মেঘ, বৃষ্টি, বিপদগ্রস্থ ও সফর করার দোয়া

মেঘ, বৃষ্টি, বিপদগ্রস্থ ও সফর করার দোয়া

মেঘ, বৃষ্টি, বিপদগ্রস্থ ও সফর করার দোয়া >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

মেঘ, বৃষ্টি, বিপদগ্রস্থ ও সফরে বের হওয়ার দোয়া

১৮. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তাহার ঘর থেকে বের হওয়ার প্রাক্কালে যে দুআ পড়বে
১৯. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তাহার ঘরে প্রবেশের প্রাক্কালে যে দুআ পড়বে
২০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি সফরের প্রাক্কালে যে দুআ পড়বে
২১. অধ্যায়ঃ লোকে মেঘ-বৃষ্টি দেখে যে দুআ পড়বে
২২. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি বিপদগ্রস্থ লোক দেখে যে দুআ পড়বে

১৮. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তাহার ঘর থেকে বের হওয়ার প্রাক্কালে যে দুআ পড়বে

৩৮৮৪ : উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] যখন তাহাঁর ঘর থেকে বের হইতেন তখন বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ أَوْ أَزِلَّ أَوْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ أَوْ أَجْهَلَ أَوْ يُجْهَلَ عَلَىَّ

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা আন আদিল্লা আও আজিল্লা আও আজলিমা আও উজলামা আও আজহালা আও ইউজহালা আলাইয়া, ( “হে আল্লাহ্‌! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে, পদঙ্খলন ঘটা থেকে, অত্যাচার করা থেকে, অত্যাচারিত হওয়া থেকে, অজ্ঞতাসুলভ আচরণ করা থেকে বা আমার প্রতি কারো অজ্ঞতাসুলভ আচরণ থেকে।) {৩২১৬}

{৩২১৬} তিরমিজি ৩৪২৭, নাসাঈ ৫৪৮৬, আবু দাউদ ৫০৫৪, আহমাদ ২৬০৭৬, ২৬১৮৯। আখরীজুল কালিমুত তায়্যিব ৫৯। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮৮৫ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.], হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] যখন তাহাঁর ঘর থেকে বের হইতেন তখন বলিতেনঃ

 بِسْمِ اللَّهِ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ التُّكْلاَنُ عَلَى اللَّهِ

বিসমিল্লাহি লা হাওলা ওয়া লা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিত তুকলানু আলাল্লাহি, আল্লাহ্‌র নামে, আল্লাহ্‌ ছাড়া ক্ষতি রোধ করা বা কল্যাণ হাসিল করার শক্তি কারো নেই। ভরসা আল্লাহ্‌র উপর”। {৩২১৭}

{৩২১৭} হাদিস ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ৪২৪৩। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮৮৬ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যখন কোন লোক তাহার ঘরের বা বাড়ির দরজা দিয়ে বাইরে বের হয়, তখন দুজন ফেরেশতাহাকে তাহার সঙ্গী হিসাবে তাহার জন্য নিযুক্ত করা হয়। অতঃপর যখন সে বিসমিল্লাহ বলে তখন ফেরেশতাদ্বয় বলেন, তোমাকে হেদায়াত দান করা হইয়াছে। যখন সে বলে আল্লাহ্‌ ব্যতীত ক্ষতি রোধ করার বা কল্যাণ লাভ করার শক্তি কারো নাই, তখন ফেরেশতাদ্বয় বলেন, তোমাকে রক্ষা করা হইয়াছে। যখন সে বলে, আমি আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করলাম, তখন তাহারা বলেন, তোমার জন্য [আল্লাহ্‌] যথেষ্ট হইয়াছেন। অতঃপর তাহার সাথে তাহার জন্য নিযুক্ত দু সাথী সাক্ষাত করে। তখন ফেরেশতাদ্বয় বলেন, এমন ব্যক্তির ব্যাপারে তোমরা কী করিতে চাও, যাকে হেদায়াত দান করা হইয়াছে, যাকে রক্ষা করা হইয়াছে এবং যাহার জন্য আল্লাহ্‌ যথেষ্ট হইয়াছেন। {৩২১৮}

{৩২১৮} হাদীসিটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ. হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৯. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তাহার ঘরে প্রবেশের প্রাক্কালে যে দুআ পড়বে

৩৮৮৭ : জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ কোন ব্যক্তি তাহার ঘরে প্রবেশকালে এবং খাবার গ্রহণকালে আল্লাহর নাম স্মরণ করিলে শয়তান [তাহার সংগীদেরকে] বলে, তোমাদের রাত্রিবাস এবং রাতের আহারের কোন ব্যবস্থা হলো না। কিন্তু কোন ব্যক্তি তাহার ঘরে প্রবেশকালে আল্লাহকে স্মরণ না করিলে শয়তান বলে, তোমরা রাত্রিবাসের জায়গা পেয়ে গেলে। সে আহারের সময় আল্লাহকে স্মরণ না করিলে শয়তান বলে, তোমাদের রাতের আহার ও শয্যা গ্রহণের ব্যবস্থা হয়ে গেলো। {৩২১৯}

{৩২১৯} মুসলিম ২০১৮,আবু সাঈদ ৩৭৬৫,আহমাদ ১৪৩১৯,১৪৬৮৮।আত তালীকুর ৩/১১৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি সফরের প্রাক্কালে যে দুআ পড়বে

৩৮৮৮ :আবদুল্লাহ বিন সারজিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে রওয়ানার প্রাক্কালে বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمُنْقَلَبِ وَالْحَوْرِ بَعْدَ الْكَوْرِ وَدَعْوَةِ الْمَظْلُومِ وَسُوءِ الْمَنْظَرِ فِي الأَهْلِ وَالْمَالِ ‏

আলাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন ওয়া’সাইস সাফারি ওয়া কাল-বারিল মুনকলাবি ওয়াল হাওরি বা’দাল কাওরি ওয়া দা’ওয়াতিল মাজলুমি ওয়া সুয়েল মাঞ্জারি ফিল আহলে ওয়াল মালা, (হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট সফরের ব্যর্থতা, প্রাচুর্যের পরে রিক্ততা, নির্যাতিতের বদদোয়া এবং পরিবার-পরিজন ও মাল-সম্পদের প্রতি কুদৃষ্টি থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি )।

আবু মুআবিয়ার বর্ণনায় আরো আছে ঃ তিনি ফিরে এসেও অনূরূপ বলিতেন। {৩২২০}

{৩২২০} মুসলিম ১৩৪৩,তিরমিজি ৩৪৩৯,নাসাঈ ৫৪৯৮,৫৪৯৯,৫৫০০, আহমাদ ২০২৪৭,২০২৫৭ দারেমী ২৬৭২ সহীহ আবু দাঊদ ২৩৩৮। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১. অধ্যায়ঃ লোকে মেঘ-বৃষ্টি দেখে যে দুআ পড়বে

নবী [সাঃআঃ] আকাশের কোন দিক থেকে মেঘ ভেসে আসতে দেখলে তাহাঁর হাতের কাজ ছেড়ে দিতেন, এমনকি নামাযে রত থাকলেও, অতঃপর মেঘমালার দিকে মুখ করে বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا أُرْسِلَ بِهِ

আলাহুম্মা ইন্নি নাউজু বিকা মিন সাররি মা উরসেলা বিহি , ( হে আল্লাহ! এই মেঘমালাকে যে অনিষ্টসহ পাঠানো হইয়াছে তা থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি)।

মেঘমালা বৃষ্টি বর্ষণ করিলে তিনি দুবার বা তিনবার বলিতেনঃ

 اللَّهُمَّ سَيْبًا نَافِعًا

আলাহুম্মা সায়নান নাফিয়ান , (হে আল্লাহ! লাভজনক পর্যাপ্ত বৃষ্টি বর্ষণ করুন)।

মহান আল্লাহ যদি মেঘমালা সরিয়ে নিতেন এবং বৃষ্টি না হতো তবে সেজন্যও তিনি আল্লাহর প্রশংসা করিতেন। {৩২২১}

{৩২২১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩২০৬,৪৮২৯,৬০৯২,মুসলিম ৮৯৯,৩২৫৭,আহমাদ ২৩৮৪৮,২৫৫০৬।সহীহাহ ২৭৫৭। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮৯০ : আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বৃষ্টি হইতে দেখলে বলিতেনঃ

 اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ صَيِّبًا هَنِيئًا

আলাহুম্মাজ আলহু সায়িইবান হানিয়য়ান, (হে আল্লাহ! তুমি একে লাভজনক পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণ বানাও।) {৩২২২}

{৩২২২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩২০৬, ৪৮২৯, ৬০৯২, মুসলিম ৮৯৯, ৩২৫৭, আহমাদ ২৩৮৪৮, ২৫৫০৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮৯১ : আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মেঘমালা দেখলে তাহাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে পরিবর্তিত হয়ে যেতো এবং তিনি ঘরে প্রবেশ করিতেন আবার বেরিয়ে আসতেন, আর সামনে যেতেন এবং পিছনে আসতেন। বৃষ্টি বর্ষণের পর তাহাঁর এ অবস্থা দূরীভূত হতো। অধস্তন রাবী বলেন, আয়েশা [রাদি.] তাহাঁর এরূপ অবস্থা হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করিলে তিনি বলেনঃ তুমি কি জানো, হয়তো তা সেই মেঘই হইবে, যে সম্পর্কে হুদ [আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর জাতি বলেছিলো, “অতঃপর যখন তাহারা তাহাদের উপত্যকার দিকে মেঘ আসতে দেখলো তখন তাহারা বলিতে লাগলো ঃ সেটা তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করিবে।[হুদ [আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ] বরং এটাই তো সেই আযাব যা তোমরা ত্বরান্বিত করিতে চেয়েছো” [সূরা আহকাফ ঃ ২৪]। {৩২২৩}

{৩২২৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩২০৬ ,৪৮২৯,৬০৯২ মুসলিম ৮৯৯,আহমাদ ২৩৯৪৯,২৫৫০৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২২. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি বিপদগ্রস্থ লোক দেখে যে দুআ পড়বে

৩৮৯২ : ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি হঠাৎ কোন বিপদগ্রস্থ ব্যক্তিকে দেখে বলবে,

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي عَافَانِي مِمَّا ابْتَلاَكَ بِهِ وَفَضَّلَنِي عَلَى كَثِيرٍ مِمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيلاً

Uccharon: আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আফানি মিম্মাব তালাকা বিহি ওয়া ফাদ্দালানি আলা কাসির মিম্মান খলাক তাফদিলান, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, তিনি তোমাকে যে বিপদে লিপ্ত করিয়াছেন তা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং তাহাঁর অসংখ্য সৃষ্টির উপর আমাকে মর্যাদা দান করিয়াছেন

তাহলে সে তাহার জীবৎকাল পর্যন্ত উক্ত বিপদ থেকে নিরাপদ থাকিবে। {৩২২৪}

{৩২২৪} তিরমিজি ৩৪৩১।সহীহাহ ৬০২,রাওদুন নাদীর ১০৬১। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “মেঘ, বৃষ্টি, বিপদগ্রস্থ ও সফর করার দোয়া”

Leave a Reply