গীবত, হিংসা, খাদিম, উপহার, দান, কৃপণতা, মেহমানদারী ও সদ্ব্যবহার করা
সদ্ব্যবহার করা ও পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখা , এই অধ্যায়ে মোট ১৩৯ টি হাদীস (১৮৯৭-২০৩৫) >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়-২৫ঃ অনুচ্ছেদঃ (২৩-৫০)=২৮টি
২৩. অনুচ্ছেদঃ গীবত [অনুপস্থিতিতে পরনিন্দা] প্রসঙ্গে
২৪. অনুচ্ছেদঃ হিংসা-বিদ্বেষ
২৫. অনুচ্ছেদঃ পরস্পরের বিরুদ্ধে হিংসা ও শক্রতা পোষণ করা
২৬. অনুচ্ছেদঃ পরস্পরের মাঝে সংশোধন করা
২৭. অনুচ্ছেদঃ বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা
২৮. অনুচ্ছেদঃ প্রতিবেশীর হক বা অধিকার
২৯. অনুচ্ছেদঃ খাদিমদের সাথে উত্তম আচরণ করা
৩০. অনুচ্ছেদঃ খাদিমকে প্রহার করা এবং গালি দেয়া নিষধ
৩১. অনুচ্ছেদঃ খাদিমকে ক্ষমা করা
৩২. অনুচ্ছেদঃ খাদেমের অপরাধ ক্ষমা করা এবং তাহাদের প্রতি উদার হওয়া
৩৩. অনুচ্ছেদঃ সন্তানদের শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া
৩৪. অনুচ্ছেদঃ উপহার আদান-প্রদান
৩৫. অনুচ্ছেদঃ উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
৩৬. অনুচ্ছেদঃ কল্যাণকর কাজ ও আচরণ
৩৭. অনুচ্ছেদঃ দান প্রসঙ্গে
৩৮. অনুচ্ছেদঃ চলাচলের পথ হইতে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা
৩৯. অনুচ্ছেদঃ বৈঠকের আলাপ-আলোচনা আমানতস্বরূপ
৪০. অনুচ্ছেদঃ দানশীলতা
৪১. অনুচ্ছেদঃ কৃপণতা
৪২. অনুচ্ছেদঃ পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ
৪৩. অনুচ্ছেদঃ মেহমানদারী ও এর সময়সীমা
৪৪. অনুচ্ছেদঃ ইয়াতীম ও বিধবাদের ভরণ-পোষণের চেষ্টা সাধন
৪৫. অনুচ্ছেদঃ সহাস্য মুখ ও প্রশস্ত মন [নিয়ে কারো সাথে সাক্ষাৎ করা]
৪৬. অনুচ্ছেদঃ সত্য ও মিথ্যা প্রসঙ্গে
৪৭. অনুচ্ছেদঃ নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা ও অশ্লীল আচরণ প্রসঙ্গে
৪৯. অনুচ্ছেদঃ বংশধারার প্রসঙ্গে জ্ঞানদান
৫০. অনুচ্ছেদঃ এক ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে অপর ভাইয়ের দুআ
২৩. অনুচ্ছেদঃ গীবত [অনুপস্থিতিতে পরনিন্দা] প্রসঙ্গে
১৯৩৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বলা হল, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! গীবত কি? তিনি বলিলেন? তোমরা ভাইয়ের প্রসঙ্গে তোমার এমন ধরনের কথা-বার্তা বলা যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্নকারী বলিল, আমি যে কথাগুলো বলি তা প্রকৃতপক্ষেই তার মধ্যে নিহিত থাকলে, এক্ষেত্রে আপনার কি মত? তিনি বললেনঃ তুমি যে কথাগুলো বল তা প্রকৃতই তার মধ্যে নিহিত থাকলে তবেই তো তুমি তার গীবত করলে। তুমি যা বল তার মধ্যে যদি সেগুলো না থাকে তাহলে তুমি তাকে মিথ্যা অপবাদ দিলে।
সহীহ, গাইয়াতুল মারাম [৪২৬] , নাকদুল কাত্তাণী [৩৬] , সহীহাহ্ [২৬৬৭] , মুসলিম। আবু বারযা, ইবনি উমার ও আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ।
সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪. অনুচ্ছেদঃ হিংসা-বিদ্বেষ
১৯৩৫. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা একজন অন্যজনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করো না, পরস্পরে শত্রুতা পোষণ করো না, পরস্পরকে ঘৃণা করো না, পরস্পর হিংসা করো না, বরং আল্লাহ্ তাআলার বান্দাহগণ! পরস্পর ভাই হয়ে থাকো। কোন মুসলমান ব্যক্তির পক্ষেই বৈধ নয় তার ভাইকে তিনদিনের অধিক সময় ধরে ত্যাগ করে থাকা।
সহীহ ইরওয়া [৭/৯৩] , বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু বাক্র সিদ্দীক, যুবাইর ইবনিল আওয়াম, ইবনি মাসউদ, ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৩৬. সালিম [রঃ] হইতে তার বাবা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শুধু দুই প্রকারের লোকই হিংসাযোগ্য। [এক] যে লোককে আল্লাহ্ তাআলা ধন-সম্পদ দান করিয়াছেন এবং সে তা হইতে দিন-রাত আল্লাহ্ তাআলার পথে ব্যয় করে। [দুই] যাকে আল্লাহ্ তাআলা কুরআনের জ্ঞান দিয়েছেন এবং সে দিন-রাত এর বাস্তবায়নে নিযুক্ত থাকে।
সহীহ্, রাওযুন নাযীর [৮৯৭] , বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইবনি মাসউদ ও আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৫. অনুচ্ছেদঃ পরস্পরের বিরুদ্ধে হিংসা ও শক্রতা পোষণ করা
১৯৩৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নামাজ আদায়কারী কখনো শাইতানের পূজা করিবে [সাজদা দিবে] এ বিষয়ে সে নিরাশ হয়ে গেছে। কিন্তু সে তাহাদের মধ্যে একজনকে অন্যজনের বিরুদ্ধে উস্কানি দিতে নিরাশ হয়নি।
সহীহ্, সহীহাহ [১৬০৬] , মুসলিম। আনাস ও সুলাইমান ইবনি আমর ইবনি আহওয়াহ [রাদি.] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্রে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু সুফিয়ানের নাম তালহা, পিতা নাফি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬. অনুচ্ছেদঃ পরস্পরের মাঝে সংশোধন করা
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি লোকদের মাঝে সংশোধন করার চেষ্টা করে সে মিথ্যাবাদী নয়। সে [যা বলেছে] ভাল বলেছে অথবা ভালকাজের অগ্রগতি ঘটিয়েছে।
সহীহ্, রাওযুন নাযীর [১১৯৬] , সহীহাহ্ [৫৪৫] , মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৩৯. আসমা বিনতু ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিনটি ক্ষেত্র ব্যতীত মিথ্যা বলা বৈধ নয়। [এক] স্ত্রীকে খুশি করার উদ্দেশ্যে তার সাথে স্বামীর কিছু বলা, [দুই] যুদ্ধের সময় এবং [তিন] লোকদের পরস্পরের মাঝে সংশোধন করার জন্য মিথ্যা কথা বলা। অধঃস্তন রাবী মাহমূদ তার হাদীসে বলেছেন, তিনটি ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য কোথাও মিথ্যা বলা ঠিক নয়।
সহীহ, সহীহাহ্ [৫৪৫] , মুসলিম। “স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার জন্য” এই অংশ ব্যতীত হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন উম্মু কুলসুম হইতে। এ হাদীসটি হাসান। ইবনি খুসাইমের সূত্র ব্যতীত আসমা [রাদি.] বর্ণিত এ হাদীস আমরা অন্য কোন সূত্রে অবহিত নই। দাঊদ ইবনি আবু হিন্দ-শাহ্র ইবনি হাওশাবের বরাতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তাতে আসমা [রাদি.]-এর উল্লেখ নেই। মুহাম্মাদ ইবনিল আলা-ইবনি আবু যাইদা-দাঊদ সূত্রে উক্ত হাদীস আমার নিকট এ রকম বর্ণনা করিয়াছেন। এ অনুচ্ছেদে আবু বাক্র [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৭. অনুচ্ছেদঃ বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা
১৯৪০. আবু সিরমা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ্ তাআলা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে লোক অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ্ তাআলা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন।
হাসান, ইরওয়া [৮৯৬]। আবু বাক্র [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
১৯৪১. আবু বাক্র সিদ্দীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুমিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত।
যঈফ, যঈফা [১৯০৩]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২৮. অনুচ্ছেদঃ প্রতিবেশীর হক বা অধিকার
১৯৪২. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রতিবেশীর অধিকারের ব্যাপারে জিবরাঈল [আঃ] আমাকে অবিরত উপদেশ দিতে থাকেন। এতে আমার ধারণা হল যে, হয়ত শীঘ্রই তাকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে।
সহীহ, প্রাগুক্ত, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৪৩. মুজাহিদ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.]-এর জন্য তার পরিবারে একটি ছাগল যবেহ করা হল। তিনি এসে বলিলেন, তোমরা কি আমাদের ইয়াহুদী প্রতিবেশীকে [গোশত] উপহার পাঠিয়েছ? আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ প্রতিবেশীর অধিকার প্রসঙ্গে জিবরাঈল [আঃ] আমাকে অবিরত উপদেশ দিতে থাকেন। এমনকি আমার ধারণা হল যে, হয়ত শীঘ্রই প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে।
সহীহ, ইরওয়া [৮১১] , বুখারী। এ অনুচ্ছেদে আইশা, ইবনি আব্বাস, আবু হুরাইরা, আনাস, মিকদাদ ইবনিল আসওয়াদ, উকবা ইবনি আমির, আবু শুরাইহ্ ও আবু উমামা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উল্লেখিত সনদসূত্রে গারীব। এ হাদীসটি-আইশা ও আবু হুরাইরা [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৪৪. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলার নিকট সঙ্গীদের মাঝে উত্তম সঙ্গী হল সেই ধরনের ব্যক্তি যে তার নিজ সঙ্গীর নিকট উত্তম। আল্লাহ্ তাআলার দৃষ্টিতে প্রতিবেশীদের মাঝে উত্তম হল সেই ধরনের প্রতিবেশী যে তার নিজের প্রতিবেশীর নিকট উত্তম।
সহীহ, সহীহাহ [১০৩০] , মিশকাত [৪৯৮৭]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবু আব্দুর রাহমান আল-হুবুলীর নাম আব্দুল্লাহ ইবনি ইয়াযীদ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৯. অনুচ্ছেদঃ খাদিমদের সাথে উত্তম আচরণ করা
১৯৪৫. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এরা তোমাদের ভাই, এদেরকে আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের অধীনস্থ করিয়াছেন। সুতরাং যে ব্যক্তির এরূপ ভাই [গোলাম, বাঁদী, খাদিম] তার অধীনে আছে, সে যেন তার খাদ্য হইতে তাকে খেতে দেয় এবং তার পোশাক-পরিচ্ছদ হইতে তাকে পরতে দেয়। সে এরূপ কাজের বোঝা যেন তার উপর না চাপায় যা করিতে সে সমর্থ নয়। সে তার উপর সাধ্যাতীত কোন কাজের বোঝা চাপিয়ে দিলে সে যেন তাকে সহযোগিতা করে।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম। আলী, উম্মু সালামা, ইবনি উমার ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৪৬. আবু বাক্র সিদ্দীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অধীনস্থদের সাথে দুর্ব্যবহারকারী জান্নাতে যেতে পারবে না।
যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৩৬৯১]। আবু ঈসা বলেছেন, এ হাদীসটি গারীব। আইউব সাখতিয়ানী প্রমুখ হাদীস বিশারদ ফারকাদের স্মৃতিশক্তির সমালোচনা করিয়াছেন। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩০. অনুচ্ছেদঃ খাদিমকে প্রহার করা এবং গালি দেয়া নিষধ
১৯৪৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তাওবাহকারী আবুল কাসিম [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কেউ যদি তার নির্দোষ গোলামের বিরুদ্ধে [যিনার] অপবাদ আরোপ করে তবে আল্লাহ্ তাআলা কিয়ামাত দিবসে তার উপর হদ্দ [নির্ধারিত শাস্তি] প্রতিষ্ঠিত করবেন। তবে গোলামটি যদি প্রকৃতপক্ষেই সেরকমের হয় তাহলে ভিন্ন কথা।
সহীহ, রাওযুন নাযীর [১১৪৬] , বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইবনি আবী নুম-এর নাম আবদুর রাহমান ইবনি আবী নুম আল-বাজালী, উপনাম আবুল হাকাম। সুওয়াইদ ইবনি মুক্বাররিন ও আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীসটি বর্ণিত আছে। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৪৮. আবু মাসউদ আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় আমি আমার এক গোলামকে প্রহার করছিলাম। তখন আমার পিছন হইতে একজন লোককে আমি বলিতে শুনলাম, আবু মাসউদ, জেনে রাখ, আবু মাসউদ, জেনে রাখ! আমি পিছনে তাকানো মাত্রই দেখিতে পাই রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]। তিনি বললেনঃ তুমি এর উপর যে পরিমাণ ক্ষমতার অধিকারী, তোমার উপর আল্লাহ্ তাআলা এরচাইতে অনেক বেশি ক্ষমতার অধিকারী। আবু মাসউদ [রাদি.] বলেন, এরপর হইতে আমি আমার কোন গোলামকে আর কখনো মারিনি।
সহীহ, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। ইবরাহীম আত-তাইমীর পিতা ইয়াযীদ ইবনি শারীক। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১. অনুচ্ছেদঃ খাদিমকে ক্ষমা করা
১৯৪৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট একজন লোক এসে বলিল, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! আমি খাদিমের অপরাধ কতবার ক্ষমা করব? তার কথা শুনে রাসূলু্ল্লাহ [সাঃআঃ] নীরব থাকলেন। সে আবার বলিলঃ হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! আমি খাদিমের অপরাধ কতবার ক্ষমা করব? তিনি বললেনঃ প্রতিদিন সত্তরবার।
সহীহ, সহীহাহ্ [৪৮৮]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব [তিরমিযীর কোন কোন নোসখায় হাসান সহীহ্]। এ হাদীসটি আবু হানী আল-খাওলানী হইতে উক্ত সনদে আবদুল্লাহ ইবনি ওয়াহ্ব অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। আব্বাসের বাবার নাম জুলাইদ আল-হাজারী আল-মিসরী। কুতাইবা-আবদুল্লাহ ইবনি ওয়াহ্ব হইতে, তিনি আবু হানী হইতে এই সূত্রে একইরকম বর্ণনা করিয়াছেন। এ হাদীসটি কয়েকজন বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবনি ওয়াহ্বের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন এবং তারা “আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে” উল্লেখ করিয়াছেন। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২. অনুচ্ছেদঃ খাদেমের অপরাধ ক্ষমা করা এবং তাহাদের প্রতি উদার হওয়া
১৯৫০. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন তার খাদিমকে মারে এবং সে [খাদিম] আল্লাহ্ তাআলার দোহাই দেয়, তখন তোমাদের হাত তুলে নাও [মারধর বন্ধ কর]।
যঈফ, যঈফা [১৪৪১]। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হারূন আল-আবদীর নাম উমারা ইবনি জুওয়াইন। ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ বলেছেন, শুবা আবু হারূন আল-আবদীকে দুর্বল রাবী বলে উল্লেখ করিয়াছেন। ইয়াহ্ইয়া বলেছেন, ইবনি আওন আমৃত্যু আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৩. অনুচ্ছেদঃ সন্তানদের শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া
১৯৫১. জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিজের সন্তানকে শিষ্টাচার ও আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়া এক সা পরিমাণ বস্তু দান-খাইরাত করার চেয়েও উত্তম।
যঈফ, যঈফা [১৮৮৭]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। হাদীস বিশারদদের মতে নাসিহ আবুল আলা আল-কূফী খুব একটা মজবুত রাবী নন। উল্লেখিত হাদীসটি শুধুমাত্র এই সূত্রেই জানা গেছে। বসরাবাসী শাইখ নাসিহ- যিনি আম্মার ইবনি আবী আম্মার এবং অন্যান্য শাইখ হইতে হাদীস বর্ণনা করেন, এই কুফী নাসীহ-এর তুলনায় বেশী শক্তিশালী। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১৯৫২. আইউব ইবনি মূসা [রঃ] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন পিতা তার সন্তানকে উত্তম শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়ার চেয়ে বেশী উত্তম কোন জিনিস দিতে পারে না।
যঈফ, যঈফা [১১২১] নাকদুল কাত্তানী পৃঃ [২০]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু আমির ইবনি আবু আমির আল-খায্যায-এর সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। আমিরের পিতা সালিহ ইবনি রুসতুম। আইউব ইবনি মূসা হলেন ইবনি আমর ইবনি সাঈদ আল-আসী। আমার মতে এটি মুরসাল হাদীস। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৪. অনুচ্ছেদঃ উপহার আদান-প্রদান
১৯৫৩. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] উপহার নিতেন এবং বিনিময়ে উপহার প্রদান করিতেন।
সহীহ, ইরওয়া [১৬০৩] , বুখারী। আবু হুরাইরা, আনাস, ইবনি উমার ও জাবির [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং উল্লেখিত সনদসূত্রে গারীব। এটা মারফূ হিসাবে শুধু ঈসা ইবনি ইউনুস হইতে হিশামের সূত্রেই জেনেছি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫. অনুচ্ছেদঃ উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
১৯৫৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানুষের প্রতি যে লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, আল্লাহ্ তাআলার প্রতিও সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
সহীহ, মিশকাত [৩০২৫] , সহীহাহ্ [৪১৭] , তালীকুর রাগীব [২/৫৬]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৫৫. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানুষের প্রতি যে লোক কৃতজ্ঞ নয় আল্লাহ্ তাআলার প্রতিও সে কৃতজ্ঞ নয়।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় হাদীসটি সহীহ, প্রাগুক্ত। আবু হুরাইরা, আশআস ইবনি ক্বাইস ও নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৬. অনুচ্ছেদঃ কল্যাণকর কাজ ও আচরণ
১৯৫৬. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎকাজ হইতে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেয়া তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ, স্বল্প দৃষ্টি সম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেয়া তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ। পথ হইতে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেয়া তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ।
সহীহ, সহীহাহ [৫৭২]। ইবনি মাসউদ, জাবির, হুযাইফা, আইশা ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবু যুমাইলের নাম সিমাক, পিতা আল-ওয়ালীদ আল-হানাফী। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৭. অনুচ্ছেদঃ দান প্রসঙ্গে
১৯৫৭. বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমি বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি একবার দোহন করা দুধ দান করে অথবা টাকা-পয়সা ধার দেয় অথবা পথ হারিয়ে যাওয়া লোককে সঠিক পথের সন্ধান দেয়, তার জন্য রয়েছে একটি গোলাম মুক্ত করে দেয়ার সম-পরিমাণ সাওয়াব।
সহীহ, তালীকুর রাগীব [২/৩৪,২৪১] , মিশকাত [১৯১৭]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং আবু ইসহাক-তালহা ইবনি মুসাররিফের সূত্রে গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র এই সূত্রেই জেনেছি। এ হাদীসটি তালহা ইবনি মুসাররিফের সূত্রে মানসূর ইবনিল মুতামির ও শুবা [রঃ] বর্ণনা করিয়াছেন। নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। “মানাহা মানীহাতা ওয়ারিকিন” অর্থ টাকা-পয়সা ধার দেয়া। “হাদা যুকাকান” অর্থ সঠিক পথের সন্ধান দেয়া। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৮. অনুচ্ছেদঃ চলাচলের পথ হইতে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা
১৯৫৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন এক সময় একজন লোক পথ দিয়ে চলাকালে একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখিতে পেল। সে তা তুলে ফেলে দিল। আল্লাহ্ তাআলা তার এ কাজকে ক্ববূল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন।
সহীহ, বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু বারযা, ইবনি আব্বাস ও আবু যার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৯. অনুচ্ছেদঃ বৈঠকের আলাপ-আলোচনা আমানতস্বরূপ
১৯৫৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোক কোন কথা বলার পর আশেপাশে তাকালে তার উক্ত কথা [শ্রবণকারীর জন্য] আমানাত বলে গণ্য।
হাসান, সহীহাহ [১০৮৯]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র ইবনি আবী যিব-এর বর্ণনার মাধ্যমেই জেনেছি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৪০. অনুচ্ছেদঃ দানশীলতা
১৯৬০. বিনতু আবু বাক্র তনয়া আসমা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ] ! যুবাইর [রাদি.] আমাকে যা কিছু দেন তা ব্যতীত আমার কাছে কিছু নেই। আমি কি তা হইতে দান করব? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তুমি থলের ফিতা বেঁধে রাখবে না, অন্যথায় তোমার জন্যও [আল্লাহ্ তাআলার পক্ষ হইতে] বেঁধে রাখা হইবে [তোমার রিযিকের থলে]।
সহীহ্; সহীহ্ আবু দাউদ [১৪৯০] , বুখারী ও মুসলীম। অপর বর্ণনায় আছে, গুনে গুনে খরচ কর না, অন্যথায় তোমাকেও গুনে গুনে দেয়া হইবে। আইশা ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীসটি উপরোক্ত সনদে কয়েকজন বর্ণনাকারী ইবনি আবু মুলাইকা হইতে, তিনি আব্বাদ ইবনি আবদুল্লাহ-ইবনিয যুবাইর হইতে, তিনি আসমা বিনতু আবী বাক্র [রাদি.] হইতে এইসূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। এটি আইয়্যূবের সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করিয়াছেন, কিন্তু তারা এতে আব্বাদ ইবনি আবদুল্লাহর উল্লেখ করেননি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৬১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দানশীল ব্যক্তি আল্লাহ্ তাআলার নিকটবর্তী, জান্নাতের নিকতবর্তী, মানুষের নিকটবর্তী এবং জাহান্নাম হইতে দূরবর্তী। কৃপণ ব্যক্তি আল্লাহ্ তাআলা হইতে দূরবর্তী, জান্নাত হইতে দূরবর্তী, মানুষের নিকট হইতেও দূরবর্তী, কিন্তু জাহান্নামের নিকটবর্তী। আল্লাহ্ তাআলার নিকটে কৃপণ আলেম ব্যক্তির চেয়ে মূর্খ দানশীল ব্যক্তি বেশী প্রিয়।
খুবই দুর্বল, যঈফা [১৫৪]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। শুধু সাঈদ ইবনি মুহাম্মাদের বরাতেই আমরা ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ-আল-আরাজ হইতে আবু হুরাইরা [রাদি.] সূত্রে এ হাদীস জেনেছি। ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ হইতে এই হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে সাঈদ ইবনি মুহাম্মাদের ব্যাপারে মতের অমিল করা হয়েছে। ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ-আইশা [রাদি.] সূত্রে এই বিষয়ে কিছু মুরসাল হাদীসও বর্ণিত হয়েছে। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৪১. অনুচ্ছেদঃ কৃপণতা
১৯৬২. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিন ব্যক্তির মধ্যে দুটি স্বভাবের [চারিত্রিক দোষ] সমাবেশ হইতে পারে নাঃ কৃপণতা ও চরিত্রহীনতা।
যঈফ, যঈফা [১১১৯] নাকদুল কাত্তানী [৩৩/৩৩]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। শুধু সাদাকা ইবনি মূসার সূত্রে আমরা এ হাদীস জেনেছি। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১৯৬৩. আবু বাক্র সিদ্দীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রতারক-ধোঁকাবাজ, কৃপণ ও উপকার করে তার খোটা দানকারী জান্নাতে যেতে পারবে না।
যঈফ [বেচা-কেনা সংক্রান্ত হাদীস]। আবু ঈসা বলেছেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১৯৬৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিন ব্যক্তি চিন্তাশীল, গম্ভীর ও ভদ্র হয়ে থাকে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি প্রতারক, ধোঁকাবাজ, কৃপণ, নীচ ও অসভ্য হয়ে থাকে।
হাসান, সহীহাহ্ [৯৩২]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র উল্লেখিত সনদসূত্রে জেনেছি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৪২. অনুচ্ছেদঃ পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ
১৯৬৫. আবু মাসউদ আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যক্তির ধন-সম্পদ ব্যয় সাদকারূপে গণ্য।
সহীহ্, সহীহা [৯৮২] , বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবদুল্লাহ ইবনি আমর, আমর ইবনি উমাইয়্যা ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৬৬. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোক তার দীনারগুলোর মধ্যে যেটি তার পরিবারের জন্য ব্যয় করে, যে দীনারটি সে আল্লাহ্ তাআলার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে তার পশুর জন্য ব্যয় করে এবং যে দীনারটি সে আল্লাহ্ তাআলার পথে তার মুজাহিদ সঙ্গীর জন্য ব্যয় করে, তা-ই সর্বোত্তম দীনার। আবু কিলাবা তার বর্ণনায় বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর বক্তব্য শুরু করেন পরিবার-পরিজন হইতে। তারপর তিনি বলেনঃ যে লোক তার নিজের ছোট ছোট সন্তানদের জন্য ব্যয় করে, বিরাট সাওয়াবের ব্যাপারে তাহাঁর চেয়ে বেশি বড় আর কে আছে? আল্লাহ্ তার মাধ্যমে এদের মান-ইজ্জাত ও সম্মান-সম্ভ্রম রক্ষা করেন এবং তার ওয়াসীলায় এদের স্বনির্ভর করেন।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২৭৬০] , মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৩. অনুচ্ছেদঃ মেহমানদারী ও এর সময়সীমা
১৯৬৭. আবু শুরাইহ্ আল আদাবী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার উভয় চোখ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছে এবং আমার উভয় কান তাঁকে বলিতে শুনেছে। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ্ ও আখিরাতের প্রতি যে লোক ঈমান রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে, তাকে জা-ইযা দেয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, জা-ইযা কি? তিনি বলেনঃ একদিন ও একরাতের পাথেয় সাথে দেয়া। তিনি আরো বলেনঃ মেহমানদারী তিনদিন পর্যন্ত। এর অতিরিক্তটুকু সাদকারূপে গণ্য। আল্লাহ্ তাআলা ও আখিরাতের উপর সে লোক ঈমান রাখে যে যেন উত্তম কথা বলে, আর না হয় চুপ থাকে।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [৩৬৭৫] , বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৬৮. আবু শুরাইহ আল-কাবী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মেহমানদারী তিনদিন পর্যন্ত এবং জা-ইযা হল একদিন ও একরাতের পাথেয় প্রদান। এরপর তার জন্য যা ব্যয় করা হইবে তা সাদকারূপে গণ্য। অতিথিসেবক বিরক্ত হইতে পারে-কোন মেহমানের পক্ষেই এতটা সময় সেখানে থাকা বৈধ নয়।
সহীহ, তালীকুর রাগীব [৩/২৪২] , বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আইশা ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি সাঈদ আল-মাকবুরীর সূত্রে মালিক ইবনি আনাস ও লাইস [রঃ] বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আবু শুরাইহ্ আল-খুযাঈ হলেন আল-কাবী। আর তিনিই আল-আদাবী, তার নাম খুওয়াইলিদ, পিতা আমর। “লা ইয়াসবী ইনদাহু” কথার মর্ম এই যে, মেহমানের এত দিন কোন পরিবারে থাকা যুক্তিসঙ্গত নয় যাতে তারা কষ্টের মধ্যে পতিত হয় এবং বিরক্তির কারণ হইতে পারে। “হারাজ” অর্থ সংকট। “হাত্তা ইউহ্রিজাহু” কথার অর্থ এই যে, অনেকদিন থেকে সংশ্লিষ্ট পরিবারের জন্য মেহমান সংকট তৈরী করিল। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৪. অনুচ্ছেদঃ ইয়াতীম ও বিধবাদের ভরণ-পোষণের চেষ্টা সাধন
১৯৬৯. সাফওয়ান ইবনি সুলাইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বিধবা ও মিসকীনদের ভরণ-পোষণের জন্য চেষ্টা সাধনকারী আল্লাহ্ তাআলার পথে জিহাদকারী অথবা সারাদিন রোযা পালনকারী ও সারারাত নামাজ আদায়কারী সমান সাওয়াবের অধিকারী।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২১৪০] , বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আল-আনসারী-মান হইতে, তিনি মালিক হইতে, তিনি সাওর ইবনি যাইদ হইতে, তিনি আবুল গাইস হইতে, তিনি আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে, তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে [উপরের] হাদীসের ন্যায় বর্ণনা করিয়াছেন। এ হাদীসটি হাসান গারীব সহিহ। আবুল গাইস-এর নাম সালিম, আবদুল্লাহ ইবনি মুতীর মুক্তদাস। সাওর ইবনি যাইদ মাদীনার অধিবাসী এবং সাওর ইবনি ইয়াযীদ সিরিয়ার অধিবাসী। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৫. অনুচ্ছেদঃ সহাস্য মুখ ও প্রশস্ত মন [নিয়ে কারো সাথে সাক্ষাৎ করা]
১৯৭০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রতিটি ভালকাজই সাদকারূপে গণ্য। তোমার ভাইয়ের সাথে সহাস্য মুখে দেখা-সাক্ষাৎ করা এবং তোমার বালতির পানি দিয়ে তোমার ভাইয়ের পাত্র ভর্তি করে দেয়াও ভাল কাজের অন্তুর্ভূক্ত।
সহীহ, তালীকুর রাগীব [৩/২৬৪]। আবু যার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৬. অনুচ্ছেদঃ সত্য ও মিথ্যা প্রসঙ্গে
১৯৭১. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা অবশ্যই সত্যের পথ অবলম্বন করিবে। কেননা, সততাই মানুষকে কল্যাণের পথে নিয়ে যায়। আর কল্যাণ জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। কোন মানুষ প্রতিনিয়ত সত্য কথা বলিতে থাকলে এবং সত্যের প্রতি মনোযোগী থাকলে শেষ পর্যন্ত সে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে পরম সত্যবাদী হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়। তোমরা মিথ্যাকে অবশ্যই পরিহার করিবে। কেননা, মিথ্যা [মানুষকে] পাপের পথ দেখায়, আর পাপ জাহান্নামের পথে নিয়ে যায়। কোন বান্দাহ প্রতিনিয়ত মিথ্যা বলিতে থাকলে এবং মিথ্যার প্রতি ঝুঁকে থাকলে শেষ পর্যন্ত সে আল্লাহ্ সে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে চরম মিথ্যাবাদী হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়।
সহীহ, বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু বাক্র সিদ্দীক, উমার, আবদুল্লাহ ইবনিশ শিখখীর ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৭২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন বান্দা যখন মিথ্যা কথা বলে তখন তার মিথ্যা কথনের দুর্গন্ধের কারণে ফেরেশতা এক মাইল [বা দৃষ্টি সীমার বাইরে] দূরে সরে যায়।
খুবই দুর্বল, যইফা [১৮২৮]। ইয়াহ্ইয়া বলেনঃ আবদুর রহীম ইবনি হারূন কি তার স্বীকারোক্তি করিয়াছেন? ইয়াহ্ইয়া ইবনি মূসা বলেন, হ্যাঁ। আবু ঈসা বলেছেন, এ হাদীসটি হাসান, উত্তম, গারীব। শুধু উল্লেখিত সূত্রেই আমরা এ হাদীস জেনেছি। এটি আবদুর রহীম ইবনি হারূনের একক রিওয়ায়াত। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১৯৭৩. আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মিথ্যা হইতে অধিক ঘৃণিত চরিত্র রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আর কিছুই ছিল না। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে কেউ মিথ্যা বললে তা অবিরত তার মনে থাকত, যে পর্যন্ত না তিনি জানতে পারতেন যে, মিথ্যাবাদী তাহাঁর মিথ্যা কথন হইতে তাওবাহ করেছে।
সনদ সহীহ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৭. অনুচ্ছেদঃ নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা ও অশ্লীল আচরণ প্রসঙ্গে
১৯৭৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা কোন বস্তুর শুধুমাত্র কদর্যতাই বাড়িয়ে দেয়। আর লজ্জা কোন জিনিসের সৌন্দর্য তাই বাড়িয়ে দেয়।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [৪১৮৫]। আইশা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আবদুর রাযযাকের সূত্রেই জেনেছি। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৭৫. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সর্বোত্তম চরিত্রবান ব্যক্তিই তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। [বর্ণনাকারী বলেন,] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] অশ্লীলভাষীও ছিলেন না এবং অশ্লীলতার ভানও করিতেন না।
সহীহ্, বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ, দেখুন সহীহাহ্ [৭৯১]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৮. অনুচ্ছেঃ অভিশাপ বা বদ-দুআ
১৯৭৬. সামুরা ইবনি জুনদাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর পরস্পরকে আল্লাহ্ তাআলার অভিসম্পাত, তাহাঁর গযব ও জাহান্নামের বদ-দুআ করো না।
সহীহ, সহীহাহ্ [৮৯৩]। ইবনি আব্বাস, আবু হুরাইরা, ইবনি উমার ও ইমরান ইবনি হুসাইন [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহিহ। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৭৭. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিন কখনো দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হইতে পারে না, অভিস্পাতকারী হইতে পারে না, অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না।
সহীহ, সহীহাহ [৩২০]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে অন্যসূত্রেও এ হাদীসটি বর্ণিত আছে। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯৭৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে একজন লোক বাতাসকে অভিসম্পাত করে। তিনি বললেনঃ বাতাসকে অভিশাপ প্রদান করো না, কারণ, সে তো হুকুমের গোলাম। কোন ব্যক্তি অপাত্রে অভিশাপ প্রদান করলে তা অভিশাপকারীর উপর ফিরে আসে।
সহীহ, সহীহাহ [৫২৮]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীসটি মুসনাদভাবে বিশ্র ইবনি উমার ব্যতীত আর কেউ বর্ণনা করিয়াছেন বলে আমাদের জানা নেই। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ বংশধারার প্রসঙ্গে জ্ঞানদান
১৯৭৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা নিজেদের বংশধারার ব্যাপারে জ্ঞান অর্জন কর, যাতে করে তোমাদের বংশীয় আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে পার। কেননা, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় থাকলে নিজেদের মধ্যে আন্তরিকতা ও ভালবাসা তৈরী হয় এবং ধন-সম্পদ ও আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পায়।
সহীহ, সহীহাহ্ [২৭৬]। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উল্লেখিত সনদসূত্রে গারীব। “মানসাআতুন ফিল আসার”-এর অর্থ আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাওয়া। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০. অনুচ্ছেদঃ এক ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে অপর ভাইয়ের দুআ
১৯৮০. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য অপর অনুপস্থিত ব্যক্তির দুআর চেয়ে বেশী দ্রুত আর কোন দুআ ক্ববূল হয় না।
যঈফ, যঈফ আবু দাউদ [২/২৬৯]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উল্লেখিত সনদসূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। আবদুর রহমান ইবনি যিয়াদ আল-ইফরীকী হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল। আবদুল্লাহ ইবনি ইয়াযীদের ডাকনাম আবু আবদুর রহমান আল-হুবুলী। সদ্ব্যবহার করা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
Leave a Reply