সাহু সিজদার নিয়ম ও ভুলের সিজদার পর তাশাহ্‌হুদ পাঠ করা

সাহু সিজদার নিয়ম ও ভুলের সিজদার পর তাশাহ্‌হুদ পাঠ করা

সাহু সিজদার নিয়ম ও ভুলের সিজদার পর তাশাহ্‌হুদ পাঠ করা

অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ (১৭৬-১৮০)=৫টি

১৭৬. অনুচ্ছেদঃ সালাম ফিরানোর পূর্বে সাহুসাজদাহ্‌ করা
১৭৭. অনুচ্ছেদঃ সালাম ও কথাবার্তা বলার পর সাহুসাজদাহ্‌ করা
১৭৮. অনুচ্ছেদঃ ভুলের সিজদার পর তাশাহ্‌হুদ পাঠ করা
১৭৯. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নামাযে কম অথবা বেশি আদায় করার সন্দেহে পরে যায়
১৮০. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি যুহর বা আসরের দুই রাকআত আদায় করে সালাম ফিরায়

১৭৬. অনুচ্ছেদঃ সালাম ফিরানোর পূর্বে সাহুসাজদাহ্‌ করা

৩৯১. আবদুল্লাহ ইবনি বুহাইনা আল-আসাদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুহরের নামাযে [দ্বিতীয় রাকআতে] বসার পরিবর্তে দাঁড়িয়ে গেলেন। নামাজ শেষ করার পর সালাম ফিরানোর আগে তিনি বসা অবস্থায় তাকবীরসহকারে দুটি সাজদাহ্‌ করিলেন। তার সাথের লোকেরাও সাজদাহ্‌ করলো। ভুলে বর্জিত বসার পরিবর্তে এ সাজদাহ্‌।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২০৬, ১২০৭], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু হুরাইরা ও আব্দুল্লাহ ইবনি সায়িব [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, তারা উভয়েই সালামের পূর্বে সাহু সাজদাহ্‌ করিতেন। সনদ সহিহ। সায়িব তিনি ইবনি উমাইর। আবু ঈসা বলেনঃ বুহাইনার হাদীসটি হাসান সহিহ। কিছু বিদ্বান এই হাদীসের উপর আমল করেন। ঈমাম শাফি এই মত পোষণ করেন। তার মতে সকল সাহু সাজদাহ্‌ই সালামের পূর্বে। তিনি আরো বলেন, এই হাদীস অন্যান্য হাদীসের নাসিখ। কেননা এটাই রাসূল [সাঃআঃ]-এর সর্বশেষ আমল। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাক বলেন, কোন ব্যক্তি যদি দ্বিতীয় রাকআতের পর দাঁড়িয়ে যায় তাহলে ইবনি বুহাইনার হাদীস অনুযায়ী সালামের পূর্বেই সাহু সাজদাহ্‌ করিবে। আব্দুল্লাহ ইবনি বুহাইনা তিনি আব্দুল্লাহ ইবনি মালিক। তার মাতার নাম বুহাইনা। ইসহাক ইবনি মানসুর আলী ইবনি আব্দিল্লাহ আল-মাদানী হইতে এরূপই বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেনঃ সাহু সাজদাহ্‌ কখন করিবে এ ব্যাপারে বিদ্বানগণের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। কতক বিদ্বানের মতে সালামের পড়ে সাহু সাজদাহ্‌ করিতে হইবে। সুফ্‌ইয়ান সাওরী ও কুফাবাসীর মত এটাই। কতক বিদ্বানের মতে সালামের পূর্বেই সাহু সাজদাহ্‌ করিবে। এটাই অধিকাংশ মদীনাবাসী ফুকাহদের অভিমত। যেমন-ইয়াহিয়ায়া ইবনি সাঈদ, রাবীয়া এবং অন্যান্য ঈমামগণ। শাফিঈরও মত এটাই। আবার কেউ কেউ বলেন, নামাযে যদি অতিরিক্ত করে ফেলে তাহলে সালামের পরে, আর যদি নামাযে স্বল্পতা থাকে তবে সালামের পূর্বে। মালিক ইবনি আনাসের মত এটাই। ঈমাম আহমাদ বলেন, সাহু সাজদাহ্‌ সম্পর্কে হাদীসসমূহে রাসূল [সাঃআঃ]-এর যে নিয়ম বর্ণিত হয়েছে সে নিয়ম অনুযায়ীই আমল করিতে হইবে। যদি দুই রাকআত শেষে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে বুহাইনার হাদীস অনুযায়ী সালামের পূর্বে সাহু সাজদাহ্ করিবে। আর যদি যুহরের নামাজ পাঁচ রাকআত পড়ে ফেলে তাহলে সালামের পরে সাহু সাজদাহ্‌ করিবে। যদি যুহর বা আসরে দুই রাকআতের পর সালাম ফিরায় তাহলে সালামের পরে সাহু সাজদাহ্‌ করিবে। আর যে সমস্ত ভুলের ব্যাপারে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে কোন বিবরণ নেই তাতে সালামের পূর্বেই সাহু সাজদাহ্‌ করিবে। ইসহাকও আহমাদ অনুরূপ মত পোষণ করেন। তবে তিনি বলেন, যে সমস্ত ভুলের বিবরণ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত হয়নি তা যদি নামাযে অতিরিক্ত হয় তবে সালামের পরে সাহু সাজদাহ্‌ করিবে, আর যদি নামাযে স্বল্পতা হয় তবে সালামের পূর্বেই সাহু সাজদাহ্‌ করিবে। সাহু সিজদার নিয়ম-এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৭. অনুচ্ছেদঃ সালাম ও কথাবার্তা বলার পর সাহুসাজদাহ্‌ করা

৩৯২. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা নাবী [সাঃআঃ] যুহরের নামাজ পাঁচ রাকআত আদায় করিলেন। তাঁকে বলা হল, নামাজ কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? ফলে সালাম ফিরানোর পর তিনি দুটি সাজদাহ্‌ করিলেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২০৫, ১২১১, ১২১২, ১২১৮], বুখারি ও মুসলিম।আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহিহ। সাহু সিজদার নিয়ম-এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯৩. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] কথাবার্তা বলার পর সাহুসিজদা করিয়াছেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২১২]। এ অনুচ্ছেদে মুআবিয়া, আবদুল্লাহ ইবনি জাফর ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সাহু সিজদার নিয়ম-এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী সাঃআঃ ভুলের সাজদাহ্‌, দুটো সালাম ফিরানোর পর করিয়াছেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২১৪], বুখারী ও মুসলিমে বিস্তারিত। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীসটি আইয়ূব এবং আরো অনেকে ইবনি সীরীন হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনি মাসঊদের হাদীসটিও হাসান সহিহ। একদল বিদ্বান এ হাদীসের উপর আমল করিয়াছেন। তাঁরা বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি ভুলে যুহরে পাঁচ রাকআত নামাজ আদায় করে ফেলে তবে তার নামাজ জায়িয হইবে, সে যদি চতুর্থ রাকআতে নাও বসে থাকে, তবে দুটি ভুলের সাজদাহ্‌ করিবে। ঈমাম শাফঈ, আহমাদ ও ইসহাক এ কথা বলেছেন। সুফিয়ান সাওরী ও কিছু কুফাবাসী বলেছেন, যদি যুহরের নামাজ পাঁচ রাকআত আদায় করা হয় এবং চতুর্থ রাকআতে তাশাহ্‌হুদের পরিমাণ সময় না বসা হয়ে থাকে তবে এ নামাজ ফাসিদ বলে ধরা হইবে। সাহু সিজদার নিয়ম-এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৮. অনুচ্ছেদঃ ভুলের সিজদার পর তাশাহ্‌হুদ পাঠ করা

৩৯৫. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের নামাজ আদায় করালেন। তিনি ভুল করিলেন, তারপর দুটি সিজদা করিলেন, তারপর তাশাহ্‌হুদ পাঠ করিলেন, তারপর সালাম ফিরালেন।

তাশাহ্‌হুদের উল্লেখ সহ বর্ণনাটি শাজ, ইরওয়া [৪০৩], যঈফ আবু দাঊদ [১৯৩], মিশকাত [১০১৯]. আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান গারীব। মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন অন্যান্য হাদীস আবু কিলাবার চাচা আবুল মুহাল্লাব হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। আর তিনি এ হাদীসটি খালিদ আল-হাযযা হইতে, তিনি কিলাবা হইতে তিনি আবুল মুহাল্লাব হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। আবুল মুহাল্লাব-এর নাম আব্দুর রহমান। তাকে মুয়াবিয়া ইবনি আমরও বলা হয়। আব্দুল ওয়াহ্‌হাব আস সাকাফী হুশাইম ও অন্যান্যরা এ হাদীসটি খালিদ আল-হায্যা হইতে তিনি আবু কিলাবা হইতে পূর্ণটাই বর্ণনা করিয়াছেন। ইমরান ইবনি হুসাইনের অপর বর্ণনায় আছেঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আসরের তৃতীয় রাকআতে সালাম ফিরালেন। এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ালো, তার নাম ছিল খিরবাক। সিজদা সাহুর পর তাশাহ্‌হুদ পাঠের ব্যাপারে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল আছে। একদল বলেছেন, সিজদা করার পর তাশাহ্‌হুদ পাঠ করিবে, তারপর সালাম ফিরাবে। অপর দল বলেছেন, সিজদা সাহুর পর তাশাহ্হুদ নেই, সালামও নেই। সালাম ফিরানোর পূর্বে সিজদা করলে তাশাহ্‌হুদ পাঠ করিবে না। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাক এই মতের সমর্থক। তাঁরা উভয়ে বলেছেন, সালাম ফিরানোর পূর্বে সিজদা সাহু করলে তাশাহ্‌হুদ পাঠ করিবে না। এই হাদীসটির তাহকিকঃ শায

১৭৯. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নামাযে কম অথবা বেশি আদায় করার সন্দেহে পরে যায়

৩৯৬. ইয়ায ইবনি হিলাল [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করলাম, আমাদের কেউ নামাজ আদায় করিল কিন্তু তার মনে নেই সে কত রাকআত আদায় করিল? তিনি বলিলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন নামাজ আদায় করে, কিন্তু বলিতে পারছে না সে কত রাকআত আদায় করিল, সে বসা অবস্থায়ই দুটি সাজদাহ্‌ করিবে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২০৪], মুসলিম অনুরূপ আরো পূর্ণভাবে। এ অনুচ্ছেদে উসমান, ইবনি মাসউদ, আয়িশাহ্‌, আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু সাঈদের হাদীসটি হাসান। উল্লেখিত হাদীসটি আবু সাঈদের নিকট হইতে অপরাপর সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। নাবী [সাঃআঃ] হইতে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ যদি তোমাদের কেউ এক এবং দুই রাকআতের মধ্যে দ্বিধায় পরে যায় [এক রাকআত আদায় করেছে না দুই রাকআত আদায় করেছে] তবে সে এক রাকআতই হিসাবে ধরবে। যদি সে দুই এবং তিন রাকআতের মধ্যে সন্দেহে পরে তবে দুই রাকআতই হিসাবে ধরবে এবং সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সাজদাহ্‌ করিবে। আমাদের সঙ্গীরা এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেন। এক দল আলিম বলেছেন, কত রাকআত আদায় করেছে তা ঠিক করিতে পারছে না- এ ধরনের সন্দেহে পরলে আবার নামাজ আদায় করিবে। সাহু সিজদার নিয়ম-এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কারো নামাযের সময় শাইত্বান উপস্থিত হয়ে তার নামাযের মধ্যে গণ্ডগোল সৃষ্টি করে। এমনকি সে [কোন কোন সময়] বলিতে পারে না যে, সে কত রাকআত আদায় করেছে। তোমাদের কেউ এরূপ অবস্থায় পরলে সে যেন বসা অবস্থায়ই দুটি সাজদাহ্ করে।

সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৯৪৩-৯৪৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সাহু সিজদার নিয়ম-এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯৮. আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ যখন তার নামাযে ভুল করে তারপর সে বলিতে পারছে না সে কি এক রাকআত আদায় করেছে না দুই রাকআত আদায় করেছে, এমতাবস্থায় সে এক রাকআতের উপরই ভিত্তি করিবে। সে কি দুই রাকআত আদায় করেছে না তিন রাকআত-তা ঠিক করিতে না পারলে দুই রাকআতকেই ভিত্তি ধরবে। সে তিন রাকআত আদায় করেছে না চার রাকআত-তা ঠিক করিতে না পারলে তিন রাকআতকেই ভিত্তি ধরবে এবং সালাম ফিরানোর আগে দুটি সাজদাহ্ করিবে।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২০৯]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব সহিহ। আবদুর রহমান [রাদি.]-এর নিকট হইতে অপরাপর সূত্রেও এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। যুহরী তার সনদ পরম্পরায় আবদুর রহমান ইবনি আওফের সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। সাহু সিজদার নিয়ম-এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮০. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি যুহর বা আসরের দুই রাকআত আদায় করে সালাম ফিরায়

৩৯৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুই রাকআত নামাজ আদায় করে সালাম ফিরালেন। যুল-ইয়াদাইন [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! নামাজ কি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে না আপনি ভুলে গেছেন? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [লোকদের] প্রশ্ন করলেনঃ যুল-ইয়াদাইন কি ঠিক বলছে? লোকেরা বলিল, হ্যাঁ। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উঠে দাঁড়ালেন, বাকী দুই রাকআত আদায় করালেন, তারপর সালাম ফিরালেন, তারপর তাকবীর বলিলেন, এবং আগের সাজদাহ্‌র সমান অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সময় সাজদাহ্‌য় থাকলেন, তারপর তাকবীর বলে মাথা তুললেন। তিনি আবার সাজদাহ্‌য় গিয়ে আগের সাজদাহ্‌র সমান অথবা তার চেয়ে বেশি সময় সাজদাহ্‌য় কাটালেন।

সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১২১৪], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে ইমরান ইবনি হুসাইন, ইবনি উমার ও যুল-ইয়াদাইন [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীসকে কেন্দ্র করে বিদ্বানদের মধ্যে মত পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। কুফাবাসীদের একদল বলেছেন, যদি ভুলে অথবা অজ্ঞতাবশত অথবা যে কোন প্রকারে নামাযের মধ্যে কথা বলা হয় তবে আবার নামাজ আদায় করিতে হইবে। কেননা এ হাদীসটি নামাযের মধ্যে কথাবার্তা হারাম হওয়ার পূর্বেকার। ঈমাম শাফির মতে উল্লেখিত হাদীসটি সহিহ। তিনি এ হাদীসের সমর্থক। তিনি বলেছেন, “রোযাদার যদি ভুলক্রমে পানাহার করে ফেলে তবে তাকে এ রোজা আর রাখতে হইবে না [কাযা করিতে হইবে না]। কেননা আল্লাহ তাআলাই তাকে এ রিযক দিয়েছেন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এ হাদীসটির তুলনায় পূর্বল্লেখিত হাদীসটি বেশি সহিহ। তিনি আরো বলেছেন, ফাকীহগণ আবু হুরাইরার হাদীস অনুযায়ী রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করা এবং ভুলে পানাহার করার মধ্যে পার্থক্য করিয়াছেন। আবু হুরাইরার হাদীস প্রসঙ্গে ঈমাম আহমাদ বলেন, নামাজ পূর্ণ হয়েছে এই মনে করে যদি ঈমাম নামাযের মধ্যে কথা বলে এবং পরে জানতে পারে যে, নামাজ এখনও বাকী রয়েছে-এ অবস্থায় সে বাকী নামাজ পূর্ণ করিবে [কথা বলায় নামাজ বাতিল হয়নি]। নামাজ এখনো বাকী রয়েছে একথা জেনেও মুক্তাদী যদি কথা বলে তবে তাকে আবার নামাজ আদায় করিতে হইবে। তিনি এ যুক্তি প্রদান করেন যে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট ফরয নামাযে [ওহীর মাধ্যমে] কম বেশি করা হত। এজন্য যুল-ইয়াদাইনের বিশ্বাস ছিল হয়ত নামাজ পূর্ণ হয়েছে। তাই তিনি কথা বলেছেন, কিন্তু আজকাল এরূপ কথা চলবে না, কেননা এখন আর নামাযের মধ্যে কম-বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এজন্য আজকাল আর যুল-ইয়াদাইনের মত [নামাজ কি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে?] প্রশ্ন করা চলবে না। ঈমাম ইসহাকও এ ব্যাপারে ঈমাম আহমাদের সাথে একমত । সাহু সিজদার নিয়ম-এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


by

Comments

Leave a Reply