সাহাবীদের ইসলাম গ্রহন এবং জ্বিনদের উল্লেখ।
সাহাবীদের ইসলাম গ্রহন এবং জ্বিনদের উল্লেখ। >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৬৩, আনসারগণের মর্যাদা, অধ্যায়ঃ (৩০-৩৫)=৬টি
৬৩/৩০. অধ্যায়ঃ আবু বক্র সিদ্দীক (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহন।
৬৩/৩১. অধ্যায়ঃ সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাস (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহন।
৬৩/৩২. অধ্যায়ঃ জ্বিনদের উল্লেখ।
৬৩/৩৩. অধ্যায়ঃ আবু যার (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহন।
৬৩/৩৪. অধ্যায়ঃ সাঈদ ইবনু যায়দ (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহন।
৬৩/৩৫. অধ্যায়ঃ উমার ইবনু খাত্তাব (রাদি.)-এর ইসলাম গ্রহন।
৬৩/৩০. অধ্যায়ঃ আবু বক্র সিদ্দীক (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহন।
৩৮৫৭
আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাদি.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করলাম যে, তখন তাহাঁর সঙ্গে মুসলিম পাঁচজন ক্রীতদাস, দুজন মহিলা ও আবু বকর (রাদি.) ব্যতীত অন্য কেউ ছিল না।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭০, ইঃফাঃ ৩৫৭৫)
৬৩/৩১. অধ্যায়ঃ সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাস (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহন।
৩৮৫৮
সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
সাদ ইবনু আবু ওয়াক্কাস (রাদি.) বলেন, যেদিন আমি ইসলাম গ্রহন করলাম সেদিন ছাড়া তার পূর্বে কেউ ইসলাম গ্রহন করেনি। আর আমি সাতদিন পর্যন্ত (বয়স্কদের মধ্যে) ইসলাম গ্রহনকারী তৃতীয় জন ছিলাম।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭১, ইঃফাঃ ৩৫৭৬)
৬৩/৩২. অধ্যায়ঃ জ্বিনদের উল্লেখ।
এবং আল্লাহর বাণীঃ “আপনি বলুনঃ আমার প্রতি ওয়াহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, জ্বিনদের একটি দল মনযোগ সহকারে কুরআন শ্রবণ করেছে।” (আল-জ্বিন ১)
৩৮৫৯
আবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি মাসরূক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) – কে জিজ্ঞেস করলাম, যে রাতে জ্বিনরা মনযোগের সঙ্গে কুরআন শ্রবণ করেছিল ঐ রাতে নাবী (সাঃআঃ) – কে তাদের উপস্থিতির খবর কে দিয়েছিল? তিনি বলিলেন, তোমার পিতা আবদুল্লাহ [ইবনু মাসউদ (রাদি.)] আমাকে বলেছেন যে, একটি গাছ তাদের উপস্থিতির খবর দিয়েছিল।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭২, ইঃফাঃ ৩৫৭৭)
৩৮৬০
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, তিনি নাবী (সাঃআঃ) – এর উযু ও ইস্তিনজার ব্যবহারের জন্য পানি ভর্তি একটি পাত্র নিয়ে পিছনে পিছনে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ তিনি তাকিয়ে বলিলেন, কে? আমি বললাম, আমি আবু হুরাইরা। তিনি বলিলেন, আমাকে কয়েকটি পাথর তালাশ করে দাও। আমি তা দিয়ে ইস্তিনজা করব। [১] তবে, হাড় এবং গোবর আনবে না। আমি আমার কাপড়ের কিনারায় কয়েকটি পাথর এনে তাহাঁর কাছে রেখে দিলাম এবং আমি সেখান থেকে কিছুটা দূরে গেলাম। তিনি যখন ইস্তিনজা হইতে বেরোলেন, তখন আমি এগিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হাড় ও গোবরের ব্যাপার কি? তিনি বলিলেন, এগুলো জ্বিনের খাবার। আমার কাছে নাসীবীন [২] নামের জায়গা হইতে জ্বিনের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। তারা ভাল জ্বিন ছিল। তারা আমার কাছে খাদ্যদ্রব্যের আবেদন জানাল। তখন আমি আল্লাহর নিকট দুআ করলাম যে, যখন কোন হাড্ডি বা গোবর তারা লাভ করে তখন তারা যেন তাতে খাদ্য পায়। [৩]
(আঃপ্রঃ ৩৫৭৩, ইঃফাঃ ৩৫৭৮)
[১] উক্ত হাদীস হইতে জানা যায় যে, পাথর বা তার বিকল্প জিনিস যথা মাটির ঢিলা, টিস্যু ইত্যাদি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করা বৈধ। পানি ও পাথর/ঢিলা একত্রে ব্যবহার করা অতি উত্তম। কেননা তাতে বেশী পবিত্রতা অর্জন হয়। তবে পানি ও ঢিলা উভয়টি বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও যে কোন একটি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ। তবে পানি ও ঢিলার যে কোন একটি ব্যবহার করলে, পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা উত্তম।
[২] সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যে আল-জাযিরার একটি নগরী।
[৩] উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ইবনুততীম বলেনঃ আল্লাহ হাড্ডি বা গোবরকে জ্বীনদের খাবারে পরিণত করেন। অথবা তা থেকে খাদ্যের স্বাদ গ্রহন করান। (সূত্রঃ ফাতহুল বারী ৭ম খণ্ড ২১৯ পৃষ্ঠা)
৬৩/৩৩. অধ্যায়ঃ আবু যার (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহন।
৩৮৬১
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) – এর আবির্ভাবের খবর যখন আবু যার (রাদি.) এর কাছে পৌঁছল, তখন তিনি তাহাঁর ভাইকে বলিলেন, তুমি এই উপত্যকায় গিয়ে ঐ লোক সম্পর্কে জেনে আস যে লোক নিজেকে নাবী বলে দাবী করছেন ও তাহাঁর কাছে আসমান হইতে সংবাদ আসে। তাহাঁর কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুন এবং ফিরে এসে আমাকে শুনাও। তাহাঁর ভাই রওয়ানা হয়ে ঐ লোকের কাছে পৌঁছে তাহাঁর কথাবার্তা শুনলেন। এরপর তিনি আবু যারের নিকট ফিরে গিয়ে বলিলেন, আমি তাঁকে দেখেছি যে, তিনি উত্তম আখলাক গ্রহন করার জন্য নির্দেশ দান করছেন এবং এমন কালাম যা পদ্য নয়। এতে আবু যার (রাদি.) বলিলেন, আমি যে জন্য তোমাকে পাঠিয়েছিলাম সে বিষয়ে তুমি আমাকে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলে না। আবু যার (রাদি.) সফরের জন্য সামান্য পাথেয় সংগ্রহ করিলেন এবং একটি ছোট্ট পানির মশকসহ মক্কায় উপস্থিত হলেন। মসজিদে হারামে প্রবেশ করে নাবী (সাঃআঃ) – কে খোঁজ করিতে লাগলেন। তিনি তাঁকে চিনতেন না। আবার কাউকে তাহাঁর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করাও পছন্দ করিলেন না। এ অবস্থায় রাত হয়ে গেল। তিনি শুয়ে পড়লেন। আলী (রাদি.) তাঁকে দেখে বুঝলেন যে, লোকটি বিদেশী। যখন আবু যার আলী (রাদি.) – কে দেখলেন, তখন তিনি তাহাঁর পিছনে পিছনে গেলেন। কিন্তু সকাল পর্যন্ত একে অন্যকে কোন কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করিলেন না। আবু যার (রাদি.) পুনরায় তাহাঁর পাথেয় ও মশক নিয়ে মসজিদে হারামের দিকে চলে গেলেন। এ দিনটি এমনিভাবে কেটে গেল, কিন্তু নাবী (সাঃআঃ) তাকে দেখিতে পেলেন না। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। তিনি শোয়ার জায়গায় ফিরে গেলেন। তখন আলী (রাদি.) তাহাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বলিলেন, এখনও কি মুসাফিরের গন্তব্য স্থানের সন্ধান হয়নি? সে এখনও এ জায়গায় অবস্থান করছে। তিনি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। কেউ কাউকে কোন কিছু জিজ্ঞেস করিলেন না। এ অবস্থায় তৃতীয় দিন হয়ে গেল। আলী (রাদি.) পূর্বের ন্যায় তাহাঁর পাশ দিয়ে যেতে লাগলেন। তিনি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। এরপর তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন – তুমি কি আমাকে বলবে না কোন জিনিস এখানে তোমাকে অনুপ্রেরিত করেছে? আবু যার (রাদি.) বলিলেন, তুমি যদি আমাকে সঠিক রাস্তা দেখানোর পাকা অঙ্গীকার কর তবেই আমি তোমাকে বলিতে পারি। আলী (রাদি.) অঙ্গীকার করিলেন এবং আবু যার (রাদি.) ও তাহাঁর আগমনের উদেশ্য বলিলেন। আলী (রাদি.) বলিলেন, তিনি সত্য, তিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)। যখন ভোর হয়ে যাবে তখন তুমি আমার অনুসরণ করিবে। তোমার জন্য ভয়ের কারণ আছে এমন যদি কোন ব্যাপার আমি দেখিতে পাই তবে আমি রাস্তার পাশে চলে যাব যেন আমি পেশাব করিতে চাই। আর যদি আমি সোজা চলতে থাকি তবে তুমিও আমার অনুসরণ করিতে থাকবে এবং যে ঘরে আমি প্রবেশ করি সে ঘরে তুমিও প্রবেশ করিবে। আবু যার (রাদি.) তাই করিলেন। আলী (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) – এর কাছে প্রবেশ করিলেন এবং তিনিও তাহাঁর [আলী (রাদি.)] সাথে প্রবেশ করিলেন। তিনি নাবী (সাঃআঃ) – এর কথাবার্তা শুনলেন এবং ঐখানেই তিনি ইসলাম গ্রহন করিলেন। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, তুমি তোমার স্বগোত্রে ফিরে যাও এবং আমার নির্দেশ না পৌঁছা পর্যন্ত আমার ব্যাপারে তাদেরকে অবহিত করিবে। আবু যার (রাদি.) বলিলেন, ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি আমার ইসলাম গ্রহনকে মুশরিকদের সম্মুখে উচ্চস্বরে ঘোষণা করব। এই বলে তিনি বেরিয়ে পড়লেন ও মসজিদে হারামে গিয়ে হাজির হলেন এবং উচ্চকন্ঠে ঘোষণা করিলেন, (আরবি) (তৎক্ষণাৎ) লোকেরা তাহাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং মারতে মারতে তাঁকে মাটিতে ফেলে দিল। এমন সময় আব্বাস (রাদি.) এসে তাঁকে রক্ষা করিলেন এবং বলিলেন, তোমাদের বিপদ অবধারিত। তোমরা কি জান না, এ লোকটি গিফার গোত্রের? আর তোমাদের ব্যবসায়ী কাফেলাগুলোকে গিফার গোত্রের নিকট দিয়েই সিরিয়া যাতায়াত করিতে হয়। এ কথা বলে তিনি তাদের হাত হইতে আবু যারকে রক্ষা করিলেন। পরদিন সকালে তিনি ঐরূপই বলিতে লাগলেন। লোকেরা তাহাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে ভীষণভাবে মারতে লাগল। আব্বাস (রাদি.) এসে তাঁকে সামলে নিলেন।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭৪, ইঃফাঃ ৩৫৭৯)
৬৩/৩৪. অধ্যায়ঃ সাঈদ ইবনু যায়দ (রাদি.) – এর ইসলাম গ্রহন।
৩৮৬২
কায়স (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
কায়স (রাদি.) বলেন, আমি সাঈদ ইবনু যায়দ ইবনু আমর ইবনু নুফায়ল (রাদি.) – কে কুফার মসজিদে বলিতে শুনিয়াছি যে, তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ, উমরের ইসলাম গ্রহনের আগে আমার ইসলাম গ্রহনের কারণে তাহাঁর হাতে আমাকে বন্দী হইতে দেখেছি। তোমরা উসমান (রাদি.) এর সাথে যে আচরণ করলে এ কারণে যদি উহুদ পাহাড় বিদীর্ণ হয়ে যায় তবে তা হওয়া ঠিকই হইবে।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭৫, ইঃফাঃ ৩৫৮০)
৬৩/৩৫. অধ্যায়ঃ উমার ইবনু খাত্তাব (রাদি.)-এর ইসলাম গ্রহন।
৩৮৬৩
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উমার (রাদি.) যেদিন থেকে ইসলাম গ্রহন করিলেন ঐ দিন হইতে আমরা সর্বদা সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত আছি।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭৬, ইঃফাঃ ৩৫৮১)
৩৮৬৪
ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাহাঁর পিতা উমার (রাদি.) একদিন নিজ গৃহে ভীত অবস্থায় অবস্থান করছিলেন। তখন আবু আমর আস ইবনু ওয়াইল সাহমী তাহাঁর নিকট এলেন। তার গায়ে ছিল ধারিদার চাদর ও রেশমী জরির জামা। তিনি বানু সাহম গোত্রের লোক ছিলেন। জাহিলী যুগে তারা আমাদের হালীফ (বিপদকালে সাহায্যের চুক্তি যাদের সাথে করা হয়) ছিল। আস উমার (রাদি.) – কে জিজ্ঞের করিলেন আপনার অবস্থা কেমন? উমার (রাদি.) উত্তর দিলেন ইসলাম গ্রহন করার কারণে তোমার গোত্রের লোকজন অচিরেই আমাকে হত্যা করিবে। তা শুনে আস (রাদি.) বলিলেন, তোমার কোন কিছু করার শক্তি ক্ষমতা তাদের নেই। তার কথা শুনে উমর (রাদি.) বলিলেন, তোমার কথা শুনে আমি নিঃশঙ্ক হলাম। আস বেরিয়ে পড়লেন এবং দেখিতে পেলেন, মক্কা ভূমি লোকে ভরপুর। তিনি তাদেরকে বলিলেন, তোমরা কোথায় যাচ্ছ? তারা বলিল, আমরা উমার ইবনুল খাত্তাবের নিকট যাচ্ছি, সে নিজ ধর্ম ত্যাগ করতঃ বিধর্মী হয়ে গেছে। আস বলিলেন তার নিকট যাওয়ার, তার কোন কিছু করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। এতে লোকজন ফিরে গেল।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭৭, ইঃফাঃ ৩৫৮২)
৩৮৬৫
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) বলেন, যখন উমার (রাদি.) ইসলাম গ্রহন করিলেন, তখন লোকেরা তাহাঁর গৃহের কাছে জড় হল এবং বলিতে লাগল, উমার স্বধর্ম ত্যাগ করেছে। আমি তখন ছোট ছেলে। আমাদের ঘরের ছাদে দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখছিলাম। তখন একজন লোক এসে বলিল, তার গায়ে রেশমী জুববা ছিল, উমার স্বধর্ম ত্যাগ করেছে, কিন্তু এ সমাবেশ কেন? আমি তাকে আশ্রয় দিচ্ছি। ইবনু উমার (রাদি.) বলেন, তখন আমি দেখলাম, লোকজন চারিদিকে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ লোকটি কে? লোকেরা বলিল, আস ইবনু ওয়াইল।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭৮, ইঃফাঃ ৩৫৮৩)
৩৮৬৬
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি যখনই উমার (রাদি.) – কে কোন ব্যাপারে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি যে, আমার মনে হয় ব্যাপারটি এমন হইবে, তবে তার ধারণা মত ব্যাপারটি সংঘটিত হয়েছে। একবার উমার (রাদি.) উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় এক সুদর্শন লোক তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। উমার (রাদি.) বলিলেন, আমার ধারণা ভুলও হইতে পারে তবে আমার মনে হয় লোকটি জাহেলী ধর্মাবলম্বী কিংবা ভবিষ্যৎ গণনাকারীও হইতে পারে। লোকটিকে আমার কাছে নিয়ে এস। তাকে তাহাঁর কাছে ডেকে আনা হল। উমার (রাদি.) তার ধারণার কথা তাকে শুনালেন। তখন সে বলিল, ইতিপূর্বে আমি কোন মুসলিম ব্যক্তিকে এরূপ কথা বলিতে দেখিনি। উমার (রাদি.) বলিলেন, আমি তোমাকে কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, তুমি আমাকে তোমার বিষয়টি খুলে বল। সে বলিল, জাহিলী যুগে আমি তাদের ভবিষ্যৎ গণনাকারী ছিলাম। উমার (রাদি.) বলিলেন, জ্বিনেরা তোমাকে যে সব কথাবার্তা বলেছে, তন্মধ্যে কোন কথাটি তোমার কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর ছিল। সে বলিল, আমি একদিন বাজারে ছিলাম। তখন একটি মহিলা জ্বিন আমার নিকট আসল। আমি তাকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখিতে পেলাম। তখন সে বলিল, তুমি কি জ্বিন জাতির অবস্থা দেখছনা, তারা কেমন দুর্বল হয়ে পড়ছে? তাদের মধ্যে হতাশার চিহ্ণ দেখা যাচ্ছে। তারা ক্রমশঃ উটওয়ালাদের এবং চাদর জুব্বা পরিধানকারীদের অনুগত হয়ে পড়ছে। উমার (রাদি.) বলিলেন, সে সত্য কথা বলেছে। আমি একদিন তাদের দেবতাদের কাছে ঘুমিয়ে ছিলাম। তখন এক লোক একটি গরুর বাছুর নিয়ে হাজির হল এবং সেটা যবেহ করে দিল। ঐ সময় এক লোক এমন বিকট চিৎকার করে উঠল, যা আমি আর কখনো শুনিনি। সে চিৎকার করে বলছিল, হে জলীহ! একটি সাধারণ কল্যাণময় ব্যাপার শীঘ্রই প্রকাশ লাভ করিবে। তা হল- একজন শুদ্ধভাষী লোক বলবেন; لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ (শুনে) লোকজন ছুটাছুটি করে পলায়ন করিল। আমি বললাম, এ ঘোষণার রহস্য অবশ্যই বের করব। তারপর আবার ঘোষণা দেয়া হল। হে জলীহ! একটি সাধারণ ও কল্যাণময় ব্যাপার অতি শীঘ্র প্রকাশ পাবে। তাহল একজন বাগ্মী ব্যক্তি لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ এর প্রকাশ্যে ঘোষণা দিবে। তারপর আমি উঠে দাঁড়ালাম। এর কিছুদিন পরেই বলা হল যে, ইনিই নাবী।
(আঃপ্রঃ ৩৫৭৯, ইঃফাঃ ৩৫৮৪)
৩৮৬৭
কাইস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
কাইস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি সাঈদ ইবনু যায়দ (রাদি.) – কে তাহাঁর গোত্রকে লক্ষ্য করে একথা বলিতে শুনিয়াছি যে, আমি দেখেছি উমার (রাদি.) আমাকে এবং তার বোন ফাতিমাকে ইসলাম গ্রহন করার কারণে বেঁধে রেখেছেন। তখন তিনি ইসলাম গ্রহন করেননি। তোমরা উসমান (রাদি.) – এর সাথে যে অসদাচারণ করেছ তার কারণে যদি উহুদ পাহাড় বিদীর্ণ হয় তবে তা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
(আঃপ্রঃ ৩৫৮০, ইঃফাঃ ৩৫৮৫)
Leave a Reply