হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা নারীর বর্ননা

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা নারীর বর্ননা

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা নারীর বর্ননা >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায়ঃ ১, অনুচ্ছেদঃ ১০৪-১২৩ =২০টি

অনুচ্ছেদ- ১০৪ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে একত্রে আহার ও মেলামেশা করা
অনুচ্ছেদ- ১০৫ঃ ঋতুবতী নারীর মসজিদ থেকে কিছু নেয়া
অনুচ্ছেদ- ১০৬ঃ ঋতুবতী নারী কাযা সলাত আদায় করিবে না
অনুচ্ছেদ- ১০৭ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাসের কাফফারা
অনুচ্ছেদ -১০৮ঃ কোন ব্যক্তি ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস ছাড়া অন্য কিছু করলে
অনুচ্ছেদ-১০৯ঃ মুস্তাহাযা নারীর বর্ননা এবং যে ব্যক্তি বলে , হায়িযের দিনগুলোতে সে সলাত ত্যাগ করিবে, তার প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ- ১১০ঃ হায়িয শেষ হলে সলাত বর্জন করা যাবে না
অনুচ্ছেদ- ১১১ঃ হায়িয শুরু হলে সলাত আদায় ছেড়ে দিবে
অনুচ্ছেদ-১১২ঃ মুস্তাহাযা প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য গোসল করিবে
অনুচ্ছেদ- ১১৩ঃ যে বলে, মুস্তাহাযা দু ওয়াক্তের সলাত একত্রে আদায় করিবে এবং এর জন্য একবার গোসল করিবে
অনুচ্ছেদ- ১১৪ঃ যে ব্যক্তি বলে, মুস্তাহাযা দু তুহরের মাঝখানে একবার গোসল করিবে
অনুচ্ছেদ- ১১৫ঃ যে বলে, মুস্তাহাযা এক যুহ্‌র থেকে পরবর্তী যুহ্‌র পর্যন্ত একবার গোসল করিবে
অনুচ্ছেদ-১১৬ঃ যে বলে, মুস্তাহাযা প্রতিদিন গোসল করিবে, কিন্তু এ কথা বলেনি যে, যুহরের ওয়াক্তে গোসল করিবে
অনুচ্ছেদ- ১১৭ঃ ইস্তিহাযা রোগীনী কয়েকদিন পরপর গোসল করিবে
অনুচ্ছেদ-১১৮ঃ ইস্তিহাযা রোগীণী প্রত্যেক ওয়াক্ত সলাতের জন্য উযু করিবে
অনুচ্ছেদ- ১১৯ঃ কেবল উযু নষ্ট হলেই মুস্তাহাযাকে উযু করিতে করিতে হইবে
অনুচ্ছেদ- ১২০ঃ কোন মহিলা পবিত্র হওয়ার পর হলুদ ও মেটে রং এর রক্ত দেখলে
অনুচ্ছেদ- ১২১ঃ মুস্তাহাযা স্ত্রীর সাথে স্বামীর সহবাস করা
অনুচ্ছেদ- ১২২ঃ নিফাসের সময়সীমা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ- ১২৩ঃ হায়িয থেকে পবিত্র হওয়ার গোসলের নিয়ম

অনুচ্ছেদ- ১০৪ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে একত্রে আহার ও মেলামেশা করা

২৫৮. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইয়াহূদীদের নিয়ম ছিল, তাহাদের নারীদের মাসিক ঋতু আরম্ভ হলে তারা তাকে ঘর থেকে বের করে দিত। তারা তার সাথে আহার করত না এবং এক ঘরে বসবাসও করত না। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে মহান আল্লাহ এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ

 وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ

“তারা তোমাকে হায়িয সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে? তুমি বল, তা অপবিত্র। কাজেই তোমরা হায়িয চলাকালে সহবাস বর্জন করিবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত সঙ্গম করিবে না। তারা যখন পবিত্র হইবে তখন তোমরা তাহাদের নিকট ঠিক সেভাবে যাও যেভাবে [পূর্বে] যেতে, আল্লাহ তোমাদের আদেশ করিয়াছেন। যারা পাপ কাজ হতে বিরত থাকে ও পবিত্রতা অবলম্বন করে আল্লাহ তাহাদের ভালবাসেন।”- [সূরাহ বাক্বারাহঃ ২২২]।

অতঃপর রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, তোমরা তাহাদের সাথে [তাহাদের হায়িয অবস্থায়] একই ঘরে অবস্থান ও অন্যান্য কাজ করিতে পার শুধু সহবাস ছাড়া। এ কথা শুনে ইয়াহূদীরা বলিল, এ লোক [মুহাম্মাদ] তো প্রতিটি কাজেই আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করিতে চায়। উসাইদ ইবনি হুদায়ির এবং ‘আব্বাস ইবনি বিশর নবি [সাঃআ:] -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! ইয়াহূদীরা এরূপ এরূপ বলেছে। তবে কি ঋতু অবস্থায় আমরা তাহাদের সাথে সহবাস করব না? এ কথা শুনে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেল, এমনকি আমরা মনে করলাম, তিনি হয়ত তাঁদের উপর ক্রোধান্বিত হয়েছেন। এরপর তাঁরা সেখান থেকে চলে গিয়ে [জনৈক সহাবীর মাধ্যমে] রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর নিকট দুধ হাদিয়া পাঠালেন। তিনি তাহাদের ডেকে দুধ পান করালেন। তখন আমরা বুঝলাম তাহাদের উপর তাহাঁর কোন রাগ নেই।

হায়িয, নিফাস ও ইস্তিহাযা পরিচিতিঃ হায়িযঃ হায়িযের আভিধানিক অর্থঃ কোন তরল পদার্থ প্রবাহিত হওয়া। শারী’আতের পরিভাষায় হায়িয হচ্ছেঃ কোন প্রকার আঘাত, রোগ এবং প্রসবজনিত কোন কারণ ছাড়া মহিলাদের নির্দিষ্ট সময়ে স্বাভাবিক রক্তস্রাব হওয়া। নিফাস [প্রসবোত্তর রক্তস্রাব]: এটা ঐ রক্তস্রাব, যা প্রসবজনিত কারণে প্রসবকালে বা পরে নির্গত হয়ে থাকে। এর সর্বোচ্চ সময়সীমা ৪০ দিন। ইস্তিহাযা [অনিয়মিত রক্তস্রাব]: এটা হচ্ছে মহিলাদের বিরতিহীনভাবে রক্তস্রাব অথবা সামান্য সময় বিরতি দিয়ে রক্তস্রাব। কোন মহিলার স্বীয় হায়িয ও নিফাসের গণণাকৃত নির্দিষ্ট দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও যে রক্তস্রাব হয়, তাই ইস্তিহাযা বা রক্তপ্রদর রোগ। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৫৯. ‘আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি হায়িয অবস্থায় হাড় চুষে খেয়ে তা নবি [সাঃআ:] -কে দিতাম। তিনিও তাহাঁর মুখ হাড়ের ঐ স্থানে লাগাতেন, যেখানে আমি লাগিয়েছি। আবার পানীয় দ্রব্য পান করে তাঁকে দিতাম। তিনি তখনও ঐ স্থান থেকে পান করিতেন যেখানে মুখ লাগিয়ে আমি পান করেছি।

..সহীহঃ মুসলিম। .হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৬০. ‘আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] আমার হায়িয অবস্থায় আমার কোলে মাথা রেখে কুরআন তিলাওয়াত করিতেন।

সহীহঃ বোখারী ও মুসলিম। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১০৫ঃ ঋতুবতী নারীর মসজিদ থেকে কিছু নেয়া

২৬১. ‘আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] আমাকে বলিলেন, মসজিদ থেকে চাটাই এনে দাও। আমি বললাম, আমি তো ঋতুবতী। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলিলেন, তোমার হায়িয তো তোমার হাতে লেগে নেই।

সহীহঃ মুসলিম। এ অনুচ্ছেদের হাদীস থেকে শিক্ষাঃ

১। হায়িযগ্রস্তার সাথে সঙ্গম করা হারাম। এ ব্যাপারে সকলে একমত।

২। হায়িযগ্রস্তার সাথে সঙ্গম ব্যতীত অন্যান্য আনন্দ ভোগ করা জায়িয।

৩। হাদিয়া ক্ববূল করা এবং তা থেকে অন্যকে কিছু দেয়া মুস্তাহাব।

৪। স্বামীর উচিত, স্ত্রীর সাথে কোমল ব্যবহার ও এমন আচরণ করা যদদ্বারা স্ত্রী আনন্দিত হয়।

৫। ঋতুবতী মহিলার মাসজিদ থেকে হাত দিয়ে কিছু নেয়া জায়িয।

৬। ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে একত্রে পানাহার জায়িয। হায়িয অবস্থায় তাহাদের উচ্ছিষ্ট খাবার ও দেহের অঙ্গ প্রতঙ্গ পবিত্র। যেমন, হাত ও অনুরূপ অঙ্গ।

৭। ঋতুবতী স্ত্রীর কোলে মাথা রেখে কুরআন তিলাওয়াত জায়িয।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১০৬ঃ ঋতুবতী নারী কাযা সলাত আদায় করিবে না

২৬২. মু’আযাহ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক মহিলা ‘আয়িশাহ্ [রাঃআ:] -কে জিজ্ঞেস করিল, ঋতুবতী মহিলা সলাতের কাযা আদায় করিবে কি? তিনি বলিলেন, তুমি কি ‘হারূরিয়্যাহ’? রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর সময়ে আমাদের হায়িয হলে আমরা সলাতের কাযা করতাম না এবং আমাদেরকে সলাতের কাযা আদায়ের নির্দেশও দেয়া হত না।

সহীহঃ বোখারী ও মুসলিম। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৬৩ মু’আযাহ আল-আদাবিয়্যাহ ‘আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

মু’আযাহ আল-আদাবিয়্যাহ ‘আয়িশাহ্ [রাঃআ:] সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে আরো আছেঃ আমাদেরকে সওম কাযা করার নির্দেশ দেয়া হত। কিন্তু সলাতের কাযা আদায়ের নির্দেশ দেয়া হত না।

হাদীস থেকে শিক্ষাঃ ১। ঋতুবতী মহিলার উপর ছুটে যাওয়া সলাতের ক্বাযা করা ওয়াজিব নয়। এ ব্যাপারে সকলে একমত।২। ঋতুবতী মহিলার উপর সওমের ক্বাযা করা ওয়াজিব। অনুরূপ হুকুম নিফাসগ্রস্তা মহিলার জন্যও। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১০৭ঃ ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাসের কাফফারা

২৬৪.ইবনি ‘আব্বাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

যে ব্যক্তি হায়িয অবস্থায় স্ত্রী সঙ্গম করে তার সম্পর্কে নবি [সাঃআ:] বলেছেনঃ সে যেন এক দীনার অথবা আধা দীনার সদাক্বাহ্ করে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সহিহ বর্ণনাসমূহে এরূপই রয়েছে। তিনি বলেন, এক দীনার অথবা আধা দীনার। শু’বাহ কখনো হাদীসটি মারফুভাবে বর্ণনা করেননি।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৬৫. ইবনি ‘আব্বাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হায়িযের শুরুর অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করলে এক দীনার কাফফারা দিতে হইবে। আর হায়িয বন্ধ হওয়ার কাছাকাছি সময় সহবাস করলে আধা দীনার কাফফারা দিতে হইবে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাওকুফ

২৬৬. ইবনি ‘আব্বাস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

নবি [সাঃআ:] বলেছেনঃ কেউ তার হায়িযগ্রস্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে সে যেন অর্ধ দীনার সদাক্বাহ করে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ‘আলী ইবনি বাযীমাহ মিক্বসাম হতে নবি [সাঃআ:]-এর সূত্রে মুরসাল হিসেবে এরূপই বর্ণনা করিয়াছেন। {২৬৫}

দূর্বল। ‘আবদুল হামীদ ইবনি ‘আবদুর রহমান হতে নবি [সাঃআ:] সূত্রে বর্ণিত। নবি [সাঃআ:] বলেন, আমি তাকে দু’-পঞ্চমাংশ দীনার সদাক্বাহ করার নির্দেশ দেই। এটি হাদীসটি মু’দাল। দুর্বল। {২৬৫} তিরমিজি [অধ্যায় : পবিত্রতা, অনু: ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাসের কাফফারা, হা: ১৩৬], দারিমী [অধ্যায় : সলাত : অনু: যা করলে তার উপর কাফফারা অবাধারিত, হা: ১১০৫], আহমদ [১/২৭২, হা ১১০৫], আহমদ [১/২৭২, হা: ২৪৫৮], বায়হাক্বী সুনানুল কুবরা [১/৩১৬], সকলেই শারীক সূত্রে খুসাইফ হতে। আহমদ শাকির এর সানাদকে সহিহ বলেছেন। আওনুল মাবুদে রয়েছে : হাদীসের সানাদ ও মাতানে ইযতিরাব ঘটেছে। এ সম্পর্কে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ -১০৮ঃ কোন ব্যক্তি ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস ছাড়া অন্য কিছু করলে

২৬৭. মায়মূনাহ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন নবি [সাঃআ:] তাহাঁর স্ত্রীদের মধ্যকার কোন হায়িযগ্রস্থা স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করিতেন এরুপ অবস্থায় যে স্ত্রীর উভয় রানের মাঝামাঝি অথবা হাঁটু পর্যন্ত ইযারে আবৃত থাকতো।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৬৮. আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন আমাদের কেউ ঋতুবতী হলে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] তাকে শক্তভাবে ইযার পরিধানের নির্দেশ দিতেন। অতঃপর তিনি তার সাথে শয়ন বা মেলামেশা করিতেন।

সহীহঃ বোখারী ও মুসলিম। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৬৯. আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

আমি ও রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] একই কম্বলের নীচে রাত কাটাতাম। অথচ আমি তখন হায়িয অবস্থায় থাকতাম। আমার হায়িযের রক্ত তাহাঁর শরীরে লেগে গেলে তিনি শুধু ঐ স্থানটুকু ধুয়ে ফেলতেন, এর অতিরিক্ত ধুতেন না।অতঃপর তিনি ঐ কাপড়েই সলাত আদায় করিতেন। আর যদি তাহাঁর কাপড়ে তাহাঁর দেহের [মযী] লেগে যেত, তাহলে শুধু ঐ স্থানটুকু ধুয়ে নিতেন, এর অতিরিক্ত কিছু ধুতেন না। অতঃপর ঐ কাপড়েই সলাত আদায় করিতেন।

সহিহ। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৭০. উমারাহ ইবনি গুরাব হইতে বর্ণিতঃ

তার এক ফুফু আয়িশাহ [রাঃআ:] কে জিজ্ঞাসা করেন আমাদের কারো কারো যখন ঋতুস্রাব হয় এবং তার ও তার স্বামীর জন্য একটি মাত্র বিছানা থাকে [এরুপ অবস্থায় করণীয় কি]? আয়িশাহ [রাঃআ:] বলেন, আমি তোমাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] এর অবস্থার বর্ননা দিচ্ছি। এক রাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] ঘরে এলেন। আমি তখন হায়িয অবস্থায় ছিলাম। তিনি সলাতের স্থানে চলে গেলেন। তিনি ফিরে আসতে আসতে আমার তন্দ্রা এসে গেল। ঠান্ডায় তাহাঁর কষ্ট হচ্ছিল। তিনি বললেনঃ আমার কাছে আসো। আমি বললাম আমারতো ঋতুস্রাব হয়েছে। তিনি বলিলেন, হোক না। তোমার উরূ উন্মুক্ত করো। আমি আমার উরু উন্মুক্ত করলাম। তিনি তাহাঁর মুখ ও বক্ষ আমার রানের উপর রাখলেন। আমি উপর থেকে তার উপর ঝুকে পড়লাম। তিনি গরম হলেন ও ঘুমিয়ে পড়লেন। {২৬৯}

{২৬৯} বোখারী আদাবুল মুফরাদ  [হাঃ ১২০]। এর সানাদে আবদুর রহমান ইবনি যিয়াদ ইফরিক্বী দূর্বল এবং উমারাহ ইবনি গুরাব সর্ম্পকে হাফীয আত-তাকরীব গ্রন্থে বলেনঃ তিনি অজ্ঞাত তাবেঈ। এছাড়া সানাদে তার খালাও অজ্ঞাত। আল্লামা মুনযিরী “ মুখতাসার সুনান” গ্রন্থে বলেন, তাহাদের কারোর হাদীস দ্বারাই দলীল দেয়া যাবে না। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৭১. আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার ঋতুস্রাব হলে আমি বিছানা ছেড়ে চাটাইয়ে অবস্থান করতাম। পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] এর নিকটবর্তী হতাম না। {২৭০}

{২৭০} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ননা করিয়াছেন এবং এর সানাদ দূর্বল। সানাদে আবুল ইয়ামান ও উম্মু জাররাহ উভয়ে মাক্ববুল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৭২. নবি [সাঃআ:] এর কোন এক স্ত্রী হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন নবি [সাঃআ:] তাহাঁর ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে কিছু করিতে চাইলে স্ত্রীর লজ্জাস্থানের উপর কাপড় ফেলে দিতেন।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৭৩. আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] আমাদের হায়িযের প্রাথমিক অবস্থায় শক্ত করে ইযার [পাজামা] পরিধানের নির্দেশ দিতেন। অতঃপর তিনি আমাদের সাথে মেলামেশা করিতেন। তোমাদের কেউ কি তার উত্তেজনার মুর্হুতে নিজেকে সংযত রাখতে সেরূপ সক্ষম, যেরূপ সক্ষম ছিলেন রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]।

সহীহঃ বোখারী ও মুসলিম।

এ অনুচ্ছেদের হাদীস থেকে শিক্ষা

১। কোন ব্যক্তি ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস ব্যতীত অন্যভাবে মিলন করিতে পারবে। মিলনের সময় নাভী থেকে রান বা হাঁটুর অর্ধেক পর্যন্ত কাপড়ে আবৃত থাকিবে।

২। ঋতুবতীর সাথে একই বিছানায় রাত্রি যাপন জায়িজ।

৩। কাপড়ে বা দেহের অন্য কোন অংশে অপবিত্রতা লেগে গেলে কেবল সেই অংশটুকু পরিষ্কার করলেই চলবে।

৪। ঋতুবতী মহিলার কাপড়ের পবিত্রতা হচ্ছে তাতে হায়িযের রক্ত লেগে না থাকা।

৫। যদি সঙ্গমের উদ্দেশ্যে স্বামী তার ঋতুবতী স্ত্রীর নিকটবর্তী হতে না চান তাহলে স্ত্রীর জন্য খুবই উচিত হল, হায়িযের কারনে তার নিকটবর্তী না হওয়া। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০৯ঃ মুস্তাহাযা নারীর বর্ননা এবং যে ব্যক্তি বলে , হায়িযের দিনগুলোতে সে সলাত ত্যাগ করিবে, তার প্রসঙ্গে

২৭৪. নবি [সাঃআ:] এর স্ত্রী উন্মু সালামাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] এর যুগে এক মহিলার [হায়িয-নিফাসের নির্দিষ্ট সময় অতিক্রমের পরও] রক্তস্রাব হতো। উন্মু সালামাহ [রাঃআ:] রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] এর নিকট ঐ মহিলার জন্য কি বিধান তা জিজ্ঞেস করিলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বললেনঃ সে যেন ইস্তিহাযায় আক্রান্ত হবার আগে মাসের যে কয়দিন তার হায়িয হতো তা খেয়াল করে গুনে রাখে। এবং প্রতিমাসে সেই কদিন সলাত সে ছেড়ে দেয়। ঐ কদিন অতিবাহিত হয়ে গেলে যে যেন গোসল করে নেয়, অতপরঃ [লজ্জাস্থানে] পট্টি বেধে সলাত আদায় করে।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৭৫. উন্মু সালামাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

এক মহিলার অত্যধিক রক্তস্রাব হতো। অতঃপর বর্ননাকারী পুর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ননা করে বলেন, যখন হায়িযের সময়সীমা পার হয়ে যাবে এবং সলাতের সময় উপস্থিত হইবে তখন সে যেন গোসল করে নেয়। পূর্বোক্ত হাদীসের সমার্থবোধক।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৭৬. জনৈক আনসারী হইতে বর্ণিতঃ

এক মহিলার অত্যধিক রক্তস্রাব হতো। অতঃপর বর্ননাকারী লাইসের পূর্বোক্ত সমার্থক হাদীস বর্ননা করে বলেন, যখন তাহাদের হায়িযের সময়সীমা অতিবাহিত হইবে এবং সলাতের সময় উপস্থিত হইবে তখন তারা যেন গোসল করে নেয়। তারপর পূর্বের ন্যায় বর্ননা করেন।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৭৭. নাফি লাইস হইতে বর্ণিতঃ

নাফি লাইসের বর্ণিত [২৭৫নং] হাদীসের সূত্র ও অর্থানুরূপ হাদীস বর্ননা করে বলেন, সে যেন হায়িযের সময়সীমার [দিনগুলোতে] সলাত বর্জন করে। এরপর থেকে সলাতে সময় উপস্থিত হলে সে যেন গোসল করে এবং পট্টি বেঁধে সলাত আদায় করে।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৭৮. সুলায়মান ইবনি ইয়াসার হতে উন্মু সালামাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

সুলায়মান ইবনি ইয়াসার হতে উন্মু সালামাহ [রাঃআ:] সূত্রে উক্ত ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তাতে রয়েছে সে যেন [হায়িযের সময়ের দিনগুলোতে] সলাত ছেড়ে দেয়। এছাড়া এর পরের দিনগুলোতে সে যেন গোসল করে [লজ্জাস্থানে] কাপড়ের নেকড়া বেঁধে সলাত আদায় করে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন হাম্মাদ ইবনি যায়িদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আইয়ূব সূত্রে বলেছেন, এ হাদীসে বর্ণিত উক্ত রক্তপ্রদর রোগীনীর নাম ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবাইশ।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৭৯. আয়িশাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা উম্মু হাবীবা [রাঃআ:] নবি [সাঃআ:] কে রক্তস্রাব সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করেন। `আয়িশাহ [রাঃআ:] বলেন, আমি তাহাঁর পানির পাত্র রক্তে পরিপূর্ণ দেখিতে পেলাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেনঃ “তুমি হায়িযের নির্ধারিত দিনগুলো পর্যন্ত সলাত থেকে বিরত থাকিবে, এরপর গোসল করিবে।

সহীহঃ মুসলিম।হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৮০.উরওয়াহ ইবনি যুবাইর [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবাইশ [রাঃআ:] রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] এর নিকট রক্তস্রাবের সর্ম্পকে অভিযোগ করেন এবং এ সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, এটা এক বিশেষ শিরা থেকে নির্গত রক্ত। অতএব তুমি তোমার হায়িযের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করিবে ঐ সময়ে সলাত আদায় হতে বিরত থাকিবে। অতঃপর হায়িযের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে পবিত্র হইবে। তারপর পরবর্তী হায়িয আসা পর্যন্ত [গোসল করে] সলাত আদায় করিবে।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৮১. উরওয়াহ ইবনি যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবাইশ [রাঃআ:] আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি আসমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন অথবা আসমা-ই আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবাইশ রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] কে জিজ্ঞেস করার জন্য। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] তাকে নির্দেশ দিলেন যে, [পূর্বের হিসেব মতো] হায়িযের দিনগুলোতে অপেক্ষা করিবে, তারপর সময়সীমা শেষ হলে গোসল করিবে। {২৮০}

সহিহ। যায়নাব বিনতু উম্মু সালামাহ সূত্রে বর্ণিত। উম্মু হাবীবাহ্ বিনতু জাহ্শের ইস্তিহাযা শুরু হলে নবি [সাঃআ:] তাকে হায়িযের সময়সীমা পরিমাণ সলাত ত্যাগের নির্দেশ দেন, অতঃপর সময়সীমা শেষে গোসল করে সলাত আদায়ের নির্দেশ দেন। সহিহ। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ক্বাতাদাহ উরওয়াহ হতে কিছুই শোনেননি। আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবার ইস্তিহাযা রোগ ছিল। তিনি এ সম্পর্কে নবি [সাঃআ:]-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে হায়িযের দিনগুলোতে সলাত ত্যাগের নির্দেশ দেন। সহীহঃ মুসলিম। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটা ইবনি উয়াইনার ধারণা মাত্র। সুহাইল ইবনি আবু সালিহর বর্ণনা ছাড়া যুহরী সূত্রে হাদীসের হাফিযগণ কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে এটি উল্লেখ নেই। হাদীসটি ইবনি উয়াইনাহ্ হতে হুমাইদীও বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে হায়িযের দিনগুলোতে সলাত ছেড়ে দেয়ার কথা উল্লেখ নেই। আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে বর্ণিত : “ইস্তিহাযাগ্রস্ত মহিলা হায়িযের দিনগুলোতে সলাত ছেড়ে দিবে। অতঃপর সময়সীমা শেষ হলে গোসল করিবে।” সহিহ মাওকুফ।

আবদুর রহমান ইবনিল ক্বাসিম তার পিতা সূত্রে বর্ণনা করেন যে, নবি [সাঃআ:] তাকে [ইস্তি হাযাগ্রস্ত মহিলাকে] হায়িযের দিনগুলোতে সলাত ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। ইকরিমাহ হতে নবি [সাঃআ:]-এর সূত্রে বর্ণিত, উম্মু হাবীবাহ্ বিনতু জাহ্শ [রাঃআ:] ইস্তিহাযায় আক্রান্ত হলেন ….. অতঃপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। সহিহ। আদী ইবনি সাবিত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদা হতে নবি [সাঃআ:]-এর সূত্রে বর্ণনা করেন: রক্ত প্রদর রোগে আক্রান্ত মহিলা হায়িযের নির্ধারিত দিনগুলোতে সলাত ছেড়ে দিবে। অতঃপর সময়সীমা শেষে গোসল করে সলাত আদায় করিবে। সহিহ। আবু জাফর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাওদা [রাঃআ:] রক্ত প্রদর রোগে আক্রান্ত হওয়ায় নবি [সাঃআ:] তাকে নির্দেশ দিলেন, হায়িযের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হলে গোসল করে সলাত আদায় করে নিবে।

সহিহ, তবে [ ……/ সালাত] কথাটি বাদে। আলী ও ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] বলেন, ইস্তিহাযা রোগে আক্রান্ত মহিলা হায়িযের দিনগুলোতে বসে থাকিবে [অর্থাৎ সলাত আদায় করিবে না]। সহিহ। এরূপই বর্ণনা করিয়াছেন ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] সূত্রে বনু হাশিমের আযাদকৃত গোলাম আম্মার ও ত্বালক্ব ইবনি হাবীব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]। অনুরূপভাবে আলী [রাঃআ:] সূত্রে মাক্বাল আল-খাসআমী এবং আয়িশাহ্ সূত্রে ক্বামীরাহ হতে শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আল-হাসান, সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাব, আত্বা, মাকহূল, ইবরাহীম, সালিম ও আল-ক্বাসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর অভিমত হচ্ছে, মুস্তাহাযা নারী হায়িযের দিনগুলোতে সলাত ছেড়ে দিবে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ক্বাতাদাহ উরওয়াহ হতে কিছুই শুনেননি। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

অনুচ্ছেদ- ১১০ঃ হায়িয শেষ হলে সলাত বর্জন করা যাবে না

২৮২. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফাতিমাহ্ বিনতু আবু হুবাইশ [রাঃআ:] রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর নিকট এসে বলেন, আমি একজন রক্তপ্রদর রোগীণী, কখনো পবিত্র হই না। আমি কি সলাত ত্যাগ করব? রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেনঃ এটা একটি শিরা [হতে নির্গত রক্ত], হায়িয নয়। যখন হায়িয হইবে তখন সলাত ছেড়ে দিবে। হায়িযের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে [গোসল করে] সলাত আদায় করিবে।

সহিহ: বোখারী ও মুসলিম। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৮৩. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] যুহাইর সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] যুহাইর সূত্রে উপরোক্ত অর্থবোধক হাদীস বর্ননা করেন। নবি [সাঃআ:] বলেছেন, ঋতুস্রাব আসলে সলাত ছেড়ে দিবে আর ঋতুস্রাবের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে রক্ত ধুয়ে নিয়ে [গোসল করে] সলাত আদায় করিবে।{২৮২}

সহিহ: বোখারী ও মুসলিম। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১১১ঃ হায়িয শুরু হলে সলাত আদায় ছেড়ে দিবে

২৮৪. বুহায়্যাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শুনলাম, জনৈক মহিলা আয়িশা [রাঃআ:] -কে এমন মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে যার হায়িযের গোলমাল হয়েছে, রক্তস্রাব অনবরত জারী রয়েছে। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] আমাকে [আয়িশাহ্কে] নির্দেশ দিলেন আমি যেন তাকে বলি, ইতোপূর্বে প্রতিমাসে যে কদিন তার হায়িয হত তা গণনা করে রাখবে, ঐ দিনগুলো পর্যন্ত অপেক্ষা করিবে এবং ঐ দিনগুলোতে সলাত ছেড়ে দিবে। অতঃপর গোসল করে [লজ্জাস্থানে] পট্টি বেঁধে সলাত আদায় করিবে। {২৮৩}

{২৮৩} এ সূত্রে আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সানাদে আবু আক্বীল ইয়াহ্ইয়া ইবনিল মুতাওয়াক্কিলকে হাফিয দুর্বল বলেছেন। সানাদে বুহাইয়্যাহ অজ্ঞাত। আওনুল মাবুদে রয়েছেঃ সানাদের আবু আক্বীলকে আলী ইবনিল মাদীনী ও ইমাম নাসায়ী দুর্বল বলেছেন। ইবনি মাঈন বলেছেন, তিনি কিছুই না। ইমাম আবু যুরআহ বলেছেন, তিনি হাদীসে বর্ণনায় শিখিল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৮৫. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর শ্যালিকা ও আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাঃআ:] -এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশ সাত বছর যাবত ইস্তিহাযায় আক্রান্ত থাকেন। ফলে তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর কাছে এ বিষয়ে মাসআলাহ জিজ্ঞেস করিলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেনঃ এটা হায়িয নয় বরং এটা রগবিশেষ থেকে নির্গত রক্ত। কাজেই তুমি গোসল করে সলাত আদায় কর।

সহীহঃ বোখারী ও মুসলিম। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আওযাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ হাদীসে বৃদ্ধি করেন যে, যুহরী হতে, তিনি উরওয়াহ ও আমরাহ হতে আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে, তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইবনি আওফের স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশ [রাঃআ:] সাত বছর যাবত ইস্তিহাযায় আক্রান্ত থাকেন। ফলে নবি [সাঃআ:] তাকে নির্দেশ দিলেন যে, তোমার হায়িয এলে সলাত ছেড়ে দিবে, আর হায়িয চলে যাবে গোসল করে সলাত আদায় করিবে। সহিহ। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উপরোক্ত বক্তব্য আওযায়ী ব্যতীত যুহ্রীর আর কোন শিষ্য উল্লেখ করেননি। যুহ্রী সূত্রে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন আমর ইবনিল হারিস, লাইস, ইউনুস, ইবনি আবু যিব, মামার, ইবরাহীম ইবনি সাদ, সুলায়মান ইবনি কাসীর, ইবনি ইসহাক্ব ও সুফিয়ন ইবনি উয়াইনাহ প্রমুখ। তারা উপরোক্ত বক্তব্য উল্লেখ করেননি। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাদীসের এ শব্দ হিশাম ইবনি উরওয়াহ তার পিতা হতে আয়িশাহ্ সূত্রের। ইমাম আবু দুউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবনি উয়াইনাহও তাতে শব্দগত কিছু বাড়িয়ে বলেনঃ নবি [সাঃআ:] তাকে হায়িযের দিনগুলোতে সলাত বর্জনের নির্দেশ দেন। তবে এটা ইবনি উয়াইনাহের ধারণামাত্র। এছাড়া যুহরী হতে মুহাম্মাদ ইবনি আমর বর্ণিত হাদীসে যা কিছু রয়েছে, তা আওযাঈ বর্ণিত হাদীসের কাছাকাছি। সহীহঃ মুসলিম। এটি গত হয়েছে ২৮১ নং-এ। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৮৬. ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবাইশ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তার রক্তস্রাব হলে নবি [সাঃআ:] তাকে বললেনঃ হায়িযের রক্ত কালো হয়, তা [দেখলে] চেনা যায়। রক্ত এরূপ হলে সলাত হতে বিরত থাকিবে। আর অন্যরকম হলে উযু করে সলাত আদায় করিবে। কারণ তা একটি রগ থেকে নির্গত রক্ত। {২৮৫}

হাসান। আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহর রক্তস্রাব হয়েছিল ….. এরপর অনুরূপ অর্থের হাদীস বর্ণনা করেন। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আনাস ইবনি সীরীন ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] সূত্রে মুস্তাহাযা সম্পর্কে বর্ণনা করে বলেনঃ যখন সে গাঢ় ও প্রচুর রক্ত দেখবে তখন সলাত আদায় করিবে না। আর যখন পবিত্রতা দেখিতে পাবে- যদিও তা কিছুক্ষণের জন্য হয়- তখন গোসল করে সলাত আদায় করিবে। সহিহ। মাকহূল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, মহিলাদের কাছে হায়িযের রক্ত অস্পষ্ট বা অজানা কিছু নয়। হায়িযের রক্ত গাঢ় কালো রঙের হয়। এটা দূরীভূত হয়ে হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করলে তা-ই ইস্তিহাযা। তার কর্তব্য হচ্ছে এ অবস্থায় গোসল করে সলাত আদায় করা। আমি এটি পাইনি। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাম্মাদ ইবনি যায়িদ ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ হতে, তিনি কাকা ইবনি হাকীম হতে বর্ণনা করেন যে, সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] মুস্তাহাযা সম্পর্কে বলেন, হায়িয শুরু হলে সলাত ছেড়ে দিবে এবং শেষ হলে গোসল করে সলাত আদায় করিবে।

সহিহ। সুমাই প্রমুখ সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বর্ণনা করেনঃ হায়িযের দিনগুলোতে বসে থাকিবে [অপেক্ষা করিবে]। অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন হাম্মাদ ইবনি সালামাহ ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাব সূত্রে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইউনুস হাসান সূত্রে বর্ণনা করেন, ঋতুবতী নারীর রক্তস্রাব বেশি দিন অব্যাহত থাকলে হায়িযের পর একদিন অথবা দুদিন সলাত আদায় হতে বিরত থাকিবে। তারপর মুস্তাহাযা গণ্য হইবে। আত-তায়মী ক্বতাদাহ সূত্রে বর্ণনা করে বলেন, তার হায়িযের দিন থেকে পাঁচদিন অতিরিক্ত অতিবাহিত হয়ে গেলে সে সলাত আদায় করিবে। আত-তায়মী আরো বলেন, আমি তা কমিয়ে দুদিন ধার্য করেছি। অতএব ঐ দুদিন হায়িযের মধ্যে গণ্য। ইবনি সীরীনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, মহিলারাই এ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৮৭. হামনাহ বিনতু জাহশ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার খুব বেশী রক্তস্রাব হত। আমি আমার অবস্থা বর্ণনা ও মাসআলাহ জিজ্ঞেস করিতে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর কাছে গেলাম। আমি তাঁকে আমার বোন যাইনাব বিনতু জাহশের ঘরে পেলাম। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আামর খুব বেশী রক্তস্রাব হয়। এ বিষয়ে আপনি আমাকে কী পরামর্শ দেন? আমার সলাত ও সিয়াম বন্ধ। তিনি বলেনঃ আমি তোমাকে তুলা ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। এতে তোমারা রক্ত বন্ধ্ হইবে। হামনাহ বলেন, তা এর চেয়েও বেশী। তিনি বলেন, কাপড়ের পট্টি বেঁধে নাও। হামনাহ বলেন, তাতো এর চেয়েও বেশী। আমার তো রীতিমত রক্ত প্রবাহিত হয়। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেন, তাহলে আমি তোমাকে দুটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি। তার কোন একটি অনুসরণ করাই তোমার জন্য যথেষ্ট। উভয়টির উপর যদি আমাল করিতে পার, তাহলে তা তুমিই ভাল জান। তিনি তাকে বললেনঃ এটা শাইত্বানের লাথি বা স্পর্শবিশেষ। সুতরাং তুমি নিজেকে [প্রতি মাসে] ছয় কিংবা সাতদিন ঋতুবতী গণ্য করিবে। আর প্রকৃত ব্যাপার আল্লাহই ভাল জানেন। তারপর গোসল করিবে। যখন তুমি নিজেকে পবিত্র মনে করিবে তখন তেইশ অথবা চব্বিশ দিন যাবত সলাত আদায় ও সিয়াম পালন করিবে। এটাই তোমার জন্য যথেষ্ট। প্রতিমাসেই এরূপ করিবে যেরূপ অন্যান্য নারীরা হায়িয ও পবিত্রতার ক্ষেত্রে করে থাকে। আর তুমি এরূপও করিতে পারঃ যুহরের সলাত দেরীতে এবং আসরের সলাত এগিয়ে এনে আদায় করিবে। গোসল করে এভাবে যুহর ও আসর সলাত একত্রে আদায় করিবে। অন্যদিকে মাগরিবকে বিলম্বে ও ইশাকে এগিয়ে নিয়ে গোসল করে উভয় ওয়াক্তের সলাত একত্রে আদায় করিবে। আর ফজরের সময় গোসল সেরে সলাত আদায় ও সিয়াম পালন করিবে- যদি এরূপ করা তোমার পক্ষে সম্ভবপর হয়। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেনঃ দুটি পন্থার মধ্যে এ দ্বিতীয় পদ্ধতিই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়। {২৮৬}

ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার ইবনি সাবিত-ইবনি আক্বীল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হামনাহ [রাঃআ:] বলেন, দুটি পন্থার মধ্যে শেষোক্তটিই আমার অধিকতর পছন্দনীয়। ইবনি আক্বীল কথাটি হামনাহের উক্তি হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন, নবি [সাঃআ:] -এর উক্তি হিসেবে নয়। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমর ইবনি সাবিত রাফিযী মন্দ লোক, কিন্তু তিনি হাদীস বর্ণনায় সত্যবাদী ছিলেন। আর সাবিত ইবনি মিক্বদাম একজন বিশ্বস্ত লোক। এটা ইয়াহ্ইয়াহ্ ইবনি মাঈন সূত্রে বর্ণিত। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি আহমদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমি ইবনি আক্বীল বর্ণিত হাদীসের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করি। {২৮৬} তিরমিজি [অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ রক্তপ্রদর রোগীনী এক গোসলে দু ওয়াক্তের সলাত একত্রে আদায় করিবে, হাঃ ১২৮], ইবনি মাজাহ [অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হলে, হাঃ ৬২২], আহমদ [৬/৩৪৯, ৩৮১, ৪৩৯], এবং বোখারী আদাবুল মুফরাদ [৭৯৭], সকলেরই আবদুল্লাহ ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি আক্বীল সূত্রে। হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণয় করা হয়নি

অনুচ্ছেদ-১১২ঃ মুস্তাহাযা প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য গোসল করিবে

২৮৮. নবি [সাঃআ:]-এর স্ত্রী আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর শ্যালিকা এবং আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাঃআ:]-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহ্শের সাত বছর পর্যন্ত ইস্তিহাযা অব্যাহত থাকে। তিনি এ বিষয়ে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর নিকট মাসআলাহ জানতে চাইলে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলিলেন, এটা হায়িয নয়, বরং এটা শিরার রক্তবিশেষ। কাজেই তুমি গোসল করে সলাত আদায় করিবে। আয়িশা [রাঃআ:] বলেন, উম্মু হাবীবাহ [রাঃআ:] তার বোন যায়নাব বিনতু জাহ্শের ঘরে একটি বিরাট পাত্রে গোসল করিতেন। তার ইস্তিহাযা রক্তের লালিমা পানিতে প্রাধান্য লাভ করত [দেখা যেত]।

সহীহঃ বোখারী ও মুসলিম। এটি পূর্বেই উল্লেখিত হয়েছে ২৮৫ নং-এ। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৮৯. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরাহ বিনতু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উম্মু হাবীবাহ [রাঃআ:] সূত্রে উক্ত হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে রয়েছেঃ আয়িশা [রাঃআ:] বলেন, তিনি [উম্মু হাবীবাহ] প্রত্যেক সলাতের জন্য গোসল করিতেন।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৯০. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

উরওয়াহ আয়িশা [রাঃআ:] থেকে একই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে তিনি বলেছেন, তিনি প্রত্যেক সলাতের জন্য গোসল করিতেন। ইবনি উয়াইনাহ তার হাদীসে বলেন, নবি [সাঃআ:] তাকে [প্রত্যেক সলাতের জন্য] গোসল করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে যুহরী এ কথা উল্লেখ করেননি। {২৮৯}

{২৮৯} মুসলিম [অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ মুস্তাহাযা এবং তার গোসল ও সলাত], নাসায়ী [অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, হাঃ ২০৯, ২১০], আহমদ [৬/১৮৭] একাধিক সানাদে যুহরী হতে আমরাহ সূত্রে। হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণয় করা হয়নি

২৯১. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ [রাঃআ:] সাত বছর পর্যন্ত রক্ত প্রদরে আক্রান্ত ছিলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] তাঁকে গোসল করার নির্দেশ দিলে তিনি প্রত্যেক সলাতের জন্যই গোসল করিতেন। আওযাঈ এরূপই বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে রয়েছেঃ আয়িশা [রাঃআ:] বলেন, তিনি প্রত্যেক সলাতের জন্যই গোসল করিতেন।

সহীহঃ বোখারী হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৯২. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর যুগে উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহ্শের ইস্তিহাযা হলে রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] তাকে প্রত্যেক সলাতের পূর্বে গোসল করার নির্দেশ দেন। তারপর হাদীসের শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন।

সহিহ। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদীস আবুল ওয়ালীদ আত-তায়ালিসীও বর্ণনা করিয়াছেন, কিন্তু আমি এটি তার কাছ থেকে শুনিনি। তিনি সুলাইমান ইবনি কাসীর হতে যুহরী থেকে উরওয়াহর মাধ্যমে আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, যায়নাব বিনতু জাহ্শ ইস্তিহাযায় আক্রান্ত হলে নবি [সাঃআ:] তাঁকে বললেনঃ তুমি প্রত্যেক সলাতের জন্য গোসল করিবে … তারপর পূর্ণ হাসীস বর্ণনা করেন। সহিহ। তবে যায়নাব বিনতু জাহ্শ কথাটি বাদে। সঠিক হচ্ছে উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহ্শ। যেমন পূর্বেই উল্লিখিত হয়েছে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাদীসটি আবদুস সামাদও সুলাইমান ইবনি কাসীর থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে রয়েছেঃ প্রত্যেক সলাতের জন্য উযু করিবে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটা আবদুস সামাদের ধারণা মাত্র্। এ বিষয়ে আবুল ওয়ালীদের বর্ণনাই সঠিক। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৯৩. আবু সালামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যায়নাব বিনতু আবু সালামাহ আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেন, জনৈকা মহিলার রক্তস্রাব হত। উক্ত মহিলা ছিলেন আবদুর রহমান ইবনি আ্ওফ [রাঃআ:] -এর স্ত্রী। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] তাকে প্রত্যেক সলাতের সময় গোসল করে সলাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন।

সহিহ। আবু সালামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উম্মু বাক্র আমাকে অবহিত করিয়াছেন, আয়িশা [রাঃআ:] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেনঃ মহিলারা পবিত্র হওয়ার পরও এমন রক্ত দেখে থাকে যা তাকে সন্দেহে ফেলে দেয় [কিন্তু তা হায়িয নয়, বরং] ওটা হচ্ছে শিরা বা শিরাসমূহ থেকে নির্গত রক্ত বিশেষ। সহিহ। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবনি আক্বীলের বর্ণনায় দুটি বিষয় উল্লেখ রয়েছে। তিনি বলেছেনঃ [এক] তোমার পক্ষে সম্ভব হলে প্রত্যেক সলাতের জন্য গোসল করিবে। [দুই] অন্যথায় দুই-দুই ওয়াক্তের সলাত একত্রে আদায় করিবে। সহিহ।যেরূপ ক্বাসিম তার হাদীসে বর্ণনা করিয়াছেন। এটা বর্ণিত আছে সাঈদ ইবনি যুবাইর হতে, যা তিনি আলী ও ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। সহিহ। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১১৩ঃ যে বলে, মুস্তাহাযা দু ওয়াক্তের সলাত একত্রে আদায় করিবে এবং এর জন্য একবার গোসল করিবে

২৯৪. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর যুগে এক মহিলা রক্তপ্রদরে আক্রান্ত হলে তাকে আসরের সলাত শীঘ্র আদায় করার, যুহরের সলাত বিলম্বে আদায় করার এবং উভয় সলাতের জন্য একবার গোসল করার আদেশ দেয়া হয়। একইভাবে তাকে নির্দেশ দেয়া হয় মাগরিবের সলাত বিলম্বে ও ইশার সলাত শীঘ্র আদায় করার এবং উভয় সলাতের জন্য একবার গোসল করার, আর ফজরের সলাতের জন্য একবার গোসল করার। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবদুর রহমান ইবনি ক্বাসিমকে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি নবি [সাঃআ:] -এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, আমি নবি [সাঃআ:] ব্যতীত অন্য কারো থেকে কিছু বর্ণনা করি না।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৯৫. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সাহ্‌লাহ বিনতু সুহাইল ইস্তিহাযা অবস্থায় নবি [সাঃআ:] -এর নিকট এলেন। নবি [সাঃআ:] তাকে প্রত্যেক সলাতের জন্য গোসল করার নির্দেশ দিলেন। তার জন্য এটা কষ্টসাধ্য হওয়ায় তিনি তাকে এক গোসলে একত্রে যুহর ও আসর এবং এক গোসলে একত্রে মাগরিব ও ইশার, এবং এক গোসলে ফজর সলাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন।

ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাদীসটি ইবনি উয়াইনাহ আবদুর রহমান ইবনিল ক্বাসিম হতে তার পিতার সূত্রেও বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে রয়েছেঃ এক মহিলার ইস্তিহাযা হলে এ বিষয়ে সে নবি [সাঃআ:] -কে জিজ্ঞেস করে। নবি [সাঃআ:] তাকে নির্দেশ দিলেন … পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ। {২৯৪} পূর্বের হাদীস দেখুন। মুনযিরী বলেনঃ সানাদে মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাক্ব রয়েছে। তার দ্বারা দলীল গ্রহণের ব্যাপারে মতভেদ আছে। হাদীসটি তিনি আন্ আন্ শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি তাদলীস করিতেন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২৯৬. আসমা বিনতু উমাইস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবাইশ এত এত দিন যাবত ইস্তিহাযায় আক্রান্ত। তাই তিনি সলাত আদায় করিতে পারছেন না। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! এটা তো শাইত্বানের ধোঁকা মাত্র। সে একটি বড় [পানির] পাত্রে বসবে। পানির উপর হলুদ রঙ দেখিতে পেলে যুহর ও আসরের জন্য একবার গোসল করিবে, মাগরিব ও ইশার জন্য একবার গোসল করিবে এবং ফাজর সলাতের জন্য একবার গোসল করিবে। আর মধ্যবর্তী সময়ের জন্য উযু করিবে।

সহিহ। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাদীসটি ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] সূত্রে মুজাহিদও বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে রয়েছেঃ তার পক্ষে গোসল করা অসম্ভব হওয়ায় নবি [সাঃআ:] তাকে দু ওয়াক্তের সলাত একত্রে আদায় করার নির্দেশ দিলেন। সহিহ। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১১৪ঃ যে ব্যক্তি বলে, মুস্তাহাযা দু তুহরের মাঝখানে একবার গোসল করিবে

২৯৭. আদী ইবনি সাবিত হতে তার পিতা থেকে তার দাদা হইতে বর্ণিতঃ

নবি [সাঃআ:] মুস্তাহাযা সম্পর্কে বলেছেনঃ হায়িযের দিনগুলোতে সে সলাত ত্যাগ করিবে, তারপর গোসল করে সলাত আদায় করিবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য উযু করিবে। {২৯৬}

সহিহ।ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উসমান তার বর্ণনায় বলেন, যে সিয়াম পালন ও সলাত আদায় করিবে।হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৯৮. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফাতিমাহ্ বিনতু আবু হুবাইশ [রাঃআ:] নবি [সাঃআ:] -এর নিকট এসে তার ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তারপর গোসল করিবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য উযু করে সলাত আদায় করিবে।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২৯৯. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মু কুলসূম আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে মুস্তাহাযা সম্পর্কে বর্ণনা করে বলেনঃ ইস্তিহাযায় আক্রান্ত মহিলা কেবল একবার গোসল করিবে, তারপর তার পবিত্র অবস্থা চলাকালে উযু করে সলাত আদায় করিবে।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩০০. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

নবি [সাঃআ:] -এর সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বণিত। {২৯৯}

দুর্বল। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাবীব ও আইউব আবুল আলা সূত্রে আদী ইবনি সাবিত ও আল-আমাশ কর্তৃক বর্ণিত এ প্রসঙ্গের সকল হাদীসই জঈফ, সহিহ নয়। হাবীব বর্ণিত হাদীসের মারফু হওয়ার বিষয়টি হাফস ইবনি গিয়াস প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে আল-আমাশ কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মওকূফ হওয়ার ব্যাপারে আসবাত ঐকমত্য পোষণ করিয়াছেন। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবনি দাউদ হাদীসটির প্রথমাংশ নবি [সাঃআ:] -এর বক্তব্য হিসাবে বর্ণনা করিয়াছেন এবং তাতে প্রতি ওয়াক্তের সলাতের জন্য [ইস্তিহাযা রোগিনীর] উযু করার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। যুহরী হতে উরওয়াহ থেকে আয়িশা [রাঃআ:] -সূত্রে বর্ণিত, আয়িশা [রাঃআ:] বলেন, তিনি [মুস্তাহাযা] প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য গোসল করিতেন- এ হাদীস হাবীব বর্ণিত উপরোক্ত হাদীসের দুর্বলতা নির্দেশ করে। আবুল ইয়াক্বাযান আদী ইবনি সাবিত হতে তার পিতার সূত্রে আলী [রাঃআ:] হতে এবং বনু হাশিমের মুক্ত দাস আম্মার ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] সূত্রেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবদুল মালিক ইবনি মাইসারা, বায়ান আল-মুগীরাহ, ফিরাস ও মুজালিদ আশ-শাবী হতে কামীর থেকে আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে বর্ণিত আছেঃ “ইস্তিহাযা রোগিণী প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য উযু করিবে”- [সহিহ]। দাউদ ও আসিম-আশ-শাবী হতে কামীর থেকে আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রে বর্ণিত হাদীসে এসেছেঃ “সে প্রতিদিন একবার গোসল করিবে”- [সহিহ]। হিশাম ইবনি উরওয়াহ হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত আছেঃ “মুস্তাহাযা প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য স্বতন্ত্রভাবে উযু করিবে।” এসব সূত্রে বর্ণিত হাদীসসমূহ প্রত্যেকটিই দুর্বল। তবে কামীর বর্ণিত হাদীস, বনু হাশিমের মুক্ত দাস আম্মারের হাদীস এবং হিশাম ইবনি উরওয়াহ কর্তৃক তার পিতার সূত্রে বর্ণিত হাদীস ব্যতীত। ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] -এর প্রসিদ্ধ মত হচ্ছে, “ইস্তিহাযা রোগিণী প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য গোসল করিবে। {২৯৯} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১১৫ঃ যে বলে, মুস্তাহাযা এক যুহ্‌র থেকে পরবর্তী যুহ্‌র পর্যন্ত একবার গোসল করিবে

৩০১. আবু বাক্‌র [রাঃআ:] -এর মুক্ত দাস সুমাই হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কাকাআ এবং যায়িদ ইবনি আসলাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সুমাইকে মুস্তাহাযার গোসলের পদ্ধতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাবের নিকট প্রেরণ করিলেন। সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাব বলিলেন, মুস্তাহাযা যুহর থেকে যুহর পর্যন্ত [প্রত্যেক যুহর সলাতের পূর্বে] গোসল করিবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য উযু করিবে। আর অত্যধিক রক্তস্রাব হলে কাপড়ের পট্টি পরিধান করিবে। {৩০০}

সহিহ। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবনি উমার ও আনাস ইবনি মালিক [রাঃআ:] সূত্রের বর্ণনায়, রয়েছেঃ এক যুহর থেকে পরবর্তী যুহর পর্যন্ত গোসল করিবে। সহিহ, আনাস সূত্রে। দাউদ ও আসিম শাবী হতে … আয়িশা [রাঃআ:] সূত্রেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। কিন্তু দাউদ তাতে বলেছেন, প্রতিদিন [গোসল করিবে]। সহিহ। আসিম বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ যুহরের সময় গোসল করিবে। সালিম ইবনি আবদুল্লাহ, হাসান ও আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] প্রমুখ এর অভিমতও তা-ই। সহিহ, হাসান সূত্রে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইমাম মালিক বলেন, আমার ধারণা সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাবের হাদীস এরূপ হবেঃ সে এক তুহ্র [পবিত্রাবস্থা] হতে আরেক তুহ্রে। কিন্তু তাতে সন্দেহ প্রবেশ করেছে। একই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন মিসওয়ার ইবনি আবদুল মালিক ইবনি সাঈদ ইবনি আবদুর রহমান ইবনি ইয়ারবু। তাতে রয়েছে তুহ্র হতে তুহ্র পর্যন্ত। কিন্তু লোকেরা তাতে পরিবর্তন করে বলেছেঃ যুহর থেকে যুহর পর্যন্ত। দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

অনুচ্ছেদ-১১৬ঃ যে বলে, মুস্তাহাযা প্রতিদিন গোসল করিবে, কিন্তু এ কথা বলেনি যে, যুহরের ওয়াক্তে গোসল করিবে

৩০২. আলী [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইস্তিহাযা আক্রান্ত মহিলার হায়িযকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে প্রত্যেক দিন গোসল করিবে এবং লজ্জাস্থানে ঘি অথবা তেলবিশিষ্ট নেকড়া ব্যবহার করিবে। {৩০১}

{৩০১} এর সানাদে মুহাম্মাদ ইবনি রাশিদ সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ সত্যবাদী, তবে সন্দেহ আছে। তার প্রতি ক্বাদরীয়াপন্থী বলে আরোপ রয়েছে। এবং সানাদের মাকাল আল খাসআমী সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ তিনি অজ্ঞাত। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১১৭ঃ ইস্তিহাযা রোগীনী কয়েকদিন পরপর গোসল করিবে

৩০৩.মুহাম্মাদ ইবনি উসমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ক্বাসিম ইবনি মুহাম্মাদকে ইস্তিহাযা রোগীণী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, হায়িযের দিনগুলোতে সে সলাত ত্যাগ করিবে, তারপর গোসল করে সলাত আদায় করিবে। এরপর কয়েকদিন পরপর গোসল করিবে।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১১৮ঃ ইস্তিহাযা রোগীণী প্রত্যেক ওয়াক্ত সলাতের জন্য উযু করিবে

৩০৪. ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবাইশ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

ফাতিমাহ বিনতু আবু হুবাইশ [রাঃআ:] ছিল রক্ত প্রদরের রোগীণী। নবি [সাঃআ:] তাকে বললেনঃ হায়িযের রক্ত চেনার উপায় হলো, তা কালো রংয়ের হয়ে থাকে। এ ধরণের রক্ত বের হলে তুমি সলাত ছেড়ে দেবে। আর যখন অন্য রকম রক্ত নির্গত হইবে তখন উযু করে সলাত আদায় করিবে। {৩০৩}

হাসানঃ এটি পূর্বেই উল্লিখিত হয়েছে ২৮৬ নং-এ। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু জাফারের সাথে ঐকমত্য পোষণ করে বলেন, রক্ত প্রদরের রোগীণী প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য উযু করিবে। {৩০৩} এটি গত হয়েছে [২৮৬]-এ। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১১৯ঃ কেবল উযু নষ্ট হলেই মুস্তাহাযাকে উযু করিতে করিতে হইবে

৩০৫.ইকরিমাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহ্শের ইস্তিহাযা হলো। নবি [সাঃআ:] তাকে হায়িযের দিনসমূহে [সলাত ইত্যাদির জন্য] অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর উযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় উযু করে সলাত আদায় করিতে বলিলেন। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩০৬.রবীআহ হইতে বর্ণিতঃ

তার অভিমত হলো, মুস্তাহাযার প্রত্যেক সলাতের পূর্বে উযু করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি তার উযু নষ্ট হয়ে যায়, অবশ্যই ইস্তিহাযা ছাড়া, তাহলে উযু করে নিবে। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, মালিক ইবনি আনাসের মত এটাই।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১২০ঃ কোন মহিলা পবিত্র হওয়ার পর হলুদ ও মেটে রং এর রক্ত দেখলে

৩০৭. উম্মু আত্বিয়্যাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নবি [সাঃআ:] -এর নিকট বাইআত করেছিলেন। তিনি বলেন, হায়িয থেকে পবিত্র হওয়ার পর মেটে ও হলুদ রংয়ের কিছু নির্গত হলে আমরা তা [হায়িয হিসাবে] গণনা করতাম না।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩০৮. মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উম্মু আত্বিয়্যাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উম্মু আত্বিয়্যাহ [রাঃআ:] হতে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উম্মুল হুযাইল হলেন হাফসাহ বিনতু সীরীন। তার ছেলের নাম হুযাইল এবং স্বামীর নাম আবদুর রহমান।

হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১২১ঃ মুস্তাহাযা স্ত্রীর সাথে স্বামীর সহবাস করা

৩০৯. ইকরিমাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ [রাঃআ:] -এর ইস্তিহাযার অবস্থায় তার স্বামী তাহাঁর সাথে সহবাস করিতেন।

সহিহ। ইমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইয়াহ্ইয়াহ ইবনি মাঈন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনাকারী মুআল্লাকে সিকাহ বলেছেন। তবে আহমদ ইবনি হাম্বাল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার সূত্রে হাদীস বর্ণনা করিতেন না। কারণ তিনি নিজস্ব মতামতের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। হায়েজ নেফাস ঋতুবতী মুস্তাহাযা ইস্তিহাযা  -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১০. হামনাহ বিনতু জাহ্শ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি মুস্তাহাযা থাকা অবস্থায় তার স্বামী তার সাথে সহবাস করিতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১২২ঃ নিফাসের সময়সীমা সম্পর্কে

৩১১. উম্মু সালামাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর যুগে নিফাসগ্রস্তা মহিলারা চল্লিশ দিন বা চল্লিশ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করিতেন। আর আমরা আমাদের মুখমণ্ডলের দাগ দূর করার জন্য তাতে ওয়ার্স [এক প্রকার সুগন্ধিযুক্ত ঘাস] ঘষে দিতাম।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৩১২. কাসীর ইবনি যিয়াদ হতে আযদ গোত্রীয় মুস্‌সাহ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি হাজ্জ পালন করিতে গিয়ে উম্মু সালামাহ [রাঃআ:] -এর নিকট উপস্থিত হলাম। আমি বললাম, হে উম্মুল মুমিনীন! সামুরাহ ইবনি জুনদুব্ [রাঃআ:] মহিলাদের হায়িযকালীন সলাত কাযা আদায়ের নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, না, ঐ সলাত কাযা করিতে হইবে না। কেননা নবি [সাঃআ:] -এর স্ত্রীরা নিফাসের সময় চল্লিশ দিন পর্যন্ত বসে থাকতেন। নবি [সাঃআ:] তাহাদেরকে নিফাসকালীন সলাত কাযা করার নির্দেশ দিতেন না।

{৩১১} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ- ১২৩ঃ হায়িয থেকে পবিত্র হওয়ার গোসলের নিয়ম

৩১৩. উমাইয়্যাহ বিনতু আবুস সল্ত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি গিফার গোত্রের জনৈকা মহিলার সূত্রে বলেন, একদা [সফরকালে] রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] আমাকে তাহাঁর উটের পিছনের দিকে চড়ালেন। আল্লাহর শপথ! রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] ভোরবেলা উটের পিঠ থেকে অবতরণ করিলেন। তিনি নেমে যখন উটকে বসালেন, আমিও আসন থেকে নামলাম এবং তাতে রক্তের চিহ্ন দেখিতে পেলাম। এটা ছিল আমার প্রথম হায়িয। এতে আমি লজ্জায় সঙ্কুচিত হয়ে উটের সাথে মিলে গেলাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] আমার এ অবস্থা ও রক্ত দেখিতে পেয়ে বলিলেন, তোমার কী হলো? সম্ভবত তোমার হায়িয শুরু হয়েছে। আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি নিজেকে সামলে নাও [অর্থাৎ লজ্জাস্থানে কিছু বেঁধে নাও, যেন বাইরে কিছুতে রক্ত না লাগে]। তারপর একটি পাত্র ভর্তি পানি নিয়ে তাতে কিছু লবণ মিশিয়ে হাওদায় যে রক্ত লেগেছে তা ধুয়ে ফেল। তারপর তোমার আসনে সমাসীন হও। উক্ত মহিলা বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] যখন খায়বার জয় করিলেন, তখন যুদ্ধলব্ধ সম্পদ থেকে আমাদেরকেও কিছু দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর ঐ মহিলা যখনই হায়িয থেকে পবিত্র হতেন, তখনই পানিতে লবণ মিশিয়ে ব্যবহার করিতেন। মৃত্যুকালেও তিনি ওয়াসিয়্যাত করে যান তার গোসলের পানিতে যেন লবণ মেশানো হয়। {৩১২}

{৩১২} আহমদ [৬/৩৮০] মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাক্ব সূত্রে। মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাক্ব একজন মুদাল্লিস। আহমাদের বর্ণনায় তার হাদীস শ্রবণের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সুতরাং তাদলীস হওয়ার সংশয় দূরীভূত হয়েছে। এছাড়া সানাদে উমাইয়্যাহ বিনতু আবু সালতকে ইমাম যাহাবী আল-মীযান [৪/৬০৪] গ্রন্থে অজ্ঞাত নারীদের অর্ন্তভূক্ত করিয়াছেন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩১৪. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আসমা [রাঃআ:] রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ হায়িয থেকে পবিত্র হয়ে কিভাবে গোসল করিবে? তিনি বললেনঃ প্রথমে বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে উযু করিবে। তারপর মাথা ধৌত করিবে ও তা রগড়াবে, যেন চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়। তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে দিবে। অতঃপর কাপড়েরর টুকরা দিয়ে [রক্ত লেগে থাকার স্থান] পরিষ্কার করিবে। আসমা [রাঃআ:] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! তা দিয়ে কিভাবে পরিষ্কার করবো। আয়িশা [রাঃআ:] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] ইশারা-ইঙ্গিতে যা বোঝাতে চেয়েছেন আমি তা বুঝতে পেরেছি। আমি তাকে বললাম, [লজ্জাস্থানের] যে জায়গায় রক্ত লেগে থাকে কাপড় দিয়ে রগড়ে তা পরিষ্কার করিবে।

হাসান সহীহঃ মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৩১৫. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আনসার মহিলাদের সম্পর্কে আলোচনা করিলেন এবং তাহাদের উত্তম প্রশংসা করিলেন। তাহাদের এক মহিলা রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] -এর নিকট আসল ….. এরপর আবু আওয়ানাহর উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তাতে সুগন্ধি মিশ্রিত কাপড় কথাটি উল্লেখ রয়েছে। মুসাদ্দাদ বলেন, আবু আওয়ানাহ কাপড়ের টুকরা উল্লেখ করিয়াছেন। আর আবুল আহওয়াস সামান্য কাপড়ের কথা উল্লেখ করিয়াছেন।

হাসান সহীহঃ মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৩১৬. আয়িশাহ্ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ

আসমা [রাঃআ:] নবি [সাঃআ:] -কে জিজ্ঞেস করেন ….. তারপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ। বর্ণনাকারী শুবাহ বলেন, নবি [সাঃআ:] সুগন্ধি মিশ্রিত নেকড়ার কথা কললে আসমা বলেন, তা দিয়ে আমি কাভাবে পবিত্রতা অর্জন করব? তিনি বলেনঃ সুবহানাল্লাহ! তা দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করিবে। এই বলে তিনি [লজ্জায়] কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকলেন। বর্ণনাকারী শুবাহ আরো বলেন, আসমা নবি [সাঃআ:] -কে জানাবাতের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তখন তিনি বলেন, তুমি পানি নিয়ে উত্তমরূপে পরিপূর্ণ পবিত্রতা অর্জন করিবে। তারপর মাথায় পানি ঢেলে তা রগড়াবে, যেন পানি চুলের গোড়ায় পৌঁছায়। তারপর সমগ্র শরীরে পানি ঢালবে। আয়িশা [রাঃআ:] বলেন, আনসারী মহিলারা খুবিই উত্তম। দ্বীন সম্পর্কে মাসআলাহ জিজ্ঞেস করিতে এবং এ সম্পর্কে ব্যুৎপত্তি অর্জনের ক্ষেত্রে তারা লজ্জাবোধ করেন না।

..হাসানঃ বোখারী ও মুসলিম। কিন্তু আয়িশার উক্তিঃ আনসারী মহিলারা খুবই উত্তম….. এটি বোখারীতে মুআল্লাক্বভাবে বর্ণিত আছে। এ অনুচ্ছেদের , হাদীস থেকে শিক্ষাঃ ১। নবি [সাঃআ:]-এর বিনয় প্রদর্শন।

২। হায়িযের রক্তমিশ্রিত কাপড় ধোয়ার সময় ইচ্ছে হলে পানিতে লবন মেশানো যেতে পারে।

৩। জিজ্ঞাসিত ব্যক্তির উচিত, প্রশ্নকারীকে কৃত প্রশ্নের জবাব সুস্পষ্ট ও পরিপূর্ণভাবে দেয়া। যাতে বিষয়টি তার কাছে পরিস্কার হয়ে যায়।

৪। শারঈ বিধানের গোপনীয় বিষয়েও প্রশ্ন করা জায়িয, যদিও তা উল্লেখ করিতে লজ্জাবোধ হয়।

৫। পরিশোধন ও পরিচ্ছন্নতার উদ্দেশে গোসলের পানিতে বড়ই পাতা মিশানো মুস্তাহাব।

৬। গোসলের শুরুতে উযু করা মুস্তাহাব।

৭। গোসলের সময় প্রথমে চুল ঘর্ষণ করিবে, যেন চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে।

৮। মহিলাদের জন্য মুস্তাহাব হলো, গোসলের পর তুলা বা নেকড়া নিয়ে তাতে সুগন্ধি মিশিয়ে লজ্জাস্থানের রক্ত লেগে থাকা স্থানটুকু পরিস্কার করা।

৯। কোন ব্যাপারে আশ্চর্য হলে বা বিস্ময়কর কিছু ঘটতে তাতে সুবহানাল্লাহ বলা জায়িয।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply