সফরের সালাত

সফরের সালাত

সফরের সালাত >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৪১

  • অধ্যায়ঃ ৪১. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৪১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ৪১. প্রথম অনুচ্ছেদ

১৩৩৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মাদীনায় যুহরের সলাত চার রাক্আত আদায় করিয়াছেন। তবে যুল হুলায়ফায় আস্‌রের সলাত দুরাক্আত আদায় করিয়াছেন।

[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ১৫৪৭, মুসলিম ৬৯০, নাসায়ী ৪৭৭, আহমাদ ১২৯৩৪, ইবনি হিব্বান ২৭৪৭, ইরওয়া ৫৭০, আবু দাউদ ১২০২। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩৪. হারিসাহ্ ইবনি ওয়াহ্ব আল খুযাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে সাথে নিয়ে মিনায় দুরাক্আত সলাত আদায় করিয়াছেন। এ সময় আমার সংখ্যায় এত বেশী ছিলাম যা এর আগে কখনো ছিলান না এবং নিরাপদ ছিলাম।

[বোখারী, মুসলিম] {১; {১} সহীহ : বোখারী ১৬৫৬, মুসলিম ৬৯৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০২৬. সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩৫. ইয়ালা ইবনি উমাইয়্যাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি উমারের কাছে নিবেদন করলাম, আল্লাহ তাআলার বানী হলো, “তোমরা সলাত কম আদায় করো, অর্থাৎ ক্বস্‌র করো, যদি অমুসলিমরা তোমাদেরকে বিপদে ফেলবে বলে আশংকা করো”-[সূরাহ্‌ আন্‌ নিসা ৪:১০১]। এখন তো লোকেরা নিরাপদ। তাহলে ক্বস্‌রের সলাত আদায়ের প্রয়োজনটা কি? উমার [রাদি.] বললেন, তুমি এ ব্যাপারে যেমন বিস্মিত হচ্ছো, আমিও এরুপ আশ্চর্য হয়েছিলাম। তাই রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে ব্যাপারটি সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি [সাঃআঃ] বললেন, সলাতে ক্বস্‌র করাটা আল্লাহর একটা সদাকাহ বা দান, যা তিনি তোমাদেরকে দান করিয়াছেন। অতএব তোমরা তার এ দান গ্রহণ করো।

[মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ৬৮৬, আবু দাউদ ১১৯৯, আত তিরমিজি ৩০৩৪, নাসায়ী ১৪৩৩, ইবনি মাজাহ ১০৬৫, আহমাদ ১৭৪, দারিমী ১৫৪৬, ইবনি খুযায়মাহ্ ৯৪৫, ইবনি হিব্বান ২৭৩৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫৩৭৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০২৪। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা [বিদায় হাজ্জের সময়] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে মাদীনাহ্ হইতে মাক্কায় গমন করেছিলাম। সেখানে তিনি মাদীনার ফেরত না আসা পর্যন্ত চার রাক্আত ফার্‌য সলাতের স্থলে দুরাক্আত আদায় করিয়াছেন। আনাস [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, আপনারা কি মাক্কায় কয়েক দিন অবস্থান করেছিলেন? জবাবে আনাস বললেন, হ্যাঁ, আমরা মাক্কায় দশদিন অবস্থান করেছিলাম।

[বোখারী, মুসলিম] {১};{১} সহীহ : বোখারী ১০৮১, মুসলিম ৬৯৩, ইবনি খুযায়মাহ্ ২৯৯৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০২৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫৩৮৯। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩৭. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] এক ভ্রমনে গিয়ে ঊনিশ দিন অবস্থান করেন। এ সময় তিনি দুরাক্আত করে ফার্‌য সলাত আদায় করেন। ইবনি আব্বাস বলেন আমরাও মাক্কাহ্ মাদীনার মধ্যে কোথাও গেলে সেখানে উনিশ দিন অবস্থান করলে আমরা দুরাক্আত করে সলাত আদায় করতাম। এর চেয়ে বেশী দিন অবস্থান করলে চার রাক্আত করে ক্বায়িম করতাম

। [বোখারী] {১}; {১} সহীহ : বোখারী ৪৩০০, আত তিরমিজি ৫৪৯, ইবনি মাজাহ ১০৭৫, আহমাদ ১৯৫৮, ইবনি খুযায়মাহ্ ৯৫৫, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০২৮। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩৮. হাফস ইবনি আসিম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার মাক্কাহ্-মাদীনার পথে আবদুল্লাহ ইবনি উমারের সাথে থাকার আমার সোভাগ্য ঘটেছ। [যুহরের সালাতের সময় হলে] তিনি আমাদেরকে দুরাক্আত সলাত [জামাআতে] আদায় করালেন। এখান থেকে তাঁবুতে ফিরে গিয়ে তিনি দেখলেন লোকেরা দাঁড়িয়ে আছে। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন লোকেরা কি করছে? আমি বললাম তারা নাফ্‌ল সলাত আদায় করছে। তিনি বললেন, আমাকে যদি নাফ্‌ল সালাতই আদায় করিতে হয়, তাহলে ফার্‌য সলাতই তো পরিপূর্ণভাবে আদায় করা বেশী ভালো ছিল। কিন্তু যখন সহজ করার জন্য ফার্‌য সলাত ক্বস্‌র আদায়ের হুকুম হয়েছে তখন তো নফল সলাত ছেড়ে দেয়াই উত্তম। আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে থাকার সৌভাগ্যও পেয়েছি। তিনি সফরের অবস্থায় দুরাকআতের বেশী [ফার্‌য] সলাত আদায় করিতেন না। আবু বাক্‌র, উমার, উসমান [রাদি.] এর সাথে চলারও সুযোগ আমার হয়েছে। তাঁরাও এভাবে দু রাকআতের বেশী আদায় করিতেন না।

[বোখারী, মুসলিম] {১}; {১} সহীহ : বোখারী ১১০২, মুসলিম ৬৮৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫৫০৭, আবু দাউদ ১২২৩। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৩৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে গেলে যুহর ও আস্‌রের সলাত এক সাথে আদায় করিতেন। [ঠিক এমনিভাবে] মাগরিব ও ইশার সলাত একসাথে আদায় করিতেন।

[বোখারী] {১}; {১} সহীহ : বোখারী ১১০৭। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৪০. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভ্রমণে গেলে রাতের বেলায় ফার্‌য সলাত ছাড়া [অন্য সলাত] সওয়ারীর উপর বসেই ইশারা করে আদায় করিতেন। সওয়ারীর মুখ যে দিকে থাকতো তার মুখও সে দিকে থাকত। এমনি ভাবে বিত্‌রের সলাত তিনি [সাঃআঃ] তাহাঁর সওয়ারীর উপরই আদায় করেন।

[বোখারী, মুসলিম] {১}; {১} সহীহ : বোখারী ১০০০, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০৩৬, মুসলিম ৭০০।সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ৪১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

১৩৪১.n আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন সফরকালে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সব রকমই করিয়াছেন। তিনি [সফর অবস্থায়] ক্বস্‌রও আদায় করিতেন আবার পূর্ণ সলাতও আদায় করিতেন।

[শারহূস্‌ সুন্নাহ্‌] {১}; {১} জইফ : শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০২৩। কারণ এর সানাদে ত্বলহাহ্ [রাদি.] ইবনি আমর জইফ রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৩৪২. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-এর সাথে অনেক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। মাক্কাহ্ বিজয়ের সময়ও তাহাঁর সাথে ছিলাম। এ সময়ে তিনি আঠার দিন মাক্কায় অবস্থানরত ছিলেন। তিনি [সাঃআঃ] চার রাক্আত বিশিষ্ট সলাত দুরাক্‌আত আদায় করেছিলেন। তিনি [সাঃআঃ] বলেন হে শহরবাসীরা! তোমরা চার রাক্আত করে সলাত আদায় কর। আমি মুসাফির [তাই দুরাক্আত আদায় করছি]।

[আবু দাউদ] {১}; {১} জইফ : আবু দাউদ ১২২৯। কারণ এর সানাদে আলী ইবনি যায়দ ইবনি জাদআন একজন সমালোচিত রাবী। অধিকন্তু এ বর্ণনার ثَمَانِيَ عَشْرَةَ অংশটুকু মুনকার। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৩৪৩. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী কারীম [সাঃআঃ] এর সাথে সফরে দুরাক্আত যুহর ও এরপর দুরাক্আত সুন্নাত আদায় করেছি। আর এক বর্ণনায় আছে আবদুল্লাহ ইবনি উমার বলেন আবাসে ও সফরে আমি নবী কারীম[সাঃআঃ] এর সাথে সলাত আদায় করেছি। আবাসে তাহাঁর সাথে যুহর সলাত আদায় চার রাক্আত আদায় করেছি এবং সফরে যুহর দুরাক্আত ও আস্‌র দুরাক্আত আদায় করেছি। এর পর নবী [সাঃআঃ] আর কোন সলাত আদায় করেননি। মাগরিবের সলাত আদায় করিয়াছেন আবাসে ও সফরে সমান ভাবে তিন রাক্আত। আবাসে ও সফরে কোন অবস্থাতেই মাগরিবের বেশ কম হয় না। এইটা হল দিনের বিত্‌রের সলাত। এরপর তিনি আদায় করিয়াছেন দুরাক্আত সুন্নাত। {১}

{১} জইফ : আত তিরমিজি ৫৫২, শারহুস্ সুন্নাহ ১০৩৫। ঈমাম আত তিরমিজি [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, আমি ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলেছেন, ইবনি আবী লায়লা এর চেয়ে আশ্চর্যজনক হাদিস আর বর্ণনা করেনি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৩৪৪. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] তাবূকের যুদ্ধ চলাকালে যুহরের সময় সূর্য ঢলে গেলে যুহর ও আস্‌রের সলাত দেরী করিতেন এবং আস্‌রের সলাতের জন্য মঞ্জিলে নামতেন অর্থাৎ- যুহর ও আস্‌রের সলাত একসাথে আদায় করিতেন। মাগরিবের সলাতের সময়ও তিনি এরুপ করিতেন। সূর্য তাহাঁর ফিরে আসার আগে ডুবে গেলে তিনি [সাঃআঃ] মাগরিব ও ইশার সলাত একত্রে আদায় করিতেন। আর সূর্য অস্ত যাবার আগে চলে আসলে তিনি [সাঃআঃ] মাগরিবের সলাতে দেরী করিতেন। ইশার সলাতের জন্য নামতেন এবং দুসলাত একত্রে আদায় করিতেন।{১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ১২০৮, দারাকুত্বনী ১৪৬২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫৫২৭, আত তিরমিজি ৫৫৩, ইরওয়া ৫৭৮। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৪৫. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সফরে [অর্থাৎ শহরের বাইরে] যেতেন [মুসাফির অবস্থায় হোক অথবা মুক্বীম] নাফ্‌ল সলাত আদায় করিতে চাইতেন, তখন উটের মুখ ক্বিবলার দিকে করে নিতেন এবং তাকবীরে তাহরীমাহ্‌ বলে যেদিকে সওয়ারীর মুখ করিতেন সেদিকে মুখ করে তিনি সলাত আদায় করিতেন। {১}

{১} হাসান : আবু দাউদ ১২২৫, দারাকুত্বনী ১৪৭৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২২০৮। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

১৩৪৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কোন প্রয়োজনে আমাকে পাঠালেন। আমি প্রত্যাবর্তন করে এসে দেখি তিনি [সাঃআঃ] তাহাঁর বাহনের উপর পূর্ব দিকে মুখ ফিরে সলাত ক্বায়িম করছেন। তবে তিনি রুকু হইতে সাজদায় একটু বেশী নীচু হইতেন।] {১}

{১} সহীহ : আবু দাউদ ১২২৭, আত তিরমিজি ৩৫১, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৮৫০৭, আহমাদ ১৪৫৫৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২২১১, শারহুস্ সুন্নাহ ১০৩৮। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৪৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিনায় [চার রাক্আত বিশিষ্ট সলাত] দুরাক্আত সলাত আদায় করিয়াছেন। তারপর আবু বাক্রও দুরাক্আত সলাত আদায় করিয়াছেন। অতঃপর উমারও দুরাক্আত সলাত আদায় করিয়াছেন। উসমান [রাদি.] তার খিলাফাতকালের প্রথম দিকে দুরাক্আতই সলাত আদায় করিতেন। কিন্তু পরে তিনি চার রাক্আত আদায় করিতে শুরু করেন। ইবনি উমার-এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি যখন ইমামের [উসমান-এর] সাথে সলাত আদায় করিতেন, তখন চার রাক্আত আদায় করিতেন। আর একাকী হলে [সফরে] দুরাক্আত আদায় করিতেন। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ১৬৫৫, মুসলিম ৬৯৪, ইবনি আবী শায়বাহ্ ১৩৯৭৮; শব্দবিন্যাস মুসলিমের। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ৪১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১৩৪৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [ইসলামের প্রথম দিকে] দুরাক্আতই সলাত ফার্‌য ছিল। এরপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হিজরাত করলে মুক্বীমের জন্য চার রাক্আত সলাত নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। আর সফর অবস্থায় প্রথম থেকেই দুরাক্আত ফার্‌য ছিল। ঈমাম যুহরী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমি উরওয়ার নিকট আরয করলাম, আয়িশার কি হলো যে, তিনি সফর অবস্থায়ও পুরো চার রাক্আত সলাত আদায় করেন। [উত্তরে] তিনি বললেন, তিনিও উসমান-এর মত  করেন। {১}

{১} সহীহ : বোখারী ৩৯৩৫, ১০৯০, মুসলিমের ৬৮৫, মুসনাদ আশ্ শাফিঈ ৫১৭। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৪৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদের নবী [সাঃআঃ]-এর জবানিতে মুক্বীম অবস্থায় চার রাক্আত আর সফরকালে দুরাক্আত সলাত ফার্‌য করিয়াছেন। {১}

{১} সহীহ : মুসলিম ৬৮৭, নাসায়ী ১৫৩২, আহমাদ ২২৯৩, ইবনি খুযায়মাহ্ ৩০৪, ১৩৪৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০২১। সফরের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

১৩৫০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]ও আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরের অবস্থায় সলাত দুরাক্আত নির্ধারিত করে দিয়েছেন। আর এ দুরাক্আতই হলো [সফরের] পূর্ণ সলাত, ক্বস্‌র নয়। আর সফরে বিত্‌র সলাত আদায় করা সুন্নাত।{১}

{১} খুবই দুর্বল : ইবনি মাজাহ ১১৯৪। কারণ এর সানাদে জাবির আল জুফী একজন দুর্বল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ খুবই দুর্বল

১৩৫১. ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি শুনেছেন যে, আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস মাক্কাহ্ ও ত্বায়িফ, মাক্কাহ্ ও উসফান, মাক্কাহ্ ও জিদ্দার দূরত্বের মাঝে ক্বস্‌রের সলাত আদায় করিতেন। ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এসবের দূরত্ব ছিল চার বারীদ অর্থাৎ আটচল্লিশ মাইল। ] {১}

{১} জইফ : মুয়াত্ত্বা ৪৯৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫৩৯৫। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৩৫২. বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে আঠারোটি সফরে তাহাঁর সফরে সঙ্গী ছিলাম, এ সময় আমি তাঁকে সূর্য ঢলে পড়ার পরে আর যুহরের সলাতের আগে দুরাক্আত সলাত আদায় করা ছেড়ে দিতে কখনো দেখিনি। [ আবু দাউদ, তিরমিজি; ঈমাম তিরমিজি বলেন, এ হাদিসটি গরীব।] {১}

{১} জইফ : আবু দাউদ ১২২২, আত তিরমিজি ৫৫০, আহমাদ ১৮৫৮৩, ইবনি খুযায়মাহ্ ১২৫৩, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১১৮৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১০৩৪, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ১২০৯। কারণ এর সানাদে আবু বুসরা একজন অপরিচিত রাবী। তার সম্পর্কে হাফিয যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, তিনি অপরিচিত, তার সম্পর্কে হাফিয যাহাবী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, তিনি অপরিচিত, তার কাছ থেকে শুধুমাত্র সফ্ওয়ান ইবনি সুলায়ম হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

১৩৫৩. নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি উমার তাহাঁর পুত্র উবায়দুল্লাহকে সফর অবস্থায় নাফ্‌ল সলাত আদায় করিতে দেখেছেন। তিনি তাঁকে তা করিতে নিষেধ করিতেন না। {১}

{১} জইফ : মুয়াত্ত্বা মালিক ৫১২। কারণ এর সানাদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply