রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস
রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ২৪, অনুচ্ছেদঃ ৭৮-৯২=১৫টি
অনুচ্ছেদ-৭৮ঃ বন্ধক সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৭৯ঃ পিতা সন্তানের সম্পদ ভোগ করিতে পারে
অনুচ্ছেদ–৮০ঃ কেউ নিজের [হারানো] বস্তু অন্যের নিকট অবিকল পেলে
অনুচ্ছেদ-৮১ঃ নিজের আয়ত্তধীন মাল থেকে নিজের প্রাপ্য গ্রহন
অনুচ্ছেদ–৮২ঃ হাদিয়া গ্রহণ
অনুচ্ছেদ-৮৩ঃ দান করে তা পুনরায় ফেরত নেয়া
অনুচ্ছেদ-৮৪ঃ প্রয়োজন পূরণ করে দেয়ার জন্য হাদিয়া গ্রহণ
অনুচ্ছেদ-৮৫ঃ যদি কোন ব্যক্তি নিজ সন্তানদের মধ্যে কাউকে বেশি দেয়
অনুচ্ছেদ-৮৬ঃ স্বামীর বিনা অনুমতিতে স্ত্রীর দান
অনুচ্ছেদ–৮৭ঃ জীবনস্বত্ব
অনুচ্ছেদ-৮৮ঃ জীবনস্বত্ব দেয়ার সময় যদি কেউ বলে, তার ওয়ারিসগণও পাবে
অনুচ্ছেদ-৮৯ঃ রুকবা
অনুচ্ছেদ-৯০ঃ ধারকৃত বস্তু নষ্ট হলে তার ক্ষতিপূরণ দেয়া
অনুচ্ছেদ–৯১ঃ কারো কোন জিনিস নষ্ট করলে তার অনুরূপ ক্ষতিপূরণ দিবে
অনুচ্ছেদ-৯২ঃ যদি গবাদি পশু কারো ফসল নষ্ট করে দেয়
অনুচ্ছেদ-৭৮ঃ বন্ধক সম্পর্কে
৩৫২৬, আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ দুগ্ধবতী পশু বন্ধক রাখা হলে তাহাকে খাদ্য খাওয়ানোর বিনিময়ে তার দুধ দোহন করা যাবে। আরোহণের পশু বন্ধক রাখা হলে তাহাকে ঘাস খাওয়ানোর বিনিময়ে তাতে আরোহণ করা যাবে। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমাদের মতে হাদিসটি সহিহ।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২৪৪০]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫২৭. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মাঝে এমন কিছু লোক আছে যারা নাবী নন এবং শহীদও নয়। ক্বিয়ামাতের দিন মহান আল্লাহর দরবারে তাহাদের মর্যাদার কারণে নাবীগণ ও শহীদগণ তাহাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হইবেন। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের অবহিত করুন, তারা কারা? তিনি বলেন, তারা ঐসব লোক যারা আল্লাহর মহানুভবতায় পরস্পরকে ভালবাসে, অথচ তারা পরস্পর আত্মীয়ও নয় এবং পরস্পরকে সম্পদও দেয়নি। আল্লাহর শপথ! তাহাদের মুখমণ্ডল যেন নূর এবং তারা নূরের আসনে উপবেশন করিবে। তারা ভীত হইবে না, যখন মানুষ ভীত থাকিবে। তারা দুশ্চিন্তায় পড়বে না, যখন মানুষ দুশ্চিন্তায় থাকিবে। তিনি এ আয়াত তিলওয়াত করলেনঃ “জেনে রাখো! আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হইবে না” [সূরাহ ইউনুসঃ ৬২]
সহীহঃ তালীকুর রাগীব [৪/৪৭-৪৮]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭৯ঃ পিতা সন্তানের সম্পদ ভোগ করিতে পারে
৩৫২৮. উমারাহ ইবনি উমাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার ফুফুর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আয়িশাহ [রাদি.] -কে জিজ্ঞেস করিলেন, আমার প্রতিপালনে একটি ইয়াতীম রয়েছে। আমি কি তার মাল থেকে খেতে পারি? তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন ব্যক্তির নিজ হাতের উপার্জিত খাদ্য সর্বোত্তম খাদ্য। তার সন্তানও তার উপার্জন বিশেষ।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২১৩৭]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫২৯. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন ব্যক্তির সন্তান তার উপার্জনের অন্তর্ভুক্ত বরং তার সর্বোত্তম উপার্জন। সুতরাং তোমরা তাহাদের সম্পদ থেকে ভোগ করিতে পারো।
হাসান সহিহ। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাম্মাদ ইবনি আবু সুলায়মানের বর্ণনায় রয়েছেঃ তোমরা মুখাপেক্ষী হয়ে পড়লে খাবে। এ কথাটুকু প্রত্যাখ্যাত।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৩৫৩০. আমর ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদা হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সম্পদও আছে সন্তানও আছে। আমার পিতা আমার সম্পদের মুখাপেক্ষী। তিনি বলেনঃ তুমি এবং তোমার সম্পদ উভয়ই তোমার পিতার। তোমাদের সন্তান তোমাদের জন্য সর্বোত্তম উপার্জন। সুতরাং তোমরা তোমাদের সন্তানদের উপার্জন খাবে।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ.
অনুচ্ছেদ–৮০ঃ কেউ নিজের [হারানো] বস্তু অন্যের নিকট অবিকল পেলে
৩৫৩১. সামুরাহ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি অন্য কারো কাছে নিজের মাল অক্ষত অবস্থায় পেয়েছে সে তার অধিক হক্বদার। ক্রেতা তো মালের বিক্রেতাহাকেই ধরবে।
দুর্বলঃ নাসায়ী [৪৬৮১], যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৫৮৭০], মিশকাত [২৯৪৯] হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮১ঃ নিজের আয়ত্তধীন মাল থেকে নিজের প্রাপ্য গ্রহন
৩৫৩২. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা মুআবিয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর মা হিন্দা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিলেন, আবু সুফিয়ান একজন কৃপণ লোক। তিনি আমার ও আমার সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য প্রয়োজন পরিমাণ খরচ দেন না। আমি তার মাল থেকে খরচের জন্য কিছু নিলে অন্যায় হইবে কি? তিনি বলিলেন, তোমরা ও তোমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট হয় এরূপ পরিমাণ মাল ন্যায়সঙ্গতভাবে নিতে পারো।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২২৯৩]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৩৩. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা হিন্দা [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আবু সুফিয়ান একজন কৃপণ লোক। আমি যদি তার বিনা অনুমতিতে তার মাল থেকে তার সন্তানদের জন্য খরচ করি তাহলে আমার অন্যায় হইবে কি? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তুমি তাহাদের জন্য ন্যায়সঙ্গতভাবে খরচ করলে অন্যায় হইবে না।
সহীহঃ এর পূর্বেরটি দেখুন। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৩৪. ইউসুফ ইবনি মাহাক আল-মাক্কি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তির প্রতিপালনে কিছু ইয়াতীম ছিল। সে তাহাদের ভরণপোষণের খরচ বহন করতো। আমি এর হিসাব লিখে রাখতাম। একদা ইয়াতিমরা তাহাকে এক হাজার দিরহামের ভুল হিসাব দিলে সে তাহাদের তা প্রদান করলো। কিন্তু পরে আমি হিসাব করে ঐ পরিমাণ মাল ইয়াতীমদের মালের মধ্যে পেলাম। আমি বলিলাম, তারা তোমার কাছ থেকে ভুল হিসাব দিয়ে যে এক হাজার দিরহাম নিয়েছে তা ফেরত নাও। সে বলিল, না আমার পিতা আমাকে বলিয়াছেন, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি তোমার কাছে কিছু আমানত রেখেছে তাহাকে তা ফেরত দাও। আর যে ব্যক্তি তোমার সাথে খিয়ানাত করেছে তুমি তার সাথে খিয়ানাত করো না।
সহীহঃ তিরমিজি [১২৮৭]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৩৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাহাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সাথে খিয়ানাত করেছে তুমি তার সাথে খিয়ানাত করো না।
হাসান সহীহঃ তিরমিজি [১২৮৭]। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ–৮২ঃ হাদিয়া গ্রহণ
৩৫৩৬. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] উপহার গ্রহণ করিতেন এবং তিনি এর পরিবর্তে অন্যকেও [উপহার] দিতেন।
সহীহঃ তিরমিজি [২০৩৬]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৩৭/. বু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আল্লাহর শপথ! আজকের দিনের পর থেকে আমি কুরাইশ মুহাজির, আনসার এবং দাওস অথবা সাক্বীফ গোত্রের লোক ছাড়া অন্য কারো উপঢৌকন নিবো না।
সহীহঃ তিরমিজি [৪২২৩]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৩ঃ দান করে তা পুনরায় ফেরত নেয়া
৩৫৩৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি দান করার পর ফেরত নেয়, তার উদাহরণ হচ্ছেঃ যে ব্যক্তি বমি করে তা পুনরায় ভক্ষণ করে। হাম্মাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিয়াছেন, আমরা বমিকে হারাম মনে করি।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৮৫] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৩৯. ইবনি উমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তির জন্যই [কাউকে কিছু] দেয়ার বা দান করার পর তা ফেরত নেয়া হালাল নয়। তবে পিতা পুত্রকে কিছু দান করার পর তা ফেরত নিতে পারবে। যে ব্যক্তি দান করার পর তা ফেরত নেয়, সে এমন কুকুরের মত, যে পেট ভরে খাওয়ার পর বমি করে পুনরায় তা খায়।
সহিহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৭৭], সংক্ষেপে দেখুন ইরওয়া [৬/৬৩] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৪০. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি নিজের দান করা বস্তু ফেরত নেয় সে এমন কুকুরের মত, যে বমি করে পুনরায় তা ভক্ষণ করে। দাতা দানকৃত বস্তু ফেরত চাইলে গ্রহীতা খতিয়ে দেখবে এবং জেনে নিবে, সে কি জন্য তার দানকৃত বস্তু ফেরত চাইছে। কারণ জানা গেলে তা ফেরত দিবে।
হাসান সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৭৮] অনুরূপ সক্ষেপে, দেখুন মিশকাতুল মাসাবীহ [৩০২০ , হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৮৪ঃ প্রয়োজন পূরণ করে দেয়ার জন্য হাদিয়া গ্রহণ
৩৫৪১. আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের জন্য কোন বিষয়ে সুপারিশ করার কারণে যদি সে তাহাকে কিছু উপহার দেয় এবং সে তা গ্রহণ করে তাহলে সে সুদের একটি বড় দরজা দিয়ে প্রবেশ করলো।
হাসানঃ মিশকাত [৩৭৫৭]। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৫ঃ যদি কোন ব্যক্তি নিজ সন্তানদের মধ্যে কাউকে বেশি দেয়
৩৫৪২. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে অতিরিক্ত কিছু দিলেন। এ হাদিসের অন্যতম বর্ণনাকারী ইসমাঈল ইবনি সালিমের বর্ণনায় রয়েছেঃ তিনি তাহাকে একটি গোলাম দান করেন। বর্ণনাকারী [নুমান] বলেন, আমার মা আমরাহ বিনতু রাওয়াহা [রাদি.] আমার পিতাহাকে বলিলেন, আপনি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট গিয়ে তাঁকে এ বিষয়ে সাক্ষী রাখুন। তিনি [পিতা] নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে গিয়ে বিষয়টি জানালেন। তিনি বলিলেন, আমি আমার ছেলে নুমানকে কিছু উপহার দিয়েছি। এ ব্যাপারে আপনাকে সাক্ষী রাখার জন্য আমরাহ আমাকে অনুরোধ করেছে। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি বলিলেন, সে ছাড়াও তোমার আরো সন্তান আছে কি? তিনি বলিলেন, হাঁ। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তুমি কি তোমার প্রত্যেক সন্তানকে অনুরূপ দিয়েছো, যেমন নুমানকে দিয়েছো? তিনি বলিলেন, না। কতিপয় মুহাদ্দিসের বর্ণনায় রয়েছেঃ নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ “এটা অন্যায় কাজ”। আর কতিপয় মুহাদ্দিস বলেন, নাবী বলিয়াছেনঃ “এতো নীতি বিরোধী কাজ”। সুতরাং আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে সাক্ষী রাখো। মুগীরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ করেন, “তোমার সব সন্তানই সমান সৌভাগ্যবান হোক, এতে কি তুমি খুশি হইবে না? তিনি বলিলেন, হাঁ। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ “আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে এর সাক্ষী রাখো”। মুজালিদ তার বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ করেন, নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ “তোমার উপর তাহাদের হক্ব রয়েছে যে, তুমি তাহাদের সাথে সমান ব্যবহার করিবে এবং তাহাদের প্রতি ইনসাফ করিবে। যেমন অধিকার রয়েছে তাহাদের উপর তোমার; তারা সবাই তোমার সাথে সদ্ব্যবহার করুক”।
ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, যুহ্রীর বর্ণিত হাদিসে রয়েছে, কতিপয় বর্ণনাকারী “তোমরা সন্তান” শব্দ বর্ণনা করেছেন। ইবনি খালিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, শাবীর বর্ণিত হাদিসে রয়েছেঃ “সে ছাড়া তোমার আরো সন্তান আছে কি?”। আবুদ্ দুহা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] নুমান ইবনি বাশীর সূত্রে হাদিসে বলেন, [সে ব্যতীত তোমার কি আরো সন্তান আছে?”
সহীহঃ তবে মুজালিদের অতিরিক্ত সংযোজন ““…… [আরবি]”” অংশটুকু বাদে। গায়াতুল মারাম [২৭৩,২৭৪] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৪৩. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তার পিতা তাহাকে একটি গোলাম দান করেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নুমানকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এটি কার গোলাম? তিনি বলিলেন, আমার গোলাম, আমার পিতা আমাকে দান করেছেন। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেনঃ সে তোমার মতো তোমার অন্য ভাইদেরকেও কি দিয়েছে? নুমান বলিলেন, না। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তুমি এটি ফেরত দাও।
সহীহঃ ইরওয়া [৬/৪২] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৪৪. নুমান ইবনি বশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের সন্তানদের সাথে সমান আচরণ করো; তোমাদের সন্তানদের সাথে ইনসাফ করো।
সহীহঃ গায়াতুল মারাম [২৭২] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৪৫. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা বাশীর [রাদি.] এর স্ত্রী তাহাকে বলেন, আপনার গোলামটি আমার ছেলেকে দিয়ে দিন এবং এ বিষয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সাক্ষী রাখুন।। তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাছে এসে বলিলেন, অমুকের কণ্যা [আমার স্ত্রী] আপনার কাছে আবেদন করেছে, আমি যেন তার ছেলেকে আমার গোলামটি দান করি। সে আমাকে এটাও বলেছে যে, এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সাক্ষী রাখুন। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তার আরো ভাই আছে কি? বাশীর বলিলেন, হাঁ। তিনি বলিলেনঃ তাহাকে যেরূপ দান করেছো অন্যদেরও কি সেরূপ দিয়েছো? তিনি বলিলেন, না। তিনি বলিলেনঃ এটা উচিত নয়। আমি সত্য ব্যতীত অন্য কিছুর সাক্ষী হই না।
সহীহঃ ইরওয়া [৬/৪২] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৬ঃ স্বামীর বিনা অনুমতিতে স্ত্রীর দান
৩৫৪৬. আমর ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ স্বামী যদি স্ত্রীর সতীত্বের হিফাযাতকারী হয় তাহলে কোন স্ত্রীর পক্ষে [স্বামীর বিনা অনুমতিতে] তার মাল থেকে ব্যয় করা জায়িয নয়।
হাসান সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৮৮] হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ স্বামীর বিনা অনুমতিতে কোন স্ত্রীর পক্ষে [তার মাল থেকে] কিছু দান করা জায়িয নয়।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ–৮৭ঃ জীবনস্বত্ব
৩৫৪৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সারা জীবনের জন্য কাউকে কিছু দান করা জায়িয।
রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৪৯. সামুরাহ [রাদি.] হইতে নাবী [সাঃআঃ] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
পূর্বোক্ত হাদিসের অনূরূপ বর্ণিত।
সহিহ পূর্বেরটি দ্বারা। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৫০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিতেনঃ সারা জীবনের জন্য প্রদত্ত বস্তু তারই প্রাপ্য যাকে তা দেয়া হয়।
সহিহঃ নাসায়ী [৩৭৫০] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৫১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যাকে সারা জীবনের জন্য কিছু দেয়া হয় তার মালিক সে-ই। তার অবর্তমানে যারা তার উত্তরাধিকারী হয় তারা এর উত্তরাধিকারী হইবে।
সহিহঃ নাসায়ী [৩৭৪০-৩৭৪১]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৫২. জাবির [রাদি.] হইতে নাবী [সাঃআঃ] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
উপরের হাদিসের অনুরূপ অর্থের হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি। হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-৮৮ঃ জীবনস্বত্ব দেয়ার সময় যদি কেউ বলে, তার ওয়ারিসগণও পাবে
৩৫৫৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি সারা জীবনের জন্য কাউকে কিছু দান করে বলে, তাহাকে এবং তার উত্তরাধিকারীকে জীবনস্বত্ব দেয়া হলো। তাহলে এই জীবনস্বত্ব মালিক সে এবং তার ওয়ারিসরা হইবে, যা কখনো গ্রহীতার কাছ থেকে দাতার নিকট ফিরে আসবে না। কারণ সে এমনভাবে দান করেছে, যাতে উত্তরাধিকারস্বত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সহিহঃ নাসায়ী [৩৭৪৫]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৫৪. ইবনি শিহাব হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি শিহাব তার সনদ পরম্পরায় উপরের হাদিসে অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করেছেন।
আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি। হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩৫৫৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যেরূপ জীবনস্বত্ব দানের অনুমতি দিয়েছেন তা হলো, দাতা এরূপ বলবেঃ এটা তোমার জন্য এবং তোমার ওয়ারিসদের জন্য। কিন্তু সে যদি তা না বলে এটা বলেঃ “যতদিন তুমি বেঁচে থাকিবে ততদিন এটা তোমার জন্য”, এ অবস্থায় [গ্রহীতার মৃত্যুর পর] ঐ দান দাতার নিকট ফেরত আসবে।
সহিহ ঃ ইরওয়া [১৬১২] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৫৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা পুনরায় ফেরত পাবার আশায় এরূপ [বলে] দান করিবে না যে, যদি আমি আগে মরে যাই তবে এটা তোমার; আর যদি তুমি আগে মরে যাও তবে এটা আমার। অথবা যতদিন তুমি বেঁচে থাকিবে এটা তোমার। যাকে রুক্ববা অথবা জীবনস্বত্ব দান করা হয় সেটা তার উত্তরাধিকারীদের জন্য হয়ে যায়।
সহিহঃ নাসায়ী [৩৭৩১]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৫৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জনৈক আনসারী মহিলাকে তার পুত্র কর্তৃক দান করা একটি খেজুর বাগান সম্পর্কে ফায়সালা দিয়েছিলেন। অতঃপর মহিলাটি মারা গেলে তার ছেলে বললো, আমি তাহাকে তার জীবিত থাকাকালীন সময়ের জন্যই দান করেছিলাম। ছেলেটির আরো কয়েকটি ভাই ছিলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ জীবিত ও মৃত্যু উভয় অবস্থায়ই বাগানটি তার হয়ে গেছে। ছেলেটি বললো, বাগানটি আমি তাহাকে সদাক্বাহ স্বরূপ দিয়েছিলাম। তিনি বলিলেনঃ তাহলে তো এটা তোমার থেকে দূরে সরে গেছে।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮৯ঃ রুকবা
৩৫৫৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যাকে জীবনস্বত্ব দেয়া হয় সেটা তারই হয়ে যায়। রুকবা যাকে দেয়া সে-ই হয় এর স্বত্বাধিকারী।
সহিহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৮৩]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৫৯. যায়িদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যদি কেউ কাউকে জীবনস্বত্বরূপে কিছু দান করে তাহলে যাকে তা দান করা হয়েছে সেই হইবে জীবনে মরণে এর স্বত্বাধিকারী। তোমরা রুক্ববা করো না। কেউ রুক্ববা করলে তা গ্রহীতার মালিকানায় চলে যায়।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৩৫৬০. মুজাহিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জীবনস্বত্ব হলোঃ কোনো ব্যক্তি কাউকে বললো, যতদিন তুমি বেঁচে থাকিবে এটা তোমার। দাতা এরূপ বললে এটা গ্রহীতার হয়ে যাবে এবং তার মৃত্যুর পর তার ওয়ারিসরা এর স্বত্বাধিকারী হইবে। আর রুক্ববা হলোঃ কোন ব্যক্তির এরূপ বলা, যদি আমি আগে মারা যাই তবে এটা তোমার, আর যদি তুমি আগে মারা যাও তবে এটা আমার।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাকতু
অনুচ্ছেদ-৯০ঃ ধারকৃত বস্তু নষ্ট হলে তার ক্ষতিপূরণ দেয়া
৩৫৬১. সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ হাত দিয়ে গৃহীত জিনিস [ধার] গ্রহণকারী তা ফেরত না দেয়া পর্যন্ত তার যামিন থাকিবে। বর্ণনাকারী হাসান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] পরবর্তীকালে এ হাদিসটি ভুলে যান। অতঃপর বলেন, ধার গ্রহীতা আমানতদার। সুতরাং তাহাকে কোন ক্ষতিপূরণ দিতে হইবে না।
দুর্বলঃ ইবনি মাজাহ [২৪০০], ইরওয়া [১৫১৬], যয়ীফ তিরমিজি [২১৭/১২৮৯], যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৩৭৩৭], মিশকাত [২৯৫০]। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৫৬২. সাফওয়ান ইবনি উমাইয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হুনাইনের যুদ্ধের দিন নাবী [সাঃআঃ] তার লৌহবর্মসমূহ ধার হিসেবে গ্রহণ করলে সাফওয়ান বলিলেনঃ হে মুহাম্মাদ! আপনি জোরপূর্বক নিলেন? তিনি বলিলেনঃ না, বরং ধার হিসেবে, এর কোন ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দেয়া হইবে।
সহিহঃ সহিহাহ [৬৩১] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৬৩. আবদুল্লাহ ইবনি সাফওয়ান এর পরিবারের কিছু ব্যক্তি সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ হে সাফওয়ান! তোমার নিকট যুদ্ধাস্ত্র আছে কি? সে বললো, ধার চাচ্ছেন না জোরপূর্বক নিবেন? তিনি বলিলেনঃ না, বরং ধার হিসেবে। সাফওয়ান তাঁকে তিরিশ থেকে চল্লিশটি লৌহবর্ম ধার দিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হুনাইনের যুদ্ধে এগুলো ব্যবহার করিলেন। মুশরিকরা পরাজিত হলে সাফওয়ানের লৌহবর্মগুলো একত্র করে দেখা গেলো, কয়েকটি বর্ম হারিয়ে গেছে। নাবী [সাঃআঃ] সাফওয়ানকে বলিলেনঃ আমরা তোমার কয়েকটি বর্ম হারিয়ে ফেলেছি। আমরা তোমাকে এর ক্ষতিপূরণ দিবো কি? সে বললো, না, হে আল্লাহর রাসূল! কারণ তখন আমার মনের অবস্থা যেমন ছিলো আজ তেমন নেই। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তিনি ইসলাম কবুলের আগে এগুলো ধার দিয়েছিলেন, পরে ইসলাম কবুল করেন।
সহিহঃ সহিহাহ [৬৩১]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৬৪. সাফওয়ানের পরিবারের লোকদের সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তারা বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ধার হিসেবে … অতঃপর উপরের হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত।
আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি। হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩৫৬৫. আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ মহান আল্লাহ প্রত্যেক হক্বদারকে তার হক্ব প্রদান করেছেন। কাজেই উত্তরাধিকারীদের জন্য কোন ওয়াসিয়াত নেই। স্বামীর বিনা অনুমতিতে কোন স্ত্রী তার ঘরের কিছু খরচ করিবে না। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! খাদ্যদ্রব্যও নয়? তিনি বলেনঃ এটা তো আমাদের সর্বোত্তম সম্পদ। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ ধারকৃত বস্তু ফেরত দিতে হইবে; দুগ্ধবতী পশুর দুধ পান শেষ হলে তা ফেরত দিতে হইবে; ঋণ পরিশোধ করিতে হইবে এবং জামিনদার দায়বদ্ধ থাকিবে।
সহিহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৯৮] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৬৬. সাফওয়ান ইবনি ইয়ালা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেনঃ যখন আমার বার্তাবাহকরা তোমার নিকট আসবে, তাহাদেরকে তিরিশটি লৌহবর্ম ও তিরিশটি উট প্রদান করিবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! এটা কি ক্ষতিপূরণ শর্তে ধার দেয়া নাকি ফেরত দেয়ার শর্তে ধার? তিনি বলেনঃ বরং ফেরত দেয়ার শর্তে।
সহিহঃ সহিহাহ [৬৩০] রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–৯১ঃ কারো কোন জিনিস নষ্ট করলে তার অনুরূপ ক্ষতিপূরণ দিবে
৩৫৬৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কোন এক স্ত্রীর ঘরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় উম্মাহাতুল মুমিনীন রাসূলের জনৈক স্ত্রী তার খাদেমকে দিয়ে এক পেয়ালা খাবার পাঠালেন। বর্ণনাকারী বলেন, {রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যার ঘরে ছিলেন} সেই স্ত্রী [রাগান্বিত হয়ে] পেয়ালাটি হাতের দ্বারা আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলেন। ইবনিল মুসান্না বলেন, নাবী [সাঃআঃ] ভাঙ্গা টুকরা দুটো উঠিয়ে নিয়ে একটিকে অপরটির সাথে জোড়া দিলেন এবং পড়ে যাওয়া খাবারগুলো উঠাতে লাগলেন এবং বলিলেনঃ তোমাদের মায়ের আত্মমর্যাদাবোধ জেগেছে [রাগ হয়েছে]। ইবনিল মুসান্নার বর্ণনায় রয়েছেঃ তোমরা এগুলা খাও। সুতরাং সবাই তা আহার করলো। এমন সময় স্ত্রী তার ঘর থেকে একটি পেয়ালা আনলেন। মুসাদ্দাদ বর্ণিত হাদিসে রয়েছেঃ তিনি [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তোমরা খাও। তাহাদের খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি খাদেমসহ পেয়ালাটি আটকিয়ে রাখলেন। অতঃপর অক্ষত পেয়ালাটি তিনি খাদেমের হাতে তুলে দিলেন আর ভাঙ্গা পেয়ালাটি তাহাঁর ঘরে রেখে দিলেন।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৩৪]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৬৮. জাসরাহ বিনতু দাজাজাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, সাফিয়্যাহ্র মতো সুস্বাদু খাবার রান্না করিতে কাউকে আমি দেখিনি। তিনি রসূলুল্লাহর [সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম] জন্য খাবার তৈরি করে পাঠালেন। এতে রাগান্বিত হয়ে আমি খাবারের পাত্রটি ভেঙ্গে ফেলি। অতঃপর আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কৃতকর্মের কাফফারাহ কি? তিনি বলেনঃ অনুরূপ একটি পাত্র ও খাবারের বিনিময়ে অনুরূপ খাবার।
দুর্বলঃ নাসায়ী [৩৯৫৭]। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯২ঃ যদি গবাদি পশু কারো ফসল নষ্ট করে দেয়
৩৫৬৯.হারাম ইবনি মুহ্যাইয়্যাসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
একদা আল-বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] এর উস্ট্রী জনৈক ব্যক্তির বাগানে ঢুকে এর ফসল নষ্ট করে দেয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফায়সালা দিলেনঃ দিনের বেলায় বাগানের মালিক বাগানের হিফাযাত করিবে এবং রাতের বেলায় পশুর মালিক পশুর হিফাযাত করিবে।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৩২]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৫৭০. আল-বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তার একটি মোটাতাজা উস্ট্রী ছিলো। যা একটি বাগানে প্রবেশ করে এর ক্ষতিসাধন করে। এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলে দিলেনঃ বাগানের মালিক দিনের বেলা বাগানের হিফাযাত করিবে। আর পশুর মালিক রাতের বেলা পশুর হিফাযাত করিবে। সুতরাং রাতের বেলা পশু কোন ক্ষতিসাধন করলে তার ক্ষতিপূরণ দিবে পশুর মালিক।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ [২৩৩২]। রুকবা জীবনস্বত্ব বন্ধক দান ও হাদিয়া সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply