হামদ ও নাত কবিতা চর্চা ও ব্যাঙ্গ-কৌতুক
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা , এই অধ্যায়ে হাদীস = ৬৩ টি হাদীস (৮৬৪ – ৯২৬) << আদাবুল মুফরাদ হাদীস কিতাবের মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় – ১৩ কবিতা চর্চা ও ব্যাঙ্গ-কৌতুক
৩৮১. অনুচ্ছেদঃ কোন কোন কবিতায় প্রজ্ঞা নিহিত আছে।
৩৮২. অনুচ্ছেদঃ উত্তম কথার ন্যায় উত্তম কবিতাও আছে, নিকৃষ্ট কবিতাও আছে।
৩৮৩. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কবিতা আবৃত্তির আবদার করে।
৩৮৪. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কবিতা নিয়ে ব্যস্ত থাকা নিন্দনীয় মনে করে।
৩৮৫. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণীঃ “কবিগণ, কেবল পথভ্রষ্টরাই তাহাদের অনুগামী হয়” [২৬ : ২২৪]।
৩৮৬. অনুচ্ছেদঃ যে বলে, কথায়ও যাদুকরী প্রভাব থাকে।
৩৮৭. অনুচ্ছেদঃ নিন্দনীয় কবিতা।
৩৮৮. অনুচ্ছেদঃ বাচালতা।
৩৮৯. অনুচ্ছেদঃ আশা-আকাঙ্ক্ষা।
৩৯০. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি, বস্তু বা ঘোড়াকে ‘সমুদ্র’ অভিহিত করা।
৩৯১. অনুচ্ছেদঃ ভাষাগত ভুলের জন্য প্রহার করা।
৩৯২. অনুচ্ছেদঃ কেউ বলে, এটা কিছুই না অর্থাৎ এটা সঠিক বা যথার্থ কিছু নয়।
৩৯৩. অনুচ্ছেদঃ বিপরীতাৰ্থক উপমা।
৩৯৪. অনুচ্ছেদঃ গোপনীয় বিষয় ফাঁস করে দেয়া।
৩৯৫. অনুচ্ছেদঃ ঠাট্টা-বিদ্ধপ। মহামহিম আল্লাহর বাণীঃ “একদল অপর দলকে যেন ঠাট্টা-বিদ্রুপ না করে” [৪৯ : ১১]।
৩৯৬. অনুচ্ছেদঃ কাজকর্মে ধীরস্থিরতা।
৩৯৭. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি পথভোলা লোককে রাস্তা বলে দেয়।
৩৯৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি অন্ধকে পথহারা করে।
৩৯৯. অনুচ্ছেদঃ বিদ্রোহ।
৪০০. অনুচ্ছেদঃ বিদ্রোহের শাস্তি।
৪০১. অনুচ্ছেদঃ বংশমর্যাদা।
৪০২. অনুচ্ছেদঃ মানবাত্মাসমূহ সমবেত সৈন্যদল।
৪০৩. অনুচ্ছেদঃ বিস্মিত হয়ে কারো ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা।
৪০৪. অনুচ্ছেদঃ হাতে মাটি স্পর্শ করা।
৪০৫. অনুচ্ছেদঃ নুড়ি পাথর।
৪০৬. অনুচ্ছেদঃ তোমরা বায়ুকে গালি দিও না।
৪০৭. অনুচ্ছেদঃ কারো বক্তব্য, অমুক অমুক গ্রহের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে।
৪০৮. অনুচ্ছেদঃ লোকজন মেঘ দেখলে যা বলবে।
৪০৯. অনুচ্ছেদঃ অশুভ লক্ষণ।
৪১০. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি অশুভ লক্ষণ মানে না তার মর্যাদা।
৪১১. অনুচ্ছেদঃ জিনের আছর থেকে বাঁচার নিষ্ফল তদবীর।
৪১২. অনুচ্ছেদঃ শুভ লক্ষণ।
৪১৩. অনুচ্ছেদঃ উত্তম নামকে বরকতময় মনে করা।
৪১৪. অনুচ্ছেদঃ ঘোড়ায় কুলক্ষণ।
৩৮১. অনুচ্ছেদঃ কোন কোন কবিতায় প্রজ্ঞা নিহিত আছে।
৮৬৪. খালিদ ইবনি কায়সান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন ইয়াস ইবনি খায়ছামা [রাহিমাহুল্লাহ] তার নিকট উপস্থিত হয়ে বলেন, হে ফারুক তনয়! আমার কিছু কবিতা কি আপনাকে আবৃত্তি করে শুনাবো? তিনি বলেন, হাঁ, তবে কেবল উত্তম কবিতাই শুনাবে। তিনি তাকে তা আবৃত্তি করে শুনাতে থাকেন। পরে কবিতায় ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর অপছন্দনীয় কিছু এলে তিনি বলেন, এবার থামো।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮৬৫. কাতাদা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি মুতাররিফ [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমি ইমরান ইবনি হুসাইন [রাঃআঃ]-এর সাথে কূফা থেকে বসরা পর্যন্ত সফর করেছি। খুব কম মনযিলই এমন ছিল যেখানে তিনি যাত্রাবিরতি করিয়াছেন, অথচ আমাকে কবিতা পড়ে শুনাননি। তিনি বলেন, পরোক্ষ বচন মিথ্যাকে এড়ানোর নিরাপদ উপায়।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
৮৬৬. উবাই ইবনি কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ নিশ্চয় কোন কোন কবিতায় জ্ঞানের কথাও থাকে।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৬৭. আল-আসওয়াদ ইবনি সারী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি [স্বরচিত কবিতায়] নানাভাবে মহামহিম আল্লাহর প্রশংসা করেছি। তিনি বলেনঃ শোনো! তোমার প্রভু তার প্রশংসা অত্যন্ত পছন্দ করেন। তিনি এর বেশী আর কিছু বলেননি।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৮৬৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিজের পেট কবিতা দ্বারা ভর্তি করার তুলনায় পুঁজ দ্বারা ভর্তি করা যে কোন ব্যক্তির জন্য উত্তম।
-[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৬৯. আল-আসওয়াদ ইবনি সারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি ছিলাম কবি। অতএব আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললাম, আমি যে কবিতার মাধ্যমে আমার প্রভুর প্রশংসা করেছি তা দ্বারা কি আপনার প্রশংসা করিতে পারি না? তিনি বলেনঃ নিশ্চয় তোমার প্রভু প্রশংসা পছন্দ করেন। তিনি আমাকে এর অতিরিক্ত কিছু বলেননি।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৮৭০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, হাসসান ইবনি ছাবিত [রাঃআঃ] [কবিতার মাধ্যমে] মুশরিকদের নিন্দা প্রচার করার জন্য নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট অনুমতি চাইলেন। তিনি বলেনঃ আমার বংশকে কি করিবে? হাসসান [রাঃআঃ] বলেন, আটার খামীর থেকে চুলকে যেভাবে টেনে বের করা হয় সেভাবে আমি আপনাকে তাহাদের থেকে আলাদা করে নিবো।
[বোখারী, মুসলিম] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৭১. হিশাম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-এর সামনে হাসসান [রাঃআঃ]-কে ভর্ৎসনা করিতে উদ্যত হলাম। তিনি বলেন, তাকে ভর্ৎসনা করো না। কেননা সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পক্ষ থেকে [কবিতার মাধ্যমে] দুশমনদেরকে প্রতিহত করেছে।
[বোখারী, মুসলিম] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৮২. অনুচ্ছেদঃ উত্তম কথার ন্যায় উত্তম কবিতাও আছে, নিকৃষ্ট কবিতাও আছে।
৮৭২. উবাই ইবনি কাব [রা] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ নিশ্চয় কোন কোন কবিতায় জ্ঞানের কথাও থাকে।
[বোখারী,আবু দাউদ,ইবনি মাজাহ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৭৩. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কবিতাও কথারই মত [কথার সমষ্টি]। রুচি সম্মত কবিতা উত্তম কথাতুল্য এবং কুরুচিপূর্ণ কবিতা কুরুচিপূর্ণ কথাতুল্য।
[দার] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৭৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলিতেন, কবিতার মধ্যে কতক ভালো এবং কতক নিকৃষ্ট। তুমি তার ভালোটা গ্রহণ করে এবং নিকৃষ্টটা পরিহার করো। আমার কাছে কাব ইবনি মালেক [রাঃআঃ]-এর এমন কবিতাও বর্ণনা করা হয়েছে, যার মধ্যকার একটি কাসীদায় চল্লিশ বা তার কিছু কম সংখ্যক চরণ ছিলো।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৭৫. মিকদাম ইবনি শুরায়হ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-কে বললাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি উপমা দেয়ার জন্য কবিতা পাঠ করিতেন? তিনি বলেন, তিনি আবদুল্লাহ ইবনি রাওয়াহার এ কবিতা আবৃত্তি করে উপমা দিতেনঃ “যাকে তুমি দাওনি তোশা, খবর আনবে সে নিশ্চয়”।
-[তিরমিজী, নাসায়ী, আহমাদ, তাহাবী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৭৬. আল-আসওয়াদ ইবনি সারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি ছিলাম কবি। অতএব আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললাম, আমি যে কবিতার মাধ্যমে আমার প্রভুর প্রশংসা করেছি তা দ্বারা কি আপনার প্রশংসা করিতে পারি না? তিনি বলেনঃ
أَمَا إِنَّ رَبَّكَ يُحِبُّ الْحَمْدَ
“নিশ্চয় তোমার প্রভু প্রশংসা পছন্দ করেন”। তিনি আমাকে এর অধিক কিছু বলেননি
। [তাহাবীর কিতাবুল কারাহিয়্যা] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৩৮৩. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কবিতা আবৃত্তির আবদার করে।
৮৭৭. আশ-শারীদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] আমাকে কবি উমাইয়্যা ইবনি আবুস সালতের কবিতা আবৃত্তি করে তাহাঁকে শুনাতে বলেন। আমি তাহাঁকে তা আবৃত্তি করে শুনলাম। নাবী [সাঃআঃ] বলিতে থাকলেনঃ চালাতে থাকো, চালাতে থাকো। শেষ পর্যন্ত আমি তাহাঁকে এক শত চরণ আবৃত্তি করে শুনালাম। তিনি বলেনঃ সে তো প্রায় মুসলমান হয়েই গিয়েছিলো।
-[মুসলিম, ইবনি মাজাহ, দারিমি, ইবনি খুজাইমাহ, আহমাদ, তাহাবী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৮৪. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কবিতা নিয়ে ব্যস্ত থাকা নিন্দনীয় মনে করে।
৮৭৮. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ নিজের পেট কবিতা দ্বারা ভর্তি করার তুলনায় পুঁজ দ্বারা ভর্তি করা যে কোন ব্যক্তির জন্য উত্তম।
-[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৮৫. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণীঃ “কবিগণ, কেবল পথভ্রষ্টরাই তাহাদের অনুগামী হয়” [২৬ : ২২৪]।
৮৭৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আর-বি. “বিভ্রান্ত লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে। তুমি কি দেখো না যে, তারা প্রতিটি ময়দানে উদভ্ৰান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায় এবং এমন কথা বলে যা তারা করে না” [সূরা শুআরাঃআঃ ২২৪-২২৫]? উপরোক্ত অংশ [মহামহিম আল্লাহ] মানসূখ [রহিত] করিয়াছেন এবং নিম্নোক্ত অংশ ব্যতিক্রম করিয়াছেন, মহান আল্লাহ বলেনঃ “তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, আল্লাহকে পর্যাপ্ত স্মরণ করে এবং নির্যাতিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নির্যাতনকারী অচিরেই জানতে পারবে তাহাদের গন্তব্য কিরূপ” [সূরা শুআরাঃআঃ ২২৭]।
[আবু দাউদ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৮৬. অনুচ্ছেদঃ যে বলে, কথায়ও যাদুকরী প্রভাব থাকে।
৮৮০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি বা এক বেদুইন নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় কথাবার্তা বললো। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কথায়ও যাদুকরী প্রভাব থাকে এবং কবিতাও প্রজ্ঞাপূর্ণ হইতে পারে।
[আবু দাউদ,তিরমিজী,ইবনি মাজাহ,আহমাদ, ইবনি হিব্বান,তহাকিম] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৮১. উমার ইবনি সালাম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আবদুল মালেক ইবনি মারওয়ান তার সন্তানদের আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়ার জন্য শাবী [রাহিমাহুল্লাহ]-এর নিকট সোপর্দ করেন। তিনি বলেন, এদের কবিতা শিক্ষা দিন, তাতে তারা উচ্চাভিলাসী ও নির্ভীক হইবে, এদের গোশত খাওয়ান, তাতে তাহাদের হৃদয়ের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এদের মস্তক মুণ্ডন করান, তাতে তাহাদের ঘাড় শক্ত হইবে এবং এদের নিয়ে প্রতিভাবান ব্যক্তিদের সমাবেশে বসুন। তাতে তাহাদের সাথে বাক্য বিনিময়ে তারা কথা বলার কৌশল আয়ত্ত করিতে পারবে।
-[তারীখুল কাবীর, আবু হাতেম, ইবনি হিব্বান] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৮৭. অনুচ্ছেদঃ নিন্দনীয় কবিতা।
৮৮২. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মানুষের মধ্যে মারাত্মক অপরাধী হলো সেই কবি যে সমগ্র গোত্রের নিন্দা করে এবং যে ব্যক্তি নিজ পিতাকে অস্বীকার করে।
-[ইবনি মাজাহ হা/৩৭৬১] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৮৮. অনুচ্ছেদঃ বাচালতা।
৮৮৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে প্রাচ্য থেকে দুই বাগ্মী পুরুষ [মদীনায়] আসে। তারা দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করলো, অতঃপর বসলো। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বক্তা সাবিত ইবনি কায়েস [রাঃআঃ] দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন। কিন্তু লোকজন পূর্বের দুই বক্তার বক্তৃতায়ই অভিভূত হলো। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে বলেনঃ হে জনগণ! নিজেদের কথা বলো। কেননা মারপ্যাচের কথা বলা শয়তানের অভ্যাস। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন কোন বক্তৃতায় যাদুকরী প্রভাব থাকে।
-[বোখারী, আবু দাউদ, তিরমিজী, ইবনি হিব্বান] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৮৪. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি উমার [রাঃআঃ]-র সামনে দীর্ঘ বক্তৃতা করলো। উমার [রাঃআঃ] বলেন, বক্তৃতায় লম্বা-চওড়া কথা বলা শয়তানের কাজ।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৮৫. আবু ইয়াযীদ অথবা মান ইবনি ইয়াযীদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলে পাঠানঃ তোমরা তোমাদের মসজিসমূহে একত্র হও। লোকজন একত্র হলে তারা যেন আমাকে খবর দেয়। অতঃপর আগমনকারী প্রথমে আমাদের মসজিদে আসেন এবং বসেন। তখন আমাদের মধ্যকার এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে কিছু কথা বলেন। তিনি বলেন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যাঁর প্রশংসা দ্বারা একমাত্র তাহাঁর সত্তা ছাড়া আর কিছুই কাম্য নয়। আর তিনি ছাড়া পালিয়ে যাবার অন্য কোন ঠাই নাই। এতে নাবী [সাঃআঃ] অসন্তুষ্ট হন এবং উঠে চলে যান। আমরা এজন্য পরস্পরকে দোষারোপ করে বললাম, আগন্তুক তো প্রথমেই আমাদের মসজিদে আসেন [আর আমরা তাহাঁকে অসন্তুষ্ট করলাম]। অতঃপর তিনি অন্য এক মসজিদে গিয়ে সেখানে বসেন। আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তাহাঁর নিকট [ক্ষমা চাইলাম]। অতএব তিনি আমাদের সাথে ফিরে এলেন এবং তাহাঁর আগের জায়গায় বা তার সন্নিকটে বসেন, অতঃপর বলেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি যা ইচ্ছা তাহাঁর সম্মুখে করেন এবং যা ইচ্ছা তাহাঁর পশ্চাতে করেন। আর কোন কোন বক্তৃতায় যাদুকরী প্রভাব থাকে। অতঃপর তিনি আমাদের উদ্দেশ্যে ওয়াজ-নসীহত করেন এবং জ্ঞান দান করেন ।
[আহমাদ হা/১৫৯৫৫] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৩৮৯. অনুচ্ছেদঃ আশা-আকাঙ্ক্ষা।
৮৮৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক রাতে নাবী [সাঃআঃ]-এর ঘুম আসছিলো না। তিনি বলেন, আহা! আমার সাহাবীদের মধ্যকার কোন সৎকর্মশীল ব্যক্তি এসে এই রাতটুকু যদি আমাকে পাহারা দিতো। তৎক্ষণাৎ আমরা অস্ত্রের শব্দ শুনতে পেলাম। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ কে এই লোক? বলা হলো, সাদ। ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে পাহারা দিতে এসেছি। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] ঘুমিয়ে গেলেন, এমনকি আমরা তাহাঁর নাক ডাকার শব্দ শুনতে পেলাম।
-[বোখারী, আবু দাউদ, তিরমিজী, আবু দাউদ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯০. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি, বস্তু বা ঘোড়াকে ‘সমুদ্র’ অভিহিত করা।
৮৮৭. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
একদা মদীনায় [বিকট শব্দ হলে] ভীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। নাবী [সাঃআঃ] আবু তালহা [রাঃআঃ]-র মানদূৰ নামের ঘোড়াটি ধার নিয়ে তাতে চড়ে সেদিকে গেলেন। অতঃপর ফিরে এসে বলেনঃ তেমন কিছু তো দেখলাম না। আর ঘোড়াটি তো দেখছি সমুদ্রবৎ [দ্রুতগামী]।
[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯১. অনুচ্ছেদঃ ভাষাগত ভুলের জন্য প্রহার করা।
৮৮৮. নাফে [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
ইবনি উমার [রাঃআঃ] তার ছেলেকে উচ্চারণের ভুলের জন্য প্রহার করিতেন।
[আবু দাউদ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৮৯. আবদুর রহমান ইবনি আজলান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
উমার [রাঃআঃ] দুই ব্যক্তির নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা তখন তীর নিক্ষেপ করছিল। তাহাদের একজন অপরজনকে বললো, ……… [শুদ্ধ …………..] অর্থাৎ তুমি নির্ভুল তীর ছুঁড়েছো। উমার [রাঃআঃ] বলেন, উচ্চারণের ভুল তীর নিক্ষেপে ভুল করার চেয়েও মারাত্মক।
[ইবনি আদী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৯২. অনুচ্ছেদঃ কেউ বলে, এটা কিছুই না অর্থাৎ এটা সঠিক বা যথার্থ কিছু নয়।
৮৯০. নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
লোকজন নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গণকদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। তিনি তাহাদের বলেনঃ তারা কিছুই না। লোকজন আবার বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! তারা এমন কিছুও বলে যা সঠিক হইতে দেখা যায়। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সেটা শয়তানের লুফে নেয়া কথা [আসমানবাসী থেকে]। সে তার বন্ধুদের দুই কানে মুরগীর ডাকের মত তা পৌঁছে দেয়। অতঃপর সেই গণক তার সাথে শত মিথ্যা যোগ করে।
[বোখারী, মুসলিম] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৩. অনুচ্ছেদঃ বিপরীতাৰ্থক উপমা।
৮৯১. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর এক সফরে ছিলেন। চালক হুদী গান গেয়ে [জতুযান হাঁকিয়ে নিয়ে] যাচ্ছিল। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ হে আনজাশা! তোমার জন্য আফসোস, সদয় হও কাঁচপাত্রগুলোর ব্যাপারে।
[বোখারী, মুসলিম] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৯২. উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতোটুকু যথেষ্ট যে, সে যা শোনে তাই নির্বিচারে বলে বেড়ায়। উমার [রাঃআঃ] আরো বলেন, পরোক্ষ বচন মুসলমানের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
[হাকিম] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
৮৯৩. মুতাররিফ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনুস শিখখীর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
বসরা যেতে আমি ইমরান ইবনুল হুসাইন [রাঃআঃ]-র সফরসংগী হলাম। সফরে প্রতি দিনই তিনি আমাদের কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, পরোক্ষ বচন মিথ্যাকে এড়ানোর নিরাপদ উপায়।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৪. অনুচ্ছেদঃ গোপনীয় বিষয় ফাঁস করে দেয়া।
৮৯৪. আমর ইবনুল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে ব্যক্তি তাকদীর থেকে পলায়ন করে তার সম্পর্কে আমার অবাক লাগে। কারণ তাকদীরের সাথে তার সাক্ষাত ঘটবেই। সে তার [অপর মুসলিম] ভাইয়ের চোখে পতিত সামান্য ময়লাটুকুও দেখিতে পায় কিন্তু নিজ চোখে পতিত গাছের গুঁড়িও দেখে না। সে তার ভাইয়ের অন্তর থেকে ঘৃণা-বিদ্বেষ বের করার প্রয়াস পায়, অথচ নিজের অন্তরের বিদ্বেষ ত্যাগ করে না। আমি কারো কাছে আমার গোপনীয় বিষয় বলবো, আর তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার জন্য তাকে তিরস্কার করবো, এটা হইতে পারে না। যে গোপনীয়তা চেপে রাখতে আমি সমর্থ হয়নি, তার [ফাঁস হয়ে যাওয়ার] জন্য অপরকে কিভাবে তিরস্কার করিতে পারি?
[ইবনি হিব্বান] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৫. অনুচ্ছেদঃ ঠাট্টা-বিদ্ধপ। মহামহিম আল্লাহর বাণীঃ “একদল অপর দলকে যেন ঠাট্টা-বিদ্রুপ না করে” [৪৯ : ১১]।
৮৯৫. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি কতক নারীকে অতিক্রম করে যাচ্ছিল। তাকে দেখে তারা বিদ্রুপাত্মক হাসি হাসলো। ফলে তাহাদের কেউ কেউ বিপদগ্রস্ত হলো।
[তাবারী, তাবারানি, ইবনি আদী, বায়হাকীর শুআবুল ঈমান] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৯৬. অনুচ্ছেদঃ কাজকর্মে ধীরস্থিরতা।
৮৯৬. যুহরী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি আমার পিতার সাথে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এলাম। আমার পিতা আমাকে বাদ দিয়ে [মহানাবীর সাথে] একান্তে আলাপ করিলেন। রাবী বলেন, আমি আমার পিতাকে বললাম, তিনি আপনাকে কি বলেছেন? তিনি বলেছেনঃ “তুমি কোন কাজ করার মনস্থ করলে ধীরস্থিরভাবে অগ্রসর হইবে, যাবত না আল্লাহ তোমাকে তা থেকে নির্গমনের পথ দেখান অথবা আল্লাহ তোমার জন্য নির্গমনের ব্যবস্থা করেন।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮৯৭. মুহাম্মাদ ইবনুল হানাফিয়্যা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
সেই ব্যক্তি প্রজ্ঞাবান নয় যে সদ্ভাবে বসবাস করিতে পারে নাসায়ী, যে তার সমাজের কাছে পরিত্রাণের পথ পায় নাসায়ী, যাবত না আল্লাহ তার জন্য মুক্তির উপায় বা পথ করে দেন।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি পথভোলা লোককে রাস্তা বলে দেয়।
৮৯৮. বারাআ ইবনি আযেব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেন যে ব্যক্তি দুধ পান করার জন্য পশু ধার [মনীহাকিম] দেয় অথবা পথহারা ব্যক্তিকে পথ বলে দেয়, তার জন্য একটি গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব রহিয়াছে।
[আহমাদ হা/১৮৭০৯, তিরমিজী হা/১৯০৭]। হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮৯৯. আবু যার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমার বালতি থেকে তোমার ভাইয়ের বালতিতে পানি ভর্তি করে দেয়া একটি সদাকা [দান]। সৎকাজের জন্য তোমার আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য তোমার নির্দেশ একটি সদাকা [দান]। তোমার ভাইয়ের সাথে তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখে সাক্ষাত করা একটি সদাকা। জনপথ থেকে তোমার পাথর, কাঁটা ও হাড় অপসারণ করা তোমার পক্ষ থেকে একটি সদাকা। পথহারা পথিককে তোমার রাস্তা বাতলে দেয়াও একটি সদাকা।
-[তিরমিজী, ইবনি হিব্বান] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি অন্ধকে পথহারা করে।
৯০০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি অন্ধকে পথহারা করে, আল্লাহ তাকে অভিসম্পাত করেন
-[হাকিম, ইবনি হিব্বান] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯৯. অনুচ্ছেদঃ বিদ্রোহ।
৯০১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
একদা নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর মক্কার বাড়ির আঙ্গিনায় বসা ছিলেন। তখন উসমান ইবনি মাযউন [রাঃআঃ] সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলেন। নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলেনঃ তুমি কি বসবে না? তিনি বলেন, হাঁ। নাবী [সাঃআঃ] তার দিকে মুখ করে বসলেন। তিনি তার সাথে কথা বলছিলেন। এমন সময় নাবী [সাঃআঃ] আসমানের দিকে তাকিয়ে বলেনঃ এইমাত্র আল্লাহর দূত আমার নিকট আসেন। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তিনি আপনাকে কি বলেছেন? তিনি বলেনঃ
إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَالْإِحْسَانِ وَإِيتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ [النحل: 90]
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেন ন্যায়পরায়ণতা, সদাচার ও নিকট আত্মীয়-স্বজনকে দান-খয়রাত করার এবং বারণ করেন অশ্লীলতা, গৰ্হিত কর্ম ও বিদ্রোহ। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, আশা করা যায় তোমরা উপদেশ গ্রহণ করিবে” [সূরা নাহল : ৯০]।
উসমান [রাঃআঃ] বলেন, এটা তখনকার কথা যখন ঈমান আমার অন্তরে ঠাঁই করে নিয়েছে এবং মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-কে আমি ভালোবাসতে শুরু করেছি।
[আবু দাউদ]m হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০০. অনুচ্ছেদঃ বিদ্রোহের শাস্তি।
৯০২. আবু বাকর ইবনি উবায়দুল্লাহ ইবনি আনাস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি দুইটি কন্যা সন্তানকে বালেগ হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করে, আমি এবং সে এই দুটির মতো পাশাপাশি জান্নাতে প্রবেশ করবো। হাদিস বর্ণনাকালে রাবী মুহাম্মাদ ইবনি আবদুল আযীয [রাহিমাহুল্লাহ] তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলের প্রতি ইঙ্গিত করেন।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯০৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ দু’টি অপরাধের শাস্তি সত্বর দুনিয়াতেই দেয়া হয় [১] বিদ্রোহ এবং [২] আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০১. অনুচ্ছেদঃ বংশমর্যাদা।
৯০৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ নিশ্চয় সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির পুত্র, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির পুত্র, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির পুত্র অর্থাৎ ইউসুফ [আঃ] হলেন ইয়াকুব [আঃ]-এর পুত্র, তিনি ইসহাক [আঃ]-এর পুত্র এবং তিনি ইবরাহীম [আঃ]-এর পুত্র
[বোখারী, মুসলিম]। হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯০৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কিয়ামতের দিন আমার বন্ধু হইবে মোত্তাকী পরহেজগারগণ। বংশগত সম্পর্ক অপরের তুলনায় অধিক নিকটতর হলেও তা উপকারে আসবে না। লোকজন আমার নিকট আসবে তাহাদের আমল নিয়ে, আর তোমরা আসবে দুনিয়াকে তোমাদের কাঁধে তুলে নিয়ে। তোমরা ডেকে বলবে, হে মুহাম্মাদ, হে মুহাম্মাদ! আর আমি এরূপ এরূপ বলবোঃ আমি কোন কাজে আসবো না। আমি সব দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবো।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৯০৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমার মতে কোন ব্যক্তি নিম্নোক্ত আয়াত অনুযায়ী আচরণ করে না
[অনুবা-দ.] : “হে মানবজাতি! আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ ও একজন নারীর সমন্বয়ে সৃষ্টি করেছি….. নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট সবচাইতে সম্ভ্রান্ত সেই ব্যক্তি যে তোমাদের মধ্যে সবচাইতে বেশী আল্লাহভীরু” [সূরা হুজুরাত : ১৩]। আল্লাহর এই বাণী বিদ্যমান থাকা সত্বেও এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে বলবে, আমি তোমার চেয়ে অধিক সম্ভ্রান্ত। অথচ তাকওয়া ব্যতীত কেউ কারো চেয়ে অধিক সম্ভ্রান্ত হইতে পারে না।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯০৭. ইয়াযীদ ইবনুল আসাম্ম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, তোমরা কাদের সম্ভ্রান্ত গণ্য করো? আল্লাহ অবশ্যই সম্ভ্রান্ত কে তা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেনঃ
“নিশ্চয় আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে সবচাইতে সম্ভ্রান্ত সেই ব্যক্তি যে তোমাদের মধ্যে সবচাইতে বেশী আল্লাহভীরু”। [৪৯ : ১৩] তোমরা কাকে মর্যাদাবান গণ্য করো? যার স্বভাব-চরিত্র সর্বোত্তম সে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদাবান।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০২. অনুচ্ছেদঃ মানবাত্মাসমূহ সমবেত সৈন্যদল।
৯০৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ মানবাত্মাসমূহ যেন সমবেত সৈন্যদল ! [সৃষ্টির সেই আদিতে] যারা পরস্পর পরিচিত হয়েছে, এখানেও তারা পরস্পর পরিচিত হইবে। আর সেখানে যারা পরস্পর অপরিচিত ছিল, এখানে তাহাদের মধ্যে অনৈক্য থাকিবে।
-[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, আবু ইয়ালা] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯০৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানবাত্মাসমূহ যেন সমবেত সৈন্যদল। [আদিতে] যারা পরস্পর পরিচিত হয়েছে, এখানেও [দুনিয়ায়] তারা পরস্পর পরিচিত হইবে। আর সেখানে যারা পরস্পর অপরিচিত ছিল, এখানে তাহাদের মধ্যে অনৈক্য হইবে।
[মুসলিম, আবু দাউদ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৩. অনুচ্ছেদঃ বিস্মিত হয়ে কারো ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা।
৯১০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ একদা এক রাখাল ছাগল চরাচ্ছিল। হঠাৎ একটি নেকড়ে বাঘ ছাগলের পালের উপর ঝাপিয়ে পড়লো এবং একটি ছাগী ধরে নিয়ে গেলো। তখন রাখাল তার পিছু ধাওয়া করলো। নেকড়েটি তাকে লক্ষ্য করে বললো, যেদিন হিংস্র শ্বাপদের রাজত্ব হইবে সেদিন আমি ছাড়া আর কে তার রক্ষক হইবে? উপস্থিত লোকজন বললো, সুবহানাল্লাহ। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি, আবু বাকর ও উমার তা বিশ্বাস করি।
[বোখারী, মুসলিম] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯১১. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] এক জানাযায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি একটি জিনিস হাতে নিয়ে তা দিয়ে মাটিতে রেখা টানতে লাগলেন। তিনি বলেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার ঠিকানা দোযখ অথবা বেহেশত লিপিবদ্ধ করা হয়নি। সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমরা কি আমাদের ভাগ্যলিপির উপর নির্ভর করে কাজকর্ম ত্যাগ করবো না? তিনি বলেনঃ তোমরা কাজকর্ম করিতে থাকো। কেননা যাকে যেজন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য সেটি সহজসাধ্য করা হয়েছে। তিনি আরো বলেনঃ যে ব্যক্তি ভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত হইবে তার জন্য সৌভাগ্যজনক কাজ সহজসাধ্য করা হয়েছে। আর যে ব্যক্তি হতভাগ্য হইবে তার জন্য দুর্ভাগ্যজনক কাজ সহজসাধ্য করা হয়েছে। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করেনঃ
فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَى} [الليل: 6]
“অনন্তর যে দান করে, তাকওয়া অবলম্বন করে এবং উত্তম বাণীর সত্যতা ঘোষণা করে …” [সূরা লাইল : ৫-৭]।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৪. অনুচ্ছেদঃ হাতে মাটি স্পর্শ করা।
৯১২. উসাইদ ইবনি আবু উসাইদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি আবু কাতাদা [রাঃআঃ]-কে বললাম, আপনার কি হলো যে, লোকে যেরূপ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাদিস বর্ণনা করেন, আপনি তেমনটি করেন না? তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, সে যেন তার পার্শ্বদেশকে জাহান্নামের বিছানার জন্য সমতল করে নেয়। [একথা বলে] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর হাত দ্বারা মাটি স্পর্শ করেন।
[শাফিঈ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৫. অনুচ্ছেদঃ নুড়ি পাথর।
৯১৩. আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল আল-মুযানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নুড়িপাথর নিক্ষেপ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি বলেছেনঃ তা না পারে শিকার হত্যা করিতে, আর না পারে শত্রুকে কাবু করিতে। বরং তা চক্ষু নষ্ট করে অথবা দাঁত ভেঙ্গে দেয়।
[বোখারী,মুসলিম, নাসায়ী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৬. অনুচ্ছেদঃ তোমরা বায়ুকে গালি দিও না।
৯১৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
মক্কায় যাবার পথে লোকজন প্রবল বায়ু তাড়িত হলো। উমার [রাঃআঃ]-ও [তাহাদের সাথে] হজ্জের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। উমার [রাঃআঃ] তার চারপাশের লোকদের বলেন, এই বায়ু কী? তারা কিছুই উত্তর দিলো না। তখন আমি আমার বাহনটিকে তার দিকে ধাবিত করে তার নিকটে গিয়ে বললাম, আমি জানতে পারলাম যে, আপনি বায়ু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিয়াছেন। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ “বাতাস হলো আল্লাহর রহমাতের অন্তর্ভুক্ত। তা রহমাতও বয়ে আনে, আবার আযাবও বয়ে আনে। অতএব তোমরা তাকে গালি দিও নাসায়ী, বরং তোমরা আল্লাহর কাছে তার কল্যাণ প্রার্থনা করো এবং তার অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করো”।
-[আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ, আহমাদ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪০৭. অনুচ্ছেদঃ কারো বক্তব্য, অমুক অমুক গ্রহের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে।
৯১৫. যায়েদ ইবনি খালিদ আল-জুহানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হুদায়বিয়াতে আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামায পড়লেন। ঐ রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। নামাযান্তে নাবী [সাঃআঃ] লোকদের দিকে ফিরে বলেনঃ তোমরা কি জানো, তোমাদের প্রভু কী বলেছেন? তারা বলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই সমধিক জ্ঞাত। আল্লাহ বলেন, “আমার বান্দারা আমার প্রতি মুমিন ও কাফেররূপে প্রভাতে উপনীত হয়। যে বলে, আল্লাহর করুণা ও দয়ায় বৃষ্টি হয়েছে সে আমার প্রতি মুমিন এবং নক্ষত্রসমূহের প্রতি অবিশ্বাসী। আর যে বলে, অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে সে আমার প্রতি অবিশ্বাসী এবং নক্ষত্রের প্রতি বিশ্বাসী”।
-[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৮. অনুচ্ছেদঃ লোকজন মেঘ দেখলে যা বলবে।
৯১৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখলে [চিন্তিত হয়ে] ঘরে ঢোকতেন, আবার বের হইতেন, সামনে যেতেন আবার পেছনে ফিরে আসতেন এবং তার চেহারা বিবর্ণ হয়ে যেতো। বৃষ্টি হলে পর তাহাঁর মুখে হাসি ফোটতো। আয়েশা [রাঃআঃ] তার এরূপ অবস্থা সম্পর্কে তার সাথে আলাপ করলে তিনি বলেনঃ কি জানি এমনও তো হইতে পারে যেরূপ আল্লাহ বলেছেন,
فَلَمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ [الأحقاف: 24] “
“অতঃপর তারা যখন মেঘমালাকে তাহাদের উপত্যকা অভিমুখে অগ্রসর হইতে দেখলো তখন বললো, এতো সেই মেঘমালা যা আমাদের বৃষ্টি দিবে…..”।
-[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, নাসায়ী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯১৭. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ‘কুলক্ষণে’ বিশ্বাস শিরকের অন্তর্ভুক্ত। আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার মধ্যে অনুরূপ ধারণা আসে না। তবে আল্লাহর উপর ভরসা করার কারণে তিনি তা দূর করে দেন।
-[তিরমিজী, আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৯. অনুচ্ছেদঃ অশুভ লক্ষণ।
৯১৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ অশুভ লক্ষণ [বলিতে কিছু নেই]। তার মধ্যে ফালই উত্তম। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেন, ফাল কি? তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ [অদৃশ্য থেকে] যে উত্তম কথা শোনতে পায় তা।
-[বোখারী, মুসলিম, আহমাদ, ইবনি হিব্বান, তাহাবী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪১০. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি অশুভ লক্ষণ মানে না তার মর্যাদা।
৯১৯. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ একদা হজ্জের মৌসুমে আমার উম্মাতকে আমার সামনে পেশ করা হলো। আমার উম্মাতের সংখ্যাধিক্যে আমি অভিভূত হলাম। সমভূমি ও পাহাড়-পর্বত তাহাদের দ্বারা পরিপূর্ণ। আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে মুহাম্মাদ! আপনি কি সন্তুষ্ট? আমি বললামঃ হাঁ, হে প্রভু। তিনি বলেন, “উপরন্তু এদের সাথে রহিয়াছে আরো সত্তর হাজার যারা বিনা হিসাবে বেহেশতে প্রবেশ করিবে। তারা হচ্ছে সেইসব লোক যারা ঝাঁড়ফুক করায় নাসায়ী, শরীরে দাগ দেয়ায় না এবং অশুভ লক্ষণে বিশ্বাস করে না। তারা তাহাদের প্রভুর উপরই ভরসা করে”। তখন উকাশা [রাঃআঃ] বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ আল্লাহর কাছে দোয়া করুন তিনি যেন আমাকে সেই দলের অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি দোয়া করলেনঃ “হে আল্লাহ! উকাশাকে তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করো”। অপর এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমার জন্যও দোয়া করুন, যেন আল্লাহ আমাকেও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি বলেনঃ এ ব্যাপারে উকাশা তোমার অগ্রগামী হয়ে গেছে।
-[বোখারী, আহমাদ, মুসলিম] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪১১. অনুচ্ছেদঃ জিনের আছর থেকে বাঁচার নিষ্ফল তদবীর।
৯২০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নবজাতকদের আয়েশা [রাঃআঃ]-র নিকট আনা হতো। তিনি তাহাদের জন্য বরকতের দোয়া করিতেন। আমি [আলকামার মা] একটি নবজাতককে নিয়ে আয়েশা [রাঃআঃ]-র নিকট এলাম। তিনি নবজাতকের বালিশ সরাতেই দেখা গেলো, একটি ক্ষুর তার শিয়রের নিচে। তিনি ক্ষুর সম্পর্কে তাহাদের জিজ্ঞেস করলে তারা বললো, আমরা জিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তা রেখেছি। তিনি ক্ষুরটি ধরে তা দূরে নিক্ষেপ করেন এবং তাহাদেরকে এরূপ করিতে নিষেধ করেন। তিনি আরো বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অশুভ লক্ষণে বিশ্বাস অপছন্দ করিতেন এবং তাতে অসন্তুষ্ট হইতেন। অতএব আয়েশা [রাঃআঃ]-ও এরূপ করিতে বারণ করেন।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪১২. অনুচ্ছেদঃ শুভ লক্ষণ।
৯২১. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ রোগ সংক্রমণ বলিতে কিছু নেই বা অশুভ লক্ষণেরও কোন বাস্তবতা নেই। আর শুভ ফাল অর্থাৎ [অদৃশ্য থেকে শ্রুত] উৎকৃষ্ট কথা আমার পছন্দনীয়।
-[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, নাসায়ী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯২২. হাব্বা [তিরমিয়ীতে হায়্যা] ইবনি হাবিস আত-তামীমী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ পেঁচার ডাকে অশুভ কিছু নেই। ফাল-ই হলো অধিক নির্ভরযোগ্য শুভ লক্ষণ এবং বদনজর সত্য বা বাস্তব।
[তিরমিজী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
৪১৩. অনুচ্ছেদঃ উত্তম নামকে বরকতময় মনে করা।
৯২৩. আবদুল্লাহ ইবনুস সাইব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
হুদায়বিয়ার সন্ধির বছর যখন উসমান ইবনি আফফান [রাঃআঃ] বলিলেন, সুহাইলকে তার সম্প্রদায় সন্ধির এই প্রস্তাবসহ পাঠিয়েছে যে, মুসলমানগণ এই বছর ফিরে যাবে এবং আগামী বছর কুরাইশগণ তিন দিনের জন্য [মক্কা নগরী মুসলমানদের জন্য] খালি করে দিবে। সুহাইল এসে পৌছলে নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সুহাইল এসেছে। আল্লাহ তোমাদের বিষয়টি সহজ করে দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনুস সাইব [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহচর্য লাভ করেন।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান লিগাইরিহি
৪১৪. অনুচ্ছেদঃ ঘোড়ায় কুলক্ষণ।
৯২৪. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কুলক্ষণ [বলিতে কিছু থাকলে তা] ঘরবাড়ি, স্ত্রীলোক ও ঘোড়ায়।
[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী, তাহাবী] হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
৯২৫. সাহল ইবনি সাদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যদি কিছুতে লক্ষণ থাকতো তবে তা স্ত্রীলোক, ঘোড়া ও বাসস্থানে থাকতো।
-[বোখারী, মুসলিম, ইবনি মাজাহ, তাহাবী].হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯২৬. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমরা এক বাড়িতে বসবাস করতাম। সেখানে আমাদের জনসংখ্যা ও ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছিল। অতঃপর আমরা অপর একটি বাড়িতে স্থানান্তরিত হওয়ার পর সেখানে আমাদের জনসংখ্যা ও ধন-সম্পদ হ্রাস পেয়েছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা আগের বাড়িতে ফিরে যাও অথবা তিনি বলেনঃ তোমরা এই বাড়ি ত্যাগ করো। কেননা এটি নিন্দনীয় বাড়ি। ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এ হাদিসের সনদে ত্রুটি আছে।
হামদ ও নাত কবিতা চর্চা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
Leave a Reply