হজ্জ ফরজ – শিশুদের হজ্জ, মাহরাম ছাড়া নারীদের হজ্জ
হজ্জ ফরজ – শিশুদের হজ্জ, মাহরাম ছাড়া নারীদের হজ্জ >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ১১, অনুচ্ছেদঃ ১-৮=৮টি
অনুচ্ছেদ -১ঃ হাজ্জ ফার্য হওয়ার বর্ণনা
অনুচ্ছেদ-২ঃ মাহরাম ছাড়া নারীদের হাজ্জ
অনুচ্ছেদ-৩ঃ ইসলামে বৈরাগ্য নেই
অনুচ্ছেদ–৪ঃ হাজ্জের সফরে পাথেয় সাথে নেয়া
অনুচ্ছেদ-৫ঃ হাজ্জে গিয়ে ব্যবসা করা
অনুচ্ছেদ–৬
অনুচ্ছেদ–৭ঃ পশু ভাড়ায় খাটানো
অনুচ্ছেদ-৮ঃ শিশুদের হাজ্জ
অনুচ্ছেদ -১ঃ হাজ্জ ফার্য হওয়ার বর্ণনা
১৭২১। ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আকরা ইবনি হাবিস [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! হাজ্ব প্রতি বছরই ফরয, নাকি মাত্র একবার? তিনি বলিলেন, জীবনে বরং একবারই, তবে কেউ অধিক করলে সেটা তার জন্য নাফল। {১৭২১}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭২২. আবু ওয়াক্বিদ আল-লাইসী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বিদায় হাজ্জের দিন তাহাঁর স্ত্রীদেরকে বলিতে শুনিয়াছি ঃ তোমাদের জন্য হাজ্জ এই একবারই। এরপর হাজ্জের জন্য আর বের হইতে হইবে না। {১৭২২}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২ঃ মাহরাম ছাড়া নারীদের হাজ্জ
১৭২৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোনো মুসলিম নারীর জন্য সাথে মাহরাম [যার সাথে বিবাহ হারাম এমন আত্মীয়] ছাড়া এক রাতের রাস্তা সফর করা বৈধ নয়।
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭২৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে নারী আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখে তার জন্য একদিন ও এক রাতের পথ সফর করা বৈধ নয় … অতঃপর বর্ণনাকারী পূর্বের হাদিসের অর্থানুরূপ বর্ণনা করেন। {১৭২৪}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭২৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন… অতঃপর বর্ণনাকারী [পূর্ব বর্ণিত] হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে [বর্ণনাকারী সুহাইল] বলিয়াছেন, এক বারীদ। {১৭২৫}
{১৭২৫} ইবনি খুযাইমাহ, হাকিম। হাদিসের তাহকিকঃ শায
১৭২৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে নারী আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তার জন্য তিন দিন কিংবা এর অধিক সময়ের পথ [একাকী] ভ্রমণ করা বৈধ নয়, যদি না তার সঙ্গে তার পিতা, ভাই, স্বামী, ছেলে অথবা কোন মাহরাম লোক থাকে। {১৭২৬}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭২৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন নারী স্বীয় মাহ্রাম সাথে না নিয়ে তিন দিনের সফর করিবে না। {১৭২৭}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭২৮,নাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি উমার [রাদি.] তার দাসী সাফিয়্যাহ নাম্মীকে তার পেছনে সওয়ারীর উপর বসিয়ে নিয়ে মাক্কাহ পর্যন্ত সফর করেন। {১৭২৮}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–৩ঃ ইসলামে বৈরাগ্য নেই
১৭২৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ ইসলামে সন্নাসবাদীতা নেই। {১৭২৯}
দুর্বল ঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৬২৬৯], মিশকাত [২৫২২]। {১৭২৯} আহমাদ, হাকিম,বা য়হাক্বী। ঈমাম হাকিম ও যাহাবী বলেন ঃ সনদ সহিহ। আল্লামা হায়সামী মাজমাউয যাওয়ায়িদ গ্রন্থে বলেন ঃ এর রিজাল সিক্বাত। আহমাদ শাকির বলেন ঃ এর সনদ সহিহ। শায়খ আলবানী সিলসিলাহ যঈফাহ গ্রন্থে [হা/৬৮৫] এর বিরোধীতা করে বলেন ঃ সনদের উমার ইবনি আত্বা সকলের ঐকয়মতে যয়ীফ। ঈমাম যাহাবী স্বয়ং আল –মীযান গ্রন্থে তাহাকে উল্লেখ করে বলেন। তাহাকে ইয়াহইয়া ইবনি মাঈন ও নাসায়ী যয়ীফ বলিয়াছেন। আর ঈমাম আহমাদ বলিয়াছেন ঃ তিনি শক্তিশালী নন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ–৪ঃ হাজ্জের সফরে পাথেয় সাথে নেয়া
১৭৩০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, লোকজন হাজ্জ করতো কিন্তু সাথে পাথেয় নিয়ে আসতো না। আবু মাসউদ বলেন, ইয়ামানের কতিপয় লোক হাজ্জে যেতো কিন্তু সাথে পাথেয় আনতো না এবং তারা বলতো যে, আমরা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করেছি। অথচ মক্কায় পৌঁছার পর তারা ভিক্ষা করতো। ফলে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করিলেন,
وَتَزَوَّدُوا فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى
“তোমরা হাজ্জের সফরে সাথে পাথেয় নিয়ে যাবে, আর জেনে রেখো তাকওয়াই হলো উত্তম পাথেয়। [২ ঃ ১৯৭] {১৭৩০}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–৫ঃ হাজ্জে গিয়ে ব্যবসা করা
১৭৩১. মুজাহিদ [রাদি.] হইতে ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি আব্বাস [রাদি.] এ আয়াতটি পাঠ করিলেন ঃ
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَبْتَغُوا فَضْلاً مِنْ رَبِّكُمْ
হাজ্জের সময়ে [ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে] তোমরা তোমাদের প্রভুর অনুগ্রহ তালাশ করলে দোষের কিছু নেই। [২ ঃ ১৯৮]। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, [অন্যায় মনে করে] মিনায় কেউ ব্যবসা-বাণিজ্য করতো না। তাহাদেরকে আরাফাত হইতে ফেরার পর মিনায় ব্যবসা করিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। {১৭৩১}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–৬
১৭৩২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কেউ হাজ্জের ইচ্ছা করলে যেন তাড়াতাড়ি সম্পাদন করে। {১৭৩২}
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ–৭ঃ পশু ভাড়ায় খাটানো
১৭৩৩. আবু উমামাহ আত-তাইমী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এমন লোক যে, হাজ্জের সময় আমার পশু ভাড়ায় খাটাতাম। তাই কতিপয় লোক বললো, তোমার হাজ্জ হয়নি। তাই আমি ইবনি উমারের [রাদি.] সাথে সাক্ষাত করে বলিলাম, হে আবু আবদূর রহমান! আমি এমন ব্যক্তি যে, হাজ্জের সফরে পশু ভাড়ায় খাটাই। কতিপয় লোক বলে, তোমার হাজ্জ হয় না। তখন ইবনি উমার [রাদি.] বলেলেন, তুমি কি ইহরাম বেঁধেছো, তালবিয়া পাঠ করেছো, বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেছো, আরাফাত থেকে ঘুরে এসেছো, কংকর নিক্ষেপ করেছো? আমি বলিলাম, হা! তিনি বলিলেন, তোমার হাজ্জ হয়ে গেছে। একদা এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে তাঁকে প্রশ্ন করলো যেরূপ তুমি আমাকে প্রশ্ন করলে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন বক্তব্য না দিয়ে কিছুক্ষণ নীরব রইলেন। অবশেষে এ আয়াত অবতীর্ণ হয় ঃ “এ ব্যপারে তোমাদের কোন দোষ নেই যদি [হাজ্জের মওসুমে] তোমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে তোমাদের রবের অনুগ্রহ তালাশ করো।” অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উক্ত ব্যক্তিকে ডেকে পাঠিয়ে তাহাকে এ আয়াত পড়ে শুনালেন এবং বলিলেন, তোমার হাজ্জ হয়েছে। {১৭৩৩}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৩৪. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
প্রাথমিক কালে লোকেরা হাজ্জের মওসুমে মিনা, আরাফাত, যুল-মাজাযির বাজারে এবং হাজ্জের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের স্থানগুলোতে ব্যবসা করতো, কিন্তু ইহরাম অবস্থায় এসব স্থানে ব্যবসা করা [জায়িয কিনা] তাহাদের সংশয় হলো। তখন মহিয়ান আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করিলেন ঃ “তোমাদের কোনো অপরাধ নেই যদি [হাজ্জের সময়] তোমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে তোমাদের রবের অনুগ্রহ তালাশ করো, বিশেষ করে হাজ্জের অনুষ্ঠানের স্থানগুলোতে।” ইবনি আবু যিব বলেন, উবাইদ ইবনি উমাইর আমাকে বর্ণনা করেছেন যে, ইবনি আব্বাস [রাদি.]
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَبْتَغُوا فَضْلاً مِنْ رَبِّكُمْ
এ বাক্যটি মূল কুরআনের মধ্যেই পাঠ করিতেন। {১৭৩৪}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৩৫. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
প্রথম দিকে লোকেরা হাজ্জের মওসুমে কেনা –বেচা করতো। অতঃপর বর্ণনাকারী [আরবী] পর্যন্ত পূর্ব বর্ণীত হাদিসের সমার্থক হাদিস বর্ণনা করেন। {১৭৩৫}
সহিহ, পূর্বেরটি দ্বারা। হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–৮ঃ শিশুদের হাজ্জ
১৭৩৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আর-রাওহা নামক স্থানে কাফেলার সাথে সাক্ষাত হলে তাহাদেরকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করিলেন ঃ তোমরা কোন কাফেলা? তারা বললো, আমরা মুসলিম। তারা জিজ্ঞেস করলো, তোমরা কারা? লোকেরা বললো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]। এ কথা শুনে এক মহিলা অস্থির হয়ে উঠলো এবং হাওদা থেকে একটি শিশুর বাহু ধরে বের করে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এ শিশুর হাজ্জ আছে কি? তিনি বলিলেনঃ হ্যাঁ, তবে সওয়াব তুমি পাবে। {১৭৩৬}
হজ্জ ফরজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply