সূর্যগ্রহণের সালাত

সূর্যগ্রহণের সালাত

সূর্যগ্রহণের সালাত >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৫০

  • অধ্যায়ঃ ৫০. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৫০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৫০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ৫০. প্রথম অনুচ্ছেদ

১৪৮০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর সময়ে একবার সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। তখন তিনি একজন আহ্বানকারীকে, সলাত প্রস্তুত মর্মে ঘোষণা দেয়ার জন্য পাঠালেন। [লোকজন একত্র হলে] তিনি সামনে অগ্রসর হয়ে দু দু রাক্আত সলাত আদায় করালেন। এতে চারটি রুকূ ও চারটি সাজদাহ্ করিলেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, এ দিন যত দীর্ঘ রুকূ সাজদাহ্ আমি করেছি এত দীর্ঘ রুকূ সাজদাহ্ আর কোন দিন করিনি।

[বুখারি, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ১০৬৬, মুসলিম ৯১০, নাসায়ী ১৪৭৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১৩৯। সূর্যগ্রহণের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৮১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনই বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সলাতে খুসূফে তাহাঁর ক্বিরাআত স্বরবে পরলেন।

[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ১০৬৫, মুসলিম ৯০১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১৪৬। সূর্যগ্রহণের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৮২. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর কালে একবার সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জনগণকে সাথে নিয়ে সলাত আদায় করিলেন। সলাতে তিনি সূরাহ আল বাক্বারাহ্ পড়ার মতো দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দাঁড়ালেন। তারপর দীর্ঘ রুকু করিলেন। তারপর মাথা উঠিয়ে দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকলেন। তবে এ দাঁড়ানো ছিল প্রথম দাঁড়ানো অপেক্ষা স্বল্প সময়ের। এরপর আবার লম্বা রুকু করিলেন। তবে তা প্রথম রুকূ অপেক্ষা ছোট ছিল। তারপর রুকূ হইতে মাথা উঠালেন ও দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেন। তবে তা আগের দাঁড়ানোর চেয়ে কম। তারপর আবার দীর্ঘ রুকূ করিলেন। তবে এ রুকূও আগের রুকূ অপেক্ষা ছোট। তারপর মাথা উঠালেন ও সাজদাহ্ করিলেন। এরপর সলাত শেষ করিলেন। আর এ সময় সূর্য পূর্ন্ জ্যোতিময় হয়ে উঠে গেল। এরপর রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেলেন, সূর্য ও চাঁদ আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শন সমূহের মধ্যে দুটো নিদর্শন। তারা কারও জন্ম-মৃত্যুতে গ্রহনযুক্ত হয় না। তোমরা এরূপ গ্রহণ দেখলে আল্লাহ তাআলার যিক্‌র করিবে। সাহাবীগণ নিবেদন করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনাকে আমরা দেখলাম। আপনি যেন এ স্থানে কিছু গ্রহণ করিয়াছেন। তারপর দেখলাম পেছনের দিকে সরে গেলেন। রাসূলুল্লাহ[সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেলেন, তখন আমি জান্নাত দেখিতে পেলাম। জান্নাত হইতে এক গুচ্ছ আঙ্গুর নিতে আগ্রহী হলাম। যদি আমি তা গ্রহণ করতাম তাহলে তোমরা দুনিয়ায় বাকি থাকা পর্যন্ত সে আঙ্গুর খেতে পারতে। আর আমি তখন জাহান্নাম দেখিতে পেলাম। জাহান্নামের মতো বীভৎস কুৎসিত দৃশ্য আর কখনো আমি দেখিনি। আমি আরো দেখলাম যে, জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসীই নারী। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! কি কারণে তা হলো। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, তাদের কুফরির কারণে। আবার তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, তারা কি আল্লাহর সাথে কুফরি করে থাকে? রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, না; বরং স্বামীর সাথে কুফ্‌রী করে থাকে। তারা [স্বামীর] সদ্ব্যবহার ভুলে যায়। সারা জীবন যদি তুমি তাদের কারও সাথে ইহসান করো। এরপর [কোন সময়] যদি সে তোমার পক্ষ হইতে সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখে বলে উঠে। আমি জীবনেও তোমার কাছে ভাল ব্যবহার পেলাম না।

[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৫১৯৭, মুসলিম ৯০৭, নাসায়ী ১৪৯৩, মুয়াত্ত্বা মালিক ৬৪০, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক্ব ৪৯২৫, আহমাদ ২৭১১, দারিমী ১৫২৮, আবু দাউদ ১১৮৯, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৩৭৭, ইবনি হিব্বান ২৮৩২, ২৮৫৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৩০২, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১৪০, মুসনাদ আল বায্যার ৫২৮৬। সূর্যগ্রহণের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৮৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] ও আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

বরাতে বর্ণিত হওয়া এ ধরনের একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। বস্তুতঃ আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সাজদায় গেলেন। তিনি দীর্ঘ সাজদাহ্ করিলেন। তারপর সলাত শেষ করিলেন। তখন সূর্য বেশ আলোকিত হয়ে গেছে। তারপর তিনি জনগণের উদ্দেশ্য বক্তব্য প্রদান করিলেন। তিনি সর্বপ্রথম আল্লাহর গুণকীর্তন করিলেন। তারপর বললেন, সূর্য ও চাঁদ আল্লাহর নিদর্শনাবলীর দুটো নিদর্শন। কারও মৃত্যুতে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। আর কারও জন্মের কারণেও হয় না। তোমরা এ অবস্থা দেখিতে পেলে আল্লাহর নিকট দুআ করো এবং তাহাঁর বড়ত্ব ঘোষণা কর। সলাত আদায় কর। দান-সদাক্বাহ্ ও খয়রাত করো। এরপর তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর উম্মতেরা! আল্লাহর শপথ! আল্লাহ তাআলার চেয়ে বেশী ঘৃণাকারী আর কেউ নেই। তাহাঁর যে বান্দা জিনা তথা ব্যভিচার করিবে অথবা তাহাঁর যে বান্দী জিনা তথা ব্যভিচার করিবে তিনি তাদের ঘৃণা করেন। হে মুহাম্মাদের উম্মতগণ! আল্লাহর কসম! আমি যা জানি যদি তোমরা তা জানতে, নিশ্চয় তোমরা কম হাসতে ও বেশি কাঁদতে।

[বোখারী, মুসলিম] {১},{১} সহীহ : বোখারী ১০৪৪, মুসলিম ৯০৩, নাসায়ী ১৪৭৪, মুয়াত্ত্বা মালিক ৬৩৯, ইবনি হিব্বান ২৮৪৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৩৫৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১৪২। সূর্যগ্রহণের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৮৪. আবু মূসা আল আশ্আরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ হলো। এতে নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে গেলেন। তাহাঁর উপর ক্বিয়ামাত সংঘটিত হয়ে যাবার মতো ভয়-ভীতি আরোপিত হলো। অতঃপর তিনি মাসজিদে গমন করিলেন। দীর্ঘ কিয়াম রুকূ ও সাজদাহ্ দিয়ে সলাত আদায় করিলেন। সাধারনতঃ [এত দীর্ঘ সলাত আদায় করিতে] আমি কখনো তাঁকে দেখিনি। অতঃপর তিনি বললেন, এসব নিদর্শনাবলী যা আল্লাহ তাআলা পাঠিয়ে থাকেন তা না কারো মৃত্যুতে সংঘটিত হয়ে থাকে, আর না কারো জন্মে হয়ে থাকে। বরং এসব দিয়ে আল্লাহ তাহাঁর বান্দাদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে থাকেন। অতএব তোমরা যখন এ নিদর্শনাবলীর কোন একটি অবলোকন করিবে, আল্লাহকে ভয় করিবে। তাহাঁর যিক্‌র করিবে। তাহাঁর নিকট দুআ ও ক্ষমা প্রার্থনা করিবে।

[বোখারী, মুসলিম] {১},{১} সহীহ : বোখারী ১০৫৯, মুসলিম ৯১২, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১৩৬, নাসায়ী ১৫০৩, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৩৭১, শারহু মাআনির আসার ১৯৫০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৩৬৩। সূর্যগ্রহণের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৮৫. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর জীবদ্দশায় যেদিন তাহাঁর ছেলে ইব্‌রাহীমের ইন্তিকাল হলো। এদিন সূর্যগ্রহণ হলো। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জনগণকে নিয়ে ছয় রুকূ ও চার সাজদায় সলাত আদায় করালেন।

[মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ৯০৪, ইরওয়া ৬৫৬, ৬৫৯। সূর্যগ্রহণের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৮৬. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সূর্যগ্রহণের সময় [দু রাকআত] সলাত আট রুকূ ও চার সাজদায় আদায় করিয়াছেন।

[মুসলিম] {১}, {১} জইফ : মুসলিম ৯০৮, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৮৩০০, দারিমী ১৫৬৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৩২২। শায়খ আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, হাদিসটি জইফ, যদিও ঈমাম মুসলিম [রাহিমাহুল্লাহ] হাদিসটি সহীহ মুসলিমে স্থান দিয়েছেন। কারণ এর সানাদে হাবীব বিন আবী সাবিত রয়েছেন, যিনি বিশ্বস্ত হলেও একজন মুদ্দালিস রাবী। সূর্যগ্রহণের সালাত – এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৮৭. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আলী [রাদি.] হইতেও ঠিক এরূপ একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

[মুসলিম] {১}, {১} ঈমাম মুসলিম [রাহিমাহুল্লাহ] যদিও আলী [রাদি.] হইতে অনুরূপ বর্ণনার কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি শব্দাবলী নিয়ে আসেননি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ নির্ণীত নয়

১৪৮৮. আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জীবদ্দশায় মাদীনায় আমি আমার তীরগুলো [লক্ষস্থলে] নিক্ষেপের মাধ্যমে প্রশিক্ষন গ্রহণ করছিলাম। এ সময় সূর্যগ্রহণ শুরু হলো। তীরগুলো আমি ছুঁড়ে ফেলে দিলাম। মনে মনে বললাম, আল্লাহর কসম! আমি আজ দেখব সূর্যগ্রহণের সময় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আজ কি করেন। এরপর আমি তাহাঁর নিকট এলাম। তখন তিনি [সাঃআঃ] সলাতে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি তাহাঁর হাত দুটি উঠিয়ে সূর্যগ্রহণ ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত আল্লাহর তাসবীহ, তাহলীল, তাকবীর ও হামদ করিয়াছেন। আল্লাহর দরবারে দুআয় মশগুল রয়েছেন। সূর্যগ্রহণ ছেড়ে গেলে তিনি দুটি সূরাহ পড়লেন ও দু রাকআত সলাত আদায় করিলেন-

[মুসলিম; শারহে সুন্নাতেও হাদিসটি এভাবে আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ হইতে বর্ণিত হয়েছে। আর মাসাবীহ হইতেও এ বর্ণনাটি জাবির ইবনি সামুরাহ হইতে নকল করে হয়েছে।] {১},{১} সহীহ : মুসলিম ৯১৩, ইবনি হিব্বান ২৮৪৮, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১৪৪। সূর্যগ্রহণের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৪৮৯. আসমা বিনতু আবু বাকর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] সূর্যগ্রহণ শুরু হলে দাস মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

[বোখারী] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ১০৫৪, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৪০১, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১২৩২, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১৪৭। সূর্যগ্রহণের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ৫০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

১৪৯০. সামুরাহ্ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সূর্যগ্রহণের সময় আমাদেরকে নিয়ে সলাত আদায় করিয়াছেন। আমরা তাহাঁর আওয়াজ শুনতে পাইনি।

[তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসায়ী ও ইবনি মাজাহ] {১}, {১} জইফ : আবু দাউদ ১১৮৪, আত তিরমিজি ৫৬২, নাসায়ী ১৪৯৫, আহমাদ ২০১৭৮, শারহু মাআনির আসার ১৯৫৬, ইবনি হিব্বান ২৮৫১, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১২৪২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৩৪২। কারণ এর সানাদে সালাবাহ্ বিন ইবাদ আল আবদী একজন মাজহূল রাবী যেমনটি ঈমাম যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৯১. ইকরামাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসকে বলা হলো, নবী [সাঃআঃ] এর অমুক স্ত্রী ইন্তিকাল করিয়াছেন। খবর শুনার সাথে সাথে তিনি সাজদায় লুটে পড়লেন। তাঁকে তখন জিজ্ঞাস করা হলো, আপনি কি এ সময় সাজদাহ করছেন? [অর্থাৎ এটা কি সাজদাহ করার সময়?] তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ তোমরা যখন কোন নিদর্শন দেখবে তখন সাজদাহ করিবে। আর কোন নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রীর দুনিয়া ত্যাগ করে চলে যাবার চেয়ে বড় নিদর্শন আর কি হইতে পারে?

[আবু দাউদ, তিরমিজি] {১}, {১} হাসান : আবু দাউদ ১১৯৭, আত তিরমিজি ৩৮৯১, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৩৭৯, সহীহ আল জামি ৫৬৫। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

অধ্যায়ঃ ৫০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১৪৯২. উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময় একবার সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। তিনি তাদের নিয়ে সলাত আদায় করিলেন। তিওয়ালে মুফাসসালের সূরাহ দ্বারা কিরাআত পড়লেন। এরপর [প্রথম রাকআতে] পাঁচটি রুকূ করিলেন। দুটি সাজদাহ করিলেন। তারপর দ্বিতীয় রাকআতের জন্য জন্য দাঁড়ালেন। তিওয়ালে মুফাসসালের একটি সূরাহ দিয়ে ক্বিরাআত পড়লেন। এরপর একটি রুকূ করিলেন। দুটি সাজদাহ করিলেন। অতঃপর ক্বিবলামুখী হয়ে বসলেন। সূর্যগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত [বসে বসে] দুআ করিতে থাকলেন।

[আবু দাউদ] {১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ১১৮২, আহমাদ ২১২২৫। কারণ এর সানাদে আবু জাফার আর্ রযী একজন শিথিল রাবী। আর خَمْسَ رَكَعَاتٍ অংশটুকু মুনকার যেমনটি ঈমাম যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন। আর মাহফূয হলো যা বোখারী মুসলিমসহ অন্যান্য গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে ركوعات وكبرتات।, এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৯৩. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জীবদ্দশায় সূর্যগ্রহণ হলে তিনি দু দু রাকআত সলাত আদায় শুরু করিতেন ও মাসজিদে বসে গ্রহণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতেন। [অর্থাৎ দু রাকআত সলাত আদায়ান্তে দেখিতেন গ্রহণ শেষ হয়েছে কি-না? না হলে আবার দু রাকআত সলাত আদায় করিতেন]। এভাবে গ্রহণ থাকা পর্যন্ত সলাত আদায় করিতে থাকতেন। আবু দাউদ; নাসায়ীর এক বর্ণনায় আছে, নবী [সাঃআঃ] সূর্যগ্রহণ লাগলে আমাদের সলাতের মত সলাত আদায় করিতে শুরু করিতেন। রুকূ করিতেন, সাজদাহ করিতেন।

[নাসায়ীর] অন্য এক রিওয়ায়াতে আছে, একদিন সূর্যগ্রহণ শুরু হলে নবী [সাঃআঃ] তড়িৎগতিতে মাসজিদে চলে গেলেন এবং সলাত আদায় করিতে লাগলেন। এ অবস্থায় সূর্য আলোকিত হয়ে গেল। তারপর তিনি বললেন, জাহিলিয়্যাতের সময় মানুষেরা বলাবলি করত পৃথিবীর কোন বড় মানুষ মৃত্যুবরণ করলে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয়ে থাকে।

[ব্যাপারটি কিন্তু তা নয়] আসলে কোন মানুষের জন্ম বা মৃত্যুতে গ্রহণ হয় না। বরং এ দুটি জিনিস [চাঁদ, সূর্য] আল্লাহ তাআলার সৃষ্টিসমূহের দুটি সৃষ্টি। আল্লাহ তাআলা তাহাঁর সৃষ্টি জগতে যেভাবে চান পরিবর্তন আনেন। অতএব যেটারই গ্রহণ হয় তোমরা সলাত আদায় করিবে। যে পর্যন্ত গ্রহণ ছেড়ে না যায়। অথবা আল্লাহ তাআলা কোন নির্দেশ জারী না করেন [অর্থাৎ আযাব অথবা ক্বিয়ামাত শুরু না হয়]। {১}, {১} মুনকার : আবু দাউদ ১১৯৩। এই হাদিসটির তাহকীকঃ মুনকার


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply