সূর্যগ্রহণের নামায ।নাবী (সঃ)কে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখানো হয়

সূর্যগ্রহণের নামায ।নাবী (সঃ)কে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখানো হয়

সূর্যগ্রহণের নামায ।নাবী (সঃ)কে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখানো হয় , এই পর্বের হাদীস =১১ টি (৫২০ – ৫৩০) >> আল লুলু ওয়াল মারজান এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্ব-১০ঃ সূর্য গ্রহণের সলাত

১০/১. সূর্য গ্রহণের সলাত
১০/২. সূর্য গ্রহণের সলাতে ক্ববরের আযাব হইতে আশ্রয় প্রার্থনার দুআ।
১০/৩. সূর্য গ্রহণের সলাতে নাবী [স]-কে জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে যা দেখানো হয়।
১০/৪. সূর্য গ্রহণের সলাতের জন্য আহ্বান হচ্ছেঃ আস্ সলাতু জামিআহ।

১০/১. সূর্য গ্রহণের সলাত

৫২০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর সময় একবার সূর্যগ্রহণ হল। তখন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করেন। তিনি দীর্ঘ সময় কিয়াম করেন, অতঃপর দীর্ঘক্ষণ রুকূ করেন। অতঃপর পুনরায় [সালাতে] তিনি উঠে দাঁড়ান এবং দীর্ঘ কিয়াম করেন। অবশ্য তা প্রথম কিয়াম চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি রুকূ করেন এবং এ রুকূও দীর্ঘ করেন। তবে তা প্রথম রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সাজদাহ্ করেন এবং সাজদাহ্ও দীর্ঘক্ষণ করেন। অতঃপর তিনি প্রথম রাকাআতে যা করেছিলেন তার অনুরূপ দ্বিতীয় রাকাআতে করেন এবং যখন সূর্য প্রকাশিত হয় তখন সলাত শেষ করেন। অতঃপর তিনি লোকজনের উদ্দেশে খুত্‌বা দান করেন। প্রথমে তিনি আল্লাহ্‌র প্রশংসা ও গুণ বর্ণনা করেন। অতঃপর তিনি বলেনঃ সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ্‌র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন তোমরা আল্লাহ্‌র নিকট দুআ করিবে। তাহাঁর মহত্ব ঘোষণা করিবে এবং সলাত আদায় করিবে ও সাদাকা প্রদান করিবে। অতঃপর তিনি আরো বললেনঃ হে উম্মাতে মুহাম্মদী! আল্লাহ্‌র কসম, আল্লাহ্‌র কোন বান্দা যিনা করলে কিংবা কোন নারী যিনা করলে, আল্লাহ্‌র চেয়ে অধিক অপছন্দকারী কেউ নেই। হে উম্মাতে মুহাম্মাদী! আল্লাহ্‌র কসম, আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তাহলে তোমরা অবশ্যই কম হাসতে এবং বেশী করে কাঁদতে।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /২ হাঃ ১০৪৪, মুসলিম ১০/১, হাঃ ৯০১] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫২১. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর জীবৎকালে একবার সূর্যগ্রহণ হয়। তখন তিনি মাসজিদে গমন করেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর লোকেরা তাহাঁর পিছনে সারিবদ্ধ হলো। তিনি তাক্‌বীর বলিলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করিলেন। অতঃপর তাক্‌বীর বলিলেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকূতে থাকলেন। অতঃপর ………….. বলে দাঁড়ালেন এবং সাজদাহ্য় না গিয়েই আবার দীর্ঘক্ষণ কিরাআত পাঠ করিলেন। তবে তা প্রথম কিরাআতের চেয়ে অল্পস্থায়ী। অতঃপর তিনি আল্লাহু আকবার বলিলেন এবং দীর্ঘ রুকূ করিলেন, তবে তা প্রথম রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি বললেনঃ ………….. অতঃপর সাজদাহ্য় গেলেন। অতঃপর তিনি পরবর্তী রাকাআতেও অনুরূপ করিলেন এবং এভাবে চার সাজদাহ্র সাথে চার রাকআত পূর্ণ করিলেন। তাহাঁর সলাত শেষ করার পূর্বেই সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গেল। অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে আল্লাহ্‌র যথাযোগ্য প্রশংসা করিলেন এবং বললেনঃ সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ আল্লাহ্‌র নিদর্শন সমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন মাত্র। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে গ্রহণ হয় না। কাজেই যখনই তোমরা গ্রহণ হইতে দেখবে, তখনই ভীত হয়ে সলাতের দিকে গমন করিবে।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /৪ হাঃ ১০৪৬, মুসলিম ১০/১ হাঃ ৯০১] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০/২. সূর্য গ্রহণের সলাতে ক্ববরের আযাব হইতে আশ্রয় প্রার্থনার দুআ।

৫২২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ হলো। আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] [সালাতে] দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ সূরা পাঠ করিলেন, অতঃপর রুকূ করিলেন, আর তা দীর্ঘ করিলেন। অতঃপর রুকূ হইতে মাথা তুলেন এবং অন্য একটি সূরা পাঠ করিতে শুরু করিলেন। পরে রুকূ সমাপ্ত করে সাজদাহ্ করিলেন। দ্বিতীয় রাকাআতেও এরূপ করিলেন। অতঃপর বললেনঃ এ দুটি [চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ] আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের অন্যতম। তোমরা তা দেখলে গ্রহণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সলাত আদায় করিবে। আমি আমার এ স্থানে দাঁড়িয়ে, আমাকে যা ওয়াদা করা হয়েছে তা সবই দেখিতে পেয়েছি। এমনকি যখন তোমরা আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে দেখেছিলে তখন আমি দেখলাম যে, জান্নাতের একটি [আঙ্গুর] গুচ্ছ নেয়ার ইচ্ছে করছি এবং জাহান্নামে দেখিতে পেলাম যে, তার একাংশ অন্য অংশকে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলছে। আর যখন তোমরা আমাকে পিছনে সরে আসতে দেখেছিলে আমি দেখলাম সেখানে আম্‌র ইবনি লুহাইকে যে সায়িবাহ [এর অর্থ বিমুক্ত, পরিত্যক্ত, বাঁধনমুক্ত। জাহিলী যুগে দেব-দেবীর নামে উট ছেড়ে দেয়ার প্রথা ছিল। এসব উটের দুধ পান করা এবং তাকে বাহনরূপে ব্যবহার করা অবৈধ মনে করা হত।] প্রথা প্রবর্তন করেছিল।

[বোখারী পর্ব ২১ : /১১ হাঃ ১২১২, মুসলিম ১০/ ২ হাঃ ৯০১] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫২৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

এক ইয়াহুদী মহিলা তাহাঁর নিকট কিছু জিজ্ঞেস করিতে এলো। সে আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে বলিল, আল্লাহ্ তাআলা আপনাকে কবর আযাব হইতে রক্ষা করুন। অতঃপর আয়িশাহ্ [রাদি.] আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করেন, কবরে কি মানুষকে আযাব দেয়া হইবে? আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বললেনঃ তা হইতে আল্লাহ্‌র নিকট পানাহ চাই।

পরে কোন এক সকালে আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] সওয়ারীতে আরোহণ করেন। তখন সূর্যগ্রহণ আরম্ভ হয়। তিনি সূর্যোদয় ও দুপুরের মাঝামাঝি সময় ফিরে আসেন এবং কামরাগুলোর মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করেন। অতঃপর তিনি সলাতে দাঁড়ালেন এবং লোকেরা তাহাঁর পিছনে দাঁড়াল। অতঃপর তিনি দীর্ঘ কিয়াম করেন। অতঃপর তিনি দীর্ঘ রুকূ করেন পরে মাথা তুলে দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে এ কিয়াম পূর্বের কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ করেন, তবে এ রুকূ পূর্বের রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন এবং সাজদাহ্য় গেলেন। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম করিলেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর দীর্ঘ রুকূ করিলেন। এ রুকূ প্রথম রাকআতের রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার রুকূ করিলেন এবং তা প্রথম রাকআতের রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। পরে মাথা তুললেন এবং সাজদাহ্য় গেলেন। অতঃপর সলাত শেষ করিলেন। আল্লাহ্‌র যা ইচ্ছে তিনি তা বলিলেন এবং কবর আযাব হইতে পানাহ চাওয়ার জন্য উপস্থিত লোকদের নির্দেশ দেন।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /৭ হাঃ ১০৪৯-১০৫০, মুসলিম ১০/২, হাঃ ৯০৩] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০/৩. সূর্য গ্রহণের সলাতে নাবী [স]-কে জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে যা দেখানো হয়।

৫২৪. আসমা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আয়েশা [রাদি.]-র নিকট আসলাম, তিনি তখন সলাত রত ছিলেন। আমি বললাম, মানুষের কী হয়েছে? তিনি আকাশের দিকে ইঙ্গিত করিলেন [সূর্য গ্রহণ লেগেছে]। তখন সকল লোক [সলাতুল কুসূফ এর জন্য] দাঁড়িয়ে রয়েছে। আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, এটা কি কোন নিদর্শন ? তিনি মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর আমি [সলাতে] দাঁড়িয়ে গেলাম। এমনকি [দীর্ঘতার কারণে] আমার জ্ঞান হারিয়ে ফেলার উপক্রম হল। তাই আমি মাথায় পানি ঢালতে আরম্ভ করলাম। পরে নাবী [সাঃআঃ] আল্লাহ্‌র হামদ ও সানা পাঠ করিলেন। অতঃপর বললেনঃ যা কিছু আমাকে ইতোপূর্বে দেখানো হয়নি, তা আমি আমার এ স্থানেই দেখিতে পেয়েছি। এমনকি জান্নাত ও জাহান্নামও। অতঃপর আল্লাহ্ তাআলা আমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করিলেন, দাজ্জালের ন্যায় [কঠিন] পরীক্ষা অথবা তার কাছাকাছি বিপদ দিয়ে তোমাদেরকে কবরে পরীক্ষায় ফেলা হইবে।

ফাতিমাহ [রাদি.] বলেন, আসমা [রাদি.] مثل [অনুরূপ] শব্দ বলেছিলেন, না قريب [কাছাকাছি] শব্দ, তা ঠিক আমার স্মরণ নেই। [কবরের মধ্যে] বলা হইবে, এ ব্যক্তি সম্পর্কে তুমি কি জান? তখন মুমিন ব্যক্তি বা মুকিন [বিশ্বাসী] ব্যক্তি {ফাতিমাহ [রাদি.] বলেন} আসমা [রাদি.] এর কোন্ শব্দটি বলেছিলেন আমি জানিনা}, বলবে, তিনি মুহাম্মদ [সাঃআঃ], তিনি আল্লাহ্‌র রসূল । আমাদের নিকট মুজিযা ও হিদায়াত নিয়ে এসেছিলেন। আমরা তা গ্রহণ করেছিলাম এবং তাহাঁর ইত্তেবা করেছিলাম। তিনি মুহাম্মদ। তিনবার এরূপ বলবে। তখন তাকে বলা হইবে, আরামে ঘুমিয়ে থাক, আমরা জানতে পারলাম যে, তুমি [দুনিয়ায়] তাহাঁর উপর বিশ্বাসী ছিলে। আর মুনাফিক অথবা মুরতাব [সন্দেহ পোষণকারী] ফাতিমাহ বলেন, আসমা কোন্টি বলেছিলেন, আমি ঠিক মনে করিতে পারছি না- বলবে, আমি কিছুই জানি না। মানুষকে [তাহাঁর সম্পর্কে] যা বলিতে শুনিয়াছি, আমিও তাই বলেছি

[বোখারী পর্ব ৩ : /২৪ হাঃ ৮৬, মুসলিম ১০/২ হাঃ ৯০৫] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫২৫. আবদুল্লাহ্ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন নাবী [সাঃআঃ]-এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] তখন সলাত আদায় করেন এবং তিনি সূরা আল-বাকারাহ পাঠ করিতে যত সময় লাগে সে পরিমাণ দীর্ঘ কিয়াম করেন। অতঃপর দীর্ঘ রুকূ করেন। অতঃপর মাথা তুলে পুনরায় দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ করিলেন। তবে তা প্রথম রুকূর চেয়ে অস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সাজদাহ্ করেন। আবার দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম করিলেন। তবে তা প্রথম কিয়ামাতের চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর আবার দীর্ঘ রুকূ করেন, তবে তা পূর্বের রুকূর চেয়ে অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি মাথা তুললেন এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কিয়াম করেন, তবে তা প্রথম কিয়াম অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকূ করেন, তবে তা প্রথম রুকূ অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। অতঃপর তিনি সাজদাহ্ করেন এবং সলাত শেষ করেন। ততক্ষণে সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গিয়েছে। তারপর তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে এ দুটির গ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা গ্রহণ দেখবে তখনই আল্লাহ্কে স্মরণ করিবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! আমরা দেখলাম, আপনি নিজের জায়গা হইতে কী যেন ধরছেন, আবার দেখলাম, আপনি যেন পিছনে সরে এলেন। তিনি বললেনঃ আমিতো জান্নাত দেখেছিলাম এবং এক গুচ্ছ আঙ্গুরের প্রতি হাত বাড়িয়েছিলাম। আমি তা পেয়ে গেলে, দুনিয়া কায়িম থাকা পর্যন্ত অবশ্য তোমরা তা খেতে পারতে। অতঃপর আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়, আমি আজকের মত ভয়াবহ দৃশ্য কখনো দেখিনি। আর আমি দেখলাম, জাহান্নামের অধিকাংশ বাসিন্দা নারী। লোকেরা জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহ্‌র রসূল ! কী কারণে? তিনি বললেনঃ তাহাদের কুফরীর কারণে। জিজ্ঞেস করা হল, তারা কি আল্লাহ্‌র সাথে কুফরী করে? তিনি জবাব দিলেন, তারা স্বামীর অবাধ্য থাকে এবং ইহ্সান অস্বীকার করে। তুমি যদি তাহাদের কারো প্রতি সারা জীবন সদাচরণ কর, অতঃপর সে তোমার হইতে [যদি] সামান্য ত্রুটি পায়, তা হলে বলে ফেলে, তোমার হইতে কখনো ভাল ব্যবহার পেলাম না।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /৯ হাঃ ১০৫২, মুসলিম ১০/৩, হাঃ ৯০৭] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০/৪. সূর্য গ্রহণের সলাতের জন্য আহ্বান হচ্ছেঃ আস্ সলাতু জামিআহ।

৫২৬. আবদুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর সময় যখন সূর্যগ্রহণ হয় তখন আস্-সালাতু জামিআতুন বলে ঘোষণা দেয়া হয়। নাবী তখন এক রাকাআতে দুবার রুকূ করেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় রাকাআতেও দুবার রুকূ করেন অতঃপর বসেন আর ততক্ষণে সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে যায়। বর্ণনাকারী বলেন, আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেছেন, এ সলাত ব্যতীত এত দীর্ঘ সাজদাহ্ আমি কখনও করিনি।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /৮ হাঃ ১০৫১, মুসলিম ১০/৫ হাঃ ৯১০] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫২৭. আবু মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোকের মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। তাই তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হইতে দেখবে, তখন দাঁড়িয়ে যাবে এবং সলাত আদায় করিবে।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /১ হাঃ ১০৪১, মুসলিম ১০/৫, হাঃ ৯১১] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫২৮. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ হল, তখন নাবী [সাঃআঃ] ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় উঠলেন এবং কিয়ামাত সংঘটিত হবার ভয় করছিলেন। অতঃপর তিনি মাসজিদে আসেন এবং এর পূর্বে আমি তাঁকে যেমন করিতে দেখেছি, তার চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কিয়াম, রুকূ ও সাজদাহ্ সহকারে সলাত আদায় করিলেন। আর তিনি বললেনঃ এগুলো হল নিদর্শন যা আল্লাহ্ পাঠিয়ে থাকেন, তা কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে হয় না। বরং আল্লাহ্ তাআলা এর মাধ্যমে তাহাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন। কাজেই যখন তোমরা এর কিছু দেখিতে পাবে, তখন ভীত বিহ্বল অবস্থায় আল্লাহ্‌র যিক্‌র, দুআ এবং ইস্তিগ্ফারের দিকে অগ্রসর হইবে।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /১৪ হাঃ ১০৫৯, মুসলিম ১০/৫, হাঃ ৯১২] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫২৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করেন যে, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে হয় না। তবে তা আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। কাজেই তোমরা যখনই গ্রহণ হইতে দেখবে তখনই সলাত আদায় করিবে।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /১ হাঃ ১০৪২, মুসলিম ১০/৫ হাঃ ৯১৪] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫৩০. মুগীরাহ ইবনি শুবা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ]-এর সময় যে দিন [তাহাঁর পুত্র] ইবরাহীম [রাদি.] ইন্তিকাল করেন, সেদিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। লোকেরা তখন বলিতে লাগল, ইব্রাহীম [রাদি.] এর মৃত্যুর কারণেই সূর্যগ্রহণ হয়েছে। তখন আল্লাহর রসূল  [সাঃআঃ] বললেনঃ কারো মৃত্যু অথবা জন্মের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন তা দেখবে, তখন সলাত আদায় করিবে এবং আল্লাহ্‌র নিকট দুআ করিবে।

[বোখারী পর্ব ১৬ : /১ হাঃ ১০৪৩, মুসলিম ১০/৫, হাঃ ৯১৫] সূর্যগ্রহণের নামায-এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


by

Comments

One response to “সূর্যগ্রহণের নামায ।নাবী (সঃ)কে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখানো হয়”

Leave a Reply