হত্যা হাদিস । হত্যা অবৈধ হওয়া। হত্যা করা কঠিন অপরাধ

হত্যা হাদিস । হত্যা অবৈধ হওয়া। মুসলিমকে হত্যা না করা

হত্যা হাদিস । হত্যা অবৈধ হওয়া। মুসলিমকে হত্যা না করা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৩৮, হত্যা অবৈধ হওয়া, হাদীস (৩৯৬৬-৪০৫৬)

১.পরিছেদঃ মুসলিমকে হত্যা করার অবৈধতা
২.পরিছেদঃ হত্যা করা কঠিন অপরাধ
৩.পরিছেদঃ কবীরা গুনাহর বর্ণনা
৪.পরিছেদঃ সবচাইতে বড় পাপ সম্পর্কে আলোচনা
৫.পরিছেদঃ যে কারণে মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ
৬.পরিছেদঃ কেউ মুসলমানদের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হলে, তাকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৭.পরিছেদঃ হযরত আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] থেকে হুমায়দের বর্ণনায় তার ছাত্রদের মধ্যে পার্থক্য
৮.পরিছেদঃ ইয়াহইয়া সাঈদ থেকে তালহা ইবনি মুসাররিফ ও মুআবিয়ার মধ্যে এই হাদিসের বর্ণনাগত পার্থক্য
৯.পরিছেদঃ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাটার নিষেধাজ্ঞা
১০.পরিছেদঃ শূলে চড়ানো প্রসঙ্গে
১১.পরিছেদঃ মুসলমানের দাস পালিয়ে মুশরিকদের নিকট গেলে এবং এ সম্পর্কে জারীর [রাঃআঃ] বর্ণিত হাদিসে শাবী থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে শব্দগত পার্থক্য
১২.পরিছেদঃ আবু ইসহাক [রাঃআঃ] –এর থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনাভেদ

১.পরিছেদঃ মুসলিমকে হত্যা করার অবৈধতা

৩৯৬৬. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমাকে মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আদেশ দেয়া হইয়াছে, যে পর্যন্ত না তারা এই কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, আর মুহাম্মদ [সাঃআঃ] আল্লাহর বান্দা এবং তাহাঁর রাসূল। আর যখন তারা সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ তাহাঁর বান্দা ও রাসূল এবং আমাদের ন্যায় নামায পড়বে, আমাদের কিবলার দিকে মুখ করিবে, আমাদের যবেহকৃত পশু আহার করিবে; তখন আমাদের জন্য তাহাদের রক্ত ও সম্পদ হারাম হইবে, তবে এই কালেমার কোন হক [শরীআতসম্মত কারণ] পাওয়া গেলে ভিন্ন কথা।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৬৭. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার আদেশ করা হইয়াছে, যে পর্যন্ত না তারা এই কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ [সাঃআঃ] আল্লাহর রাসূল। যখন তারা একথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ [সাঃআঃ] আল্লাহর রাসূল এবং আমাদের কিবলার দিকে মুখ করে এবং আমাদের যবেহকৃত পশু ভক্ষণ করে, আমাদের ন্যায় নামায পড়ে, তখন তাহাদের রক্ত এবং মাল আমাদের জন্য হারাম হইবে, তবে এ কালেমার হক ব্যতীত। মুসলমানদের যে অধিকার রয়েছে, তাহাদের জন্যও তা থাকিবে। আর মুসলমানদের উপর যে দায়িত্ব বর্তায়, তা তাহাদের উপরও বর্তাবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৬৮.মায়মূন ইবনি সিয়াহ্ হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা করেনঃ হে আবু হামযা! কোন বস্তু মুসলমানের রক্ত হারাম করে? তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি এ কথার সাক্ষ্য দান করে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মদ [সাঃআঃ] আল্লাহর রাসূল এবং আমাদের কিবলার দিকে মুখ করে, আর আমাদের ন্যায় নামায পড়ে, আমাদের যবেহকৃত পশু ভক্ষণ করে, সে মুসলমান। মুসলমানদের যে হক তারও সেই হক, আর তার উপর ঐ সকল দায়িত্ব বর্তাবে যা মুসলমানদের উপর বর্তায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৬৯. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর ইনতিকালের পর আরবের কোন কোন গোত্র মুরতাদ হইয়া গেল। তখন উমার ফারুক [রাঃআঃ] বললেনঃ হে আবু বকর! আপনি আরবের সাথে কিরূপে যুদ্ধ করবেন? তখন আবু বকর [রাঃআঃ] বললেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হইয়াছে, যতক্ষণ না তারা এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত দান করে। আল্লাহর শপথ! তারা যদি একটি বকরির বাচ্চাও দিতে অস্বীকার করে, যা তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সময় দিত, তবে অবশ্যই আমি তাহাদের বিরুদ্ধে এজন্য যুদ্ধ করবো। উমার [রাঃআঃ] বলেনঃ যখন আমি দেখলাম, আবু বকরের মত পরিস্কার, তখন আমি মনে করলাম, এটাই হক।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  হাসান সহীহ

৩৯৭০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর ইনতিকালের পর যখন আবু বকর [রাঃআঃ] খলীফা হলেন। তখন আরবের কোন কোন গোত্র কাফির হইয়া গেল। এ সময় উমার [রাঃআঃ] আবু বকর [রাঃআঃ] -কে বললেনঃ আপনি তাহাদের বিরুদ্ধে কিভাবে যুদ্ধ করবেন? অথচ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আদেশ করা হইয়াছে, যতক্ষণ না তারা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” বলে, আর যখন তারা তা বলবে, তখন তারা তাহাদের জানমাল আমার থেকে রক্ষা করলো, তবে ইসলামের হক ব্যতীত। আর তাহাদের হিসাব আল্লাহর কাছে। আবু বকর [রাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই ঐ সকল লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো, যারা নামায এবং যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করে। কেননা যাকাত মালের হক। আল্লাহর কসম! তারা যদি একটি রশিও দিতে অস্বীকার করে যা তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে দিত, তবে আমি তাহাদের বিরুদ্ধে এর জন্য যুদ্ধ করবো। আল্লাহর শপথ! আমি দেখলাম, আল্লাহ্ তাআলা যুদ্ধের জন্য আবু বকর [রাঃআঃ] -এর অন্তর খুলে দিয়েছেন এবং আমি বুঝতে পারলাম, এটাই যথার্থ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৭১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আদেশ দেয়া হইয়াছে, যতক্ষণ না তারা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলে। যখন তারা তা বলবেঃ তখন তারা আমার থেকে তাহাদের জান ও মাল রক্ষা করিবে, তবে এ কালেমার কোন হক ব্যতীত। আর তাহাদের হিসাব আল্লাহর কাছে। যখন আরবের কিছু লোক মুরতাদ হলো, তখন উমার [রাঃআঃ] আবু বকর [রাঃআঃ] -কে বললেনঃ আপনি কি তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন? অথচ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে এরূপ এরূপ বলিতে শুনিয়াছি? তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমি নামায এবং যাকাতের মধ্যে প্রভেদ করবো না এবং যারা এদুয়ের মধ্যে পার্থক্য করিবে, আমি তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। পরে আমরা তাহাঁর সঙ্গে একত্রে যুদ্ধ করি এবং বুঝতে পারি যে, এটাই ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৭২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে মানুষের সাথে যুদ্ধ করার আদেশ হইয়াছে। যাবৎ না তারা বলে, “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই।” আর যে বললো আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই, সে আমার থেকে তার জানমাল রক্ষা করলো। তবে ইসলামের কোন হক ব্যতীত। আর তার হিসাব তো আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের কাছে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ মুতওয়াতির

৩৯৭৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর ইনতিকালের পর যখন আবু বকর [রাঃআঃ] খলীফা হন এবং আরবের কিছু লোক মুরতাদ হইয়া যায়, তখন উমার [রাঃআঃ] বললেনঃ হে আবু বকর! আপনি এ সকল লোকের বিরুদ্ধে কিরূপে যুদ্ধ করবেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আদেশ করা হইয়াছে, যতক্ষণ না তারা বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্। আর যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ বললো, সে আমার থেকে তার জানমাল রক্ষা করলো, তবে ইসলামের অন্য কোন হক ব্যতীত। আর তার হিসাব আল্লাহর যিম্মায়। আবু বকর [রাঃআঃ] বললেনঃ যে ব্যক্তি নামায ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করিবে, তার বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ করবো। কেননা যাকাত মালের হক। আল্লাহর শপথ! যদি তারা একটি বকরির বাচ্চাও আমাকে দিতে অস্বীকার করে, যা তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে দিত, তা হলে আমি তাহাদের বিরুদ্ধে এ কারণে যুদ্ধ করবো। উমার [রাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহর শপথ! আমি দেখলাম, আল্লাহ তাআলা যুদ্ধের জন্য আবু বকরের অন্তর খুলে দিয়েছেন। আর তাহাঁর সিদ্ধান্তই সঠিক।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৭৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমাকে মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে হুকুম দেওয়া হইয়াছে, যাবৎ না তারা বলে, “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই।” যে ব্যক্তি এটা বলবে, সে আমার পক্ষ হইতে তার জানমাল নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামের কোন হক দেখা দিলে ভিন্ন কথা। আর তার হিসার আল্লাহর কাছে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৭৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবু বকর [রাঃআঃ] তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সংকল্প গ্রহণ করিলেন। তখন উমার [রাঃআঃ] বললেনঃ হে আবু বকর! আপনি তাহাদের বিরুদ্ধে কিরূপে যুদ্ধে লিপ্ত হইবেন? অথচ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আদেশ করা হইয়াছে, যাবৎ না তারা বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্। যখন তারা তা বলবে, তখন তারা আমার থেকে তাহাদের জানমালের নিরাপত্তা লাভ করিবে, তবে এ কালেমার হক ব্যতীত। আবু বকর [রাঃআঃ] বললেনঃ যে নামায ও যাকাতের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টি করিবে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। আল্লাহর শপথ! যদি তারা একটি উটের বাচ্চাও আমাকে দিতে অস্বীকার করে, যা তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সময় দিত, তবে তা না দেওয়ার জন্য আমি তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। উমার [রাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহর কসম! আমি দেখলামঃ মহান আল্লাহ্ তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আবু বকরের অন্তর খুলে দিয়েছেন। আমি বুঝতে পারলাম, এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৭৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ না বলা পর্যন্ত লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আমাকে আদেশ করা হইয়াছে। যখন তারা এরূপ বলবে, তখন তারা তাহাদের জানমাল আমার থেকে রক্ষা করিবে, তবে এ কালেমার হক ব্যতীত। আর তাহাদের হিসাব আল্লাহর যিম্মায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৭৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ না বলা পর্যন্ত আমি লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হইয়াছি। যদি তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ বলে, তবে আমার পক্ষ হইতে তাহাদের জানমাল রক্ষা করে নেবে কিন্তু এর হক ব্যতীত। আর তাহাদের হিসাব আল্লাহর যিম্মায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৭৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আমরা মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব, যাবৎ না তারা বলে, “আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই।” যখন তারা বলবে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই, তখন আমাদের জন্য তাহাদের জানমাল হারাম হইয়া যাবে, তবে এ কালেমার হক ব্যতীত। আর তাহাদের হিসাব আল্লাহর যিম্মায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  হাসান সহীহ

৩৯৭৯. নুমান ইবনি বশীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একদা আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সঙ্গে ছিলাম। এসময় এক ব্যক্তি এসে তাঁকে চুপিচুপি কিছু বললে, তিনি বললেনঃ তাকে হত্যা কর। এরপর তিনি বললেনঃ সেকি সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই? সে বললেনঃ হ্যাঁ, কিন্তু সে তা বলে স্বীয় প্রাণ রক্ষার্থে। তিনি বললেনঃ তাকে হত্যা করো না। কেননা আমাকে আদেশ করা হইয়াছে যে, লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। যদি তারা তা বলে, তবে তারা আমার থেকে তাহাদের জানমালের নিরাপত্তা লাভ করিবে কিন্তু এর হক ব্যতীত। আর তাহাদের হিসাব আল্লাহর যিম্মায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৮০. নুমান ইবনি সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি তাঁকে বলেনঃ আমরা মদীনার মসজিদের একটি তাঁবুতে ছিলাম, এ সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট প্রবেশ করে বললেনঃ আমার নিকট এ মর্মে ওহী এসেছে যে, আপনি লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন, যতক্ষণ না তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ না বলে। অতঃপর পূর্বের অনুরূপ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৮১. আউস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট আগমন করিলেন, তখন আমরা একটি তাঁবুতে ছিলাম। অতঃপর হাদীসটি শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৮২. নুমান ইবনি সালিম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আওস [রাঃআঃ] – কে বলিতে শুনিয়াছি যে, আমি সাকীফ গোত্রের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট আগমন করলাম। আমি তাহাঁর সঙ্গে একটি তাঁবুতে ছিলাম। আমি এবং তিনি ব্যতীত তাঁবুর সকলেই ঘুমিয়ে পড়লো। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে তার সঙ্গে গোপনে কিছু বললে, তিনি বললেনঃ যাও তাকে হত্যা কর। এরপর তিনি বললেনঃ সেকি একথার সাক্ষ্য দান করে না যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল? সে ব্যক্তি বললোঃ সে এরূপ বলে। তখন তিনি বললেনঃ তাকে ছেড়ে দাও। এরপর তিনি বললেনঃ আমাকে লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আদেশ দান করা হইয়াছে, যতক্ষণ না তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। যখন তারা এরূপ বলবে, তখন তাহাদের জানমাল আমার থেকে নিরাপদ হইবে, তবে এর হক ব্যতীত। রাবী মুহাম্মদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি শুবা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -কে বললামঃ তারা কি এই সাক্ষ্য দেয় না যে, “আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল”- এই কথাটি কি এই হাদিসের অংশ নয়? তিনি বললেনঃ আমি মনে করি এটিও এই হাদিসের অংশ, কিন্তু আমার জানা নেই।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৮৩. উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে লোকের সাথে যুদ্ধ করিতে আদেশ করা হইয়াছে, যে পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দেয়— “আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই।” এরপর তাহাদের জানমাল আমাদের জন্য হারাম হইয়া যাবে, তবে এর হক ব্যতীত।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৮৪. আবু ইদরীস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি মুআবিয়া [রাঃআঃ] -কে খুতবা দিতে শুনিয়াছি, আর তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে অতি অল্পই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। খুতবায় তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনিয়াছি, প্রত্যেক গুনাহ আশা করা যায় আল্লাহ্ তা ক্ষমা করবেন, তবে ঐ ব্যক্তির গুনাহ ব্যতীত, যে ইচ্ছা করে কোন মুসলমানকে হত্যা করে অথবা কাফির হইয়া মৃত্যুবরণ করে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৮৫. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

অন্যায়ভাবে যে ব্যক্তিকেই হত্যাই করা হোক না কেন, তার রক্তের একাংশ আদম [আঃ] -এর প্রথম পুত্র কাবিলের উপর বর্তায়। কেননা সে-ই সর্বপ্রথম তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে রক্তপাতের রীতি প্রবর্তন করেছে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

২.পরিছেদঃ হত্যা করা কঠিন অপরাধ

৩৯৮৬. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঐ সত্ত্বার শপথ! যাঁহার হাতে আমার প্রাণ, কোন মুসলমানকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা আল্লাহর কাছে পৃথিবী ধ্বংস হওয়া অপেক্ষাও গুরুতর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৮৭. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ পৃথিবী লয়প্রাপ্ত হওয়া আল্লাহর নিকট কোন মুসলমান ব্যক্তির অন্যায়ভাবে নিহত হওয়া অপেক্ষা তুচ্ছতর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৮৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কোন মুমিন ব্যক্তিকে হত্যা করা আল্লাহর নিকট পৃথিবী লয়প্রাপ্ত হওয়া অপেক্ষা গুরুতর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  অন্যান্য

৩৯৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কোন মুমিন ব্যক্তির হত্যা আল্লাহর নিকট পৃথিবী লয়প্রাপ্ত হওয়া অপেক্ষা গুরুতর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  অন্যান্য

৩৯৯০. বুরাইদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মুমিনকে হত্যা করা আল্লাহর নিকট পৃথিবী ধ্বংস হওয়া অপেক্ষা গুরুতর।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  হাসান সহীহ

৩৯৯১. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বান্দার থেকে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হইবে। আর সর্বাগ্রে মানুষের হত্যার বিচার হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৯২. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সর্বাগ্রে লোকের মধ্যে অন্যায় হত্যার বিচার করা হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৯৩. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

কিয়ামতের দিন সর্বাগ্রে মানুষের মধ্যে খুনের বিচার করা হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  অন্যান্য

৩৯৯৪. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন লোকের মধ্যে সর্বাগ্রে খুনের বিচার করা হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  অন্যান্য

৩৯৯৫. আমর ইবনি শুরাহবীল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন লোকের মাঝে সর্বপ্রথম খুনের বিচার করা হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৩৯৯৬. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন সর্বাগ্রে লোকের মাঝে খুনের বিচার করা হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  অন্যান্য

৩৯৯৭

আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন এক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তির হাত ধরে নিয়ে এসে বলবেঃ হে আমার রব! এই ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছিল। তখন আল্লাহ্ তাআলা বলবেনঃ তুমি কেন এই ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে? সে ব্যক্তি বলবেঃ আমি তাকে হত্যা করেছিলাম আপনার গৌরব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ্ তাআলা বলবেনঃ নিশ্চয় গৌরব আমারই। এরপর অন্য ব্যক্তি আর এক ব্যক্তির হাত ধরে নিয়ে এসে বলবেঃ ইয়া আল্লাহ্! এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছিল। আল্লাহ্ তাআলা বলবেনঃ তুমি এই ব্যক্তিকে কেন হত্যা করেছিলে? সে ব্যক্তি বলবেঃ অমুক ব্যক্তির কর্তৃত্ব ও গৌরব প্রতিষ্ঠার জন্য। তখন আল্লাহ্ তাআলা বলবেনঃ ঐ ব্যক্তির কোন গৌরব নেই। এরপর সে ব্যক্তি তার হত্যার গুনাহ বহন করিবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৩৯৯৯. সালিম ইবনি আবুল জাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] -এর নিকট ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো, যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করেছে, এরপর সে তাওবা করলো এবং ঈমান আনলো এবং নেক আমল করলো এবং হিদায়ত কবূল করলো। তার তাওবা কি কবূল হইবে? তিনি বললেনঃ মুসলমানের হত্যাকারীর তাওবা কিরূপে কবূল হইতে পারে? আমি নাবী [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার হত্যাকারীর হাত ধরে নিয়ে আসবে, তখন তার শিরা হইতে রক্ত প্রবাহিত হইতে থাকিবে। সে বলবেঃ ইয়া আল্লাহ্! আপনি এই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করুন, সে আমাকে কি কারণে হত্যা করেছিল? ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেনঃ এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তাআলা এই আয়াত নাযিল করেনঃ {আরবি} অর্থঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুসলমানকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম। [৪ঃ৯৩]

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০০০. সাঈদ ইবনি জুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কুফাবাসীগণ {আরবি} আয়াত সম্পর্কে মতবিরোধ করলে এটি রহিত হইয়াছে কিনা। আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] -এর কাছে গেলাম এবং এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ এটি সর্বশেষ নাযিলকৃত আয়াতসমূহের অন্যতম, কোন আয়াত একে রহিত করেনি।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০০১. সাঈদ ইবনি জুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা করলাম, যে ব্যক্তি কোন মুমিনকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করে তার তাওবা কবূল হইবে কী? তিনি বললেনঃ না। আমি তার নিকট সূরা ফুরকানের আয়াত- {আরবি} তিলাওয়াত করলাম। অর্থঃ আর তারা আল্লাহর সাথে কোন ইলাহকে ডাকে না এবং আল্লাহ্ যাহার হত্যা নিষেধ করিয়াছেন, যথার্থ কারণ ব্যতীরেকে তাকে হত্যা করে না। [২৫ঃ৬৮] এর পরে আছে, “তবে যারা তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ তাহাদের পাপ পূণ্যের দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন”- [২৫ঃ৭০] তিনি বলেন, এটি মক্কী আয়াত আর এ আয়াতকে মাদানী আয়াত {আরবি} রহিত করেছে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০০২. সাঈদ ইবনি জুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইবনি লায়লা আমাকে আদেশ করিলেন, ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] -কে এই দুই আয়াত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিতে প্রথম আয়াত {আরবি} কেউ ইচ্ছাকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম। আর দ্বিতীয় আয়াত {আরবি} যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডাকে না এবং আল্লাহ যাহার হত্যা নিষেধ করিয়াছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না {আরবি} তবে যারা তওবা করে {আরবি}। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম। প্রথম আয়াত সম্পর্কে তিনি বলিলেন, এটাকে কোন আয়াত রহিত করেনি। আর দ্বিতীয় আয়াত সম্পর্কে বলিলেন, এটি মুশরিকদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হইয়াছে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০০৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আরবের এক দল লোক বহু নরহত্যা করে, ব্যাপকভাবে যিনা করে এবং নানা রকম অন্যায় অপরাধ করে, তারা নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হইয়া জিজ্ঞেস করলোঃ হে মুহাম্মদ! আপনি যা বলেন এবং যেদিকে আমাদের আহ্বান করেন, তা অতি উত্তম। তবুও বলুন, আমরা যা করেছি তার কি কোন প্রায়শ্চিত্ত আছে? তখন আল্লাহপাক নাযিল করলেনঃ {আরবি} অর্থঃ যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোন মাবূদকে না ডাকে, তবে তাহাদের গুনাহসমূহকে আল্লাহ্ নেকীতে রূপান্তর করবেন, আর যিনাকে পবিত্রতায় রূপান্তরিত করবেন [২৫ঃ ৬৮-৭০]। এবং আরও নাযিল করেনঃ {আরবি} অর্থঃ তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, তোমারা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না [৪০ঃ ৫৩]।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৪০০৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

কয়েকজন মুশরিক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর খিদমতে এসে বললেনঃ আপনি যা বলেন এবং যেদিকে আমাদের আহ্বান করেন, তা অতি উত্তম। আচ্ছা বলুন তো, আমরা যা করেছি তার কাফফারা আছে কি? তখন আল্লাহপাক নাযিল করেনঃ {আরবি} [ফুরকানঃ ৬৮-৭০] এবং {আরবি} [৩৯ঃ ৫৩]।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০০৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি হত্যাকারীকে নিয়ে উপস্থিত হইবে, তার ললাট ও মাথা হত্যাকারীর হাতে থাকিবে, আর তার শিরা হইতে রক্ত প্রবাহিত হইতে থাকিবে। সে বলবেঃ হে আমার রব! এই ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। সে তাকে আল্লাহর আরশের নিকট নিয়ে যাবে। রাবী বলেনঃ তখন লোক ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] -এর নিকট তাওবার উল্লেখ করলে তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ {আরবি} তিনি আরও বললেনঃ এই আয়াত নাযিল হওয়ার পর রহিত হয়নি; কাজেই তার তাওবার সুযোগ কোথায়?

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০০৬. যায়দ ইবনি সাবিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ {আরবি} আয়াতটি সূরা ফুরকানের আয়াত নাযিল হওয়ার ছয় মাস পর নাযিল হয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  হাসান সহীহ

৪০০৭. যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আয়াতটি সূরা ফুরকানের {আরবি} এ আয়াতের আট মাস পর নাযিল হয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  অন্যান্য

৪০০৮. যায়দ ইবনি সাবিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

যখন আয়াত {আরবি} নাযিল হলো, অর্থাৎ যারা ইচ্ছাকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করে তার শাস্তি জাহান্নাম, যেখানে সে স্থায়ীভাবে থাকিবে। তখন আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত হলাম। ফলে সূরা ফুরকানের এ আয়াতঃ {আরবি} নাযিল হয়। অর্থঃ যারা আল্লাহর সাথে কোন ইলাহকে ডাকে না এবং আল্লাহ্ যাহার হত্যা নিষেধ করিয়াছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না. . . . . . তবে যারা তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাহাদের পাপ পূণ্যের দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন [২৫ঃ ৭০]।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  মুনকার

৩.পরিছেদঃ কবীরা গুনাহর বর্ণনা

৪০০৯. আবু আইয়ূব আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে, আল্লাহর সঙ্গে অন্য কিছুকে শরীক করে না, নামায পড়ে, যাকাত আদায় করে এবং কবীরা গুনাহ হইতে নিজেকে রক্ষা করে, তার জন্য জান্নাত রয়েছে। তখন লোকেরা জিজ্ঞেসা করলেনঃ কবীরা গুনাহ কী কী? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা, মুসলমানদেরকে হত্যা করা, আর কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় যুদ্ধ ক্ষেত্র হইতে পলায়ন করা।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০১০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কবীরা গুনাহ হলো আল্লাহর সাথে শরীক করা, মাতাপিতার অবাধ্য হওয়া, মুসলমানকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা এবং মিথ্যা বলা।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০১১. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কবীরা গুনাহ হলোঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতামাতার নাফরমানী করা, অন্যায়ভাবে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০১২. উমায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আর তিনি ছিলেন নাবী [সাঃআঃ] –এর একজন সাহাবী। তিনি বলেছেনঃ এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কবীরা গুনাহ কি কি? তিনি বললেনঃ তা সাত প্রকারের পাপ। এর মধ্যে সবচাইতে নিকৃষ্ট হলো– আল্লাহর সাথে শরীক করা, অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা এবং কাফিরদের সাথে যুদ্ধ করার সময় পলায়ন করা। [সংক্ষিপ্ত]

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  হাসান হাদীস

৪.পরিছেদঃ সবচাইতে বড় পাপ সম্পর্কে আলোচনা

৪০১৩. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! সবচাইতে বড় পাপ কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহপাকের সাথে কাউকে শরীক সাব্যস্ত করা। আমি বললামঃ এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করা যে, সে তোমার সাথে খাদ্যে শরীক হইবে। আমি বললামঃ তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে তোমার ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০১৪. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কোন পাপ অধিক গুরুতর? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা, অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। আমি বললামঃ এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করা যে, সে তোমার সাথে খাওয়ায় শরীক হইবে। আমি বললামঃ তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে তোমার যিনা করা।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০১৫. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা করলামঃ কোন পাপ অধিক গুরুতর? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা। তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া এবং দারিদ্রের আশংকায় তোমার সন্তানকে হত্যা করা যে, সে তোমার সাথে খাদ্যে শরীক হইবে। এরপর আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] তিলাওয়াত করেনঃ {আরবি}।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৫.পরিছেদঃ যে কারণে মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ

৪০১৬. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহপাকের শপথ! যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, ঐ মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ নয়, যে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, আর আমি আল্লাহর রাসূল। তিন ব্যক্তি ব্যতীতঃ [১ম] যে ব্যক্তি ইসলাম ত্যাগ করে মুসলমানদের দল থেকে পৃথক হইয়া যায়; [২য়] বিবাহ করার পরও যে যিনা করে; [৩য়] প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০১৭. আমর ইবনি গালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আয়েশা [রাঃআঃ] বলেছেনঃ তুমি কি জান না যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ নয়। তবে যে বিবাহের পরেও যিনা করে, অথবা মুসলমান হওয়ার পর যে কাফির হইয়া যায় কিংবা প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৪০১৮. আমর ইবনি গালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

৪০১৯. হিলাল ইবনি আলা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ……… আমর ইবনি গালিব [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আয়েশা [রাঃআঃ] বলেনঃ হে আম্মার! তুমি কি জান না যে, কোন মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ নয়, তবে তিন ব্যক্তি ব্যতীতঃ [১.] প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ; [২.] বিবাহ করার পরও যে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়; এভাবে পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  দুর্বল মাওকুফ

৪০১৯. আবু উমামা ইবনি সাহল এবং আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি রবীআ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা উসমান [রাঃআঃ] -এর সাথে ছিলাম, তখন তিনি অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন, আমরা যখন কোন স্থানে প্রবেশ করতাম, তখন [মদীনার] বালাত নামক স্থানের লোকের কথা শুনতাম। একদিন উসমান [রাঃআঃ] ভেতরে প্রবেশ করিলেন, এরপর তিনি বের হলেন এবং বললেনঃ তারা আমাকে হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে। আমরা বললামঃ আল্লাহ্ তাআলাই আপনার জন্য যথেষ্ট। তিনি বলেনঃ তারা আমাকে কেন হত্যা করিতে চায়? আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনিয়াছি, কোন মুসলমান ব্যক্তিকে তিন কারণ ব্যতীত হত্যা করা বৈধ নয়ঃ ১. কোন ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করার পর কাফির হলে, অথবা ২. বিবাহ করার পর ব্যভিচার করলে, অথবা ৩. কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করলে। আর আল্লাহর কসম! না আমি জাহিলী যুগে ব্যভিচার করেছি, না ইসলাম গ্রহণের পর। আর যেদিন আল্লাহ আমাকে হিদায়াত দান করিয়াছেন তখন হইতে আমি কোন সময় ধর্ম ত্যাগের ইচ্ছাও করিনি। আর আমি কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যাও করিনি, তবুও তারা কেন আমাকে হত্যা করিবে?

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৬.পরিছেদঃ কেউ মুসলমানদের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হলে, তাকে হত্যা করা প্রসঙ্গে

৪০২০. আরফাযা ইবনি শুরায়হ্ আশজাঈ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি নাবী [সাঃআঃ] -কে মিম্বরের উপর লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে দেখেছি। তিনি বলছিলেনঃ আমার পরে অনেক ফিতনা দেখা দেবে, এসময় তোমরা যাকে দেখবে মুসলমানদের দল হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া গেছে, অথবা উম্মতে মুহাম্মদ [সাঃআঃ] -এর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করিতে চাইছে; সে যে-ই হোক না কেন, তাকে হত্যা করিবে। কেননা আল্লাহ্ তাআলার রহমতের হাত মুসলমানদের দলের উপর থাকিবে। আর যে ব্যক্তি জামাআত থেকে পৃথক হইয়া যায়, শয়তান তার সাথী হয় এবং তাকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০২১. আরফাযা ইবনি শুরায়হ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার পরে নিশ্চয়ই অনেক ফিতনা-ফাসাদ হইবে। এরপর তিনি তাহাঁর হাত উঠিয়ে বললেনঃ তখন তোমরা যাকে দেখবে, উম্মতে মুহাম্মদীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ইচ্ছা করছে, অথচ তারা একতাবদ্ধ; তখন তোমরা তাকে হত্যা করিবে, সে যে-ই হোক না কেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০২২. আরফাযা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছিঃ আমার পরে অনেক ফিতনা দেখা দেবে। এ সময় যে কেউ মুহাম্মদের উম্মতের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করিবে, অথচ তারা একতাবদ্ধ, তখন তোমরা তাকে তরবারি দিয়ে হত্যা করিবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০২৩. উসামা ইবনি শরীক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার উম্মতের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির তৎপরতা চালাবে, তার গর্দান উড়িয়ে দাও।

আয়াত- {আরবি} অর্থঃ যারা আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, তাহাদের শাস্তি এই যে– তাহাদের হত্যা করা হইবে, অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা হইবে, বিপরীত দিক থেকে, তাহাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হইবে বা তাহাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করা হইবে [৫ঃ ৩৩] –এর ব্যাখ্যা

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৪০২৪. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আরবের উকল গোত্রের আট ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হলো। মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল হলো না, ফলে তারা রোগাক্রান্ত হইয়া পড়লো। তারা এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট অভিযোগ করলে তিনি বললেনঃ তোমরা আমাদের উটের রাখালের সাথে বাইরে যাবে এবং নিজেদের রোগের জন্য উটের মূত্র এবং দুধ পান করিবে। তারা বললেনঃ হ্যাঁ। সুতরাং তারা গিয়ে উটের দুধ এবং পেশাব পান করলো এবং সুস্থ হইয়া গেল। পরে তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর রাখালকে হত্যা করে উট নিয়ে পালিয়ে গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের পেছনে লোক পাঠালেন। তারা তাহাদের ধরে আনলো। তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে ফেললেন এবং গরম শলাকা দিয়ে তাহাদের চোখ অন্ধ করে দিলেন। এরপর তাহাদের রৌদ্রে ফেলে রাখলেন। ফলে এভাবে তারা মারা গেল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০২৫. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

উকল গোত্রের কয়েকজন লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর খিদমতে উপস্থিত হইয়া ইসলাম গ্রহণ করে। কিন্তু মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল না হওয়ায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদেরকে সাদকার উটের কাছে যাওয়ার জন্য এবং উটের দুধ এবং পেশাব পান করার আদেশ দিলেন। তারা ঐরূপ করলো। পরে তারা রাখালকে হত্যা করে উট নিয়ে চলে গেল। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের ধরে আনার জন্য লোক পাঠালেন। রাবী বলেনঃ তাহাদের আনার পর তাহাদের হাত-পা কেটে দিলেন, তাহাদের চোখ গরম শলাকা দিয়ে অন্ধ করে দিলেন। তাহাদের যখমের রক্ত বন্ধ করার জন্য ছেঁকা দিলেন না। বরং এভাবে তাহাদের ফেলে রাখলেন। ফলে তারা এভাবে মারা গেল। এরই প্রেক্ষিত আল্লাহ্ তাআলা নাযিল করেনঃ {আরবি}।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০২৬. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন উকল গোত্রের আট ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর খিদমতে আগমন করলো। এরপর আগের হাদিসের মত বর্ণনার পর রাবী বলেনঃ তারা রাখালকে হত্যা করলো।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০২৭

আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উরায়না বা উকল গোত্র হইতে একদল লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর খিদমতে আসলে, তিনি তাহাদেরকে কয়েকটি উট অথবা উটনীর আদেশ করিলেন, কারণ মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল ছিল না। তিনি তাহাদেরকে উটের দুধ এবং পেশাব পান করিতে বলিলেন। তারা ঐ সকল উট নিয়ে গেল এবং রাখালকে হত্যা করলো। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের সন্ধানে লোক পাঠালেন। পরে তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে দিলেন এবং গরম শলাকার ছেঁকা দিয়ে চোখ অন্ধ করে দিলেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৭.পরিছেদঃ হযরত আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] থেকে হুমায়দের বর্ণনায় তার ছাত্রদের মধ্যে পার্থক্য

৪০২৮. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

উরায়না গোত্রের কিছু লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট আসলো। কিন্তু মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল হল না। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদেরকে তার একপাল উটনীর কাছে পাঠিয়ে দিলেন, তারা তাহাদের দুধ এবং পেশাব পান করিল। তারা সুস্থ হওয়ার পর মুরতাদ হইয়া গেল এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর মুমিন রাখালকে হত্যা করে উটগুলো নিয়ে গেল। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের ধরে আনার জন্য লোক পাঠালেন। তাহাদের ধরে আনার পর তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে দিলেন। তপ্ত শলাকার ছেঁকা দিয়ে তাহাদের চোখ অন্ধ করে দিলেন এবং তাহাদের শূলীবিদ্ধ করিলেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  অন্যান্য

৪০২৯. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ উরায়না গোত্রের কিছু লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট আসলো। তিনি তাহাদের বলিলেন, তোমরা যদি আমাদের উটপালের কাছে যেতে এবং সেখানে থেকে তাহাদের দুধ ও পেশাব পান করিতে! তারা তাই করিল। তারা যখন আরোগ্য লাভ করিল, তখন তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর রাখালের কাছে গিয়ে হত্যা করিল এবং নাবী [সাঃআঃ] -এর উটগুলো নিয়ে গেল। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের ধরে আনার জন্য লোক পাঠালেন। ধরে আনার পর তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে দিলেন এবং গরম শলাকার ছেঁকা দিয়ে চোখ অন্ধ করে দিলেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৩০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উরায়না গোত্রের কিছু লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট আসলো। মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল না হওয়ায় নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের বললেনঃ তোমরা যদি আমাদের উটের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করিতে, তবে ভাল হতো। তারা সেখানে গেল এবং সুস্থ হওয়ার পর মুরতাদ হইয়া গেল। আর তারা নাবী [সাঃআঃ] -এর মুমিন রাখালকে হত্যা করে উট নিয়ে গেল এবং তারা বিদ্রোহীরূপে ফিরে গেল। তখন নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের ধরে আনার জন্য লোক পাঠান। তাহাদের ধরে আনার পর তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে দিলেন এবং তপ্ত শলাকায় ছেঁকা দিয়ে চোখ অন্ধ করে দিলেন। তিনি তাহাদের হাররা নামক স্থানে ফেলে রাখলেন এবং সেখানে এভাবেই তারা মারা গেল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৩১. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উরায়না গোত্রের কিছু লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট আসলো। মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল না হওয়ায় নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের বললেনঃ তোমরা যদি আমাদের উটের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ, হুমায়দ বলেন, আনাস [রাঃআঃ] থেকে কাতাদা বলেছেন, এবং তার পেশাব, পান করিতে। তারা তাই করলো। কিন্তু সুস্থ হওয়ার পর তারা ইসলাম ত্যাগ করে কাফির হইয়া গেল। আর তারা নাবী [সাঃআঃ] -এর মুমিন রাখালকে হত্যা করে তাহাঁর উট নিয়ে গেল এবং তারা বিদ্রোহীরূপে পলায়ন করিল। তখন নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের ধরে আনার জন্য লোক পাঠান। তাহাদের ধরে আনার পর নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের হাত-পা কেটে দিলেন এবং গরম শলাকার ছেঁকা দিয়ে তাহাদের চোখ অন্ধ করে দিলেন। তিনি তাহাদের হাররা নামক স্থানে ফেলে রাখলেন এবং সেখানে এভাবেই তারা মারা গেল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৩২. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

উরায়না বা উকল গোত্রের কয়েকজন লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমরা পশুর মালিক, ক্ষেত-খামারের মালিক নই। মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল না হওয়ায় তিনি তাহাদেরকে কয়েকটি উটনী ও একজন রাখাল দেবার জন্য আদেশ দিলেন এবং তাহাদেরকে সেখানে যেতে বলিলেন এবং এগুলোর দুধ ও পেশাব পান করিতে বলিলেন। যখন তারা সুস্থ হলো, তখন তারা ইসলাম ত্যাগ করে কাফির হইয়া গেল। তারা হাররা নামক স্থানে অবস্থান করছিল। সেখানে তারা নাবী [সাঃআঃ] -এর রাখালকে হত্যা করে উটনী নিয়ে পালিয়ে গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের ধরে আনার জন্য লোক পাঠান। তাহাদের ধরে আনার পর, তিনি তাহাদের গরম শলাকা দ্বারা চোখ অন্ধ করে দেন এবং হাত-পা কেটে হাররা নামক স্থানে ফেলে রাখেন। এমনকি তারা সেখানেই মারা যায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৩৩. মুহম্মদ ইবনি মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল আলা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  নির্ণীত নয়

৪০৩৪. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

উরায়না গোত্রের কিছু লোক হাররা নামক স্থানে অবতরণ করে। পরে তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিকট আসে। মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল হয়নি। তাই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদেরকে সাদকার উটের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করার আদেশ দিলেন। পরে তারা রাখালকে হত্যা করে মুরতাদ হইয়া যায় এবং উট নিয়ে পালিয়ে যায়। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের সন্ধানে লোক পাঠান। তাহাদেরকে ধরে আনা হলে তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে ফেলেন এবং গরম শলাকা দ্বারা তাহাদের চক্ষু অন্ধ করে দেন এবং হাররায় তাহাদের ফেলে রাখেন। আনাস [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি তাহাদের একজনকে দেখেছি পিপাসার কারণে নিজের মুখ মাটিতে ঘষছে, এভাবেই তারা মারা যায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৮.পরিছেদঃ ইয়াহইয়া সাঈদ থেকে তালহা ইবনি মুসাররিফ ও মুআবিয়ার মধ্যে এই হাদিসের বর্ণনাগত পার্থক্য

৪০৩৫. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ উরায়নার কয়েকজন বেদুঈন নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হইয়া ইসলাম গ্রহণ করলো। কিন্তু মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল না হওয়ায় তাহাদের রং হলদে হইয়া গেল এবং পেট ফুলে গেল। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদেরকে দুধওয়ালা উটের নিকট পাঠান এবং সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করার আদেশ দেন। এভাবে তারা সুস্থ হইয়া যায়। এরপর তারা রাখালকে হত্যা করে উট নিয়ে পালিয়ে যায়। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের ধরে আনার জন্য লোক পাঠান। ধরে আনার পর তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে ফেলেন এবং গরম শলাকা দ্বারা তাহাদের চক্ষু অন্ধ করে দেন। আমীরুল মুমিনীন আবদুল মালিক আনাস [রাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা করিলেন, যখন তিনি তাহাঁর কাছে এই হাদীস বর্ণনা করছিলেন- নাবী [সাঃআঃ] তাহাদেরকে এই শাস্তি তাহাদের কুফরীর কারণে, না অন্য কোন অপরাধের কারণে দিয়েছিলেন? তিনি বললেনঃ কুফরীর কারণে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৩৬. সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আরবের কিছু লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে মুসলমান হলো, পরে তারা অসুস্থ হইয়া পড়লে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদেরকে দুগ্ধবতী উটনীর নিকট পাঠিয়ে দিলেন, যাতে তারা দুধ পান করিতে পারে। তারা সেখানে অবস্থান করিতে লাগলো। পরে তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর গোলাম রাখালকে হত্যা করে উটগুলোকে নিয়ে চলে গেল। লোকেরা বলে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ খবর শুনে বললেনঃ আল্লাহ! ঐ ব্যক্তিকে পিপাসায় কাতর রাখ, যে মুহাম্মদ [সাঃআঃ] -এর পরিবারে লোককে সারা রাত পিপাসায় কাতর রেখেছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পরে তাহাদের তালাশে লোক পাঠান। তারা ধৃত হলো। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের হাত-পা কাটান, তাহাদের চোখ শলাকা দিয়ে অন্ধ করে দেন। বর্ণনাকারীদের মধ্যে কেউ কারও চেয়ে অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন। তবে মুয়াবিয়া [রাঃআঃ] এই হাদীসে বলেনঃ তারা উটগুলোকে হাঁকিয়ে মুশরিকদের দেশে নিয়ে যায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

৪০৩৭. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কিছু লোক রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর উটনী লুট করলো। তিনি তাহাদের ধরে আনেন, তাহাদের হাত-পা কাটান এবং তাহাদের চোখ অন্ধ করে দেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৩৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কিছু লোক রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর উটনী লুট করে নিয়ে গেল। তাহাদেরকে নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট ধরে আনা হল। তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে দেন এবং গরম শলাকার ছেঁকা দিয়ে তাহাদের চোখ অন্ধ করে দেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৩৯. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতা থেকে হইতে বর্ণিতঃ

কয়েকজন লোক রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর উট লুট করে নিয়ে গেল। তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে ফেলেন এবং গরম শলাকার ছেঁকা দিয়ে তাহাদের চোখ অন্ধ করে দেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৪০৪০. উরওয়া ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উরায়নার কিছু লোক রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর উটনী লুট করে নিয়ে যায় এবং তার গোলামকে হত্যা করে। তিনি তাহাদেরকে ধরে আনার জন্য লোক পাঠান। তারা ধৃত হলে তিনি তাহাদের হাত-পা কেটে ফেলেন এবং গরম শলাকার ছেঁকা দিয়ে অন্ধ করে দেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ লিগাইরিহি

৪০৪১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

বলেনঃ {আরবি}- যারা আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাহাদের শাস্তি {আরবি} [৫ঃ৩৩] -এ আয়াত ঐ সকল লোকদের ব্যাপারে নাযিল হয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  হাসান সহীহ

৪০৪২. আবু যিনাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

যখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাদের অর্থাৎ চোরদের হাত-পা কাটেন এবং আগুন দ্বারা চক্ষু অন্ধ করে দেন। তখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে মৃদু ভর্ৎসনা করে এই আয়াত নাযিল করেনঃ {আরবি}

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

৪০৪৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ঐ সকল লোকের চোখ গরম শলাকার ছেঁকা দিয়ে অন্ধ করে দেন। কেননা তারা রাখালদের চোখ গরম শলাকার ছেঁকা দিয়ে অন্ধ করে দিয়েছিল।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৪৪. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ইয়াহুদী এক আনসারীর কন্যাকে অলঙ্কারের লোভে হত্যা করে তাকে কূপে নিক্ষেপ করে এবং পাথর মেরে তার মাথা চূর্ণ করে দেয়। এরপর সে ধৃত হলে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাকে মৃত না হওয়া পর্যন্ত পাথর মারার নির্দেশ দেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৪৫. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি এক আনসারীর কন্যাকে তার অলঙ্কারের লোভে হত্যা করে। তারপর সে তাকে কূপে নিক্ষেপ করে এবং তার মাথা চূর্ণ করে দেয়। পরে সে ধরা পড়লে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত পাথর মারার নির্দেশ দেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৪৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

বলেনঃ আয়াত {আরবি} মুশরিকদের সম্বন্ধে নাযিল হইয়াছে। তাহাদের মধ্যে যে ধৃত হওয়ার পূর্বে তাওবা করে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। এই আয়াত মুসলমানদের জন্য নয়। যদি কেউ হত্যা করে অথবা যমীনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আল্লাহ এবং রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং ধৃত হওয়ার পূর্বে কাফিরদের সাথে গিয়ে মিলিত হয়, তা হলে সে যেই শাস্তির উপযুক্ত হইয়া গেছে তা থেকে পরবর্তী সময়ের তওবা তাকে রক্ষা করিতে পারবে না।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৯.পরিছেদঃ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাটার নিষেধাজ্ঞা

৪০৪৭. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর ভাষণে সাদকা দানের জন্য উদ্বুদ্ধ করিতেন এবং মুসলা করা [অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে বিকৃত করা] থেকে নিষেধ করিতেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

১০.পরিছেদঃ শূলে চড়ানো প্রসঙ্গে

৪০৪৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিন অবস্থা ব্যতীত মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ নয়ঃ [১ম] যদি কোন মুসলমান বিবাহ করার পর ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, [২য়] ঐ ব্যক্তি যে কাউকে ইচ্ছা করে হত্যা করে তাকে হত্যা করা যাবে এবং [৩য়] ঐ ব্যক্তি যে দ্বীন ইসলাম পরিত্যাগ করে আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হল, তাকে হত্যা করা হইবে অথবা শূলে চড়ানো হইবে বা দেশান্তর করা হইবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

১১.পরিছেদঃ মুসলমানের দাস পালিয়ে মুশরিকদের নিকট গেলে এবং এ সম্পর্কে জারীর [রাঃআঃ] বর্ণিত হাদিসে শাবী থেকে বর্ণনাকারীদের মধ্যে শব্দগত পার্থক্য

৪০৪৯. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দাস যখন পালিয়ে যায়, তখন তার নামায ততক্ষণ পর্যন্ত কবূল হইবে না, যতক্ষণ না সে স্বীয় মনিবের নিকট ফিরে আসবে।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

৪০৫০. মুগীরা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] শাবী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ জারীর [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিতেন যে, গোলাম যখন পালিয়ে যায়, তখন তার নামায কবূল হয় না। যদি সে এভাবে মৃত্যুবরণ করে, তবে সে কাফির হইয়া মরবে। জারীর [রাঃআঃ] -এর এক গোলাম পালিয়ে গিয়েছিল। তিনি তাকে গ্রেফতার করার পর তার গর্দান উড়িয়ে দেন।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  শায

৪০৫১. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন কোন গোলাম মুশরিকদের এলাকায় পালিয়ে যায়, তখন তার জন্য আর কোন যিম্মাদারী থাকে না।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  সহীহ হাদীস

১২.পরিছেদঃ আবু ইসহাক [রাঃআঃ] –এর থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনাভেদ

৪০৫২. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন গোলাম মুশরিকদের দেশে পালিয়ে যায়, তখন তার রক্ত হালাল হইয়া যায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

৪০৫৩. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] থেকে। তিনি বলেন, যে গোলাম মুশরিকদের দেশে পালিয়ে যায়, তার রক্ত হালাল হইয়া যায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

৪০৫৪. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ যে গোলাম মুশরিকদের দেশে পালিয়ে যায়, তার রক্ত হালাল হইয়া যায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

৪০৫৫. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ যে গোলাম মুশরিকদের দেশে চলে যায়, তার রক্ত হালাল হইয়া যায়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

৪০৫৬. জারীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ যে গোলাম তার মনিব হইতে পালিয়ে যায়, এবং শত্রুর সাথে মিলিত হয়, সে তার নিজের রক্ত হালাল করে দেয়।

হত্যা হাদিস এর তাহকিকঃ  জইফ হাদীস

Comments

One response to “হত্যা হাদিস । হত্যা অবৈধ হওয়া। হত্যা করা কঠিন অপরাধ”

Leave a Reply