সূরা সাবা তাফসির বাংলা । তাফসিরুল কোরআন

সূরা সাবা তাফসির বাংলা । তাফসিরুল কোরআন

সূরা সাবা তাফসির বাংলা । তাফসিরুল কোরআন >> তিরমিজি শরিফের তাফসিরুল কোরআন অধ্যায়ের অন্যান্য সুরার তাফসীর পড়ুন >> সুরা সা’বা আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ

অধ্যায়ঃ ৪৪, অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ সূরা সাবা তাফসির

৩২২২. ফারওয়াহ্‌ ইবনি মুসাইক আল-মুরাদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার গোত্রের যেসব ব্যক্তি অগ্রসর হয়েছে [ইসলাম গ্রহণ করেছে] তাহাদেরকে নিয়ে আমি কি আমার গোত্রের পিছে পড়া ব্যক্তিদের [ইসলাম প্রত্যাখ্যানকারীদের] বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমাকে তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি দিলেন এবং আমাকেই আমীর নিযুক্ত করিলেন। আমি তাহাঁর নিকট হইতে বিদায় নিয়ে আসার পর তিনি আমার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেনঃ গুতাইফী কোথায়? তাঁকে জানানো হল যে, আমি চলে গেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমার পিছে পিছে এক লোক পাঠিয়ে আমাকে আবার ফিরিয়ে আনলেন। আমি যখন ফিরে আসি তখন তিনি তাহাঁর সাহাবা পরিবেষ্টিত অবস্থায় ছিলেন। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার গোত্রের লোকদের প্রথমে ইসলামের দাওয়াত দিবে। তাহাদের মধ্যে কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে তা তুমি অনুমোদন করিবে। আর যে লোক ইসলাম গ্রহণ করিবে না, আমার পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত তাহাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করার বিষয়ে ধৈর্যহারা হইবে না।

রাবী বলেন, তারপর সাবা প্রসঙ্গে যা অবতীর্ণ হওয়ার ছিল তা নাযিল হল। এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! সাবা কি? কোন এলাকার নাম না কোন স্ত্রীলোকের নাম? তিনি বললেনঃ কোন এলাকারও নাম নয় বা কোন স্ত্রীলোকেরও নাম নয়, বরং একজন পুরুষ ব্যক্তির নাম। তার ঔরসে আরবের দশজন লোক জন্মগ্রহণ করে। তাহাদের ছয়জন ইয়ামানে [দক্ষিণ দিকে] এবং চারজন সিরিয়ায় [বাঁ দিকে] বসতি স্থাপন করে। বাঁ দিকের ব্যক্তিদের নাম হলঃ লাখম, জুযাম, গাসসান ও আমিলা [গোত্র]। আর ডান দিকে গড়ে উঠা বংশের নাম হলঃ আয্‌দ, আশআরী, হিমইয়ার, কিনদাহ্‌, মাযহিজ ও আনমার। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আনমার কওমের ব্যক্তি কারা? তিনি বললেনঃ খাসআম ও বাজীলাহ্‌ বংশের লোকেরা এদের দলে।

হাদীসটি ইবনি আব্বাসের বরাতেও নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। সূরা সাবা তাফসির – এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৩২২৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন আসমানে কোন নির্দেশ ঘোষণা করেন, তখন ফেরেশতারা এই আদেশের উপর আনুগত্য প্রদর্শনার্থে ভয় ও বিনম্রতার সাথে নিজেদের পাখায় শব্দ করেন। মনে হয় যেন পাখাগুলো শিকলের মতো মসৃণ পাথরের উপর আঘাত করছে। তাহাদের মন হইতে ভয়ের ভাব কেটে গেলে তারা একে অপরকে প্রশ্ন করেনঃ “তোমাদের প্রতিপালক কি বলিলেন? তারা বলেন, তিনি সঠিক বলেছেন। তিনি তো অতীব মহান ও শ্রেষ্ঠ” – [সূরা সাবা ২৩]। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শাইতানেরা তখন একে অপরের কাছে সমবেত হয় [ঊর্ধ্ব জগতের কথা শুনার জন্য]।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ [১৯৪], বোখারি। আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ । সূরা সাবা তাফসির – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২২৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর এক দল সাহাবীর সঙ্গে বসা ছিলেন। এমন সময় একটি উল্কা পতিত হল এবং আলোকিত হয়ে গেল। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এরূপ উলকাপাত হইতে দেখলে তোমরা জাহিলী যুগে কি বলিতে? তারা বলল, আমরা বলতাম, কোন মহান লোকের মৃত্যু হইবে অথবা কোন মহান লোকের জন্ম হইবে [এটা তারই আলামাত]। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ কোন লোকের মৃত্যু অথবা জন্মগ্রহণের আলামাত হিসেবে এটা পতিত হয় না, বরং মহা বারাকাতময় ও মহিমান্বিত নামের অধিকারী আমাদের প্রতিপালক যখন কোন আদেশ জারী করেন তখন আরশ বহনকারী ফেরেশতারা তাহাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করেন। তারপর তাহাদের নিকটতম আসমানের অধিবাসীরা তাসবীহ পড়তে থাকে, তারপর তাহাদের নিকটতম আসমানের অধিবাসীরা তাসবীহ পড়তে থাকে। এভাবে তাসবীহ ও মহিমা ঘোষণার ধারা এই নিম্নবর্তী আসমানে এসে পৌঁছে যায়। তারপর ষষ্ঠ আসমানের অধিবাসীরা সপ্তম আসমানের অধিবাসীদের প্রশ্ন করেন, তোমাদের প্রতিপালক কি বলেছেন? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তারা তাহাদেরকে ব্যাপারটি জানান। এভাবে প্রত্যেক আসমানের অধিবাসীরা তাহাদের উপরের আসমানের অধিবাসীদের একইভাবে প্রশ্ন করেন। এভাবে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে এ খবর পৌঁছে যায়। শাইতানেরা এ তথ্য শুনবার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। তখন এদের উপর উলকা ছুঁড়ে মারা হয়। এরা কিছু তথ্য এদের সহগামীদের নিকট পাচার করে। এরা যা সংগ্রহ করে তা তো সত্য, কিন্তু তারা এতে কিছু পরিবর্তন ও কিছু বৃদ্ধি ঘটায়।

সহীহঃ মুসলিম [৭/৩৬-৩৭] আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। ইমাম যুহরী [রঃ]এ হাদীস আলী ইবনি হুসাইনের সূত্রে ইবনি আব্বাস হইতে তিনি একদল আনসার সাহাবীর সনদে বর্ণনা করিয়াছেন। তারা বলেছেন, আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম… হাদীসের শেষ অবধি। এটি আমাদের নিকট বর্ণনা করিয়াছেন আল-হুসাইন ইবনি হুরাইস-ওয়ালীদ ইবনি মুসলিম হইতে, তিনি আওযাঈ হইতে। সূরা সাবা তাফসির – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “সূরা সাবা তাফসির বাংলা । তাফসিরুল কোরআন”

Leave a Reply