সুরা হুজরাতের তাফসীর । তাফসিরুল কুড়ান

সুরা হুজরাতের তাফসীর । তাফসিরুল কুড়ান

সুরা হুজরাতের তাফসীর । তাফসিরুল কুড়ান >> তিরমিজি শরিফের তাফসিরুল কোরআন অধ্যায়ের অন্যান্য সুরার তাফসীর পড়ুন >> সুরা হুজুরাত আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ

অধ্যায়ঃ ৪৪, অনুচ্ছেদ-৫০ঃ সুরা হুজরাতের তাফসীর

৩২৬৬. আবদুল্লাহ ইবনিয যুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আল-আক্বরা ইবনি হাবিস রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এলে আবু বাকর [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাঁকে তার গোত্রের কর্মকর্তা নিয়োগ করুন। উমার [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাকে কর্মচারীর পদে নিয়োগ করবেন না। তারা পরস্পরে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সম্মুখে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হন এবং তাহাদের কন্ঠস্বর চরমে পৌঁছে। আবু বাকর [রাদি.] উমার [রাদি.]–কে বলিলেন, আমার বিরোধিতা করাই আপনার একমাত্র লক্ষ্য। উমার [রাদি.] বলেন, আমার লক্ষ্য আপনার বিরোধিতা করা নয়। বর্ণনাকারী বলেন, এ আয়াতটি তখন অবতীর্ণ হয় [অনুবাদ] “হে ঈমানদারগণ! নাবীর কণ্ঠস্বরের উপর তোমরা নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না” –[সূরা হুজুরাত ২]। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর হইতে উমার [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে কথা বললে তার কথা শুনা যেত না, এমনকি তা বুঝার জন্য আবার ব্যাখ্যা চাওয়ার প্রয়োজন হত।

সহীহঃ বোখারি [হাঃ ৪৮৪৫, ৪৮৪৭]। আবু ঈসা বলেন, ইবনিয যুবাইর তার নানা আবু বাকর [রাযি]-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীসটি কিছু বর্ণনাকারী ইবনি আবী মুলাইকাহর সূত্রে মুরসালরূপে বর্ণনা করিয়াছেন এবং তাতে আবদুল্লাহ ইবনিয যুবাইর [রাযিঃ০-এর উল্লেখ করেননি । সুরা হুজরাতের তাফসীর – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২৬৭. আল-বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

“যারা আপনাকে উচ্চস্বরে ঘরের বাইরে হইতে ডাকে, তাহাদের বেশির ভাগই নির্বোধ”-[সুরা ফাতহ]। বর্ণনাকারী বলেন, জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার প্রসঙ্গে প্রশংসা হল সৌন্দর্য এবং আমার প্রসঙ্গে নিন্দা হল অপমান। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ এ মর্যাদা শুধুমাত্র মহান আল্লাহ তাআলার।

আবু ঈসা বুলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। সুরা হুজরাতের তাফসীর – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২৬৮. আবু জুবাইরাহ ইবনিয যাহহাক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাদের কারো কারো দুতিনটি নাম থাকতো। কোন কোন নামে সম্বোধন করা তাহাদের কাছে মন্দ লাগত। এ প্রসঙ্গেই এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় [অনুবাদ]ঃ “তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে সম্বোধন করো না ……”-[ সুরা ফাতহ]।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ [৩৭৪১] আবু ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস। আবু জুবাইরাহ ইবনিয যাহহাক [রাদি.] হলেন সাবিত ইবনিয যাহহাক আল-আনসারী [রাদি.] এর সহোদর ভাই। আল-হারাভীর সংগী আবু যাইদের নাম সাঈদ ইবনির রাবী বাসরার অধিবাসি নির্ভরযোগ্য রাবী। আবু সালামাহ ইয়াহইয়া ইবনি খালাফ-বিশর ইবনিল মুফাযযাল হইতে, তিনি দাউদ ইবনি আবু হিন্দ হইতে, তিনি শাবী হইতে, তিনি আবু জুবাইরাহ ইবনিয যাহহাক [রাদি.] হইতে উপরের হাদিসের একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। সুরা হুজরাতের তাফসীর – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২৬৯. আবু নাযরাহ [রঃ]হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] তিলাওয়াত করেন [অনুবাদ] : “তোমরা জেনে রাখ যে, আল্লাহর রাসুল তোমাদের মাঝে আছেন। তিনি অনেক বিষয়ে তোমাদের কথা শুনলে তোমরাই ব্যথিত হইতে, কিন্তু তোমাদের কাছে আল্লাহ তাআলা ঈমানকে প্রিয় করিয়াছেন এবং তাঁকে তোমাদের হৃদয়গ্রাহী করিয়াছেন……… ” –[সূরা ফাতহ ৭]। তারপর তিনি বলেন, ইনিই তোমাদের নাবী [সাঃআঃ], তাহাঁর কাছে ওহী পাঠানো হয় এবং তিনি হচ্ছেন তোমাদের সবচেয়ে উত্তম নেতা। রাসুল [সাঃআঃ] বহু বিষয়ে তাহাদের কথা শুনলে তারাই সমস্যায় পড়ে যেতেন। অতএব যদি আজকাল তোমাদের কথা শুনা হয় তাহলে কি পরিস্থিতি হইবে!

হাদীসটির সানাদ সহীহ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ গারীব। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, আমি ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ আল-কাত্তানের কাছে মুসতামির ইবনি রাইয়্যানের অবস্থা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন যে, তিনি নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী।সুরা হুজরাতের তাফসীর – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২৭০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন এবং বলেনঃ হে জনমন্ডলী! তোমাদের হইতে আল্লাহ তাআলা জাহিলিয়াত যুগের দম্ভ ও অহংকার এবং পূর্বপুরুষের গৌরবগাথা বাতিল করিয়াছেন। এখন মানুষ দুই অংশে বিভক্তঃ এক দল মানুষ নেককার, পরহেজগার, আল্লাহ তাআলার নিকট প্রিয় ও সম্মানিত এবং অন্য দল পাপিষ্ঠ, দুর্ভাগা, আল্লাহ তাআলার নিকট অত্যন্ত নিকৃষ্ট, নিচু ও ঘৃণিত। সকল মানুষই আদমের সন্তান। আল্লাহ তাআলা আদম [আঃ]- কে মাটি দিয়ে তৈরী করিয়াছেন। মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “হে লোক সকল! তোমাদেরকে আমি একজন পুরুষ ও একজন নারী হইতে তৈরী করেছি, তারপর বিভিন্ন বংশ ও গোত্রে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি, তোমরা যাতে একে অন্যকে চিনতে পার। যে লোক তোমাদের মাঝে বেশি পরহেজগার সেই আল্লাহ তাআলার নিকট বেশি মর্যাদার অধিকারী। আল্লাহ তাআলা সবকিছু সম্পর্কে জ্ঞাত, সব খবর রাখেন”-[সুরা ফাতহ ১৩]।

সহীহঃ সহীহাহ [হাঃ ২৭০০] আবু ঈসা বলেন, এ হাদিসটি গারীব। এ হাদিসটি আমরা শুধুমাত্র আবদুল্লাহ ইবনি দীনার হইতে, তিনি ইবনি উমার[রাদি.] হইতে, এ সনদেই জেনেছি। আবদুল্লাহ ইবনি জাফর হাদীস শাস্ত্রে অত্যন্ত দুর্বল। তাঁকে ইয়াহইয়া ইবনি মাঈন প্রমুখ দুর্বল বলে আখ্যায়িত করিয়াছেন। আবদুল্লাহ ইবনি জাফর হলেন আলী ইবনি মাদীনীর বাবা।এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরাহ ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস উল্লেখিত। সুরা হুজরাতের তাফসীর – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২৭১. সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ধন-সম্পদ হল আভিজাত্যের প্রতীক এবং পরহেজগারী হল সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক।

সহীহঃ ইরওয়াহ [হাঃ ১৮৭০]। আবু ইসা বলেন, এ হাদিসটি সামুরাহ [রাদি.]-এর উদ্ধৃত হিসেবে হাসান, সহীহ গারীব। এ হাদীস আমরা শুধুমা[সাঃআঃ] সাল্লাম ইবনি আবী মুত্বী –এর সনদে জেনেছি। সুরা হুজরাতের তাফসীর – এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply