সুরা ক্বাফ এর তাফসীর
সুরা ক্বাফ এর তাফসীর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> সুরা ক্বাফ আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ
সুরা ক্বাফ এর তাফসীর
৬৫/৫০/১.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ সে বলবে, আরও কিছু আছে কি? (সুরা ক্বাফ ৫০/৩০)
(50) سُوْرَةُ ق
সুরা (৫০) : ক্বাফ
{رَجْعٌمبَعِيْدٌ} رَدٌّ {فُرُوْجٍ} فُتُوْقٍ وَاحِدُهَا فَرْجٌ {مِنْ حَبْلِ الْوَرِيْدِ} وَرِيْدَاهُ فِيْ حَلْقِهِ وَالْحَبْلُ حَبْلُ الْعَاتِقِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {مَا تَنْقُصُ الْأَرْضُ مِنْهُمْ} مِنْ عِظَامِهِمْ {تَبْصِرَةً} بَصِيْرَةً {حَبَّ الْحَصِيْدِ} الْحِنْطَةُ {بَاسِقَاتٍ} الطِّوَالُ {أَفَعَيِيْنَا} أَفَأَعْيَا عَلَيْنَا حِيْنَ أَنْشَأَكُمْ وَأَنْشَأَ خَلْقَكُمْ {وَقَالَ قَرِيْنُه”} الشَّيْطَانُ الَّذِيْ قُيِّضَ لَهُ {فَنَقَّبُوْا} ضَرَبُوْا {أَوِ الْقَى السَّمْعَ} لَا يُحَدِّثُ نَفْسَهُ بِغَيْرِهِ {حِيْنَ أنْشَأَكُمْ} وَأَنْشَأَ خَلْقَكُمْ {رَقِيْبٌ عَتِيْدٌ} رَصَدٌ {سَآئِقٌ وَشَهِيْدٌ} الْمَلَكَانِ كَاتِبٌ وَشَهِيْدٌ {شَهِيْدٌ} شَاهِدٌ بِالْغَيْبِ مِنْ {لُغُوْبٍ} النَّصَبُ وَقَالَ غَيْرُهُ نَضِيْدٌ الْكُفُرَّى مَا دَامَ فِيْ أَكْمَامِهِ وَمَعْنَاهُ مَنْضُوْدٌ بَعْضُهُ عَلَى بَعْضٍ فَإِذَا خَرَجَ مِنْ أَكْمَامِهِ فَلَيْسَ بِنَضِيْدٍ وَإِدْبَارِ النُّجُوْمِ وَأَدْبَارِ السُّجُوْدِ كَانَ عَاصِمٌ يَفْتَحُ الَّتِيْ فِيْ ق وَيَكْسِرُ الَّتِيْ فِي الطُّوْرِ وَيُكْسَرَانِ جَمِيْعًا وَيُنْصَبَانِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {يَوْمَالْخُرُوْجِ} يَوْمَ يَخْرُجُوْنَ إِلَى الْبَعْثِ مِنَ الْقُبُوْرِ.
رَجْعٌমানে প্রত্যাবর্তন। فُرُوْجٍমানে ফাটল। এর একবচন হলো وَرِيْدٌ فِيْ حَلْقِهٰঘাড়ের রগ। মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, مَا تَنْقُصُ الْأَرْضُদ্বারা তাদের ঐ সমস্ত হাড্ডিকে বোঝানো হয়েছে, যেগুলোকে মৃত্তিকা ক্ষয় করে। تَبْصِرَةًজ্ঞানস্বরূপ। حَبَّ الْحَصِيْدِগম। بَاسِقَاتٍসমুন্নত ও লম্বা। أَفَعَيِيْنَاআমাদের জন্য কি ক্লান্তিকর ছিল? وَقَالَ قَرِيْنُهচঐ শয়তান যা তার জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে। فَنَقَّبُوْاতারা ভ্রমণ করেছে। أَوِ الْقَى السَّمْعَঅর্থ, যে কুরআন শ্রবণ করে নিবিষ্ট চিত্তে, এ ব্যতীত অন্য কোন দিকে তার মনোযোগ নেই। رَقِيْبٌ عَتِيْدٌমানে প্রহরী। سَآئِقٌ وَشَهِيْدٌদুজন মালাক- একজন লেখক এবং অন্যজন সাক্ষী। شَهِيْدٌ অন্তরের অন্তস্থল থেকে সাক্ষ্যদাতা ব্যক্তিকে شَهِيْدٌবলা হয়। لُغُوْبٍ ক্লান্তি। মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ব্যতীত অন্য মুফাসসিরগণ বলেছেন, نَضِيْدٌ ফুলের কলি যা এখনো ফুটেনি। এখানে শব্দটি ভাজ করা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রস্ফুটিত ফুলের কলিকে نَضِيْدٌ বলা হয় না। কারী আসিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সুরা কাফ-এ বর্ণিত إدْبَارِ السُّجُوْدِ-এর হামযার মধ্যে যবর দেন এবং সুরা তূর-এ উল্লিখিত إِدْبَارِالنُّجُوْمِ এর হামযার মধ্যে যের দেন। তবে উভয় স্থানে হামযাতে যেরও দেয়া যায় অথবা যবরও দেয়া যায়। ইবনু আববাস (রাদি.) বলেন, يَوْمَ الْخُرُوْجِ কবর থেকে বের হওয়ার দিন।
৪৮৪৮
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হলে জাহান্নাম বলবে, আরো আছে কি? শেষে আল্লাহ তাহাঁর পা সেখানে রাখবেন, তখন সে বলবে, আর না, আর না। [৬৬৬১, ৭৩৮৪] (আ.প্র. ৪৪৮১, ই.ফা. ৪৪৮৪)
৪৮৪৯
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তবে আবু সুফ্ইয়ান এ হাদীসটিকে অধিকাংশ সময় মওকূফ হাদীস হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন। জাহান্নামকে বলা হইবে, তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ? জাহান্নাম বলবে, আরো আছে কি? তখন আল্লাহ রব্বুল আলামীন নিজ পা তাতে রাখবেন। তখন জাহান্নাম বলবে, আর নয়, আর নয়। [১৪৪৯, ৪৮৫০] (আ.প্র. ৪৪৮২, ই.ফা. ৪৪৮৫)
৪৮৫০
আবু হুরাইরাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, জান্নাত ও জাহান্নাম পরস্পর বিতর্ক করে। জাহান্নাম বলে দাম্ভিক ও পরাক্রমশালীদের দ্বারা আমাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। জান্নাত বলে, আমার কী হলো? আমাতে কেবল মাত্র দুর্বল এবং নিরীহ ব্যক্তিরাই প্রবেশ করছে। তখন আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা জান্নাতকে বলবেন, তুমি আমার রহমাত। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে আমি অনুগ্রহ করব। আর তিনি জাহান্নামকে বলবেন, তুমি হলে আযাব। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেব। জান্নাত ও জাহান্নাম প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে পূর্ণতা। তবে জাহান্নাম পূর্ণ হইবে না যতক্ষণ না তিনি তাহাঁর পা তাতে রাখবেন। তখন সে বলবে, বাস, বাস, বাস। তখন জাহান্নাম পূর্ণ হয়ে যাবে এবং এর এক অংশ অপর অংশের সঙ্গে মুড়িয়ে দেয়া হইবে। আল্লাহ তাহাঁর সৃষ্টির কারো প্রতি যুল্ম করবেন না। অবশ্য আল্লাহ তাআলা জান্নাতের জন্য অন্য মাখলূক সৃষ্টি করবেন। [৪৮৪৯; মুসলিম ৫১/১৩, হাদীস ২৮৪৬, আহমাদ ৮১৭০] (আ.প্র. ৪৪৮৩, ই.ফা. ৪৪৮৬)
৬৫/৫০/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আপনার রবের প্রশংসা পবিত্রতা-মহিমা বর্ণনা করিতে থাকুন সূর্যোদয়ের পূর্বে এবং সূর্যাস্তের পূর্বে।(সুরা ক্বাফ ৫০/৩৯)
৪৮৫১
জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একরাতে আমরা নাবী (সাঃআঃ)এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তিনি চৌদ্দ তারিখের রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলিলেন, তোমরা যেমন এ চাঁদটি দেখিতে পাচ্ছ, তেমনিভাবে তোমরা তোমাদের রবকে দেখিতে পাবে এবং তাঁকে দেখার ব্যাপারে বাধা বিঘ্ন হইবে না। তাই তোমাদের সামর্থ্য থাকলে সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের আগের সলাতের ব্যাপারে প্রভাবিত হইবে না। তারপর তিনি পাঠ করিলেন, “আপনার রবের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের পূর্বে” (সুরা ক্বাফ ৫০/৩৯)। [৫৫৪] (আ.প্র. ৪৪৮৪, ই.ফা. ৪৪৮৭)
৪৮৫২
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা নাবী (সাঃআঃ)-কে প্রত্যেক সলাতের পর তাহাঁর পবিত্রতা ঘোষণার আদেশ করিয়াছেন। আল্লাহর বাণী ঃ وَإِدْبَارَ السُّجُودِ “এর দ্বারা তিনি এ অর্থ করিয়াছেন।” (আ.প্র. ৪৪৮৫, ই.ফা. ৪৪৮৮)
Leave a Reply