যে হাঁচি দিবে সে আলহামদু লিল্লাহ বললে তার উত্তর

যে হাঁচি দিবে সে আলহামদু লিল্লাহ বললে তার উত্তর

যে হাঁচি দিবে সে আলহামদু লিল্লাহ বললে তার উত্তর দেওয়া মুস্তাহাব। নচেৎ তা অপছন্দনীয়। হাঁচির উত্তর দেওয়া, হাঁচি ও হাই তোলা সম্পর্কিত আদব-কায়দা

১. আবূ হুরাইরা রাঃআঃ হতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা হাঁচি ভালবাসেন, আর হাই তোলা অপছন্দ করেন। অতএব তোমাদের কেউ যখন হাঁচবে এবং

الْحَمْدُ لِلَّهِ

আলহামদুলিল্লাহ

পড়বে তখন প্রত্যেক মুসলিম শ্রোতার উচিত হবে যে, সে তার জবাবে

يَرْحَمُكُم الله

‘ইয়ারহামুকাল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়া করুন

বলবে। আর হাই তোলার ব্যাপারটা এই যে, তা হচ্ছে শয়তানের পক্ষ থেকে [আলস্য ও ক্লান্তির লক্ষণ]। অতএব কেউ যখন হাই তুলবে তখন সে যেন যথাসাধ্য তা রোধ করে। কেননা, যখন তোমাদের কেউ হাই তোলে, তখন শয়তান তা দেখে হাসে।’’

সহীহুল বুখারী ৬২২৩, ৩২৮৯, ৬২২৬, মুসলিম ২৯৯৪, তিরমিযী ৩৭০, ২৭৪৬, ২৭৪৭, আবূ দাউদ ৫০২৮, আহমাদ ৭৫৪৫, ৯২৪৬, ১০৩১৭, ১০৩২৯, ২৭৫০৪

২. উক্ত রাবী রাঃআঃ হতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যখন তোমাদের কেউ হাঁচবে, তখন সে যেন বলে,

الْحَمْدُ لِلَّهِ

‘আলহামদু লিল্লাহ।’

[তা শুনে] তার ভাই বা সাথীর বলা উচিত,

يَرْحَمُكُم الله

‘য়্যারহামুকাল্লাহ।’ অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়া করুন

সুতরাং যখন জবাবে ‘য়্যারহামুকাল্লাহ’ বলবে, তখন যে [হাঁচি দিয়েছে] সে বলবে,

‘য়্যাহদীকুমুকাল্লাহু অ য়্যুস্লিহু বালাকুম।’

[অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদেরকে সুপথ দেখান ও তোমাদের অন্তর সংশোধন করে দেন।]’’

সহীহুল বুখারী ৬২২৪, আবূ দাউদ ৫০৩৩, আহমাদ ৮৪১৭

৩. আবূ মূসা আশআরী রাঃআঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সাঃআঃকে বলিতে শুনেছি যে, ‘‘যখন তোমাদের কেউ হাঁচবে এবং

الْحَمْدُ لِلَّهِ

‘আলহামদু লিল্লাহ’ বলবে, তখন তার উত্তর দাও। যদি সে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ না বলে, তাহলে তার উত্তর দিয়ো না।’’

মুসলিম ২৯৯২, আহমাদ ১৯১৯৭

৪. আনাস রাঃআঃ হতে বর্ণিত, দু’জন লোক নবী সাঃআঃ এর নিকটে হাঁচল। তিনি তাহাদের মধ্যে একজনের উত্তর দিলেন। আর দ্বিতীয় জনের উত্তর দিলেন না। যে ব্যক্তির উত্তর দিলেন না সে বলিল, ‘অমুক ব্যক্তি হাঁচল তো তার উত্তর দিলেন, আর আমি হাঁচলাম, কিন্তু আপনি আমার উত্তর দিলেন না!?’ তিনি বলিলেন, ‘‘ঐ ব্যক্তি

الْحَمْدُ لِلَّهِ

‘আলহামদু লিল্লাহ’

পড়েছে। আর তুমি ‘আলহামদু লিল্লাহ’ পড়নি তাই।’’

সহীহুল বুখারী ৬২২৫, মুসলিম ২৯৯১

৫. আবূ হুরাইরা রাঃআঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসূল সাঃআঃ যখন হাঁচতেন তখন নিজ হাত অথবা কাপড় মুখে রাখতেন এবং তার মাধ্যমে শব্দ কম করিতেন।’

তিরমিযী ২৭৪৫, আবূ দাউদ ৫০২৯, আহমাদ ৯৩৭০

৬. আবূ মূসা রাঃআঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়াহুদী সম্প্রদায় রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর নিকটে কৃত্রিমভাবে হাঁচতো এই আশায় যে, তিনি তাহাদের জন্য

يَرْحَمُكُم الله

‘য়্যারহামুকাল্লাহ’ [অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়া করুন]

বলবেন। কিন্তু তিনি [তাহাদের হাঁচির জবাবে] বলিতেন,

يَهْدِيكُم اللهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ

‘য়্যাহদীকুমুল্লাহু অয়্যুসলিহু বালাকুম’ [অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদেরকে সৎপথগামী করুন ও তোমাদের অন্তরসমূহকে সংশোধন করে দেন।]

আবূ দাউদ ৫০৩৮, তিরমিযী ২৭৩৯,আহমাদ ১৯০৮৯, ১৯১৮৫

৭. আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাঃআঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যখন তোমাদের কেউ হাই তুলবে, তখন সে যেন আপন হাত দিয়ে নিজ মুখ চেপে ধরে রাখে। কেননা, শয়তান [মুখে] প্রবেশ করে থাকে।’’

মুসলিম ২৯৯৫, আবূ দাউদ ৫০২৬, আহমাদ ১০৮৬৯, ১০৯৩০, ১১৪৭৯, ১১৫০৬, দারেমী ১৩৮২

Comments

Leave a Reply