সাহু সেজদাহ ও অন্যান্য সাজদাহ প্রসঙ্গ

সাহু সেজদাহ ও অন্যান্য সাজদাহ প্রসঙ্গ

 সাহু সেজদাহ ও অন্যান্য সাজদাহ প্রসঙ্গ >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় ৮ঃ সাহু সেজদাহ ও অন্যান্য সাজদাহ প্রসঙ্গ

পরিচ্ছেদ ১২৮. নামাজে যে ব্যক্তি প্রথম তাশাহহুদ ভুলে যাবে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১২৯. যে ব্যক্তি ভুলবশত নামাজ সম্পূর্ণ করার পূর্বে সালাম ফিরাবে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১৩০ঃ সাজদায়ে সাহুর পর তাশাহহুদ পড়ার বিধান
পরিচ্ছেদ ১৩১ঃ যে ব্যক্তি সন্দেহ করে কিন্তু কোনটিই তার নিকট প্রাধান্য পায়নি তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১৩২ঃ যে ব্যক্তি বৃদ্ধি বা সংশয় করছে ও দুটি বিষয়ের কোন একটি তার প্রাধান্য পাচ্ছে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১৩৩ঃ সালাম ফিরানোর পর সন্দেহকারীর সাজদাহ এর প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদ ১৩৪ঃ ভুল বারংবার হলে সিজদাহও বারংবার করিতে হইবে
পরিচ্ছেদ ১৩৫ঃ মুফাস্‌সাল সূরাগুলোতে তিলাওয়াতে সাজদাহ রয়েছে
পরিচ্ছেদ ১৩৬ঃ সূরা সোয়াদ-এ তিলাওতে সাজদার বিধান
পরিচ্ছেদ ১৩৭ঃ সূরা আন্‌-নাজম এর সাজদাহ এর বিধান
পরিচ্ছেদ ১৩৮ঃ সূরা আল-হাজ্জ্ব এর দু‘সাজদাহ এর বিধান
পরিচ্ছেদ ১৩৯ঃ তিলাওয়াতের সাজদাহ এর বিধান
পরিচ্ছেদ ১৪০ঃ তিলাওয়াতের সাজদাহর জন্য তাকবীর দেয়ার বিধান
পরিচ্ছেদ ১৪১ঃ খুশির সংবাদ পেয়ে কৃতজ্ঞতার সিজদাহ দেওয়া শরীয়তসম্মত

পরিচ্ছেদ ১২৮. নামাজে যে ব্যক্তি প্রথম তাশাহহুদ ভুলে যাবে তার বিধান

৩৩০ – আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু বুহাইনাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাদের নিয়ে যুহরের নামাজ আদায় করিলেন। তিনি প্রথমে দু’রাকাআত পড়ার পর না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। মুক্তাদীগন তাহাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেলেন। এভাবে নামাজের শেষভাগে মুক্তাদীগন সালামের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু নাবী [সাঃআঃ] বসাবস্থায় তাকবীর বলিলেন এবং সালাম ফিরানোর পূর্বে দু’বার সাজদাহ্‌ করিলেন, এরপর সালাম ফিরালেন। -৭ জনে [আহমাদ, বুখারী, মুসলিম, আবূ দাউদ, নাসায়ি হাদিস, তিরমিজি, ইবনু মাজাহ] এবং শব্দ বিন্যাস বুখারীর। মুসলিমের ভিন্ন একটি বর্ণনায় আছে- প্রত্যেক সাহু সেজদাহর জন্য উপবিষ্ট অবস্থায়`আল্লাহু আকবার’ বলিতেন ও সাজদাহ করিতেন এবং মুক্তাদীগনও তাহাঁর সঙ্গে সাজদাহ করিতেন, প্রথম তাশাহহুদে ভুল করে না বসার কারণে এ সাজদাহ দু’টি দিতেন। {৩৭০}

{৩৭০} বুখারী ৮২৯, ৮৩০, ১২২৪, ১২২৫, ১২৩০, ৬৬৭০, মুসলিম ৫৭০, তিরমিজি ৩৯১, নাসায়ি হাদিস ১১৭৭, ১১৭৮, ১২২২, ১২২৩, আবূ দাউদ ১০৩৪, ইবনু মাজাহ ১২০৬, ১২০৭, আহমাদ ২২৪১১, ২২৪২১, মুওয়াত্তা মালেক ২০২, ২০৩, ২১৮, দারেমী ১৪৯৯, ১৫০০। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১২৯. যে ব্যক্তি ভুলবশত নামাজ সম্পূর্ণ করার পূর্বে সালাম ফিরাবে তার বিধান

৩৩১ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বিকালের কোন এক সালাত দু’রাক’আত {৩৭১} আদায় করে সালাম ফিরালেন। অতঃপর মাসজিদের একটি কাষ্ঠ খণ্ডের নিকট গিয়ে দাঁড়ালেন এবং তার উপর হাত রাখলেন। মুসল্লীগণের ভিতরে সামনের দিকে আবূ বাক্‌র [রাঃআঃ] ও`উমার [রাঃআঃ]ও ছিলেন। তাঁরা উভয়ে তাহাঁর সাথে কথা বলিতে ভয় পাচ্ছিলেন। তাড়াহুড়াকারী মুসল্লীগণ বেড়িয়ে পড়লেন। তাঁরা বলাবলি করিতে লাগলেন, নামাজ কি কমিয়ে দেয়া হয়েছে? কিন্তু এক ব্যক্তি যাঁকে নাবী [সাঃআঃ] যূল ইয়াদাইন বলে ডাকতেন, জিজ্ঞেস করিল আপনি কি ভুলে গেছেন, না কি নামাজ কমিয়ে দেয়া হয়েছে? তিনি বলিলেন ঃ আমি ভুলিনি আর নামাজও কম করা হয়নি। তখন তাঁকে বলা হল যে, আপনি ভুলে গেছেন। তখন তিনি দু’রাক’আত নামাজ আদায় করে সালাম ফিরালেন। অতঃপর তাকবীর বলে সাজদাহ করিলেন, স্বাভাবিক সাজদাহর ন্যায় বা তার চেয়ে দীর্ঘ সাজদাহ্‌। অতঃপর মাথা উঠিয়ে আবার তাকবীর বলে মাথা রাখলেন অর্থাৎ তাক্‌বীর বলে সাজদাহ্‌ গিয়ে স্বাভাবিক সাজদাহ্‌র মত অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সাজদাহ্‌ করিলেন। অতঃপর মাথা উঠিয়ে তাক্‌বীর বলিলেন। শব্দ বিন্যাস বুখারীর।

মুসলিমের ভিন্ন একটি বর্ণনায় আছে, “ঐটি আসরের নামাজ ছিল।” আবূ দাউদে আছে, তিনি লোকেদের জিজ্ঞেস করিলেন- যুলইয়াদাইন কি ঠিক বলছেন? লোকেরা ইশারাতে হ্যাঁ বললো। এটা বুখারী মুসলিমেও আছে, কিন্তু তাতে একবচন শব্দের স্থলে বহুবচন শব্দ রয়েছে। তাহাঁর অন্য বর্ণনায় আছে- তিনি সাহু সেজদাহ করেননি যতক্ষন না আল্লাহ্‌ তাঁকে [অন্তরে] এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস জন্ম দিয়েছেন। {৩৭২}

{৩৭২} বুখারী ৪৮২, ৭১৪, ৭১৫, ১২২৭, ১২২৮, ১২২৯, তিরমিজি ৩৯৪, ৩৯৯, নাসায়ি হাদিস ১২২৪, ১২২৭, ১২২৮, ১২২৯, আবূ দাউদ ১০০৮, ১০১৪, ১০১৫, ইবনু মাজাহ ১২১৪, আহমাদ ৭১৬০,৭৩২৭, ৭৬১০, ৭৭৬১, মুওয়াত্তা মালেক ২১০, ২১১, দারেমী ১৪৯৬, ১৪৯৭, হাদিসটি মুনকার। এর সানাদে মুহাম্মাদ বিন কাসীর বিন আবি আতা’ রয়েছেন আর তিনি অনেক মুনকার হাদিস বর্ণনা করেন। বিশেষ করে ইমাম আওযায়ীর [রহঃ] কাছ থেকে আর উক্ত হাদিসটিও তার নিকট বর্ণিত। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩০ঃ সাজদায়ে সাহুর পর তাশাহহুদ পড়ার বিধান

৩৩২ – ইমরান বিন হুসাইন [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাদের নামাজে ইমামতি করিতে গিয়ে একদিন ভুল করিলেন। ফলে তিনি দুটি সাহু সেজদাহ করিলেন- তারপর তাশাহহুদ পড়ে সালাম ফিরালেন। তিরমিজি এটিকে হাসান বলেছেন। হাকিম এটিকে সহীহ্‌ বলেছেন। {৩৭৩}

{৩৭৩} মুসলিম ৫৭৪, তিরমিজি ৩৯৫, নাসায়ি হাদিস ১২৩৭, ১৩৩১, ইবনু মাজাহ ১২১৫, আহমাদ ১৯৩৬০, সুনান আল কুবরা ২/৩৫৫ গ্রন্থে বায়হাক্বী বলেন আশয়াস আল হামরানী হাদিসটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ফাতহুল বারি ৩/১১৯ গ্রন্থে ইবনু হাজার বলেন অতঃপর তিনি তাশাহুদ পাঠ করিলেন কথাটি শায। সঠিক হচ্ছে তা তাশাহুদের কথা উল্লেখ নেই। অনুরুপ ভাবে ইরওয়াল গলীল ৪০৩, আবূ দাউদ ১০৩৯, তাখরিজ মিশকাত, গ্রন্থদ্বয়ে আলবানী হাদিসটিকে জঈফ ও শায বলে উল্লেখ করেন। মাওয়ারীদুয যামযাম ইলা যাওযাদু ইবনে ইকাল ১/২৩৬ গ্রন্থে ইমাম হায়সামী বলেন, অতঃপর তাশাহহুদ পড়েন, অতঃপর সালাম ফিরালেন কথাটি ছাড়া হাদিসটি সহিহ। সায়লুল জাররার ১/২৮৪ ইমাম শাওকানী বলেন, রাবী এককভাবে বর্ণনা করা সত্ত্বেও এর মাধ্যমে দলীল গ্রহণ করা যাবে। মুত্তাফাকাতুল খাবরে আল খবরা গ্রন্থে ১/৫১৬ গ্রন্থে ইবনু হাজার হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ শায

পরিচ্ছেদঃ ১৩১ঃ যে ব্যক্তি সন্দেহ করে কিন্তু কোনটিই তার নিকট প্রাধান্য পায়নি তার বিধান

৩৩৩ – আবূ সা’ঈদ খুদরী [রা] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যদি তোমাদের কেউ নামাজে এই বলে সন্দেহ পোষণ করে যে সে তিন রাক’আত আদায় করেছে না চার রাক’আত, তবে সে যেন সন্দেহকে পরিত্যাগ করে এবং যার প্রতি নিশ্চিত মনে হইবে তার উপর ভিত্তি করে নামাজ আদায় করিবে। অতঃপর শেষ সালাম ফিরার পূর্বে দু’টো সাহু সেজদাহ করিবে। ফলতঃ যদি সে পাঁচ রাক’আত আদায় করে তাহলে সাহু সেজদাহর ফলে তার নামাজ জোড়া বানিয়ে দিবে অর্থাৎ ৬ রাকআত পূর্ণ হইবে। আর যদি নামাজ পূর্ণ হয়ে থাকে তবে সাহু সেজদাহ দু’টি শয়তানের জন্য নাক ধূলায় ধূসরিত বা অপমানের কারণ হইবে। {৩৭৪}

{৩৭৪} মুসলিম ৫৭১, তিরমিজি ৩৯৬, নাসায়ি হাদিস ১২৩৮, ১২৩৯, আবূ দাউদ ১০২৪, ১০২৬, ১০২৯, ইবনু মাজাহ ১২০৪, ১২১০ আহমাদ ১০৬৯৮, ১০৯২৭, ১০৯৯০, মুওয়াত্তা মালেক ২১৪, দারেমী ১৪৯৫। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩২ঃ যে ব্যক্তি বৃদ্ধি বা সংশয় করছে ও দুটি বিষয়ের কোন একটি তার প্রাধান্য পাচ্ছে তার বিধান

৩৩৪ – আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করিলেন। সালাম ফিরানোর পর তাঁকে বলা হলো, হে আল্লাহ্‌র রাসূল [সাঃআঃ]! নামাজের মধ্যে নতুন কিছু হয়েছে কি? তিনি বলিলেন ঃ তা কী? তাঁরা বলিলেন ঃ আপনি তো এরূপ এরূপ নামাজ আদায় করিলেন। তিনি তখন তাহাঁর দু’পা ঘুরিয়ে ক্বিবলামুখী হলেন। আর দুটি সাজদাহ আদায় করিলেন। অতঃপর সালাম ফিরলেন। পরে তিনি আমাদের দিকে ফিরে বললেনঃ যদি নামাজ সম্পর্কে নতুন কিছু হতো, তবে অবশ্যই তোমাদের তা জানিয়ে দিতাম। কিন্তু আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও, আমিও তোমাদের মত ভুলে যাই। আমি কোন সময় ভুলে গেলে তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। তোমাদের কেউ নামাজ সম্পর্কে সন্দেহে পতিত হলে সে যেন নিঃসন্দেহ হবার চেষ্টা করে এবং সে অনুযায়ী নামাজ পূর্ণ করে। অতঃপর যেন সালাম ফিরিয়ে দুটি সাজদাহ দেয়। বুখারীর অন্য একটি বর্ণনায় আছে- নামাজ পূর্ণ করে সালাম ফিরাবে তারপর সাহু সেজদাহ করিবে। মুসলিমে আছে – নাবী [সাঃআঃ] দুটি সাহু সেজদাহ করিয়াছেন- সালাম ও কথা বলার পরও। {৩৭৫}

{৩৭৫} বুখারী ৪০৪, ৪০১, ১২২৬, ৬৬৭১, ৭২৪৯, মুসলিম ৫৭২, তিরমিজি ৩৯২, ৩৯৩, নাসায়ি হাদিস ১২৪০, ১২৪১, ১২৪২, ১২৫৬, আবূ দাউদ ১২১৯, ১০২০, ১০২২, ইবনু মাজাহ ১২০৩, ১২০৫, ১২১১, আহমাদ ৩৫৫৬, ৩৫৯১, ৩৮৭৩, ৩৯৬৫, ৪০২২, দারিমী ১৪৯৮। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩৩ঃ সালাম ফিরানোর পর সন্দেহকারীর সাজদাহ এর প্রসঙ্গ

৩৩৫ – আবদুল্লাহ বিন জাফর [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

মারফূ’ হাদীসে রয়েছে, “যে ব্যক্তি নামাজে সন্দেহ পোষণ করিবে সে যেন সালামের পর দুটি সাজদাহ করে।” ইবনু খুযাইমাহ একে সহিহ বলেছেন । {৩৭৬}

{৩৭৬} আবূ দাউদ ১০৩৩, আহমাদ ১৭৫০, ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ তাহাঁর মাজমূ ফাতাওয়া ২৩/২২ গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইবনু আবূ লাইলা রয়েছে। ইমাম যাহাবী তাহাঁর তানকীহুত তাহকীক ১/১৯৭ গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন, ইমাম যইলঈ তাহাঁর নাসবুর রায়াহ ২/১৬৮ গ্রন্থে বলেন, এর সনদে মুসআব বিন শাইবান রয়েছেন যাকে আহমাদ, আবূ হাতিম ও দারাকুতনি দুর্বল বলেছেন। মুহাদ্দিস আযীমবাদী তাহাঁর আওনুল মা’বূদ ৩/১৯৭ গ্রন্থে বলেন, হাদিসটির সনদে বিতর্ক রয়েছে। শাইখ আলবানী তাহাঁর জঈফ আবূ দাউদ ১০৩৩, জঈফ নাসায়ি হাদিস ১২৪৯, যঈফুল জামে ৫৬৪৭ গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। তবে সহিহ নাসায়ি হাদিস গ্রন্থে উক্ত হাদিসের শেষে {আরবি} সহযোগে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। ইমাম শওকানী তাহাঁর নাইলুল আওত্বার [৩/১৪৪] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে মুসআব বিন শাইবান রয়েছেন যার সম্পর্কে ইমাম নাসায়ি হাদিস তাকে কখনও বলেছেন তিনি মুনকারুল হাদিস [হাদিস হিসেবে বর্জনযোগ্য]। আবার কখনও বলেছেন তিনি হাদিস বর্ণনাকারী হিসেবে মা’রূফ [পরিচিত] নন। ইবনু মুঈন তাকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন। ইমাম মুসলিম তাহাঁর সহিহ গ্রন্থে তার বর্ণিত হাদিসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করিয়াছেন। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি অসংখ্য মুনকার হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। আবূ হাতিম আর রাযী বলেন, মুহাদ্দিসগন তার সুনাম করেননি এবং তিনি শক্তিশালী নন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি শক্তিশালী নন ও হাফিযও নন। ইমাম শওকানী তাহাঁর নাইলুল আওত্বার [৩/১৪৪] গ্রন্থে, ইমাম নাসায়ি হাদিসর মন্তব্যই নকল করিয়াছেন। আর উতবাহ বিন মুহাম্মাদ ইবনুল হারিস সম্পর্কে আল ইরাকী বলেন, তিনি পরিচিত নন।।হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

৩৩৬ – মুগীরাহ বিন শু’বাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নামাজে সন্দেহ বশতঃ দু’রাকআতের পর না বসে পূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে যায়- তাহলে সে নামাজ পূর্ণ করে নিবে এবং নামাজ শেষ করে দুটি সাহু সেজদাহ করিবে। আর যদি পূর্ণভাবে না দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে বসে পড়বে; এর ফলে তাকে কোন সাহু সেজদাহ করিতে হইবে না। শব্দ বিন্যাস দারাকুতনির দুর্বল সানাদে। {৩৭৭}

{৩৭৭} আবূ দাউদ ১০৩৬, তিরমিজি ৩৬৫, ইবনু মাজাহ ১২০৮, আহমাদ ১৭৬৯৮, ১৭৭০৮, ১৭৭৫১, দারেমী ১৫০১। ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ তাহাঁর মাজমূ ফাতাওয়া ২৩/২২ গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইবনু আবূ লাইলা রয়েছে। ইমাম যাহাবী তাহাঁর তানকীহুত তাহকীক ১/১৯৭ গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন, ইমাম যইলঈ তাহাঁর নাসবুর রায়াহ ২/১৬৮ গ্রন্থে বলেন, {আরবী}। মুহাদ্দিস আযীমবাদী তাহাঁর আওনুল মা’বূদ ৩/১৯৭ গ্রন্থে বলেন, হাদিসটির সনদে বিতর্ক রয়েছে। শাইখ আলবানী তাহাঁর জঈফ আবূ দাউদ ১০৩৩, জঈফ নাসায়ি হাদিস ১২৪৯, যঈফুল জামে ৫৬৪৭ গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। তবে সহিহ নাসায়ি হাদিস গ্রন্থে উক্ত হাদিসের শেষে {আরবী} সহযোগে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

৩৩৭ – উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] হতে বর্ণনা করেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইমামের পিছনের লোকেদের [মুক্তাদীর] জন্য কোন সাহ্‌উ সাজদাহ নাই, ইমাম ভুল করলে তাঁকে ও মুক্তাদীর সকলকেই সাহ্‌উ সাজদাহ করিতে হইবে। বায্‌যার ও বায়হাকী এটিকে দুর্বল সানাদে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। {৩৭৮}

{৩৭৮} অত্যন্ত দুর্বল। বায়হাকী ২/৩৫২, ইবনুল মুলকীন আল বাদরুল মুনীর [৪/২২৯] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে খারেজা বিন মুসআব রয়েছেন যাকে ইমাম দারাকুতনী ও প্রমুখ দুর্বল বলেছেন। আর আবুল হাসান হচ্ছে অপরিচিত ব্যক্তি। ইবনু হাজার আসকালানী তাহাঁর আত তালখীসুল হাবীর [২/৪৮০] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে খারেজা বিন মুসআব রয়েছেন যিনি দুর্বল। ইমাম সনআনী তাহাঁর সুবুলুস সালাম [১/৩২৭] গ্রন্থেও উক্ত রাবী সম্পর্কে একই কথা বলেছেন। ইবনু কাসীর তাহাঁর ইরশাদুল ফাক্বীহ [১/১৬১] গ্রন্থে এ রাবীকে মাতরুকুল হাদিস বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩৪ঃ ভুল বারংবার হলে সিজদাহও বারংবার করিতে হইবে

৩৩৮ – সওবান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] হতে বর্ণনা করিয়াছেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রতিটি ভুলের জন্য সালাম ফিরানোর পর দু’টি সাজদাহ করিতে হইবে। আবূ দাউদ ও ইবনু মাজাহ দুর্বল সানাদে। {৩৭৯}

{৩৭৯} আবূ দাউদ ১০৩৮, ইবনু মাজাহ ১২১৯, আহমাদ ২১৯১২। শাইখ আলবানী তাহাঁর সহীহুল জামে [৫১৬৬], সহিহ আবূ দাউদ [১০৩৮], সহিহ ইবনু মাজাহ [১০১৩] গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। আলবানী ইরওয়াউল গালীল [২/৪৭] গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি দুর্বল হলেও এর শাহেদ একে শক্তিশালী করেছে। তবে ইমাম যাহাবী তাহাঁর তানকীহুত তাহকীক [১/১৯৭], ইমাম নববীও তাহাঁর আয যুআফা [২/৬৪২], ইবনু তাইমিয়্যাহ তাহাঁর মাজমু‘ ফাতাওয়া [২৩/২২] গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩৫ঃ মুফাস্‌সাল সূরাগুলোতে তিলাওয়াতে সাজদাহ রয়েছে

৩৩৯ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা “ইযাস্‌-সামা-উন্‌-শাক্কাত” ও “ইক্‌রা বিস্‌মে রাব্বেকা” সূরা দ্বয়ে সাজদাহ করেছি। {৩৮০}

{৩৮০} বুখারী ৭৬৬, ৭৬৮, ৫৭৩, মুসলিম ৫৭৮, তিরমিজি ৫৭৩, নাসায়ি হাদিস ৯৬১, ৯৬২, ৯৬৩, আবূ দাউদ ১৪০৭, ১৪০৮, ইবনু মাজাহ ১০৫৮, ১০৫৯, আহমাদ ৭১০০, ৭৩২৪, ৭৩৪৮, ৭৭২০, মুওয়াত্তা মালেক ৪৭৮, দারেমী ১৪৬৮, ১৪৬৯, ১৪৭০, ১৪৭১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩৬ঃ সূরা সোয়াদ-এ তিলাওতে সাজদার বিধান

৩৪০ – ইব্‌নু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সূরাহ্‌ স-দ এর সাজদাহ্‌ অত্যাবশ্যক সাজদাহ্‌ সমূহের মধ্যে গণ্য নয়। তবে নাবী [সাঃআঃ] কে আমি তা তিলাওয়াতের পর সাজদাহ্‌ করিতে দেখেছি। [বুখারী] {৩৮১}

{৩৮১} বুখারী ১০৬৯, তিরমিজি ৫৭৭, নাসায়ি হাদিস ৯৫৭, আবূ দাউদ ১৪০৯, আহমাদ ২৫১৭, ৩৩৭৭, ৩৪২৬, দারেমী ১৪৬৭। বুখারীতে আরও রয়েছে যে, নাবী [সাঃআঃ] সূরাহ্‌ ওয়ান্‌-নাজ্‌ম তিলাওয়াতের পর সাজদাহ্‌ করেন এবং তাহাঁর সাথে সমস্ত মুসলিম, মুশরিক, জ্বিন ও ইনসান সবাই সাজদাহ্‌ করেছিল। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩৭ঃ সূরা আন্‌-নাজম এর সাজদাহ এর বিধান

৩৪১ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] সূরা “আন্‌-নাজম”-এর সাজদাহ করেছিলেন। {৩৮২}

{৩৮২} বুখারী ১০৭১, ৪৮৬২, তিরমিজি ৫৭৫। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

৩৪২ – যায়দ বিন সাবিত [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন- আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে সূরা “আন্‌-নাজ্‌ম” পড়ে শুনিয়েছিলাম- তিনি তাতে সাজদাহ করেননি। {৩৮৩}

{৩৮৩} বুখারী ১০৭২, ১০৭৩, তিরমিজি ৫৭৬, নাসায়ি হাদিস ৯৬০, আবূ দাউদ ১৪০৪, আহমাদ ২১০৮১, ২১১১৩, দারেমী ১৪৭২। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৩৮ঃ সূরা আল-হাজ্জ্ব এর দু‘সাজদাহ এর বিধান

৩৪৩ – খালিদ বিন মা’দান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সূরা “হাজ্জ”-কে দু’টি সাজদার আয়াত দ্বারা বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। আবূ দাউদ তাহাঁর মারাসিল গ্রন্থে। {৩৮৪}

{৩৮৪} মুরসাল, সনদ হাসান। মারাসীল আবূ দাউদ হাঃ ৭৮। হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

৩৪৪ – উক্‌বাহ বিন‘আমির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

“যে ব্যক্তি সাজদাহ দু’টি না করিবে সে যেন তা [সূরা হাজ্জ] পাঠ না করে। এটির সানাদ য‘ঈফ্‌ [দুর্বল]। {৩৮৫}

{৩৮৫} ইবনু হাজার তাহাঁর আদ দিরাইয়াহ গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইবনু লাহিয়া রয়েছে। ইমাম সনআনী বলেন, এর সনদে ইবনু লাহিয়া রয়েছে যিনি এককভাবে হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। ইমাম যাহাবী তাহাঁর তানকীহুত তাহকীক [১/১৮৯] গ্রন্থে উক্ত রাবী সম্পর্কে বলেন, তিনি হচ্ছেন লীন। ইমাম শওকানী তাহাঁর নাইলুল আওত্বার গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইবনু লাহিয়া ও মাশরু‘ বিন আহান নামক দু’জন দুর্বল রাবী রয়েছে। আহমাদ শাকের হাদিসটিকে শরহে সুনান তিরমিজি [২/৪৭১] গ্রন্থে সহিহ বলেছেন, শাইখ আলবানী তাখরিজ মিশকাতুল মাসাবীহ ৯৮৮ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন, সহিহ আবূ দাউদ [১৪০২], সহিহ তিরমিজি [৫৭৮] গ্রন্থে হাসান বলেছেন। পক্ষান্তরে যঈফুল জামে‘ ৩৯৮২ গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। আবদুর রহমান আল মুবারকপুরী তাহাঁর তুহফাতুল আহওয়াযী [২/৪৯৪] গ্রন্থে বলেন, দুর্বল তবে আমর ইবনুল আস এর হাদিস, মুরসাল বর্ণনা ও সাহাবীগণের আসার দ্বারা এটি শক্তিশালী হয়েছে। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ১৩৯ঃ তিলাওয়াতের সাজদাহ এর বিধান

৩৪৫ – ‘উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলিলেন, হে লোক সকল! আমরা যখন সাজদাহ্‌র আয়াত তিলাওয়াত করি, তখন যে সাজদাহ্‌ করিবে সে ঠিকই করিবে, যে সাজদাহ্‌ করিবে না তার কোন গুনাহ নেই। {৩৮৬} তাতে আরো আছে- “আল্লাহ অবশ্য তিলাওয়াতের সাজদাহকে ফার্‌য করেন নি; তবে যদি আমরা করিতে চাই করিতে পারি। হাদিসটি মুআত্তা গ্রন্থে আছে।

{৩৮৬} বুখারী ১০৭৭। বুখারীতে রয়েছে, রাবীআ’ বিন আব্দুল্লাহ আল হুদাইর থেকে বর্ণিত, উমার [রাঃআঃ] এক জুমু‘আহ্‌র দিন মিম্বরে দাঁড়িয়ে সুরা নাহ্‌ল তিলাওয়াত করেন। এতে যখন সাজদাহ্‌র আয়াত এল, তখন তিনি মিম্বর হতে নেমে সাজদাহ্‌ করিলেন এবং লোকেরাও সাজদাহ্‌ করিল। এভাবে যখন পরবর্তী জুমু‘আহ এল, তখন তিনি সে সূরাহ্‌ পাঠ করেন। এতে যখন সাজদাহ্‌র আয়াত এল, তখন তিনি বলিলেন, যে লোক সকল! আমরা যখন সাজদাহ্‌র আয়াত তিলাওয়াত করি, তখন যে সাজদাহ্‌ করিবে সে ঠিকই করিবে, যে সাজদাহ্‌ করিবে না তার কোন গুনাহ নেই। তার বর্ণনায় [বর্ণনাকারী বলেন] আর`উমার [রাঃআঃ] সাজদাহ্‌ করেননি। নাফি‘ [রহঃ] ইব্‌নু`উমার [রাঃআঃ] হতে আরো বলেছেন, আল্লাহ্‌ তা‘আলা সাজদাহ্‌ ফার্‌য করেননি, তবে আমরা ইচ্ছা করলে সাজদাহ্‌ করিতে পারি। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৪০ঃ তিলাওয়াতের সাজদাহর জন্য তাকবীর দেয়ার বিধান

৩৪৬ – ইবনু`উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাদেরকে কুরআন মাজীদ পড়ে শুনাতেন, যখন তিনি সাজদাহর আয়াত অতিক্রম করিতেন তখন আল্লাহ আকবার বলিতেন ও সাজদাহ করিতেন, আর আমরাও তাহাঁর সঙ্গে সাজদাহ করতাম। আবূ দাউদ এর সানাদে দুর্বলতা আছে। {৩৮৭}

{৩৮৭} আহমাদ ৪৬৫৫, ৬২৪৯। ইমাম সনআনী তাহাঁর সুবুলুস সালাম [১/৩৩২] গ্রন্থে বলেন, আবদুল্লাহ আল উমরী হচ্ছে দুর্বল বর্ণনাকারী। ইমাম হাকিম এ হাদিসটি উবাইদুল্লাহ আল মুসাগগার থেকে বর্ণনা করিয়াছেন যিনি বর্ণনাকারী হিসেবে বিশ্বস্ত। শাইখ আলবানী তাহাঁর ইরওয়াউল গালীল [৪৭২] গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। তিনি জঈফ আবূ দাউদ [৪১৩] গ্রন্থে বলেন, তাকবীরের বর্ণনার সাথে যেটি সেটি হচ্ছে মুনকার, আর এতদ্বতীত মাহফূয [সংরক্ষিত]। ইবনু উসাইমীন তাহাঁর শরহে বুলুগুল মারাম গ্রন্থেও হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইবনুল কাত্তান তাহাঁর আল ওহম ওয়া ঈহাম [৪/১৯৭] গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান বলেছেন। ইবনুল মুলকীন তাহাঁর আল বাদরুল মুনীর [৪/২৬১] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আব্দুল্লাহ বিন উমার বিন হাফস রয়েছেন যার ভাই উবাইদুল্লাহ তার সমর্থনে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি উক্ত গ্রন্থের [১/১৬৮] পৃষ্ঠায় বলেন, উক্ত রাবীর বিরুদ্ধে বিতর্কের অভিযোগ করিয়াছেন। ইবনু হাজার তাহাঁর আত তালখীসুল হাবীর [২/৪৮৫] গ্রন্থে উক্ত রাবীকে দুর্বল বলেছেন। তবে এ হাদিসটির মূল ইবনু উমার থেকে অন্য শব্দে বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৪১ঃ খুশির সংবাদ পেয়ে কৃতজ্ঞতার সিজদাহ দেওয়া শরীয়তসম্মত

৩৪৭ – আবু বাকরাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট যখন কোন খুশীর খবর পৌঁছত তখন তিনি আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশে সাজদা করিতেন।” {৩৮৮}

{৩৮৮} আবূ দাউদ ২৭৭৪, ইবনু মাজাহ ১৩৯৪ । উক্ত হাদিসের সানাদ দুর্বল হলেও হাদিসটি সহিহ। কেননা এর অনেক শাহেদ হাদিস রহিয়াছে। উক্ত হাদিসটি আব্দুর রহমান বিন আউফ [রাঃআঃ], বারা’ ইবনু আযেব [রাঃআঃ], আনাস [রাঃআঃ], সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস [রাঃআঃ], জাবের [রাঃআঃ] এবং অন্যান্য সাহাবা থেকে বর্ণিত হয়েছে। আর সাহাবাগণ পরবর্তীকালে এরূপ করিতেন। হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

৩৪৮ – আবদুর রহমান বিন আওফ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাৰী [সাঃআঃ] সাজদাহ করেছিলেন এবং তা দীর্ঘ করেছিলেন- তারপর তার মাথা উঠিয়ে বলেছিলেন- আমার নিকট জিবরাইল ‘আলাইহিস সালাম এসেছিলেন ও আমাকে শুভ সংবাদ দান করেছিলেন, ফলে আমি আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায়ের নিমিত্তে সাজদাহ করলাম। হাকিম একে সহিহ বলেছেন।” {৩৮৯}

{৩৮৯} আহমাদ ১/৯১ হাকিম ১/৫৫০। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

৩৪৯ – বারাআ বিন আযিব [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] আলী [রাঃআঃ]-কে ইয়ামানে পাঠিয়েছিলেন। অতঃপর বর্ণনাকারী দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করার পর বলেন,`আলী [রাঃআঃ] নাৰী [সাঃআঃ]-কে পত্রদ্বারা ইয়ামেনবাসীদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সংবাদ জানিয়েছিলেন। নাবী [সাঃআঃ] উক্ত পত্র পাঠান্তে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপনের উদ্দেশে সাজদাহ করিলেন-বায়হাকী। এর মূল বক্তব্য বুখারীতে রহিয়াছে।{৩৯০}

{৩৯০} বায়হাকী ২/৩৬৯। সাহু সেজদাহ হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস


by

Comments

Leave a Reply