সুরা মুনাফিকূন এর তাফসীর
সুরা মুনাফিকূন এর তাফসীর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> সুরা মুনাফিক্বুন আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
সুরা মুনাফিকূন এর তাফসীর
৬৫/৬৩/১.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ মুনাফিকরা যখন আপনার কাছে আসে তখন তারা বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রাসুল। আর আল্লাহ জানেন যে, নিশ্চয় আপনি তো তাহাঁর রাসুল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাচারী। (সুরা মুনাফিকুন ৬৩/১)
(63) سُوْرَةُ الْمُنَافِقِيْنَ
সুরা (৬৩) : মুনাফিকূন
৪৯০০
যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমি শারীক হয়েছিলাম। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবাইকে বলিতে শুনলাম, আল্লাহর রসূলের সঙ্গীদের জন্য তোমরা ব্যয় করিবে না, যতক্ষণ না তারা তাহাঁর থেকে সরে পড়ে এবং সে এও বলিল, আমরা মদিনায় ফিরলে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে। এ কথা আমি আমার চাচা কিংবা উমার (রাদি.)-এর কাছে বলে দিলাম। তিনি তা নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে জানালেন। ফলে তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁকে বিস্তারিত এ সব কথা বলে দিলাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উবাই এবং তার সাথী-সঙ্গীদের কাছে খবর পাঠালেন, তারা সকলেই কসম করে বলিল, এমন কথা তারা বলেননি। ফলে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার কথাকে মিথ্যা ও তার কথাকে সত্য বলে মেনে নিলেন। এতে আমি এমন মনে কষ্ট পেলাম, যেরূপ কষ্ট আর কখনও পাইনি। আমি (মনের দুঃখে) ঘরে বসে গেলাম। আমার চাচা আমাকে বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তোমাকে মিথ্যাচারী মনে করিয়াছেন এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে তুমি কী করে মনে করলে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন, “যখন মুনাফিকগণ তোমার কাছে আসে।” নাবী (সাঃআঃ) আমার কাছে লোক পাঠালেন এবং এ সুরা পাঠ করিলেন। এরপর বলিলেন, হে যায়দ! আল্লাহ তাআলা তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা দিয়েছেন। [৪৯০১, ৪৯০২, ৪৯০৩, ৪৯০৪; মুসলিম ৫০/হাদীস ২৭৭২, আহমাদ ১৯৩০৫] (আ.প্র. ৪৫৩২, ই.ফা. ৪৫৩৬)
৬৫/৬৩/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তারা নিজেদের শপথসমূহকে ঢালরূপে ব্যবহার করে। (সুরা মুনাফিকূন ৬৩/২)
৪৯০১
যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার চাচার সঙ্গে ছিলাম। এ সময় আমি আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূলকে বলিতে শুনিয়াছি যে, তোমরা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গীদের জন্য ব্যয় করিবে না, যতক্ষণ না তারা তার থেকে সরে পড়ে এবং সে এও বলিল যে, আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে। এ কথা আমি আমার চাচার কাছে বলে দিলাম। আমার চাচা তা (রাসুল) রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে বলিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উবাই এবং তার সাথী-সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠালেন। তারা সকলেই কসম করে বলিল, তারা এ কথা বলেনি। ফলে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাদের কথাকে সত্য এবং আমার কথাকে মিথ্যা মনে করিলেন। এতে আমার এমন দুঃখ হল যেমন দুঃখ আর কখনও হয়নি। এমনকি আমি ঘরে বসে গেলাম। তখন আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে।” থেকে “তারা বলে আল্লাহর রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করিবে না, যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে” এবং “তথা থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে বহিষ্কৃত করিবেই।” এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন এবং আমার সামনে তা তিনি পাঠ করিলেন। তারপর বলিলেন, আল্লাহ তাআলা তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা করিয়াছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৩, ই.ফা. ৪৫৩৭)
৬৫/৬৩/৩.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ এটা এ কারণে যে, তারা ঈমান আনার পর কুফরী করেছে, ফলে তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে, তাই তারা বোঝে না। (সুরা মুনাফিকুন ৬৩/৩)
৪৯০২
যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উবাই যখন বলিল, “আল্লাহর রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করিবে না” এবং এ-ও বলিল যে, “যদি আমরা মদিনায় প্রত্যাবর্তন করি…..।” তখন এ খবর আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে জানিয়ে দিলাম। এ কারণে আনসারগণ আমাকে ভর্ৎসনা করিলেন এবং আবদুল্লাহ ইবনু উবাই কসম করে বলিল, এমন কথা সে বলেনি। এরপর আমি আমার অবস্থানে ফিরে আসলাম এবং ঘুমিয়ে পড়লাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি তাহাঁর কাছে গেলাম। তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহ তোমাকে সত্য বলে ঘোষণা করিয়াছেন এবং অবতীর্ণ করিয়াছেন- “তারা বলে তোমরা ব্যয় করিবে না….শেষ পর্যন্ত। ইবনু আবু যায়িদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) উক্ত হাদীস যায়দ ইবনু আরকামের মাধ্যমে নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৪, ই.ফা. ৪৫৩৮)
৬৫/৬৩/৪.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর যখন আপনি তাদেরকে দেখবেন, তখন তাদের দৈহিক গঠন আপনাকে চমৎকৃত করিবে। আর যদি তারা কথা বলিতে থাকে, আপনি তাদের কথা শুনবেন, যদিও তারা দেয়ালে ঠেস লাগানো কাঠ সদৃশ। তারা প্রত্যেকটি শোরগোলকে নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে। তারাই শত্রু, আপনি এদের থেকে সতর্ক থাকুন। আল্লাহ এদেরকে বিনাশ করুন। এরা বিভ্রান্ত হয়ে কোন্ দিকে যাচ্ছে? (সুরা মুনাফিকূন ৬৩/৪)
৪৯০৩
যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা কোন এক সফরে নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে বের হলাম। সফরে এক কঠিন অবস্থা লোকদেরকে গ্রাস করে নিল। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবাই তার সাথী-সঙ্গীদেরকে বলিল, “আল্লাহর রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করিবে না যতক্ষণ তারা সরে পড়ে যারা তার আশে পাশে আছে।” সে এও বলিল, “আমরা মদিনায় প্রত্যাবর্তন করলে তথা হইতে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদের বহিষ্কৃত করিবেই।” (এ কথা শুনে) আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এলাম এবং তাঁকে এ সম্পর্কে জানালাম। তখন তিনি আবদুল্লাহ ইবনু উবাইকে ডেকে পাঠালেন। সে অতি জোর দিয়ে কসম খেয়ে বলিল, এ কথা সে বলেনি। তখন লোকেরা বলিল, যায়দ রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে মিথ্যা কথা বলেছে। তাদের এ কথায় আমার খুব দুঃখ হল। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা আমার সত্যতার পক্ষে আয়াত অবতীর্ণ করিলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে।” এরপর নাবী (সাঃআঃ) তাদেরকে ডাকলেন, যাতে তিনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, “কিন্তু তারা তাদের মাথা ফিরিয়ে নিল।” (আ.প্র. ৪৫৩৫, ই.ফা. ৪৫৩৯)
আল্লাহর বাণী ঃ “দেয়ালে ঠেস লাগানো কাঠ সদৃশ” (সুরা মুনাফিকূন ৬৩/৪)। রাবী বলেন, লোকগুলো দেখিতে খুব সুন্দর ছিল। [৪৯০০] (আ.প্র. অনুচ্ছেদ, ই.ফা. অনুচ্ছেদ)
৬৫/৬৩/৫.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ
وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا يَسْتَغْفِرْ لَكُمْ رَسُوْلُ اللهِ لَوَّوْا رُؤُوْسَهُمْ وَرَأَيْتَهُمْ يَصُدُّوْنَ وَهُمْ مُّسْتَكْبِرُوْنَ}
আর যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা এসো আল্লাহর রাসুল তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন, তখন তারা নিজেদের মাথা ঘুরিয়ে নেয়। আর আপনি তাদের দেখবেন যে, তারা অহংকারের সঙ্গে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সুরা মুনাফিকুন ৬৩/৫)
حَرَّكُوا اسْتَهْزَءُوْا بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَيُقْرَأُ بِالتَّخْفِيْفِ مِنْ لَوَيْتُ.
لَوَّوْا তারা মাথা নেড়ে নাবী সাঃআঃ-এর সঙ্গে ঠাট্টা করত। কেউ কেউ لَوَّوْا শব্দটিকে لَوَيْتُ (تَخْفِيْفِ সহকারে) পড়ে থাকেন।
৪৯০৪
যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার চাচার সঙ্গে ছিলাম। এ সময় শুনলাম, আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূল বলছে, “আল্লাহর রসূলের সঙ্গীদের জন্য তোমরা ব্যয় করিবে না যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে” এবং “আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে”। এ কথা আমি আমার চাচার কাছে জানালাম। আমার চাচা তা নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে জানালেন, নাবী (সাঃআঃ) আমাকে ডাকলেন। আমি বিস্তারিতভাবে এ কথা তাহাঁর কাছে বললাম। তখন তিনি আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ও তার সাথী-সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠালেন। তারা সকলেই কসম করে বলিল, এ কথা তারা বলেনি। ফলে নাবী (সাঃআঃ) আমাকে মিথ্যাচারী ও তাদেরকে সত্যবাদী মনে করিলেন। এতে আমি এমন দুঃখ পেলাম যে, এমন দুঃখ আর কখনও পাইনি। এরপর আমি ঘরে বসে গেলাম। তখন আমার চাচা আমাকে বলিলেন, এমন কাজের কেন ইচ্ছে করলে, যার ফলে নাবী (সাঃআঃ) তোমাকে মিথ্যাচারী স্থির করিলেন এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন? এ সময় আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে তারা বলে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসুল” তখন নাবী (সাঃআঃ) আমার কাছে লোক পাঠালেন এবং সুরাটি আমার সামনে তিলাওয়াত করিলেন ও বলিলেন, আল্লাহ তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা করিয়াছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৬, ই.ফা. ৪৫৪০)
৬৫/৬৩/৬.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করেন উভয়ই তাদের জন্য সমান। আল্লাহ তাদেরকে কখনও ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ তো পাপাচারী লোকদেরকে হিদায়াতের তাওফীক দান করেন না। (সুরা মুনাফিকুন ৬৩/৬)
৪৯০৫
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা উপস্থিত ছিলাম। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) একবার جَيْشٍ এর স্থলে غَزَاةٍ বর্ণনা করিয়াছেন। এ সময় জনৈক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করিলেন। তখন আনসারী হে আনসারী ভাইগণ! বলে সাহায্য প্রার্থনা করিলেন এবং মুহাজির সহাবী, ওহে মুহাজির ভাইগণ! বলে সাহায্য প্রার্থনা করিলেন। রাসুল (সাঃআঃ) তা শুনে বলিলেন, কী খবর, জাহিলী যুগের মত ডাকাডাকি করছ কেন? তখন উপস্থিত লোকেরা বলিলেন, এক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করেছে। তিনি বলিলেন, এমন ডাকাডাকি পরিত্যাগ কর। এটা অত্যন্ত গন্ধময় কথা। এরপর ঘটনাটি আবদুল্লাহ ইবনু উবায়র কানে পৌঁছল, সে বলিল, আচ্ছা, মুহাজিররা এমন কাজ করেছে? “আল্লাহর কসম! আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকেদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে।” এ কথা নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে পৌঁছল। তখন উমার (রাদি.) উঠে দাঁড়ালেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাকে অনুমতি দিন। আমি এক্ষুণি এ মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দিচ্ছি। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তাকে ছেড়ে দাও। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এ কথা বলিতে না পারে যে, মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) তাহাঁর সঙ্গী-সাথীদেরকে হত্যা করেন। জাবির (রাদি.) বলেন, মুহাজিররা যখন মদিনায় হিজরাত করে আসেন, তখন মুহাজিরদের তুলনায় আনসাররা সংখ্যায় বেশি ছিলেন। অবশ্য পরে মুহাজিররা সংখ্যায় বেশি হয়ে যান। সুফ্ইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)…..বলেন, এ হাদীসটি আমি আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে মুখস্থ করেছি। আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি জাবির (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম। [৩৫১৮] (আ.প্র. ৪৫৩৭. ই.ফা. ৪৫৪১)
৬৫/৬৩/৭.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ এরাই তারা যারা বলে, আল্লাহর রাসূলের সাহচর্যে যারা রয়েছে তাদের জন্য ব্যয় করো না, যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে। আসমান ও যমীনের ধনভান্ডার তো আল্লাহরই। কিন্তু মুনাফিকরা তা বুঝে না। (সুরা মুনাফিকূন ৬৩/৭)
৪৯০৬
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, র্হারায় যাদেরকে শহীদ করা হয়েছিল তাদের খবর শুনে শোকে মুহ্যমান হয়েছিলাম। আমার এ শোকের সংবাদ যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি আমার কাছে পত্র লিখেন। পত্রে তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি রাসুলকে বলিতে শুনেছেন, হে আল্লাহ! আনসার ও আনসারদের সন্তানদেরকে তুমি ক্ষমা করে দাও। এ দুআয় রাসুল (সাঃআঃ) আনসারদের সন্তানদের সন্তানদের জন্য দুআ করিয়াছেন কিনা এ ব্যাপারে ইবনু ফায্ল (রাদি.) সন্দেহ করিয়াছেন। এ ব্যাপারে আনাস (রাদি.) তার কাছে উপস্থিত ব্যক্তিদের কাউকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) ঐ ব্যক্তি যার শ্রবণকে আল্লাহ তাআলা সত্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন। [মুসলিম ৪৪/৪৩, হাদীস ২৫০৬, আহমাদ ১৯৬৬২] (আ.প্র. ৪৫৩৮, ই.ফা. ৪৫৪২)
৬৫/৬৩/৮.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তারা বলে: আমরা যদি মদীনায় ফিরে যাই, তবে প্রতিপত্তিশালীরা সেখান থেকে হীন লোকদের অবশ্যই বের করে দিবে। তাদের জেনে রাখা উচিত যে, ইজ্জত ও প্রতিপত্তি তো একমাত্র আল্লাহরই এবং তাহাঁর রাসূলের ও মুমিনদের। কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না। (সুরা মুনাফিকূন ৬৩/৮)
৪৯০৭
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা যোগদান করেছিলাম। জনৈক মুহাজির আনসারদের এক ব্যক্তির নিতম্বে আঘাত করিলেন। তখন আনসারী সহাবী “আনসারী ভাইগণ!” বলে এবং মুহাজির সহাবী “হে মুহাজির ভাইগণ!” বলে ডাক দিলেন। আল্লাহ তাহাঁর রাসূলের কানে এ কথা পৌঁছিয়ে দিলেন। তিনি বলিলেন, এটা কেমন ডাকাডাকি? উপস্থিত লোকেরা বলিলেন, জনৈক মুহাজির ব্যক্তি এক আনসারী ব্যক্তির নিতম্বে আঘাত করেছে। আনসারী ব্যক্তি “হে আনসারী ভাইগণ!” বলে এবং মুহাজির ব্যক্তি “হে মুহাজির ভাইগণ!” বলে নিজ নিজ গোত্রকে ডাক দিলেন। এ কথা শুনে নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, এ রকম ডাকাডাকি ত্যাগ কর। এগুলো অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত কথা। জাবির (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন মদিনায় হিজরাত করে আসেন তখন আনসার সহাবীগণ ছিলেন সংখ্যায় বেশি। পরে মুহাজিরগণ সংখ্যায় বেশি হয়ে যান। এ সব কথা শুনার পর আবদুল্লাহ ইবনু উবাই বলিল, সত্যিই তারা কি এমন করেছে? আল্লাহর কসম! আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান হইতে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে বের করে দিবেই। তখন ইবনু খাত্তাব (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাকে অনুমতি দিন। আমি এ মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেই। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, উমার! তাকে ছেড়ে দাও, যাতে লোকেরা এমন কথা বলিতে না পারে যে, মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) তাহাঁর সাথীদের হত্যা করছেন। [৩৫১৮] (আ.প্র. ৪৫৩৯, ই.ফা. ৪৫৪৩)
Leave a Reply