সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার ও আশ্রয় প্রার্থনা
সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার ও আশ্রয় প্রার্থনা >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ৪৫, অনুচ্ছেদঃ (৫৮-৭৮)=২১টি
অনুচ্ছেদ-৫৮ঃ সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ ও আলহামদু লিল্লাহ পাঠ করার ফাযীলাত
অনুচ্ছেদ-৫৯ঃ [জান্নাতের গাছের নাম]
অনুচ্ছেদ-৬০ঃ [সুবহানাল্লাহর ফাযীলাত]
অনুচ্ছেদ-৬১ঃ [সুবাহানালাহ ওয়া বিহামদিহি এর ফাযীলাত]
অনুচ্ছেদ-৬২ঃ তাসবীহ, তাহ্মীদ, তাহ্লীল ও তাকবীর বলার ফাযীলাত
অনুচ্ছেদ-৬৩ঃ যে দুয়া পাঠ করলে চল্লিশ লাখ সাওয়াব হয়
অনুচ্ছেদ-৬৪ঃ নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত বিভিন্ন দুয়ার সমষ্টি
অনুচ্ছেদ-৬৫ঃ [দুয়া করার আগে আল্লাহর তাআলার প্রশংসা ও রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠ করিবে]
অনুচ্ছেদ-৬৬ঃ [অমনোযোগীর দুয়া কবূল হয় না]
অনুচ্ছেদ-৬৭ঃ শারীরিক সুস্থতা কামনা করা
অনুচ্ছেদ-৬৮ঃ {ফাতিমাহ্ [রাদি.]-কে শিখানো দুয়া}
অনুচ্ছেদ-৬৯ঃ [চার বস্তু হইতে আশ্রয় প্রার্থনা]
অনুচ্ছেদ-৭০ঃ উপকারী দুটি বাক্য
অনুচ্ছেদ-৭১ঃ [দুশ্চিন্তা হইতে আশ্রয় প্রার্থনা]
অনুচ্ছেদ-৭২ঃ হাতের আঙ্গুলে গুনে গুনে তাসবীহ পাঠ করা
অনুচ্ছেদ-৭৩ঃ [হিদায়াত কামনা করা]
অনুচ্ছেদ-৭৪ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর দুয়ায় যা বলিতেন
অনুচ্ছেদ-৭৫ঃ[আশ্রয় প্রার্থনার দুয়া]
অনুচ্ছেদ-৭৬ঃ [আল্লাহ্ তাআলার অখুশি হইতে তাহাঁর খুশির আশ্রয় প্রার্থনা]
অনুচ্ছেদ-৭৭ঃ [যে দুয়াটি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরআনের সূরা শিখানোর ন্যায় গুরুত্ব নিয়ে শিখাতেন]
অনুচ্ছেদ-৭৮ঃ [দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে দুয়া করা]
অনুচ্ছেদ-৫৮ঃ সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ ও আলহামদু লিল্লাহ পাঠ করার ফাযীলাত
৩৪৬০ : আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পৃথিবীর বক্ষে যে লোকই বলে,
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবারু ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ
(আল্লাহু তাআলা ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, আল্লাহ সুমহান, খারাপকে রোধ করা এবং কল্যাণকে লাভ করার শক্তি আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কারো নেই),
তার অপরাধগুলো মাফ করা হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির ন্যায় [বেশি] হয়।
হাসানঃ তালীকুর রাগীব [হাঃ ২/২৪৯]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩৪৬১ : আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে ছিলাম। ফেরার কালে যখন আমরা মাদীনার উঁচু ভূমি পার হচ্ছিলাম সে সময় লোকেরা সজোরে তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করে। ফলে রসুলুল্লাহ সাঃআঃ বললেনঃ তোমাদের প্রভু বধিরও নন এবং অনুপস্থিতও নন। তিনি তোমাদের মাঝেই আছেন এবং তোমাদের সওয়ারীর সম্মুখেই আছেন। তারপর তিনি বললেনঃ হে আবদুল্লাহ ইবনি কাইস [আবু মূসা]। আমি কি তোমাকে জান্নাতের অন্যতম রত্ন ভাণ্ডার সম্পর্কে জানাব না? তা হল
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّ
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ
সহীহঃ সহীহ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[হাঃ ৩৮২৪], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৫৯ঃ [জান্নাতের গাছের নাম]
৩৪৬২ : ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মিরাজের রাতে আমি ইবরাহীম [আঃ]-এর সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ” আপনার উম্মাতকে আমার সালাম পৌছিয়ে দিন এবং তাহাদেরকে জানান যে, জান্নাতের যামীন অতীব সুগন্ধি সমৃদ্ধ এবং সেখানকার পানি অত্যন্ত সুস্বাদু। তা একটি সমতল ভূমি এবং তার গাছপালা হল
سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ
“সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামৃদু লিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার”।
হাসানঃ তালীকুর রাগীব [হাঃ ২/২৪৫, ২৫৬], আল-কালিমুত তাইয়্যিব [হাঃ ১৫/৬], সহীহাহ [হাঃ ১০৬]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৩৪৬৩ : সাদ ইবনি আবী ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সঙ্গে উপস্থিত সাহাবীগণকে বললেনঃ তোমাদের কেউ কি এক হাজার নেকী অর্জন করিতে অক্ষম? উপস্থিতদের একজন প্রশ্ন করিলেন, আমাদের একজন কিভাবে এক হাজার নেকী অর্জন করিবে? তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ একশতবার তাসবীহ
سُبْحَانَ اللَّهِ
[সুবহানাল্লাহ]
পাঠ করলে তার আমালনামায় এক হাজার নেকী লিপিবদ্ধ করা হইবে এবং তার এক হাজার অপরাধ ক্ষমা করা হইবে।
সহীহঃ মুসলিম [হাঃ ৮/৭১]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬০ঃ [সুবহানাল্লাহর ফাযীলাত]
৩৪৬৪ : জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক [একবার] বলে
سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِحَمْدِهِ
সুবহানাল্লাহিল আযীম ওয়াবিহামদিহী,
[আমি মহান আল্লাহ তাআলার প্রশংসা সহকারে পবিত্রতা ঘোষণা করছি]
তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হয়।
সহীহঃ রাওযুন নাযীর [হাঃ ২৪৩], সহীহাহ [হাঃ ৬৪]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৬৫: জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক বলে
سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِحَمْدِهِ
সুবৃহানাল্লাহিল আযীম ওয়াবিহামদিহী
[আমি মহান আল্লাহ তাআলার প্রশংসা সহকারে পবিত্রতা ঘোষণা করছি]
জান্নাতে তার জন্য একটি খেজুর গাছ লাগানো হয়।
সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৬৬ :আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক একশত বার
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ
সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী
বলে তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হয়, তা সাগরের ফেনারাশির সমপর্যায় হলেও।
সহীহঃ আল-কালিমুত তাইয়্যিব তাহকীক সানী, বুখারী। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৬৭ : আবু হুরাইয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এমন দুটি বাক্য আছে যা মুখে উচ্চারন করা অতি সহজ, ওজনে খুবই ভারী এবং করুণাময় আল্লাহ তায়ালার নিকট অতি প্রিয়ঃ
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ
সুবাহানাল্লহি ওয়া বিহামদিহি, সুবাহানাল্লাহিল আযীম
[মহা পবিত্র আল্লাহ তাআলা, তিনি মহামহিম, মহা পবিত্র আল্লাহ তাআলা, সকল প্রশংসা তাহাঁর জন্য]।
সহিহঃ বুখারি ও মুসলিম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৬৮ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলাল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক প্রত্যহ একশত বার বলেঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মূলকু ওয়া লাহুল হামদু, ইউহয়ি ওয়া ইউমিতু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর। [তিন বার]
আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তিনি এক, তাহাঁর কোন অংশীদার নেই, রাজত্ব একমাত্র তারই, সকল প্রশংসা তাহাঁর জন্য। তিনিই প্রান দান করেন এবং মৃত্যু দেন। সকল কিছুর উপর তিনি সর্বশক্তিমান”,
সে দশটি গোলাম মুক্ত করার সমপরিমান সওয়াব পায়, একশত সাওয়াব তাহাঁর আমলনামায় লিপিবদ্ধ করা হয় এবং তার [আমলনামা হইতে] একশত গুনাহ মুছে ফেলা হয়। ঐ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে শয়তান হইতে রক্ষা করা হয় এবং তার চাইতে উত্তম বস্তু নিয়ে আর কেও আসবে না , তবে যে লোক উক্ত দোয়া তার তুলনায় বেশি সংখ্যায় পাঠ করে তার কথা আলাদা।
“প্রান দান করেন এবং মৃত্যু দেন” এই অংশ ব্যতিত হাদীসটি সাহীহঃ আল – কালিমুত তাইয়্যিব তাহকীক সানি পৃষ্ঠা [২৬] বুখারি ও মুসলিম ঐ অতিরিক্ত অংশ ব্যতীত। একই সানাদ সুত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত আছেঃ “যে লোক একশতবার “সুবাহানাল্লহি ওয়াবিহামদিহী” বলে তার গুনাহসমুহ ক্ষমা করা হয় তা সাগরের ফেনারাশির চেয়ে বেশি হলেও। সহীহঃ এটা [৩৪৬৬] নও হাদীসের পুনরুক্তি । আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬১ঃ [সুবাহানালাহ ওয়া বিহামদিহি এর ফাযীলাত]
৩৪৬৯ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক সকালে ও বিকালে একশত বার বলেঃ
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ
সুবাহানাল্লহি ওয়া বিহামদিহী,
কিয়ামতের দিন তার চাইতে উত্তম [আমালকারী] আর কেউ হইবে না। তবে যে লোক তার ন্যায় কিংবা তার চাইতে অধিক পরিমান তা বলে [সে উত্তম আমালকারী বলে গণ্য হইবে]।
সহীহঃ তাহলীকুর রাগিব [হাঃ ১/২২৬], মুসলিম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৭০ : ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীগণ কে বললেনঃ তোমরা
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ
“সুব্হানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহী”
এক শত বার বল। যে ব্যক্তি তা একবার বলে তার জন্য দশটি সাওয়াব লিখা হয়। যে ব্যক্তি তা দশবার বলে তার এক শত সাওয়াব হয়। আর যে ব্যক্তি তা এক শতবার বলে তার জন্য এক হাজার সাওয়াব লিখা হয় এবং যে ব্যক্তি তা এর চেয়েও বেশি বলে আল্লাহ্ তাআলা তাকে আরও অধিক সাওয়াব দান করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চান তিনি তাকে মাফ করেন।
অত্যন্ত দুর্বল, যঈফা [৪০৬৭], আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান ও গারীব। এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
অনুচ্ছেদ-৬২ঃ তাসবীহ, তাহ্মীদ, তাহ্লীল ও তাকবীর বলার ফাযীলাত
৩৪৭১ : আমর ইবনি শুআইব [রঃ] হইতে পর্যায়ক্রমে তাহাঁর পিতা ও তাহাঁর দাদা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে এক শতবার এবং সন্ধ্যায় এক শতবার
سُبْحَانَ اللَّهِ
“সুবহানাল্লাহ”
বলে সে এক শতবার হাজ্জ আদায়কারীর অনুরুপ। যে ব্যক্তি সকালে এক শতবার এবং সন্ধ্যায় এক শতবার
الْحَمْدُ لِلَّهِ
“আলহামদুলিল্লাহ”
বলে সে আল্লাহ্ তাআলার পথে [জিহাদে] এক শত ঘোড়া দানকারীর মত অথবা তিনি বলেছেনঃ এক শত জিহাদে অংশ গ্রহণকারীর মত। যে ব্যক্তি সকালে একশত বার এবং সন্ধ্যায় এক শতবার
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”
বলে যে ইসমাঈল [আঃ] এর বংশের এক শত দাস আযাদকারীর মত। আর যে ব্যক্তি সকালে এক শতবার এবং সন্ধ্যায় এক শতবার
اللَّهُ أَكْبَرُ
“আল্লাহু আকবার”
বলে, সেই দিনের মধ্যে তার চেয়ে আর কেউ অধিক কিছু [আমল] উপস্থাপন করিতে পারবে না, তবে যে ব্যক্তি তার অনুরূপ সংখ্যায় পড়েছে অথবা তার চেয়ে অধিক সংখ্যায় পড়েছে সে ছাড়া।
মুনকার, যঈফা [১৩১৫], মিশকাত, তাহকীক ছানী [২৩১২], তালীকুর রাগীব [১/২২৯], আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। এই হাদীসটির তাহকিকঃ মুনকার
৩৪৭২ : যুহ্রী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
যুহ্রী [রঃ] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রামাযান মাসের এক তাসবীহ অন্য মাসের হাজার তাসবীহ হইতেও বেশি ফাযীলাতপূর্ণ।
সনদ দুর্বল, বিচ্ছিন্ন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬৩ঃ যে দুয়া পাঠ করলে চল্লিশ লাখ সাওয়াব হয়
৩৪৭৩ : তামীমুদ-দারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি দশবার বলে,
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ إِلَهًا وَاحِدًا أَحَدًا صَمَدًا لَمْ يَتَّخِذْ صَاحِبَةً وَلاَ وَلَدًا وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ عَشْرَ مَرَّاتٍ كَتَبَ اللَّهُ لَهُ أَرْبَعِينَ أَلْفَ أَلْفِ حَسَنَةٍ
“আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ্ তাআলা ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাহাঁর কোন শারীক নেই, তিনি একমাত্র ইলাহ এবং একক সত্তা, তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ, তিনি গ্রহন করেননি কোন বিবি এবং কোন সন্তান, তাহাঁর সমকক্ষ কেউ নেই”,
আল্লাহ্ তাআলা [তার আমলনামায়] চল্লিশ লক্ষ সাওয়াব লিখে দেন।
যঈফ, যঈফা [৩৬১১], আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব, এই একটি মাত্র সনদসূত্রেই আমরা এ হাদীস জেনেছি। আল-খালীল ইবনি মুর্রা হাদীসবেত্তাদের মতে তেমন মজবুত রাবী নন। মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল [আল-বুখারী] [রঃ] বলেন তিনি পরিত্যক্ত রাবী। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৪৭৪ : আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের নামাযের পর তার দুই পা ভাজ করা অবস্থায় [তাশাহুদের অবস্থায়] কোন কথাবার্তা বলার পূর্বে দশবার বলে,
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মূলকু ওয়া লাহুল হামদু, ইউহয়্যি ওয়া ইউমিতু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর
“আল্লাহ তাআলা ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাহাঁর কোন শারীক নেই, রাজত্ব তাহাঁরই, সকল প্রশংসা তাহাঁর জন্য, তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দান করেন, তিনি সকল কিছুর উপর সর্বশক্তিমান”,
তার আমলনামায় দশটি সাওয়াব লেখা হয়, তার দশটি গুনাহ মুছে ফেলা হয় এবং তার সম্মান দশগুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। সে ঐ দিন সব রকমের সংকট হইতে নিরাপদ থাকিবে এবং শাইতানের ধোঁকা হইতে তাকে পাহারা দেয়া হইবে এবং ঐ দিন শিরকীয় গুনাহ ছাড়া অন্য কোন প্রকারের গুনাহ তাকে সংকটাপন্ন করিতে পারবে না।
যঈফ, তালীকুর রাগীব [১/১৬৬], আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬৪ঃ নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত বিভিন্ন দুয়ার সমষ্টি
৩৪৭৫ : আবদুল্লাহ ইবনি বুরাইদাহ্ আল-আসলামী [রাদি.] হইতে তার বাবা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক লোককে তার দুয়া এভাবে বলিতে শুনেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বি আন্নি আশহাদু আন্নাকা আন্তাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আন্তাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইয়া কুন লাহু কুফুওয়ান আহাদ
“হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমিই একমাত্র আল্লাহ, তুমি ছাড়া অন্য কোন মাবূদ নেই, তুমি একক সত্তা, স্বয়ংসম্পূর্ণ, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও জন্ম দেয়া হয়নি, তার সমকক্ষ কেউ নেই”।
বর্ণনাকারী বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখন বললেনঃ সেই মহান সত্তার ক্বসম যাঁর হাতে আমার জীবন! নিঃসন্দেহে এই লোক আল্লাহ তাআলার মহান নামের ওয়াসীলায় তার নিকটে প্রার্থনা করেছে, যে নামের ওয়াসীলায় দুয়া করা হলে তিনি ক্ববূল করেন এবং যে নামের ওয়াসীলায় প্রার্থনা করলে তিনি দান করেন।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[হাঃ ৩৮৫৭]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬৫ঃ [দুয়া করার আগে আল্লাহর তাআলার প্রশংসা ও রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠ করিবে]
৩৪৭৬ : ফাযালাহ্ ইবনি উবাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [মাসজিদে] বসা অবস্থায় ছিলেন। সে সময় জনৈক লোক মাসজিদে প্রবেশ করে নামাজ আদায় করিল, তারপর বলিল,
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي
আল্লাহুম্মাগফেরলি ওয়ার হামনি
“হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার প্রতি দয়া কর”।
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে নামাযী! তুমি তো তড়িঘড়ি করলে। যখন তুমি নামাজ শেষ করে বসবে সে সময় শুরুতে আল্লাহ তাআলার যথোপযুক্ত প্রশংসা করিবে এবং আমার উপর দরূদ ও সালাম প্রেরণ করিবে, তারপর আল্লাহ তাআলার নিকটে দুয়া করিবে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর অপর লোক এসে নামাজ আদায় করে প্রথমে আল্লাহর তাআলার প্রশংসা করিল, তারপর নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ ও সালাম পেশ করিল। নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে বলিলেন, হে নামাযী! এবার দুয়া কর ক্ববূল করা হইবে।
সহীহঃ সিফাতুস্ নামাজ, সহীহ আবু দাঊদ [হাঃ ১৩৩১]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৭৭ : ফাযালাহ্ ইবনি উবাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক লোককে নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর নামাযের মাঝে দুয়া করিতে শুনলেন, কিন্তু নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর সে দরূদ পড়েনি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এ ব্যক্তিটি তাড়াহুড়া করেছে। তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে বা অপর কাউকে বললেনঃ তোমাদের কেউ নামাজ আদায় করলে সে যেন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও তাহাঁর গুণগান করে, তারপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর দরূদ পাঠ করে, তারপর তার মনের কামনা অনুযায়ী দুয়া করে।
সহীহঃ দেখুন পূর্বে বর্ণিত হাদীসটির পূর্বের হাদীস। আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৭৮ : আসমা বিনতু ইয়াযিদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলার মহান নাম [ইসমে আযম] এই দুই আয়াতের মাঝে নিহিত আছে
وإلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ
ওয়া ইলাহুকুম ইলাহু ওয়াহিদু লা ইলাহা ইল্লা হুয়ার রহমানুর রাহিম
[অনুবাদ] ঃ “আর তোমাদের মাবূদ একমাত্র আল্লাহ। তিনি ছাড়া অন্য কোন মাবূদ নেই। তিনি দয়াময়, অতিদয়ালু”- [সূরা বাক্বারাহ্ ১৬৩]।
আর সূরা আ-লি ইমরানের প্রারম্ভিক আয়াত [অনুবাদ]
الم * اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ
“আলিফ-লাম-মীম। আল্লাহু লা ইলাহ ইল্লা হুয়াল হায়্যুল কায়্যুম
“আলিফ-লাম-মীম। তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া অন্য কোন মাবূদ নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী”- [সূরা আ-লি ইমরান ১-২]।
হাসানঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[হাঃ ৩৮৫৫]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬৬ঃ [অমনোযোগীর দুয়া কবূল হয় না]
৩৪৭৯ : আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা ক্ববূল হওয়ার পূর্ণ আস্থা নিয়ে আল্লাহ তাআলার কাছে দুয়া কর। তোমরা জেনে রাখ যে, আল্লাহ তাআলা নিশ্চয় অমনোযোগী ও অসাড় মনের দুয়া ক্ববূল করেন না।
হাসানঃ সহীহ হাদীস সিরিজ [হাঃ ৫৯৬]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬৭ঃ শারীরিক সুস্থতা কামনা করা
৩৪৮০ : আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي جَسَدِي وَعَافِنِي فِي بَصَرِي وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
আল্লাহুম্মা আফিনিয় ফি জাসাদি ওয়া আফিনি ফি বাসারি ওয়াজআলহুল ওয়া রিসা মিন্নি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিমু সুবহানাল্লাহি রব্বিল আরসিল আজিম ওয়াল হামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন।
“হে আল্লাহ্! আমাকে দৈহিক সুস্থতা দান কর, আমার দৃষ্টি শক্তির সুস্থতা দান কর এবং উহাকে আমার উত্তরাধিকার বানিয়ে দাও। আল্লাহ্ ভিন্ন কোন ইলাহ্ নেই। তিনি অতি সহনশীল ও দয়ালু। মহান আরশের মালিক আল্লাহ্ তাআলা অতি পবিত্র। বিশ্বের রক্ষণাবেক্ষণকারী আল্লাহ্ তাআলার জন্য সকল প্রশংসা”।
সনদ দুর্বল, আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। তিনি আরও বলেনঃ আমি মুহাম্মাদ [ঈমাম বুখারী]–কে বলিতে শুনিয়াছি, হাবীব ইবনি আবু সাবিত উরওয়া ইবনিয যুবাইর [রঃ] হইতে কিছুই শুনেননি। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬৮ঃ {ফাতিমাহ্ [রাদি.]-কে শিখানো দুয়া}
৩৪৮১ : আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে ফাতিমাহ্ [রাদি.] একটি খাদিম চাইলেন। তিনি তাকে বললেনঃ তুমি বল,
اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ مُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ أَنْتَ الأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ وَأَنْتَ الآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ اقْضِ عَنِّي الدَّيْنَ وَأَغْنِنِي مِنَ الْفَقْرِ
আল্লাহুম্মা রব্বাস সামাওয়াতেস সাবই ওয়া রব্বাল আরসিল আজিম রব্বানা ওয়া রব্বা কুল্লি সাইইয়িন মুনজিলাত তাওরাতি ওয়াল ইঞ্জিলি ওয়াল কুরআনি ফালিকাল হাব্বি ওয়ান্নাওয়া আউজু বিকা মিন সাররি কুল্লি সাইয়িন আন্তা আখিদুন বি নাসিইয়াতিহি আন্তাল আওওয়ালু ফাআইসা কাবলাকা সাইয়ু ওয়া আন্তাজ জাহিরু ফালাইসা বা,দাকা সাইয়ুন ওয়া আন্তাজ জাহিরু ফালাইসা ফাওকাকা সাইয়ুন ওয়া আন্তাল বাতিনু ফালাইসা দু’নাকা সাইউকদি আন্নাদ দাইনা ওয়া আগ্নিনিনি মিনাল ফাকরি
“হে আল্লাহ, সাত আকাশের প্রতিপালক এবং মহান আরশের প্রভূ, আমাদের প্রতিপালক এবং প্রতিটি বস্তুর পালনকর্তা, তাওরাত, ইনজীল ও কুরআন অবতীর্ণকারী এবং শস্যবীজ ও আঁটির অংকুর উদগমনকারী! আমি এমন প্রতিটি জিনিসের অনিষ্ট হইতে তোমার নিকটে আশ্রয় চাই যার মস্তকের অগ্রভাগের চুলগুলো তুমি ধরে রেখেছ [অর্থাৎ তোমার নিয়ন্ত্রণাধীন]। তুমিই শুরু, তোমার আগে কিছুই নেই। তুমিই শেষ, তোমার পরেও কিছুই নেই। তুমিই প্রবল ও বিজয়ী, তোমার উপর কিছুই নেই। তুমিই লুকানো, তুমি ছাড়া আর কিছুই নেই। অতএব আমার ঋণ তুমি মিটিয়ে দাও এবং দরিদ্রতা হইতে আমাকে স্বাবলম্বী করে দাও”।
সহীহঃ মুসলিম [হাঃ ৮/৭৯]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৬৯ঃ [চার বস্তু হইতে আশ্রয় প্রার্থনা]
৩৪৮২ : আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ قَلْبٍ لاَ يَخْشَعُ وَدُعَاءٍ لاَ يُسْمَعُ وَمِنْ نَفْسٍ لاَ تَشْبَعُ وَمِنْ عِلْمٍ لاَ يَنْفَعُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَؤُلاَءِ الأَرْبَعِ
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ক্বাল্বিন লা ইয়াখশায়ু, ওয়া দুআয়িন লা ইয়াসমায়ু, ওয়া মিন নাফসিন লা তাশবায়ু, ওয়া মিন ইলমিন লা ইয়াংফায়ু, আউজুবিকা মিন হাউলায়িল আরবায়ি।‘
“হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি এমন মন হইতে যা [তোমার ভয়ে] ভীত হয় না, এমন দুয়া হইতে যা শুনা হয় না [প্রত্যাখ্যান করা হয়], এমন আত্মা হইতে যা পরিতৃপ্ত হয় না এবং এমন জ্ঞান হইতে যা কাজে আসে না। তোমার নিকট আমি এ চার জিনিস হইতে আশ্রয় চাই”।
সহীহঃ তালীকুর রাগীব [হাঃ ১/৭৫-৭৬], সহীহ আবু দাঊদ [হাঃ ১৩৮৪-১৩৮৫]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৭০ঃ উপকারী দুটি বাক্য
৩৪৮৩ : ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার পিতাকে বললেনঃ হে হুসাইন! তুমি প্রতিদিন কত উপাস্যের পূজা-আর্চনা কর? আমার পিতা বলিলেন, সাতজন, ছয়জন এ মাটির দুনিয়াতে এবং একজন আকাশে। এবার রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি এদের মধ্যে কার থেকে আশা ও ভীতি অনুভব কর? তিনি বলিলেন, যে আকাশে আছে তার হইতে। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে হুসাইন, আহা! যদি তুমি ইসলাম গ্রহণ করিতে তাহলে আমি তোমাকে দুটি বাক্য শিখিয়ে দিতাম যা তোমার কল্যাণে আসত। রাবী বলেনঃ হুসাইন [রাদি.] ইসলাম গ্রহণ করার পর বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে যে দুটি বাক্য শিখিয়ে দেয়ার ওয়াদা করেছিলেন, এখন তা আমাকে শিখিয়ে দিন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি বল,
اللَّهُمَّ أَلْهِمْنِي رُشْدِي وَأَعِذْنِي مِنْ شَرِّ نَفْسِي
আল্লাহুম্মা আলহিমনি রুসদি ওয়া আয়িজনি মিন সাররি নাফসি
“হে আল্লাহ! আমাকে হিদায়াত নসীব কর এবং আমার নাফসের অনিষ্ট হইতে আমাকে বাঁচাও”।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [২৪৭৬], আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে এ হাদীস অন্যসূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
অনুচ্ছেদ-৭১ঃ [দুশ্চিন্তা হইতে আশ্রয় প্রার্থনা]
৩৪৮৪ : আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি অনেকবার নাবী [সাঃআঃ]-কে নিম্নোক্ত বাক্যের মাধ্যমে দুয়া করিতে শুনেছিঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْبُخْلِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়াল‘আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া ল-বুখলি ওয়া-দ্বালা‘য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল
“হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই দুর্ভাবনা ও দুশ্চিন্তা হইতে, অক্ষমতা ও অলসতা হইতে, কৃপণতা ও ঋণের বোঝা হইতে এবং মানুষের প্রাধান্য থেকে”।
সহীহঃ গাইয়াতুল মারাম [হাঃ ৩৪৭], সহীহ আবু দাঊদ [হাঃ ১৩৭৭-১৩৭৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৮৫ : আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] দুয়া করে বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَفِتْنَةِ الْمَسِيحِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ
“হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি অলসতা, বার্ধক্য, কাপুরূষতা, কৃপণতা, মাসীহ্ দাজ্জালের পরীক্ষা এবং ক্ববরের শাস্তি হইতে”।
সহীহঃ সহীহ আবু দাঊদ [হাঃ ১৩৭৭], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৭২ঃ হাতের আঙ্গুলে গুনে গুনে তাসবীহ পাঠ করা
৩৪৮৬ : আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-কে আমি তাহাঁর স্বীয় হস্তে গুণে গুণে তাসবীহ পাঠ করিতে দেখেছি।
সহীহঃ এটি ৩৪১১ নং হাদীসের পুনরুক্তি। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৮৭ : আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এক রোগাক্রান্ত লোকের খোঁজ – খবর নিতে গিয়ে দেখেন যে , সে রোগে জর্জরিত হয়ে একেবারে চড়ুই পাখির বাচ্চার ন্যায় ক্ষীণ হয়ে গেছে। তিনি তাকে বললেনঃ রোগ মুক্তির জন্য তুমি কি আল্লাহ্ তাআলার নিকট দুয়া করনি, তুমি কি তোমার প্রভুর কাছে শান্তি ও সুস্থতা কামনা করনি? সে বলিল, আমি বলেছিলাম,
“হে আল্লাহ্~ আমাকে তুমি আখিরাতে যে শাস্তি দিবে তা এ দুনিয়াতে আগেভাগেই দিয়ে দাও”।
নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, সুবাহানাল্লাহ! তা সহ্য করার মত শক্তি –সামর্থ্য তোমার কোনটাই নাই। তুমি এভাবে কি বলিতে পারলে না,
اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
আল্ল-হুম্মা আ-তিনা- ফিদ্দুন্ইয়া- হাসানাতাও ওয়াফিল আ-খিরতি হাসানাতাও ওয়াকিনা- আযা-বান্ না-র।
“হে আল্লাহ্! দুনিয়াতেও আমাদের মঙ্গল দান কর, আখিরাতেও মঙ্গল দান কর এবং জাহান্নামের অগ্নি হইতে আমাদের হিফাযাত কর?”
সহীহঃ সহীহ আবু দাউদ [হাঃ ১৩২৯], মুসলিম, বুখারি শুধুমাত্র দুয়ার অংশ বর্ণনা করিয়াছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৮৮ : হাসান [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
ربَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً
“রাব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাওঁ ওয়াফিল আ-খিরাতি হাসানাহ”
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় হাসান [রঃ] বলেনঃ দুনিয়ার কল্যান হল জ্ঞান ও ইবাদাত, আখিরাতের কল্যাণ হল জান্নাত।
হাসান লিগাইরিহীঃ তাফসীর ত্বাবারী [৪/২০৫]। মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না খালিদ ইবনিল হারিস হইতে, তিনি হুমাইদ হইতে, তিনি সাবিত হইতে, তিনি আনাস [রাদি.] হইতে এই সূত্রে উপরিউক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করিয়াছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান লিগাইরিহি
অনুচ্ছেদ-৭৩ঃ [হিদায়াত কামনা করা]
৩৪৮৯ : আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এ দুয়া করিতেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা আল হুদা ওয়াত তাকা ওয়াল আফাফা ওয়াল গিনা
“হে আল্লাহ্! তোমার কাছে আমি হিদায়াত, তাকওয়া , চরিত্রের নির্মলতা ও আত্মনির্ভরশীলতা প্রার্থনা করি”।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[হাঃ ৩৮৩২], মুসলিম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৯০ : আবুদ্ দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দাঊদ [আঃ]-এর দুয়াসমূহের একটি হল এই যে, তিনি বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ وَالْعَمَلَ الَّذِي يُبَلِّغُنِي حُبَّكَ اللَّهُمَّ اجْعَلْ حُبَّكَ أَحَبَّ إِلَىَّ مِنْ نَفْسِي وَأَهْلِي وَمِنَ الْمَاءِ الْبَارِدِ
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা হুব্বাকা ওয়া হুব্বা মাই ইয়ুহিব্বুকা ওয়াল আমালাল্লাজি ইয়ুবাল্লিগুনি হুব্বাকা; আল্লাহুম্মাঝআল হুব্বাকা আহাব্বা ইলাইয়্যা মিন নাফসি ওয়া আহলি ওয়া মিনাল মায়িল বারিদি।’
“হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তোমার ভালোবাসা এবং যে তোমাকে ভালোবাসে তার ভালোবাসা প্রার্থনা করি এবং এমন আমল করার সামর্থ্য চাই যা তোমার ভালোবাসা লাভ করা পর্যন্ত পৌঁছে দিবে। হে আল্লাহ! তোমার ভালোবাসাকে আমার নিজের জান-মাল, পরিবার-পরিজন ও ঠান্ডা পানির চেয়েও বেশি প্রিয় করে দাও।”
রাবী বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখনই দাঊদ [আঃ]-এর আলোচনা করিতেন তখনই তাহাঁর প্রসঙ্গে বলিতেনঃ তিনি সকল লোকের চাইতে বেশি ইবাদাতকারী ছিলেন। হাদীসে বর্ণিত, “দাঊদ [আঃ] সমস্তলোকের চাইতে বেশি ইবাদাতকারী ছিলেন” এই অংশটুকু মুসলিমে ইবনি উমার হইতে বর্ণিত আছে। বাকী অংশ যঈফ, সহীহা [৭০৭], মিশকাত, তাহকীক ছানী [২৪৯৬], আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য
অনুচ্ছেদ-৭৪ঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর দুয়ায় যা বলিতেন
৩৪৯১ : আব্দুল্লাহ ইবনি ইয়াযীদ আল-খাতমী আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর দুয়ায় বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ ارْزُقْنِي حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يَنْفَعُنِي حُبُّهُ عِنْدَكَ اللَّهُمَّ مَا رَزَقْتَنِي مِمَّا أُحِبُّ فَاجْعَلْهُ قُوَّةً لِي فِيمَا تُحِبُّ اللَّهُمَّ وَمَا زَوَيْتَ عَنِّي مِمَّا أُحِبُّ فَاجْعَلْهُ لِي فَرَاغًا فِيمَا تُحِبُّ
আল্লাহুম্মার জুকনি হুব্বাকা ওয়া হুব্বা মান ইয়ানফাউনি হুব্বুহু ইনদাকা । আল্লাহুম্মা মা রজাকতানি মিম্মা উহেব্বু ফাজআলহু কুওওয়াতান লি ফিমা তুহেব্বু । আল্লাহুম্মা ওয়া মা যাঅয়াইতা আন্নি মিম্মা উহিব্বু ফাজআলহু লি ফারাগান ফিমা তুহেব্ব
“হে আল্লাহ! আমাকে তোমার ভালোবাসা দান কর এবং ঐ ব্যক্তির ভালোবাসাও দান কর যার ভালোবাসা তোমার নিকটে আমার উপকারে আসবে। হে আল্লাহ! আমার প্রিয় জিনিসের মধ্য হইতে যা তুমি আমাকে দান করেছ এটিকে আমার শক্তিতে পরিণত কর, তুমি যা ভালোবাস তা অর্জনের জন্য। হে আল্লাহ! আমার প্রিয় জিনিসের মধ্য হইতে যা তুমি আটকে রেখেছ সেটিকে তুমি যা ভালোবাস তা অর্জনের জন্য আমার অবকাশ বা সুযোগে পরিণত কর”।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী [২৪৯১] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবু জাফর আল-খাতমীর নাম উমাইর, পিতা ইয়াযীদ এবং দাদা খুমাশা। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
অনুচ্ছেদ-৭৫ঃ[আশ্রয় প্রার্থনার দুয়া]
৩৪৯২ : শাকাল ইবনি হুমাইদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] – এর কাছে এসে বললাম , হে আল্লাহ্র রসূল! আমাকে আশ্রয় প্রার্থনার একটি বাক্য শিখিয়ে দিন যা দিয়ে আমি [আল্লাহ্ তাআলার নিকটে] আশ্রয় প্রার্থনা করিতে পারি। বর্ণনাকারী বলেন, আমার হাত ধরে তিনি বলিলেন, তুমি বল,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ سَمْعِي وَمِنْ شَرِّ بَصَرِي وَمِنْ شَرِّ لِسَانِي وَمِنْ شَرِّ قَلْبِي وَمِنْ شَرِّ مَنِيِّي
আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন্ শাররি সাম্ঈ, ওয়ামিন্ শাররি বাসারী, ওয়া শাররি লিসা-নী ওয়া শাররি কলবী ওয়া শাররি মানিয়্যি
“হে আল্লাহ্! তোমার কাছে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার কানের অনিষ্ট, আমার চোখের [দৃষ্টির] অনিষ্ট, আমার জিহবার [কথার] অনিষ্ট, আমার মনের অনিষ্ট এবং আমার বীর্য অর্থাৎ লজ্জাস্থানের অনিষ্ট হইতে”।
সহীহঃ মিশকাত [হাঃ ২৪৭২], সহীহ আবু দাউদ [হাঃ ১৩৮৭] এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৭৬ঃ [আল্লাহ্ তাআলার অখুশি হইতে তাহাঁর খুশির আশ্রয় প্রার্থনা]
৩৪৯৩ : আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর পাশেই আমি ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলাম। রাতে আমি তাঁকে [বিছানা হইতে] হারিয়ে ফেললাম। তাই [অন্ধকারে] তাঁকে আমি খুঁজতে থাকলাম। আমার হস্ত তাহাঁর দুপায়ের উপরে পড়ল। তখন তিনি সাজদাহ্রত ছিলেন এবং তিনি বলছিলেনঃ
أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
আউজু বিরিদাকা মিন সাখাতিকা ওয়া বি মুয়া’ফাতিকা মিন উকবাতিকা লা উহসিয় সানায়ান আলাইকা আনতা কামা আসনাইতা আলা নাফসিকা
“[হে আল্লাহ্], আমি তোমার অখুশি হইতে তোমার খুশির আশ্রয় চাই , তোমার শাস্তি হইতে তোমার ক্ষমার আশ্রয় চাই, তোমার পূর্ণ প্রশংসা করা আমার সাধ্যাতীত, তুমি তেমন গুনেই গুণান্বিত যেভাবে তুমি নিজের গুন উল্লেখ করেছ”।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[হাঃ ৩৮৪১] , মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান। আয়িশাহ [রাদি.] হইতে এ হাদীস একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। কুতাইবাহ – লাইস হইতে , তিনি ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ [রঃ] হইতে এ সনদে পূর্বোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তাতে আরো আছেঃ “আমি তোমার [শাস্তি] হইতে তোমার আশ্রয় চাই, তোমার পূর্ণ প্রশংসা করিতে আমি অক্ষম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৭৭ঃ [যে দুয়াটি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরআনের সূরা শিখানোর ন্যায় গুরুত্ব নিয়ে শিখাতেন]
৩৪৯৪ :আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন , এ দুয়াটি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদেরকে এমন ভাবে শিক্ষা দিতেন, যেভাবে তিনি কুরআনের কোন সূরা তাহাদেরকে শিক্ষা দিতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন আজাবি জাহান্নামা ওয়া মিন আজাবিল কবর ওয়া আউজু বিকা মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ দাজ্জাল ওয়া আউজু বিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাত
“ হে আল্লাহ্! তোমার কাছে আমি আশ্রয় চাই জাহান্নামের শাস্তি হইতে, কবরের শাস্তি হইতে এবং তোমার নিকট আরো আশ্রয় চাই মাসীহ দাজ্জালের ফিত্না হইতে। তোমার নিকট আমি আরো আশ্রয় চাই জীবন ও মৃত্যুর বিপর্যয় হইতে”।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[হাঃ ৩৮৪০] , মুসলিম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৯৫ : আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন , রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ সকল বাক্য দিয়ে দুয়া করিতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ النَّارِ وَعَذَابِ النَّارِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ وَفِتْنَةِ الْقَبْرِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْغِنَى وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْفَقْرِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ اللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَاىَ بِمَاءِ الثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَأَنْقِ قَلْبِي مِنَ الْخَطَايَا كَمَا أَنْقَيْتَ الثَّوْبَ الأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ وَبَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَاىَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَالْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ফিত্নাতিন নার ওয়া আজাবিন নার ওয়া ফিতনাতিল কাবরি, ওয়া আজাবিল কাবরি, ওয়া ফিতনাতিল কাবরি, ওয়া মিন সাররি ফিতনাতিল গিনা, ওয়া মিন সাররি ফিতনাতিল ফাকর, ওয়া মিন সাররি ফিতনাতিল মাসিহিদ দাজ্জাল। আল্লাহুম্মাগছিল খাতায়াইয়া মাইস সালজি ওয়াল বারাদ, ওয়া নাক্কি কালবি মিনাল খাতায়া, কামা নাক্কাইতাস সাওবিল আবয়াদা মিনাদ্দানাস, ওয়া বাঈদ বাইনি ওয়া বাইনা খাতায়ায়া কামা বাআদতা বাইনাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিব, আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কাসলি ওয়াল হারামি ওয়াল মাছামে ওয়াল মাগরাম
“হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাইঃ জাহান্নামের বিপর্যয় ও জাহান্নামের শাস্তি হইতে, কবরের পরীক্ষা ও কবরের শাস্তি হইতে, প্রাচুর্যের বিপর্যয়কর অনিষ্ট হইতে, দরিদ্রতার বিপর্যয়কর অকল্যাণ হইতে এবং মাসীহ দাজ্জালের অনিষ্ট হইতে। হে আল্লাহ্! তুমি আমার গুনাহসমুহ বরফ-শিলা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেল, আমার মনকে সকল পাপ হইতে পরিচ্ছন্ন কর যেমনভাবে পরিচ্ছন্ন করেছ সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে এবং আমার ও আমার গুনাহসমুহের মধ্যে এতটা ব্যবধান সৃষ্টি করে দাও যতটা ব্যবধান তুমি সৃষ্টি করেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ্! তোমার নিকট আশ্রয় চাই অলসতা, বার্ধক্য , গুনাহের প্রলুব্ধকর বস্তু ও ঋণগ্রস্ততা হইতে”।
সহীহঃ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[হাঃ ৩৮৩৮], বুখারি ও মুসলিম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৯৬ : আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন , রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে আমি তাহাঁর মৃত্যুবরণ কালে বলিতে শুনেছিঃ
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَأَلْحِقْنِي بِالرَّفِيقِ الأَعْلَى
আল্লা-হুম্মাগফিরলী ওয়ারহামনী ওয়া আলহিক্বনী বির রফীক্বিল আ‘লা
“হে আল্লাহ্! আমাকে মাফ করুন, আমার প্রতি দয়া করুন এবং সুমহান সঙ্গির সঙ্গে আমাকে মিলিত করুন”।
সহীহঃ বুখারি ও মুসলিম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
অনুচ্ছেদ-৭৮ঃ [দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে দুয়া করা]
৩৪৯৭ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন এভাবে না বলে,
اللَّهُمَّ ارْحَمْنِي إِنْ شِئْتَ لِيَعْزِمِ الْمَسْأَلَةَ فَإِنَّهُ لاَ مُكْرِهَ لَهُ
আল্লাহুম্মার হামনি ইন সি,তা । লিইয়া,জিমাল মাসালাতা ফাইন্নাহু লা মুকরিহা লাহু
“ হে আল্লাহ্ ! তুমি চাইলে আমাকে মাফ কর। হে আল্লাহ্! তুমি চাইলে আমার প্রতি দয়া কর”।
বরং সে যেন পূর্ণ দৃঢ়তার সঙ্গে কামনা করে। কেননা আল্লাহ্ তাআলার উপর জবরদস্তকারী কেউ নাই।
সহীহ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[হাঃ ৩৮৫৪], বুখারি ও মুসলিম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply