সূরা আল আরাফ তাফসির । তাফশিরুল কোরআন
সূরা আল আরাফ তাফসির । তাফশিরুল কোরআন >> তিরমিজি শরিফের তাফসিরুল কোরআন অধ্যায়ের অন্যান্য সুরার তাফসীর পড়ুন >> সুরা আরাফ আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
অধ্যায়ঃ ৪৪, অনুচ্ছেদ-৮ঃ সূরা আল আরাফ তাফসির
৩০৭৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এ আয়াত পাঠ করিলেন [অনুবাদ] : “যখন তার প্রতিপালক পাহাড়ের উপর জ্যোতি প্রকাশ করিলেন তখন তা একে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল —[সূরা আল-আরাফ ১৪৩]। হাম্মাদ [রঃ]তাজাল্লীর ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেন এবং সুলাইমান বৃদ্ধাঙ্গুলির কিনারা দিয়ে ডান হাতের আঙ্গুলগুলোর মাথা স্পর্শ করেন। রাসুলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, এই জ্যোতিতে পাহাড় ধ্বসে গেল এবং মূসা [আঃ] চেতনা হারিয়ে ফেললেন।
সহীহ : যিলা-লুল জান্নাত [৪৮০]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ গারীব । হাম্মাদ ইবনি সালামার রিওয়ায়াত ব্যতীত অন্য কোনোভাবে আমরা এটিকে জানতে পারিনি । আবদুল ওয়াহ্হাব আল-ওয়াররাক আল-বাগদাদী- মুআয ইবনি মুআয হইতে, তিনি হাম্মাদ ইবনি সালামাহ্ হইতে, তিনি সাবিত হইতে, তিনি আনাস [রাদি.] হইতে, তিনি নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে এই সুত্রে একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেন, এই সনদে বর্ণিত হাদিসটি হাসান। সূরা আল আরাফ তাফসির- এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩০৭৫. মুসলিম ইবনি ইয়াসার আল-জুহানী [রঃ]হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-কে এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছিলঃ “যখন তোমার রব আদম সন্তানের পৃষ্ঠদেশ হইতে তাহাদের বংশধরদের বের করিলেন এবং তাহাদের নিজেদের সম্পর্কে স্বীকারোক্তি করে প্রশ্ন করেনঃ আমি কি তোমাদের রব নই! তারা বললঃ হ্যাঁ নিশ্চয়ই, আমরা সাক্ষী রইলাম। তা এজন্য যে, তোমরা কিয়ামাতের দিন যেন না বল, আমরা তো এ ব্যাপারে বেখবর ছিলাম” [সূরাঃ আল- আরাফ- ১৭২]। উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকটও আমি এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করিতে শুনিয়াছি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ্ তাআলা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করিলেন, তারপর আপন ডান হাত তাহাঁর পিঠে বুলালেন এবং তা থেকে তাহাঁর একদল [ভাবী] সন্তান বের করিলেন। তিনি বলিলেন, এদের আমি জান্নাতের জন্য এবং জান্নাতীদের কাজ করিতে সৃষ্টি করেছি। সুতরাং এরা জান্নাতীদের আমলই করিবে। তিনি পুনরায় আদমের পিঠে হাত বুলালেন এবং সেখান থেকে তাহাঁর [অপর] একদল সন্তান বের করিলেন। তিনি বলিলেন, এদের আমি জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। জাহান্নামীদের মত কাজই তারা করিবে। একজন বলিলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! তাহলে তদবির আর কিসের জন্য? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহ্ তাআলা যখন কোন বান্দাকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেন, তখন তার দ্বারা জান্নাতীদের কাজই করিয়ে নেন। সে জান্নাতীদের যোগ্য কাজ করে ইন্তেকাল করে এবং আল্লাহ্ তাআলা তাকে জান্নাতে পেশ করেন। অপরদিকে যখন আল্লাহ্ তাআলা কোন বান্দাকে জাহান্নামের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেন, তার দ্বারা জাহান্নামীদের কাজ করিয়ে নেন। সে জাহান্নামীদের কাজ করেই মৃত্যুবরণ করে। শেষে আল্লাহ্ তাআলা তাকে জাহান্নামে পেশ করেন।
দুর্বল, আয্ যিলাল [১৯৬], যঈফা [৩০৭১] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। মুসলিম ইবনি ইয়াসার [রঃ]উমার [রাদি.] হইতে [হাদীস] শুনেননি। কেউ কেউ এ হাদীসের সনদে মুসলিম ইবনি ইয়াসার ও উমার [রাদি.]-এর মাঝখানে আরেকজন অপরিচিত রাবীর উল্লেখ করিয়াছেন। সূরা আল আরাফ তাফসির- এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩০৭৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তাআলা আদম [আঃ] কে সৃষ্টি করিলেন তখন তিনি তার পিঠ মাসেহ করিলেন। এতে তাহাঁর পিঠ থেকে তাহাঁর সমস্ত সন্তান বের হলো, যাদের তিনি ক্বিয়ামাত পর্যন্ত সৃষ্টি করবেন। তিনি তাহাদের প্রত্যেকের দুই চোখের মাঝখানে নূরের ঔজ্জল্য সৃষ্টি করিলেন, অতঃপর তাহাদেরকে আদম [আঃ] এর সামনে পেশ করিলেন। আদম [আঃ] বললেনঃ হে প্রভু! এরা কারা? আল্লাহ বলিলেন, এরা তোমার সন্তান। আদমের দৃষ্টি তার সন্তানদের একজনের উপর পড়লো যাঁর দুই চোখের মাঝখানের ঔজ্জল্যে তিনি বিস্মিত হলেন। তিনি বলিলেন, হে আমার প্রভু! ইনি কে? আল্লাহ তাআলা বললেনঃ শেষ যামানার উম্মাতের অন্তর্গত তোমার সন্তানদের একজন। তার নাম দাউদ [আঃ]। আদম [আঃ] বললেনঃ হে আমার রব! আপনি তাহাঁর বয়স কত নির্ধারণ করিয়াছেন? আল্লাহ বললেনঃ ৬০ বছর। আদম [আঃ] বললেনঃ পরোয়ারদিগার! আমার বয়স থেকে ৪০ বছর [কেটে] তাকে দিন। আদম [আঃ] এর বয়স শেষ হয়ে গেলে তাহাঁর নিকট মালাকুত মউত _ আযরাইল] এসে হাযির হন। আদম [আঃ] বললেনঃ আমার বয়সের কি আরো ৪০ বছর অবশিষ্ট নেই? তিনি বললেনঃ আপনি কি আপনার সন্তান দাউদকে দান করেননি? রাসুলুল্লাহ [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ আদম [আঃ] অস্বীকার করিলেন, তাই তার সন্তানরাও অস্বীকার করে থাকে। আদম [আঃ] ভুলে গিয়েছিলেন, তাই তাহাঁর সন্তানদেরও ত্রুটি বিচ্যুতি হয়ে থাকে।
সহীহ : আয যিলাল [২০৬], তাখরীজুত্ তাহাবীয়াহ [২২০ ,২২১]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] এর বরাতে নাবী [সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হইতে অন্যভাবেও এটি বর্ণিত হয়েছে। সূরা আল আরাফ তাফসির- এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩০৭৭. সামুরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হাওয়া আলাইহিস সালাম গর্ভবতী হলে তাহাঁর নিকট শাইতান এলো। তাহাঁর সন্তান জীবিত থাকত না। শাইতান বলল, এর নাম আবদুল হারিস রাখুন। তিনি তার নাম আবদুল হারিস রাখলেন। এ সন্তান জীবিত রইল। আর এটা ছিল শাইতানের কুমন্ত্রণা।
জঈফ, যঈফা [৩৪২] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। কাতাদার মাধ্যমে উমার ইবনি ইবরাহীমের বর্ণনা ছাড়া আমরা এটিকে জানি না। কেউ কেউ আবদুস সামাদ হইতে এটি বর্ণনা করিয়াছেন, তবে মারফূ হিসেবে নয়। উমার ইবনি ইবরাহীম [রঃ]বসরার শাইখ। সূরা আল আরাফ তাফসির- এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩০৭৮. আবদ ইবনি হুমাইদ হইতে বর্ণীতঃ
আবদ ইবনি হুমাইদ আবু নুআইম হইতে, তিনি হিশাম ইবনি সাদ হইতে, তিনি যাইদ ইবনি আসলাম হইতে, তিনি আবু সালিহ হইতে, তিনি আবু হুরায়রা্ হইতে বর্ণণা করেন যে, আবু হুরায়রা্ [রাদি.] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন আদম [আঃ] কে সৃষ্টি করা হল…পূর্বে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
সূরা আল আরাফ তাফসির- এই হাদিসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
Leave a Reply