সালাতে কাতার সোজা করা

সালাতে কাতার সোজা করা

সালাতে কাতার সোজা করা  >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৪

  • অধ্যায়ঃ ২৪. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ২৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ২৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ২৪. প্রথম অনুচ্ছেদ

১০৮৫. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ধনুকে তীর সোজা করার ন্যায় আমাদের কাতার সোজা করিতেন। এমনকি আমরা তাহাঁর হইতে কাতার সোজা করার গুরুত্ব উপলব্ধি করেছি। একদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [ঘর থেকে] বের হয়ে এসে সলাতের জন্যে দাঁড়ালেন। তাকবীরে তাহ্‌রীমা বাঁধতে যাবেন ঠিক এ মুহূর্তে এক ব্যক্তির বুক সলাতের কাতার থেকে একটু বেরিয়ে আছে দেখিতে পেয়ে বলেন, হে আল্লাহর বান্দা! তোমাদের কাতার সোজা করো। নতুবা আল্লাহ তোমাদের চেহারায় বিভেদ সৃষ্টি করে দিবেন। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৩৬। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৮৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলো। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের দিকে চেহারা ফিরালেন এবং বললেন, নিজ নিজ কাতার সোজা করো এবং পরস্পর গায়ে গায়ে লেগে দাঁড়াও! নিশ্চয় আমি আমার পেছনের দিক হইতেও তোমাদেরকে দেখিতে পাই। [বোখারী; বোখারী ও মুসলিমের মিলিত বর্ণনা হলো, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সলাতের কাতারগুলোকে পূর্ণ করো। আমি আমার পেছনের দিক থেকেও তোমাদেরকে দেখিতে পাই।] {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭১৮, ৭১৯, মুসলিম ৪৩৪। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৮৭. উক্ত রাবী {আনাস [রাদি.]] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন, তোমরা তোমাদের সলাতের কাতার ঠিক করে নাও। কারণ সলাতের কাতার সোজা করা সলাত ক্বায়িম করার অন্তর্ভুক্ত।{১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭২৩, মুসলিম ৪৩৩। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৮৮. আবু মাস্ঊদ আল আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাতের সময় আমাদের কাঁধে হাত রেখে বলিতেনঃ সোজা হয়ে দাঁড়াও, সামনে পিছনে হয়ে দাঁড়িও না। অন্যথায় তোমাদের অন্তরে বিভেদ সৃষ্টি হবে। আর তোমাদের যারা বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী, তারা আমার নিকট দাঁড়াবে। তারপর সমস্ত লোক যারা তাদের নিকটবর্তী [মনের], তারপর ঐসব লোক যারা তাদের নিকটবর্তী হবে। আবু মাস্‌উদ [রাদি.] এ হাদিসটি বর্ণনা করে বলেছেন, আজকাল তোমাদের মাঝে বড় মতভেদ। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৩২। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের মাঝে বুদ্ধিমান ও বিজ্ঞজন [সলাতে] আমার নিকট দিয়ে দাঁড়াবে। তারপর দাঁড়াবে তাদের নিকটবর্তী স্তরের লোক। এ কথা তিনি তিনবার উচ্চৈঃস্বরে বললেন। আর তোমরা [মাসজিদে] বাজারের ন্যায় হৈ চৈ করিবে না। [{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৩২। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৯০. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সহাবীদের মাঝে প্রথম সারিতে এগিয়ে আসতে গড়িমসি লক্ষ্য করে তাদেরকে বললেন, সামনে এগিয়ে আসো। আমার অনুকরণ করো। তাহলে যারা তোমাদের পেছনে রয়েছে তারা তোমাদের অনুকরণ করিবে। এরপর তিনি বললেন, একদল লোক সর্বদাই প্রথম কাতারে দাঁড়াতে দেরী করিতে থাকে। পরিণামে আল্লাহ তাআলাও তাদের পেছনে ফেলে রাখবেন।{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৩৮। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৯১. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট বের হয়ে এসে আমাদেরকে গোল হয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বসা দেখে বললেন, কি ব্যাপার তোমাদেরকে বিভক্ত হয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এরপর আর একদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে আগমন করিলেন এবং বললেন, তোমরা কেন এভাবে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়াচ্ছ না যেভাবে মালায়িকাহ্‌ [ফেরেশ্‌তারা] আল্লাহর সামনে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! মালায়িকাহ্‌ আল্লাহর সামনে কিভাবে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়? তিনি বললেন, তারা প্রথমে সামনের কাতার পুরা করে এবং কাতারে মিলেমিশে দাঁড়ায়। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৩০।সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৯২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সলাতে পুরুষদের জন্যে সবচেয়ে ভাল হলো প্রথম সারি এবং নিকৃষ্টতম হলো পেছনের সারি। আর মহিলাদের জন্য সবচেয়ে ভাল হলো পেছনের কাতার এবং সবচেয়ে খারাপ হলো প্রথম কাতার। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৪৪০। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ২৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

১০৯৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : [সলাতে] তোমাদের কাতারগুলো মিলেমিশে দাঁড়াবে এবং কাতারগুলোও কাছাকাছি [প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় রেখে] বাঁধবে। নিজেদের কাঁধ মিলিয়ে রাখবে। কসম ওই জাতে পাকের যাঁর হাতে আমার জীবন! আমি শায়ত্বনকে তোমাদের [সলাতের] সারির ফাঁকে ঢুকতে দেখি যেন তা হিজাযী ছোট কালো বকরী। {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৬৬৭, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৫৪৫, ইবনি হিব্বান ৬৩৩৯, সহীহ আত তারগীব ৪৯৪, সহীহ আল জামি ৩৫০৫। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৯৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : তোমরা পূর্বে প্রথম কাতার সম্পূর্ণ করো, এরপর পরবর্তী কাতার পুরা করিবে। কোন কাতার অসম্পূর্ণ থাকলে সেটা হবে একেবারে শেষের কাতার। {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৬৭১, সহীহ আল জামি ১২২। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৯৫. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিতেন : যেসব ব্যক্তি প্রথম কাতারের নিকটবর্তী গিয়ে পৌঁছে তাদের ওপর আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহ করেন ও তাহাঁর মালায়িকাহ্‌ [ফেরেশ্‌তারা] তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ তাআলার কাছে তাহাঁর কদমের চেয়ে ভাল কোন কদম নেই যে লোক হেঁটে কাতারের খালি স্থান পূরণ করে। {১}

{১} সহীহ লিগায়রিহী : আবু দাউদ ৬৭১, সহীহ আত তারগীব ৫০৭। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ লিগাইরিহি

১০৯৬. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : সলাতের কাতার ডানদিকের মানুষের ওপর আল্লাহ তাআলা ও মালায়িকাহ্‌ [ফেরেশতারা] তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করিতে থাকে। {১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৬৭৬, ইবনি মাজাহ ১০০৫, ইবনি হিব্বান ২১৬০, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ৫৬৮৬, জইফ আত তারগীব ২৫৯, জইফ আল জামি ১৬৬৮। কারণ এর সানাদে মুআবিয়াহ্ বিন হিশাম ভুল করে مَيَامِنِ الصُّفُوفِ অংশটুকু বর্ণনায় একাকী হয়েছেন। অধিকন্তু তার স্মরণশক্তিতে দুর্বলতা রয়েছে। তবে মাহফূয বর্ণনা হলো على الذين يصلون الصفوف।,এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১০৯৭. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা সলাতে দাঁড়ালে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [প্রথমে মুখে অথবা হাতে ইশারা করে] কাতারগুলোকে ঠিক করে দিতেন। যখন আমরা ঠিক হয়ে দাঁড়াতাম তিনি তাকবীর তাহরীমা বলিতেন। {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৬৬৫। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১০৯৮,. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [সলাত শুরু করার পূর্বে] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রথমে তাহাঁর ডানপাশে ফিরে বলিতেন, ঠিক হয়ে দাঁড়াও, কাতারগুলোকে সোজা করো। তারপর তাহাঁর বামপাশে ফিরেও বলিতেন, ঠিক হয়ে দাঁড়াও, কাতারগুলোকে সোজা করো। {১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৬৭০, ইবনি হিব্বান ২১৬৮। কারণ এর সানাদে বর্ণনাকারী মুস্আব বিন সাবিত কে ঈমাম আহমাদ, ইবনি মাঈন, আবু হাতিম, নাসায়ী প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ দুর্বল বলেছেন। আর মুহাম্মাদ বিন মুসলিম মাজহূল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১০৯৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : যারা সলাতরে মাঝে নিজেদের কাঁধগুলো নমনীয় রাখে, তোমাদের মাঝে তারাই ভাল। {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৬৭২, মুসনাদে বায্যার ৫১৯৫, সহীহাহ্ ২৫৩৩, সহীহ আত তারগীব ৪৯৭, সহীহ আল জামি ৩২৬৪, সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ২৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১১০০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিতেন : তোমরা সলাতে সোজা হয়ে দাঁড়াবে, তোমরা সলাতে সোজা হয়ে দাঁড়াবে, তোমরা সলাতে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। আমার জীবন যার হাতে নিহিত তাহাঁর কসম করে বলছি, আমি তোমাদেরকে সামনে যেমন দেখিতে পাই পেছনেও তদ্রূপ দেখিতে পাই।{১}

{১} সহীহ : নাসায়ী ৮১৩, আহমাদ ১৩৮৩৮। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১০১. আবু উমামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : আল্লাহ তাআলা ও তাহাঁর মালায়িকাহ্‌ [ফেরেশতাগণ] সলাতে প্রথম সাড়িতে দাঁড়ানো লোকদের ওপর করুণা বর্ষণ করেন। এ কথা শুনে সহাবীগণ আরয করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! দ্বিতীয় কাতারে দাঁড়ানো লোকদের ওপর? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিলেন, “আল্লাহ ও তাহাঁর মালায়িকাহ্‌ [ফেরেশতাগণ] সলাতের প্রথম কাতারের উপর করুণা বর্ষণ করেন। সহাবীরা প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আর দ্বিতীয় কাতারের উপর তিনি জবাবে বললেন, দ্বিতীয় কাতারের উপরও। এরপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিলেন : তোমরা তোমাদের সলাতের কাতারগুলোকে সোজা রাখো, কাঁধকে সমান করো, ভাইদের হাতের সাথে হাত নরম করে রাখো। কাতারের মাঝে খালি স্থান ছাড়বে না। তা না হলে শয়তান তোমাদের মাঝে হিজাযী ছোট কালো ছাগলের মতো ঢুকে পড়বে। অর্থাৎ ভেড়ার ছোট বাচ্চা।{১}

{১} জইফ : আহমাদ ২২২৬৩। কারণ এর সানাদে বর্ণনাকারী ফারাজ বিন ফুযালাহ্-কে সকল মুহাদ্দিসগণ দুর্বল বলেছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১১০২. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : তোমরা সলাতের কাতার সোজা রাখবে। কাঁধকে সমান করো। কাতারের খালি স্থান পুরা করো। নিজেদের ভাইদের হাতে নরম থাকিবে। কাতারের মধ্যে শয়তান দাঁড়াবার কোন খালি স্থান ছেড়ে দেবে না। যে লোক কাতার মিশিয়ে রাখবে আল্লাহ তাআলা [তাহাঁর রহ্‌মাতের সাথে] তাকে মিলিয়ে রাখবেন। আর যে লোক কাতার ভেঙ্গে দাঁড়াবে আল্লাহ তাআলা তাকে তার রহ্‌মাত থেকে কেটে দেন। [আবু দাউদ; নাসায়ী এ হাদিসকে, ওয়ামান ওয়াসালা সাফ্‌ফান হইতে শেষ পর্যন্ত নকল করিয়াছেন] {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৬৬৬, সহীহ আত তারগীব ৪৯৫, আহমাদ ৫৭২৪, সহীহাহ্ ৭৪৩, সহীহ আল জামি ১১৮৭। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১০৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : ঈমামকে মধ্যখানে রাখো, কাতারের মাঝে খালি স্থান বন্ধ করে দিও। {১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ৬৮১। কারণ এর সানাদে বর্ণনাকারী ইয়াহ্ইয়া বিন বাশীর বিন খাল্লাদ এবং তার মাতা উভয়ে দুর্বল। কিন্তু ২য় অংশের শাহিদ রয়েছে।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১১০৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন : কিছু লোক সব সময়ই সলাতে প্রথম কাতার থেকে পেছনে থাকে, এমনকি আল্লাহ তাআলা তাদেরকে জাহান্নামের দিকে পিছিয়ে দেন।] {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ৬৭৯, সহীহ আল জামি ৭৬৯৯। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১০৫. ওয়াবিসাহ্ ইবনি মাবাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক লোককে কাতারের পেছনে একা দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করিতে দেখলেন। তিনি ওই লোককে আবার সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন।

[আহ্‌মাদ, তিরমিজি, আবু দাউদ; তিরমিজি বলেন – এ হাদিসটি হাসান।]{১};{১} সহীহ : আবু দাউদ ৬৮২, আত তিরমিজি ২৩১, ইবনি হিব্বান ২১৯৯, আহমাদ ১৮০০৫, ইরওয়া ৫৪১। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১০৬. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার খালা উম্মুল মুমিনীন মায়মূনাহ্‌ [রাদি.]-এর ঘরে রাত্রে ছিলাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাজ্জুদের সলাতের জন্য দাঁড়ালেন। আমিও তাহাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি [সাঃআঃ] নিজের পেছন দিয়ে তাহাঁর হাত দ্বারা আমার হাত ধরে পেছন দিক দিয়ে নিয়ে আমাকে তাহাঁর ডানপাশে দাঁড় করালেন। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৬৯৯, মুসলিম ৭৬৩। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১০৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাত আদায় করার জন্যে দাঁড়ালেন। আমি এসে তাহাঁর বাম পাশে দাঁড়িয়ে গেলাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের পেছন দিয়ে আমার ডান হাত ধরলেন। [পেছন দিয়ে টেনে এনেই] আমাকে ডান পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। তারপর জাব্বার ইবনি সাখ্‌র আসলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বামপাশে দাঁড়িয়ে গেলেন। [এরপর] তিনি [সাঃআঃ] আমাদের দুজনের হাত একসাথে ধরলেন। আমাদেরকে [নিজ নিজ স্থান হইতে] সরিয়ে এনে নিজের পেছনে দাঁড় করিয়ে দিলেন। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৩০১৪। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১০৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ও ইয়াতীম আমাদের ঘরে নবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সলাত আদায় করছিলাম। আর উম্মু সুলায়ম [রাদি.] ছিলেন আামদের পেছনে। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭২৭, মুসলিম ৬৫৯; শব্দবিন্যাস বোখারীর। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১০৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একবার নবী [সাঃআঃ] তাকে, তার মা ও খালাসহ সলাত আদায় করিলেন। তিনি বলেন আমাকে তিনি তাহাঁর ডান পাশে দাঁড় করালেন। মহিলাদেরকে দাঁড় করালেন আমাদের পেছনে।{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৬৬০। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১১১০. আবু বাকরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি একবার সলাত আদায় করার জন্যে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এলেন। এ সময় তিনি [সাঃআঃ] রুকুতে ছিলেন। রুকু ছুটে যাওয়ার আশংকায় কাতারে পৌঁছার পূর্বেই তিনি তাকবীর তাহরীমা দিয়ে রুকূতে চলে গেছেন। এরপর ধীরে ধীরে হেঁটে এসে কাতারে শামিল হলেন। নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এ ঘটনা উল্লেখ করলে তিনি বললেন, আনুগত্য ও নেক আমালের ক্ষেত্রে আল্লাহ তোমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিন। কিন্তু ভবিষ্যতে এমন করিবে না। [বোখারী] {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৭৮৩। সালাতে কাতার সোজা করা -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply