সুরা সোয়াদ এর তাফসীর
সুরা সোয়াদ এর তাফসীর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> সুরা সা’দ আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
সুরা সোয়াদ এর তাফসীর
৬৫/৩৮/১.অধ্যায়ঃ পরিচ্ছেদ নাই।
৪৮০৬
আও্ওয়াম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মুজাহিদকে সুরা সাদ-এর সাজদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, (এ বিষয়ে) ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি পাঠ করিলেন, أُولَئِكَ الَّذِينَ هَدَى اللهُ فَبِهُدَاهُمْ اقْتَدِهْ তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করিয়াছেন, সুতরাং তাঁদের পথের অনুসরণ কর। ইবনু আব্বাস (রাদি.) এতে সাজদাহ করিতেন।” [৩৪২১] (আ.প্র. ৪৪৪২, ই.ফা. ৪৪৪৩)
৪৮০৭
আও্ওয়াম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মুজাহিদকে সুরা সাদ-এর সাজদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, (এ সুরায়) সাজদা কোত্থেকে? তিনি বলিলেন, তুমি কি কুরআনের এ আয়াত পড়নি। وَمِنْ ذُرِّيَّتِهِ دَاوُدَ وَسُلَيْمَانَ أُولَئِكَ الَّذِينَ هَدَى اللهُ فَبِهُدَاهُمْ اقْتَدِهْ “আর তার বংশধর দাউদ ও সুলায়মান- তাদেরই আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করিয়াছেন, সুতরাং তাঁদের পথের অনুসরণ কর। দাঊদ তাঁদের একজন, তোমাদের নাবীকে যাদের অনুসরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই নাবী এ সুরায় সাজ্দাহ করিয়াছেন।
عُجَابٌ অত্যাশ্চর্য। الْقِطُّ লিপি। এখানে صَحِيفَةُ দ্বারা নেক লিপি বোঝানো হয়েছে। মুজাহিদ বলেছেন, فِي عِزَّةٍ ঔদ্ধত্য। الْمِلَّةِ الْآخِرَةِ কুরাইশদের ধর্ম। الاخْتِلاَقُ মিথ্যা। الأَسْبَابُ আকাশের পথসমূহ جُنْدٌ مَا هُنَالِكَ مَهْزُومٌ এ বাহিনীও সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পরাজিত হইবে অর্থাৎ কুরাইশ সম্প্রদায়। أُولَئِكَ الأَحْزَابُ অতীতকাল। فَوَاقٍ প্রত্যাবর্তন। قِطَّنَا আমাদের শাস্তি। اتَّخَذْنَاهُمْ سُخْرِيًّا আমি তাদের বেষ্টন করে রেখেছি। أَتْرَابٌ সমবয়স্কা। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, ইবাদাতে শক্তিশালী ব্যক্তি। الأَبْصَارُ আল্লাহর কাছে সূক্ষ্মদর্শী ব্যক্তি। حُبَّ الْخَيْرِ عَنْ ذِكْرِ رَبِّي আল্লাহর স্মরণ থেকে। طَفِقَ مَسْحًا তিনি ঘোড়াগুলোর পা ও গলায় হাত বুলাতে লাগলেন। الأَصْفَادِ শৃংখল (বাঁধন)। [৩৪২১] (আ.প্র. ৪৪৪৩, ই.ফা. ৪৪৪৪)
৬৫/৩৮/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজ্য দান করুন, যা আমি ব্যতীত আর কারও ভাগ্যে যেন না জোটে। নিশ্চয়ই আপনি পরম দাতা। (সুরা স-দ ৩৮/৩৫)
৪৮০৮
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, গতরাতে অবাধ্য জিনের একটি দৈত্য আমার কাছে এসেছিল অথবা এ ধরনের কিছু কথা তিনি বলিলেন, আমার সলাত নষ্ট করার উদ্দেশে। তখন আল্লাহ আমাকে তার উপর আধিপত্য দিলেন। আমি ইচ্ছা করলাম, মসজিদের খুঁটিগুলোর একটির সঙ্গে ওকে বেঁধে রাখতে, যাতে ভোরে তোমরা সকলে ওটা দেখিতে পাও। তখন আমার ভাই সুলায়মান (আ.)-এর দুআ স্মরণ হল, رَبِّ هَبْ لِي مُلْكًا لاَ يَنْبَغِي لِأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দান কর এমন এক রাজ্য যার অধিকারী আমি ব্যতীত আর কেউ না হয়।” রাবী রাওহ বলেন, এরপর নাবী (সাঃআঃ) তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন। [৪৬১] (আ.প্র. ৪৪৪৪, ই.ফা. ৪৪৪৫)
৬৫/৩৮/৩.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আমি নকল লৌকিকতাকারীও নই। (সুরা সোয়াদ ৩৮/৮৬)
৪৮০৯
মাসরূক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.)-এর কাছে গেলাম। তিনি বলিলেন, হে লোকসকল! যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে অবগত সে তা বর্ণনা করিবে। আর যে না জানে, তার বলা উচিত, আল্লাহই ভাল জানেন। কেননা অজানা বিষয় সম্বন্ধে আল্লাহই ভাল জানেন, এ কথা বলাও জ্ঞানের নিদর্শন। আল্লাহ তাহাঁর নাবী (সাঃআঃ)-কে বলেছেন, বল, এর (কুরআন বা তাওহীদ প্রচারের) জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না এবং আমি বানোয়াটকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই।” (কুরআনে উল্লেখিত) ধূম্র সম্পর্কে শীঘ্র আমি তোমাদের বলব। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) কুরাইশদেরকে ইসলামের প্রতি দাওয়াত দিলে তারা (সাড়া দিতে) বিলম্ব করিল। তখন তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ! ইউসুফ (আ.)-এর জীনবকালের দুর্ভিক্ষের সাত বছরের মত দুর্ভিক্ষ দ্বারা তুমি আমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য কর। এরপর দুর্ভিক্ষ তাদেরকে ঘিরে ফেলল। শেষ হয়ে গেল সমস্ত কিছু। অবশেষে তারা মৃত জন্তু ও চামড়া খেতে লাগল। তখন তাদের কেউ আকাশের দিকে তাকালে ক্ষুধার জ্বালায় চোখে আকাশ ও তার মধ্যে ধূম্র দেখত। আল্লাহ বলিলেন, “অতএব তুমি সেদিনের অপেক্ষা কর, যেদিন ধূম্র হইবে আকাশে, এবং তা ঘিরে ফেলবে সকল মানুষ। এ তো মর্মন্তুদ শাস্তি।” রাবী বলেন, তারপর তারা দুআ করিল, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের এ আযাব থেকে নাজাত দাও, আমরা ঈমান আনব। তারা কীভাবে নাসীহাত মানবে? তাদের কাছে তো এসেছে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাদাতা এক রাসুল। তারপর তারা মুখ ঘুরিয়ে নিল তাহাঁর থেকে এবং বলিল, সে তো শিখানো কথা বলে, সে তো এক উন্মাদ। আমি তোমাদের শাস্তি কিছুকালের জন্য রহিত করছি। তোমরা তো অবশ্য তোমাদের আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। (ইবনু মাসউদ বলেন), ক্বিয়ামাতের দিনও কি তাদের থেকে আযাব রহিত করা হইবে? তিনি (ইবনু মাসউদ) বলেন, আযাব সরানো হলে তারা পুনরায় কুফ্রীর দিকে ফিরে গেল। তারপর আল্লাহ তাআলা বদর যুদ্ধের দিন তাদের পাকড়াও করিলেন। আল্লাহ বলেন, যেদিন আমি তোমাদের কঠিনভাবে ধরব, সেদিন আমি তোমাদের শাস্তি দেবই। [১০০৭] (আ.প্র. ৪৪৪৫, ই.ফা. ৪৪৪৬)
Leave a Reply