সুরা হুজুরাত এর তাফসীর
সুরা হুজুরাত এর তাফসীর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> সুরা হুজুরাত আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
সুরা হুজুরাত এর তাফসীর
৬৫/৪৯/১.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা উঁচু করো না তোমাদের কণ্ঠস্বর নাবীর কণ্ঠস্বরের উপর। (সুরা হুজুরাত ৪৯/২)
(49) سُوْرَةُ الْحُجُرَاتِ
সুরা (৪৯) : হুজুরাত
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {لَا تُقَدِّمُوْا} لَا تَفْتَاتُوْا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يَقْضِيَ اللهُ عَلَى لِسَانِهِ {امْتَحَنَ} أَخْلَصَ وَلَا {تَنَابَزُوْا} يُدْعَى بِالْكُفْرِ بَعْدَ الإِسْلَامِ {يَلِتْكُمْ} يَنْقُصْكُمْ أَلَتْنَا نَقَصْنَا.
মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, لَاتُقَدِّمُوْا অর্থ, রাসুল সাঃআঃ-এর কাছে কোন বিষয় তোমরা জিজ্ঞেস করিবে না যতক্ষণ না, আল্লাহ তাহাঁর যবানে এর ফয়সালা জানিয়ে দেন। امْتَحَنَ মানে পরিশুদ্ধ করিয়াছেন। لَا تَنَابَزُوْا ইসলাম গ্রহণের পর অপরকে যেন কুফ্রীর প্রতি না ডাকা হয়। يَلِتْكُمْ মানে হ্রাস করা হইবে তোমাদের أَلَتْنَا মানে হ্রাস করেছি আমি।
{تَشْعُرُوْنَ} تَعْلَمُوْنَ وَمِنْهُ الشَّاعِرُ.
تَشْعُرُوْنَ মানে তোমরা জ্ঞাত আছ। الشَّاعِرُ শব্দটি এ ধাতু থেকেই নির্গত হয়েছে।
৪৮৪৫
ইবনু আবু মুলায়কাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উত্তম দু ব্যক্তি- আবু বাক্র ও উমার (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে কণ্ঠস্বর উঁচু করে ধ্বংস হওয়ার দ্বার প্রান্তে উপনীত হয়েছিলেন। যখন বানী তামীম গোত্রের একদল লোক নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এসেছিল। তাদের একজন বানী মাজাশে গোত্রের আকরা ইবনু হাবিসকে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তাব করিল এবং অপরজন অন্য জনের নাম প্রস্তাব করিল। নাফি বলেন, এ লোকটির নাম আমার মনে নেই। তখন আবু বাক্র সিদ্দীক (রাদি.) উমার (রাদি.)-কে বলিলেন, আপনার ইচ্ছে হলো কেবল আমার বিরোধিতা করা। তিনি বলিলেন, না, আপনার বিরোধিতা করার ইচ্ছে আমার নেই। এ ব্যাপারটি নিয়ে তাঁদের আওয়াজ উঁচু হয়ে গেল। তখন আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন, “হে মুমিনগণ! তোমরা নাবীর গলার আওয়াজের উপর নিজেদের গলার আওয়াজ উঁচু করিবে না”…..শেষ পর্যন্ত।
ইবনু যুবায়র (রাদি.) বলেন, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর উমার (রাদি.) এ তো আস্তে কথা বলিতেন যে, দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তা শুনতে পেতেন না। তিনি আবু বাক্র (রাদি.) সম্পর্কে এমন কথা বর্ণনা করেননি। [৪৩৬৭] (আ.প্র. ৪৪৭৮, ই.ফা. ৪৪৮১)
৪৮৪৬
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নাবী (সাঃআঃ) সাবিত ইবনু কায়স (রাদি.)-কে খুঁজে পেলেন না। একজন সহাবী বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনার কাছে তাহাঁর সংবাদ নিয়ে আসছি। তারপর লোকটি তাহাঁর কাছে গিয়ে দেখলেন যে, তিনি তাহাঁর ঘরে মাথা নীচু করে বসে আছেন। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, আপনার কী অবস্থা? তিনি বলিলেন, খারাপ। কারণ এই (অধম) তার আওয়াজ নাবী (সাঃআঃ)-এর আওয়াজের চেয়ে উঁচু করে কথা বলত। ফলে, তার আমাল বরবাদ হয়ে গেছে এবং সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। তারপর লোকটি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে ফিরে এসে খবর দিলেন যে, তিনি এমন এমন কথা বলছেন। মূসা বলেন, এরপর লোকটি এক মহাসুসংবাদ নিয়ে তাহাঁর কাছে ফিরে গেলেন (এবং বলিলেন) নাবী (সাঃআঃ) আমাকে বলেছেন, তুমি যাও এবং তাকে বল, তুমি জাহান্নামী নও, বরং তুমি জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত। [৩৬১৩] (আ.প্র. ৪৪৭৮, ই.ফা. ৪৪৮২)
৬৫/৪৯/২.অধ্যায়ঃ যারা ঘরের পেছন থেকে আপনাকে চিৎকার করে ডাকে, তাদের অধিকাংশই অবুঝ। (সুরা আল-হুজুরাত ৪৯/৪)
৪৮৪৭
ইবনু আবু মুলাইকাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাদি.) তাদেরকে জানিয়েছেন যে, একবার বানী তামীম গোত্রের একদল লোক সাওয়ার হয়ে নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে আসলেন। আবু বাক্র সিদ্দীক (রাদি.) বলিলেন, কাকা ইবনু মাবাদ (রাদি.)-কে আমীর বানানো হোক এবং উমার (রাদি.) বলিলেন, আকরা ইবনু হাবিস (রাদি.)-কে আমীর নিয়োগ করা হোক। তখন আবু বাক্র সিদ্দীক (রাদি.) বলিলেন, আপনার ইচ্ছে হলো কেবল আমার বিরোধিতা করা। উত্তরে উমার (রাদি.) বলিলেন, আমি আপনার বিরোধিতা করার ইচ্ছে করিনি। এ নিয়ে তাঁরা পরস্পর তর্ক-বিতর্ক করিতে লাগলেন, এক পর্যায়ে তাদের আওয়াজ উঁচু হয়ে গেল। এ উপলক্ষে আল্লাহ অবতীর্ণ করিলেন, “হে মুমিনগণ! আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের সমক্ষে তোমরা কোন বিষয়ে অগ্রণী হয়ো না…..আয়াত শেষ। [৪৩৬৭] (আ.প্র. ৪৪৮০, ই.ফা. ৪৪৮৩)
Leave a Reply