স্বামী স্ত্রী একজন ইসলাম কবুল করলে সন্তান কার কাছে থাকবে
স্বামী স্ত্রী একজন ইসলাম কবুল করলে সন্তান কার কাছে থাকবে >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ১৩, অনুচ্ছেদঃ ২৩-৩৫=১৩টি
অনুচ্ছেদ-২৩ঃ স্বামী-স্ত্রী দুজনের একজন ইসলাম কবুল করলে
অনুচ্ছেদ-২৪ঃ স্ত্রীর পর যদি স্বামীও ইসলাম গ্রহণ করে, তবে স্ত্রী কতদিন পর স্বামীর কাছে ফেরত যাবে
অনুচ্ছেদ-২৫ঃ ইসলাম গ্রহণের পর কারো কাছে চারের অধিক স্ত্রী থাকলে
অনুচ্ছেদ-২৬ঃ পিতা-মাতার যে কোন একজন মুসলিম হলে সন্তান কে পাবে?
অনুচ্ছেদ-২৭ঃ লিআন সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২৮ঃ সন্তান সম্পর্কে সন্দেহ করা
অনুচ্ছেদ-২৯ঃ ঔরসজাত সন্তান অস্বীকার করা জঘন্য অন্যায়
অনুচ্ছেদ-৩০ঃ জারজ সন্তানের মালিকানা দাবী প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-৩১ঃ দৈহিক গঠনের ভিত্তিতে সম্পর্ক নির্ণয় করা
অনুচ্ছেদ-৩২ঃ সন্তান নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে লটারী দ্বারা মীমাংসা করিবে
অনুচ্ছেদ-৩৩ঃ জাহিলা যুগের বিভিন্ন বিবাহ পদ্ধতির বর্ণনা
অনুচ্ছেদ-৩৪ঃ বিছানা যার সন্তান তার
অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ সন্তান লালন-পালনে অধিক হকদার কে?
অনুচ্ছেদ–২৩ঃ স্বামী–স্ত্রী দুজনের একজন ইসলাম কবুল করলে
২২৩৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর যুগে এক ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে আসলো, পরে ঐ ব্যক্তির স্ত্রীও ইসলাম গ্রহণ করে আসলো। সে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয় সে আমার সাথেই ইসলাম গ্রহণ করেছে। ফলে তিনি স্ত্রীটিকে তার কাছে ফিরিয়ে দেন। {২২৩৮}
দুর্বল ঃ যয়ীফ সুনান আত-তিরমিজি [১৯৫/১১৫৯], ইরওয়া [১৯১৮]। {২২৩৮} তিরমিজি। ঈমাম তিরমিজি বলেন ঃ এই হাদিসটি সহিহ। কিন্তু সানাদে সিমাক ইবনি হার্ব রয়েছে। তার সম্পর্কে হাফিয আত-তাক্বরীব গ্রন্থে বলেনঃ ইকরিমা সূত্রে তার বর্ণনাগুলো মুযতারিব। শেষ বয়সে তার স্মৃতি বিভ্রাট হয়েছিল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৩৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর যুগে এক মহিলা ইসলাম গ্রহণ করে মদিনায় এসে জনৈক ব্যক্তিকে বিয়ে করলো। পরবর্তীতে তার [প্রাক্তন] স্বামী নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি এবং সে আমার ইসলাম গ্রহণ সম্মন্ধে জানতো। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মহিলাটিকে দ্বিতীয় স্বামী থেকে ফেরত নিয়ে প্রথম স্বামীর কাছে সোপর্দ করিলেন। {২২৩৯}
{২২৩৯} বায়হাক্বী। এটির দোষও পূর্বেরটির অনুরূপ। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ–২৪ঃ স্ত্রীর পর যদি স্বামীও ইসলাম গ্রহণ করে, তবে স্ত্রী কতদিন পর স্বামীর কাছে ফেরত যাবে
২২৪০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাঁর কন্যা যাইনাবকে প্রথম বিবাহের ভিত্তিতেই আবুল আসের কাছে ফেরত দেন এবং নুতনভাবে কোন মাহর ধার্য করেননি। বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনি আমর তার হাদিসে বলেন, ছয় বছর পর এবং হুসাইন ইবনি আলী বলেন, দুই বছর পর।
সহিহ, তবে দুই বছর উল্লেখ বাদে। সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
অনুচ্ছেদ–২৫ঃ ইসলাম গ্রহণের পর কারো কাছে চারের অধিক স্ত্রী থাকলে
২২৪১. হারিস ইবনি ক্বায়িস ইবনি উমাইর আল-আসাদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করি তখন আমার আটজন স্ত্রী ছিলো। বিষয়টি আমি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে জানালে তিনি বলেনঃ তাহাদের যে কোন চারজনকে বেছে নাও।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৪২. ক্বায়িস ইবনিল হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এই সানাদে পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৪৩. আদ-দাহহাক ইবনি ফায়রূয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ইসলাম কবূল করেছি এবং একই সাথে দুই বোন আমার স্ত্রী হিসেবে আছে। তিনি বলেনঃ তোমার ইচ্ছে অনুযায়ী তাহাদের উভয়ের কোন একজনকে তালাক দাও।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ–২৬ঃ পিতা–মাতার যে কোন একজন মুসলিম হলে সন্তান কে পাবে?
২২৪৪. রাফি ইবনি সিনান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি ইসলাম কবুল করেন, কিন্তু তার স্ত্রী ইসলাম কবুল করিতে অস্বীকার করে। অতঃপর মহিলাটি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকট এসে বললো, এটি আমার কন্যা এবং সে এখনও দুগ্ধপোষ্য বা এ জাতীয় কিছু বলেন। পক্ষান্তরে রাফি [রাদি.] বলেন, এটি আমার কন্যা। নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] রাফিকে বলিলেনঃ তুমি এক পাশে বসো এবং মহিলাকে বলিলেনঃ তুমি অপর পাশে বসো। তিনি মেয়েটিকে উভয়ের মাঝখানে বসালেন এবং বলিলেনঃ এখন তোমরা দুজনেই তাহাকে ডাকো। মেয়েটি তার মায়ের দিকেই ঝুঁকছে। নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] দুআ করে বলিলেনঃ
اللَّهُمَّ اهْدِهَا
আল্লা-হুম্মাহ দিহা
হে আল্লাহ! কন্যাটিকে সঠিক পথ দেখাও।
অতঃপর মেয়েটি তার পিতার দিকে ঝুঁকে পড়লো। ফলে সে [পিতা] তাহাকে গ্রহণ করে।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
অনুচ্ছেদ–২৭ঃ লিআন সম্পর্কে
২২৪৫. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
সাহল ইবনি সাদ আস-সাঈদী [রাদি.] তাহাকে জানিয়েছেন যে, একদা উয়াইমির ইবনি আশকার আল-আজলানী [রাদি.] আসিম ইবনি আদী [রাদি.] এর নিকট এসে বলেন, হে আসিম! যদি কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রীর সাথে অন্য পুরুষকে পায়, এ বিষয়ে তোমার কি অভিমত? সে কি তাহাকে হত্যা করিবে এবং তোমরা তাহাকে হত্যা করিবে বা সে কী করিবে? হে আসিম! আমার এ বিষয়ে আপনি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে জিজ্ঞেস করুন। আসিম [রাদি.] এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তা খারাপ ও অশোভন মনে করিলেন। রসূলুল্লাহর [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কাছে আসিম [রাদি.] যা শুনলেন সেটা তার জন্য ভয়ানক মনে হলো। আসিম [রাদি.] তার বাড়ি ফিরে এলে উয়াইমির এসে তাহাকে বলেন, হে আসিম! রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তোমাকে কি বলিয়াছেন? আসিম বলিলেন, তুমি আমাকে খুব একটা ভালো কাজ দাওনি। আমি তোমার বিষয়ে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তা অপছন্দ করেন। তখন উয়াইমির [রাদি.] আল্লাহর শপথ করে বলিলেন, আমি এ সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস না করে ক্ষান্ত হবো না। এই বলে উয়াইমির [রাদি.] উঠে রসূলুল্লাহর [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] নিকটে উপস্থিত হলেন। এ সময় তিনি চতুর্দিক থেকে লোকজন পরিবেষ্ঠিত ছিলেন। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বলেন, যদি কোন ব্যক্তি নিজ স্ত্রীর সাথে অন্য পুরুষকে পায় তবে সে কি তাহাকে হত্যা করিবে? অতঃপর আপনারা তাহাকে হত্যা করবেন বা সে কী করিবে? রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ তোমার ও তোমার সঙ্গিনীর ব্যাপারে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। তাহাকে নিয়ে এসো! সাহল [রাদি.] বলেন, তারা আসলো এবং উভয়েই লিআন করলো। তখন আমি অন্যান্য লোকদের সঙ্গে সাথে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কাছেই উপস্থিত ছিলাম। তারা লিআন থেকে অবসর হলে উয়াইমির [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এরপর যদি আমি তাহাকে স্ত্রী হিসাবে রাখি তবে প্রমাণ হইবে আমি মিথ্যা বলেছি। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] নির্দেশ দেয়ার আগেই তিনি তাহাকে তিন তালাক দিলেন। ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তখন থেকে লিআনকারীদের জন্য এটাই বিধান হয়ে যায়।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৪৬. আব্বাস ইবনি সাহল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আসিম ইবনি আদী [রাদি.]-কে বলিলেনঃ তুমি মহিলাকে সন্তান প্রসবকাল পর্যন্ত নিজের কাছে রেখে দাও।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২২৪৭. সাহল ইবনি সাদ আস-সাঈদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি তাহাদের দুজনের লিআন করার সময় রসূলুল্লাহর [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন আমার বয়স ছিলো পনের বছর। অতঃপর বর্ণনাকারী পূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর মহিলাটি গর্ভধারণ করে এবং সন্তানটিকে তার মায়ের সাথে সম্পৃক্ত করে ডাকা হতো।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৪৮. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উভয় লিআনকারীর ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ তোমরা ঐ মহিলার প্রতি দৃষ্টি রাখো। যদি সে কালো চক্ষু ও বড় নিতম্ববিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, তবে আমি বুঝে নিবো, সে [স্বামী] সত্যই বলেছে। আর যদি সে সান্ডার মতো রক্তিমাভ সন্তান প্রসব করে তাহলে ধারণা করবো যে, সে মিথ্যাবাদী ছিলো। বর্ণনাকারী বলেন, সে অপছন্দনীয় বৈশিষ্ট্যযুক্ত সন্তান প্রসব করলো।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৪৯. সাহল ইবনি সাদ আস-সাঈদী [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলিয়াছেন, সন্তানটিকে তার মায়ের সাথে সম্পৃক্ত করে ডাকা হতো।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫০. সাহল ইবনি সাদ আস-সাইদী [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ণিত। তিনি বলেন, অতঃপর উয়াইমির তার স্ত্রীকে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর উপস্থিতিতে তিন তালাক প্রদান করলো। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তা কার্যকর করিলেন। আর নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর উপস্থিতিতে যা করা হয় তাই সুন্নাতে পরিণত হয়। সাহল [রাদি.] বলেন, তখন আমি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] নিকটে উপস্থিত ছিলাম। অতঃপর উভয় লিআনকারীর জন্য এই নিয়ম চলে আসছে যে, তাহাদেরকে বিচ্ছিন্ন করা হইবে এবং পুণরায় কখনো তারা উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইতে পারবে না।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫১. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুসাদ্দাদ বলেন, সাহল বলিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর যুগে ঐ দুজন লিআনকারীর ঘটনাস্থলে আমি উপস্থিত ছিলাম। তখন আমার বয়স ছিলো পনের বছর। তারা উভয়ে যখন লিআন থেকে অবসর হলো তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটালেন। মুসাদ্দাদের বর্ণনা এখানেই শেষ।
অন্য বর্ণনাকারীগণ বলিয়াছেন, যখন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] লিআনকারীদ্বয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটান তখন তিনি [সাহল] সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অতঃপর সে ব্যক্তি [উয়াইমির] বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাহাকে স্ত্রী হিসেবে রেখে দিলে এটাই প্রমাণিত হইবে যে, আমি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলেছি কোন কোন বর্ণনাকারী আলাইহা শব্দটি বলেননি।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫২. সাহল ইবুন সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এ হাদিস সম্পর্কে বর্ণিত। উক্ত মহিলা গর্ভবতী ছিলো। স্বামী তার গর্ভ অস্বীকার করায় সন্তানটিকে তার মায়ের সাথে সম্পৃক্ত করে ডাকা হতো। অতঃপর মীরাসের ক্ষেত্রে এ নিয়ম বিধিবদ্ধ হয় যে, এ সন্তান তার মায়ের ওয়ারিস হইবে এবং আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মাতাও সন্তানের ওয়ারিস হইবে।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫৩. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক জুমুআহ্র রাতে আমি মাসজিদে উপস্থিত ছিলাম। তখন এক আনসারী ব্যক্তি মাসজিদে এসে বললো, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য পুরুষকে অবৈধ কাজে লিপ্ত পায় এবং সে যদি তা প্রকাশ করে তাহলে অভিযোগকারীকে তোমরা মিথ্যাবাদিতার শস্তি দিবে নাকি তাহাকে [যিনাকারীকে] হত্যা করার কারণে তাহাকেও হত্যা করিবে? আর সে যদি নীরব থাকে তবে ক্ষোভ নিয়েই নীরব থাকিবে। আল্লাহর শপথ! আমি এ বিষয়ে অবশ্যই রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে জিজ্ঞেস করবো। অতঃপর ভোর বেলার সে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য পুরুষকে অবৈধ কাজে লিপ্ত পায়, তাহলে আপনারা কি তাহাকে তা বলার অপরাধে মিথ্যাবাদিতার শাস্তি দিবেন? নাকি সে [যিনাকারীকে] হত্যা করলে [কিসাসস্বরূপ] তাহাকেও হত্যা করবেন, নাকি সে ক্ষোভ নিয়ে চুপ থাকিবে? তার কথা শুনে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ হে আল্লাহ! সঠিক তথ্য প্রকাশ করে দিন এবং তিনি দুআ করিতে থাকলেন। অতঃপর লিআনের আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ
وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ
“এবং যারা নিজেদের স্ত্রীদের উপর যিনার অভিযোগ দেয় অথচ তাহাদের কাছে তারা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষী নেই…” [সূরাহ আন-নূরঃ ৬]। বস্তুত লোকটিই এ গুরুতর ব্যাপারে জড়িয়ে পড়েছিলো। পরে সে ও তার স্ত্রী রসূলুল্লাহর [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কাছে এসে লিআন করলো এবং সে ব্যক্তি আল্লাহর শপথ দ্বারা চারবার শপথ করলো যে, সে তার দাবিতে সত্যবাদী। আর পঞ্চমবারে সে বললো, তার উপর আল্লাহর অভিশাপ বার্ষিত হোক যদি সে মিথ্যাবাদী হয়ে থাকে। অতঃপর উক্ত মহিলা লিআন করিতে উদ্যত হলে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাকে বলিলেনঃ থামো! কিন্তু সে বিরত থাকতে অস্বীকার করলো এবং লিআন করলো। উভয় লিআনকারী চলে গেলে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ সম্ভবত সে কালো ও স্থুলদেহী সন্তান প্রসব করিবে। পরে তাই হলো, সে কালো ও স্থুলদেহী সন্তানই প্রসব করলো।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা হিলাল ইবনি উমাইয়্যাহ [রাদি.] নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকট শারীক ইবনি সাহমার সাথে তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ করলে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ তুমি প্রমাণ পেশ করো অন্যথায় তোমার পিঠে হদ্দ কার্যকর হইবে। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এটা কিভাবে সম্ভব? এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য পুরুষকে অবৈধ কাজে লিপ্ত দেখে সে সাক্ষীর খোঁজে বের হইবে? নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আবারও বলিলেনঃ তুমি সাক্ষী পেশ করো, অন্যথায় তোমার পিঠে হদ্দ কার্যকর হইবে। হিলাল বলিলেন, সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন। আমি আমার দাবিতে অবশ্যই সত্যবাদী। নিশ্চয় আল্লাহ আমার বিষয়ে অবতীর্ণ করবেন। যা আমার পিঠকে শাস্তি থেকে রক্ষা করিবে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ “এবং যারা নিজেদের স্ত্রীদের উপর যিনার অভিযোগ দেয় অথচ তাহাদের কাছে তারা ছাড়া অন্য কেউ সাক্ষী নেই… হইতে সত্যবাদী পর্যন্ত” নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] পাঠ করে শুনালেন। অতঃপর নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাদেরকে লোক মারফত ডাকালেন। তারা উপস্থিত হলো এবং হিলাল [রাদি.] উঠে তার শপথ বাক্য পাঠ করিলেন। তখন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ আল্লাহই অবগত, তোমাদের দুজনের মধ্যে একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমাদের মধ্যে কে তাওবাহ করিবে? পরে মহিলাটি উঠে শপথ বাক্য পড়লো। মহিলাটি পঞ্চমবারের বাক্য “আল্লাহর গযব তার নিজের উপর বর্ষিত হোক, যদি স্বামী তার দাবিতে সত্যবাদী হয়” বলার সময় উপস্থিত লোকেরা তাহাকে বলেছিলে, এ বাক্যে অবশ্যই আল্লাহর গযব নাযিল হইবে। কাজেই ভেবে-চিন্তে বলো। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, একথা শুনে মহিলাটি কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়ালো এবং পেছনের দিকে সরে এলো। আামদের ধারণা হলো, সম্ভবত সে বিরত থাকিবে। কিন্তু সে আমি আমার বংশকে চিরদিনের জন্য কলংকিত করবো না” বলে পঞ্চম বাক্যটিও পাঠ করলো। অতঃপর নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ তোমরা এ মহিলাটির প্রতি নযর রাখো, যদি সে কুচকুচে কালো চোখ, বড় নিতম্ব ও মোটা নলাওয়ালা সন্তান প্রসব করে তবে তা হইবে শারীক ইবনি সাহমার। পরে সে এরূপ সন্তানই প্রসব করে। পরবর্তীতে নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিয়াছেনঃ আল্লাহর কিতাবে লিআনের নির্দিষ্ট বিধান অবতীর্ণ না হলে আমার ও এই নারীর মধ্যকার ফায়সালার বিষয়টি সংকটজনক হতো।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন লিআনকারদেরকে লিআন করার আদেশ দিলেন তখন এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, লিআনকারীর পঞ্চমবারে বাক্যটি পাঠ করার প্রাক্কালে তিনি তার মুখের উপর যেন হাত রেখে বলেন, নিশ্চয়ই এতে শাস্তি অনিবার্য।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হিলাল ইবনি উমাইয়্যাহ [রাদি.], যিনি [তাবূক অভিযানে পিছনে পড়ে থাকা] তিনজনের একজন। আল্লাহ পরবর্তীতে তাহাদের তাওবাহ কবুল করেছেন। একদা রাতের প্রথম অংশে তিনি খামার থেকে ফিরে এসে তার স্ত্রীর সাথে অন্য এক পুরুষকে দেখিতে পান। তিনি তাহাদের অবৈধ কাজ স্বচক্ষে দেখলেন এবং তাহাদের কথাবার্তাও নিজ কানে শুনলেন। তথাপি কোনরূপ বাড়াবাড়ি না করে রাত কাটালেন। তিনি সকাল বেলায় রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর কাছে এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! রাতের প্রথমভাগে আমি আামার খামার থেকে ফিরে এসে আমার স্ত্রীর সাথে এক পুরুষকে দেখিতে পেলাম। তাহাদের অবৈধ মেলামেশা আমি চাক্ষুষ দেখেছি এবং নিজ কানে তাহাদের কথাবার্তা শুনিয়াছি। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তার কথায় অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাহাঁর কাছে বিষয়টি গুরুতর মনে হলো। অতঃপর এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ
وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ
“এবং যারা নিজেদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করে এবং তারা নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও নেই, তাহাদের প্রত্যেককে শপথ করিতে হইবে…” পূর্ণ দুটি আয়াত অবতীর্ণ হলো। অতঃপর রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাঁর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়ার কঠিন অবস্থা প্রশমিত হলে বলিলেনঃ হে হিলাল! সুসংবাদ গ্রহণ করো। অবশ্যই আল্লাহ তোমাকে দুশ্চিন্তা ও বিপদ থেকে মুক্ত করেছেন। হিলাল [রাদি.] বলিলেন, আমি আমার প্রতিপালকের কাছে এমনই আশা করেছিলাম। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ তোমরা তার স্ত্রীর কাছে লোক পাঠিয়ে তাহাকে আসতে বলো। সে আসলে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাদেরকে আয়াতটি পাঠ করে শুনান, নসিহত করেন এবং তাহাদেরকে বলিলেনঃ পরকালের আযাব দুনিয়ার আযাবের চাইতে খুবই ভয়াবহ। হিলাল [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহর শপথ! স্ত্রীর বিরুদ্ধে আমি যে অভিযোগ পেশ করেছি, তা অবশ্যই সত্য। কিন্তু মহিলাটি বললো, সে মিথ্যা বলেছে। এরপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ তোমরা এদের উভয়ের মধ্যে লিআন করাও। অতঃপর হিলালকে সাক্ষ্য দিতে বলা হলে তিনি চারবার শপথ করেন যে, তিনি তার দাবীতে সত্যবাদী। পঞ্চম শপথটি পড়ার সময় তাহাকে বলা হলো, হে হিলাল! আল্লাহকে ভয় করো। কেননা দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তির চাইতে অনেক কম। আর যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও তাহলে এ শপথ অবশ্যই তোমার উপর বিপদ আনবেই। তিনি বলিলেন, আল্লাহর শপথ! তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করার কারণে আল্লাহ আমার পিঠে যেমন দোর্রা লাগাননি, তেমনি এ বিষয়ে আমাকে শাস্তি থেকেও বাঁচাবেন। এ বলে তিনি পঞ্চম শপথ করিলেন যে, তার নিজের উপর আল্লাহর গযব নামবে যদি সে মিথ্যাবাদী হয়। অতঃপর মহিলাটিকে বলা হলো, তুমিও শপথ করো। সেও চারবার আল্লাহর নামে শপথ করলো যে, স্বামী তার দাবীতে মিথ্যাবাদী। আর পঞ্চমবার শপথের সময় হলে তাহাকেও বলা হলো যে, আল্লাহকে ভয় করো। কেননা দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তির তুলনায় অনেক হালকা। এ পঞ্চম শপথ অবশ্যই তোমার উপর আযাব এসে ছাড়বে। একথা শুনে সে কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়ালো, এবং কিছুক্ষণ পর বললো, আল্লাহর শপথ! আমি আমার খান্দানকে কলঙ্কিত করবো না এবং এই বেলা পঞ্চমবার শপথটি করলো যে, তার নিজের উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক, যদি সে [স্বামী] সত্যবাদী হয়ে থাকে। পরে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ করালেন এবং জানিয়ে দিলেন যে, তার গর্ভস্থ সন্তানের পরিচয় তার পিতা থেকে নেয়া হইবে না, মহিলাটির উপর যিনার অপবাদ দেয়া যাবে না এবং সন্তানটিকে জারজ বলে কলঙ্কিত করা যাবে না। আর যে ব্যক্তি উক্ত মহিলা ও তার সন্তানকে অপবাদ দিবে, তার উপর মিথ্যা বলার শাস্তি প্রয়োগ হইবে। এ মহিলা তার স্বামী থেকে খোরাকী পাবে না। কারণ তারা তালাক ছাড়াই বিচ্ছেদ হয়েছে, এবং তার স্বামী মারা যায়নি। তিনি আরো বলিলেনঃ যদি মহিলাটি বাজ পাখির মতো লাল-কালো বর্ণের, হালকা নিতম্ব, সামান্য কুঁজো এবং সরু নলাবিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, তাহলে সেটা হইবে হিলালের ঔরসজাত। আর যদি সে গমের রং, কোঁকড়া চুল, মোটা বাহু, মোটা নলাওয়ালা ও বড় নিতম্ববিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, তাহলে তা ঐ ব্যক্তির ঔরসের যাকে সম্পর্কিত করে অপবাদ দেয়া হয়েছে। সন্তান জন্মের পর দেখা গেলো, সে মহিলাটি গমের রং, কোঁকড়া চুল, ভারী বাহু, মোটা নলাওয়ালা ও বড় নিতম্ববিশিষ্ট সন্তান প্রসব করেছে। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ শপথের আয়াত অবতীর্ণ না হলে আমি অবশ্যই তাহাকে পাথর মেরে হত্যা করতাম। ইকরিমা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, পরবর্তীতে ঐ সন্তানটি মুদার গোত্রের প্রশাসক নিযুক্ত হয়। কিন্তু তাহাকে পিতার সাথে সম্পৃক্ত করে ডাকা হতো না।
{২২৫৬} আহমাদ। সানাদে আব্বাদ বিন মানসূর একজন মুদাল্লিস এবং শেষ বয়সে তার স্মৃতি বিভ্রাট হয়েছে। যেমন আত-তাক্বরীব গ্রন্থে রয়েছে। হাফিয যাহাবী আল-মীযান গ্রন্থে বলেন ঃ ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ তার ব্যাপারে সন্তুষ্ট ছিলেন না। ইবনি মাঈন বলেন ঃ তিনি কোন জিনিসই নন। ঈমাম নাসায়ী তাহাকে যয়ীফ বলিয়াছেন। ইবনি যুবাইর বলেন ঃ তিনি মাতরূক, কাদরিয়া। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৫৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] লিআনকারীদের সম্পর্কে বলিয়াছেনঃ আল্লাহ তোমাদের দুজনেরই হিসাব নিবেন। তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। স্ত্রীর উপর তোমার কোন অধিকার নেই। স্বামী বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সম্পদ? তিনি বলিলেনঃ তুমি সম্পদ ফেরত পাবে না যদিও তুমি তার বিরুদ্ধে সঠিক অভিযোগ করো, কেননা এর বিনিময়ে তুমি তার লজ্জাস্থানকে হালাল করে নিয়েছিলে। আর তুমি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে থাকলে তোমার মাল তোমার থেকে অনেক দূরে চলে গেছে।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫৮. সাঈদ ইবনি যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি ইবনি উমার [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে যিনার অপবাদ দিয়েছে। তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আল-আজলান সম্প্রদায়ের এক দম্পতিকে পৃথক করে দিয়েছিলেন। তিনি বলছিলেনঃ আল্লাহ জানেন, তোমাদের দুজনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। তোমাদের দুইজনের মধ্যে কেউ তাওবাহ করিতে সম্মত আছ কি? তিনি কথাটি তিনবার বলিলেন। কিন্তু উভয়ই তাওবাহ করিতে অস্বীকার করলো। অতঃপর তিনি উভয়কে পৃথক করে দেন।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৫৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর যুগে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে লিআন করলে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটালেন এবং সন্তানটিকে মায়ের সাথে সম্পর্কিত করিলেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তিনি সন্তানটিকে তার মায়ের সাথে সম্পর্কিত করিলেন কথাটি বেকল ঈমাম মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনা করেছেন। আর ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আয-যুহরী হইতে সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] সূত্রে লিআনের হাদিস সম্পর্কে বলেন, স্বামী স্ত্রীর গর্ভস্থিত সন্তান অস্বীকার করলো। তাই ঐ পুত্রকে তার মায়ের সাথে সম্পৃক্ত করে ডাকা হতো। {২২৫৯}
সহিহ। এটি মাওসূলভাবে গত হয়েছে হা/২২৪৭। সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
অনুচ্ছেদ–২৮ঃ সন্তান সম্পর্কে সন্দেহ করা
২২৬০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বনু ফাযারাহ্র জনৈক ব্যক্তি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর কাছে এসে বললো, আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান জন্ম দিয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কাছে কিছু উট আছে? সে বললো, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলো কোন বর্ণের? সে বললো, লাল। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলোর মধ্যে ছাই বর্ণেরও উটও তো আছে? সে বললো, হ্যাঁ সেগুলোর মধ্যে ছাই বর্ণেরও আছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ আচ্ছা এ রং কোথা থেকে এলো বলোতো? লোকটি বললো, সম্ভবত বংশগত কারণে। তিনি বলিলেনঃ তোমার এ বাচ্চার বর্ণে পূর্বপুরুষের কারো বর্ণের প্রভাব পড়েছে।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৬১. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এই সানাদে উক্ত হাদিসের অনুরূপ বিষয়বস্তুসহ বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তখন লোকটি ইঙ্গিতে সন্তানকে অস্বীকার করেছে।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৬২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকট এক বেদুইন এসে বললো, আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান প্রসব করেছে, আমি তা অস্বীকার করি। বর্ণনাকারী পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ অর্থে বর্ণনা করেন।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
অনুচ্ছেদ–২৯ঃ ঔরসজাত সন্তান অস্বীকার করা জঘন্য অন্যায়
২২৬৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
লিআনের আয়াত অবতীর্ণ হলে তিনি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে বলিতে শুনেছেনঃ যে মহিলা কোন বংশের মধ্যে [এমন সন্তান] প্রবেশ করালো যার সাথে তাহাদের কোন সম্পর্ক নেই সে মহিলা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হইবে এবং আল্লাহ তাহাকে কখনো জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। আর যে পুরুষ নিজ সন্তানকে অস্বীকার করে, অথচ বাচ্চা তার মমতার আকাঙ্খা করে, মহান আল্লাহও তার থেকে আড়ালে থাকিবেন। এবং ক্বিয়ামাতের দিন পুর্বাপর সমল মানুষের সামনে তাহাকে অপমানিত করবেন। {২২৬৩}
দুর্বলঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [২২২১], যয়ীফ সুনান ইবনি মাজাহ [৬০১], মিশকাত [৩৩১৬]। যঈম সুনান নাসায়ী [২২৯/৩৪৮১]।{২২৬৩} নাসায়ী, ইবনি মাজাহ, দারিমী, বায়হাক্বী, হাকিম। শায়খ আলবানী বলেনঃ তার অবস্থা অজ্ঞাত [মাজহুলুল হাল]। তবে হাদিসের দ্বিতীয় অংশটি সহিহ, এর মজবুত শাহেদ দ্বারা। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ–৩০ঃ জারজ সন্তানের মালিকানা দাবী প্রসঙ্গে
২২৬৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিয়াছেনঃ ইসলামে ব্যভিচারের সুযোগ নাই। যারা জাহিলিইয়াতের যুগে ব্যাভিচারে লিপ্ত হয়েছে এবং এর ফলে যে সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে, ঐ সন্তান যেনাকারীর সাথে সম্পৃক্ত হইবে। আর যে ব্যক্তি যেনার সন্তানকে নিজের সন্তান বলে দাবী করিবে, সে তার ওয়ারিস হইবে না এবং উক্ত সন্তানও তার ওয়ারিস হইবে না। {২২৬৪}
দুর্বলঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৬৩১০]। {২২৬৪} আহমাদ, বায়হাক্বী, হাকিম। আহমাদ শাকির বলেন ঃ এর সনদ দুর্বল। সাঈদ ইবনি জুবাইর সূত্রে বর্ণনাকারী সন্দেহভাজন হওয়ার কারণে। ঈমাম হাকিম বলেন ঃ বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহিহ। কিন্তু ঈমাম যাহাবী বলেন ঃ আমি বলি, সম্ভবত হাদিসটি মাওযু [বানোয়াট], কেননা ইবনি খুসাইফকে হাদিস বিশারদগণ বর্জন করেছেন। তিনি সেই ব্যক্তি যিনি মুতামার থেকে বর্ণনা করেছেন হাকিম বর্ণিত সানাদে। শায়খ আলবানী বলেন ঃ সানাদে সাল্ম ও সাঈদের মাঝখানের শায়খের জাহালাতের কারণে এর সনদ দুর্বল। এটিকেই ইঙ্গিত করেছেন আল্লামা মুনযিরী। তিনি বলেন ঃ এর সানাদে একজন অজ্ঞাত লোক রয়েছে। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২২৬৫. আমর ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদা হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ইসলামের প্রথম যুগে এরূপ ফায়সালা করিতেন যে, প্রত্যেক উত্তরাধিকারী তার পিতার মৃত্যুর পর তার ওয়ারিস হইবে যাকে সে ওয়ারিস হিসাবে স্বীকার করে। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এ ফায়সালাও দিতেনঃ প্রত্যেক দাসীর সন্তানকে সেই পাবে, যে ঐ দাসীর মালিক হয়ে তার সাথে সহবাস করেছে এবং সে সন্তানও ঐ ব্যক্তির সাথে সংযুক্ত হইবে। ইতিপূর্বে যেসব সম্পদ বণ্টন হয়ে গেছে, এ সন্তান তা থেকে কোন অংশ পাবে না। আর যেগুলো ইতিপূর্বে বণ্টন হয়নি এ সন্তান তা থেকে অংশ প্রাপ্ত হইবে। তবে পিতা তার জীবদ্দশায় সন্তানটিকে অস্বীকার করলে সন্তানটি তার সাথে সংযুক্ত হইবে না। আর যদি সন্তান এমন দাসী থেকে জন্ম নেয়, যে ব্যাক্তি তার মালিক নয় কিংবা এমন স্বাধীন মহিলা থেকে জন্ম নেয়, যার সাথে সে যেনা করেছে, এমতাবস্থায় এ সন্তান ঐ ব্যক্তির সাথে সংযুক্ত হইবে না এবং এ সন্তান তার উত্তরাধিকারও হইবে না, যদিও সে ব্যক্তি দাবী করে। আর যাকে তার সাথে সংযুক্ত করা হয়, আর সেও সম্পর্কিত হয়, সে জারজ সন্তান, চাই সে দাসী কিংবা স্বাধীন নারীর গর্ভে জন্ম গ্রহণ করুক না কেন।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২২৬৬. মুহাম্মাদ ইবনি রাশিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত সানাদে পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। এতে অতিরিক্ত রয়েছেঃ ঐ সন্তান মায়ের জারজ সন্তান হিসেবে পরিচিতি পাবে, চাই সে নারী স্বাধীন অথবা কিংবা দাসী হোক। এ বিধান ইসলামে প্রাথমিক যুগে প্রযোজ্য ছিলো। আর ইসলামের পূর্বে যে সম্পদ বণ্টন হয়েছে তাতো গত হয়ে গেছে।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ–৩১ঃ দৈহিক গঠনের ভিত্তিতে সম্পর্ক নির্ণয় করা
২২৬৭ আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় আমার কাছে আসলেন। তখন তাহাঁর চেহারার সন্তুষ্টির আভা ফুটে উঠেছিল। তিনি বলিলেনঃ হে আয়িশাহ্! তুমি কি জানো? মুজুযযিয আল-মুদলিজী দেখিতে পেয়েছে যে, যায়িদ এবং উসামাহ এক সাথে একটি চাদরে মাথা আবৃত করে রেখেছে, তাহাদের উভয়ের পা ছিলো খোলা। তখন সে বললো, এ পাগুলো পরস্পরের থেকে [অর্থাৎ রক্ত সম্পর্কীয়]। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উসামাহ ছিলেন কালো বর্ণের আর যায়িদ গৌর বর্ণের।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৬৮. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
পূর্বোক্ত হাদিসের সানাদে ও অর্থে হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলিয়াছেন, তাহাঁর চেহারার সন্তুষ্টির আভা ফুটে উঠেছিল। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তাহাঁর চেহারার ঔজ্জ্বল্য কথাটি ইবনি উয়াইনাহ সংরক্ষণ করেননি। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটা ইবনি উয়াইনাহ্ কর্তৃক তাদলীস। তিনি তা যুহরী হইতে শুনেননি, বরং অন্য কারো থেকে শুনেছেন। লাইস প্রমূখের হাদিসে উক্ত কথাটি রয়েছে। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি আহমাদ ইবনি সালিহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে বলিতে শুনিয়াছি, উসামাহ [রাদি.] ছিলেন আলকাতরার মতো কালো, আর যায়িদ [রাদি.] ছিলেন তুলার মতো সাদা।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
অনুচ্ছেদ–৩২ঃ সন্তান নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে লটারী দ্বারা মীমাংসা করিবে
২২৬৯ . যায়িদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকট বসা ছিলাম। তখন ইয়ামান থেকে এক লোক এসে বললো, ইয়ামানের তিন ব্যক্তি একটি সন্তানের মালিকানা দাবী নিয়ে আলী [রাদি.]-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বিবাদ করে, তারা সকলেই একই তুহুরে একটি মহিলার সাথে সঙ্গম করেছে। আলী [রাদি.] তাহাদের মধ্যকার দুজনকে বলিলেন, সন্তানটি তোমাদের মধ্যকার এই তৃতীয় ব্যক্তির। তাতে তারা ক্ষেপে গেলো। এবার তিনি অন্য দুজনকে বলিলেন সন্তানটি তোমাদের এই তৃতীয় ব্যক্তির। তাতে তারাও রেগে গেলো। এবার তিনি অপর দুজনকে বলিলেন, সন্তানটি তোমাদের মধ্যকার এই তৃতীয় ব্যক্তির। তাতে তারাও রাগান্বিত হলো। অতঃপর তিনি বলিলেন, তোমরা এই সন্তানের দাবী নিয়ে বিবাদ করছো। আমি লটারীর মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবো। লটারীতে যার নাম উঠবে, সন্তানটি সেই পাবে, তবে সে অপর দুজনকে এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রদান করিবে। অতঃপর তিনি তাহাদের মধ্যে লটারী দিলেন এবং যার নাম উঠলো সন্তানটি তাহাকেই প্রদান করিলেন। আলী [রাদি.]-এর এ দুরদর্শিতা দেখে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এমনভাবে হেসে উঠলেন যে, তাহাঁর সম্মুখের ও মাড়ির দাঁত পর্যন্ত প্রকাশিত হলো।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৭০. যায়িদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আলী [রাদি.] ইয়ামানে অবস্থানকালে তার নিকট তিন ব্যক্তিকে আনা হলো। তারা একই মহিলার সাথে একই তুহুরে [হায়িযের পর পবিত্র অবস্থায়] সঙ্গম করেছে। তাহাদের প্রত্যেকের সন্তানটিকে নিজের বলে দাবী করলো। তিনি তাহাদের দুজনকে বলিলেন, আমি সন্তানটি ঐ তৃতীয় ব্যক্তিকে দিচ্ছি? তারা বললো, না। এভাবে তিনি তাহাদের সবাইকে জিজ্ঞেস করিলেন কিন্তু তারা সবাই অস্বীকৃতি জানালো। অতঃপর তিনি তাহাদের মধ্যে লটারী করিলেন, লটারী যে ব্যক্তির নামে উঠলো সন্তানটি তার সাথেই সংযুক্ত করিলেন এবং এ ব্যক্তির উপর অপর দুজনকে দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষতিপূরণ দেয়া বাধ্যতামূলক করিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকট ঘটনাটি ব্যক্ত করা হলে তিনি এমনভাবে হেসে উঠেন যে, তাহাঁর মাড়ির দাঁত পর্যন্ত প্রকাশিত হয়।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৭১. খলীল অথবা ইবনি খলীল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আলী ইবনি আবু ত্বালিব [রাদি.]-এর নিকট এমন মহিলাকে আনা হলো, যে তিনজন পুরুষের সাথে যেনার ফলে সন্তান প্রসব করেছিল। সে একটি সন্তান প্রসব করেছে। অতঃপর পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ। তবে এ বর্ণনায় ইয়ামান নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর কাছে ব্যক্ত করা এবং আলী [রাদি.] এর নির্দেশঃ তোমরা দুজন সন্তুষ্টচিত্তে সন্তানটির দাবী ছেড়ে দাও ইত্যাদি উল্লেখ নাই। {২২৭১}
{২২৭১} নাসায়ী, ইবনি মাজাহ। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ–৩৩ঃ জাহিলা যুগের বিভিন্ন বিবাহ পদ্ধতির বর্ণনা
২২৭২. উরওয়াহ ইবনিয যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একদা নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর স্ত্রী আয়িশাহ [রাদি.] তাঁকে বলেন, জাহিলী যুগে চার প্রকার বিবাহ চালু ছিলো। [এক] বর্তমানে যা চলছে, অর্থাৎ কোন ব্যক্তি কোন মহিলার অভিভাবকের নিকট বিয়ের প্রস্তাব দিবে এবং পাত্রীকে মোহরানা দিয়ে বিয়ে করিবে। [দুই] কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে হায়িয হইতে পবিত্র হলে বলতো, তুমি অমুক ব্যক্তির নিকট চলে যাও এবং তার সাথে সঙ্গম করো। অতঃপর তার স্বামী স্বীয় স্ত্রী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা থাকতো এবং অন্য ব্যক্তি দ্বারা গর্ভবতী না হওয়া পর্যন্ত তার সাথে অবস্থান করতো না, এমনকি তাহাকে স্পর্শও করতো না। অতঃপর স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করতো। স্বীয় স্ত্রীকে অন্য পুরুষের সাথ সহবাস করাতো এজন্যই যে, যাতে সে একটি উন্নত জাতের সন্তান জন্ম হয়। এরূপ বিবাহকে বলা হতো আল-ইস্তিবদা। [তিন] দশজনের কম ব্যক্তি একত্রে একজন মহিলাকে বিবাহ করতো এবং তারা সকলেই ঐ মহিলার সাথে সঙ্গম করতো। অতঃপর মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসবের পর কয়েকদিন অতিবাহিত হলে সকলকে ডেকে পাঠাতো এবং সবাই আসতে বাধ্য হতো। সকলে তার সামনে উপস্থিত হলে সে তাহাদেরকে বলতো, তোমরা সকলেই জানো যে, তোমরা কি করেছো। এখন আমি সন্তান প্রসব করেছি। তাহাদের মধ্য হইতে পছন্দ মতো কাউকে ডেকে বলতো, হে অমুক! এটি তোমারই সন্তান। ফলে সন্তানটি ঐ ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত হতো। [চার] বহু পুরুষ একত্রিত হয়ে পর্যায়ক্রমে একই নারীর সাথে সঙ্গম করতো এবং ঐ নারীর কাছে যত পুরুষ আসতো কাউকেই সে সঙ্গমে বাঁধা দিতো না। এরা ছিলো বেশ্যা। এরা প্রতীক চিহ্ন হিসেবে নিজ ঘরের দরজার উপর পতাকা টানিয়ে রাখতো। যে কেউ অবাধে এদের সাথে যেনা করিতে পারতো। এদের মধ্যে কেউ গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসব করলে সেসব পুরুষেরা উক্ত মহিলার কাছে একত্রিত হতো এবং একজন বংশবিশারদকে ডেকে আনা হতো। সে যে ব্যক্তির সাথে শিশুর সাদৃশ্য লক্ষ্য করতো তাহাকে বলতো, এটা তোমার সন্তান। পরে লোকেরা শিশুটিকে তার ছেলে হিসেবে আখ্যা দিতো এবং সে ব্যক্তি তা অস্বীকার করতো না। কিন্তু মহান আল্লাহ যখন নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে সত্য দীনসহ প্রেরণ করিলেন, তখন তিনি জাহিলী যুগের প্রচলিত ঐসব বিবাহ পদ্ধতি বাতিল করে বর্তমানে প্রচলিত ইসলামী বিবাহ] পদ্ধতি বহাল করিলেন।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
অনুচ্ছেদ–৩৪ঃ বিছানা যার সন্তান তার
২২৭৩. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা সাদ ইবনি আবু ওয়াককাস [রাদি.] এ আব্দ ইবনি যামআহ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকট যামআহ্র দাসীর এক সন্তানের বিষয়ে বিবাদ নিয়ে উপস্থিত হলো। সাদ [রাদি.] বলিলেন, আমার ভাই উতবাহ আমার কাছে ওয়াসিয়াত করেছে, আমি মক্কায় এলে যেন যামআহ্র দাসীর সন্তানকে আমার অধিকারে গ্রহণ করি। কারণ ওটা তার ছেলে। কিন্তু আবদ ইবনি যামআহ বলিলেন, এটা আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর সন্তান, আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সন্তানটির মধ্যে উতবাহ্র সুস্পষ্ট সাদৃশ্য দেখিতে পেয়ে বলিলেনঃ সন্তান তার বিছানা যার। আর যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। তিনি সাওদা [রাদি.]-কে বলিলেনঃ তার থেকে পর্দা করো। যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। মুসাদ্দাদের বর্ণনায় রয়েছেঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ হে আবদ! সে তোমার ভাই।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৭৪. আমার ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! অমুক আমার পুত্র, জাহিলী যুগে আমি তার মায়ের সাথে যেনা করেছিলাম। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেনঃ ইসলামে অবৈধ সন্তানের দাবীর কোন ব্যবস্থা নাই। আর জাহিলী যুগের প্রথা বাতিল হয়ে গেছে। বিছানা যার সন্তান তার এবং যেনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২২৭৫. রাবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তিনি আমার পরিজনেরা আমার সাথে তাহাদের এক রুম দেশীয় দাসীকে বিবাহ দেন। আমি তার সাথে সঙ্গম করলে সে আমার মতোই একটি কালো সন্তান জন্ম দেয়। আমি তার নাম রাখি আবদুল্লাহ। আমি পুনরায় তার সাথে সঙ্গম করলে সে আবারো আমার মতোই একটি কালো সন্তান জন্ম দিলো। আমি তার নাম রাখি উবাইদুল্লাহ। অতঃপর আমার গোত্রের ইউহান্না নামক এক রোমীয় গোলাম আমার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে তার অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে। তার ভাষা ছিল দুর্বোধ্য। অতঃপর সে গিরগিটি সদৃশ একটি সন্তান জন্ম দেয়। আমি তাহাকে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কী? সে বললো, এটা ইউহান্নার। আমি উসমান [রাদি.]-এর কাছে বিষয়টি জানালে উসমান [রাদি.] তাহাদের জিজ্ঞাসাবাদ করিলেন। তারা উভয়ে তা স্বীকার করলো। পরে তিনি তাহাদেরকে বলিলেন, তোমরা এ বিষয়ে কি সম্মত আছো যে, আমি তোমাদের মাঝে এমন ফায়সালা করি যেরূপ ফায়সালা দিয়েছিলেন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]? তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ফায়সালা দিয়েছেনঃ বিছানা যার সন্তান তার। অতঃপর তিনি মহিলা ও পুরুষ উভয়কে বেত্রাঘাত করেন। তারা উভয়েই দাস ও দাসী ছিলো।
{২২৭৫} আহমাদ। সানাদে রাবাহ রয়েছে। ইবনি হিব্বান আস-সিক্বাত গ্রন্থে বলেন ঃ আমি তাহাকে এবং তার পুত্রকে জানি না। হাফিয আত-তাক্বরীব গ্রন্থে বলেন ঃ মাজহুল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ–৩৫ঃ সন্তান লালন–পালনে অধিক হকদার কে?
২২৭৬. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা এক মহিলা বললো, হে আল্লাহর রাসুল! এই সন্তানটি আমার গর্ভজাত, সে আমার স্তনের দুধ পান করেছে এবং আমার কোল তার আশ্রয়স্থল। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। এখন সে সন্তানটিকে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাকে বলিলেনঃ তুমি অন্যত্র বিয়ে না করা পর্যন্ত তুমিই তার অধিক হকদার।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২২৭৭. হিলাল ইবনি উসামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবু মায়মূনাহ সালামাহ নামক মাদীনাহবাসীদের এক সত্যবাদী মুক্তদাস বলেন, একদা আমি আবু হুরায়রা [রাদি.] এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় ফার্সীভাষী জনৈক মহিলা তার একটি সন্তানসহ তার তালাকদাতা স্বামী ও সন্তানের দাবি নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলো। মহিলাটি ফার্সী ভাষায় বললো, হে আবু হুরায়রা! আমার স্বামী আমার সন্তানটি নিয়ে যেতে চাইছে। আবু হুরায়রা [রাদি.] বলিলেন, তোমরা এ সন্তানের বিষয়ে লটারীর মাধ্যমে মীমাংসা করো। তিনি বিদেশী ভাষায় মহিলাকে কথাটি বলিলেন। অতঃপর তার স্বামী এসে বললো, আমার সন্তান আমার থেকে কে কেড়ে নিবে? আবু হুরায়রা [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ! আমি ঐ কথাই বলবো যা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি। তিনি এক মহিলাকে বলেছিলেন, তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। মহিলাটি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার স্বামী আমার থেকে আমার সন্তানটি নিতে চাইছে। অথচ এ সন্তান আবু ইনাবার কূপ থেকে পানি এনে আমাকে পান করায় এবং আমার অনেক খিদমাত করে থাকে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তোমরা উভয়ে লটারীর মাধ্যমে ফায়সালা করো। কিন্তু স্বামী বললো, আমার সন্তান আমার থেকে কে কেড়ে নিবে? নাবী [সাঃআঃ] সন্তানটিকে লক্ষ্য করে বলিলেনঃ ইনি তোমার বাবা এবং ইতি তোমার মা। সুতরাং তুমি এদের যাকে খুশি গ্রহণ করো। তখন সে তার মায়ের হাত ধরে, ফলে মহিলাটি তাহাকে নিয়ে চলে গেলো।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৭৮. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যায়িদ ইবনি হারিসাহ [রাদি.] মক্কার দিকে রওয়ানা হলেন। [অতঃপর মাক্কাহ থেকে] ফেরার সময় তিনি হামযাহ্র [রাদি.] কন্যাটিকে সাথে করে আনলেন। জাফার ইবনি আবু ত্বালিব [রাদি.] বলিলেন, তাহাকে আমি নিবো, আমিই তার অধিক হকদার, কারণ সে আমার চাচার মেয়ে এবং তার খালা আমার স্ত্রী। আর খালা হচ্ছে মায়ের সমতূল্য। আলী [রাদি.] বলিলেন, আমিই তা রঅধিক হকদার, সে আমার চাচার কন্যা এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কন্যা আমার স্ত্রী। সুতরাং আমার স্ত্রীই এর অধিক হকদার। যায়িদ ইবনি হারিসাহ [রাদি.] বলিলেন, আমিই এর বেশি হকদার। কারণ আমিই তাহাকে আনতে গিয়েছি, সফরের কষ্ট স্বীকার করেছি এবং আমিই তাহাকে নিয়ে এসেছি। এ সময় নাবী [সাঃআঃ] বের হয়ে আসলেন। তাঁকে একজন ঘটনাটি বলিলেন। তখন তিনি [সাঃআঃ] বলিলেনঃ কন্যাটির ব্যাপারে আমার ফায়সালা হচ্ছে, সে জাফারের কাছে থাকিবে। সে খালার সাথে অবস্থান করিবে, কেননা খালা তো মায়ের সমতূল্য।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৭৯. আবদুর রহমান ইবনি আবু লায়লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
এই সানাদে উক্ত ঘটনা অপূর্ণাঙ্গভাবে বর্ণিত। বর্ণনাকারী বলেন, নাবী [সাঃআঃ] উক্ত মেয়েটি জাফার [রাদি.]-কে দিলেন। কেননা তার খালা ছিলো জাফারের স্ত্রী।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
২২৮০. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা মাক্কাহ থেকে রওয়ানা হলে হামযাহ [রাদি.]-এর কন্যা আমাদের পিছে পিছে ছুটে এলো এবং হে চাচা! হে চাচা! বলে ডাক দিলো। আলী [রাদি.] তার হইতে ধরে তাহাকে তুলে নিলেন এবং ফাত্বিমাহ [রাদি.]-কে এসে বলিলেন, এই নাও তোমার চাচার মেয়ে। অতএবং ফাত্বিমাহ [রাদি.] তাহাকে গ্রহণ করিলেন। অতঃপর বর্ণনাকারী পূর্ণ হাদিসটি বর্ণনা করে বলেন, জাফার [রাদি.] বলিলেন, সে আমার চাচার মেয়ে, তার খালা আমার স্ত্রী। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] মেয়েটি খালাকে দিলেন এবং বলিলেনঃ খালা মায়ের সমতুল্য।
সন্তান কার কাছে থাকবে -হাদিসের তাহকিকঃ
Leave a Reply