হজ প্রসঙ্গ। হাজ্জের ফাযীলাত ও যাদের উপর ফরয তার বিবরণ
হজ প্রসঙ্গ। হাজ্জের ফাযীলাত ও যাদের উপর ফরয তার বিবরণ >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় ১ঃ হাজ্জের ফাযীলাত ও যাদের উপর ফরয তার বিবরণ
পরিচ্ছেদ ০১. হজ্ব এবং উমরার ফযীলত
পরিচ্ছেদ ০২. ‘উমরার বিধান
পরিচ্ছেদ ০৩. হজ্ব ওয়াজিব হওয়ার শর্তাবলী
পরিচ্ছেদ ০৪. বাচ্চার হজ্বের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৫. কুরবানী করিতে অপারগ ব্যক্তির হজ্বের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৬. হজ্জের মান্নত করে আদায় করার পূর্বেই মৃত্যুবরণকারীর বিধান
পরিচ্ছেদ ০৭. নাবালেগ ছেলে এবং দাসের কৃত হজ্ব “ফরজ হজ্ব” হইবে না
পরিচ্ছেদ ০৮. মাহরাম পুরুষ ব্যতিত মহিলার সফরের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৯. কারও পক্ষ থেকে হজ্ব করার শর্ত
পরিচ্ছেদ ১০. জীবনে একবার হজ্ব করা আবশ্যক
পরিচ্ছেদ ০১. হজ্ব এবং উমরার ফযীলত
৭০৮ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক`উমরাহ’র পর আর এক`উমরাহ উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের [গুনাহের] জন্য কাফফারা। আর জান্নাতই হলো হাজ্জে মাবরূরের প্রতিদান। {৭৫৪}
{৭৫৪} বুখারী ১৭৭৩, মুসলিম ১২৪৯, তিরমিজি ৯৩৩, নাসায়ি হাদিস ২৬২২, ২৬২৩, ২৬২৯, ইবনু মাজাহ ২৮৮৭, ২৮৮৮, আহমাদ ৭২০৭, ৯৬২৫, ৯৬৩২, মুওয়াত্তা মালেক ৭৭৬, দারেমী ১৭৯৫।মা রূর শব্দের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হচ্ছে, যে হজ্জ্বের মধ্যে কোন প্রকার গুনাহের সংমিশ্রণ ঘটেনি। উক্ত হাদীসে বারংবার উমরা করা মুস্তাহাব প্রমাণিত হচ্ছে, আর যারা এটাকে অপছন্দনীয় মনে করেন তাদের বিরোধিতা করছে উক্ত হাদিস। আল্লাহই ভাল জানেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০২. ‘উমরার বিধান
৭০৯ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মহিলাদের উপর কি জিহাদ বাধ্যতামূলক? তিনি বলেনঃ হাঁ, তাদের উপরও জিহাদ ফরয, তবে তাতে অস্ত্রবাজি নাই। তা হচ্ছে হজ ও উমরা। -শব্দ বিন্যাস ইবনু মাজাহর, সহীহ্ সানাদে। এর মূল রয়েছে বুখারীতে। {৭৫৫}
{৭৫৫} বুখারী ১৮৬১, ২৭৮৪, ২৭৭৫, নাসায়ি হাদিস ২৬২৮, ২৯০১ . উম্মুল মু’মিনীন`‘‘আয়িশা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! জিহাদকে আমরা সর্বোত্তম`আমল মনে করি। কাজেই আমরা কি জিহাদ করবো না? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হল, হাজ্জে মাবরূর। অপর একটি রিওয়ায়াতে আছে, সর্বোত্তম এবং সবচেয়ে সুন্দর জিহাদ হচ্ছে হাজ্জ্ব, হাজ্জ্বে মাবরূর। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৭১০ – জাবির বিন`আবদুল্লাহ্ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একজন বেদুঈন নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লা্হ্র রাসূল! আপনি আমাকে জানান যে`উমরাহ’ পালন আমার উপর কি ওয়াজিব [আবশ্যক]? তিনি বলিলেন- না, তবে যদি তুমি কর তা তোমার জন্য কল্যাণের কাজ হইবে। –এর মাওকুফ হওয়াটা বেশি যুক্তিযুক্ত। ইবনু`আদী অন্য একটি দুর্বল সানাদে হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। {৭৫৬}
{৭৫৬} তিরমিজি ৯৩১, আহমাদ ১৩৯৮৮, ১৪৪৩১ . ইবনু হাযম মুহাল্লা [৭/৩৬] গ্রন্থে বলেছেন এর সনদে হাজ্জাজ বিন আরত্বআ রয়েছে, তার দ্বারা দলিল সাব্যস্ত হয় না। ইমাম বায়হাক্বী তাহাঁর সুনান আল সুগরা ২/১৪৩ গ্রন্থে বলেন, মাওকূফ হিসেবে এটি মাহফূয, আর এটি মারফূ হিসেবে দুর্বল সনদে বর্ণিত। ইমাম যাহাবী আল মুহাযযিব ৪/১৭২৯ গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইয়াহইয়া দুর্বল হাদিস বর্ণনাকারী যদিও তাকে সহিহ রিজালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে। ইমাম সনআনী সুবুলুস সালাম ২/৮৭ গ্রন্থে বলেন, ইমাম আহমাদ ও ইমাম তিরমিজির সনদেও হাজ্জাজ বিন আরত্বআ রয়েছে, আর সে দুর্বলদের অন্তর্ভুক্ত। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৭১১ – . জাবির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
মারফু’রূপে, তাতে আছে, “হজ ও`উমরাহ উভয় ফরয কাজ।” {৭৫৭}
{৭৫৭} জঈফ। ইবনু আদী ফিল কামিল ৪/১৪৬৮। ইমাম বায়হাকী তাহাঁর সুনান আল কুবরা [৪/৩৫০] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আবদুল্লাহ বিন লাহিয়া রয়েছেন যার থেকে হাদিস গ্রহণ করা যায় না। ইমাম যইলয়ী তাহাঁর নাসবুর রায়াহ [৩/১৪৭] গ্রন্থে যায়দ বিন সাবিতের অনুরূপ একটি হাদিস বর্ণনা করে বলেন, এর সনদে ইসমাঈল বিন মুসলিম আল মাক্কী রয়েছেন যাকে মুহাদ্দিসগণ দুর্বল বলেছেন। ইবনু কাসির তাহাঁর ইরশাদুল ফাকীহ [১/৩০১] গ্রন্থেও উক্ত রাবীকে অত্যন্ত দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৩. হজ্ব ওয়াজিব হওয়ার শর্তাবলী
৭১২ – আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-কে বলা হলঃ হে আল্লাহ্র রাসূল! সাবীল কি জিনিস? তিনি বলিলেন, পাথেয় ও বাহন। –হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন। এর সানাদের মুরসাল হওয়াই যুক্তিযুক্ত। {৭৫৮}
{৭৫৮} ইবনু হাজার আসকালানী আত্-তালখীসুল হাবীব [৩/৮৩৩] বলেছেন তার সানাদ সহিহ। আলবানী ইরওয়াউল গলীল [৯৮৮] গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। বিন বায তাহাঁর মাজমুআ ফাতাওয়া ১৬/৩৮৬ গ্রন্থে একে হাসান লিগাইরিহী বলেছেন। ইমাম আবূ দাউদ তাহাঁর মারাসীলে ২৩৪ নম্বরে এ হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য
৭১৩ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
তিরমিজিও ইবনু`উমার [রাঃআঃ] হতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন- কিন্তু তাহাঁর সানাদ য’ঈফ। {৭৫৯}
{৭৫৯} তিরমিজি ২৯৯৮, ইবনু মাজাহ ২৮.। শাইখ আলবানী জঈফ তিরমিজি ২৯৯৮ গ্রন্থে বলেন, এটি অত্যন্ত দুর্বল, তবে [আরবি] কথাটি অন্য হাদিস দ্বারা সুসাব্যস্ত। ইমাম যায়লায়ী নাসবুর রায়াহ ৩/৯ গ্রন্থে বলেন, এর সনদে হুসাইন ইবনুল মাখারিক হচ্ছে দুর্বল। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৪. বাচ্চার হজ্বের বিধান
৭১৪ – ইবনু`‘আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে রাওহা {৭৬০} নামক স্থানে একদল যাত্রীর সাক্ষাত হলে তাদেরকে বলিলেন, তোমরা কে? তারা বললো, [আমরা] মুসলিম। তারপর তারা জিজ্ঞেস করিল, আপনি কে? তিনি বলিলেন- [আমি] আল্লাহ্র রাসূল! এ সময় জনৈকা মহিলা তার বাচ্চা তুলে ধরে বললো, এর কি হজ আছে? তিনি বলিলেন, হাঁ, তবে তার নেকী তুমি পাবে। {৭৬১}
{৭৬০} “রাওহা’’ মদীনা থেকে ৬৩ মাইল দূরে অবস্থিত একটি জায়গার নাম। {৭৬১} মুসলিম ১৩৩৬, নাসায়ি হাদিস ২৬৪৫, ২৬৪৬, ২৬৪৭, আবূ দাউদ ১৭৩৬, ১৯০১, আহমাদ ২১৭৭, ২৬০৫, মুওয়াত্তা মালেক ৯৬১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৫. কুরবানী করিতে অপারগ ব্যক্তির হজ্বের বিধান
৭১৫ – ইব্নু`‘আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ফযল ইব্নু`‘আব্বাস [রাঃআঃ] একই বাহনে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]-এর পিছনে আরোহণ করেছিলেন। এরপর খাশ’আম গোত্রের জনৈকা মহিলা উপস্থিত হল। তখন ফযল [রাঃআঃ] সেই মহিলার দিকে তাকাতে থাকে এবং মহিলাটিও তার দিকে তাকাতে থাকে। আর আল্লহর রাসূল [সাঃআঃ] ফযলের চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিতে থাকে। মহিলাটি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর বান্দার উপর ফরযকৃত হজ আমার বয়োঃবৃদ্ধ পিতার উপর ফরয হয়েছে। কিন্তু তিনি বাহনের উপর স্থির থাকতে পারেন না, আমি কি তাহাঁর পক্ষ হতে হজ আদায় করবো? তিনি বললেনঃ হাঁ [আদায় কর]। ঘটনাটি বিদায় হাজ্জের সময়ের। শব্দ বুখারীর। {৭৬২}
{৭৬২} বুখারী ১৫১৩, ১৮৫৪, ১৮৫৫, ৪৩৯৯, মুসলিম ১২৩৪, ১২৩৫, তিরমিজি ৯৩৮, নাসায়ি হাদিস ২৬৩৫, ২৬৪১, আবূ দাউদ ১৮০৯, ইবনু মাজাহ ২৯০৭, আহমাদ ১৮১৫, ১৮২৫, মুওয়াত্তা মালেক ৮০৬, দারেমী ১৮৩১, ১৮৩২। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৬. হজ্জের মান্নত করে আদায় করার পূর্বেই মৃত্যুবরণকারীর বিধান
৭১৬ – ইব্নু`‘আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জুহাইনা গোত্রের একজন মহিলা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিলেন, আমার আম্মা হাজ্জের মান্নত করেছিলেন তবে তিনি হজ আদায় না করেই ইন্তিকাল করিয়াছেন। আমি কি তার পক্ষ হতে হজ করিতে পারি? আল্লাহর রাসূল[সাঃআঃ] বললেনঃ তার পক্ষ হতে তুমি হজ আদায় কর। তুমি এ ব্যাপারে কি মনে কর যদি তোমার আম্মার উপর ঋণ থাকত তা হলে কি তুমি তা আদায় করিতে না? সুতরাং আল্লাহর হক আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহ্র হকই সবচেয়ে বেশী আদায়যোগ্য। {৭৬৩}
{৭৬৩} বুখারী ১৮৫২, ৬৬৯৯, ৭৩১৫, নাসায়ি হাদিস ২৬৩৩, আহমাদ ২১৪১, ২৫১৪, দারেমী ২২৩২। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৭. নাবালেগ ছেলে এবং দাসের কৃত হজ্ব “ফরজ হজ্ব” হইবে না
৭১৭ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন – কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে হাজ্ব করিল অতঃপর বয়োঃপ্রাপ্ত হলে [সামর্থবান থাকলে] অন্য আরো একটি হাজ্ব তাকে করিতে হইবে। কোন দাস তার দাসত্বকালে হাজ্ব করলে তাকে স্বাধীন হবার পর আবার একটি হাজ্ব করিতে হইবে। ইবনু আবূ শাইবাহ, বায়হাকী, এর সবগুলো বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য, তবে তার মারফূ হওয়ার বিষয়ে মতভেদ রয়েছে এবং মাওকুফ হওয়াটাই নিরাপদ। {৭৬৪}
{৭৬৪} মারফূ হিসেবে হাদিসটি সহিহ। আত-তালখীসুল হাবীর ২/২২০, বায়হাকী ৪/৩২৫। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ মারফু
পরিচ্ছেদ ০৮. মাহরাম পুরুষ ব্যতিত মহিলার সফরের বিধান
৭১৮ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে তাহাঁর খুৎবাহতে বলিতে শুনেছিঃ কোন পুরুষ কোন স্ত্রীলোকের একাকী সঙ্গী হইবে না, তবে তার সঙ্গে যদি তার মাহরাম [স্বামী ও যাদের সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ এমন লোক] থাকে। আর কোন মহিলা যেন তার মাহরাম ব্যতীত একাকী সফরে না যায়। এটি শুনে একজন লোক দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সহধর্মিনী হাজ্বের সফরে বেরিয়ে গেছে আর আমি অমুক অমুক যুদ্ধের জন্য লিপিবদ্ধ [নির্বাচিত] হয়েছি। তিন বলিলেন- যাও, তুমি তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হাজ্ব পালন কর। -শব্দ মুসলিমের। {৭৬৫}
{৭৬৫} বুখারী ১৮৬২, ২০০৬, ২০৬১, ৫২৪৩, মুসলিম ১৩৪১, ইবনু মাজাহ ২৯০০, আহমাদ ১৯২৫, ২২২১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৯. কারও পক্ষ থেকে হজ্ব করার শর্ত
৭১৯ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে বলিতে শুনলেনঃ “শুবরুমার পক্ষ থেকে আমি তোমার কাছে হাযির হয়েছি।“ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করেনঃ শুবরুমা কে? সে বললো, আমার ভাই, অথবা বলো, আমার এক নিকটাত্মীয়। তিনি বলেনঃ তুমি কি কখনও নিজের পক্ষ হতে হাজ্ব করেছো? সে বললো, না। তিনি বলেনঃ তাহলে তোমার নিজের পক্ষ থেকে আগে হাজ্ব করো, অতঃপর শুবরুমার পক্ষ থেকে হাজ্ব করো। আবূ দাউদ, ইবনু মাজাহ, ইবনু হিব্বান একে সহীহ্ বলেছেন। আর আহমাদের নিকট হাদিসটির মাককূফ হওয়াটাই অধিক সাব্যস্ত। {৭৬৬}
{৭৬৬} আবূ দাউদ ১৮১১, ইবনু মাজাহ, ইবনু হিব্বান ৯৬২। উক্ত হাদিসের দুর্বলতা নিয়ে অনেক মতানৈক্য রয়েছে। কিন্তু বড় বড় আয়েম্মায়ে কিরামগণ যেমন আহমাদ, তাহাবী, দারাকুতনী, ইবনু দাকীকুল ঈদ এবং অন্যান্যরা উক্ত হাদিসটিকে দুর্বল হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন। আর এটাই নির্ভরযোগ্য কথা। ইমাম শওকানী আল ফাতহুর রব্বানী ৮/৪১৪ গ্রন্থে বলেনঃ এ হাদিসটিকে ত্রুটিযুক্ত করা হয়েছে মাওকুফ বলে, তবে এটি ত্রুটি নয়, কেননা আবদাহ বিন সুলাইমান মারফু সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন, আর তিনি বিশস্ত বর্ণনাকারী। যদিও হাদিসটিকে মাওকুফের দোষে দুষ্ট বলা হয়েছে তথাপি আব্দাহ বিন সুলাইমান কর্তৃক হাদিসটি মারফু হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। অধিকন্তু তিনি সিকাহ রাবীদের অন্তর্ভুক্ত। শাইখ আলবানী সহিহ আবূ দাউদ ১৮১১, সহিহ ইবনু মাজাহ ২৩৬৪, ইরওয়াউল গালীল ৯৯৪ গ্রন্থত্রয়ে একে সহিহ বলেছেন। ইবনু উসাইমীন আশ শারহুল মুমতি ৭/৩১ গ্রন্থে বলেনঃ [আরবী] বিদ্বানগণ এ হাদিসের মারফু – মাওকুফ এবং সহিহ –জঈফ হওয়ার ব্যাপারে মতানৈক্য করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ১০. জীবনে একবার হজ্ব করা আবশ্যক
৭২০- ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে খেতাব করিলেন [খুতবাহ দিলেন]ঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর হাজ্ব ফরয করিয়াছেন। [একথা শুনে] আকরা বিন হাবিস দাঁড়িয়ে গেল আর বলিল, প্রতিবছরই কি [ফরয] হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বলিলেন- আমি তা বললেই তোমাদের উপর ওয়াজিব [ফরয] হয়ে যেত। হাজ্ব একবারই ফরয। আর যা বাড়তি করিবে সেটা নফল হিসেবে পরিগণিত। {৭৬৭}
{৭৬৭} আবূ দাউদ ১৭২১, নাসায়ি হাদিস ২৬২০, ইবনু মাজাহ ২৮৮৬, আহমাদ ২৩০৪, ২৬২৭, ২৫০০, দারেমী ১৭৮৮। ইমাম আহমাদের বর্ণনায় আরো রয়েছে, যদি তা ফরয করা হয়, তোমরা শুনবেনা এবং নাসায়ি হাদিসর বর্ণনায় রয়েছে, অতঃপর তোমরা আমার কথা শুনবেনা এবং আমার আনুগত্যও করিবেনা। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৭২১ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
মুসলিমে আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] কর্তৃক বর্ণিত এর মূল হাদিস রয়েছে। {৭৬৮}
{৭৬৮} মুসলিম ১৩৭৭, বুখারি ৭৩৭৭, তিরমিজি ২৬১৯, ইবনু মাজাহ ১, ২, আহমাদ ৭৩২০, ৭৪৪৯, ৮৪৫০। [আর-বী. ] আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে খুতবা দেওয়ার সময় বলেন, হে লোক সকল, আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর হাজ্ব ফরয করিয়াছেন, তাই তোমরা হাজ্ব কর। তখন জনৈক লোক বলিল, হে আল্লহর রাসূল [সাঃআঃ] তা কি প্রত্যেক বছর করিতে হইবে? তিনি চুপ থাকলেন এমনকি তিনি একথাটি তিন বার বলিলেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি আমি হ্যাঁ বলতাম, তাহলে তা ফরয হয়ে যেত। আর তোমরা তা করিতে সক্ষম হতে না। অতঃপর তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে যে বিষয় বলা থেকে বিরত রয়েছি, তা তোমরা আমাকে জিজ্ঞাসা করো না। কেননা তোমাদের ইতিপূর্বের লোকেরা তাদের অধিক প্রশ্ন করা এবং তাদের নাবীদের ব্যাপারে মতানৈক্য করার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। যখন আমি তোমাদের কোন বিষয়ে আদেশ দেই তা তোমরা যথাসাধ্যভাবে কর। আর যদি কোন ব্যাপারে নিষেধ করি তাহলে তা থেকে বিরত থাক। হজ হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply