সেজদা ও তার মর্যাদা

সেজদা ও তার মর্যাদা

সেজদা ও তার মর্যাদা >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ১৩

  • অধ্যায়ঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ১৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ১৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ

৮৬৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা রুকূ ও সেজদাহ ঠিকভাবে আদায় করিবে। আল্লাহ্‌র কসম! আমি নিশ্চই তোমাদেরকে আমার পিছন দিক হইতেও দেখি। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭৪২, মুসলিম ৪২৫, আহমাদ ১২১৪৮। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৬৯. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] – এর রুকূ, সেজদাহ, দু সেজদার মধ্যে বসা, রুকুর পর সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সময়ের পরিমাণ [ক্বিরাআতের জন্য] দাঁড়ানোর সময় ছাড়া প্রায় সমান সমান ছিল। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭৯২, মুসলিম ৪৭১, আবু দাউদ ৮৫২, নাসায়ী ১০৬৫, তিরমিজি ২৭৯, আহমাদ ১৮৪৬৯, দারিমি ১৩৭২, সহীহ ইবনি হিব্বান ১৮৮৪। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন

 سَمِعَ اللّهُ لِمَنْ حَمِدَه

“সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ” বলিতেন, সোজা হয়ে এত দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতেন, আমরা মনে করতাম নিশ্চয়ই তিনি [সেজদার কথা] ভুলে গেছেন। এরপর তিনি সেজদাহ করিতেন ও দুসেজদার মধ্যে এত লম্বা সময় বসে থাকতেন, আমরা মনে করতাম, তিনি [নিশ্চয় দ্বিতীয় সেজদার কথা] ভুলে গেছেন। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৭৩, আবু দাউদ ৮৫৩, ইরওয়া ৩০৭। হাদীসে قَدْ أَوْهَمَ -এর অর্থ হলো রসূল সাঃআঃ রুকূ থেকে উঠে এত দীর্ঘ সময় দাঁড়াতেন যে, মনে হতো তিনি সে রাক্আতটি বাতিল করে পুনরায় সলাত শুরু করিবেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] কুরআনের উপর আমাল করে নিজের রুকূ ও সেজদায় এই দুআ বেশী বেশী পাঠ করিতেনঃ

سُبْحَانَكَ اللّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللّهُمَّ اغْفِرْ لِي

“সুবহা-নাকা আল্ল-হুম্মা রব্বানা-ওয়াবিহামদিকা আল্ল-হুম্মাগ ফিরলী” – [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি পুত পবিত্র। তুমি আমাদের রব। আমি তোমার গুণগান করছি। হে আল্লাহ! তুমি আমার গুনাহ মাফ করে দাও ]। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৮১৭, মুসলিম ৪৮৪, আবু দাউদ ৮৭৭, নাসায়ী ১১২২, সহীহ ইবনি হিব্বান ১৯২৮। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭২. উক্ত রাবী {আয়িশাহ্ [রাদি.]] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] রুকূ ও সেজদায় বলিতেন,

سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوْحِ

“সুবহুন কুদ্দুসুন রব্বুল মালা-য়িকাতি ওয়াররূহ” মালাক ও রূহ জিবরীলের রব অত্যন্ত পবিত্র, খুবই পবিত্র । {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৮৭, আবু দাউদ ৮৭২, আহমাদ ২৪০৬৩, সহীহ ইবনি হিব্বান ১৮৯৯। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সাবধান! আমাকে রুকু-সিজদায় কুরআন তিলাওয়াত করিতে নিষেধ করা হয়েছে। তাই তোমরা রুকুতে তোমাদের রবের মহিমা বর্ণনা কর। আর সিজদায় অতি মনোযোগের সাথে দুয়া করিবে। আশা করা যায়, তোমাদের দুআ কবুল করা হবে। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৭৯, নাসায়ী ১০৪৫, আহমাদ ১৯০০, দারিমি ১৩৬৫, সহীহ আল জামি ২৭৪৬। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঈমাম যখন

سَمِعَ اللّهُ لِمَنْ حَمِدَهٗ

সামিআলাহু লিমান হামিদাহ” বলবে তখন তোমরা

اَللّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

আল্লাহুম্মা রব্বানা–লাকাল হামদ” বলবে। কেননা যার কথা মালায়িকার কথার সাথে মিলে যাবে, তার পূর্বের [ছোট] গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭৯৬, মুসলিম ৪০৯, আবু দাউদ ৮৪৮, তিরমিজি ২৬৭, আহমাদ ৯৯২৩, সহীহ আল জামি ৭০৫, সহীহ আত তারগীব ৫২০। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭৫. আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকু হইতে তার পিঠ সোজা করে উঠে বলিতেন,

سَمِعَ اللّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ اللّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّموتِ وَمِلْءَ الْأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ

“সামিআলাহু লিমান হামিদাহ, আল্লাহুম্মা রব্বানা–লাকাল হামদ মিলআস সামা-ওয়া-তি ওয়া মিলআল আরযি ওয়া মিলআ মা-শিতা মিন শাইয়িম বাদ” – [অর্থাৎ আল্লাহ শুনেন যে তার প্রশংসা করে। হে আমার রব! আকাশ ও পৃথিবীপূর্ণ তোমার প্রশংসা, এরপর তুমি যা সৃষ্টি করিতে চাও তাও পরিপূর্ণ]। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৭৬, আবু দাউদ ৮৪৬, ইবনি মাজাহ ৮৭৮, আহমাদ ১৯১০৪, ইরওয়া ৩৪৬। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭৬. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকু হইতে মাথা উঠিয়ে বলিতেনঃ

 اَللّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّموتِ وَالْأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ أَهْلُ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ أَحَقُّ مَا قَالَ الْعَبْدُ وَكُـلُّنَا لَكَ عَبْدٌ اللّهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ

“আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদু মিলআস সামাওয়াতি ওয়াল আরযি ওয়া মিলআ মা-শিতা মিন শাইয়িম বাদু আহলুস সানা-য়ি ওয়াল মাজদি আহাক্কু মা ক্বা-লাল আবদু ওয়া কুল্লুনা লাকা আব্দুন, আল্লাহুম্মা লা- মা-নিআ লিমা- আত্বাইতা ওয়ালা- মুতিয়া লিমা- মানাতা। ওয়ালা ইয়ানফাউ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দ” – [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! হে আমাদের রব! তোমারই সব প্রশংসা। আকাশ পরিপূর্ণ ও পৃথিবী পরিপূর্ণ, এরপর তুমি যা চাও তাও পরিপূর্ণ। হে প্রশংসা ও মর্যাদার মালিক! মানুষ তোমার প্রশংসায় যা বলে তুমি তার চেয়েও অধিক প্রশংসা ও মর্যাদার অধিকারী। আমরা সকলেই তোমার গোলাম। হে আল্লাহ! তুমি যা দিবে তাতে বাধা দেবার কেউ নেই। আর তুমি যাতে বাধা দিবে তা দিতেও কেউ সমর্থ নয়। কোন সম্পদশালীর সম্পদই তোমার শাস্তি হইতে তাকে রক্ষা করিতে পারবে না। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৭৭, আবু দাউদ ৮৪৭, নাসায়ী ১০৬৮, আহমাদ ১১৮২৮, সহীহ ইবনি হিব্বান ১৯০৫, ইরওয়া ৩৪৬। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭৭. রিফাআহ্ ইবনি রাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর পিছনে সলাত আদায় করছিলাম । তিনি যখন রুকূ হইতে মাথা তুলে,

سَمِعَ اللّهُ لِمَنْ حَمِدَهٗ

“সামিআল্ল-হু লিমান হামিদাহ” বললেন [যে ব্যক্তি আল্লাহর হাম্‌দ ও সানা পাঠ করিল আল্লাহ তা শুনলেন], তখন এক ব্যক্তি বলিল

رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ

“রব্বানা- লাকাল হাম্‌দু হামদান কাসীরান ত্বইইয়্যিবাম মুবারকান্‌ ফীহ” – [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তোমার জন্য প্রশংসা, অনেক প্রশংশা, যে প্রশংসা শির্‌ক ও রিয়া হইতে পবিত্র ও মুবারক] । সলাত শেষে নবী [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেন, এখন এ বাক্যগুলো কে পড়ল? সেই ব্যক্তি উত্তরে বলিল, আমি, হে আল্লাহর রসূল! তখন নবী [সাঃআঃ] বললেন, আমি ত্রিশজনেরও অধিক মালাক দেখেছি এ কালিমার সাওয়াব কার আগে কে লিখবে এ নিয়ে তাড়াহুড়া করছেন । {১}

{১} সহীহ : বোখারী ১০৬২, নাসায়ী ১০৬২, আবু দাউদ ৭৭০, তিরমিজি ৪০৪, সহীহ ইবনি হিব্বান ১৯১০। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ১৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৮৭৮. আবু মাস্ঊদ আল আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যে পর্যন্ত রুকূ ও সেজদাতে তার পিঠ স্থিরভাবে সোজা না করে তার সলাত হবে না।

{৮৯৮] ঈমাম তিরমিজি বলেছেন, এ হাদিসটি হাসান ও সহীহ l {১};{১} সহীহ : আবু দাউদ ৮৫৫, তিরমিজি ২৬৫, নাসায়ী ১০২৭, ইবনি মাজাহ ৮৭০, দারিমী ১৩৬৬, সহীহ আত তারগীব ৫২২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৭৯. উক্ববাহ্ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন

فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ

“ফাসাব্বিহ বিইস্‌মি রব্বিকাল আযীম” তোমর মহান রবের নামের পবিত্রতা বর্ণনা কর এ আয়াত নাযিল হল রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, এই আয়াতটিকে তোমরা তোমাদের রুকূতে তাসবীহরূপে পড়। এভাবে যখন

“সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আলা” [তোমরা উচ্চ মর্যাদাশীল রবের নামের পবিত্রতা ঘোষণা কর] আয়াত নাযিল হল তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা এটিকে তোমাদের সেজদার তাসবীহইতে পরিণত কর। {১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৮৬৯, ইবনি মাজাহ ৮৮৭, তামামুল মিন্নাহ ১৯০, হাকিম ২/৪৭৭, দারিম ১৩৪৪। এর সানাদটি হাসান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার রাবীগণ সকলেই বিশস্ত উক্ববাহ্ থেকে বর্ণনাকারী ইয়ায ইবনি আমির ব্যতীত। আযালী তাকে ত্রুটিমুক্ত বলেছেন এবং ইবনি হিব্বান তাকে তাহাঁর [اَلثِّقَاتٌ] গ্রন্থে উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি হাজার [রাহিমাহুল্লাহ] বলেনঃ ইবনি খুযায়মাহ্ তার সহীহ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। আর ঈমাম যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] তাকে দুর্বল বলেছেন। আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেনঃ ঈমাম যাহাবীর এ বক্তব্য পরস্পর বিরোধী। কেননা ঈমাম হাকিম তাহাঁর মুস্তাদরাকে হাদিসটি বর্ণনা করে তাকে সহীহ বললে ঈমাম যাহাবী তা সমর্থন করিয়াছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

৮৮০. আওন ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন রুকূ করিবে সে যেন রুকূতে তিনবার

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ

“সুবহা-না রব্বিয়াল আযীম” পড়ে । তাহলে তার রুকূ পূর্ণ হবে । আর এটা হল সর্বনিম্ন সংখ্যা । এভাবে যখন সেজদাহ্‌ করিবে, সেজদায়ও যেন তিনবার

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلى

“সুবহা-না রব্বিয়াল আলা-” পড়ে । তাহলে তার সেজদাহ্‌ পূর্ণ হবে । আর তিনবার হল কমপক্ষে পড়া । {১} ঈমাম তিরমিজি বলেন, এর সানাদ মুত্তাসিল নয় । কেননা আওন [রাহিমাহুল্লাহ]-এর ইবনি মাসউদ [রাদি.]-এর সাথে সাক্ষাৎ হয়নি ।

{১} জইফ : আবু দাউদ ৮৮৬, তিরমিজি ২৬১, ইবনি মাজাহ ৮৯০, জইফ আল জামি ৫২৫। দুটি কারণেঃ প্রথমত আওন এবং ইবনি মাস্ঊদ-এর মাঝে বিচ্ছিন্নতা, দ্বিতীয়ত ইসহক বিন ইয়াযীদ একজন অপরিচিত রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

৮৮১. হুযায়ফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে সলাত আদায় করিলেন । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকূতে

 سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ

“সুবহা-না রব্বিয়াল আযীম” ও সেজদায়

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلى

“সুবহা-না রব্বিয়াল আলা-” পড়তেন । আর যখনই তিনি ক্বিরাআতের সময় রহমতের আয়াতে পৌঁছতেন, ওখানে থেমে যেতেন, রাহমাত তলবের দুআ পাঠ করিতেন । আবার যখন আযাবের আয়াত পৌঁছতেন, সেখানে থেমে গিয়ে আযাব থেকে বাঁচার জন্য দুআ করিতেন। {১} এ হাদিসটিকে “সুবহা-না রব্বিয়াল আলা-” পর্যন্ত নকল করিয়াছেন ।

ঈমাম তিরমিজি বলেছেন, এ হাদিসটি হাসান ও সহীহ।{১} সহীহ : আবু দাউদ ৮৭১, তিরমিজি ২৬২, নাসায়ী ১/১৭০, ইবনি মাজাহ ৮৮৮, দারিমী ১৩৪৫। তবে ইবনি মাজাহ্র সানাদটি দুর্বল।এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ১৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৮৮২. আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে সলাত আদায় করিতে দাঁড়ালাম । তিনি রুকূতে গিয়ে সূরাহ বাক্বারাহ্‌ তিলাওয়াত করিতে যত সময় লাগত তত সময় রুকূতে থাকলেন । রুকূতে বলিতে থাকলেন,

سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ

“সুবহা-না যিল জাবারূতি ওয়াল মালাকূতি ওয়াল কিব্‌রিয়া-য়ি ওয়াল আযামাতি” [অর্থাৎ – ক্ষমতা, রাজ্য, বড়ত্ব, মহত্ব ও বিরাটত্বের মালিকের পবিত্রতা ঘোষনা করছি] । {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৮৭০, নাসায়ী ১০৪৯। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৮৩. ইবনি জুবায়র [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছিঃ আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর ইন্তিকালের পর এই যুবক অর্থাৎ উমার ইবনি আবদুল আযীয ছাড়া আর কারো পেছনে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর সলাতের মত সলাত পড়িনি । বর্ণনাকারী বলেন, আনাস বলেছেন, আমরা তার রুকূর সময় অনুমান করেছি দশ তাসবীহ্‌র পরিমাণ এবং সেজদার সময়ও অনুমান করেছি দশ তাসবীহ পরিমাণ ।{১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৮৮৮, নাসায়ী ১১৩৫। কারণ এর সানাদে ওয়াহ্ব ইবনি মানূস রয়েছে যাকে সাঈদ ইবনুল ক্বত্ত্বান মাজহূলুল হাল বলেছেন। অর্থাৎ- তার থেকে দুজন রাবী হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন কিন্তু কেউ তার ব্যাপারে মন্তব্য করেনি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

৮৮৪. শাক্বীক্ব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হুযায়ফাহ্‌ [রাদি.] এক ব্যক্তিকে দেখলেন , সে তার রুকূ সেজদাহ্‌ পূর্ণ করছে না । সে সলাত শেষ করলে তিনি তাকে ডেকে বললেন, তুমি সলাত আদায় করনি । শাক্বীক্ব বলেন, আমার মনে হয় হুযায়ফাহ্‌ এ কথাও বলেছেন, যদি তুমি এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ কর, তাহলে নবী [সাঃআঃ] – কে যে প্রকৃতির উপর আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করিয়াছেন, তুমি তার বাইরে মৃত্যুবরণ করিবে । {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭৯১। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৮৫. আবু ক্বাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ চুরি হিসেবে সবচেয়ে বড় চোর হল ঐ ব্যক্তি যে সলাতে [আরকানের] চুরি করিল। সহাবীগণ আরয করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! সলাতের চুরি কিভাবে হয়? নবী [সাঃআঃ] বললেন, সলাতের চুরি হল রুকূ-সেজদাহ্‌ পূর্ণ না করা। {১}

{১} সহীহ : আহমাদ ২২১৩৬, সহীহ আত তারগীব ৫২৪। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

৮৮৬. নুমান ইবনি মুররাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সহাবায়ে কিরামকে উদ্দেশ্য করে বললেন, মদ্যপায়ী, ব্যভিচারী ও চোরের ব্যাপারে তোমাদের কি ধারণা? নবী [সাঃআঃ] – এর এ প্রশ্নটি এসব অপরাধের শাস্তি বিধানের আয়াত নাযিল হবার আগের। সহাবীগণ আরয করিলেন, এ ব্যাপারে আল্লাহ ও আল্লাহর রসূলই ভাল জানেন। নবী [সাঃআঃ] উত্তর দিলেন, গুনাহ কাবীরাহ, এর সাজাও আছে। আর নিকৃষ্টতম চুরি হল যা মানুষ তার সলাতে করে থাকে। সহাবীগণ আরয করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! মানুষ তার সলাতে কিভাবে চুরি করে থাকে? রসূল [সাঃআঃ] বললেন, মানুষ রুকূ- সেজদাহ্‌ পূর্ণভাবে আদায় না করে [এ চুরি করে থাকে]। {৯০৬]

আহমাদ ও দারিমীতে হাদিসটি পাওয়া যায়নি ।{১};{১} সহীহ : মুয়াত্ত্বা মালিক ৪০৩, দারিমী ১৩৬৭, সহীহ আত তারগীব ৫৩৪।এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply