সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা

সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা

সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা , এই অধ্যায়ে হাদীস=২৫৮ টি ( ৬৯৬-৯৫৩ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ২০ঃ হজ্জ

সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা

পরিচ্ছেদঃ ৪১সায়ী সাফা হইতে শুরু হইবে

৮২১

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মসজিদ হইতে সাফার উদ্দেশ্যে যখন বের হলেন তখন শুনিয়াছি, তিনি বলিতেছেন, আল্লাহ্ যে স্থানটির উল্লেখ প্রথমে করেছিলেন আমরাও সে স্থান হইতে শুরু করব। অতঃপর তিনি সাফা হইতে সায়ী করা শুরু করেন। {১} [সহীহ, মুসলিম ১২১৮]

{১} আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন, === -নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর বিশেষ নিদর্শন। এই আয়াতটিতে সাফার উল্লেখ প্রথমে করা হয়েছে। তাই রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ এরূপ বলেছিলেন।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮২২

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন সাফায় গিয়ে দাঁড়াতেন তখন তিনবার আল্লাহু আকবার বলিতেন এবং এ দুআ পড়তেন

لَاۤ إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ {১} .

তিনবার এটা পড়ে পরে দুআ করিতেন। মারওয়া পাহাড়েও তিনি এরূপ করিতেন। [সহীহ, মুসলিম ১২১৮, পূর্বের হাদীসেরই অংশ]

{১} আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই, সকল সাম্রাজ্য, ক্ষমতা এবং সকল প্রশংসা শুধু তাঁরই, আর তিনি সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাশীল।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮২৩

নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-কে সাফার উপর দাঁড়িয়ে এই দুআ পড়তে শুনেছেন

اَللّٰهُمَّ إِنَّكَ قُلْتَ { ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ } وَإِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ وَإِنِّي أَسْأَلُكَ كَمَا هَدَيْتَنِي لِلْإِسْلَامِ أَنْ لَا تَنْزِعَهُ مِنِّي حَتَّى تَتَوَفَّانِي وَأَنَا مُسْلِمٌ.

[হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} হে আল্লাহ্ আপনি বলেছেন, আমার কাছে চাও, আমি তা কবুল করব। আর আপনি কখনও ওয়াদা খেলাফ করেন না। এখন আপনার নিকটই আমি চাতেছি, আমাকে যেরূপ ইসলামের দিকে হিদায়াত করিয়াছেন উহা আমার নিকট হইতে ছিনিয়ে দিবেন না। আমার মৃত্যু পর্যন্ত আমি মুসলমান হিসেবে আপনার অনুগত বান্দা হয়েই যেন থাকি।

সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৪২সায়ী সম্পর্কে বিবিধ হাদীস

৮২৪

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর পিতা হইতে বর্ণনা করেন তিনি বলেছেন, আমি উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাদি.]-কে বললাম [তখন আমি অল্প বয়ষ্ক], দেখুন, আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করিয়াছেন {১} إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ সুতরাং যে কেউ বায়তুল্লাহ্‌র হজ্জ বা উমরা করিবে তার জন্য এই দুটির মধ্যে সায়ী করায় কোন গুনাহ্ নেই তাই কেউ যদি সায়ী না করে তবে তাতে তার গুনাহ হইবে কি ? তিনি বলিলেন, সাবধান, তুমি যা বুঝেছ তা ঠিক নয়। তাই যদি হত তবে আয়াতে বলার ভঙ্গী হত এই দুইয়ের মধ্যে সায়ী না করায় কোন গুনাহ্ নেই। [অথচ আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন, সায়ী করায় কোন গুনাহ্ নেই।] এই আয়াতটি মূলত আনসারদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছিল। এরা জাহিলী যুগে মানাতের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ্জের নিয়তে আসত। মক্কার পথে কুদায়দ নামক স্থানের বিপরীতে ছিল ওদের দেবী মানাত। সাফা-মারওয়ায় সায়ী করা তারা মনে করত গুনাহ্র কাজ। ইসলাম আসার পর তারা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট এই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তখন নাযিল হয় এই আয়াত

إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوْ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا {২}

[বুখারি ১৭৯০, মুসলিম ১২৭৭]

{১} নিশ্চয়ই সাফা মারওয়া আল্ল্হা তাআলার বিশেষ নিদর্শনসমূহের অন্যতম।

{২} সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। সুতরাং যে কেউ কাবাগৃহের হজ্জ কিংবা উমরা করিতে চাইলে এই দুটির মধ্যে তাওয়াফ করলে কোন পাপ নেই। [সূরা: আল-বাকারাহ, ১৫৮]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮২৫

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] বর্ণনা করেন আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-এর কন্যা সাওদা [রাহিমাহুল্লাহ] ছিলেন উরওয়াহ্ ইবনি যুবায়র [রাহিমাহুল্লাহ]-এর স্ত্রী। একবার হজ্জ বা উমরার সময় তিনি সাফা-মারওয়ার সায়ীর জন্য বের হন। তিনি মোটা ধরনের মহিলা ছিলেন। ইশার নামাজ পড়ে মানুষ যখন বের হয়েছিল তখন তিনি হেঁটে হেঁটে হজ্জ অথবা উমরার তাওয়াফ ও সায়ী শুরু করেছিলেন। কিন্তু তখনও সায়ী শেষ হইতে পারেনি, আর এইদিকে ফজরের আযান হয়ে যায়। সায়ী শেষ করিতে তাঁর ইশা হইতে ফজর পর্যন্ত সময় লেগেছিল। উরওয়াহ্ কাউকেও কোন কিছুতে আরোহণ করে সায়ী করিতে দেখলে কঠোরভাবে নিষেধ করিতেন। {১} লোকেরা তাহাকে দেখলে অসুস্থতার বাহানা করত। তিনি পরে আমাদের নিকট আলাপে বলিতেন, এরা [যারা সওয়ার হয়ে সায়ী করে] ক্ষতিগ্রস্থ, তারা স্বীয় উদ্দেশ্য হাসিল করিতে পারেনি। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, উমরা করার সময় সাফা-মারওয়ার সায়ী করিতে যদি ভুলে যায় এবং মক্কা হইতে দূরে চলে যাওয়ার পর এটা স্মরণ হলে তাকে পুনরায় মক্কায় এসে সায়ী করিতে হইবে। আর এর মধ্যে স্ত্রী সহবাস করে থাকলে তবে ফিরে এসে সায়ী করিবে এবং দ্বিতীয়বার উমরা করিবে এবং হাদয়ী কুরবানী দেবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হল সায়ী করার সময় যদি কেউ কারো সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলিতে শুরু করে তবে কেমন হইবে ? তিনি বলিলেন, আমি এটাকে পছন্দ করি না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, কেউ যদি তাওয়াফ করিতে গিয়ে কোন চক্কর ভুলে যায় বা এই সম্পর্কে তার সন্দেহ হয়, পরে সায়ী করার সময় যদি তার উহা খেয়াল হয় তবে সায়ী মওকুফ করে দেবে এবং প্রথমে য়াকীনের উপর ভিত্তি করে তাওয়াফ পুরা করে দুই রাকআত তাওয়াফের নামাজ আদায় করে নূতনভাবে সায়ী করিবে।

{১} পায়ে হেঁটে সায়ী করা আফজল এবং সুন্নত। সায়ী করিতে গিয়ে স্ত্রীর ফজর পর্যন্ত সময় লাগলেও উরওয়াহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] তাহাকে সওয়ার হইতে অনুমতি দেননি।

সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৮২৬

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] বর্ণনা করেন রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সাফা ও মারওয়াতে সায়ী করিতে এলে সাধারণভাবে হাঁটতেন, মধ্যবর্তী নিম্নভূমিতে [বাতনে ওয়াদী] যখন চলতেন তখন ইহা হইতে বের না হওয়া পর্যন্ত দ্রুত চলতেন। [সহীহ, মুসলিম ১২১৮]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, যে ব্যক্তি অজ্ঞতার কারণে তাওয়াফের পূর্বে সায়ী করে ফেলে তবে সে ফিরে এসে তাওয়াফ করার পর পুনরায় সায়ী করিবে। তাওয়াফের কথা ভুলে মক্কা হইতে দূরে চলে গেলে যত দূরেই যাক তাকে ফিরে আসতে হইবে এবং বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার সায়ী করিতে হইবে। আর স্ত্রী সহবাস করে থাকলে তবে ফিরে এসে তাওয়াফ ও সায়ী করিতে হইবে এবং উমরার বাকি কার্যাদি সমাধা করিবে। তার পক্ষে পুনরায় উমরা করা এবং হাদ্‌য়ী কুরবানী করা ওয়াজিব।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৪৩আরাফাত দিবসে রোযা

৮২৭

হারিস তনয়া উম্মুল ফযল [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আরাফাত দিবসে রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] রোযাদার কিনা এই সম্পর্কে কতিপয় সাহাবী আমার কাছে এসে তাঁদের সন্দেহ প্রকাশ করেন। কেউ কেউ বলেছেন, তিনি রোযা রেখেছেন, কেউ কেউ বলিলেন, আজ রোযা রাখেননি। উম্মুল ফযল [রাদি.] তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর খিদমতে একটি দুধভর্তি পেয়ালা পাঠালেন। তিনি তা পান করলেন। তখন তিনি আরাফাতে একটি উটের উপর আসীন ছিলেন। [বুখারি ১৯৮৮, মুসলিম ১১২৩]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮২৮

কাসিম ইবনি মুহাম্মদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাদি.] আরাফাত দিবসে রোযা রাখতেন। কাসিম ইবনি মুহাম্মদ বলেন, আমি তাহাকে [আয়েশা রা.]-কে আরাফাত দিবসে সন্ধ্যায় দেখেছি, ইমামের [আমীরুল মুমিনীন] প্রত্যাবর্তনের পরও তিনি [আয়েশা রা] আপেক্ষা করলেন এবং পরে ভিড় কমে পথ পরিষ্কার হলে পানি এনে ইফতার করলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৪৪মিনার দিবসগুলোর রোযা

৮২৯

সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আইয়্যামে তাশরীকে রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন। {১} [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} কুরবানীর ঈদের পর তিনদিন [১৩ তারিখ পর্যন্ত] হল আইয়্যামে তাশরীক।

সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৮৩০

ইবনি শিহাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

মিনার দিবসগুলোতে আবদুল্লাহ্ ইবনি হুযাফা [রাদি.]-কে রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ঘুরে ফিরে ঘোষণা প্রচার করিতে বলিলেন, খাওয়া, পান করা আর আল্লাহর স্মরণের জন্য এই দিনগুলো। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

সায়ী করার নিয়ম ,মিনা ও আরাফাতের রোজা -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৮৩১

আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] দুইদিন রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন ঈদুল ফিতরের দিন আর ঈদুল আযহার দিন। [সহীহ, মুসলিম ১১৩৮]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৮৩২

আবদুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আমর ইবনি আস [রাদি.]-এর নিকট গেলেন। দেখিতে পেলেন তিনি আহার করিতেছেন, আবদুল্লাহকেও তিনি ডাকলেন। আমি বললাম আমি আজ রোযা আছি। তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যে দিনে রোযা রাখতে নিষেধ করিয়াছেন সে দিনগুলোতে তুমি রোযা রাখলে! পরে তিনি আবদুল্লাহকে রোযা ভেঙে ফেলতে হুকুম করলেন। [সহীহ, আবু দাঊদ ২৪১৮, আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন {সহীহ ও যয়ীফ সুনানে আবু দাঊদ}]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এই দিনগুলো হচ্ছে আইয়্যামে তাশরীক, [যিলহজ্জ মাসের] ১১, ১২ এবং ১৩ তারিখ] যেগুলোতে আমর ইবনি আস [রাদি.] তাঁর পুত্রকে রোযা রাখতে নিষেধ করলেন।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য


by

Tags:

Comments

Leave a Reply