সুরা আনফাল তাফসীর
সুরা আনফাল তাফসীর >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> সুরা আনফাল আরবি তে পড়ুন বাংলা অনুবাদ সহ >> >> প্রায় ৫০ টি তাফসীর কিতাব ও সুচিপত্র পড়ুন।
সুরা আনফাল তাফসীর
৬৫/৮/১.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে যুদ্ধলব্ধ মাল সম্বন্ধে আপনি বলে দিনঃ যুদ্ধলব্ধ মাল আল্লাহর এবং রাসূলের। অতএব, তোমরা ভয় কর আল্লাহ্কে এবং নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ক ঠিক করে নাও। (সুরা আনফাল ৮/১)
৬৫/৮/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয় নিকৃষ্টতম জীব আল্লাহর কাছে ঐসব বধির ও মূক যারা অনুধাবন করে না। (সুরা আনফাল ৮/২২)
৬৫/৮/৩.অধ্যায়ঃ পরিচ্ছেদ নাই।
৬৫/৮/৪.অধ্যায়ঃ পরিচ্ছেদ নাই।
৬৫/৮/৫.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ
৬৫/৮/৬.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করিতে থাক যতক্ষণ না ফিতনা শেষ হয়ে যায় এবং দ্বীন সামগ্রিকভাবে আল্লাহর জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তবে যদি তারা বিরত হয়, তাহলে তারা যা করে আল্লাহ তা উত্তমরূপে দেখেন। (সুরা আনফাল ৮/৩৯)
৬৫/৮/৭.অধ্যায়ঃ পরিচ্ছেদ নাই।
৬৫/৮/৮.অধ্যায়ঃ আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করিলেন। তিনি অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। ……. আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন। (সুরা আনফাল ৮/৬৬)
৬৫/৮/১.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে যুদ্ধলব্ধ মাল সম্বন্ধে আপনি বলে দিনঃ যুদ্ধলব্ধ মাল আল্লাহর এবং রাসূলের। অতএব, তোমরা ভয় কর আল্লাহ্কে এবং নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ক ঠিক করে নাও। (সুরা আনফাল ৮/১)
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {الْأَنْفَالُ} الْمَغَانِمُ قَالَ قَتَادَةُ {رِيْحُكُمْ} الْحَرْبُ يُقَالُ {نَافِلَةٌ} عَطِيَّةٌ.
ইবনু আববাস (রাদি.) বলেন, الْأَنْفَالُ-যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, কাতাদাহ বলেন, رِيْحُكُمْ – যুদ্ধ, نَافِلَةٌ – দান।
৪৬৪৫
সাঈদ ইবনু যুবায়র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম সুরা আল-আনফাল সম্পর্কে, তিনি বলিলেন, বাদরের যুদ্ধ সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।
الشَّوْكَةُ-الْحَدُّশক্তি, مُرْدَفِينَএকদল সৈন্যের পর আরেক দল, رَدِفَنِي এবং أَرْدَفَنِي আমার পেছন পেছন এসেছে, ذُوقُواসরাসরি জড়িয়ে পড় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন কর, মুখে আস্বাদন করা হয়, فَيَرْكُمَهُএরপর তাকে একত্রিত করবেন, شَرِّدْবিচ্ছিন্ন করে দাও, وَإِنْ جَنَحُواযদি তারা চায়, السِّلْمُ، السِّلْمُ এবং السَّلاَمُএকই অর্থ সন্ধি, يُثْخِنَজয়ী হওয়া, মুফাস্সির মুজাহিদ বলেন, مُكَاءًতাদের অঙ্গুলিসমূহ মুখে ঢুকিয়ে দেয়া, শিস দেয়া, تَصْدِيَةًকরতালি, لِيُثْبِتُوكَতোমাকে আটকে রাখার জন্যে। [৪০২৯] (আ.প্র. ৪২৮৪, ই.ফা. ৪২৮৬)
৬৫/৮/২.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয় নিকৃষ্টতম জীব আল্লাহর কাছে ঐসব বধির ও মূক যারা অনুধাবন করে না। (সুরা আনফাল ৮/২২)
৪৬৪৬
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ عِنْدَ اللهِ الصُّمُّ الْبُكْمُ الَّذِينَ لاَ يَعْقِلُونَ সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে, তারা হচ্ছে বানী আবদুদ্দার গোষ্ঠীর একটি দল। (আ.প্র. ৪২৮৫, ই.ফা. ৪২৮৭)
৬৫/৮/৩.অধ্যায়ঃ পরিচ্ছেদ নাই।
{اسْتَجِيْبُوْا} أَجِيْبُوْا لِمَا يُحْيِيْكُمْ يُصْلِحُكُمْ.
اسْتَجِيْبُوْا-তোমরা সাড়া দাও, لِمَا يُحْيِيْكُمْ-তোমাদেরকে সংশোধন করার জন্যে।
৪৬৪৭
আবু সাঈদ ইবনু মুয়াল্লা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদা সলাতে রত ছিলাম, এমন সময় রাসুল (সাঃআঃ) আমার পাশ দিয়ে গেলেন এবং আমাকে ডাকলেন। সলাত শেষ না করা পর্যন্ত আমি তাহাঁর কাছে যাইনি, তারপর গেলাম। তিনি বলিলেন, তোমাকে আসতে বাধা দিল কিসে? আল্লাহ কি বলেননি “রাসুল (সাঃআঃ) তোমাদেরকে ডাকলে। আল্লাহ ও রসূলের ডাকে সাড়া দেবে?” তারপর তিনি বলিলেন, আমি মাসজিদ থেকে বের হবার পূর্বে তোমাকে একটি অতি সওয়াবযুক্ত সুরা শিক্ষা দেব। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আমি তাহাঁর নিকট প্রতিশ্র“তির কথা স্মরণ করিয়ে দিলাম।
মুআয বলিলেন, …… হাফ্স শুনেছেন একজন সহাবী আবু সাঈদ ইবনুল মুআল্লাকে এই হাদীস বর্ণনা করিতে, রাসুল বলিলেনসেই সুরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ সাত আয়াতবিশিষ্ট ও পুনঃ পুনঃ পঠিত। [৪৪৭৪] (আ.প্র. ৪২৮৬, ই.ফা. ৪২৮৮)
৬৫/৮/৪.অধ্যায়ঃ পরিচ্ছেদ নাই।
{وَإِذْ قَالُوا اللّٰهُمَّ إِنْ كَانَ هٰذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِّنَ السَّمَآءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ}
স্মরণ কর, তারা বলেছিলঃ হে আল্লাহ! যদি এ কুরআন তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয় তাহলে আমাদের উপর আসমান থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর অথবা দাও আমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সুরা আনফাল ৮/৩২)
قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ مَا سَمَّى اللهُ تَعَالَى مَطَرًا فِي الْقُرْآنِ إِلَّا عَذَابًا وَتُسَمِّيْهِ الْعَرَبُ الْغَيْثَ وَهُوَ قَوْلُهُ تَعَالَى {يُنْزِلُ الْغَيْثَ مِنْمبَعْدِ مَا قَنَطُوْا}.
ইবনু উয়াইনাহ বলেছেন, কুরআনে করীমে শুধুমাত্র আযাব বা শাস্তিকেই আল্লাহ তাআলা مَطْرٌ নামে আখ্যায়িত করিয়াছেন, বৃষ্টিকে আরবগণ غَيْثَ নামে আখ্যায়িত করে। যেমন আল্লাহর বাণীঃ وَيُنْزِلُ الْغَيْثَ مِنْمبَعْدِ مَا قَنَطُو-তারা নিরাশ হবার পর তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
৪৬৪৮
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু জাহল বলেছিল, “হে আল্লাহ! এটা যদি তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয়, তবে আমাদের উপর আকাশ হইতে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দাও।” তখনই অবতীর্ণ হল وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الْآيَةَ “আর আল্লাহ তো এরূপ নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন এবং আল্লাহ এমনও নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ তারা ক্ষমা প্রার্থনা করিবে। আর তাদের এমন কী আছে যে জন্য আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না, অথচ তারা মাসজিদে হারামে যেতে বাধা প্রদান করে? আর তারা সে মাসজিদের তত্ত্বাবধায়কও নয়। তার তত্ত্বাবধায়ক তো মুত্তাকীরা ব্যতীত আর কেউ নয়। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না” (সুরা আনফাল ৮/৩৩-৩৪)। [৪৬৪৯; মুসলিম ৫০/৫, হাদীস ২৭৯৬] (আ.প্র. ৪২৮৭, ই.ফা. ৪২৮৯)
৬৫/৮/৫.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ
৪৬৪৯
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু জাহল বলেছিল। এরপর অবতীর্ণ হল وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ وَمَا لَهُمْ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ اللهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الْآيَةَ “হে আল্লাহ! যদি এ কুরআন তোমার পক্ষ থেকে সত্য হয় তাহলে আমাদের উপর আসমান থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর অথবা দাও আমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ তো এরূপ নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন এবং আল্লাহ এমনও নন যে, তিনি তাদের শাস্তি দেবেন অথচ তারা ক্ষমা প্রার্থনা করিবে। আর তাদের এমন কী আছে যে জন্য আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না, অথচ তারা মাসজিদে হারামে যেতে বাধা প্রদান করে?” (সুরা আনফাল ৮/৩২-৩৪) [৪৬৪৮] (আ.প্র. ৪২৮৮, ই.ফা. ৪২৯০)
৬৫/৮/৬.অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ আর তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করিতে থাক যতক্ষণ না ফিতনা শেষ হয়ে যায় এবং দ্বীন সামগ্রিকভাবে আল্লাহর জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তবে যদি তারা বিরত হয়, তাহলে তারা যা করে আল্লাহ তা উত্তমরূপে দেখেন। (সুরা আনফাল ৮/৩৯)
৪৬৫০
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তাহাঁর কাছে এসে বলিল, হে আবু আবদুর রহমান! আল্লাহ তাহাঁর কিতাবে যা উল্লেখ করিয়াছেন আপনি কি তা শোনেন না? وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا…..মুমিনদের দুদল দ্বন্দে¡ লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে ……… সুতরাং আল্লাহর কিতাবের নির্দেশ মুতাবিক যুদ্ধ করিতে কোন্ বস্তু আপনাকে নিষেধ করছে? এরপর তিনি বলিলেন, হে ভাতিজা! এই আয়াতের তাবীল বা ব্যাখ্যা করে যুদ্ধ না করা আমার কাছে অধিক প্রিয় …….. وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا “যে স্বেচ্ছায় মুমিন খুন করে” আয়াত তাবীল করার তুলনায়। সে ব্যক্তি বলিল, আল্লাহ বলেছেন, وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ “তোমরা ফিতনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করিবে”, ইবনু উমার (রাদি.) বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর যুগে আমরা তা করেছি যখন ইসলাম দুর্বল ছিল। ফলে লোক তার দ্বীন নিয়ে ফিতনায় পড়ত, হয়ত কাফিররা তাকে হত্যা করত নতুবা বেঁধে রাখত, ক্রমে ক্রমে ইসলামের প্রসার ঘটল এবং ফিতনা থাকল না। সে লোকটি যখন দেখল যে, আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) তার উদ্দেশ্যের অনুকূল নন তখন সে বলিল যে, আলী (রাদি.) এবং উসমান (রাদি.) সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? ইবনু উমার (রাদি.) বলিলেন যে, আলী (রাদি.) এবং উসমান (রাদি.) সম্পর্কে আমার কোন কথা নেই, তবে উসমান (রাদি.)-কে আল্লাহ তাআলা নিজেই ক্ষমা করে দিয়েছেন কিন্তু তোমরা তাঁকে ক্ষমা করিতে রাযী নও। আর আলী (রাদি.), তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর চাচাত ভাই এবং জামাতা, তিনি অঙ্গুলি নির্দেশ করে বলিলেন, ঐ উনি হচ্ছেন রসূলের কন্যা, যেথায় তোমরা তাহাঁর ঘর দেখছ, هذِهِ ابْنَتُهُ বলেছেন কিংবা هذِهِ بْنَتُهُ বলেছেন। [৩১৩০] (আ.প্র. ৪২৮৯, ই.ফা. ৪২৯১)
৪৬৫১
সাঈদ ইবনু জুবায়র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু উমার (রাদি.) আমাদের কাছে এলেন। বর্ণনাকারী إِلَيْنَا অথবা عَلَيْنَا শব্দ বলেছেন। এরপর এক ব্যক্তি বলিল, ফিতনা সম্পর্কিত যুদ্ধের ব্যাপারে আপনার অভিমত কী? আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) বলিলেন, ফিতনা কী তা তুমি জান? মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতেন। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে অভিযান ছিল ফিতনা। আর তা তোমাদের রাজত্বের জন্য যুদ্ধ করার মতো নয়। [৩১৩০] (আ.প্র. ৪২৯০, ই.ফা. ৪২৯২)
৬৫/৮/৭.অধ্যায়ঃ পরিচ্ছেদ নাই।
{يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَى الْقِتَالِ ط إِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صٰبِرُوْنَ يَغْلِبُوْا مِائَتَيْنِ ج وَإِنْ يَّكُنْ مِّنْكُمْ مِّائَةٌ يَّغْلِبُوْآ أَلْفًا مِّنَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُوْنَ}.
হে নাবী! আপনি মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করুন। যদি তোমাদের মধ্যে বিশজন দৃঢ়পদ লোক থাকে, তবে তারা দুশর উপর জয়লাভ করিবে। আর যদি তোমাদের মধ্যে একশ জন থাকে, তবে তারা এক হাজার কাফিরের উপর জয়লাভ করিবে, কেননা তারা এমন লোক যারা বোঝে না। (সুরা আনফাল ৮/৬৫)
৪৬৫২
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
(আল্লাহর বাণী ঃ) إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ যখন অবতীর্ণ হল। এরপর দশজন কাফিরের বিপরীত একজন মুসলিম থাকলেও পলায়ন না করা ফরয করে দেয়া হল। সুফ্ইয়ান ইবনু উয়াইনাহ (রাদি.) আবার বর্ণনা করেন, দুশ জন কাফিরের বিপক্ষে ২০ জন মুসলিম থাকলেও পলায়ন করা যাবে না। তারপর অবতীর্ণ হল الْآنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفاً فَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ مِائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ وَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ أَلْفٌ يَغْلِبُوا أَلْفَيْنِ بِإِذْنِ اللهِ وَاللهُ مَعَ الصَّابِرِينَল্ল আল্লাহ এখন তোমাদের বোঝা হালকা করে দিয়েছেন এবং তিনি জানেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। সুতরাং যদি তোমাদের মধ্যে একশ জন দৃঢ়পদ লোক থাকে তবে তারা দুশ জনের উপর জয়লাভ করিবে, আর তোমাদের মধ্যে এক হাজার থাকলে আল্লাহর হুকুমে তারা দুহাজারের উপর জয়লাভ করিবে। আর আল্লাহ আছেন দৃঢ়পদ লোকদের সঙ্গে। (সুরা আল-আনফাল ৮/৬৬)
এরপর দুশ কাফিরের বিপক্ষে একশজন মুসলিম থাকলে পালিয়ে না যাওয়া (আল্লাহ) ফরয করে দিলেন। সুফ্ইয়ান ইবনু উয়াইনাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) একবার বর্ণনা করিয়াছেন যে, (তাতে কিছু অতিরিক্ত আছে যেমন,) حَرِّضْ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ অবতীর্ণ হল, সুফ্ইয়ান বলেন, ইবনু শুবরুমাহ বলেছেন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধএর ব্যাপারটাও আমি এমনই মনে করি। [৪৬৫৩] (আ.প্র. ৪২৯১, ই.ফা. ৪২৯৩)
৬৫/৮/৮.অধ্যায়ঃ আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করিলেন। তিনি অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। ……. আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন। (সুরা আনফাল ৮/৬৬)
৪৬৫৩
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যখন إِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ আয়াতটি অবতীর্ণ হল তখন দশ জনের বিপরীতে একজনের পলায়নও নিষিদ্ধ করা হল, তখন এটা মুসলিমদের উপর দুঃসাধ্য মনে হল তারপর তা লাঘবের বিধান এলো الْآنَ خَفَّفَ اللهُ عَنْكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضُعْفًا فَإِنْ يَكُنْ مِنْكُمْ مِائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, আল্লাহ তাদেরকে সংখ্যার দিক থেকে যখন হালকা করে দিলেন, সেই সংখ্যা হ্রাসের সমপরিমাণ তাদের ধৈর্র্যও হ্রাস পেল। [৪৬৫২] (আ.প্র. ৪২৯২, ই.ফা. ৪২৯৪)
৬৫/৯/১.অধ্যায়ঃ
অধ্যায়: আল্লাহ তাআলার বাণীঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং তাহাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে দায়মুক্তির ঘোষণা সেসব মুশরিকের সম্পর্কে যাদের সঙ্গে তোমরা সন্ধিচুক্তি করেছিলে। (সুরা বারাআত ৯/১)
{وَلِيْجَةً} كُلُّ شَيْءٍ أَدْخَلْتَهُ فِيْ شَيْءٍ {مُرْصَدٌ} طَرِيْقٌ {الشُّقَّةُ}السَّفَرُ {الْخَبَالُ} الْفَسَادُ وَالْخَبَالُ الْمَوْتُ {وَلَاتَفْتِنِّيْ} لَا تُوَبِّخْنِيْ كَرْهًا وَ {كُرْهًا} وَاحِدٌ {مُدَّخَلًا} يُدْخَلُوْنَ فِيْهِ {يَجْمَحُوْنَ}يُسْرِعُوْنَ {وَالْمُؤْتَفِكَاتِ} ائْتَفَكَتْ انْقَلَبَتْ بِهَا الْأَرْضُ {أَهْوَى} أَلْقَاهُ فِيْ هُوَّةٍ {عَدْنٍ}خُلْدٍ عَدَنْتُ بِأَرْضٍ أَيْ أَقَمْتُ وَمِنْهُ مَعْدِنٌ وَيُقَالُ فِيْ مَعْدِنِ صِدْقٍ فِيْ مَنْبَتِ صِدْقٍ {الْخَوَالِفُ} الْخَالِفُ الَّذِيْ خَلَفَنِيْ فَقَعَدَ بَعْدِيْ وَمِنْهُ يَخْلُفُهُ فِي الْغَابِرِيْنَ وَيَجُوْزُ أَنْ يَكُوْنَ النِّسَاءُ مِنَ الْخَالِفَةِ وَإِنْ كَانَ جَمْعَ الذُّكُوْرِ فَإِنَّهُ لَمْ يُوْجَدْ عَلَى تَقْدِيْرِ جَمْعِهِ إِلَّا حَرْفَانِ فَارِسٌ وَفَوَارِسُ وَهَالِكٌ وَهَوَالِكُ {الْخَيْرَاتُ} وَاحِدُهَا خَيْرَةٌ وَهِيَ الْفَوَاضِلُ {مُرْجَئُوْنَ} مُؤَخَّرُوْنَ {الشَّفَا} شَفِيْرٌ وَهُوَ حَدُّهُ وَالْجُرُفُ مَا تَجَرَّفَ مِنْ السُّيُوْلِ وَالأَوْدِيَةِ {هَارٍ} هَائِرٍ لَأَوَّاهٌ شَفَقًا وَفَرَقًا وَقَالَ الشَّاعِرُ.
إِذَا قُمْتُ أَرْحَلُهَا بِلَيْلٍ تَأَوَّهُ آهَةَ الرَّجُلِ الْحَزِيْنِ.
يُقَالُ : تَهَوَّرَتْ الْبِئْرُ إِذَا انْهَدَمَتْ وَانْهَارَ مِثْلُهُ.
وَلِيْجَةً- এমন বস্তু যাকে তুমি আরেকটা বস্তুর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলে। الشُّقَّةُ- সফর, ভ্রমণ, الْخَبَالُ- বিশৃঙ্খলা, বিপর্যয়, الْخَبَالُ- মৃত্যু। وَلَاتَفْتِنِّيْ- আমাকে হুমকি দিও না। كَرْهًا-وَ- كُرْهًا- বাধ্যবাধকতা, উভয়টা একই অর্থবোধক, مُدَّخَلًا- প্রবেশস্থল, যেথায় তারা প্রবেশ করিবে। يَجْمَحُوْنَ- তারা ত্বরান্বিত করিবে। وَالْمُؤْتَفِكَاتِ-যাদের নিয়ে ভূমি উল্টে গেছে। أَهْوَى- তাকে গর্তে নিক্ষেপ করিল। عَدْنٍ- স্থায়িত্ব অবস্থান, যেমন, عَدَنْتُبِأَرْضٍ- আমি অবস্থান করলাম, এগুলো থেকে مَعْدِنٍ শব্দ আসছে এবং বলা হয় فِيْ مَعْدِنِ صِدْقٍ -অর্থাৎ সত্যের উৎপত্তিস্থল। الْخَوَالِفُ-الْخَالِفُ- শব্দের বহুবচন অর্থ, যে আমার পিছনে থাকল। এবং আমার পরে বসে থাকল এবং এর অর্থ থেকে يُخْلِفُهُفِيالْغَابِرِيْنَ- অর্থ, অবশিষ্টদের মধ্যে পিছনে রাখা হয় এবং الْخَالِفَةُ – শব্দের বহুবচন হিসাবে الْخَوَالِفُ স্ত্রীলিঙ্গে ব্যবহার করা বৈধ আছে যদিও তা পুরুষ শব্দের বহুবচন, তা হলে তার এভাবে বহুবচন আরবী ভাষায় দুটি শব্দ ব্যতীত পাওয়া যায় না, যথা فَارِسٌ- এর বহুবচন فَوَارِسُ এবং هَالِكٌ-এর বহুবচন هَوَالِكُالْخَيْرَاتُ শব্দের এক বচন خَيْرَةٌ অর্থ, কল্যাণ ও মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু। مُرْجَئُوْنَ-বিলম্বিত ব্যক্তিবর্গ। الشَّفَا কিনারা বা পার্শ্ব। الْجُرُفُ- যা উঁচু স্থান বা উপত্যকা থেকে প্রবাহিত হয়। هَائِرٍ-هَارٍ পতিত হওয়া। যেমন বলা হয়, কুয়া ভেঙ্গে পড়েছে যখন তা ধ্বংস হয়ে যায়, আর এরূপভাবে انْهَدَمَتْ শব্দের অর্থ হয়ে থাকে। لَأَوَّاهٌ-অধিক কোমল হৃদয়, ভয়-ভীতির কারণে। কবি বলেন, যখন আমি রাতের বেলায় উষ্ট্রীর পিঠে আরোহণ করলাম, তখন সেটি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তির মত দীর্ঘশ্বাস ফেলে আহ! করিতে থাকে।
{أَذَانٌ} إِعْلَامٌ. [أشار به إلى قوله تعالى : {وَأَذَنٌ مِّنَ اللهِ وَرَسُوْلِهٰ} وفسره بقوله : إعلام، وهذا ظاهر]. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {أُذُنٌ} يُصَدِّقُ {تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيْهِمْ بِهَا} وَنَحْوُهَا كَثِيْرٌ وَالزَّكَاةُ الطَّاعَةُ وَالإِخْلَاصُ {لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ} لَا يَشْهَدُوْنَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ {يُضَاهُوْنَ} يُشَبِّهُوْنَ
ইব্ন আববাস (রাদি.) বলেন, أَذَنٌ-কারো কথা শুনে তা সত্য বলে ধারণা করা। تُطَهِّرُهُمْ এবং تُزَكِّيْهِمْ এর একই অর্থ, এ ব্যবহার পদ্ধতি অধিক। সে পবিত্র করে। زَكْوَةٌ ইবাদাত ও নিষ্ঠা لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ (তারা যাকাত প্রদান করে না) (এবং) তারা এ সাক্ষ্যও প্রদান করে না যে, আর কোন উপাস্য নেই এক আল্লাহ ব্যতীত। يُضَاهُوْنَ- তারা তুলনা দিচ্ছে।
৪৬৫৪
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ آخِرُ آيَةٍ نَزَلَتْ {يَسْتَفْتُوْنَكَ قُلِ اللهُ يُفْتِيْكُمْ فِي الْكَلَالَةِ} وَآخِرُ سُوْرَةٍ نَزَلَتْ بَرَاءَةٌ
বারাআ ইবনু আযিব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
সর্বশেষে যে আয়াত অবতীর্ণ হয়, তা হল يَسْتَفْتُونَكَ قُلْ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِলোকেরা আপনার কাছে বিধান জানতে চায়। আপনি বলুন ঃ আল্লাহ তোমাদের বিধান দিচ্ছেন “কালালা” (পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) সম্বন্ধে (সূরা আন-নিসা ৪/১৭৬)। এবং সর্বশেষে যে সুরাটি অবতীর্ণ হয়, তা হল সুরায়ে বারাআত। [৪৩৬৪] (আ.প্র. ৪২৯৩, ই.ফা. ৪২৯৫)
Leave a Reply