সুন্নাত নামাজের হাদিস – নামাযে কষ্ট স্বীকার করা

সুন্নাত নামাজের হাদিস – নামাযে কষ্ট স্বীকার করা

সুন্নাত নামাজের হাদিস – নামাযে কষ্ট স্বীকার করা >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ (১৮৯-২০২)=১৪টি

১৮৯. অনুচ্ছেদঃ বৃষ্টির সময় ঘরে নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে
১৯০. অনুচ্ছেদঃ নামাযের পর তাসবীহ পাঠ করা
১৯১. অনুচ্ছেদঃ বৃষ্টি ও কাদার কারণে পশুর [যানবাহনে] উপর নামাজ আদায় প্রসঙ্গে
১৯২. অনুচ্ছেদঃ নামাযে কষ্ট স্বীকার করা
১৯৩. অনুচ্ছেদঃ কিয়ামাতের দিন বান্দার নিকট হইতে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হইবে
১৯৪. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি দৈনিক বার রাকাআত সুন্নাত নামাজ আদায় করে তার ফযিলত
১৯৫. অনুচ্ছেদঃ ফজরের দুই রাকআত সুন্নাতের ফাজিলাত
১৯৬. অনুচ্ছেদঃ ফজরের সুন্নাত এবং তার কিরাআত সংক্ষিপ্ত করা
১৯৭. অনুচ্ছেদঃ ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত আদায়ের পর কথাবার্তা বলা
১৯৮. অনুচ্ছেদঃ ফজর শুরু হওয়ার পর দুই রাকআত সুন্নাত ব্যতীত আর কোন নামাজ নেই
১৯৯. অনুচ্ছেদঃ ফজরের সুন্নাত আদায়ের পর শোয়া
২০০. অনুচ্ছেদঃ ইক্বামাত হয়ে গেলে ফরয নামাজ ছাড়া অন্য নামাজ নেই
২০১. অনুচ্ছেদঃ ফজরের সুন্নাত ফরযের আগে আদায় করিতে না পারলে ফরয নামাজ আদায়ের পর তা আদায় করিবে
২০২. অনুচ্ছেদঃ ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত ফরযের পূর্বে আদায় করিতে না পারলে তা সূর্য উঠার পর আদায় করিবে

২০৩. অনুচ্ছেদঃ যুহরের ফরয নামাযের পূর্বে চার রাকআত সুন্নাত

২০৪. অনুচ্ছেদঃ যুহরের ফরয নামাযের পর দুই রাকআত সুন্নাত

২০৫. অনুচ্ছেদঃ পূর্ববর্তী বিষয়ের উপর

২০৬. অনুচ্ছেদঃ আসরের [ফরয নামাযের] পূর্বে চার রাকআত

২০৭. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের দুই রাকআত সুন্নাত এবং তার কিরাআত

২০৮. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের [সুন্নাত] দুই রাকআত বাসায় আদায় করা

২০৯. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের পর ছয় রাকআত নফল নামাজ আদায়ের ফাযীলাত

২১০. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাযের পর দুই রাকআত সুন্নাত

২১১. অনুচ্ছেদঃ রাতের [নফল] নামাজ দুই দুই রাকআত

২১২. অনুচ্ছেদঃ রাতের [তাহাজ্জুদ] নামাযের ফযিলত

২১৩. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর রাতের নামাযের বৈশিষ্ট্য

২১৪. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয়

২১৫. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয়

২১৬. অনুচ্ছেদঃ যদি রাতে নামাজ আদায় না করেই ঘুমিয়ে যেতেন তবে তা দিনে আদায় করিতেন

২১৭. অনুচ্ছেদঃ প্রতি রাতে প্রাচুর্যময় আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটতম আকাশে অবতরণ করেন

২১৮. অনুচ্ছেদঃ রাতের [তাহাজ্জুদ] নামাযের কিরাআত

২১৯. অনুচ্ছেদঃ বাড়িতে নফল নামাজ আদায়ের ফযিলত

১৮৯. অনুচ্ছেদঃ বৃষ্টির সময় ঘরে নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে

৪০৯। জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা কোন এক সফরে নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। আমাদেরকে বৃষ্টিতে পেল। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ যার ইচ্ছা নিজের হাওদার মধ্যে নামাজ আদায় করে নিতে পারে।

সহিহ। ইরওয়া হাদীস নং-[২/৩৪০, ৩৪১], সহীহ্‌ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৯৭৬]। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার, সামুরা, আবুল মালীহ নিজ পিতার সূত্রে ও আবদুর রহমান ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ জাবিরের হাদীসটি হাসান সহিহ। বিদ্বানগণ বৃষ্টি ও কাদা মাটির কারণে জামাআত ছেড়ে ঘরে নামাজ আদায়ের সম্মতি দিয়েছেন। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাক একই রকম কথা বলেছেন। আবু যুরআহ্‌ বলেন, আফফান ইবনি মুসলিম [রঃ] আমর ইবনি আলী [রঃ]-এর সূত্রে একটি হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু যুরআ আরো বলেন, আমি বসরায় আলী ইবনিল মাদীনী, ইবনিশ শাযাকূনী ও আমর ইবনি আলী [রঃ]-এর চেয়ে বড় হাফিজে হাদীস দেখিনি। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯০. অনুচ্ছেদঃ নামাযের পর তাসবীহ পাঠ করা

৪১০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বিলেন, গরীব সাহাবাগণ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকটে এলেন। তাঁরা বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল ! ধনীরা আমাদের মত নামাজ আদায় করে এবং রোযা রাখে। তাহাদের সম্পদ আছে, তারা দাস আযাদ করিতে পারে এবং দান-খয়রাত করিতে পারে। তিনি বললেনঃ যখন তোমরা নামাজ আদায় করিবে তখন [নামাজ শেষে] তেত্রিশ বার

سُبْحَانَ اللَّهِ

সুবহানাল্লাহ” তেত্রিশবার

الْحَمْدُ لِلَّهِ

আলহামদু লিল্লাহ”, চৌত্রিশবার

اللَّهُ أَكْبَرُ

আল্লাহু আকবার” এবং দশবার

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” পাঠ করিবে। যারা [সাওয়াবের ক্ষেত্রে] তোমাদেরকে ছাড়িয়ে গেছে এর দ্বারা তোমরা তাহাদেরকে ধরে ফেলতে পারবে। আর যারা তোমাদের পিছে পড়ে আছে তারা তোমাদেরকে ধরতে পারবে না।

সনদ দুর্বল, তালীকুর রাগীব [২/২৬০], তাহলীলের অংশটুকু মুনকার। এ অনুচ্ছেদে কাব ইবনি উজরা, আনাস, আবদুল্লাহ ইবনি আমর, যাইদ ইবনি সাবিত, আবু দারদা, ইবনি উমার আবু যার, আবু হুরাইরা ও মুগীরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি আব্বাসের হাদীসটি হাসান গারীব। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট হইতে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ দুটি বৈশিষ্ট্য যে মুসলমানের মধ্যে পাওয়া যাবে সে জান্নাতে যাবে। তার একটি হল, প্রতি ওয়াক্তের নামাযের পর দশবার “সুবহানাল্লাহ”, দশবার “আলহামদু লিল্লাহ” এবং চৌত্রিশবার “আল্লাহু আকবার” পাঠ করা। দ্বিতীয়টি হল, শোয়ার সময় তেত্রিশবার “সুবহানাল্লাহ”, তেত্রিশবার “আলহামদু লিল্লাহ” এবং চৌত্রিশবার “আল্লাহু আকবার” পাঠ করা। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

১৯১. অনুচ্ছেদঃ বৃষ্টি ও কাদার কারণে পশুর [যানবাহনে] উপর নামাজ আদায় প্রসঙ্গে

৪১১. আমর ইবনি উসমান ইবনি ইয়ালা ইবনি মুররাহ [রাদি.] হইতে পর্যায়ক্রমে তাহাঁর পিতা ও দাদার হইতে বর্ণীতঃ

একবার তাঁরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে সফরে ছিলেন। তারা একটি সংকীর্ণ স্থান গিয়ে পৌঁছালো। নামাযের ওয়াক্ত এসে গেল। উপর থেকে আকাশ বৃষ্টিবর্ষণ করছিল এবং নীচে ছিল কর্দমাক্ত মাটি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর জন্তুযান থেকে আযান দিলেন এবং ইক্বামাত বলিলেন অথবা শুধু ইক্বামাত দিলেন। তিনি আপন সওয়ারীসহ সামনে আগালেন এবং তাহাদের নামাজ আদায় করালেন। তিনি ইশারায় রুকূ সিজদা করিলেন এবং রুকূর চেয়ে সিজদায় বেশি ঝুঁকলেন।

সনদ দুর্বল। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি গারীব। কেননা এক পর্যায়ে উমার ইবনি রিমাহ আল-বলখী একা বর্ণনা করিয়াছেন। অবশ্য তাহাঁর নিকট হইতে অনেকেই বর্ণনা করিয়াছেন। এমনিভাবে আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে যে, তিনি পানি কাদার সময় বাহনের পিঠে নামাজ আদায় করিয়াছেন। বিশেষজ্ঞগণ বাহনের পিঠে বসে নামাজ আদায় করা জায়িয বলেছেন। ঈমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম কথা বলেছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

১৯২. অনুচ্ছেদঃ নামাযে কষ্ট স্বীকার করা

৪১২. মুগীরা ইবনি শুবাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এত সময় ধরে নামাজ আদায় করিলেন যে, তাহাঁর পা দুটি ফুলে উঠল। তাঁকে বলা হল, আপনি এতো কষ্ট করছেন, অথচ আপনার পূর্বাপর সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বললেনঃ আমি কি একজন কৃতজ্ঞ বান্দা হব না।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৪১৯, ১৪২০], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা ও আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ মুগীরা ইবনি শুবার হাদীসটি হাসান সহিহ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৩. অনুচ্ছেদঃ কিয়ামাতের দিন বান্দার নিকট হইতে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হইবে

৪১৩. হুরাইস ইবনি ক্বাবীসা [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি মাদীনায় আসলাম এবং বললাম, “হে আল্লাহ! আমাকে একজন নেককার সহযোগী দান কর”। রাবী বলেন, আমি আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর নিকট অবস্থান করলাম। আমি [তাঁকে] বললাম, আমি আল্লাহ তাআলার নিকট একজন উত্তম সহযোগী চাইলাম। অতএব আপনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট শুনেছেন এমন একটি হাদীস আমাকে বলুন। আশা করা যায় আল্লাহ তাআলা আমাকে এর মাধ্যমে কল্যাণ দিবেন। তিনি বলিলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ ক্বিয়ামাতের দিন বান্দার কাজসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হইবে। যদি [নিয়মিতভাবে] ঠিকমত নামাজ আদায় করা হয়ে থাকে তবে সে নাজাত পাবে এবং সফলকাম হইবে। যদি নামাজ নষ্ট হয়ে থাকে তবে সে ব্যর্থ ও বিপর্যস্ত হইবে। যদি ফরয নামাযের মধ্যে কিছু কমতি হয়ে থাকে তবে মহান আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ দেখ, বান্দার কোন নফল নামাজ আছে কি না। থাকলে তা দিয়ে ফরযের এ ঘাটতি পূরণ করা হইবে। তারপর সকল কাজের বিচার পালাক্রমে এভাবে করা হইবে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৪২৫, ১৪২৬]। এ অনুচ্ছেদে তামীম আদ-দারী [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি উপরোক্ত সূত্রে হাসান গারীব। উল্লেখিত হাদীসটি আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর নিকট হইতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। হাসানের কোন কোন সঙ্গী হাসানের সূত্রে ক্বাবীসা ইবনি হুরাইস হইতে অন্য হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আনাস ইবনি হাকীমের সূত্রে ও আবু হুরাইরা হইতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৪. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি দৈনিক বার রাকাআত সুন্নাত নামাজ আদায় করে তার ফযিলত

৪১৪. আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সবসময় বার রাকআত সুন্নাত নামাজ আদায় করে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করেন। এ সুন্নাতগুলো হল, যুহরের [ফরযের] পূর্বে চার রাকআত ও পরে দুই রাকআত, মাগরিবের [ফরযের] পর দুই রাকআত, ইশার [ফরযের] পর দুই রাকআত এবং ফযরের [ফরযের] পূর্বে দুই রাকআত।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৪০]। এ অনুচ্ছেদে উম্মু হাবীবা, আবু হুরাইরা, আবু মূসা ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ উল্লেখিত সনদে আয়িশাহ্‌ [রাদি.]-এর হাদীসটি গারীব। একদল বিশেষজ্ঞ মুগীরা ইবনি যিয়াদের স্মরণশক্তির [দুর্বলতার] সমালোচনা করিয়াছেন।সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪১৫. উম্মু হাবীবা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দিন রাতে বার রাকআত নামাজ আদায় করিবে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করা হইবে। যুহরের নামাযের পূর্বে চার রাকআত ও পরে দুই রাকআত, মাগরিবের নামাযের পরে দুই রাকআত, ইশার নামাযের পরে দুই রাকআত এবং ভোরের ফজরের নামাযের পূর্বে দুই রাকআত।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৪১]। আবু ঈসা বলেনঃ আনবাসার সূত্রে উম্মু হাবীবার হাদীসটি হাসান সহিহ। আনবাসা হইতে অন্য সূত্রেও হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৫. অনুচ্ছেদঃ ফজরের দুই রাকআত সুন্নাতের ফাজিলাত

৪১৬. আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ফজরের দুই রাকআত [সুন্নাত] নামাজ দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম।

সহিহ। ইরওয়া হাদীস নং-[৪৩৭], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে আলী, ইবনি উমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আয়িশাহ্‌ [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান সহিহ। আহমাদ ইবনি হাম্বাল সালিহ ইবনি আব্দিল্লাহর সূত্রে আয়িশাহ্‌ হইতে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৬. অনুচ্ছেদঃ ফজরের সুন্নাত এবং তার কিরাআত সংক্ষিপ্ত করা

৪১৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এক মাস পর্যন্ত রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে পর্যবেক্ষণ করলাম। তিনি ফজরের [ফরযের] পূর্বের দুই রাকআতে সূরা কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরূন ও কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ পাঠ করিতেন।

সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৪৯]। এ অনুচ্ছেদে ইবনি মাসউদ, আনাস, আবু হুরাইরা, ইবনি আব্বাস, হাফসা ও আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান। আমরা উল্লেখিত হাদীসটি সুফিয়ান সাওরী হইতে আবু ইসহাকের সূত্রে আবু আহমাদ ছাড়া অন্য কারো নিকট থেকে পাইনি। লোকদের নিকট ইসরাঈল হইতে আবু ইসহাকের সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি বেশি পরিচিত। ইসরাঈল হইতে আবু আহমাদের সূত্রেও হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। আবু আহমাদ নির্ভরযোগ্য হাফিজ। বুনদার বলেন, আবু আহমাদ আয-যুবাইরীর চেয়ে উত্তম স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন আর কাউকে দেখিনি। আবু আহমাদের নাম মুহাম্মাদ ইবনি আব্দিল্লাহ আয-যুবাইর আল-কূফী আল-আসাদী। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৭. অনুচ্ছেদঃ ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত আদায়ের পর কথাবার্তা বলা

৪১৮. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত আদায় করিতেন, তারপর আমার সাথে কথা বলার দরকার হলে কথা বলিতেন, নতুবা নামাযের জন্য মসজিদে চলে যেতেন।

সহিহ। সহীহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১১৪৭, ১১৪৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী [সাঃআঃ]-এর কোন কোন সাহাবা ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর হইতে নামাজ আদায়ের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে কথাবার্তা বলা মাকরূহ বলেছেন। হ্যাঁ আল্লাহর যিকির ও অতি প্রয়োজনীয় কথা বলা যেতে পারে। ঈমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম মত দিয়েছেন। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৮. অনুচ্ছেদঃ ফজর শুরু হওয়ার পর দুই রাকআত সুন্নাত ব্যতীত আর কোন নামাজ নেই

৪১৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর দুই রাকআত [সুন্নাত] নামাজ ব্যতীত আর কোন নামাজ নেই।

উল্লেখিত হাদীসের অর্থ হল, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন যে, ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত নামাজ ছাড়া ফজরের ফরয নামাযের আগে সুবহি সাদিক শুরু হওয়ার পর আর কোন নামাজ নেই। সহিহ। ইরওয়া হাদীস নং-[৪৭৮]। সহীহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১১৫৯]। এ অনুচ্ছেদে আব্দুল্লাহ ইবনি আমর ও হাফসা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু মাত্র কুদামা ইবনি মূসার সূত্রেই হাদীসটি জেনেছি। ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর ফরয নামাযের আগে দুই রাকআত সুন্নাত ব্যতীত অন্য কোন নামাজ আদায় করা মাকরূহ। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অভিন্নমত রয়েছে। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৯. অনুচ্ছেদঃ ফজরের সুন্নাত আদায়ের পর শোয়া

৪২০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত আদায় করে তখন সে যেন ডান কাতে একটু শুয়ে নেয়।

সহিহ। মিশকাত-হাদীস নং-[১২০৬], সহীহ্‌ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১১৪৬]। এ অনুচ্ছেদে আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি এই সূত্রে হাসান সহীহ গারীব। আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, “নাবী [সাঃআঃ] যখন নিজের ঘরে ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত নামাজ আদায় করিতেন তখন ডান কাতে শুয়ে নিতেন। কোন কোন বিদ্বান এটাকে মুস্তাহাব বলেছেন। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০০. অনুচ্ছেদঃ ইক্বামাত হয়ে গেলে ফরয নামাজ ছাড়া অন্য নামাজ নেই

৪২১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন নামাযের জন্য ইকামাত দেওয়া হয় তখন ফরয নামাজ ছাড়া অন্য কোন নামাজ নেই।

সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৫১], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে ইবনি বুহাইনা, আবদুল্লাহ ইবনি আমর, আবদুল্লাহ ইবনি সারজিস, ইবনি আব্বাস ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান। আইউব, ওয়ারাকা ইবনি উমার, যিয়াদ ইবনি সাদ, ইসমাঈল ইবনি মুসলিম এবং মুহাম্মাদ ইবনি জুহাদা সম্মিলিতভাবে এ হাদীসটি আমর ইবনি দীনার হইতে, তিনি আতা হইতে, তিনি আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে মারফু হিসাবে বর্ণনা করিয়াছেন। হাম্মাদ ইবনি যায়িদ ও সুফিয়ান ইবনি উআইনা তাহাদের সনদ পরম্পরায় আমর ইবনি দীনার-এর সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন, কিন্তু তাঁরা মারফূ হিসাবে বর্ণনা করেননি। তবে মারফূ হিসাবে বর্ণিত হাদীসটিই আমাদের মতে বেশি সহিহ। নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবী ও অন্যান্যরা এ হাদীস অনুসারে আমল করিয়াছেন। তাঁরা বলেছেন, নামাযের জন্য ইক্বামাত দেওয়া হলে কোন ব্যক্তিই ফরয নামাজ ব্যতীত অন্য কোন নামাজ আদায় করিবে না। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম কথা বলেছেন। আরো কয়েকটি সূত্রে আবু হুরাইরার নিকট হইতে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। আইয়্যাশ ইবনি আব্বাস আবু সালামা হইতে তিনি আবু হুরাইরা হইতে তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০১. অনুচ্ছেদঃ ফজরের সুন্নাত ফরযের আগে আদায় করিতে না পারলে ফরয নামাজ আদায়ের পর তা আদায় করিবে

৪২২. মুহাম্মাদ ইবনি ইবরাহীম হইতে তাহাঁর দাদা ক্কাইস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [ক্কাইস] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [নিজের ঘর হইতে] বেরিয়ে আসলেন, অতঃপর নামাযের ইক্কামাত দেওয়া হল। আমি তাহাঁর সাথে নামাজ আদায় করলাম। নামাজ হইতে অবসর হয়ে তিনি আমাকে নামাজরত অবস্থায় দেখলেন। তিনি বললেনঃ হে ক্কাইস, থামো! তুমি কি দুই নামাজ একত্রে আদায় করছ? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ফজরের দুই রাকআত [সুন্নাত] আদায় করিতে পারিনি। তিনি বললেনঃ তাহলে কোন দোষ নেই [পড়ে নাও]।

সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৫১] আবু ঈসা বলেনঃ সাদ ইবনি সাঈদের হাদীসের মাধ্যমেই কেবল আমরা মুহাম্মাদ ইবনি ইবরাহীমের হাদীসটি এভাবে জেনেছি। সুফিয়ান ইবনি উআইনা বলেন, আতা ইবনি আবু রাবাহ এ হাদীসটি সাদ ইবনি সাঈদের নিকট শুনেছেন। এ হাদীসটি মুরসাল হিসাবে বর্ণিত হয়েছে। মক্কাবাসী আলিমদের একদল ফরয নামাযের পর সূর্য উঠার পূর্বে ফাওত হওয়া সুন্নাত দুই রাকআত আদায় করিতে কোন অপরাধ মনে করেন না। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসের সনদ মুত্তাসিল [পরস্পর সংযুক্ত] নয়। মুহাম্মাদ ইবনি ইবরাহীম কখনও কাইসের নিকট শুনেননি। অপর এক বর্ণনায় আছেঃ “রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বের হলেন এবং কাইসকে দেখিতে পেলেন……। সাদ ইবনি সাঈদের সুত্রে বর্ণিত আব্দুল আযীযের হাদীসের চেয়ে এটি অধিক সহীহ। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০২. অনুচ্ছেদঃ ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত ফরযের পূর্বে আদায় করিতে না পারলে তা সূর্য উঠার পর আদায় করিবে

৪২৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত [ফরযের পুর্বে] আদায় করিতে পারেনি সে সূর্য উঠার পর তা আদায় করিবে।

সহিহ। সহীহাহ্‌-[২৩৬১] আবু ঈসা বলেনঃ আমরা উল্লেখিত সূত্রেই শুধুমাত্র এ হাদীসটি জেনেছি। আব্দুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] এই হাদীস অনুসারে আমল করিতেন। একদল বিশেষজ্ঞ এ হাদীসের উপর আমল করিয়াছেন। সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ, ইসহাক এবং ইবনিল মুবারাক একই রকম মত ব্যক্ত করিয়াছেন। আবু ঈসা আরো বলেনঃ আমর ইবনি আসিম ব্যতীত অন্য কেউ হাম্মাম হইতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন বলে আমাদের জানা নেই। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে আরো বর্ণিত আছে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, “যে ব্যক্তি সূর্য উঠার পূর্বে ফজরের এক রাকআত ধরতে পারল সে ফজরের ওয়াক্ত পেল। – উপরোক্ত সূত্রে বর্ণিত এ হাদীসটিই প্রসিদ্ধ। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০৩. অনুচ্ছেদঃ যুহরের ফরয নামাযের পূর্বে চার রাকআত সুন্নাত

৪২৪. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুহরের [ফরয] নামাযের পূর্বে চার রাকআত এবং পরে দুই রাকআত [সুন্নাত নামাজ] আদায় করিতেন।

সহিহ ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৬১]। ৪৩০ নং হাদীসে এর বাকী অংশ বর্ণিত হইবে। এ অনুচ্ছেদে আয়েশা ও উম্মু হাবীবা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন-আলী [রাদি.]-এর বর্ণিত হাদীসটি হাসান। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও তাঁদের পরবর্তীগণ যুহরের পূর্বে চার রাকআত সুন্নাত নামাজ আদায় করা পছন্দ করিয়াছেন। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারাক, ইসহাক এবং কুফাবাসীগন একই রকম কথা বলেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ বলেছেন, রাত এবং দিনের [অন্যান্য] নামাজ দুই দুই রাকআত। তাঁরা দুই দুই রাকআত পর সালাম ফিরানোর কথা বলেছেন। ঈমাম শাফি এবং ঈমাম আহমাদ একথা বলেছেন। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০৪. অনুচ্ছেদঃ যুহরের ফরয নামাযের পর দুই রাকআত সুন্নাত

৪২৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে যুহরের [ফরয] নামাযের পূর্বে দুই রাকআত এবং পরে দুই রাকআত সুন্নাত আদায় করেছি।

সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১১৩৮], বুখারী আরো পূর্ণভাবে। এ অনুচ্ছেদে আলী ও আয়েশা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান সাহীহ্। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০৫. অনুচ্ছেদঃ পূর্ববর্তী বিষয়ের উপর

৪২৬. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] যদি যুহরের পূর্বে চার রাকআত না আদায় করিতেন তবে যুহরের [ফরযের] পর তা আদায় করিতেন।

সহিহ। তামামুল মিন্নাহ্। যঈফা-[৪২০৮]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। ইবনিল মুবারাকের সুত্রেই আমরা এ হাদীসটি জেনেছি। ক্বাইস ইবনি রাবী শুবার সুত্রে খালিদ হাযযা হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। কাইস ইবনি রাবী ব্যতীত অন্য কেউ শুবা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন বলে আমাদের জানা নেই। আব্দুর রহমান ইবনি আবী লাইলার সুত্রেও নাবী [সাঃআঃ] হইতে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৭. উম্মু হাবীবা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যুহরের [ফরযের] পূর্বে চার রাকআত এবং পরে চার রাকআত নামাজ আদায় করিবে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৬০]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। অন্য সূত্রেও হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮. আনবাসা ইবনি আবু সুফিয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার বোন এবং নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবা [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি যুহরের [ফরযের] পূর্বে চার রাকআত এবং পরে চার রাকআত নামাযের হিফাজাত করিবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন।

সহিহ। প্রাগুক্ত। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্‌ গারীব। আবু আবদুর রহমান আল-কাসিম একজন সিকাহ রাবী। তিনি প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আবু উমামার শাগরিদ। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০৬. অনুচ্ছেদঃ আসরের [ফরয নামাযের] পূর্বে চার রাকআত

৪২৯. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আসরের [ফরয নামাযের] পূর্বে চার রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। তিনি [আল্লাহর] নৈকট্য লাভকারী ফেরেশতা ও তাহাদের অনুগামী মুসলমান এবং মুমিনদের প্রতি সালাম করার মাধ্যমে এ নামাযের মাঝখানে বিভক্তি করিতেন [দুই সালামে চার রাকআত আদায় করিতেন]।

হাসান। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৬১], এটা পূর্বে বর্ণিত ৪২৫ নং হাদীসের বাকী অংশ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার ও আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আলী [রাদি.]-এর হাদীসটি হাসান। ইসহাক ইবনি ইবরাহীম আসরের পূর্বে এক সালামেই চার রাকআত আদায় করা পছন্দ করিয়াছেন। তিনি এ হাদীসকে দলীল হিসাবে গ্রহন করে বলেছেন, সালামের মাধ্যমে বিভক্তি করার তাৎপর্য হল রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুই রাকআত পর তাশাহ্‌হুদ পাঠ করিতেন। ঈমাম শাফি এবং আহমাদের মতে, রাত এবং দিনের [ফরয নামাজ ছাড়া অন্যান্য সব] নামাজ দুই রাকআত করে আদায় হইবে। তাঁরা উভয়ে আসরের পূর্বের চার রাকআতে দুই রাকআত পর পর সালাম ফিরানোই পছন্দ করিয়াছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৪৩০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি আসরের পূর্বে চার রাকআত নামাজ আদায় করিবে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অনুগ্রহ করুন।

হাসান। মিশকাত-হাদীস নং-[১১৭০], সহীহ্‌ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১১৫৪], তালীকুর রাগীব-[১/২০৪], তালীক আলা ইবনি খুজাইমাহ-[১১৯৩]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

২০৭. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের দুই রাকআত সুন্নাত এবং তার কিরাআত

৪৩১. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে মাগরিবের পরের দুই রাকআতে এবং ফজরের পূর্বের দুই রাকআতে “কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন” এবং “কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ” সূরা দুটি এত সংখ্যকবার পাঠ করিতে শুনিয়াছি যে, তা গণনা করে শেষ করিতে পারব না। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৬৬]। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি মাসঊদের হাদীসটি গারীব। আবদুল মালিক ইবনি মাদান হইতে শুধুমাএ আসিমের সূত্রেই এই হাদীসটি আমারা জেনেছি। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০৮. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের [সুন্নাত] দুই রাকআত বাসায় আদায় করা

৪৩২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে তাহাঁর বাসায় মাগরিবের পর দুই রাকআত সুন্নাত নামাজ আদায় করেছি।

সহিহ। সহীহ্‌ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১১৫৮], বুখারী। এ অনুচ্ছেদে রাফি ইবনি খাদীজ ও কাব ইবনি উজরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান সহিহ। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৩৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে দশ রাকআত নামাজ মুখস্থ রেখেছি। তিনি দিনরাত [চব্বিশ ঘণ্টায়] এ নামাজগুলো আদায় করিতেন। যুহরের পূর্বে দুই রাকআত এবং পরে দুই রাকআত, মাগরিবের পরে দুই রাকআত এবং ইশার পর দুই রাকআত। রাবী বলেন হাফসাহ্‌ আমাকে বলেছেন, তিনি [রসুলুল্লাহ] ফজরের পূর্বেও দুই রাকআত আদায় করিতেন।

সহিহ। ইরওয়া হাদীস নং-[৪৪০], বুখারী। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৩৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

সারিম হইতে ও ইবনি উমার [রাদি.] সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে…….. একই হাদীস পুনর্বার বর্ণিত হয়েছে।

আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ।এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২০৯. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের পর ছয় রাকআত নফল নামাজ আদায়ের ফাযীলাত

৪৩৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির মাগরিবের পর ছয় রাকআত নামাজ আদায় করলে এবং তার মাঝখানে কোন অশালীন কথা না বললে তাঁকে এর বিনিময়ে বার বছরের ইবাদাতের সমান সাওয়াব দেয়া হইবে।

অত্যন্ত দুর্বল, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১৬৭]। আবু ঈসা বলেনঃ আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকআত নামাজ আদায় করে আল্লাহ্‌ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করেন। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র যাইদ ইবনি হুবাব হইতে উমার ইবনি আবু খাসআমের সূত্রেই এ হাদীসটি জানতে পেরেছি। আমি মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈলকে বলিতে শুনিয়াছি, উমার ইবনি আব্দুল্লাহ ইবনি আবু খাসআম একজন প্রত্যাখ্যাত রাবী। হাদীসশাস্ত্রে তিনি খুবই দুর্বল। এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

২১০. অনুচ্ছেদঃ ইশার নামাযের পর দুই রাকআত সুন্নাত

৪৩৬. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি শাকীক [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাদি.]-কে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলিলেন, তিনি [রসুলুল্লাহ] যুহরের পূর্বে দুই রাকআত এবং পরে দুই রাকআত, মাগরিবের পর দুই রাকআত, ইশার পর দুই রাকআত এবং ফজরের পূর্বে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিতেন।

সহীহ। মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে আলী ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবদুল্লাহ ইবনি শাকীকের সূত্রে আয়েশা হাদীসটি হাসান সহিহ। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১১. অনুচ্ছেদঃ রাতের [নফল] নামাজ দুই দুই রাকআত

৪৩৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেন, রাতের নামাজ দুই দুই রাকআত [করে আদায় করিতে হয়]। তুমি যদি ভোর হয়ে যাওয়ার ভয় কর তবে এক রাকআত করে বিতর পূর্ণ করে নাও। বিতর নামাজকেই তোমার সর্বশেষ নামাজ কর।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৩১৯, ১৩২০], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।এ অনুচ্ছেদে আমর ইবনি আবাসা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান সহিহ। বিশেষজ্ঞগণ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন এবং রাতের নামাজ দুই দুই রাকআত করে আদায় করিয়াছেন। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাক এই কথা বলেছেন। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১২. অনুচ্ছেদঃ রাতের [তাহাজ্জুদ] নামাযের ফযিলত

৪৩৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ রামাযান মাসের রোযার পর সর্বোৎকৃষ্ট রোযা হল আল্লাহ তাআলার মাস মুহাররামের রোযা। ফরয নামাযের পর সর্বোৎকৃষ্ট নামাজ হল রাতের [তাহাজ্জুদের] নামাজ।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৭৪২], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে জাবির, বিলাল ও আবু উমামা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা [রাদি.]র হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু ঈসা বলেনঃ রাবী আবু বিশরের নাম জাফর ইবনি আবী ওয়াহশীয়াহ আবু ওয়াহশীয়ার নাম ইয়াস। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৩. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর রাতের নামাযের বৈশিষ্ট্য

৪৩৯. আবু সালামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আয়িশা [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হল, রামাযান মাসে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজের বৈশিষ্ট্য কি বা ধরন কেমন ছিল? তিনি বলিলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] রামাযান মাসে ও অন্যান্য সময়ে [রাতের বেলা] এগার রাকআত নামাযের বেশি আদায় করিতেন না। তিনি চার রাকআত করে মোট আট রাকআত আদায় করিতেন। এর সৌন্দর্য এবং দৈর্ঘ্য সম্পর্কে তুমি আমাকে আর প্রশ্ন কর না। অতঃপর তিনি তিন রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বিতর আদায়ের পূর্বে ঘুমান? তিনি বলিলেন. হে আয়েশা! আমার চক্ষু দুটি ঘুমায় কিন্তু আমার অন্তর ঘুমায় না।

সহিহ। সালাতুত্ তারাবীহ্, সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১২১২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাতের বেলা এগার রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। তার মধ্যে এক রাকআত বিতর আদায় করে নিতেন। তিনি নামাজ শেষে অবসর হয়ে ডান কাতে শুয়ে যেতেন।

সহিহ। এই হাদীসে শুবার বর্ণনাটি সাজ, সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১২০৬]। সঠিক কথা হচ্ছে- শুবার বর্ণনা ফজরের সুন্নাতের পরে-বুখারী। এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

৪৪১. ইবনি শিহাব হইতে বর্ণীতঃ

কুতাইবা মালিকের সূত্রে ইবনি শিহাব হইতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

আবু ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান সহিহ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২১৪. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয়

৪৪২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] রাতের বেলা তের রাকআত নামাজ আদায় করিতেন।

সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১২০৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ আরো পূর্ণরূপে।আবু ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু জামরাহ যুবাঈর নাম নাস্‌র ইবনি ইমরান যুবাঈ। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৫. অনুচ্ছেদঃ একই বিষয়

৪৪৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর রাতের বেলা নয় রাকআত নামাজ আদায় করিতেন।

সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১২১৩], মুসলিম আরো পূর্ণরূপে। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা, যাইদ ইবনি খালিদ ও ফজল ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আয়েশা [রাদি.]-এর হাদীসটি উল্লেখিত সনদে হাসান সহীহ গারীব। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪৪. সুফিয়ান সাওরী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

সুফিয়ান সাওরী আমাশের বরাতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

আবু ঈসা বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাতের [তাহাজ্জুদের] নামাজ বিতরসহ সর্বোচ্চ তের রাকআত এবং সর্বনিন্ম নয় রাকআত ছিল বলে বর্ণিত আছে। এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২১৬. অনুচ্ছেদঃ যদি রাতে নামাজ আদায় না করেই ঘুমিয়ে যেতেন তবে তা দিনে আদায় করিতেন

৪৪৫. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] যদি বেশি ঘুম অথবা তন্দ্রার কারণে রাতের নামাজ আদায় করিতে সক্ষম না হইতেন, তবে দিনের বেলা বার রাকআত আদায় করে নিতেন।

সহিহ। মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান সহিহ। রাবী হিশাম তিনি ইবনি আমির আর হিশাম ইবনি আমির সাহাবীদের মধ্যে একজন। বাহ্‌য ইবনি হাকীম [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, যুরারা ইবনি আওফা বসরার ক্বাযী [বিচারপতি] ছিলেন। তিনি কুশাইর গোত্রের ঈমামতি করিতেন। একদিন সকালের নামাযে তিনি এই আয়াত পাঠ করলেনঃ স্মরণ কর, যখন শিংগায় ফুঁ দেওয়া হইবে। সে দিনটি বড়ই কঠোর ও সাংঘাতিক হইবে”-[সূরাদি. আল-মুদ্দাসসির-৮, ৯]। তিনি সাথে সাথে পড়ে গিয়ে মারা গেলেন। যারা তাঁকে তুলে তাহাঁর ঘরে নিয়ে গেলেন, আমিও তাদেও সাথে ছিলাম। -সনদ হাসান। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৭. অনুচ্ছেদঃ প্রতি রাতে প্রাচুর্যময় আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটতম আকাশে অবতরণ করেন

৪৪৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ তাআলা রাতের প্রথম এক তৃতীয়াংশ চলে যাওয়ার পর প্রতি রাতে পৃথিবীর নিকটতম আকাশে অবতরণ করেন। অতঃপর তিনি বলেনঃ আমিই রাজাধিরাজ। আমার নিকট প্রার্থনাকারী কে আছে, আমি তার প্রার্থনা কবুল করব। আমার নিকট আবেদনকারী কে আছে, আমি তার আবেদন পূর্ণ করব। কবুল করব। আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী কে আছে, আমি তাকে ক্ষমা করব। সকাল আলোকিত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের এভাবে আহবান করিতে থাকেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১৩৬৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আলী ইবনি আবু তালিব, আবু সাঈদ, রিফাআ আল-জুহানী, জুবাইর ইবনি মুতইম, ইবনি মাসউদ, আবু দারদা ও উসমান ইবনি আবুল আস [রাদি.] হইতেও বর্ণিত আছে, আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা [রাদি.]র হাদীসটি হাসান সহিহ। উল্লেখিত হাদীসটি আবু হুরাইরা নিকট হইতে অসংখ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে এও বর্ণিত আছে যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে বারকাতময় আল্লাহ তাআলা [পৃথিবীর] নিকটতম আকাশে অবতীর্ণ হন। সব বর্ণনাগুলোর মধ্যে এটিই সর্বাধিক সহিহ বর্ণনা। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৮. অনুচ্ছেদঃ রাতের [তাহাজ্জুদ] নামাযের কিরাআত

৪৪৭. আবু কাতাদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] আবু বাকার [রাদি.]-কে বললেনঃ আমি আপনার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন আপনি নামাজ আদায় করছিলেন এবং আপনার কন্ঠস্বর খুব নীচু ছিল। তিনি [আবু বাকর] বলিলেন, আমি তাঁকে শুনাচ্ছিলাম যিনি আমার কানকথাও জানেন। তিনি [রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]] বল্লেনঃ কিছুটা উচ্চস্বরে পাঠ করুন। তিনি [রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]] উমার [রাদি.]-কে বললেনঃ আমি আপনার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন আপনি নামাজ আদায় করছিলেন এবং আপনার কন্ঠস্বর খুব উঁচু ছিল। তিনি [উমার] বলিলেন, আমি অলসদের জাগরিত করছিলাম এবং শাইতানকে তাড়াচ্ছিলাম। তিনি বলিলেন, আপনার কন্ঠস্বর কিছুটা নীচু করুন।

সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১২০০], মিশকাত-হাদীস নং-[১২০৪]। এ অনুচ্ছেদে আয়েশা, উম্মু হানী, আনাস, উম্মু সালামাহ্ ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি গারীব। উল্লেখিত হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনি ইসহাক মুসনাদ হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন, আর অনেকেই এই হাদীসটিকে আবদুল্লাহ ইবনি আবু রবাহর নিকট হইতে মুরসাল হিসাবেও বর্ণনা করিয়াছেন। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪৮. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক রাতে নাবী [সাঃআঃ] কুরআনের একটি আয়াত পাঠ করেই রাত কাটিয়ে দিলেন।

সনদ সহিহ। আবু ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি উপরোক্ত সূত্রে হাসান গারীব। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪৯. আবদুল্লাহ ইবনি আবু ক্বাইস [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাদি.]–কে প্রশ্ন করলাম, রাতের [তাহাজ্জুদ] নামাযে নাবী [সাঃআঃ]-এর কিরাআত কেমন ছিল? তিনি নিরবে কিরাআত করিতেন না সরবে? তিনি [আয়িশাহ্‌] বলিলেন, কখনও তিনি নিচু আওয়াজে এবং কখনও উঁচু আওয়াযে কিরাআত পাঠ করিতেন। আমি বললাম, সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য যিনি এ কাজের মধ্যে প্রশস্ততা রেখেছেন।

সহীহ। সহীহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১২৯১], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৯. অনুচ্ছেদঃ বাড়িতে নফল নামাজ আদায়ের ফযিলত

৪৫০. যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ ফরয ব্যতীত তোমাদের বাড়িতে আদায়কৃত নামাজ সর্বোৎকৃষ্ট।

সহিহ। সহীহ্‌ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১৩০১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে উমার, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ, আবু সাঈদ, আবু হুরাইরা, ইবনি উমার, আয়িশাহ্‌, আবদুল্লাহ ইবনি সাদ ও যাইদ ইবনি খালিদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ যাইদ ইবনি সাবিতের হাদীসটি হাসান। এ হাদীসের বর্ণনায় রাবীগনের মধ্যে [সনদের দিক হইতে] মতের অমিল হয়েছে। মূসা ইবনি উক্ববা ও ইবরাহীম ইবনি আবু নাযর আবু নাযর হইতে মারফূরূপে বর্ণনা করিয়াছেন। মালিক ইবনি আনাস আবু নাযর হইতে এ হাদীসটি মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেননি। মারফূ বর্ণনাটি অপেক্ষাকৃত সহীহ্‌। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৫১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের বাড়িতেও নামাজ আদায় কর, তাঁকে কবরস্থানে পরিনত কর না।

সহিহ। সহীহ্‌ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৯৫৮, ১৩০২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। সুন্নাত নামাজের হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


by

Comments

Leave a Reply