সন্তান কামনা করা । পুরুষের সংখ্যা কম হইবে এবং নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে
সন্তান কামনা করা । পুরুষের সংখ্যা কম হইবে এবং নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৬৭, বিয়ে শাদী, অধ্যায়ঃ (৯৭-১২৬)=৩০টি
৬৭/৯৭. অধ্যায়ঃ আয্ল প্রসঙ্গে
৬৭/৯৮. অধ্যায়ঃ সফরে যেতে ইচ্ছে করলে স্ত্রীদের মধ্যে লটারী করে নেবে।
৬৭/১০০. অধ্যায়ঃ আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ করা।
৬৭/১০২. অধ্যায়ঃ যখন কেউ কুমারী স্ত্রী থাকা অবস্থায় কোন বিধবাকে বিয়ে করে।
৬৭/১০৩. অধ্যায়ঃ যে ব্যাক্তি একই গোসলে একাধিক স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়।
৬৭/১০৪. অধ্যায়ঃ দিনের বেলা স্ত্রীদের নিকট গমন করা।
৬৭/ ১০৫. অধ্যায়ঃ কেউ যদি অসুস্থ হয়ে স্ত্রীদের অনুমতি নিয়ে এক স্ত্রীর কাছে সেবা-শুশ্রূষার জন্য থাকে যদি তাকে সবাই অনুমতি দেয়।
৬৭/১০৬. অধ্যায়ঃ এক স্ত্রীকে অন্য স্ত্রীর চেয়ে অধিক ভালবাসা
৬৭/১০৭. অধ্যায়ঃ কোন নারীর কৃত্রিম সাজ-সজ্জা করা এবং সতীনের মুকাবিলায় গর্ব প্রকাশ করা নিষেধ।
৬৭/১০৮. অধ্যায়ঃ আত্মমর্যাদাবোধ।
৬৭/১০৯. অধ্যায়ঃ মহিলাদের বিরোধিতা এবং তাদের ক্রোধ।
৬৭/১১০. অধ্যায়ঃ কন্যার মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা প্রদান এবং ইনসাফমূলক কথা।
৬৭/১১১. অধ্যায়ঃ পুরুষের সংখ্যা কম হইবে এবং নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে।
৬৭/১১২. অধ্যায়ঃ মাহরাম অর্থাৎ যার সঙ্গে বিয়ে হারাম সে ব্যতীত অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে কোন নারী নির্জনে দেখা করিবে না এবং স্বামীর অসাক্ষাতে কোন নারীর কাছে কোন পুরুষের গমন (হারাম)।
৬৭/১১৩. অধ্যায়ঃ লোকজন না থাকলে স্ত্রীলোকের সঙ্গে পুরুষের কথা বলা জায়িজ।
৬৭/১১৪. অধ্যায়ঃ নারীর বেশধারী পুরুষের নিকট নারীর প্রবেশ নিষিদ্ধ।
৬৭/১১৫. অধ্যায়ঃ সন্দেহজনক না হলে হাবশী বা অনুরূপ লোকদের প্রতি মহিলারা দৃষ্টি দিতে পারবে।
৬৭/১১৬. অধ্যায়ঃ প্রয়োজন দেখা দিলে মেয়েদের ঘরের বাইরে যাতায়াত।
৬৭/১১৭. অধ্যায়ঃ মসজিদে অথবা অন্য কোথাও যাবার জন্য মহিলাদের স্বামীর অনুমতি গ্রহণ।
৬৭/১১৮. অধ্যায়ঃ দুধ সম্পর্কীয় মহিলাদের নিকট গমন করা এবং তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করার বৈধতা সম্পর্কে।
৬৭/১১৯. অধ্যায়ঃ কোন মহিলা তার দেখা আরেক মহিলার দেহের বর্ণনা নিজের স্বামীর কাছে দিবে না।
৬৭/১২০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তির এ কথা বলা যে, নিশ্চয়ই আজ রাতে সে তার সকল স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হইবে।
৬৭/১২১. অধ্যায়ঃ দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর রাতে পরিবারের নিকট ঘরে প্রবেশ করা উচিত নয়, যাতে করে কোন কিছু তাকে আপন পরিবার সম্পর্কে সন্দিহান করে তোলে, অথবা তাদের অপ্রীতিকর কিছু চোখে পড়ে।
৬৭/১২২. অধ্যায়ঃ সন্তান কামনা করা।
৬৭/১২৩. অধ্যায়ঃ অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করিবে এবং এলোকেশী নারী (মাথায়) চিরুনি করে নিবে।
৬৭/১২৪. অধ্যায়ঃ “তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাই – এর ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের মহিলাগণ, স্বীয় মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনামুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (সুরা আন-নূর ২৪/৩১)
৬৭/১২৫. অধ্যায়ঃ যারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়নি। (সুরা আন-নূর ২৪/৫৮)
৬৭/১২৬. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তার সাথীকে বলা যে, তোমরা কি গত রাতে যৌন সঙ্গম করেছ? এবং ধমক দেয়া কালে কোন ব্যক্তির নিজ কন্যার কোমরে আঘাত করা।
৬৭/৯৭. অধ্যায়ঃ আয্ল প্রসঙ্গে
৫২০৭
জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর যুগে আমরা আযল করতাম। (আঃপ্রঃ- ৪৮২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৮)
৫২০৮
জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আযল করতাম। সে সময় কুরআন অবতীর্ণ হচ্ছিল।(আঃপ্রঃ- ৪৮২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৯)
৫২০৯
অন্য সূত্র থেকেও জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর যুগে এবং কুরআন অবতীর্ণ হওয়াকালে আযল করতাম।[৫২০৭; মুসলিম ত্বলাক/২১, হাদীস ১৪৪০, আহমাদ ১৪৩২২](আঃপ্রঃ- ৪৮২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৯)
৫২১০
আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধকালীন সময়ে গানীমাত হিসাবে কিছু দাসী পেয়েছিলাম। আমরা তাদের সঙ্গে আয্ল করতাম। এরপর আমরা এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি উত্তরে বললেনঃ কী! তোমারা কি এমন কাজও কর? একই প্রশ্ন তিনি তিনবার করিলেন এবং পরে বলিলেন, ক্বিয়ামাত পর্যন্ত যে রূহ পয়দা হবার, তা অবশ্যই পয়দা হইবে। (আঃপ্রঃ- ৪৮২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩০)
৬৭/৯৮. অধ্যায়ঃ সফরে যেতে ইচ্ছে করলে স্ত্রীদের মধ্যে লটারী করে নেবে।
৫২১১
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখনই নাবী (সাঃআঃ) সফরে যাবার ইরাদা করিতেন, তখনই স্ত্রীগণের মাঝে লটারী করিতেন। এক সফরের সময় আয়িশা (রাদি.) এবং হাফসাহ (রাদি.) – এর নাম লটারীতে ওঠে। নাবী (সাঃআঃ) – এর রীতি ছিল যখন রাত হত তখন আয়িশা (রাদি.) – এর সঙ্গে এক সওয়ারীতে আরোহণ করিতেন এবং তাহাঁর সাথে কথা বলিতে বলিতে পথ চলতেন। এক রাতে হাফসাহ (রাদি.) আয়িশা (রাদি.) – কে বলিলেন, আজ রাতে তুমি কি আমার উটে আরোহণ করিবে এবং আমি তোমার উটে, যাতে করে আমি তোমাকে এবং তুমি আমাকে এক নতুন অবস্থায় দেখিতে পাবে? আয়িশা (রাদি.) উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, আমি রাযী আছি। সে হিসাবে আয়িশা (রাদি.) হাফসাহ (রাদি.) – এর উটে এবং হাফসাহ (রাদি.) আয়িশা (রাদি.) – এর উটে সওয়ার হলেন। নাবী (সাঃআঃ) আয়িশা (রাদি.)-এর নির্ধারিত উটের কাছে এলেন, যার ওপর হাফসাহ (রাদি.) বসা ছিলেন। তিনি তাকে সালাম দিলেন এবং তাহাঁর পার্শ্বে বসে সফর করিলেন। পথিমধ্যে এক স্থানে সবাই অবতরণ করিলেন। আয়িশা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) – এর সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হলেন। যখন তাঁরা সকলেই অবতরণ করিলেন তখন আয়িশা (রাদি.) নিজ পা দুটি ইযখির নামক ঘাসের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে বলিতে লাগলেন, হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য কোন সাপ বা বিচ্ছু পাঠিয়ে দাও, যাতে আমাকে দংশন করে। কেননা, আমি এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – কে কিছু বলিতে পারব না। [মুসলিম ৪৪/১৩, হাদীস ২৪৪৫] (আঃপ্রঃ- ৪৮২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩১)
৬৭/৯৯. অধ্যায়ঃ যে স্ত্রী স্বামীকে নিজের পালার দিন সতীনকে দিয়ে দেয় এবং এটা কীভাবে ভাগ করিতে হইবে?
৫২১২
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সওদা বিনতে যামআহ (রাদি.) তাহাঁর পালার রাত আয়িশা (রাদি.) – কে দান করেছিলেন। নাবী (সাঃআঃ) আয়িশা (রাদি.) – এর জন্য দুদিন বরাদ্দ করেন- আয়িশা (রাদি.)-র দিন এবং সওদা (রাদি.)-র দিন।(আঃপ্রঃ- ৪৮২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩২)
৬৭/১০০. অধ্যায়ঃ আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ করা।
আল্লাহ বলেন, “তোমরা কক্ষনো স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করিতে পারবে না যদিও প্রবল ইচ্ছে কর… আল্লাহ প্রশস্ততার অধিকারী, মহাকুশলী।” (সুরা আন্-নিসা ৪/১২৯-১৩০)
৬৭/১০১. অধ্যায়ঃ
যখন কেউ সাইয়্যেবা স্ত্রী [২০] থাকা অবস্থায় কুমারী মেয়ে বিয়ে করে।
[২০] যে স্বামী মারা যাবার পর বা তালাকপ্রাপ্তা হবার পর পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।
৫২১৩
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) – এর সুন্নত এই যে, যদি কেউ কুমারী মেয়ে বিয়ে করে, তবে তার সাথে সাত দিন-রাত্রি যাপন করিতে হইবে আর যদি কেউ কোন বিধবা মহিলাকে বিয়ে করে, তাহলে তার সঙ্গে তিন দিন যাপন করিতে হইবে।[৫২১৪; মুসলিম ১৭/১২, হাদীস ১৪৬১, আহমাদ ১২৯৭০](আঃপ্রঃ- ৪৮৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৩)
৬৭/১০২. অধ্যায়ঃ যখন কেউ কুমারী স্ত্রী থাকা অবস্থায় কোন বিধবাকে বিয়ে করে।
৫২১৪
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) – এর সুন্নাত হচ্ছে, যদি কেউ বিধবা স্ত্রী থাকা অবস্থায় কুমারী বিয়ে করে তবে সে যেন তার সঙ্গে সাত দিন অতিবাহিত করে এবং এরপর পালা অনুসারে এবং কেউ যদি কোন বিধবাকে বিয়ে করে এবং তার ঘরে পূর্ব থেকেই কুমারী স্ত্রী থাকে তবে সে যেন তার সঙ্গে তিন দিন কাটায় এবং তারপর পালাক্রমে। আবু কিলাবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি ইচ্ছে করলে বলিতে পারতাম যে, আনাস (রাদি.) এ হাদীসে রাসুল (সাঃআঃ) পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। আবদুর রাযযাক (রাহ.) বলেন, আমি ইচ্ছে করলে বলিতে পারতাম যে, খালেদ হাদীস রাসুল (সাঃআঃ) পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। (আঃপ্রঃ- ৪৮৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৪)
৬৭/১০৩. অধ্যায়ঃ যে ব্যাক্তি একই গোসলে একাধিক স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়।
৫২১৫
ক্বাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) বর্ণনা করিয়াছেন যে, নাবী (সাঃআঃ) একই রাত্রে সকল স্ত্রীর নিকট গমন করিয়াছেন। ঐ সময় তাহাঁর নজন স্ত্রী ছিল।(আঃপ্রঃ- ৪৮৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫)
৬৭/১০৪. অধ্যায়ঃ দিনের বেলা স্ত্রীদের নিকট গমন করা।
৫২১৬
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নাবী (সাঃআঃ) আসরের সলাত শেষ করিতেন, তখন স্বীয় স্ত্রীদের মধ্য থেকে যে কোন একজনের নিকট গমন করিতেন। একদিন তিনি স্ত্রী হাফসাহ (রাদি.) – এর কাছে গেলেন এবং সাধারণতঃ যে সময় কাটান তার চেয়ে বেশি সময় কাটালেন।(আঃপ্রঃ- ৪৮৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৬)
৬৭/ ১০৫. অধ্যায়ঃ কেউ যদি অসুস্থ হয়ে স্ত্রীদের অনুমতি নিয়ে এক স্ত্রীর কাছে সেবা-শুশ্রূষার জন্য থাকে যদি তাকে সবাই অনুমতি দেয়।
৫২১৭
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর যে অসুখে ইন্তিকাল করেছিলেন, সেই অসুখের সময় জিজ্ঞেস করিতেন, আগামীকাল আমার কার কাছে থাকার পালা? আগামীকার আমার কার কাছে থাকার পালা? তিনি আয়িশা (রাদি.) – এর পালার জন্য এরূপ বলিতেন। সুতরাং উম্মাহাতুল মুমিনীন তাঁকে যার ঘরে ইচ্ছে থাকার অনুমতি দিলেন এবং তিনি আয়িশা (রাদি.) – এর ঘরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আয়িশা (রাদি.) বলেন, আমার পালার দিনই আল্লাহ তাঁকে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন এ অবস্থায় যে, আমার বুক ও গলার মাঝখানে তাহাঁর বুক ও মাথা ছিল এবং তাহাঁর মুখের লালা আমার মুখের লালার সঙ্গে মিশেছিল। [২১] (আঃপ্রঃ- ৪৮৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৭)
[২১] আয়িশা (রাদি.) কাঁচা মিসওয়াক চিবিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – কে দিলেন এবং তিনি নিজ দাঁত দ্বারা চিবালেন, এভাবে একজনের মুখের লালা অন্যের মুখের লালার সঙ্গে মিশ্রিত হল।
৬৭/১০৬. অধ্যায়ঃ এক স্ত্রীকে অন্য স্ত্রীর চেয়ে অধিক ভালবাসা
৫২১৮
ইবনু আব্বাস (রাদি.) উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
উমার (রাদি.) হাফসাহ (রাদি.) – এর কাছে প্রবেশ করিলেন এবং বলিলেন, হে আমার কন্যা! তার আচরণ-ব্যবহার দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ো না, কারণ সে তার সৌন্দর্য ও তার প্রতি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর ভালবাসার কারণে গর্ব অনুভর করে। এ কথার দ্বারা তিনি আয়িশা (রাদি.) – কে বুঝিয়েছিলেন। তিনি আরো বলিলেন, আমি এ ঘটনা আল্লাহর রসূলের কাছে বললাম। তিনি এ কথা শুনে মুচকি হাসলেন। (আঃপ্রঃ- ৪৮৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৮)
৬৭/১০৭. অধ্যায়ঃ কোন নারীর কৃত্রিম সাজ-সজ্জা করা এবং সতীনের মুকাবিলায় গর্ব প্রকাশ করা নিষেধ।
৫২১৯
আসমা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, কোন এক মহিলা বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার সতীন আছে। এখন তাকে রাগানোর জন্য যদি আমার স্বামী আমাকে যা দেয়নি তা বাড়িয়ে বলি, তাকে কি কোন দোষ আছে? রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃযা তোমাকে দেয়া হয়নি, তা দেয়া হয়েছে বলা ঐরূপ প্রতারকের কাজ, যে প্রতারণার জন্য দুপ্রস্থ মিথ্যার পোশাক পরিধান করিল।[মুসলিম ৩৭/৩৫, হাদীস ২১৩০, আহমাদ ২৬৯৮৭] (আঃপ্রঃ- ৪৮৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৯)
৬৭/১০৮. অধ্যায়ঃ আত্মমর্যাদাবোধ।
সাদ ইবনু উবাদাহ (রাদি.) বলিলেন, আমি যদি অন্য কোন পুরুষকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে দেখিতে পাই; তাহলে আমি তাকে তরবারির ধারালো দিক দিয়ে আঘাত করব অর্থাৎ হত্যা করব। নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর সাহাবিগণকে বলিলেন, তোমরা কি সাদের আত্মমর্যাদাবোধের কারণে আশ্চর্যান্বিত হচ্ছ? (আল্লাহর কসম!) আমার আত্মমর্যাদাবোধ তার চেয়েও অনেক অধিক এবং আল্লাহর আত্মমর্যাদাবোধ আমার চেয়েও অনেক অধিক।
৫২২০
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, আল্লাহর চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাশীল কেউ নয় এবং এ কারণেই তিনি সকল অশ্লীল কাজ হারাম করিয়াছেন আর (আল্লাহর) প্রশংসার চেয়ে আল্লাহর অধিক প্রিয় কিছু নেই।(আঃপ্রঃ- ৪৮৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪০)
৫২২১
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, হে উম্মতে মুহাম্মদী! আল্লাহর চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাবোধ আর কারো নেই। তিনি তাহাঁর কোন বান্দা নর হোক কি নারী হোক তার ব্যভিচার তিনি দেখিতে চান না। হে উম্মতে মুহাম্মদী! যা আমি জানি, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে হাসতে খুব কম এবং কাঁদতে অধিক অধিক।(আঃপ্রঃ- ৪৮৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪১)
৫২২২
আসমা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুল (সাঃআঃ) – কে বলিতে শুনিয়াছি: আল্লাহর চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাবোধ আর কারো নেই।(আঃপ্রঃ- ৪৮৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪২)
৫২২৩
আবু হুরায়রা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন যে, আল্লাহ তাআলার আত্মমর্যাদাবোধ আছে এবং আল্লাহর আত্মমর্যাদাবোধ এই যে, যেন কোন মুমিন বান্দা হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে না পড়ে।[মুসলিম ৪৯/৬, হাদীস ২৭৬২, আহমাদ ৯০৩৮] (আঃপ্রঃ- ৪৮৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৩)
৫২২৪
আসমা বিনতে আবু বক্র (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন যুবায়র (রাদি.) আমাকে বিয়ে করিলেন, তখন তার কাছে কোন ধন-সম্পদ ছিল না, এমন কি কোন স্থাবর জমি-জমা, দাস-দাসীও ছিল না; শুধুমাত্র কুয়ো থেকে পানি উত্তেলনকারী একটি উট ও একটি ঘোড়া ছিল। আমি তাহাঁর উট ও ঘোড়া চরাতাম, পানি পান করাতাম এবং পানি উত্তোলনকারী মশক ছিঁড়ে গেলে সেলাই করতাম, আটা পিষতাম, কিন্তু ভালো রুটি তৈরি করিতে পারতাম না। তাই আনসারী প্রতিবেশী মহিলারা আমার রুটি তৈরিতে সাহায্য করত। আর তারা ছিল খুবই উত্তম নারী। রাসুল (সাঃআঃ) যুবায়র (রাদি.) – কে একখন্ড জমি দিয়েছিলেন। আমি সেখান থেকে মাথায় করে খেজুরের আঁটির বোঝা বহন করে আনতাম। ঐ জমির দূরত্ব ছিল প্রায় দুমাইল। একদিন আমি মাথায় করে খেজুরের আঁটি বহন করে নিয়ে আসছিলাম। এমন সময় রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর সাক্ষাৎ হল, তখন রাসুল (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে কয়েকজন আনসারও ছিল। নাবী (সাঃআঃ) আমাকে ডাকলেন এবং আমাকে তাহাঁর উটের পিঠে বসার জন্য তাহাঁর উটকে আখ্! আখ্! বলিলেন, যাতে উটটি বসে এবং আমি তাহাঁর পিঠে আরোহণ করিতে পারি। আমি পরপুরুষের সঙ্গে একত্রে যাওয়ার ব্যাপারে লজ্জাবোধ করিতে লাগলাম এবং যুবায়র (রাদি.) – এর আত্মসম্মানবোধের কথা আমার মনে পড়ল। কেননা, সে ছিল খুব আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বুঝতে পারলেন, আমি খুব লজ্জাবোধ করছি। সুতরাং তিনি এগিয়ে চললেন। আমি যুবায়ার (রাদি.) – এর কাছে পৌছালাম এবং বললাম, আমি খেজুরের আঁটির বোঝা মাথায় নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে রাসুল (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে আমার দেখা হয় এবং তাহাঁর সঙ্গে কিছু সংখ্যক সহাবী ছিলেন। তিনি তাহাঁর উটকে হাঁটু গেড়ে বসালেন, যেন আমি তাতে সওয়ার হইতে পারি। কিন্তু আমি তোমার আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে লজ্জা অনুভব করলাম। এ কথা শুনে যুবায়ের (রাদি.) বলিলেন, আল্লাহর কসম! খেজুরের আঁটির বোঝা মাথায় বহন করা তাহাঁর সঙ্গে উট চড়ার চেয়ে আমার কাছে অধিক লজ্জাজনক। এরপর আবু বক্র সিদ্দীক (রাদি.) ঘোড়ার দেখাশুনার জন্য আমার সাহায্যের নিমিত্ত একজন খাদিম পাঠিয়ে দিলেন। এরপরই আমি যেন মুক্ত হলাম। [৩১৫১; মুসলিম ৩৯/১৪, হাদীস ২১৮২, আহমাদ ২৭০০৩] (আঃপ্রঃ- ৪৮৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৪)
৫২২৫
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় রাসুল (সাঃআঃ) তার একজন স্ত্রীর কাছে ছিলেন। ঐ সময় উম্মুহাতুল মুমিনীনের আর একজন একটি পাত্রে কিছু খাদ্য পাঠালেন। যে স্ত্রীর ঘরে নাবী (সাঃআঃ) অবস্থান করছিলেন সে স্ত্রী খাদিমের হাতে আঘাত করিলেন। ফলে খাদ্যের পাত্রটি পড়ে ভেঙ্গে গেল। নাবী (সাঃআঃ) পাত্রের ভাঙ্গা টুকরোগুলো কুড়িয়ে একত্রিত করিলেন, তারপর খাদ্যগুলো কুড়িয়ে তাতে রাখলেন এবং বলিলেন, তোমাদের আম্মাজীর আত্মমর্যাদাবোধে আঘাত লেগেছে। তারপর তিনি খাদিমকে অপেক্ষা করিতে বলিলেন এবং যে স্ত্রীর কাছে ছিলেন তাহাঁর নিকট হইতে একটি পাত্র নিয়ে যার পাত্র ভেঙ্গেছিল, তার কাছে পাঠালেন এবং ভাঙ্গা পাত্রটি যে ভেঙ্গেছিল তার ঘরেই রাখলেন। (আঃপ্রঃ- ৪৮৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৫)
৫২২৬
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করে একটি প্রাসাদ দেখিতে পেলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম, এটি কার প্রাসাদ? তাঁরা (ফেরেশতাগণ) বলিলেন, এ প্রাসাদটি উমার ইবনু খাত্তাব (রাদি.) – এর। আমি তার মধ্যে প্রবেশ করিতে চাইলাম; কিন্তু [তিনি সেখান উপস্থিত উমার (রাদি.) – এর উদ্দেশে বলিলেন] তোমার আত্মমর্যাদাবোধ আমাকে সেখানে প্রবেশে বাধা দিল। এ কথা শুনে উমার (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! আপানার কাছেও আমি (উমার) আত্মমর্যাদাবোধ প্রকাশ করব?(আঃপ্রঃ- ৪৮৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৬)
৫২২৭
আবু হুরায়রা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর কাছে বসা ছিলাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, আমি একদিন ঘুমন্ত অবস্থায় জান্নাতে একটি প্রাসাদের পার্শ্বে একজন মহিলাকে ওযু করিতে দেখলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই প্রাসাদটি কার? আমাকে বলা হলো, এটা উমার (রাদি.) – এর। তখন আমি উমারের আত্মমর্যাদার কথা স্মরন করে পিছন ফিরে চলে এলাম। এ কথা শুনে উমার (রাদি.) সেই মজলিসেই কাঁদতে লাগলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার কাছেও কি আত্মসম্মানবোধ প্রকাশ করব।(আঃপ্রঃ- ৪৮৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৭)
৬৭/১০৯. অধ্যায়ঃ মহিলাদের বিরোধিতা এবং তাদের ক্রোধ।
৫২২৮
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, “আমি জানি কখন তুমি আমার প্রতি খুশী থাক এবং কখন রাগান্বিত হও।” আমি বললাম, কি করে আপনি তা বুঝতে সক্ষম হন? তিনি বলিলেন, তুমি প্রসন্ন থাকলে বল, না! মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) – এর রব-এর কসম! কিন্তু তুমি আমার প্রতি নারাজ থাকলে বল, না! ইবরাহীম (আঃ) – এর রব-এর কসম! শুনে আমি বললাম, আপনি ঠিকই বলেছেন। আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রাসুল! সে ক্ষেত্রে শুধু আপনার নাম উচ্চারণ করা থেকেই বিরত থাকি। (আঃপ্রঃ- ৪৮৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৮)
৫২২৯
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর স্ত্রীগণের মধ্য থেকে খাদীজাহ (রাদি.) – এর চেয়ে অন্য কোন স্ত্রীর প্রতি অধিক হিংসা করিনি। কারণ, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) প্রায় তাহাঁর কথা স্মরণ করিতেন এবং তাহাঁর প্রশংসা করিতেন। তাছাড়াও রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – কে ওয়াহীর মাধ্যমে তাঁকে [খাদীজাহ (রাদি.)] – কে জান্নাতের মধ্যে একটি মতির প্রাসাদের সুসংবাদ দেবার জন্য জ্ঞাত করানো হয়েছিল।[২৬৪৪, ৩৮১৬; মুসলিম ৪৪/১৩, হাদীস ২৪৩৯, আহমাদ ২৪৩৭২](আঃপ্রঃ- ৪৮৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৯)
৬৭/১১০. অধ্যায়ঃ কন্যার মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা প্রদান এবং ইনসাফমূলক কথা।
৫২৩০
মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – কে মিম্বরে বসে বলিতে শুনিয়াছি যে, বনি হিশাম ইবনু মুগীরাহ, আলী ইবনু আবু ত্বলিবের কাছে তাদের মেয়ে বিয়ে দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে; কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আলী ইবনু আবু ত্বলিব আমার কন্যাকে ত্বলাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে বিয়ে করিতে পারে। কেননা, ফাতিমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে; আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।(আঃপ্রঃ- ৪৮৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫০)
৬৭/১১১. অধ্যায়ঃ পুরুষের সংখ্যা কম হইবে এবং নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে।
আবু মূসা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, (এমন একটা সময় আসবে যখন) একজন পুরষকে দেখিতে পাবে তার পেছনে চল্লিশজন নারী অনুসরন করছে আশ্রয়ের জন্য। কেননা, তখন পুরুষের সংখ্যা অনেক কমে যাবে আর নারীর সংখ্যা বর্ধিত হইবে।
৫২৩১
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি তোমাদের কাছে একটি হাদীস বর্ণনা করব, যা আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে শুনিয়াছি এবং আমি ব্যতীত আর কেউ সে হাদীস বলিতে পারবে না। আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – কে বলিতে শুনিয়াছি, ক্বিয়ামতের আলামতের মধে রহিয়াছে ইল্ম ওঠে যাবে, অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে, মদ্য পানের মাত্রা বেড়ে যাবে, পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে এবং নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে যে, একজন পুরুষকে পঞ্চাশজন নারীর দেখাশোনা করিতে হইবে।(আঃপ্রঃ- ৪৮৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫১)
৬৭/১১২. অধ্যায়ঃ মাহরাম অর্থাৎ যার সঙ্গে বিয়ে হারাম সে ব্যতীত অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে কোন নারী নির্জনে দেখা করিবে না এবং স্বামীর অসাক্ষাতে কোন নারীর কাছে কোন পুরুষের গমন (হারাম)।
৫২৩২
উকবাহ ইবনু আমির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, মহিলাদের নিকট একাকী যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসার জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রাসুল! দেবরের ব্যাপারে কি হুকুম? তিনি উত্তর দিলেন দেবর হচ্ছে মৃত্যুতুল্য। [মুসলিম ৩৯/৮, হাদীস ২১৭২, আহমাদ ১৭৩৫২] (আঃপ্রঃ- ৪৮৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫২)
[২২] ———- শব্দের অর্থের ব্যাপারে ইমাম তিরমিযী বলেছেন- হামো মানে স্বামীর ভাই –স্বামীর ছোট হোক বা বড়। ইমাম লাইস বলেছেন- হামো হচ্ছে স্বামীর ভাই, আর তার মত স্বামীর অপরাপর নিকটবর্তী লোকেরা যেমন চাচাত, মামাত, ফুফাত ভাই ইত্যাদি। বরং এর সঠিক অর্থে বুঝা যায় – স্বামীর ভাই, স্বামীর ভাই পো, স্বামীর চাচা, চাচাতো ভাই, ভাগ্নে এবং এদেরই মত অন্যসব পুরুষ যাদের সাথে এ মেয়েলোকের বিয়ে হইতে পারে- যদি না সে বিবাহিতা হয়। কিন্তু নাবী (সাঃআঃ) এদের মৃত্যু বা মৃত্যুদূত বলিলেন কেন? এর কারণস্বরূপ বলা হয়েছে –
সাধারন প্রচলিত নিয়ম ও লোকদের অভ্যাসই হচ্ছে যে, এসব নিকটাত্মীয়ের ব্যাপারে উপেক্ষা প্রদর্শন করা হয়। (এবং এদের পারস্পরিক মেলামেশায় কোন দোষ মনে করা হয় না) ফলে ভাই ভাইর বউ – এর সাথে একাকীত্বে মিলিত হয়। এভাবে একাকীত্বে মিলিত হওয়াকে তোমরা ভয় কর যেমনভাবে তোমরা মৃত্যুকে ভয় কর। আল্লামা কাযী ইয়ায বলেছেন – স্বামীর এসব নিকটাত্মীয়ের সাথে স্ত্রীর (কিংবা স্ত্রীর এসব নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে স্বামীর) গোপন মেলামেশা নৈতিক ধ্বংস টেনে আনে। ইমাম কুরতুবী বলেছেন- এ ধরনের লোকদের সাথে গোপন মিলন নীতি ও ধর্মের মৃত্যু ঘটায় কিংবা স্বামীর আত্মসম্মানবোধ তীব্র হওয়ার পরিণামে তাকে তালাক দেয় বলে তার দাম্পত্য জীবনের মৃত্যু ঘটে। কিংবা এদের কারো সাথে যদি জ্বেনায় লিপ্ত হয়, তাহলে তাকে সঙ্গেসার করার দন্ড দেয়া হয়, ফলে তার জৈবিক মৃত্যুও ঘটে। আল্লামা তাবারী বলেছেন, যে কোন অপছন্দনীয় ব্যাপারকে আরবরা মৃত্যু বলে আখ্যায়িত করত।
৫২৩৩
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, মাহরামের বিনা উপস্থিতিতে কোন পুরুষ কোন নারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিবে না। এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার স্ত্রী হাজ্জ করার জন্য বেরিয়ে গেছে এবং অমুক অমুক জিহাদে অংশগ্রহনের জন্য আমার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, ফিরে যাও এবং তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হাজ্জ সম্পন্ন কর। (আঃপ্রঃ- ৪৮৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৩)
৬৭/১১৩. অধ্যায়ঃ লোকজন না থাকলে স্ত্রীলোকের সঙ্গে পুরুষের কথা বলা জায়িজ।
৫২৩৪
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক আনসারী মহিলা নাবী (সাঃআঃ) – এর নিকট এলে, তিনি তাকে একান্তে বলিলেন, আল্লাহর কসম! তোমরা (আনসাররা) আমার কাছে সকল লোকের চেয়ে অধিক প্রিয়।(আঃপ্রঃ- ৪৮৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৪)
৬৭/১১৪. অধ্যায়ঃ নারীর বেশধারী পুরুষের নিকট নারীর প্রবেশ নিষিদ্ধ।
৫২৩৫
উম্মু সালামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তার কাছে থাকাকালে সেখানে একজন মেয়েলী পুরুষ ছিল। ঐ মেয়েলী পুরুষটি উম্মু সালামার ভাই আবদুল্লাহ ইবনু আবু উমাইয়াকে বলিল, যদি আগামীকাল আপনাদেরকে আল্লাহ তায়েফ বিজয় দান করেন, তবে আমি আপনাকে গায়লানের মেয়েকে গ্রহণ করার পরামর্শ দিচ্ছি। কেননা, সে এত মেদবহুল যে, সে সম্মুখ দিকে আগমন করলে তার পেটে চার ভাঁজ পড়ে আর পিছু ফিরে যাবার সময় আট ভাঁজ পড়ে। এ কথা শুনে নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, সে যেন কখনো তোমাদের কাছে আর না আসে।(আঃপ্রঃ- ৪৮৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৫)
৬৭/১১৫. অধ্যায়ঃ সন্দেহজনক না হলে হাবশী বা অনুরূপ লোকদের প্রতি মহিলারা দৃষ্টি দিতে পারবে।
৫২৩৬
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদিন হাবশীদের খেলা দেখছিলাম। তারা মসজিদের আঙ্গিনায় খেলা খেলছিল। আমি খেলা দেখে ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেখছিলাম। তখন নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর চাদর দিয়ে আমাকে আড়াল করে রেখেছিলেন। তোমরা অনুমান কর যে, অল্পবয়স্কা মেয়েরা খেলাধূলা দেখিতে কী পরিমান আগ্রহী!(আঃপ্রঃ- ৪৮৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৬)
৬৭/১১৬. অধ্যায়ঃ প্রয়োজন দেখা দিলে মেয়েদের ঘরের বাইরে যাতায়াত।
৫২৩৭
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে উম্মুহাতুল মুমিনীন সওদা বিনত জামআ (রাদি.) কোন কারণে বাইরে গেলেন। উমার (রাদি.) তাঁকে দেখে চিনে ফেললেন। তিনি বলিলেন, আল্লাহর কসম! হে সাওদা! তুমি নিজেকে আমাদের নিকট হইতে লুকাতে পারনি। এতে তিনি নাবী (সাঃআঃ) – এর নিকট ফিরে গেলেন এবং উক্ত ঘটনা তাহাঁর কাছে বলিলেন। তিনি তখন আমার ঘরে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন এবং তাহাঁর হাতে গোশ্তওয়ালা একখানা হাড় ছিল। এমন তাহাঁর কাছে ওয়াহী অবতীর্ণ হল। ওয়াহী শেষ হলে নাবী (সাঃআঃ) বলিলেন, আল্লাহ তাআলা প্রয়োজনে তোমাদেরেকে বাইরে যাবার অনুমতি দিয়েছেন।(আঃপ্রঃ- ৪৮৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৭)
৬৭/১১৭. অধ্যায়ঃ মসজিদে অথবা অন্য কোথাও যাবার জন্য মহিলাদের স্বামীর অনুমতি গ্রহণ।
৫২৩৮
সালিমের পিতা [ইবনু উমার (রাদি.)] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, তোমাদের কারো স্ত্রী মসজিদে যাবার অনুমতি চাইলে তাকে নিষেধ করো না।(আঃপ্রঃ- ৪৮৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৮)
৬৭/১১৮. অধ্যায়ঃ দুধ সম্পর্কীয় মহিলাদের নিকট গমন করা এবং তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করার বৈধতা সম্পর্কে।
৫২৩৯
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার দুধ সম্পর্কের চাচা এলেন এবং আমার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন; কিন্তু আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর কাছে অনুমতি নেয়া ব্যতিত তাকে প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আসার পর তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, তিনি হচ্ছে তোমার চাচা। কাজেই তাকে ভিতরে আসার অনুমতি দাও। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে মহিলা দুধ পান করিয়েছেন, কোন পুরুষ আমাকে দুধ পান করায়নি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলিলেন, সে তোমার চাচা, কাজেই তাঁকে তোমার কাছে আসার অনুমতি দাও। আয়িশা (রাদি.) বলেন, এটা – পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হবার পরের ঘটনা। তিনি আরও বলেন, জন্মসূত্রে যারা হারাম, দুধ সম্পর্কেও তারা হারাম। (আঃপ্রঃ- ৪৮৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৯)
৬৭/১১৯. অধ্যায়ঃ কোন মহিলা তার দেখা আরেক মহিলার দেহের বর্ণনা নিজের স্বামীর কাছে দিবে না।
৫২৪০
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন: কোন নারী যেন তার দেখা অন্য নারীর দেহের বর্ণনা নিজ স্বামীর নিকট এমনভাবে না দেয়, যেন সে তাকে (ঐ নারীকে) চাক্ষুস দেখিতে পাচ্ছে। (আঃপ্রঃ- ৪৮৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬০)
৫২৪১
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন: কোন নারী যেন তার দেখা অন্য নারীর দেহের বর্ণনা নিজ স্বামীর নিকট এমনভাবে না দেয়, যেন সে তাকে (ঐ নারীকে) দেখিতে পাচ্ছে।(আঃপ্রঃ- ৪৮৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬১)
৬৭/১২০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তির এ কথা বলা যে, নিশ্চয়ই আজ রাতে সে তার সকল স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হইবে।
৫২৪২
আবু হুরায়রার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দাউদ (আঃ) – এর পুত্র সুলায়মান (আঃ) একদা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আজ রাতে আমি আমার একশ স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব এবং তাদের প্রত্যেকেই একটি করে পুত্র সন্তান প্রসব করিবে, যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করিবে। এ কথা শুনে একজন ফেরেশতা বলেছিলেন, আপনি ইনশাআল্লাহ বলুন; কিন্তু তিনি এ কথা ভুলক্রমে বলেননি। এরপর তিনি তার স্ত্রীগণের সঙ্গে মিলিত হলেন; কিন্তু তাদের কেউ কোন সন্তান প্রসব করিল না। কেবল এক স্ত্রী একটি অপূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করিল। নাবী (সাঃআঃ) বলেন, যদি সুলায়মান (আঃ) ইনশাআল্লাহ বলেতেন, তাহলে তাহাঁর শপথ ভঙ্গ হত না। আর তাতেই ভালোভাবে তার আশা মিটত।(আঃপ্রঃ- ৪৮৪৮৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬২)
৬৭/১২১. অধ্যায়ঃ দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর রাতে পরিবারের নিকট ঘরে প্রবেশ করা উচিত নয়, যাতে করে কোন কিছু তাকে আপন পরিবার সম্পর্কে সন্দিহান করে তোলে, অথবা তাদের অপ্রীতিকর কিছু চোখে পড়ে।
৫২৪৩
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সফর থেকে এসে রাতে ঘরে প্রবেশ করা অপছন্দ করিতেন। (আঃপ্রঃ- ৪৮৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৩)
৫২৪৪
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়ে রাতে আকস্মিকভাবে তার ঘরে যেন প্রবেশ না করে।(আঃপ্রঃ- ৪৮৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৪)
৬৭/১২২. অধ্যায়ঃ সন্তান কামনা করা।
৫২৪৫
জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক যুদ্ধে আমি রাসুল (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে ছিলাম। যখন আমরা ফিরে আসছিলাম, আমি আমার ধীর গতিসম্পন্ন উটকে দ্রুত হাঁকালাম। তখন আমার পিছনে একজন আরোহী এসে মিলিত হলেন। তাকিয়ে দেখলাম যে, তিনি রাসুল (সাঃআঃ)। তিনি বলিলেন, তোমার এ ব্যস্ততা কেন? আমি বললাম, আমি সদ্য বিয়ে করেছি। তিনি বলিলেন, কুমারী, না পুর্ব-বিবাহিতা বিয়ে করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা। তিনি বলিলেন, কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করিতে, আর সেও তোমার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করত। (রাবী) বলেন, আমরা মদীনায় পৌঁছে নিজ নিজ বাড়িতে প্রবেশ করিতে চাইলাম। রাসুল (সাঃআঃ) বলিলেন, তোমরা অপেক্ষা কর – পরে রাতে অর্থাৎ এশা নাগাদ ঘরে যাবে, যাতে নারী তার অবিন্যস্ত চুল আঁচড়ে নিতে পারে এবং প্রবাসী স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করিতে পারে। (রাবী) বলেন, আমাকে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি বলেছেন, রাসুল (সাঃআঃ) এ হাদীসে এও বলেছেন যে, হে জাবির। বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও, বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও। অর্থাৎ সন্তান কামনা কর। [২৩](আঃপ্রঃ- ৪৮৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৫)
[২৩] আল্লাহর একজন সচেতন বান্দাহ সর্বক্ষণ সওয়াব হাসিল করিতে থাকে। সলাত, সওম, হাজ্জ ও যাকাতের মাধ্যমেই সে শুধু নেকী হাসিল করে না, সে তার চলাফেরা, উঠা বসা, খাওয়া দাওয়া, ব্যবসা বাণিজ্য এমনকি দৈনন্দিনের মলমূত্র ত্যাগের মাধ্যমেও নেকী হাসিল করিতে থাকে। স্বীয় স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা, হাসি তামাশা ও তার মুখে খাবার তুলে দিয়ে একই সাথে সে অপার আনন্দ ও সওয়াব হাসিল করিতে থাকে। কেবল শর্ত হল এসব জায়িয কাজগুলো আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের নিয়তে তাহাঁরই শেখানো পদ্ধতিতে করিতে হইবে। আল্লাহর কথা ভুলে গিয়ে একজন কাফিরের মত কিংবা জন্তু-জানোয়ারের মত এসব কাজ করলে তাতে কোন সওয়াব পাওয়া যাবে না।
৫২৪৬
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, সফর থেকে রাতে প্রত্যাবর্তন করে গৃহে প্রবেশ করিবে না, যতক্ষণ না অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করিতে পারে এবং এলোকেশী স্ত্রী চিরুনি করে নিতে পারে। (রাবী), বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমার কর্তব্য সন্তান কামনা করা, সন্তান কামনা করা। [৪৪৩]
উবাইদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ওয়াহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে জাবির (রাদি.) – এর সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) থেকে সন্তান অন্বেষণ শব্দটি উল্লেখ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৪৮৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৬)
৬৭/১২৩. অধ্যায়ঃ অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করিবে এবং এলোকেশী নারী (মাথায়) চিরুনি করে নিবে।
৫২৪৭
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা নাবী (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে এক যুদ্ধে ছিলাম। যুদ্ধ শেষে ফেরার পথে আমরা মদীনার নিকটবর্তী হলাম, আমি আমার ধীর গতি উটকে দ্রুত হাঁকালাম। একটু পরেই এক আরোহী আমার পিছনে এসে মিলিত হলেন এবং তাহাঁর লাঠি দ্বারা আমার উটটিকে খোঁচা দিলেন। এতে আমার উটটি সর্বোৎকৃষ্ট উটের মত চলতে লাগল যেমনভাবে উত্কৃষ্ঠ উটকে তোমরা চলতে দেখ। মুখ ফিরিয়ে দেখলাম যে, তিনি রাসুল (সাঃআঃ)। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি সদ্য বিয়ে করেছি। তিনি বলিলেন, বিয়ে করেছ? বললাম, জি-হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, কুমারী, না পূর্ব-বিবাহিতা? আমি বললাম বরং পূর্ব-বিবাহিতা। তিনি বলিলেন, কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করিতে আর সেও তোমার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করত। রাবী বলেন, এরপর আমরা মদীনায় পৌঁছে (নিজ নিজ গৃহে) প্রবেশ করিতে উদ্যত হলাম, তখন তিনি বলিলেন, অপেক্ষা কর, সকলে রাতে অর্থাৎ সন্ধ্যায় প্রবেশ করিবে, যাতে এলোকেশী নারী চিরুনি করে নিতে পারে এবং অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করিতে পারে।(আঃপ্রঃ- ৪৮৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৭)
৬৭/১২৪. অধ্যায়ঃ “তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাই – এর ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের মহিলাগণ, স্বীয় মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনামুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (সুরা আন-নূর ২৪/৩১)
৫২৪৮
আবু হাযিম হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহুদের দিন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর ক্ষতস্থানে কী ঔষধ লাগানো হয়েছিল, এ নিয়ে লোকদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হল। পরে তারা সাহল ইবনু সাদ সাঈদীকে জিজ্ঞেস করিল, যিনি মদীনার অবশিষ্ট নাবী (সাঃআঃ) – এর সাহাবীগণের সর্বশেষ ছিলেন। তিনি বলিলেন, এ ব্যপারে আমার চেয়ে অধিক অভিজ্ঞ কোন ব্যক্তি অবশিষ্ট নেই। ফাতিমাহ (রাদি.) তাহাঁর মুখমণ্ডল হইতে রক্ত ধুয়ে দিচ্ছিলেন আর আলী (রাদি.) ঢালে করে পানি আনছিলেন। পরে একটি চাটাই পুড়িয়ে, তা ক্ষতস্থানে চারপাশে লাগিয়ে দেয়া হল।(আঃপ্রঃ- ৪৮৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৮)
৬৭/১২৫. অধ্যায়ঃ যারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়নি। (সুরা আন-নূর ২৪/৫৮)
৫২৪৯
আবদুর রহমান ইবনু আব্বাস হইতে বর্ণিতঃ
আমি এক ব্যক্তিকে ইবনু আব্বাস (রাদি.) – এর নিকট প্রশ্ন করিতে শুনিয়াছি যে, আপনি আযহা বা ফিতরের কোন ঈদে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) – এর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। অবশ্য তাহাঁর সঙ্গে আমার এত ঘনিষ্ঠতা না থাকলে স্বল্প বয়সের কারণে আমি তাহাঁর সঙ্গে উপস্থিত হইতে পারতাম না। তিনি (আরও) বলেন, রাসুল (সাঃআঃ) বের হলেন। তারপর সলাত আদায় করিলেন, এরপর খুৎবাহ দিলেন। ইবনু আব্বাস (রাদি.) আযান ও ইকামাতের কথা উল্লেখ করেননি। এরপর তিনি মহিলাদের কাছে এলেন এবং তাদেরকে ওয়াজ ও নাসীহাত করিলেন ও তাদেরকে সদাকাহ করার আদেশ দিলেন। (রাবী বলেন,) আমি দেখলাম, তারা তাদের কর্ণ ও কন্ঠের দিকে হাত প্রসারিত করে (গয়নাগুলো) বিলালের কাছে অর্পণ করছে। এরপর রাসুল (সাঃআঃ) ও বিলাল (রাদি.) গৃহে প্রত্যাবর্তন করিলেন।(আঃপ্রঃ- ৪৮৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৯)
৬৭/১২৬. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি তার সাথীকে বলা যে, তোমরা কি গত রাতে যৌন সঙ্গম করেছ? এবং ধমক দেয়া কালে কোন ব্যক্তির নিজ কন্যার কোমরে আঘাত করা।
৫২৫০
আয়িশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবু বকর (রাদি.) আমাকে ভৎর্সনা করিলেন এবং আমার কোমরে তাহাঁর হাত দ্বারা খোঁচা দিলেন। আমার ঊরুর ওপর রাসুল (সাঃআঃ) – এর মস্তক থাকার কারণে আমি নড়াচড়া করিতে পারিনি।(আঃপ্রঃ- ৪৮৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭০)
Leave a Reply