সালাম ফিরান এর পর জিকির ও মুক্তাদিগণের দিকে ঘুরে বসবেন

সালাম ফিরান এর পর জিকির ও মুক্তাদিগণের দিকে ঘুরে বসবেন

সালাম ফিরান ও সালাম ফিরানোর পর ইমাম মুক্তাদিগণের দিকে ঘুরে বসবেন >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ১০, আযান, অধ্যায়ঃ (১৫২-১৬০)=৯টি

১০/১৫২. অধ্যায়ঃ সালাম ফিরান ।
১০/১৫৩. অধ্যায়ঃ ইমামের সালাম ফিরানোর সময় মুক্তাদিগণও সালাম ফিরাবে ।
১০/১৫৪. অধ্যায়ঃ যারা ইমামের সালামের জবাব দেয়া দরকার মনে করেন না এবং সালাতের সালামকেই যথেষ্ট মনে করেন ।
১০/১৫৫. অধ্যায়ঃ সালামের পর যিক্‌র ।
১০/১৫৬. অধ্যায়ঃ সালাম ফিরানোর পর ইমাম মুক্তাদিগণের দিকে ঘুরে বসবেন ।
১০/১৫৭. অধ্যায়ঃ সালামের পরে ইমামের মুসাল্লায় বসে থাকা ।
১০/১৫৮. অধ্যায়ঃ মুসল্লীদের নিয়ে সালাত আদায়ের পর কোন জরুরী কথা মনে পড়লে তাদের ডিঙ্গিয়ে যাওয়া।
১০/১৫৯. অধ্যায়ঃ সালাত শেষে ডানে ও বাম দিকে ফিরে যাওয়া ।
১০/১৬০. অধ্যায়ঃ কাঁচা রসুন, পিঁয়াজ ও দুর্গন্ধযুক্ত মসলা বা তরকারী ।

১০/১৫২. অধ্যায়ঃ সালাম ফিরান ।

৮৩৭. উম্মু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন সালাম ফিরাতেন তখন সালাম শেষ হলেই মহিলাগণ দাঁড়িয়ে পড়তেন। তিনি (সাঃআঃ) দাঁড়ানোর পূর্বে কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষা করিতেন। ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আল্লাহই ভাল জানেন, আমার মনে হয়, তাহাঁর এ অপেক্ষা এ কারনে যাতে মুসল্লীগন হইতে যে সব পুরুষ ফিরে যান তাদের পূর্বেই মহিলারা নিজ অবস্থানে পৌঁছে জেতে পারেন।

১০/১৫৩. অধ্যায়ঃ ইমামের সালাম ফিরানোর সময় মুক্তাদিগণও সালাম ফিরাবে ।

ইবনু উমর (রাদি.) ইমামের সালাম ফিরানোর সময় মুক্তাদীগণের সালাম ফিরানো মুস্তাহাব মনে করিতেন ।

৮৩৮. ইতবান ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)–এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছি। তিনি যখন সালাম ফিরান তখন আমরাও সালাম ফিরাই।

১০/১৫৪. অধ্যায়ঃ যারা ইমামের সালামের জবাব দেয়া দরকার মনে করেন না এবং সালাতের সালামকেই যথেষ্ট মনে করেন ।

৮৩৯. মাহমূদ ইবনূ রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)–এর কথা তাহাঁর স্পষ্ট মনে আছে, যে তাঁদের বাড়িতে রাখা একটি বালতির (পানি নিয়ে) নাবী (সাঃআঃ) কুলি করিয়াছেন।

৮৪০. মাহমূদ ইবনূ রাবী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমি ইতবান ইবনু মালিক আনসারী (রাদি.) যিনি বনূ সালিম গোত্রের একজন, তাঁকে বলিতে শুনিয়াছি, আমি নাবী (সাঃআঃ)–এর নিকট গিয়ে বললাম, আমার দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে গেছে এবং আমার বাড়ি হইতে আমার কাওমের মসজিদ পর্যন্ত পানি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার একান্ত ইচ্ছা আপনি আমার বাড়িতে এসে এক জায়গায় সালাত আদায় করবেন যেটা আমি সালাত আদায় করার জন্য নির্দিষ্ট করে নিব। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ ইনশা আল্লাহ, আমি তা করব। পরদিন রোদের তেজ বৃদ্ধি পেলে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) এবং আবু বকর (রাদি.) আমার বাড়িতে এলেন। নাবী (সাঃআঃ) প্রবেশের অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে দিলাম। তিনি না বসেই বললেনঃ তোমার ঘরের কোন স্থানে তুমি আমার সালাত আদায় পছন্দ কর? তিনি পছন্দ মত একটি স্থান নাবী (সাঃআঃ)–কে সালাত আদায়ের জন্য ইঙ্গিত করে দেখালেন। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন আমরাও তাহাঁর পিছনে কাতারে দাঁড়ালাম। অবশেষে তিনি সালাম ফিরালেন, আমরাও তাহাঁর সালামের সময় সালাম ফিরালাম।

১০/১৫৫. অধ্যায়ঃ সালামের পর যিক্‌র ।

৮৪১. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ)–এর সময় মুসল্লীগন ফরয সালাত শেষ হলে উচ্চৈঃস্বরে যিক্‌র করিতেন। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, আমি এরূপ শুনে বুঝতাম, মুসল্লীগন সালাত শেষ করিয়াছেন।

৮৪২. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তাকবীর শুনে আমি বুঝতে পারতাম সালাত শেষ হয়েছে। আলী (রাদি.) বলেন, সুফিয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, আবু মাবাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু আব্বাস (রাদি.)–এর আযাদকৃত দাসসমূহের মধ্যে অধিক সত্যবাদী দাস ছিলেন। আলী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, তার নাম ছিল নাফিয।

৮৪৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, দরিদ্রলোকেরা নাবী (সাঃআঃ)–এর নিকট এসে বলিলেন, সম্পদশালী ও ধনী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের দ্বারা উচ্চমর্যাদা ও স্থায়ী আবাস লাভ করছেন, তাঁরা আমাদের মত সালাত আদায় করছেন, আমাদের মত সিয়াম পালন করছেন এবং অর্থের দ্বারা হাজ্জ, উমরাহ, জিহাদ ও সদাক্বাহ করার মর্যাদাও লাভ করছেন। এ শুনে তিনি বলিলেন, আমি কি তোমাদের এমন কিছু কাজের কথা বলব, যা তোমরা করলে, যারা নেক কাজে তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গেছে, তাদের পর্যায়ে পৌঁছতে পারবে। তবে যারা পুনরায় এ ধরনের কাজ করিবে তাদের কথা স্বতন্ত্র। তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর তেত্রিশ বার করে তাসবীহ

سُبْحَانَ اللهِ

উচ্চারণঃ সুবহানাল্ল-হ, অর্থঃ আল্লাহ পবিত্র , তাহমীদ

الْحَمْدُ لِلَّهِ

উচ্চারণঃ আলহামদু লিল্লাহ, অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর এবং তাকবীর

اللَّهُ أَكْبَرُ

উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার, অর্থঃ আল্লাহ মহান

পাঠ করিবে। (এ নিয়ে) আমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হলো। কেউ বলিল, আমরা তেত্রিশ বার তাসবীহ পড়ব। তেত্রিশ বার তাহমীদ আর চৌত্রিশ বার তাকবীর পড়ব। অতঃপর আমি তাহাঁর নিকট ফিরে গেলাম। তিনি বলিলেন,

سُبحانَ اللهِ وَالحَمدُ للّهِ وَ اللهُ أَكبَر

বলবে, যাতে সবগুলোই তেত্রিশবার করে হয়ে যায়।

৮৪৪. মুগীরাহ ইবনু শুবাহ (রাদি.)–এর কাতিব ওয়ার্‌রাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মুগীরাহ ইবনু শুবাহ (রাদি.) আমাকে দিয়ে মুআবিয়াহ (রাদি.)-কে একখানা পত্র লিখালেন যে, নাবী (সাঃআঃ) প্রত্যেক ফরয সালাতের পর বলিতেনঃ

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحدَهُ لاَ شَريكَ لَهُ لَهُ المُلكُ وَلَهُ الحمَدُ وَهوَ عَلى كُلِّ شَيٍّ قَديرُ، اللَّهُمَّ لا مَنِعَ لِماَ اعطَيتَ وَلاَ مُعطي لِماَ مَنَعتَ وَلا يَنفَعُ ذاَ الجَدِّ مِنكَ الجَدُّ

উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়াআলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। আল্লাহুম্মা লা মানিআ লিমা আত্বায়তা ওয়ালা মুত্বিআ লিমা মানাতা ওয়ালা ইয়ানফাউ যাল জাদ্দু মিনকাল জাদ্দ।“এক আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাহাঁরই, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র তাহাঁরই জন্য, তিনি সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল। হে আল্লাহ! আপনি যা প্রদান করিতে চান তা রোধ করার কেউ নেই, আর আপনি যা রোধ করেন তা প্রদান করার কেউ নেই। আপনার নিকট (সৎকাজ ভিন্ন) কোন সম্পদশালীর সম্পদ উপকারে আসে না।” শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আবদুল মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এ রকমই বলেছেন, আপনার নিকট (সৎ কাজ ছাড়া) এবং হাসান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, جَدُّ অর্থ সম্পদ এবং শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ওয়ার্‌রাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

১০/১৫৬. অধ্যায়ঃ সালাম ফিরানোর পর ইমাম মুক্তাদিগণের দিকে ঘুরে বসবেন ।

৮৪৫. সামুরা ইবনু জুনদুব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন সালাত শেষ করিতেন, তখন আমাদের দিকে মুখ ফিরাতেন।

৮৪৬. যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) রাতে বৃষ্টি হবার পর হুদায়বিয়াতে আমাদের নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করিলেন। সালাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে ফিরে বললেনঃ তোমরা কি জান, তোমাদের পরাক্রমশালী ও মহিমাময় প্রতিপালক কি বলেছেন? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলই বেশি জানেন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ (রব) বলেন, আমার বান্দাদের মধ্য কেউ আমার প্রতি মুমিন হয়ে গেল এবং কেউ কাফির। যে বলেছে, আল্লাহর করুনা ও রহমতে আমরা বৃষ্টি লাভ করেছি, সে হল আমার প্রতি বিশ্বাসী এবং নক্ষত্রের প্রতি অবিশ্বাসী। আর যে বলেছে, অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের উপর বৃষ্টিপাত হয়েছে, সে আমার প্রতি অবিশ্বাসী হয়েছে এবং নক্ষত্রের প্রতি বিশ্বাসী হয়েছে।

৮৪৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) অর্ধরাত পর্যন্ত সালাত বিলম্ব করিলেন। এরপর তিনি আমাদের সামনে বের হয়ে এলেন। সালাত শেষে তিনি আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলিলেন, লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু তোমরা যতক্ষণ পর্যন্ত সালাতের অপেক্ষায় থাকবে ততক্ষণ তোমরা যেন সালাতে রত থাকবে।

১০/১৫৭. অধ্যায়ঃ সালামের পরে ইমামের মুসাল্লায় বসে থাকা ।

৮৪৮. নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু উমর (রাদি.) যে স্থানে দাঁড়িয়ে ফরয সালাত আদায় করিতেন সেখানে দাঁড়িয়ে অন্য সালাত আদায় করিতেন। এরূপ ক্বাসিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আমল করিয়াছেন। আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে মারফূ হাদিস বর্ণনা করা হয়ে থাকে যে, ইমাম তাহাঁর জায়গায় দাঁড়িয়ে নফল সালাত আদায় করবেন। [ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] এ হাদীসটি মারফূ হিসেবে রিওয়ায়াত করা ঠিক নয়।

৮৪৯. উম্মুল মুমিনীন উম্মু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) সালাম ফিরানোর পর নিজ জায়গায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিতেন। ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)–এর বসে থাকার কারণ আল্লাহই অধিক জ্ঞাত। তবে আমার মনে হয় সালাতের পর মহিলাগণ যাতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পান।

৮৫০. হিন্দ বিনত হারিস ফিরাসিয়াহ (রাদি.) যিনি উম্মু সালামা (রাদি.)–এর বান্ধবী তাহাঁর সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সালাম ফিরাতেন, অতঃপর মহিলারা ফিরে গিয়ে তাঁদের ঘরে প্রবেশ করিতেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)–এর ফিরবার পূর্বেই। ইবনু ওহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইউনুস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বলেন যে, আমাকে হিন্দ ফিরাসিয়াহ (রাদি.) বর্ণনা করিয়াছেন এবং উসমান ইবনু উমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমাকে ইউনুস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) যুহরি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বলেন যে, আমাকে হিন্দ ফিরাসিয়াহ (রাদি.) বর্ণনা করিয়াছেন, আর যুবাইদী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমাকে যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বর্ণনা করিয়াছেন যে, হিন্দ বিনত হারিস কুরাশিয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাকে বর্ণনা করিয়াছেন এবং তিনি মাবাদ ইবনু মিকদাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর স্ত্রী। আর মাবাদ বনূ যুহরার সাথে সন্ধি চূক্তিতে আবদ্ধ ছিলেন এবং তিনি (হিন্দ) নাবী (সাঃআঃ)–এর সহধর্মিণীগণের নিকট যাতায়াত করিতেন। শুআয়ব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বলেন যে, আমাকে হিন্দ কুরাশিয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বর্ণনা করিয়াছেন। আর ইবনু আবু আতীক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে হিন্দ ফিরাসিয়াহ (রাদি.) হইতে বর্ণনা করছেন। লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইয়াহইয়া ইবনু সায়ীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, কুরাইশের এক মহিলা তাঁকে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।

১০/১৫৮. অধ্যায়ঃ মুসল্লীদের নিয়ে সালাত আদায়ের পর কোন জরুরী কথা মনে পড়লে তাদের ডিঙ্গিয়ে যাওয়া।

৮৫১. উকবাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি মদীনায় নাবী (সাঃআঃ) এর পিছনে আসরের সালাত আদায় করলাম। সালাম ফিরানোর পর তিনি তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে যান এবং মুসল্লীগণকে ডিঙ্গিয়ে তাহাঁর সহধর্মিণীগণের কোন একজনের কক্ষে গেলেন। তাহাঁর এই দ্রুততায় মুসল্লীগণ ঘাবড়িয়ে গেলেন। নাবী (সাঃআঃ) তাঁদের নিকট ফিরে এলেন এবং দেখলেন যে, তাহাঁর দ্রুততার কারনে তাঁরা বিস্মিত হয়ে গেছেন। তাই তিনি বললেনঃ আমাদের নিকট রাখা কিছু স্বর্ণের কথা মনে পড়ে যায়। তা আমার জন্য বাধা হোক, তা আমি পছন্দ করি না। তাই আমি সেটার বণ্টনের নির্দেশ দিলাম।

১০/১৫৯. অধ্যায়ঃ সালাত শেষে ডানে ও বাম দিকে ফিরে যাওয়া ।

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) কখনো ডান দিকে এবং কখনো বাম দিকে ফিরে যেতেন। নির্দিষ্ট করে ডান দিকে ফিরে যাওয়া দোষের মনে করিতেন ।

৮৫২. আসওয়াদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) (রাদি.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন স্বীয় সালাতের কোন কিছু শয়তানের জন্য না করে। তা হল, কেবল ডান দিকে ফিরানো আবশ্যক মনে করা। আমি নাবী (সাঃআঃ)–কে অধিকাংশ সময়ই বাম দিকে ফিরতে দেখেছি।

১০/১৬০. অধ্যায়ঃ কাঁচা রসুন, পিঁয়াজ ও দুর্গন্ধযুক্ত মসলা বা তরকারী ।

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ক্ষুধা বা কোন কারণে অবশ্যই কেউ যেন রসুন বা পিঁয়াজ খেয়ে আমাদের মসজিদের নিকট না আসে ।

৮৫৩. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) খাইবারের যুদ্ধের সময় বলেন, যে ব্যক্তি এই জাতীয় বৃক্ষ হইতে অর্থাৎ কাঁচা রসুন খায় সে যেন অবশ্যই আমাদের মসজিদে না আসে।

৮৫৪. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কেউ যদি এ জাতীয় গাছ হইতে খায়, তিনি এ দ্বারা রসুন বুঝিয়েছেন, সে যেন আমাদের মসজিদে না আসে। (রাবী আতা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন) আমি জাবির (রাদি.) কে জিজ্ঞেস করলাম, নাবী (সাঃআঃ)-এর দ্বারা কী বুঝিয়েছেন? (জাবির (রাদি.) বলেন, আমার ধারণা যে, নাবী (সাঃআঃ)–এর দ্বারা কাঁচা রসুন বুঝিয়েছেন এবং মাখ্‌লাদ ইবনু ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু জুরাইজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে দুর্গন্ধযুক্ত হবার কথা উল্লেখ করিয়াছেন।

৮৫৫. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রসুন বা পিঁয়াজ খায় সে যেন আমাদের হইতে দূরে থাকে অথবা বলেছেন, সে যেন আমাদের মসজিদ হইতে দূরে থাকে আর নিজ ঘরে বসে থাকে। (উক্ত সানাদে আরো বর্ণিত আছে যে,) নাবী (সাঃআঃ)–এর নিকট একটি পাত্র যার মধ্যে শাক-সবজি ছিল আনা হলো। নাবী (সাঃআঃ)–এর গন্ধ পেলেন এবং এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করিলেন, তখন তাঁকে সে পাত্রে রক্ষিত শাক-সবজি সম্পর্কে জানানো হলো, তখন একজন সাহাবা [আবু আইয়ুব (রাদি.)–কে উদ্দেশ্য করে বলিলেন, তাহাঁর নিকট এগুলো পৌঁছে দাও। কিন্তু তিনি তা খেতে অপছন্দ করিলেন, এ দেখে নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তুমি খাও! আমি যাঁর সাথে গোপনে আলাপ করি তাহাঁর সাথে তুমি আলাপ কর না (মালাইকার সাথে আমার আলাপ হয়, তাঁরা দুর্গন্ধকে অপছন্দ করেন)। আহমাদ ইবনু সালিহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু ওয়াহব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বলেছেন أُتِيَ بِبَدرٍ ইবনু ওয়াহ্ব–এর অর্থ বলেছেন, খাঞ্চা যার মধ্যে শাক-সব্জী ছিল। আর লায়স ও আবু সাফওয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইউনুস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে রিওয়ায়াত বর্ণনায় قَدرِ এর বর্ণনা উল্লেখ করেননি। [ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] -قَدرِ এর বর্ণনা যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)–এর উক্তি না হাদীসের অংশ তা আমি বলিতে পারছি না।

৮৫৬. আবদুল আযীয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আনাস ইবনু মালিক (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করিলেন, আপনি নাবী (সাঃআঃ)–কে রসুন খাওয়া সম্পর্কে কী বলিতে শুনেছেন? তখন আনাস (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এ জাতীয় গাছ হইতে খায় সে যেন অবশ্যই আমাদের নিকট না আসে এবং আমাদের সাথে সালাত আদায় না করে।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply