সূরা আল আম্বিয়া তাফসীর । তাফসিরুল কোরআন
সূরা আল আম্বিয়া তাফসীর । তাফসিরুল কোরআন >> তিরমিজি শরিফের তাফসিরুল কোরআন অধ্যায়ের অন্যান্য সুরার তাফসীর পড়ুন >> সুরা আম্বিয়া আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
অধ্যায়ঃ ৪৪, অনুচ্ছেদ-২২ঃ সূরা আল আম্বিয়া তাফসীর
৩১৬৫. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-এর সম্মুখে বসে এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কয়েকটি গোলাম আছে। আমার নিকট এরা মিথ্যা কথা বলে, আমার সম্পদে ক্ষতিসাধন [খিয়ানাত] করে এবং আমার অবাধ্যতা করে। এ কারণে তাহাদেরকে আমি বকাবকি ও মারধর করি। তাহাদের সাথে এমন ব্যবহারে আমার অবস্থা কি হইবে? তিনি বললেনঃ তারা যে তোমার সাথে খিয়ানাত করে, তোমার অবাধ্যতা করে এবং তোমার নিকট মিথ্যা বলে, আর এ কারণে তাহাদের সাথে তুমি যেমন আচরণ কর- এ সবেরই হিসাব-নিকাশ হইবে। যদি তোমার দেয়া শাস্তি তাহাদের অপরাধের সমান হয় তবে ঠিক আছে। তোমারও কোন অসুবিধা হইবে না তাহাদেরও কোন অসুবিধা হইবে না। যদি তোমার দেয়া শাস্তি তাহাদের অপরাধের তুলনায় কম হয় তাহলে তোমার জন্য অতিরিক্ত [সাওয়াব] রয়ে গেল। তোমার প্রদত্ত শাস্তি যদি তাহাদের অপরাধের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে অতিরিক্ত অংশের জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হইবে। বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শুনে লোকটি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে আলাদা হয়ে গেল। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহ তাআলার কিতাবে তুমি কি এ কথা পড় না [অনুবাদ]- “আমরা ক্বিয়ামাতের দিন ন্যায়বিচারের দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করব। সুতরাং কোন লোকের উপর কোন যুলুম করা হইবে না। কারো বিন্দু পরিমাণও কিছু কৃতকর্ম থাকলে আমরা তাও হাযির করব। আর হিসাব সম্পন্ন করার জন্য আমরাই যথেষ্ট”- [সূরা আম্বিয়া ৪৭]। লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহর ক্বসম! তাহাদের মাঝে এবং আমার মাঝে বিচ্ছিন্নতা ছাড়া আমার ও তাহাদের কল্যাণের আর কোন পথ দেখছি না। আপনাকে আমি সাক্ষী রেখে বলছি, তাহাদের সবাই এখন হইতে মুক্ত।
আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আবদুর রহমান ইবনি গাযওয়ানের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীস জেনেছি। ইমাম আহমাদও এ হাদীস আবদুর রহমান ইবনি গাযওয়ানের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। সূরা আল আম্বিয়া তাফসীর -এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩১৬৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইবরাহীম [আঃ] তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া কোন ব্যাপারে কখনো মিথ্যা বলেননি। যেমন তাহাঁর কথা “আমি অসুস্থ”- [সূরাঃ আস-সাফফাত ৮৯], অথচ তিনি অসুস্থ ছিলেন না, নিজের বিবি সারা-কে তার বোন বলা এবং তাহাঁর কথা “বরং এগুলোর ভিতর সর্বাধিক বড়টি এ কাজ করেছে”- [সূরা আম্বিয়া ৬৩]।
সহীহঃ সহীহ আবু দাঊদ [১৯১৬], বোখারি, মুসলিম। হাদীসটি একাধিক সূত্রে আবু হুরাইরাহ [রাদি.]- এর বরাতে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত হয়েছে। ইবনি ইসহাক্ব হইতে আবুয যান্নাদ সূত্রে বর্ণিত হাদিসটি গারীব। আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। সূরা আল আম্বিয়া তাফসীর -এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩১৬৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ওয়াজ-নসীহত করিতে দাঁড়িয়ে বললেনঃ “হে লোকেরা! কিয়ামাতের দিন তোমারা নগ্ন ও খতনাহীন অবস্থায় আল্লাহ্র নিকট সমবেত হইবে। [বর্ণনাকারী বলেন,] তারপর তিনি পড়লেনঃ “যেভাবে প্রথম আমরা সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম, সেভাবেই তার পুনরাবৃত্তি করবো। এটা একটা ওয়াদাহ। যা পূরণ করার দায়িত্ব আমার। আর এ কাজ আমি অবশ্যই করবো”- [সূরা আম্বিয়া ১০৪]। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরো বলেছেন “কিয়ামাতের দিন সর্বপ্রথম যাকে কাপড় পরানো হইবে তিনি হচ্ছেন ইব্রাহীম [আঃ]। আমার উম্মতের কিছু সংখ্যক ব্যাক্তিকে নিয়ে আসা হইবে এবং তাহাদের কে ধরে বাঁ দিকে নিয়ে যাওয়া হইবে। আমি তখন বলবোঃ হে আমার সৃষ্টিকর্তা! এরা আমার অনুসারি। তখন বলা হইবে, আপনি জানেন না, এরা আপনার বিদায়ের পর কি ধরনের বিদআত এর উদ্ভব ঘটিয়েছিল। আমি সে সময় একজন সৎকর্মশীল বান্দার {[ঈসা [আঃ]} মত বলবো [কুরআনের ভাষায়] “আমি যতক্ষন পর্যন্ত তাহাদের মধ্যে ছিলাম, ততক্ষণ পর্যন্ত তাহাদের পরিচালক ছিলাম। কিন্তু আপনি যখন আমাকে তুলে নিলেন, তখন আপনিই ছিলেন তাহাদের তত্ত্বাবধায়ক। আর আপনি তো সকল বিষয়ের সাক্ষী। আপনি যদি তাহাদের আযাব দেন তবে তারা তো আপনারই বান্দা, আর যদি ক্ষমা করে দেন তাহলে আপনি তো পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় “-[সূরা আল-মায়িদাহ ১১৭-১১৮]। তখন বলা হইবে, আপনি যখন তাহাদের কে রেখে এসেছেন তখন হইতে এরা অনবরত মন্দ পথেই চলেছে।
সহীহঃ বোখারি, মুসলিম। এটি [২৪২৩] নং হাদীসের পুনরুক্তি। মুহাম্মাদ ইবনি বাশশার-মুহাম্মাদ ইবনি জাফর হইতে, তিনি শুবাহ হইতে, তিনি মুগীরাহ ইবনি নুমান হইতে এই সনদে উপরের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করিয়াছেন। এ হাদীস টি হাসান সহীহ। সুফইয়ান সাওরীও এ হাদীস টি মুগীরাহ ইবনি নুমানের সুত্রে অনুরুপ বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেনঃ সুফইয়ান সাওরী এই হাদীসের মর্মার্থ দ্বারা মুরতাদ দের কে বুঝিয়েছেন যারা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর ইন্তিকালের পর মুরতাদ হয়ে গিয়েছিলো । সূরা আল আম্বিয়া তাফসীর – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply