সালাতুত তাসবিহ

সালাতুত তাসবিহ

সালাতুত তাসবিহ >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৪০

  • অধ্যায়ঃ ৪০. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৪০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৪০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ৪০. সলাতুত্ তাসবীহ

১৩২৮. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্তালিবকে বললেন, হে আব্বাস! হে আমার চাচাজান! আমি কি আপনাকে দান করব না? আমি কি আপনাকে দান করব না? আমি কি আপনাকে বলে দেব না? আপনাকে কি দশটি অভ্যাসের অধিপতি বানিয়ে দেব না? আপনি যদি এগুলো আমাল করেন তাহলে আল্লাহ আপনাকে পূর্বের, পরের, পুরানো ও নতুন, ইচ্ছাকৃত অথবা ভুলক্রমের, ছোট কি বড়, প্রকাশ্য কি গোপন সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। আর সেটা হলো আপনি চার রাক্আত সলাত আদায় করিবেন। প্রতি রাকআতে ফাতিহাতুল কিতাব ও সঙ্গে একটি সূরাহ্। প্রথম রাকআতে ক্বিরাআত পড়া শেষ হলে দাঁড়ানো অবস্থায় পনের বার এ তাসবীহ পড়বেনঃ

 سُبْحَانَ اللّهِ وَالْحَمْدُ لِلّهِ وَلَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَاللّهُ أَكْبَرُ

“সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হাম্‌দু লিল্লা-হি, ওয়ালা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু আল্লা-হু আকবার”। তারপর রুকুতে যাবেন। রুকুতে এ তাসবীহটি দশবার পড়বেন। তারপর রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে এ তাসবীহ আবার দশবার পড়বেন। তারপর সাজদাহ করিবেন। সাজদায় এ তাসবীহ দশবার পড়বেন। তারপর সাজদাহ হইতে মাথা উঠাবেন। সেখানেও এ তাসবীহ দশবার পড়বেন। তারপর দ্বিতীয় সাজদায় যাবেন। এ তাসবীহ দশবার এখানেও পড়বেন। সর্বমোট এ তাসবীহ এক রাকআতে পঁচাত্তর বার হবে। চার রাকআতে এরকম পড়ে যেতে হবে। আপনি যদি প্রতিদিন এ সলাত এরকম পড়তে পারেন তাহলে প্রতিদিনই পড়বেন। প্রতিদিন পড়তে না পারলে সপ্তাহে একদিন পড়বেন। সপ্তাহে একদিন পড়তে না পারলে প্রতি মাসে একদিন পড়বেন। যদি প্রতিমাসে একদিন পড়তে না পারেন, বছরে একবার পড়বেন। যদি বছরেও একবার পড়তে না পারেন, জীবনে একবার অবশ্যই পড়বেন।

{১} সহীহ লিগায়রিহী : আবু দাউদ ১২৯৭, ইবনি মাজাহ ১৩৮৭, ইবনি খুযায়মাহ্ ১২১৬, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১১৯২, সহীহ আত তারগীব ৬৭৭, সহীহ আল জামি ৭৯৩৭, আদ্ দাওয়াতুল কাবীর ৪৪৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৯১৬। যদিও এর সানাদে মূসা ইবনি আবদুল আযীয দুর্বল রাবী থাকায় এ সানাদটি দুর্বল কিন্তু এর একাধিক শাহিদমূলক বর্ণনা রয়েছে যা হাদিসটিকে সহীহ লিগায়রিহী এর স্তরে উন্নীত করেছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ লিগাইরিহি

১৩২৯. ঈমাম তিরমিজি হইতে বর্ণীতঃ

ঈমাম তিরমিজি এ ধরনের বর্ণনা আবু রাফি হইতে নকল করিয়াছেন। {১}

{১} সহীহ লিগায়রিহী : আত তিরমিজি ৪৮২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ লিগাইরিহি

১৩৩০। আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন সব জিনিসের পূর্বে লোকের যে আমালের হিসাব হবে, তা হলো সলাত। যদি তার সলাত সঠিক হয় তাহলে সে সফলকাম হবে ও নাজাত পাবে। আর যদি সলাত বিনষ্ট হয়ে যায় তাহলে সে বিফল ও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যদি ফার্‌য সলাতের কিছু ভুল হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহ তাআলা মালায়িকাহ-কে [ফেরেশ্‌তাগণকে] বলবেন, দেখো! আমার বান্দার নিকট সুন্নাত ও নাফ্‌ল সলাত আছে কি-না? তাহলে সেখান থেকে এনে বান্দার ফার্‌য সলাতের ত্রুটি পূরণ করে দেয়া হবে। এরপর এ রকম বান্দার অন্যান্য হিসাব নেয়া হবে। অন্য এক বিবরণ এসেছে, তারপর এ রকম যাকাতের হিসাব নেওয়া হবে। অতঃপর অবশিষ্ট সব আমালের হিসাব একের পর এক এ রকম নেয়া হবে{১}

{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৪১৩, নাসায়ী ৪৬৫, সহীহ আত তারগীব ৫৪০, সহীহ আল জামি ২০২০; আবু দাউদ ৮৬৪, ৮৬৬। সালাতুত তাসবিহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩১। ঈমাম আহমাদ হইতে বর্ণীতঃ

ঈমাম আহ্‌মাদ এ হাদিস আর এক লোক হইতে নকল করিয়াছেন। {১}

{১} সহীহ : মুসনাদ [৫/৭২, ৩৭৭], হাকিম [১/২৬৩]। [যদিও আহমাদের সানাদটি ত্রুটিযুক্ত নয়; সালাতুত তাসবিহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩২। আবু উমামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইরশাদ করিয়াছেন, আল্লাহ তাআলা বান্দার কোন আমালের প্রতি তাহাঁর করুণার সঙ্গে এত বেশী লক্ষ্য করেন না, যতটা তার পড়া দুরাক্আত সলাতের প্রতি করেন। বান্দা যতক্ষন সলাতে লিপ্ত থাকে তার মাথার উপর নেক ও কল্যাণ ছড়িয়ে দেয়া হয়। আর বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভের সম্পর্কে যেভাবে তার থেকে বের হয়ে আসা হিদায়াতের উৎস অর্থাৎ আল-কুরআন হইতে উপকৃত হয়, আর কোন জিনিস হইতে এমন উপকৃত হয় না।] {১}

{১} জইফ : আত তিরমিজি ২৯১১, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ১৯৫৭, জইফ আত তারগীব ৮৬২, আহমাদ ২২৩০৬। কারণ এর সানাদের বর্ণনাকারী বাকর ইবনি খুনায়স-কে ইবনুল মুবারাক সমালোচিত হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন এবং তার শেষ সময়ের হাদিসগুলো তিনি পরিত্যাগ করিয়াছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply