার খামির হইতে যেভাবে চুল আলাদা করে নেয়া হয়, আমি ঠিক সেভাবে আপনাকে আলাদা করে নিব। তারপর হাস্সান [রাদি.] বলিলেন:
“মান-সম্মান ও আভিজাত্য বানূ হাশিমের বংশধরদের মাঝে
বিনতু মাখযুমের সন্তানদের জন্য এবং তোমার পিতা তো দাস ছিল।” এ হলো তার কাসীদাহ্ [দীর্ঘ কবিতা]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬২১২]
৬২৮৮. হিশাম উবনু উরওয়াহ্ [রাদি.]-এর এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
আয়িশা [রাদি.] বলেন, হাস্সান ইবনি সাবিত [রাদি.] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট মুশরিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রূপাত্মক কবিতা রচনার অনুমতি চাইলেন। কিন্তু তাঁরা এ বর্ণনায় আবু সুফ্ইয়ানের কথা বর্ণনা করেননি। আবদার বর্ণনায় ……. . . [আটার খামির]-এর স্থলে ………. [ঘোলা আটা] আছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬২১৩]
৬২৮৯.আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন: কুরায়শদের বিপক্ষে তোমরা বিদ্রূপ কবিতা তৈরি কর। কারণ, তা তাদের বিপক্ষে তীর ছোড়ার চেয়ে সর্বাধিক শক্তিশালী। তারপর তিনি আবদুল্লাহ ইবনি রাওয়াহাহ্ [রাদি.]-এর নিকট জনৈক লোককে পাঠালেন। তিনি তাকে বলিলেন, ওদের বিপক্ষে বিদ্রূপ করে কবিতা তৈরি কর। অতঃপর তিনি ব্যঙ্গাত্মক কবিতা রচনা করিলেন। কিন্তু তাতে তিনি সন্তুষ্ট হলেন না। তখন তিনি কাব ইবনি মালিককে ডেকে পাঠালেন। তারপর তিনি হাস্সান ইবনি সাবিতের নিকট এক ব্যক্তি প্রেরণ করিলেন। সে যখন তার নিকট গেল তখন হাস্সান [রাদি.] বলিলেন, তোমাদের জন্য সঠিক সময় হয়েছে যে, তোমরা সে সিংহকে ডেকে পাঠিয়েছ, যে তার লেজ দিয়ে আঘাত করে দেয়। তারপর তিনি তার জিহ্বা বের করে নাড়াতে লাগলেন এবং বলিলেন, সে মহান সত্তার শপথ, তিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আমি আমার জিহ্বার মাধ্যমে তাদেরকে এমনভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিব, যেমনভাবে হিংস্র বাঘ তার থাবা দিয়ে চামড়া টেনে ছিঁড়ে ফেলে। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃহে হাস্সান! তুমি তাড়াতাড়ি করো না। কারণ আবু বকর [রাদি.] কুরায়শদের বংশ তালিকা সম্বন্ধে সবচেয়ে বেশী অভিজ্ঞ। কেননা, তাদের সাথে আমারও আত্মীয়তার বন্ধন বিদ্যমান। অতএব তিনি এসে আমার বংশ তোমাকে আলাদা করে বলে দিবেন। তারপর হাস্সান [রাদি.] তাহাঁর {আবু বকর [রাদি.]}-এর নিকট গেলেন এবং [বংশ তালিকা সম্বন্ধে জ্ঞাত হয়ে] ফিরে এলেন। সে মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন আমি আপনাকে তাদের মাঝখান হইতে এমন সুকৌশলে বের করে আনব, যেমনভাবে আটার খামির থেকে সূক্ষ্ম চুল বের করা হয়।
আয়িশা [রাদি.] বলেন, তারপর আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে হাস্সান-এর ব্যাপারে বলিতে শুনেছি যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের তরফ হইতে কাফিরদের দাঁতভাঙ্গা উত্তর দিতে থাকিবে ততক্ষণ পর্যন্ত রূহুল কুদুস অর্থাৎ-জিব্রীল [আঃ] সারাক্ষণ তোমাকে সহযোগিতা করিতে থাকিবেন।
আর তিনি {আয়িশা [রাদি.]} বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, হাস্সান তাদের [কাফিরদের বিরুদ্ধে] ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি এনে দিলেন এবং কাফিরদের মান-সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করে আত্মতৃপ্তি লাভ করিলেন।
হাস্সান [রাদি.] বলিলেন:
তুমি মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর দুর্নাম করছ,
আর আমি তাহাঁর পক্ষ হইতে জবাব দিচ্ছি।
এর পুরস্কার প্রতিদান আল্লাহর কাছে।
তুমি দুর্নাম করছ এমন মুহাম্মাদের,
যিনি নেক লোক, সর্বশ্রেষ্ঠ পরহেযগার;
তিনি হচ্ছেন আল্লাহর রসূল,
যাঁর চরিত্র মাধুর্য অনুপম।
আমার পিতা-মাতা আমার ইয্যত-আবরু
মুহাম্মাদের সম্মানের খাতিরে উৎসর্গিত হোক।
আমি শপথ করে বলছি, কাদ্দা নামক পাহাড়ের দুপ্রান্তে [মুসলিম মুজাহিদ বাহিনীর] বিজয় ধূলি উড়বে
তা তোমরা দেখিতে পাবে, কিংবা আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।
আনসারগণ পর্বত শৃঙ্গ থেকে কাঁধে ধারণ করবেন বর্শা
এবং তাঁরা থাকিবেন তৃষ্ণা-কাতর জানোয়ারের মতো ওঁৎ পেতে
[অর্থাৎ- আনসারগণ শত্রু মুকাবিলায় সতত প্রস্তুত থাকেন]।
আমাদের অশ্বারোহীরা এত দ্রুতবেগে চলে যেন মুষলধারে বারি বর্ষিত হচ্ছে।
আর নারীরা তা হইতে মুক্ত হওয়ার জন্যে পর্দা করে তাদের মুখমণ্ডল ঢেকে নিচ্ছে।
তোমরা যদি আমাদের [ইসলামের] বিমুখ হও,
তাহলেও ইসলামের বিজয় নিশান উড়বে
আর অন্ধকার চিরদিনের জন্য বিদূরিত হয়ে যাবে।
কিংবা তোমরা অপেক্ষায় থাকো ঐ সময়ের,
যেদিন মুসলিমদের সঙ্গে কাফিরদের মুকাবিলা হইবে;
আর সেদিন আল্লাহ যাকে চান বিজয় মালা পরাবেন।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আমি আমার বান্দাকে রসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি;
আর তিনি সবসময় লোকদের সত্যের দিকে ডাকেন, যাঁর মধ্যে নেই কোন কপটতা, অস্পষ্টতা।
আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেন,
আমি এমন মুজাহিদদের মদদ করি, যারা আনসার
এবং যাদের একমাত্র লক্ষ হচ্ছে শত্রু মুকাবিলা করা।
প্রত্যহ তারা শত্রু মুকাবিলায় থাকে সতত প্রস্তুত।
কক্ষনো বা গাল-মন্দ, যুদ্ধ-বিগ্রহ অথবা নিন্দাবাদ দ্বারা।
তোমাদের মাঝে এমন কারো দুঃসাহস আছে যে, আল্লাহর রসূলের বিদ্রূপ করে;
অথচ মাখলুকাত ব্যতীতও এক মহান সত্তা রয়েছেন, যিনি তাহাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ এবং সর্বাবস্থায় তাহাঁর সহায়ক।
জিব্রীল[আঃ] আমাদের জন্য আল্লাহর তরফ হইতে নির্বাচিত সম্মানিক বাণীবাহক [দূত] এবং তিনি রূহুল কুদুস [পূতঃ-পবিত্র আত্মা] যাঁর সাদৃশ্য ফেরেশ্তাকুলে দ্বিতীয় কেউ নেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৬২১৪]
Leave a Reply