সুরা সাবা এর তাফসীর
সুরা সাবা এর তাফসীর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> সুরা সা’বা আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
সুরা সাবা এর তাফসীর
৬৫/৩৪/১.অধ্যায়ঃ অধ্যায়: আল্লাহ তাআলার বাণীঃ এমনকি, যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় দূর হইবে তখন তারা একে অন্যকে বলবে- তোমাদের রব কী বলিলেন? তারা বলবে, সত্য বলেছেন। তিনিই সমুন্নত, সুমহান। (সুরা সাবা ৩৪/২৩)
সুরা (৩৪) : সাবা
يُقَالُ {مُعَاجِزِيْنَ} مُسَابِقِيْنَ {بِمُعْجِزِيْنَ} بِفَائِتِيْنَ {مُعَاجِزِيْنَ} مُغَالِبِيْنَ {سَبَقُوْا} فَاتُوْا {لَايُعْجِزُوْنَ} لَا يَفُوْتُوْنَ {يَسْبِقُوْنَا} يُعْجِزُوْنَا وَقَوْلُهُ {بِمُعْجِزِيْنَ} بِفَائِتِيْنَ وَمَعْنَى {مُعَاجِزِيْنَ} مُغَالِبِيْنَ يُرِيْدُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا أَنْ يُظْهِرَ عَجْزَ صَاحِبِهِ {مِعْشَارٌ} عُشْرٌ يُقَالُ {الْأُكُلُ} الثَّمَرُ {بَاعِدْ} وَبَعِّدْ وَاحِدٌ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {لَايَعْزُبُ}لَا يَغِيْبُ سَيْلَ {الْعَرِمِ} السُّدُّ مَاءٌ أَحْمَرُ أَرْسَلَهُ اللهُ فِي السُّدِّ فَشَقَّهُ وَهَدَمَهُ وَحَفَرَ الْوَادِيَ فَارْتَفَعَتَا عَنِ الْجَنْبَيْنِ وَغَابَ عَنْهُمَا الْمَاءُ فَيَبِسَتَا وَلَمْ يَكُنْ الْمَاءُ الْأَحْمَرُ مِنْ السُّدِّ وَلَكِنْ كَانَ عَذَابًا أَرْسَلَهُ اللهُ عَلَيْهِمْ مِنْ حَيْثُ شَاءَ
وَقَالَ عَمْرُوْ بْنُ شُرَحْبِيْلَ الْعَرِمُ الْمُسَنَّاةُ بِلَحْنِ أَهْلِ الْيَمَنِ وَقَالَ غَيْرُهُ الْعَرِمُ الْوَادِيْ {السَّابِغَاتُ} الدُّرُوْعُ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {يُجَازَى} يُعَاقَبُ {أَعِظُكُمْ بِوَاحِدَةٍ} بِطَاعَةِ اللهِ {مَثْنٰى وَفُرَادٰى} وَاحِدٌ وَاثْنَيْنِ {التَّنَاوُشُ} الرَّدُّ مِنَ الْآخِرَةِ إِلَى الدُّنْيَا {وَبَيْنَ مَا يَشْتَهُوْنَ} مِنْ مَالٍ أَوْ وَلَدٍ أَوْ زَهْرَةٍ {بِأَشْيَاعِهِمْ} بِأَمْثَالِهِمْ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَالْجَوَابِ {كَالْجَوْبَةِ} مِنَ الْأَرْضِ {الْخَمْطُ} الْأَرَاكُ {وَالأَثَلُ} الطَّرْفَاءُ {الْعَرِمُ} الشَّدِيْدُ.
مُعَاجِزِيْنَ প্রতিযোগিতাকারী بِمُعْجِزِيْنَ ব্যর্থকারী। مُعَاجِزِيْنَ বিজয়ী হওয়ার প্রয়াসী। سَبَقُوْا ছুটে গিয়েছে, পরিত্রাণ পেয়েছে। لَايُعْجِزُوْنَ তারা ছুটে যেতে পারবে না, ছাড়া পাবে না। يَسْبِقُوْنَا আমাদের অক্ষম করিবে। بِمُعْجِزِيْنَ ব্যর্থকারী। مُعَاجِزِيْنَ পরস্পর বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশী। প্রত্যেকেই তার প্রতিপক্ষের অক্ষমতা প্রকাশ করিতে চায়। مِعْشَارٌ এক-দশমাংশ। الْأُكُلُ ফল, بَاعِدْ – بَعِّدْ একই অর্থ, দূরত্ব করে দাও। মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, لَايَعْزُبُ অদৃশ্য হয় না। الْعَرِمِ বাঁধ, আল্লাহ তাআলা সে বাঁধের মধ্য দিয়ে লাল পানি প্রবাহিত করে তা ফাটিয়ে ধ্বংস করে দেন এবং একটি উপত্যকা খুদে ফেলেন। ফলে তার দুপার্শ্ব উঁচু হয়ে তা থেকে পানি সরে পড়ে এবং উভয় পার্শ্ব শুকিয়ে যায়। এ লাল পানি বাঁধ থেকে আসেনি, বরং তা ছিল তাদের প্রতি আল্লাহর প্রেরিত আযাব, যা তিনি যেখান থেকে ইচ্ছে পাঠিয়েছিলেন।
আমর ইবনু শুরাহ্বীল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, الْعَرِمُ ইয়ামানবাসীদের ভাষায় কুঁজের মত উঁচু। অন্য হইতে বর্ণিত। الْعَرِمُউপত্যকা, السَّابِغَاتُ বর্মসমূহ। মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, يُجَازَى শাস্তি দেয়া হইবে। أَعِظُكُمْ بِوَاحِدَةٍআল্লাহর আনুগত্য। مَثْنَىوَفُرَادَى একা একা এবং দু দুজন। التَّنَاوُشُ পরজগত থেকে দুনিয়ার দিকে ফিরে আসা। وَبَيْنَ مَا يَشْتَهُوْنَ অর্থাৎ সম্পদ, সন্ততি বা জাঁক-জমক। بِأَشْيَاعِهِمْ তাদের মত। ইবনু আববাস (রাদি.) বলেন, كَالْجَوْبَةِ যমীনে হাউজ সদৃশ। الْخَمْطُ বিস্বাদ বৃক্ষ। الْأَثَلُ ঝাউ গাছ। الْعَرِمُ কঠিন।
৪৮০০
ইকরিমাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু হুরাইরাহ (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন আকাশে কোন ফায়সালা করেন তখন মালায়িকাহ আল্লাহর নির্দেশের প্রতি অতি নম্রভাবে তাদের ডানা ঝাড়তে থাকে; যেন মসৃণ পাথরের উপর শিকলের আওয়াজ। যখন তাদের মনের ভয়-ভীতি দূর হয় তারা (একে অপরকে) জিজ্ঞেস করে, তোমাদের প্রতিপালক কী বলেছেন? তারা বলেন, তিনি যা বলেছেন, সত্যই বলেছেন। তিনি মহান উচ্চ। যে সময়ে লুকোচুরিকারী (শায়ত্বন) তা শোনে, আর লুকোচুরিকারী এরূপ একের ওপর এক। সুফ্ইয়ান তাহাঁর হাত উপরে উঠিয়ে আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে দেখান। তারপর শয়তান কথাগুলো শুনে নেয় এবং প্রথমজন তার নিচের জনকে এবং সে তার নিচের জনকে জানিয়ে দেয়। এমনিভাবে এ খবর দুনিয়ার জাদুকর ও জ্যোতিষের কাছে পৌঁছে দেয়। কোন কোন সময় কথা পৌঁছানোর আগে তার উপর অগ্নিশিখা নিক্ষিপ্ত হয় আবার অগ্নিশিখা নিক্ষিপ্ত হওয়ার আগে সে কথা পৌঁছিয়ে দেয় এবং এর সাথে শত মিথ্যা মিশিয়ে বলে। এরপর লোকেরা বলাবলি করে সে কি অমুক দিন অমুক অমুক কথা আমাদের বলেনি? এবং সেই কথা যা আসমান থেকে শুনে এসেছে তার জন্য সব কথা সত্য বলে মনে করে। [৪৭০১] (আ.প্র. ৪৪৩৬, ই.ফা. ৪৪৩৭)
৬৫/৩৪/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ সে তো পরবর্তী কঠিন আযাব সম্পর্কে তোমাদের একজন সতর্ককারী মাত্র। (সুরা সাবা ৩৪/৪৬)
৪৮০১
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) একদিন সাফা পাহাড়ে আরোহণ করে ইয়া সাবাহাহ বলে সবাইকে ডাক দিলেন। কুরাইশগণ তাহাঁর কাছে জমায়েত হয়ে বলিল, তোমার ব্যাপার কী? তিনি বলিলেন, তোমরা বল তো, আমি যদি তোমাদের বলি যে, শত্রুবাহিনী সকাল বা সন্ধ্যায় তোমাদের উপর আক্রমণ করিতে প্রস্তুত, তবে কি তোমরা আমার এ কথা বিশ্বাস করিবে? তারা বলিল, নিশ্চয়ই। তিনি বলিলেন, আমি তোমাদের জন্য এক আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে ভয় প্রদর্শন করছি। এ কথা শুনে আবু লাহাব বলিল, তোমার ধ্বংস হোক। এই জন্যই কি আমাদেরকে জমায়েত করেছিলে? তখন আল্লাহ নাযিল করেন ঃ تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ “আবু লাহাবের হাত দুটো ধ্বংস হোক।” [১৩৯৪] (আ.প্র. ৪৪৩৭, ই.ফা. ৪৪৩৮)
Leave a Reply