হজ্জ এর ফরজ হওয়া ও এর ফযীলত। উটের চরে হজ্জে গমণ

হজ্জ এর ফরজ হওয়া ও এর ফযীলত। উটের চরে হজ্জে গমণ

হজ্জ এর ফরজ হওয়া ও এর ফযীলত। উটের হাওদায় করে হজ্জে গমণ >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ২৫, হজ্জ, অধ্যায়ঃ (১-৪)=৪টি

২৫/১. অধ্যায়ঃ হজ্জ ফর্‌য হওয়া ও এর ফযীলত।
২৫/২. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ “তারা তোমার নিকট আসবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রে আরোহণ করে, তারা আসবে দূর-দুরান্তের পথ [৫০] অতিক্রম করে যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোয় উপস্থিত হইতে পারে ।” (আল-হাজ্জঃ ২৭)
২৫/৩. অধ্যায়ঃ উটের হাওদায় আরোহণ করে হজ্জে গমণ।
২৫/৪. অধ্যায়ঃ হজ্জে মাবরূর কবুলকৃত হজ্জের ফযীলাত।

২৫/১. অধ্যায়ঃ হজ্জ ফরয হওয়া ও এর ফযীলত।

মহান আল্লাহর বাণীঃ মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বাইতুল্লাহর হজ্জ করা ফরয যারা সেথায় যাওয়ার সামর্থ্য রাখে এবং কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষীহীন। (আল ইমরানঃ ৯৭)

১৫১৩. আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফযল ইবনু আব্বাস (রাদি.) একই বাহনে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর পিছনে আরোহণ করেছিলেন। এরপর খাশআম গোত্রের জনৈক মহিলা উপস্থিত হল। তখন ফযল (রাদি.) সেই মহিলার দিকে তাকাতে থাকে এবং মহিলাটিও তার দিকে তাকাতে থাকে। আর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) ফযলের চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিতে থাকে। মহিলাটি বলিল, হে আল্লাহর রাসুল ! আল্লাহর বান্দার উপর ফর্‌যকৃত হজ্জ আমার বয়োঃবৃদ্ধ পিতার উপর ফর্‌য হয়েছে। কিন্তু তিনি বাহনের উপর স্থির থাকতে পারেন না, আমি কি তাহাঁর পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় করবো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ (আদায় কর)। ঘটনাটি বিদায় হজ্জের সময়ের।

২৫/২. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ “তারা তোমার নিকট আসবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রে আরোহণ করে, তারা আসবে দূর-দুরান্তের পথ [৫০] অতিক্রম করে যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোয় উপস্থিত হইতে পারে ।” (আল-হাজ্জঃ ২৭)

[৫০] পথ শব্দের মূলে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, কুরআনেও বলা হয়েছে যার অর্থ হল প্রশস্ত রাস্তা বা পথ।

১৫১৪. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দেখেছি, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যুলহুলাইফা নামক স্থানে তাহাঁর বাহনের উপর আরোহণ করেন, বাহনটি সোজা হয়ে দাঁড়াতেই তিনি তালবিয়া উচ্চারণ করিতে থাকেন।

১৫১৫. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর তালবিয়া পাঠ যুল-হুলাইফা হইতে আরম্ভ হত যখন তাহাঁর বাহন তাঁকে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতো। হাদীসটি আনাস ও ইবনু আব্বাস (রাদি.) বর্ণনা করিয়াছেন অর্থাৎ ইব্রাহীম ইবনু মূসা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর সূত্রে জাবির (রাদি.) বর্ণিত হাদীসটি।

২৫/৩. অধ্যায়ঃ উটের হাওদায় আরোহণ করে হজ্জে গমণ।

১৫১৬. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) আয়েশা (রাদি.) এর সাথে তাহাঁর ভাই আবদুর রাহমান (রাদি.) কে প্রেরণ করেন। তিনি আয়েশা (রাদি.) কে তানঈম নামক স্থান হইতে ছোট একটি হাওদায় বসিয়ে উমরাহ করিতে নিয়ে যান। উমর (রাদি.) বলেন, তোমরা হজ্জে (গমনের উদ্দেশ্যে) উটের পিঠে হাওদা মজবুত করে বাঁধ (সফর কর)। কেননা, হজ্জও এক প্রকারের জিহাদ।

১৫১৭ সুমামা ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আনাস (রাদি.) হাওদায় আরোহণ অবস্থায় হজ্জে গমন করিয়াছেন অথচ তিনি কৃপণ ব্যক্তি ছিলেন না। তিনি আরও বলেন, নাবী (সাঃআঃ) হাওদায় আরোহণ করে হজ্জে গমন করেন এবং সেই উটটিই তাহাঁর মালের বাহন ছিল।

১৫১৮. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) ! আপনারা উমরাহ করিলেন, আর আমি উমরাহ করিতে পারলাম না ! নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আবদুর রাহমান ! তোমার বোন (আয়েশা) কে সাথে করে নিয়ে তানঈম হইতে গিয়ে উমরাহ করিয়ে নিয়ে এসো। তিনি আয়েশা (রাদি.) কে উটের পিঠে ছোট একটি হাওদার পশ্চাদ্ভাগে বসিয়ে দেন এবং তিনি উমরাহ আদায় করেন।

২৫/৪. অধ্যায়ঃ হজ্জে মাবরূর কবুলকৃত হজ্জের ফযীলাত।

১৫১৯. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ)- কে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞেস করা হল , অতঃপর কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞেস করা হল, অতঃপর কোনটি? তিনি বলেনঃ হজ্জ-ই-মাবরূর (মাকবূল হজ্জ)।

১৫২০. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন। হে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)! জিহাদকে আমরা সর্বোত্তম আমল মনে করি। কাজেই আমরা কি জিহাদ করবো না? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হল, হজ্জে মাবরূর।

১৫২১. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)- কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ হইতে বিরত রইল, সে ঐ দিনের মত নিষ্পাপ হয়ে হজ্জ হইতে ফিরে আসবে যেদিন তার মা জন্ম দিয়েছিল।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply