হাঁচির উত্তর দেয়া – কতবার এবং কিভাবে দিবে ? হাই তোলা

হাঁচির উত্তর দেয়া – কতবার এবং কিভাবে দিবে ? হাই তোলা

হাঁচির উত্তর দেয়া – কতবার এবং কিভাবে দিবে ? হাই তোলা >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায়ঃ ৪৩, অনুচ্ছেদঃ ৯৭-১০২=৬টি

অনুচ্ছেদ-৯৭ঃ হাই তোলা
অনুচ্ছেদ-৯৮ঃ হাঁচি দেয়া প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-৯৯ঃ হাঁচির জবাব দেয়া
অনুচ্ছেদ-১০০ঃ হাঁচির জবাব কতবার দিবে?
অনুচ্ছেদ-১০১ঃ যিম্মীর হাঁচির জবাব কিভাবে দিবে?
অনুচ্ছেদ-১০২ঃ যে ব্যক্তি হাঁচি দেয়ার পর আলহাম্‌দু লিল্লাহ বলে না

অনুচ্ছেদ-৯৭ঃ হাই তোলা

৫০২৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তির হাই আসলে সে যেন তাহাঁর মুখ বন্ধ করে দেয়। কেননা শয়তান ভিতরে ঢুকে।

হাঁচির উত্তর দেয়া -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫০২৭. সুহাইল [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

সুহাইল [রাদি.] সূত্রে অনুরূপ হাদিস বর্ণিত। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সলাতরত অবস্থায় হাই উঠলে যথাসাধ্য তা বন্ধ রাখবে। {৫০২৫}

হাঁচির উত্তর দেয়া -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫০২৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ মহান আল্লাহ হাঁচি পছন্দ করেন এবং হাই অপছন্দ করেন। সুতরাং যখনই তোমাদের কারো হাই আসে সে যেন যথাসাধ্য তা প্রতিরোধ করে এবং হাহ্ হাহ্ ইত্যাদি শব্দ না করে। কারণ হাই তোলা শয়তানের কাজ, এতে শয়তান হাসে।

হাঁচির উত্তর দেয়া -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৯৮ঃ হাঁচি দেয়া প্রসঙ্গে

৫০২৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] যখন হাঁচি আসতো তখন তিনি হাত বা কাপড় দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতেন এবং হাঁচির শব্দ নীচু করিতেন।

এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৫০৩০.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ প্রত্যেক মুসলিমের উপর তার মুসলিম ভাইদের পাচঁটি অবশ্য করণীয় রয়েছে। সালামের জবাব দেয়া, হাঁচি শুনে জবাব দেয়া, দাওয়াত কবুল করা, অসুস্থ হলে দেখিতে যাওয়া এবং জানাযা ও দাফনে অংশগ্রহণ করা।

হাঁচির উত্তর দেয়া -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৯৯ঃ হাঁচির জবাব দেয়া

৫০৩১. হিলাল ইবনি ইয়াসাফ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি সালিম ইবনি উবাইদ [রাদি.]-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন কওমের এক লোক হাঁচি দিয়ে বললো, আসসালামু আলাইকুম। সালিম [রাদি.] বলিলেন, তোমার এবং তোমার মাতার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। সালিম [রাদি.] বলিলেন, মনে হয় তুমি আমার উত্তরে বিব্রতবোধ করছো। লোকটি বললো, ভালো-মন্দ কোন প্রসঙ্গে আপনি আমার মায়ের উল্লেখ করবেন তা আমি আশা করি না। সালিম [রাদি.] বলিলেন, আমি তো রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মতই বলেছি। একদা আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। লোকদের মধ্য হইতে এক ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে বললো, আসসালামু আলাইকুম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ ওয়া আলাইকা ওয়া আলা উম্মিকা। তারপর বলিলেনঃ তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে তার উচিৎ “আল্হামদুলিল্লাহ” বলা। অতঃপর তিনি কিছু হামদ উল্লেখ করিলেন, এবং তার নিকট যারা থাকিবে তাহাদের উচিৎ “ইয়ারহামুকাল্লাহ” [আল্লাহ তোমাকে দয়া করুন] বলা; এবং হাঁচি দানকারীর উচিৎ উপস্থিত লোকদের উদ্দেশ্যে ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম [আল্লাহ আপনাদেরকে ও আমাদেরকে ক্ষমা করুন] বলা। {৫০২৯}

{৫০২৯} তিরমিজি, নাসায়ীর আমালুল ইয়াওমি, ইবনি হিব্বানের মাওয়ারিদ, আহমা, হাকিম। হাকিম বলেনঃ সনদের হিলাল ইবনি ইয়াসাফ সালিম বিন উবাইদাকে পাননি এবং তাহাকে দেখেননি। বরং উভয়ের মাঝে একজন অজ্ঞাত লোক রয়েছে।

এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫০৩২. সালিম ইবনি উবাইদ আল-আশজাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-এর সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। {৫০৩০}

{৫০৩০} আহমাদ। সানাদে খালিদ বিন আরফাজাহ অজ্ঞাত। আবু হাতিম রাযী বলেনঃ আমি তাহাকে চিনি না। তাহক্বিক আলবানীঃ আমি এটি সহিহ এবং যঈফে পাইনি। এই হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৫০৩৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যদি কেউ হাঁচি দেয় তাহলে সে বলবেঃ আলহামদু লিল্লাহি আলা কুল্লি হাল [সর্বাবস্থায় সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য]। আর তার ভাই অথবা সাথী বলবেঃ ইয়ারহামুকাল্লাহ”। আর হাঁচিদাতা বলবেঃ ইয়াহ্দীকুমুল্লাহু ওয়া ইউসলিহু সালাকুম [আল্লাহ তোমাদের সঠিক পথ দেখান এবং তোমাদের সংশোধন করুন]।

হাঁচির উত্তর দেয়া -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০০ঃ হাঁচির জবাব কতবার দিবে?

৫০৩৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, তোমার ভাইয়ের হাঁচির উত্তর তিনবার দিবে। এরপরও হাঁচি দিতে থাকলে তবে তার মস্তিষ্কে ঠান্ডা লেগেছে [তাই আর জবাব দিতে হইবে না]। {৫০৩২}

হাসান মাওকূফ ও মারফু।

{৫০৩২} বুখারীর আদাবুল মুফরাদ।এই হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৫০৩৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদিসের অর্থানুরূপ বর্ণিত। {৫০৩৩}

{৫০৩৩} ইবনিস সুন্নী। এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৫০৩৬. উবাইদ ইবনি রিফাআহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ হাঁচিদাতার উত্তর তিনবার দাও। এরপরও যদি সে হাঁচি দিতে থাকে তবে তোমার ইচ্ছা উত্তর দিতেও পারো আবার নাও দিতে পারো।

{৫০৩৪} তিরমিজি। ঈমাম তিরমিজি বলেনঃ এই হাদিসটি গরীব এবং সনদ মাজহুল। এছাড়াও বর্ণনাটি মুরসাল।এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫০৩৭. সালামাহ ইবনিল আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বসে হাঁচি দিলে তিনি ইয়ারহামুকাল্লাহ বলিলেন। লোকটি আবার হাঁচি দিলে নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ লোকটির ঠান্ডা লেগেছে।

হাঁচির উত্তর দেয়া -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০১ঃ যিম্মীর হাঁচির জবাব কিভাবে দিবে?

৫০৩৮. আবু বুরদাহ [রাদি.] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইয়াহুদীরা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে এই আশায় ইচ্ছাকৃতভাবেই হাঁচি দিতো যে, তিনি তাহাদের হাঁচির জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহু বলবেন। কিন্তু তিনি বলিতেনঃ ইয়াহ্‌দিকুমুল্লাহু ওয়া ইউসলিহু বালাকুম। {৫০৩৬}

হাঁচির জবাব -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০২ঃ যে ব্যক্তি হাঁচি দেয়ার পর আলহাম্‌দু লিল্লাহ বলে না

৫০৩৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, দুই ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে হাঁচি দিলে তিনি এক ব্যক্তির হাঁচির উত্তর দিলেন এবং অপর ব্যক্তির হাঁচির উত্তর হইতে বিরত থাকলেন। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সামনে তো দুই ব্যক্তি হাঁচি দিয়েছে। আপনি একজনেরটা উত্তর দিলেন, আর অন্যজনেরটা উত্তর দানে বিরত থাকলেন? তিনি বলিলেনঃ এই ব্যক্তি মহান আল্লাহর প্রশংসা করেছে আর এ ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করেনি।

হাঁচির উত্তর দেয়া -এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply