সুরা হা-মীম যুখরুফএর তাফসীর
সুরা হা-মীম যুখরুফএর তাফসীর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> সুরা হা-মীম আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
সুরা হা-মীম যুখরুফএর তাফসীর
৬৫/৪৩/১.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তারা চীৎকার করে বলবে, হে মালিক! তোমার প্রতিপালক যেন আমাদের নিঃশেষ করে দেন। (সুরা যুখরুফ ৪৩/৭৭)
(43) سُوْرَةُ حم الزُّخْرُفِ
সুরা (৪৩) : হা-মীম যুখরুফ
وَقَالَ مُجَاهِدٌ {عَلٰى أُمَّةٍ} عَلَى إِمَامٍ {وَقِيْلَه” يَا رَبِّ} تَفْسِيْرُهُ أَيَحْسِبُوْنَ أَنَّا لَا نَسْمَعُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَاهُمْ وَلَا نَسْمَعُ قِيْلَهُمْ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {وَلَوْلَآ أَنْ يَّكُوْنَ النَّاسُ أُمَّةً وَّاحِدَةً} لَوْلَا أَنْ جَعَلَ النَّاسَ كُلَّهُمْ كُفَّارًا لَجَعَلْتُ لِبُيُوْتِ الْكُفَّارِ سَقْفًا مِنْ فِضَّةٍ وَمَعَارِجَ مِنْ فِضَّةٍ وَهِيَ دَرَجٌ وَسُرُرَ فِضَّةٍ {مُقْرِنِيْنَ} مُطِيْقِيْنَ {اٰسَفُوْنَا} أَسْخَطُوْنَا {يَعْشُ} يَعْمَى وَقَالَ مُجَاهِدٌ {أَفَنَضْرِبُ عَنْكُمْ الذِّكْرَ} أَيْ تُكَذِّبُوْنَ بِالْقُرْآنِ ثُمَّ لَا تُعَاقَبُوْنَ عَلَيْهِ {وَمَضٰى مَثَلُ الْأَوَّلِيْنَ} سُنَّةُ الْأَوَّلِيْنَ {وَمَا كُنَّا لَه” مُقْرِنِيْنَ} يَعْنِي الإِبِلَ وَالْخَيْلَ وَالْبِغَالَ وَالْحَمِيْرَ {يَنْشَأُ فِي الْحِلْيَةِ} الْجَوَارِيْ جَعَلْتُمُوْهُنَّ لِلرَّحْمَنِ وَلَدًا {فَكَيْفَ تَحْكُمُوْنَ لَوْ شَآءَ الرَّحْمٰنُ مَا عَبَدْنَاهُمْ} يَعْنُوْنَ الْأَوْثَانَ يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى {مَا لَهُمْ بِذٰلِكَ مِنْ عِلْمٍ} أَيْ الْأَوْثَانُ إِنَّهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ {فِيْ عَقِبِهِ} وَلَدِهِ {مُقْتَرِنِيْنَ} يَمْشُوْنَ مَعًا {سَلَفًا} قَوْمُ فِرْعَوْنَ سَلَفًا لِكُفَّارِ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ e وَمَثَلًا عِبْرَةً {يَصِدُّوْنَ} يَضِجُّوْنَ {مُبْرِمُوْنَ} مُجْمِعُوْنَ {أَوَّلُ الْعَابِدِيْنَ} أَوَّلُ الْمُؤْمِنِيْنَ وَقَالَ غَيْرُهُ {إِنَّنِيْ بَرَآءٌ مِمَّاتَعْبُدُوْنَ} الْعَرَبُ تَقُوْلُ نَحْنُ مِنْكَ الْبَرَاءُ وَالْخَلَاءُ وَالْوَاحِدُ وَالِاثْنَانِ وَالْجَمِيْعُ مِنَ الْمُذَكَّرِ وَالْمُؤَنَّثِ يُقَالُ فِيْهِ بَرَاءٌ لِأَنَّهُ مَصْدَرٌ وَلَوْ قَالَ بَرِيْءٌ لَقِيْلَ فِي الِاثْنَيْنِ بَرِيئَانِ وَفِي الْجَمِيْعِ بَرِيئُوْنَ وَقَرَأَ عَبْدُ اللهِ إِنَّنِيْ بَرِيْءٌ بِالْيَاءِ وَالزُّخْرُفُ الذَّهَبُ {مَلَآئِكَةً} يَخْلُفُوْنَ يَخْلُفُ بَعْضُهُمْ بَعْضًا.
মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, عَلٰى أُمَّةٍ এক নেতার অনুসারী। وَقِيْلَه يَا رَبِّ এর ব্যাখ্যা এই যে, কাফিররা কি মনে করে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও মন্ত্রণার খবর রাখি না এবং আমি তাদের কথাবার্তা শুনি না? ইবনু আববাস (রাদি.) বলেছেন, وَلَوْلَا أَنْ يَّكُوْنَ النَّاسُ أُمَّةً وَّاحِدَةً যদি সমস্ত মানুষ কাফের হয়ে যাবার আশংকা না থাকত, তাহলে আমি কাফেরদের গৃহের জন্য দিতাম রৌপ্য নির্মিত ছাদ এবং রৌপ্য নির্মিত মারিজ অর্থাৎ সিঁড়ি আর রৌপ্য নির্মিত পালঙ্ক। مُقْرِنِيْنَ সামর্থ্যবান লোক। اٰسَفُوْنَا তারা আমাকে রাগান্বিত করিল। يَعْشُ অন্ধ হয়ে যায়। মুজাহিদ বলেছেন, أَفَنَضْرِبُ عَنْكُمْ الذِّكْرَ তোমরা কুরআন মাজীদকে মিথ্যা মনে করিবে, তারপর এজন্য কি তোমাদের শাস্তি দেয়া হইবে না? وَمَضٰى مَثَلُ الْأَوَّلِيْنَ পূর্ববর্তী লোকদের উদাহরণ। وَمَا كُنَّا لَهচ مُقْرِنِيْنَ উট, ঘোড়া, খচ্চর ও গাধাকে বোঝানো হয়েছে। يَنْشَأُ فِي الْحِلْيَةِ কন্যা সন্তান; এদের তোমরা আল্লাহর সন্তান সাব্যস্ত করছ- এ তোমরা কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ ……… لَوْ شَآءَ الرَّحْمٰنُ مَا عَبَدْنَاهُمْ আয়াতাংশে বর্ণিত هم সর্বনাম-এর দ্বারা মূর্তিকে বোঝানো হয়েছে। কেননা, আল্লাহ বলেছেন, مَا لَهُمْ بِذَلِكَ مِنْ عِلْمٍ এ সম্বন্ধে প্রতিমাদের কোন জ্ঞান নেই। فِيْ عَقِبِهٰ তার সন্তানদের মধ্যে مُقْتَرِنِيْنَ এক সঙ্গে তারা চলে আসছিল। سَلَفًا দ্বারা উদ্দেশ্য ফিরআউন সম্প্রদায়। কেননা, মুহাম্মাদ সাঃআঃ-এর উম্মাতের কাফেরদের জন্য তারা হচ্ছে অগ্রগামী দল এবং তারা হচ্ছে শিক্ষা গ্রহণের এক নমুনা। يَصِدُّوْنَ তারা চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। مُبْرِمُوْنَ আমিই তো সিদ্ধান্ত দানকারী। أَوَّلُالْعَابِدِيْنَ মুমিনদের অগ্রণী। إِنَّنِيْ بَرَآءٌ مِّمَّا تَعْبُدُوْنَ আরবরা বলে, نَحْنُ مِنْكَ الْبَرَآءُ وَالْخَلَآءُ আমরা তোমার থেকে পৃথক, পুরুষলিঙ্গ, স্ত্রীলিঙ্গ, বহুবচন, দ্বিবচন ও একবচন সকল ক্ষেত্রে الْبَرَآءُ শব্দটি একইভাবে ব্যবহৃত হয়। কেননা, এ শব্দটি হচ্ছে মাসদার (মূল শব্দ) । যদি بَرِيْءٌ বল, তাহলে দ্বিবচনে بَرِيئَآنِ বলা হইবে এবং বহুবচনে বলা হইবে بَرِيــٓئُوْنَ। আবদুল্লাহ إِنَّنِيْبَرِيْٓءٌ (ياদ্বারা) পাঠ করিতেন। الزُّخْرُفُ স্বর্ণ। مَلَآئِكَةً তারা পরস্পরের স্থলাভিষিক্ত হতো।
৪৮১৯
ইয়ালা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে মিম্বরে পড়তে শুনিয়াছি وَنَادَوْا يَا مَالِكُ لِيَقْضِ عَلَيْنَا رَبُّكَ (তারা চীৎকার করে বলবে, হে মালিক! তোমার প্রতিপালক যেন আমাদের নিঃশেষ করে দেন।) ক্বাতাদাহ বলেন, مَثَلاً لِلْآخِرِينَ এর অর্থ পরবর্তী লোকদের জন্য নাসীহাত।
ক্বাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ব্যতীত অন্যান্য মুফাস্সির বলেছেন, مُقْرِنِينَ নিয়ন্ত্রণকারী। বলা হয় فُلاَنٌ مُقْرِنٌ لِفُلاَنٍ অর্থাৎ তার নিয়ন্তা। َالأَكْوَابُ অর্থ হাতল বিহীন পানপাত্র। ক্বাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) أُمِّ الْكِتَابِ সম্পর্কে বলেন, তা হচ্ছে মূল কিতাব ও সারাংশ। أَوَّلُ الْعَابِدِينَ অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর কোন সন্তান নেই- এ কথা প্রত্যাখ্যানকারী সর্বপ্রথম আমি নিজেই। رَجُلٌ عَابِدٌ وَعَبِدٌ দু ধরনের ব্যবহার রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ পাঠ করিতেন। কোন কোন মুফাস্সির বলেন, أَوَّلُ الْعَابِدِينَ -এ বর্ণিত الْعَابِدِينَ শব্দটি عَبِدَ يَعْبَد এর ওজনে এসেছে; যার অর্থ অস্বীকারকারী। [৩২৩০] (আ.প্র. ৪৪৫৫, ই.ফা. ৪৪৫৭)
৬৫/৪৩/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আমি কি তোমাদের থেকে নাসীহাতপূর্ণ কুরআন এজন্য প্রত্যাহার করে নেব যে, তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী লোক? (সুরা যুখরুফ ৪৩/৫)
مُشْرِكِيْنَ وَاللهِ لَوْ أَنَّ هَذَا الْقُرْآنَ رُفِعَ حَيْثُ رَدَّهُ أَوَائِلُ هَذِهِ الْأُمَّةِ لَهَلَكُوْا {فَأَهْلَكْنَآ أَشَدَّ مِنْهُمْ بَطْشًا وَّمَضَى مَثَلُ الْأَوَّلِيْنَ} عُقُوْبَةُ الْأَوَّلِيْنَ {جُزْءًا} عِدْلًا.
উপরোক্ত আয়াতে উল্লিখিত مُسْرِفِيْنَ এর অর্থ مُشْرِكِيْنَ অর্থাৎ আমি কি তোমাদের হইতে এই নাসীহাত বাণী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নেব এই কারণে যে, তোমরা মুশরিক? আল্লাহর কসম! এ উম্মাতের প্রথম অবস্থায় যখন (কুরাইশগণ) আল-কুরআনকে প্রত্যাখ্যান করেছিল; তখন যদি তাকে প্রত্যাহার করা হত, তাহলে তাঁরা সকলেই ধ্বংস হয়ে যেত। فَأَهْلَكْنَآ أَشَدَّ مِنْهُمْ بَطْشًا وَّمَضٰى مَثَلُ الْأَوَّلِيْنَএর মাঝে বর্ণিত مَثَلُ الْأَوَّلِيْنَএর অর্থ তাদের মধ্যে যারা তাদের অপেক্ষা শক্তিতে প্রবল ছিল, তাদের আমি ধ্বংস করেছিলাম। আর এভাবেই চলে এসেছে পূর্ববর্তী লোকদের শাস্তির দৃষ্টান্ত। جُزْءًا সমকক্ষ। (আ.প্র. ৪৪৫৫, ই.ফা. ৪৪৫৭)
(44) سُوْرَةُ حم الدُّخَانِ
Leave a Reply