সফর কালীন নামাজের নিয়ম তথা মুসাফিরের নামাজের নিয়ম
সফর কালীন নামাজের নিয়ম তথা মুসাফিরের নামাজের নিয়ম , এই অধ্যায়ে মোট হাদীস ৫২`টি (১১৯৮ – ১২৪৯) >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ৪, অনুচ্ছেদঃ (২৭০-২৮৯)=২০টি, হাদীসঃ (১১৯৮-১২৪৯)=৫২টি
অনুচ্ছেদ-২৭০ মুসাফিরের নামাজ
অনুচ্ছেদ-২৭১ মুসাফির কখন নামাজ ক্বসর করিবে ?
অনুচ্ছেদ- ২৭২ সফরে আযান দেয়া
অনুচ্ছেদ- ২৭৩ মুসাফির ওয়াক্তের ব্যাপারে সন্দিহান অবস্থায় নামাজ আদায় করলে
অনুচ্ছেদ- ২৭৪ দু ওয়াক্তের নামাজ একত্র করা
অনুচ্ছেদ- ২৭৫ সফরকালে নামাজের ক্বিরাআত সংক্ষেপ করা
অনুচ্ছেদ- ২৭৬ সফরে নফল নামাজ আদায়
অনুচ্ছেদ- ২৭৭ বাহনের উপর নাফ্ল ও বিতর নামাজ আদায়
অনুচ্ছেদ-২৭৮ ওযরবশত বাহনের উপর ফার্য নামাজ আদায়
অনুচ্ছেদ- ২৭৯ মুসাফির কখন পূর্ণ নামাজ আদায় করিবে?
অনুচ্ছেদ-২৮০ শত্রুর দেশে অবস্থানকালে নামাজ ক্বসর করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২৮১ সলাতুল খাওফ (ভয়কালীন নামাজ)
অনুচ্ছেদ-২৮২ যিনি বলেন, ইমামের সাথে এক কাতার দাঁড়াবে এবং এক কাতার দাঁড়িয়ে থাকিবে শত্রুর মোকাবিলায়। ঈমাম তার নিকটস্থ কাতারের লোকদের নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করে ঈমাম ততক্ষন দাঁড়িয়ে থাকিবে যতক্ষন না তার সাথে এক রাকআত নামাজ আদাইয়কারীরা নিজস্বভাবে তাহাঁদের দ্বিতীয় রাকআত আদায় করে নেয়। আতঃপর তারা শত্রুর সম্মুখে চলে যাবে এবং দ্বিতীয় দল আসবে। ঈমাম তাহাঁদেরক নিয়ে এক রাকআত আদায় করবেন। অতঃপর তিনি ততক্ষন বসে থাকিবেন যতক্ষন এরা নিজস্বভাবে নিজ নিজ দ্বিতীয় রাকআত পূর্ণ করে নেয়। অতঃপর ঈমাম সকলকে নিয়ে একত্রে সালাম ফিরাবে।
অনুচ্ছেদ-২৮৩ যিনি বলেন, যখন ঈমাম এক রাকআত আদায় করে দাঁড়িয়ে থাকিবেন, তখন লোকজন নিজেদের অবশিষ্ট এক রাকআত পূরণ করে সালাম ফিরিয়ে শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়াবে। এতে সালাম হইবে পৃথক পৃথক।
অনুচ্ছেদ-২৮৪ যিনি বলেন, সকলেই একত্রে তাকবীর বলবে, যদিও তারা ক্বিবলাহর বিপরীত দিকে মুখ করে থাকে। ঈমাম তাহাঁর কাছের লোকদের নিয়ে এক রাকআত আদায় করবেন। এরপর এরা তাহাঁদের সাথীদের সারীতে এসে দাঁড়াবে এবং ঐ দলটি এসে নিজস্বভাবে এক রাকআত আদায় করিবে। ঈমাম এদেরকে নিয়ে আরো এক রাকআত আদায় করবেন। অতঃপর শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়িয়ে থাকা দলটি সামনে এগিয়ে এসে নিজস্বভাবে তাহাঁদের এক রাকআত আদায় করে নিবে। সবার নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত ঈমাম যথারীতি বসেই থাকিবেন এবং পরে সবাইকে নিয়ে একত্রে সালাম ফিরাবেন।
অনুচ্ছেদ-২৮৫ যিনি বলেন, ঈমাম প্রত্যেক দলের সাথে এক রাকআত করে আদায় করবেন, এরপর সালাম ফিরাবেন। অতঃপর প্রত্যেক দল দাঁড়িয়ে নিজস্বভাবে অবশিষ্ট এক রাকআত নামাজ আদায় করবেন।
অনুচ্ছেদ- ২৮৬ যিনি বলেন, ঈমাম প্রত্যেক দলের সাথে এক রাকআত করে নামাজ আদায় করে সালাম ফিরাবেন। অতঃপর তার পিছনের দলটি দাঁড়িয়ে (ইমামের সাথে) এক রাকআত নামাজ আদায় করিবে। এরপর পরবর্তী দল তাহাঁদের স্থানে এসে দাঁড়িয়ে (ইমামের সাথে) এক রাকআত আদায় করিবে।
অনুচ্ছেদ-২৮৭ যিনি বলেন, প্রত্যেক দল কেবল এক রাকআত আদায় করিবে, পুরো নামাজ নয়।
অনুচ্ছেদ-২৮৮ যিনি বলেন , ঈমাম প্রত্যেক দলের সাথে দু রাকআত করে নামাজ আদায় করবেন।
অনুচ্ছেদ-২৮৯ (শত্রুকে হত্যার জন্য ) অনুসন্ধানকারীর নামাজ
অনুচ্ছেদ-২৭০ মুসাফিরের নামাজ
১১৯৮ : আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবাসে ও সফরে নামাজ দুই দুই রাকআত করে ফরয করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সফরের নামাজ ঠিক রাখা হয় এবং আবাসের নামাজ বৃদ্ধি করা হয়।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১১৯৯ : ইয়ালা ইবনি উমাইয়্যাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমার উবনুল খাত্তাব (রাঃআঃ)- কে জিজ্ঞেস করলাম, আজকাল লোকেরা যে নামাজ ক্বসর করে এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি? কেননা মহাপরাক্রশালী আল্লাহ বলেছেন,
إِنْ خِفْتُمْ أَنْ يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا
“যদি তোমরা কাফিরদের হামলার আশংকা করো তাহলে নামাজ ক্বসর হিসেবে আদায় করতে পারো ” (৪ ঃ ১০১)। কিন্তু বর্তমানে আশংকা দূরীভূত হয়ে গেছে। উমার (রাঃআঃ) বলিলেন, তুমি যে ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করছো, আমিও তাতে আশ্চর্যবোধ করেছিলাম। অতঃপর আমি এ বিষয়ে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছেনঃ এটি একটি সদাক্বাহ, যা মহান আল্লাহ তোমাদেরকে দান করিয়াছেন। সুতরাং তোমরা তাহাঁর অনুদান গ্রহণ করো।
সহীহঃ মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২০০ : বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ
এ সানাদেও পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-২৭১ মুসাফির কখন নামাজ ক্বসর করিবে ?
১২০১ : ইয়াহইয়া ইবনি ইয়াযীদ আল-হুনায়ী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ)-কে নামাজ ক্বসর করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তিন মাইল বা তিন ফার্সাখ্ দূরত্বের সফর বের হলে দু রাকআত নামাজ আদায় করতেন।
সহীহঃ মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২০২ : আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে মদিনায় যুহরের নামাজ চার রাকআত এবং যুল-হুলায়ফাতে আসরের নামাজ দু রাকআত আদায় করেছি।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৭২ সফরে আযান দেয়া
১২০৩ : উক্ববাহ ইবনি আমির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিয়াছি, যখন কোন বকরীর রাখাল পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থানকালে আযান দিয়ে নামাজ আদায় করে তখন মহান আল্লাহ তাহাঁর উপর সন্তুষ্ট হয়ে বলেনঃ (হে মালায়িকাহ)! তোমরা আমার বান্দার দিকে তাকিয়ে দেখো, সে আযান দিয়ে নামাজ আদায় করছে। সে তো আমাকে ভয় করার কারণেই এরূপ করছে। কাজেই আমি আমার এ বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৭৩ মুসাফির ওয়াক্তের ব্যাপারে সন্দিহান অবস্থায় নামাজ আদায় করলে
১২০৪ : আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে সফরে থাকাবস্থায় বলাবলি করতাম যে, সূর্য কি পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়েছে কিনা? অথচ ঐ সময় তিনি নামাজ আদায় করতেন। অতঃপর সেখান থেকে রওয়ানা করতেন।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২০৫ : আমি আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কোন স্থানে (যুহরের সময়) যাত্রাবিরতী করলে যুহর নামাজ আদায় না করা পর্যন্ত সেখান থেকে পুনরায় রওয়ানা করতেন না। এক ব্যক্তি আনাস (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করলো, তখন যদি ঠিক দুপুর হয় তবুও? তিনি বলিলেন, হাঁ, ঠিক দুপুর হলেও।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৭৪ দু ওয়াক্তের নামাজ একত্র করা
১২০৬ : আবুত-তুফাইল আমির ইবনি ওয়াসিলাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
মুআয ইবনি জাবাল (রাঃআঃ) তাহাঁদেরকে অবহিত করেন যে, তাবুক যুদ্ধে তারা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে বের হন। তখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যুহর ও আসর নামাজ একত্রে এবং মাগরিব ও ইশা নামাজ একত্রে আদায় করেন। এদিন তিনি নামাজ বিলম্বে আদায় করেন । (যুহর বিলম্ব করে) যুহর ও আসর একত্রে আদায় করেন। অতঃপর তিনি আবার (তাঁবুতে) প্রবেশ করেন। তারপর বেরিয়ে মাগরিব ও ইশার নামাজ একত্রে আদায় করেন।
সহীহঃ মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২০৭ : নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
ইবনি উমার (রাঃআঃ) মাক্কাহইতে অবস্থানকালে তাহাঁর নিকট স্বীয় স্ত্রী সাফিয়্যাহর (রাঃআঃ) মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছলে তিনি (মাদীনাহয়) রওয়ানা হলেন। পথিমধ্যে সূর্য অস্ত গিয়ে নক্ষত্রও প্রকাশিত হলো (অথচ তিনি মাগরিবের নামাজ আদায় করিলেন না)। অতঃপর তিনি বলেন, কোন সফরে দ্রুত যাওয়ার প্রয়োজন হলে নাবী (সাঃআঃ) এ দু ওয়াক্তের নামাজ (মাগরিব ওইশা) একত্র করতেন। এ বলে তিনি তার সফর অব্যাহত রাখলেন। ইতিমধ্যে পশ্চিমাকাশের লালিমা দূরীভূত হলো। তারপর তিনি (বাহন থেকে) নামলেন এবং উভয় নামাজ একত্রে আদায় করিলেন।
সহীহঃ বোখারি, মুসলিম তার সূত্রে মারফুভাবে। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২০৮ : মুআয ইবনি জাবাল (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাবুকের যুদ্ধে ছিলেন। (সাধারণত সফরকালে) যদি সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলার পর তিনি কোথাও রওয়ানা হইতেন, তখন তিনি যুহর ওআসরের নামাজ একত্রে আদায় করতেন এবং সূর্য ঢলার পূর্বে রওয়ানা হলে তিনি যুহরকে বিলম্বে আদায় করতেন আরআসরকে প্রথম ওয়াক্তে পড়ে নিতেন। তিনি মাগরিবেও অনুরূপ করতেন। অর্থাৎ রওয়ানা হবার পূর্বে সূর্য ডুবে গেলে মাগরিব ওইশা একত্র আদায় করতেন। আর সূর্য ডুবার পূর্বে রওয়ানা হলে মাগরিবকে বিলম্ব করেইশার সাথে একত্রে আদায় করতেন।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২০৯ : ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সফরকালে কেবলমাত্র একবারই মাগরিব ওইশার নামাজকে একত্র করিয়াছেন (একাধিকবার নয়)। {১২১২}
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ হাদিস আইয়ূব হইতে তিনি নাফি হইতে ইবনি উমার (রাঃআঃ) সূত্রেমওকুফ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ যেদিন (তার স্ত্রী) সাফিয়্যাহর মৃত্যু সংবাদে ইবনি উমার (রাঃআঃ) মাদীনাহ্র উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন শুধুমাত্র ঐ রাতেই নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনি উমারকে দু নামাজকে একত্র করতে দেখেন, এছাড়া অন্য সময় নয়। অপরদিকে মাকহুল নাফি হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি ইবনি উমার (রাঃআঃ)-কে একবার কিংবা দুবার এরূপ করতে দেখেছেন। {১২১২} এর সানাদ দূর্বল। সানাদেআব্দুল্লাহ্ ইবনি নাফি দূর্বল। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার
১২১০ : আবদুল্লা ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) শত্রুর ভয় ও সফর ছাড়াই যুহর ওআসরকে একত্রে এবং মাগরিব ওইশাকে একত্র করিয়াছেন। ঈমাম মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সম্ভবতঃ বৃষ্টির কারণেই এমনটি করিয়াছেন। কিন্তু কুররাহ ইবনি খালিদ হইতে আবু যুবাইর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর বর্ণনায় রহিয়াছে,আমরা তাবুক যুদ্ধের সফরে ছিলাম ।
সহীহঃ মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২১১ : ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) শত্রুর ভয় ও বৃষ্টির কারণ ছাড়াই মাদীনাহ্তে যুহর ওআসর এবং মাগরিব ওইশার নামাজ একত্রে আদায় করিয়াছেন। ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ)-কে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তাহাঁর উম্মাত যেন কোন অসুবিধায় না পড়ে সেজন্যেই তিনি এরূপ করেন।
সহীহঃ মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২১২ : আব্দুল্লাহ্ ইবনি ওয়াক্বিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
একদা ইবনি উমার (রাঃআঃ) এর মুয়াযযিনআস-নামাজ বললে তিনি বলেন, চলো, এগিয়ে চলো! ইতিমধ্যে লালিমা দূরীভূত হবার সময় হলে তিনি (বাহন থেকে) নেমে মাগরিবের নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে লালিমা দূরীভূত হবার পরইশার নামাজ আদায় করিলেন। এরপর তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কোন সফরে দ্রুত যাওয়ার প্রয়োজন হলে এরূপ করতেন, যেরূপ আমি করলাম। অতঃপর তিনি সেই দিন ও রাতের সফরে তিন দিনের পথ অতিক্রম করেন।
সহীহঃ কিন্তু তার বক্তব্যঃ (লালিমা দূরীভূত হওয়ার সময়) কথাটি শায। মাহফুয হচ্ছেঃ (লালিমা দূরীভূত হওয়ার পর)। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২১৩ : নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন লালিমা দূরীভূত হবার সময় হলো, তখন তিনি (বাহন থেকে) নেমে উভয় নামাজকে (মাগরিব ওইশা) একত্রে আদায় করিলেন।
সহিহ। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২১৪ : ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাদীনাহ্তে আমাদেরকে নিয়ে আট রাকআত (অর্থাৎ যুহরের চার ওআসরের চার) এবং সাত রাকআত (মাগরিবের তিন ওইশার চার) নামাজ আদায় করিয়াছেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, বর্ণনাকারী সুলায়মান ও মুসাদ্দাদ তাঁদের বর্ণনায়আমাদেরকে নিয়ে কথাটি বলেননি। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাওয়ামাহর মুক্তদাস সলিহ ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, সেদিন বৃষ্টি না হওয়া সত্ত্বেও নামাজ একত্র করিয়াছেন। সহিহ। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২১৫ : জাবির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাক্কাহইতে অবস্থানকালে সূর্য ডুবে গেলেসারিফ নামক স্থানে উভয় নামাজকে (মাগরিব ওইশা) একত্রে আদায় করিয়াছেন। {১২১৮}
{১২১৮} নাসায়ী (অধ্যায়ঃ ওয়াক্তসমূহ, অনুঃ মাগরিব ওইশার নামাজ মুসাফির কখন একত্র করিবে, হাঃ ৫৯২), আহমাদ (৩/৩০৫)। এর সানাদ দুর্বল। সানাদে আবু যুবাইর হচ্ছে মুহাম্মাদ ইবনি মুসলিম। তিনি একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন্ আন্ শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২১৬ : হিশাম ইবনি সাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাক্কাহ ও সারিফ এর মধ্যকার দশ মাইলের ব্যবধান। {১২১৯}
{১২১৯} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। এর সানাদ মাক্বতূ । সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ মাক্বতু
১২১৭ : আবদুল্লা ইবনি দীনার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
একদা সূর্য ডুবলো আর আমি তখনআবদুল্লা ইবনি উমার (রাঃআঃ)-এর সাথে ছিলাম। আমরা (তখনও) পথ চলতে থাকলাম। যখন আমরা দেখলাম যে, সন্ধ্যা হয়ে গেছে তখন বললাম, আস-নামাজ। কিন্তু, তিনি পথ অতিক্রম করতেই থাকলেন। এমনকি লালিমা দূরীভূত হয়ে গেলো এবং নক্ষত্ররাজিও উদিত হলো। অতঃপর তিনি বাহন থেকে নামলেন দু ওয়াক্তের নামাজ একত্রে আদায় করিলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে দেখেছি, কোন সফরে তাহাঁর দ্রুত যাওয়ার প্রয়োজন হলে তিনি এ নামাজকে এরূপে আদায় করিয়াছেন। তিনি বলিতেন, এই দুই নামাজকে রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হবার পর একত্র করা যায়। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইবনি উমার (রাঃআঃ) লালিমা দূরীভূত হবার পরই দু নামাজকে একত্র করিয়াছেন।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২১৮ : আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সূর্য ঢলার পূর্বে রওয়ানা হলে যুহর নামাজকেআসর পর্যন্ত বিলম্ব করতেন, অতঃপর বাহন থেকে নেমে উভয় নামাজকে একত্রে আদায় করতেন। অবশ্য তাহাঁর রওয়ানা হবার পূর্বে সূর্য ঢলে গেলে তিনি যুহর নামাজ আদায় করার পর সওয়ার হইতেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, মুফাদ্দাল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) মিসরের বিচারপতি ছিলেন এবং তাহাঁর দুআ কবুল হতো। আর তিনি ছিলেন ফাদালাহ (রাঃআঃ)-এর পুত্র। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২১৯ : উক্বায়িল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
উক্বায়িল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে উক্ত সানাদে এ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, তিনি লালিমা দূরীভূত হবার পর মাগরিবকে পিছিয়ে নিয়ে মাগরিব ওইশা একত্রে আদায় করতেন।
সহীহঃ মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২২০ : মুআয ইবনি জাবাল (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) তাবুকের অভিযানে সূর্য হেলে পড়ার পূর্বে রওয়ানা হলে যুহরকে বিলম্বিত করেআসরের সাথে মিলিয়ে উভয়টি একত্রে আদায় করতেন। আর সূর্য ঢলার পর রওয়ানা হলে যুহর ওআসর একত্রে আদায়ের পর রওয়ানা হইতেন। আর তিনি মাগরিবের পূর্বে রওয়ানা হলে মাগরিবকে বিলম্বিত করে তাইশার সাথে আদায় করতেন এবং মাগরিবের পরে রওয়ানা হলেইশাকে এগিয়ে নিয়ে তা মাগরিবের সাথে আদায় করতেন। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ হাদিস এককভাবে কুতাইবাহ ব্যতীত অন্য কেউ বর্ণনা করেননি।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৭৫ সফরকালে নামাজের ক্বিরাআত সংক্ষেপ করা
১২২১ : আল-বারাআ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে সফরে বের হলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে শেষইশার নামাজটি আদায় করিলেন এবং দুরাকআতের এক রাকআতে সূরাহওয়াত্তীন ওয়ায্যায়তুন পাঠ করিলেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৭৬ সফরে নফল নামাজ আদায়
১২২২ : আল-বারাআ ইবনিআযিব আল-আনসারী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আঠারটি সফরে রসূলুল্লাহর (সাল্লালাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরসঙ্গী ছিলাম। আমি কখনো তাঁকে সূর্য হেলে যাবার পর যুহরের পূর্বে দু রাকআত নামাজ বর্জন করতে দেখিনি। {১২২৫}
{১২২৫} এর সানাদ দুর্বল। তিরমিযী (অধ্যায়ঃ নামাজ, অনুঃ সফরে নফল নামাজ, হাঃ ৫৫০, ঈমাম তিরমিযী বলেন, বারা বর্ণিত হাদিসটি গরীব, এতে বুসরাহ আল-গিফারী রহিয়াছে। হাফিযআত-তাক্বরীব গ্রন্থে বলেনঃ তিনি মাক্ববূল। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২২৩ : ঈসা ইবনি হাফ্স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতার সূত্রে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক পথে ইবনিউমারের (রাঃআঃ) সাথে ছিলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে দু রাকআত নামাজ আদায় করেন। অতঃপর মুখ ফিরিয়ে কিছু লোককে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে জিজ্ঞেস করেন, এরা কি করছে? আমি বললাম, নফল নামাজ আদায় করছে। তিনি বলিলেন, (সফরে) নফল নামাজ আদায় প্রয়োজন মনে করলে আমি (ফরয) নামাজ পুরো (চার রাকআতই) আদায় করতাম। হে ভাতিজা! আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে সফর করেছি। তিনি মহা মহীয়ান আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত দু রাকআতের বেশি আদায় করেন নি। আর আমি আবু বকর (রাঃআঃ) এর সফরসঙ্গী হয়েছি। তিনিও মহা মহীয়ান আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত দু রাকআতের অধিক আদায় করেননি। আমিউমার (রাঃআঃ) এর সফরসঙ্গী হয়েছি। তিনিও মহামহিম আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত দু রাকআতের অধিক আদায় করেননি। পরে আমিউসমান (রাঃআঃ) এর সফরসঙ্গী হয়েছি। তিনিও মহা মহীয়ান আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত দু রাকআতের অধিক আদায় করেননি। কেননা মহা মহীয়ান আল্লাহ বলেছেন, “তোমাদের জন্য রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম আদর্শ নিহিত আছে” (সূরাহ আল-আহ্যাবঃ ২১)।
সহীহঃ মুসলিম। বোখারি সংক্ষেপ। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৭৭ বাহনের উপর নাফ্ল ও বিতর নামাজ আদায়
১২২৪ : সালিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতার সূত্রে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জন্তুযানে আরোহিত অবস্থায় যেকোন দিকে মুখ করে নফল নামাজ আদায় করতেন। তিনি বাহনের উপর বিতর নামাজও আদায় করতেন, অবশ্য ফরয নামাজ আদায় করতেন না।
সহীহঃ মুসলিম। বোখারি তালীক্বভাবে। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২২৫ : আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সফরে নফল নামাজ আদায়ের ইচ্ছা করলে স্বীয় উষ্ট্রীকে কেবলামুখী করে নিয়ে তাকবীর বলিতেন। অতঃপর সওয়ারীর মুখ যেদিকেই হত সেদিকে ফিরেই নামাজ আদায় করতেন। {১২২৮}
{১২২৮} বায়হাক্বীসুনানুল কুবরা (২/৫), দারাকুতনী (অনুঃ ক্বিবলাহমুখী হয়ে নফল নামাজ আদায়রে নিয়ম, (১/৩৯৬৫) রিবঈ ইবনিআবদুল্লা হইতে। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২২৬ : আবদুল্লা ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে গাধার পিঠে নামাজ আদায় করতে দেখেছি। এ সময় গাধার মুখ খায়বারের দিকে ছিলো (অর্থাৎ ক্বিবলাহ্র বিপরীতে)।
সহিহঃ মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২২৭ : জাবির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে কোন কাজে পাঠালেন। আমি ফিরে এসে দেখি, তিনি সওয়ারীর উপর পূর্ব দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করছেন এবং তাহাঁর রুকূর চেয়ে সাজদাহ্তে (মাথা) অধিক নত ছিল।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৭৮ ওযরবশত বাহনের উপর ফার্য নামাজ আদায়
১২২৮ : আত্বা ইবনি আবু রাবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনিআয়েশা (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করিলেন, নারীদের কি জন্তুর উপর নামাজ আদায়ের অনুমতি রহিয়াছে? তিনি বলিলেন, সুবিধা কিংবা অসুবিধা কোন অবস্থাতেই তাহাঁদের জন্য এর অনুমতি নেই। মুহাম্মাদ ইবনি শুআইব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ বিধান ফরয নামাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৭৯ মুসাফির কখন পূর্ণ নামাজ আদায় করিবে?
১২২৯ : ইমরান ইবনি হুসাইন (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি এবং মাক্কাহ বিজয়ের দিনেও তাহাঁর সাথে ছিলাম। তিনি মাক্কাহইতে আঠার দিন অবস্থান করেন। এ সময় তিনি (ফরয) নামাজ দু রাক্আত আদায় করেন এবং বলেনঃ হে শহরবাসী! তোমরা চার রাকআত নামাজ আদায় করিবে। কেননা আমরা মুসাফির সম্প্রদায় (তাই চার রাকআতের স্থলে দু রাকআত আদায় করেছি)। {১২৩২}
{১২৩২} তিরমিযী (অধ্যায়ঃ নামাজ, অনুঃ নামাজ ক্বাসর করা, হাঃ ৫৪৫), আহমাদ (৪/৪৩০), ইবনি খুযাইমাহ (হাঃ ১৬৪৩) সকলেআলী ইবনি ইয়াযীদ ইবনি জাদআন হইতে। এর সানাদ দুর্বল। সানাদেআলী ইবনি ইয়াযীদ ইবনি জাদআন দুর্বল। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২৩০ : ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মক্কাতে সতের দিন অবস্থানকালে নামাজকে ক্বসর করিয়াছেন। ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) বলেন, কোন ব্যাক্তি কোথাও সতের দিন অবস্থান করলে তাকে নামাজ ক্বসর করতে হইবে। এর চেয়ে বেশি দিন অবস্থান করলে, সে নামাজ পুরো আদায় করিবে।
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) সূত্রে অন্য বর্ণনায় রহিয়াছে, তিনি (সাঃআঃ) ঊনিশ দিন অবস্থান করিয়াছেন।
সহীহঃ বোখারি এ শব্দেঃ (ঊনিশ দিন…) আর এটাই সুরক্ষিত। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৩১ : ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাক্কাহ বিজয়ের বছরে সেখানে পনের দিন অবস্থান করেন এবং এ সময় তিনি নামাজ ক্বসর করেন। {১২৩৪}
দুর্বল মুনকার। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হাদিসটি ইবনি ইসহাক্ব সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে, তাতে বর্ণনাকারীগণ ইবনিআব্বাসের নাম উল্লেখ করেননি। {১২৩৪} নাসায়ী (অধ্যায়ঃ নামাজ ক্বাসর করা, হাঃ ১৪৫২), ইবনি মাজাহ (নামাজ ক্বায়িম, অনুঃ মুসাফির কোন জনবসতিতে অবস্থান করলে কতদিন নামাজ ক্বাসর করিবে, হাঃ ১০৭৬) সকলে ইবনি ইসহাক্ব হইতে। এর সানাদ দুর্বল। সানাদে ইবনি ইসহাক্ব একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন্ আন্ শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল মুনকার
১২৩২ : ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাক্কাহইতে সতের দিন অবস্থানকালে (ফরয নামাজ চার রাকাআতের স্থলে) দু রাকাআত করে নামাজ আদায় করেন। {১২৩৫}
দুর্বল মুনকার। সহিহ হচ্ছে ঊনিশ দিন। {১২৩৫} এর সানাদ দূর্বল। সানাদেআবদুল্লা ইবনি শারীকের স্মরণশক্তি খারাপ, যেমনআত-তাক্বরীব গ্রন্থে রহিয়াছে। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল মুনকার
১২৩৩ : আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সঙ্গে মাদীনাহ হইতে মাক্কাহইতে রওয়ানা হলাম। আমরা মাদীনাহইতে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত তিনি দু রাকআত করে নামাজ আদায় করেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কি সেখানে কিছু কাল অবস্থান করেন? তিনি বলিলেন, আমরা দশদিন অবস্থান করেছিলাম।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৩৪ : আবদুল্লা ইবনি মুহাম্মদ ইবনি উমার ইবনিআলী ইবনি আবু ত্বালিব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতা ও তার দাদার সূত্র হইতে বর্ণিতঃ
আলী (রাঃআঃ) সফরকালে সূর্যাস্তের পরও চলা অব্যাহত রাখতেন। অবশেষে অন্ধকার ঘনিয়ে এলে বাহন থেকে নেমে মাগরিবের নামাজ আদায় করতেন। তারপর রাতের খাবার চেয়ে নিয়ে তা খাওয়ার পরইশার নামাজ আদায় করতেন। অতঃপর আবার রওয়ানা দিতেন এবং বলিতেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এরূপ করতেন।আবদুল্লা ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি উমার ইবনিআলীর সূত্রেউসমান বলেন, আমি আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে বলিতে শুনিয়াছি, উসামাহ ইবনি যায়িদ, হাফ্স ইবনিউবায়দুল্লাহ অর্থাৎ আনাস ইব্ন মালিকের পুত্র হইতে বর্ণনা করেন, আনাস (রাঃআঃ) পশ্চিমাকাশের লালিমা দূরীভূত হবার পর উভয় নামাজ একত্রে আদায় করতেন এবং বলিতেন, নাবী (সাঃআঃ) এরূপ করতেন।
সহিহ। যুহরী হইতে আনাস (রাঃআঃ) সূত্রে অনুরূপ মারফূ বর্ণনা রহিয়াছে। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮০ শত্রুর দেশে অবস্থানকালে নামাজ ক্বসর করা সম্পর্কে
১২৩৫ : জাবির ইবনিআবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাবূকে বিশ দিন অবস্থকালে নামাজ ক্বসর করিয়াছেন।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮১ সলাতুল খাওফ (ভয়কালীন নামাজ)
কারো মতে, এ নামাজের পদ্ধতি হচ্ছেঃ ঈমাম সকলকে দুই কাতারে ভাগ করে নামাজ আরম্ভ করবেন। তারপর তিনি সবাইকে নিয়ে তাকবীর বলবেন, অতঃপর রুকূ করবেন। অতঃপর ঈমাম তার নিকটবর্তী কাতারের লোকদের নিয়ে সাজদাহ্ করবেন, তখন দ্বিতীয় কাতারের লোকেরা তাহাঁদেরকে পাহারা দিবে। অতঃপর প্রথম কাতারের লোকেরা উঠে দাঁড়ালে দ্বিতীয় কাতারের লোকেরা সাজদাহ্ করিবে, যারা তাহাঁদের পিছনে ছিল। অতঃপর ইমামের নিকতবর্তী কাতারের লোকেরা পিছনে সরে সেই স্থানে যাবে যেখানে দ্বিতীয় কাতারের লোকেরা দাঁড়িয়েছে। এ সময় পিছনের কাতারের লোকেরা প্রথম কাতারের লোকেরদের স্থানে আসবে। এরপর সকলে একত্রে রুকূ করিবে। অতঃপর ঈমাম তার নিকতবর্তী কাতারের লোকেদের নিয়ে সাজদাহ্ করবেন। তখন অপর দল তাহাঁদেরকে পাহারা দিবে। অতঃপর ঈমাম ও তার নিকটবর্তী কাতার বসলে অন্য কাতার সাজদাহ্ করিবে। অতঃপর সকলে একত্রে বসে একসঙ্গে সালাম ফিরাবে। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,সলাতুল খাওফ এ পদ্ধতিতে আদায় করা সুফয়ান সওরীর অভিমত।
১২৩৬ : আবুআইয়াশ আয-যুরাক্বী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সঙ্গেউসফান নামক স্থানে ছিলাম। তখন খালিদ ইবনিল ওয়ালীদ মুশরিকদের সেনাধিনায়ক ছিলেন। আমরা যুহরের নামাজ আদায় করলে মুশরিকরা পরস্পর বলাবলি করলো, নিশ্চয়ই আমরা ধোঁকার মধ্যে আছি, আমরা তো একটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছি। তাহাঁদের নামাজরত অবস্থায় আক্রমণ করতে পারলে তো (আমাদের নিশ্চিত বিজয়)। এমন সময় যুহর ওআসর নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে নামাজ ক্বসর সম্পর্কিত আয়াত অবতীর্ণ হয়। কাজেইআসরের ওয়াক্ত হলে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কিবলামুখী হয়ে নামাজে দাঁড়ান। তখন মুশরিকরা তাহাঁর সম্মুখে অবস্থান করছিল। (মুসলিমদের) এক জামাআত কাতারবদ্ধভাবে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর পিছনে দাঁড়ালো, এবং তার পিছনে দাঁড়ালো দ্বিতীয় কাতার। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রুকূ করলে তারাও একসাথে রুকূ করলো। অতঃপর তিনি সাজদাহ্ করলে যে কাতার তাহাঁর কাছাকাছি ছিল, তারাও সাজদাহ্ করলো, আর পিছনের কাতার এদেরকে পাহারা দিতে লাগলো। যখন প্রথম কাতার দুটি সাজদাহ্ করে দাঁড়ালো তখন তাহাঁদের পিছনের কাতার লোকেরা সাজদাহ্ করলো। এ পর্যন্ত প্রত্যেক কাতারের লোকদের একটি রুকূ ও দুটি করে সাজদাহ্ পূর্ণ হলো। অতঃপর প্রথম কাতারের লোকেরা দ্বিতীয় কাতারে সরে এলো। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রুকূ করলে সকলে একত্রে রুকূ করলো এবং পিছনের কাতারের লোকেরা তাহাঁদেরকে পাহারা দিল। যখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এবং তাহাঁর কাছাকাছি কাতারের লোকেরা বসলেন, তখন দ্বিতীয় কাতারের লোকেরা সাজদাহ্ করলো। অতঃপর তারা সবাই বসে পড়লো, এরপর তিনি সবাইকে নিয়ে একত্রে সালাম ফিরালেন। এভাবে তিনিউসফান নামক স্থানে নামাজ আদায় করিলেন। আর এটা ছিল বনূ সুলাইম গোত্রের বিরুদ্ধে অভিযানকালে তাহাঁর সলাতুল খাওফ আদায়ের পদ্ধতি।
সহিহ। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আইয়ূব বর্ণনা করেন, হিশাম আবুয যুবাইর হইতে জাবির সূত্রে এরূপ অর্থের হাদিস নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহঃ মুসলিম। অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন দাউদ ইবনি হুসাইন,ইকরিমাহ হইতে ইবনি আব্বাস সূত্রে। হাসান সহিহ। অনুরূপভাবেআবদুল মালিকআত্বা হইতে জাবির সূত্রে। একইভাবে ক্বাতাদাহ, হাসান হইতে হিত্তান সূত্রে আবু মূসার কর্মমূলক বর্ণনা। সহীহঃ মুসলিম। অনুরূপভাবেইকরিমা ইবনি খালিদ বর্ণনা করিয়াছেন মুজাহিদ হইতে নাবী (সাঃআঃ)-এর সূত্রে। আমি এটি পাইনি। একইভাবে হিশাম ইবনিউরওয়াহ তার পিতা হইতে নাবী (সাঃআঃ)-এর সূত্রে। সহিহ মুরসাল। এ নিয়মে সলাতুল খাওফ আদায় করা সুফয়ান সাওরীর অভিমত। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
অনুচ্ছেদ-২৮২ যিনি বলেন, ইমামের সাথে এক কাতার দাঁড়াবে এবং এক কাতার দাঁড়িয়ে থাকিবে শত্রুর মোকাবিলায়। ঈমাম তার নিকটস্থ কাতারের লোকদের নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করে ঈমাম ততক্ষন দাঁড়িয়ে থাকিবে যতক্ষন না তার সাথে এক রাকআত নামাজ আদাইয়কারীরা নিজস্বভাবে তাহাঁদের দ্বিতীয় রাকআত আদায় করে নেয়। আতঃপর তারা শত্রুর সম্মুখে চলে যাবে এবং দ্বিতীয় দল আসবে। ঈমাম তাহাঁদেরক নিয়ে এক রাকআত আদায় করবেন। অতঃপর তিনি ততক্ষন বসে থাকিবেন যতক্ষন এরা নিজস্বভাবে নিজ নিজ দ্বিতীয় রাকআত পূর্ণ করে নেয়। অতঃপর ঈমাম সকলকে নিয়ে একত্রে সালাম ফিরাবে।
১২৩৭ : সাহল ইবনি আবু হাসমাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
একদা নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর সাহাবীদেরকে নিয়ে সলাতুল খাওফ আদায় করেন। তিনি তাহাঁর পিছনে সাহাবীদেরকে দুই কাতারে দাঁড় করান। অতঃপর তাহাঁর কাছাকাছি কাতারের লোকদের নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করেন। অতঃপর তাহাঁর কাছাকাছি কাতারের লোকেরা নিজেরাই বাকী এক রাকআত আদায় করে নেন কিন্তু তিনি যথারীতি দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর যারা পিছনের (দ্বিতীয়) কাতারে ছিল তারা সম্মুখে আসলো এবং যারা সম্মুখে ছিল তারা পিছনে চলে গেল। তারপর নাবী (সাঃআঃ) এদেরকে নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর তিনি (সাঃআঃ) বসে রইলেন আর পিছনের লোকেরা বাকী এক রাকআত পূর্ণ করলো। সবশেষে তিনি সালাম ফিরালেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮৩ যিনি বলেন, যখন ঈমাম এক রাকআত আদায় করে দাঁড়িয়ে থাকিবেন, তখন লোকজন নিজেদের অবশিষ্ট এক রাকআত পূরণ করে সালাম ফিরিয়ে শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়াবে। এতে সালাম হইবে পৃথক পৃথক।
১২৩৮ : সলিহ ইবনি খাওয়াত (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি ঐ ব্যক্তি হইতে বর্ণনা করেন, যিনি যাতুর-রিক্বার অভিযানে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সাথে সলাতুল খাওফ আদায় করিয়াছেন। (তাহাঁদের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি এরূপ ছিল যে), একদল তাহাঁর সাথে কাতারবদ্ধ হলো এবং একদল শত্রুর মোকাবিলায় দাঁড়িয়ে রইল। (প্রথমে) তিনি তাহাঁর নিকটবর্তী সাথীদেরকে নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করে স্থীরভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন। আর লোকেরা বাকী (এক রাকআত নামাজ) নিজেরা আদায় করে দুশমনের মোকাবিলায় চলে গেলেন। অতঃপর (নামাজের জন্য) দ্বিতীয়দলটি তাহাঁর পিছনে এসে দাঁড়ালে তিনি তাহাঁদেরকে নিয়ে তাহাঁর অবশিষ্ট এক রাকআত আদায় করে বসে রইলেন। তখন তারা তাহাঁদের দ্বিতীয় রাকআত নিজেরাই আদায় করে নিলেন। অতঃপর তিনি তাহাঁদেরকে নিয়ে সালাম ফিরালেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ঈমাম মালিক (রঃ) বলেন, “সলাতুল খাওফ” আদায় সম্পর্কে যে কয়টি পদ্ধতির কথা বর্ণিত আছে এবং আমি শুনিয়াছি, তার মধ্যে ইয়াযীদ ইবনি রূমানের এ হাদিসটি আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৩৯ : সালিহ ইবনি খাওয়াত আল-আনসারী (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তার কাছে সাহল ইবনি আবু হাসমাহ আল-আনসারী (রাঃআঃ) বর্ণনা করেন যে, সলাতুল খাওফে ঈমাম দাঁড়াবে এবং তাহাঁর সাথে দাঁড়াবে সঙ্গীদের একাংশ এবং আরেক অংশ শত্রুর মোকাবিলায় নিয়োজিত থাকিবে। ঈমাম তাহাঁর নিকটবর্তী সাথীদের নিয়ে এক রাকআত নামাজ রুকূ ও সাজদাহ সহ আদায় করে স্থীরভাবে দাঁড়িয়ে থাকিবেন। এ সময় সাথীরা নিজ নিজ অবশিষ্ট এক রাকআত পূরণ করে নিবে এবং ইমামের দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়ই তারা সালাম ফিরিয়ে শত্রুর মুকাবিলায় চলে যাবে। অতঃপর সাথীদের দ্বিতীয় অংশ যারা নামাজ আদায় করেনি তারা সম্মুখে এগিয়ে এসে তাকবীর বলে ইমামের পিছনে দাঁড়াবে। তাহাঁদেরকে নিয়ে ঈমাম রুকু ও সাজদাহ করে সালাম ফিরাবেন, কিন্তু লোকেরা দাঁড়িয়ে তাহাঁদের নিজ নিজ বাকী রাকআত পূর্ণ করে সালাম ফিরাবে।
সহীহঃ বোখারি, দুই স্থানে সালাম ফিরানোর কথাটি বাদে। কেননা তা মাওকূফ। আর এর পূর্বেরটি মারফূ। তাতে কেবল দ্বিতীয় দলের সাথে ইমামের সালাম ফিরানোর কথা আছে। এটিই অধিক বিশুদ্ধ। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮৪ যিনি বলেন, সকলেই একত্রে তাকবীর বলবে, যদিও তারা ক্বিবলাহর বিপরীত দিকে মুখ করে থাকে। ঈমাম তাহাঁর কাছের লোকদের নিয়ে এক রাকআত আদায় করবেন। এরপর এরা তাহাঁদের সাথীদের সারীতে এসে দাঁড়াবে এবং ঐ দলটি এসে নিজস্বভাবে এক রাকআত আদায় করিবে। ঈমাম এদেরকে নিয়ে আরো এক রাকআত আদায় করবেন। অতঃপর শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়িয়ে থাকা দলটি সামনে এগিয়ে এসে নিজস্বভাবে তাহাঁদের এক রাকআত আদায় করে নিবে। সবার নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত ঈমাম যথারীতি বসেই থাকিবেন এবং পরে সবাইকে নিয়ে একত্রে সালাম ফিরাবেন।
১২৪০ : মারওয়ান ইবনিল হাকাম হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আবু হুরাইরা (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সলাতুল খাওফ আদায় করিয়াছেন? তিনি বলেন, হাঁ, মারওয়ান জিজ্ঞেস করেন, কখন? আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) বলেন, নাজদ অভিযানের বছর। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আসর নামাজের জন্য দাঁড়ালে এক দল তাহাঁর সাথে দাঁড়ালো। আর অপর দল দাঁড়ালো শত্রুর মুকাবিলায়। এদের পৃষ্ঠ ছিল ক্বিবলাহর দিকে। যারা তাহাঁর সাথে ছিলেন এবং যারা শত্রুর মুকাবিলায় ছিলেন সকলেই একত্রে তাকবীর বলিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর নিকটবর্তী লোকদের নিয়ে রুকূ করিলেন। দ্বিতীয় দলটি শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়িয়ে রইল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) উঠে দাঁড়ালে তার নিকটবর্তী দলটিও উঠে দাঁড়ালো। অতঃপর তারা গিয়ে শত্রুর মুকাবিলায় দন্ডায়মান হলে শত্রুর মুকাবিলায় দন্ডায়মান থাকা দলটি সম্মুখে এগিয়ে এসে রুকূ ও সাজদাহ করলো। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন। অতঃপর তারা (প্রথম রাকআত হইতে) উঠে দাঁড়ালে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) দ্বিতীয় রাকআতের রুকূ করেন এবং তারাও তাহাঁর সাথে রুকূ ও সাজদাহ করলো। অতঃপর শত্রুর মুকাবিলায় দন্ডায়মান দলটি সামনে অগ্রসর হয়ে রুকূ ও সাজদাহ করে এক রাকআত আদায় করলো। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) স্থিরভাবে বসেই রইলেন এবং তারাও তাহাঁর সাথে ছিলো। অতঃপর সালাম ফিরানোর সময় হলে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সালাম ফিরালেন এবং তারা সবাই সালাম ফিরালো। এ সময় রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর নামাজ হলো দু রাকআত। আর উভয় দলের প্রত্যেকের নামাজ হলো (জামআতের সাথে) এক রাকআত।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৪১ : আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে নাজদ অভিযানে বের হই। আমরা যখন যাতুর-রিকা স্থানের নাখল উপত্যকায় পৌঁছি, তখন গাতাফান গোত্রের একদল লোকের সাথে আমাদের যুদ্ধ হয়।
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, অতঃপর বর্ণনাকারী হাদিসের ভাব ও অর্থ বর্ণনা করেন। বর্ণনাকারী হায়ওয়া যে শব্দে এ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন পূর্বোল্লিখিত বর্ণনাকারীর শব্দ এর ব্যতিক্রম। তিনি বলেন, তিনি যখন তাহাঁর সাথীদের নিয়ে রুকূ ও সাজদাহ করেন। অতঃপর বর্ণনাকারী বলেন, তারা সাজদাহ হইতে উঠে দাঁড়িয়ে পিছনের দিকে সরে গিয়ে তাহাঁদের সাথীদের স্থানে দন্ডায়মান হলো। তবে এ হাদীসে ক্বিবলাহর দিক পিছনে থাকার কথা উল্লেখ নেই।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৪২ : আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর তাকবীর বলার সাথে সাথে তাহাঁর নিকটবর্তী কাতারের লোকজন ও তাকবীর বললো। অতঃপর তিনি রুকূ করলে তারাও রুকূ করলো। এরপর তিনি সাজদাহ করলে তারাও সাজদাহ করলো, পরে তিনি মাথা উঠালে তারাও মাথা উঠালো। এরপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) স্থির হয়ে বসে থাকলেন, তবে লোকেরা নিজ নিজ দ্বিতীয় রাকআত আদায় করে নিল। অতঃপর তারা দাঁড়িয়ে পিছনের দিকে সরে গিয়ে দ্বিতীয় দলটির পিছনে অবস্থান করলো। তারপর দ্বিতীয় দলটি সামনে এসে তাকবীর বলে স্ব স্ব নামাজের রুকূ পর্যন্ত শেষ করলো। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সাজদাহ করলে তারাও তাহাঁর সাথে সাজদাহ করলো। এরপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) উঠে দাঁড়ান। আর এ সময় লোকেরা নিজ নিজ দ্বিতীয় রাকআত সমাপ্ত করলো। অতঃপর উভয় দল একত্রে উঠে দাঁড়ালো এবং তারা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সঙ্গে নামাজ আদায় করলো। তারা তাহাঁর (সাঃআঃ) সাথে সাথে রুকূ এবং সাজদাহ আদায় করলো। এরপর তিনি দ্বিতীয় সাজদাহ করলে লোকেরাও তাহাঁর সাথে খুবই তাড়াতাড়ি সাজদাহ করলো। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ও তাহাঁর সাথীরা সালাম ফিরালেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নামাজ শেষে দাঁড়ালেন। এভাবে লোকজন তাহাঁর সাথে পুরো নামাজে অংশগ্রহন করে।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮৫ যিনি বলেন, ঈমাম প্রত্যেক দলের সাথে এক রাকআত করে আদায় করবেন, এরপর সালাম ফিরাবেন। অতঃপর প্রত্যেক দল দাঁড়িয়ে নিজস্বভাবে অবশিষ্ট এক রাকআত নামাজ আদায় করবেন।
১২৪৩ : ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) দু দলের এক দলকে সঙ্গে নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করেন। এ সময় অপর দলটি শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়িয়ে থাকলো। অতঃপর তারা দ্বিতীয় দলের অবস্থানে গিয়ে দাঁড়ালে দ্বিতীয় দলটি (সামনের কাতারে) আসলো। এ সময় তিনি তাহাঁদেরকে নিয়ে তাহাঁর দ্বিতীয় রাকআতটি আদায় করে একাই সালাম ফিরালেন, অতঃপর প্রথম ও দ্বিতীয় উভয় দল দাঁড়িয়ে নিজেরাই নিজ নিজ অবশিষ্ট এক রাকআত নামাজ পূর্ণ করলো।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন নাফি ও খালিদ ইবনি মাদান ইবনি উমার হইতে মারফূভাবে। ইবনি আব্বাস সূত্রে মাসরুক্ব এবং ইউসূফ ইবনি মিহরানের উক্তিও তাই। ইউনূস-হাসান হইতে আবু মূসা (রাঃআঃ) সূত্রেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৮৬ যিনি বলেন, ঈমাম প্রত্যেক দলের সাথে এক রাকআত করে নামাজ আদায় করে সালাম ফিরাবেন। অতঃপর তার পিছনের দলটি দাঁড়িয়ে (ইমামের সাথে) এক রাকআত নামাজ আদায় করিবে। এরপর পরবর্তী দল তাহাঁদের স্থানে এসে দাঁড়িয়ে (ইমামের সাথে) এক রাকআত আদায় করিবে।
১২৪৪ : আবদুল্লা ইবনি মাসউদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে নিয়ে সলাতুল খাওফ আদায় করেন। এ সময় লোকজন দুই কাতারে দাঁড়ালো। এক কাতার রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর পিছনে অবস্থান করলো এবং অপর কাতার শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়ালো। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর নিকটবর্তী সাথীদের নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করিলেন। এরপর অপর কাতারের লোকেরা এসে (প্রথম সারির লোকেদের) স্থানে দাঁড়ালো এবং (প্রথম কাতারের লোকেরা) শত্রুর মুকাবিলায় দাঁড়ালো। নাবী (সাঃআঃ) এদেরকে নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করে একাই সালাম ফিরালেন। এ সময় তারা উঠে দাঁড়িয়ে নিজস্বভাবে এক রাকআত আদায় করে সালাম ফিরিয়ে (শত্রুর মুকাবিলায় অবস্থানকারীদের) স্থানে অবস্থান নিলো এবং তারা এসে নিজস্বভাবে এক রাকআত আদায় করে সালাম ফিরালো।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২৪৫ : খুসাইফ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
খুসাইফ (রাঃআঃ) হইতে এ সানাদে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, অতঃপর নাবী (সাঃআঃ) নামাজের জন্য তাকবীর বললে উভয় দলই তাকবীর বললো। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হাদিসের এরূপ ভাবার্থ ঈমাম সাওরী ও খুসাইফ হইতে বর্ণনা করিয়াছেন এবং আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ (রাঃআঃ) এভাবে নামাজ আদায় করিয়াছেন। তবে উক্ত হাদীসে রহিয়াছে, তিনি যে দলটির সাথে এক রাকআত আদায় করে সালাম ফিরালে তারা তাহাঁদের দ্বিতীয় কাতারের সাথীদের স্থানে চলে যান এবং তারা এসে নিজেরাই নিজ নিজ এক রাকআত নামাজ আদায় করেন। অতঃপর তারা আবার এদের স্থানে প্রত্যাবর্তণ করে নিজস্বভাবে বাকী এক রাকআত আদায় করেন।
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, মুসলিম ইবনি ইবরাহীম হইতে, তিনিআবদুস সমাদ ইবনি হাবীব হইতে বর্ণনা করেন যে, আমার পিতা আমাকে অবহিত করেন যে, তারা আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ (রাঃআঃ) এর সাথে কাবুল (পারস্য) অভিযানে ছিলেন। তখন তিনি আমাদেরকে নিয়ে সলাতুল খাওফ আদায় করিয়াছেন।
দূর্বল। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮৭ যিনি বলেন, প্রত্যেক দল কেবল এক রাকআত আদায় করিবে, পুরো নামাজ নয়।
১২৪৬ : সালাবাহ ইবনি যাহদাম (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সাঈদ ইবনিলআস (রাঃআঃ)-এর সাথে তাবারিস্থান অভিযানে ছিলাম। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করিলেন, আপনাদের মধ্যে এমন কে আছেন, যিনি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সঙ্গে সলাতুল খাওফ আদায় করিয়াছেন? হুযাইফাহ (রাঃআঃ) বলেন, আমি। অতঃপর তিনি এক দলকে নিয়ে এক রাকআত এবং আরেক দলকে নিয়ে এক রাকআত নামাজ আদায় করেন। এ সময়ে তারা (মুক্তাদীরা) অবশিষ্ট (এক রাকআত) নামাজ পূরণ করেনি।
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেনউবায়দুল্লাহ ইবনিআবদুল্লা ও মুজাহিদ- ইবনি আব্বাস হইতে মারফূভাবে এবং আবদুল্লা ইবনি শাক্বীক- আবু হুরাইরা হইতে মারফূভাবে, এবং ইয়াযীদ আল-ফাক্বীর ও তাবিঈ আবু মূসা- জাবির হইতে মারফূভাবে। অনুরূপভাবে সিমাক আল-হানাফি (রঃ) ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে। কতিপয় বর্ণনাকারী ইয়াযীদ ইবনি ফাক্বীরের হাদীসে বলেন, তারা বাকী এক রাকআত পূর্ণ করে নেয়। অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন যায়িদ ইবনি সাবিত (রাঃআঃ) নাবী (সাঃআঃ) হইতে। তিনি বলেন, সকল লোকের জন্য ছিলো এক রাকআত এবং নাবী (সাঃআঃ) এর জন্য ছিল দু রাকআত।
সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৪৭ : ইবনি আব্বাস হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মহা মহীয়ান আল্লাহ তোমাদের নাবী (সাঃআঃ) এর জবানীতে নামাজ ফারয করিয়াছেন, বাসস্থানে থাকাকালে চার রাকআত, সফর অবস্থায় দু রাকআত এবং ভয়-ভীতির সময় (যুদ্ধে) এক রাকআত।
সহীহঃ মুসলিম। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮৮ যিনি বলেন , ঈমাম প্রত্যেক দলের সাথে দু রাকআত করে নামাজ আদায় করবেন।
১২৪৮ : আবু বাকরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) ভয়-ভীতির সময় যুহরের নামাজ আদায় করিয়াছেন। এ সময় লোকজনের কিছু সংখ্যাক তাহাঁর পিছনে কাতারবদ্ধ হয় এবং কিছু সংখ্যক কাতারবদ্ধ হয় শত্রুর মুকাবিলায়। অতঃপর তিনি দু রাকআত নামাজ আদায় করে সালাম ফিরান। তাহাঁর সঙ্গে নামাজ আদায়কারীরা সরে গিয়ে (পিছনের) সঙ্গীদের স্থানে গিয়ে দাঁড়ালো এবং তারা এসে দাঁড়ালো তাহাঁর পিছনে। তিনি তাহাঁদেরকে নিয়ে দু রাকআত নামাজ আদায় করে সালাম ফিরালেন। ফলে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর হলো চার রাকআত এবং তাহাঁর সাহাবীদের হলো দু দু রাকআত। হাসান বাসরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এরুপই ফাতাওয়াহ দিতেন। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এরুপে মাগরিবের নামাজে ইমামের হইবে ছয় রাকআত এবং অন্যদের হইবে তিন তিন রাকআত।
সহিহ। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, অনুরুপ বর্ননা করিয়াছেন ইয়াহইয়া ইবনি আবু কাসীর, আবু সালামাহ হইতে জাবির থেকে মারফুভাবে। অনুরুপ বলেছেন সুলায়মান ইয়াশকুরী, জাবির হইতে মারফূভাবে। সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৮৯ (শত্রুকে হত্যার জন্য ) অনুসন্ধানকারীর নামাজ
১২৪৯ : আবদুল্লা ইবনি উনাইস (রাঃআঃ) হইতে তাহাঁর পিতার সূত্রে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে খালিদ ইবনি সুফয়ান আল-হুযালীকে হত্যা করার জন্য উরানাহ ওআরাফাতের নিকটে পাঠালেন। বর্ননাকারী বলেন, আমি তার সন্ধান পেলামআসর নামাজের ওয়াক্তে। আমি আশংকা করলাম আমার এবং তার মধ্যে যদি এখনই সংর্ঘষ বেঁধে যায় এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে আমার নামাজ বিলম্ব হইবে। কাজেই আমি হাঁটতে থাকলাম এবং তার দিকে মুখ করে ইশারায় নামাজ আদায় করতে থাকলাম। আমি তার নিকটবর্তী হলে সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো , তুমি কে? আমি বললাম , আরবের এক ব্যক্তি। আমার কাছে সংবাদ পৌছেছে যে, তুমি মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) এর বিরুদ্ধে সৈন্য সমাবেশ করছো? সুতরাং আমি এজন্যই তোমার কাছে এসেছি। সে বললো, আমি এরুপই করছি। বর্ননাকারী বলেন, অতঃপর আমি তার সঙ্গে হাঁটতে থাকলাম এবং সুযোগ বুঝে আমার তরবারী দিয়ে তার উপরে আঘাত হানলাম। অবশেষে সে ঠান্ডা হয়ে গেলো ( অর্থ্যাৎ মৃত্যুবরণ করলো)। {১২৫২}
{১২৫২} আহমাদ (৩/৪৯৬), ইবনি হিব্বান (হাঃ ৭১১৬), ইবনি খুযাইমাহ(হাঃ ২/৯৮২), বায়হাক্বীসুনানুল কুবরা (৩/২৫৬), ইবনি হিশামসিরাতুন নাবুবিয়্যাহ (৪/২৪৩) সকলে মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাক্ব হইতে..। এর সানাদ দূর্বল। সানাদে ইবনিআবদুল্লা ইবনি উনাইস অজ্ঞাত (মাজহুল) সফর কালীন নামাজের নিয়ম ও হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply