সত্যবাদিতা ও সৎ নিয়তের প্রতি উদ্বুদ্ধ করণ
<< সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব হাদীস বই এর মুল সুচিপত্র << সত্যবাদিতা
আত তারগীব ওয়াত তারহীব : ১ – ইবনে ওমর [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
পরিচ্ছেদঃ সত্যবাদিতা ও সৎ নিয়তের প্রতি উদ্বুদ্ধ করণ
আমি শুনিয়াছি রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেনঃ
“তোমাদের পূর্ববর্তী জাতি বনী ইসরাঈলের মধ্যে থেকে তিন ব্যক্তি একদা কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে গমন করিল। রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে তারা একটি গুহায় প্রবেশ করিল। হঠাৎ পাহাড়ের উপর থেকে প্রকান্ড একটি পাথর আছড়ে পড়ে গুহার দারদেশ বন্ধ করে দিল। এসময় তারা একে অপরকে বললঃ এই প্রকান্ড পাথর থেকে তোমাদেরকে কেউ মুক্তি দিতে পারবে না। তাই প্রত্যেকে স্বীয় সৎআমলের অসীলায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর। এক ব্যক্তি দু`আ করিতে লাগলঃ আয় আল্লাহ! আমার পিতামাতা উভয়ই অতিবৃদ্ধ ছিলেন। আমি কখনই তাহাদের আগে কাউকে দুধ পান করাতাম না, না পরিবারের কোন ব্যক্তিকে না কোন দাস-দাসীকে। একদা গবাদি পশুর জন্য ঘাষ-পাতার অনুসন্ধানে দূরে চলে গিয়েছিলাম। রাতে যখন ফিরে আসি তখন তারা ঘুমিয়ে পড়েন। তাহাদের জন্য দুধ দহন করে দেখলাম তারা ঘুমন্ত। কিন্তু তাহাদেরকে দুধ পান করানোর আগে পরিবারের অন্য কাউকে দুধ পান করানো আমি অপছন্দ করলাম। তাই তাহাদের শিয়রে অবস্থান নিলাম। দুধের পেয়ালা আমার হাতেই থাকল। অপেক্ষা করিতে থাকলাম কখন তারা জাগ্রত হয়। শেষ পর্যন্ত ফজরের আলো উদ্ভাসিত হয়ে গেল। [কোন কোন বর্ণনায় এসেছেঃ সে সময় ছোট ছোট শিশুরা আমার পায়ের কাছে ক্ষুধার তাড়নায় চিৎকার করছিল]। তারা জাগ্রত হল। তারপর দুধ পান করিল। হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তষ্টির উদ্দেশ্য করে থাকি, তবে আমাদেরকে এ পাথরের বিপদ থেকে উদ্ধার কর। পাথরটি তখন সামান্য একটু সরে গেল। কিন্তু তারা বের হতে সক্ষম হল না।
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ দ্বিতীয় ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহ! আমার এক চাচাত বোন ছিল। আমি তাকে খুব ভালবাসতাম। তাই তাকে একান্ত কাছে পেতে চাইলাম। কিন্তু সে রাজি হল না। একবার সে দুর্ভিক্ষের সম্মুখিন হয়ে আমার কাছে আসল। আমি তাকে একশত বিশটি স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম। এই শর্তে যে, সে আমার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দিবে। সে রাজি হল। আমি যখন আমার উদ্দেশ্য পূর্ণ করিতে পুরাপুরি প্রস্তুত হলাম, তখন সে বললঃ অধিকার ছাড়া সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া আমি তোমার জন্য হালাল মনে করি না। একথায় আমি ভীত হলাম এবং তাকে ছেড়ে দিলাম। অথচ সে আমার কাছে সর্বাধিক ভালবাসার পাত্র ছিল। যে স্বর্ণমুদ্রা তাকে দিয়েছিলাম তাও ছেড়ে দিলাম। আয় আল্লাহ! উক্ত কাজ যদি তোমার সম্ভাষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করে থাকি তবে আমাদের এই বিপদ দূর করে দাও। ফলে পাথরটি আরও একটু সরে গেল। কিন্তু তারা সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হল না।
নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেনঃ তৃতীয় ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহ! আমি কতিপয় শ্রমিক নিয়োগ করি। প্রত্যেককে তাহাদের পারিশ্রমিকও দিয়ে দেই। কিন্তু এক ব্যক্তি তার পারিশ্রমিক না নিয়েই চলে যায়। আমি সে পারিশ্রমিকের অর্থ দিয়ে চাষাবাদ করি। ফলে তা থেকে অনেক সম্পদ বৃদ্ধি হয়। বহু দিন পর সে লোক আমার কাছে ফিরে এসে বলেঃ হে আল্লাহর বান্দা! আমার পারিশ্রমিক দাও। আমি বললামঃ এই উট, গরু, ছাগল ও ক্রীতদাস যা দেখছো তা সবই তোমার পারিশ্রমিক। সে বললঃ হে আল্লাহর বান্দা! আমার সাথে ঠাট্টা কর না। আমি বললামঃ আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না। তখন সে সবগুলোই নিয়ে নিল। কোন কিছুই ছেড়ে গেল না। হে আল্লাহ! এ কাজ যদি তোমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করে থাকি, তবে আমাদেরকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করে দাও। তখন পাথরটি সরে গেল এবং তারাও সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হল।
অন্য বর্ণনায় আছেঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ
“তোমাদের পূর্ব জাতির তিন ব্যক্তি রাস্তা চলছিল। তারা বৃষ্টির সম্মুখিন হলে আশ্রয়ের জন্য একটি গুহায় প্রবেশ
করিল। এমন সময় গুহার মুখ বন্ধ হয়ে গেল। তখন তারা একে অপরকে বললঃ আল্লাহর শপথ এ বিপদ থেকে সত্যবাদিতা ছাড়া তোমাদেরকে কোন কিছুই মুক্ত করিতে পারবে না। সুতরাং তোমাদর প্রত্যেকের আল্লাহর কাছে এমন আমলের মাধ্যমে দু`আ করা উচিত যাতে সে সততার পরিচয় দিয়েছে।
একজন বললঃ হে আল্লাহ! তুমি ভাল ভাবেই জান, আমার একজন শ্রমিক ছিল। ধানের একটি নির্দিষ্ট মাপের বিনিময়ে সে আমার নিকট কাজ করেছিল। কিন্তু সে তার প্রাপ্য না নিয়েই চলে যায়। আমি সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান কৃষি কাজে ব্যবহার করি ফলে উৎপাদন এমন হয় যা থেকে আমি কতগুলো গরু খরিদ করি। একদিন সে আমার নিকট এসে তার পারিশ্রমিক চায়। আমি বললামঃ ঐ গরুগুলোর কাছে যাও। এগুলো তোমার সেই প্রাপ্য ধান থেকে হয়েছে। তখন সে গরুগুলো নিয়ে চলে গেল। হে আল্লাহ! উক্ত কাজ যদি আমি আপনার ভয়ে করে থাকি তবে আমাদেরকে উদ্ধার কর। তখন পাথর গুহার মুখ থেকে [কিছুটা] সরে গোল…….. |* অতঃপর হাদীসের বাকী অংশ প্রায় প্রথমটির মতই উল্লেখ করিয়াছেন।
[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন বুখারী ও মুসলিম] সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব :২ – ইবনে হিব্বান হতে বর্ণিতঃ
ইবনে হিব্বান হাদীছটি আবু হুরায়রার বরাতে সংক্ষেপে বর্ণনা করেন। `পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার` অনুচ্ছেদে তার বর্ণনা আসবে। ইনশাআল্লাহ।
সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব :৩ -আবু ফেরাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি ছিলেন আসলাম গোত্রের লোক। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি ডাক দিয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! ঈমান কি? তিনি বললেনঃ “ইখলাস বা একনিষ্ঠতা।”
অন্য বর্ণনায় তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [একদা] বললেনঃ
“যা ইচ্ছা তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর।”
তখন জনৈক ব্যক্তি ডাক দিয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! ইসলাম কি?
তিনি বললেনঃ “সালাত কায়েম করা ও যাকাত প্ৰদান করা।”
সে বলিল, ঈমান কি?
তিনি বললেনঃ “ইখলাস বা একনিষ্ঠতা।”
সে বলিল, ইয়াকীন কি?
তিনি বললেনঃ “[ইসলাম ধর্মের যাবতীয় বিষয়কে] সত্য প্রতিপন্ন করা।”
[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন বায়হাকী] সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব : ৪ -আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] বিদায় হজ্জে বলেনঃ `আল্লাহ তা`আলা ঐ ব্যক্তির মুখমন্ডল উজ্জল করুন [তাকে সম্মানিত করুন] যে ব্যক্তি আমার কথা শুনে তা মুখস্ত রেখেছে। কেননা এমন কতই না জ্ঞান বহনকারী রহিয়াছে, অথচ সে ফকীহ [জ্ঞানী] নয়। তিনটি বিষয়ে কোন মুমিন ব্যক্তির অন্তরে হিংসা প্রবেশ করিতে পারে না। [১] আল্লাহর জন্য আমলকে একনিষ্ঠ করা। [২] মুসলমানদের নেতৃবৃন্দকে নসীহত করা। [৩] মুসলমানদের জামাতকে আকড়ে ধরা। কেননা তাহাদের দু`আ তাহাদের পরর্তীদেরকেও বেষ্টন করে।` [হাদীছটি বাযযার হাসান সনদে বর্ণনা করেন।]
সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি
আত তারগীব ওয়াত তারহীব – ৫ – ইবনে হিব্বানও হতে বর্ণিতঃ
এ হাদীছটি ইবনে হিব্বানও {সহীহ} গ্রন্থে যায়েদ বিন ছাবেত থেকে বর্ণনা করেন। `হাদীছ শ্ৰবণ” অনুচ্ছেদে এর বর্ণনা আসবে ইনশাআল্লাহ।
[হাফেজ আবদুল আযীম আল মুনযেরী বলেনঃ হাদীছটি আরো বর্ণিত হয়েছে- ইবনে মাসউদ, মুআয বিন জাবাল, নূমান বিন বাশীর, জুবায়র বিন মুতঈম, আবু দারদা ও আবু কুরছাফা জানদারা বিন খায়শানা ও আরো অনেক ছাহাবী [রাযিআল্লাহ আনহুম] থেকে এদের কিছু সনদ সহীহভাবে বর্ণিত হয়েছে।] সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব – ৬ – মুসআব বিন সা`দ তার পিতা সা`দ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
মুসআব বিন সা`দ তার পিতা সা`দ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন। তিনি [সাদ] একবার মনে করিলেন গণীমতের মালে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]এর অন্যান্য সাহাবীর তুলনায়- তার বেশী অধিকার আছে। তখন নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ “আল্লাহ তো এই উম্মতের দূর্বল ব্যক্তিদের মাধ্যমে তাহাদেরকে সাহায্য করে থাকেন- তাহাদের দু`আ, সালাত ও [কৰ্মে] এখলাস তথা একনিষ্ঠতার মাধ্যমে।”
[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন নাসাঈ ও আরো অনেকে। হাদীছটি সহীহ বুখারীতে রহিয়াছে। তবে সেখানে এখলাস শব্দের উল্লেখ নেই] সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -৭ – যাহহাক বিন ক্বায়স [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “আল্লাহ তাবারাক ওয়া তা`আলা বলেন, আমি উত্তম শরীক । [কোন আমলে] আমার সাথে কেউ যদি শরীক করে তবে উহা আমার শরীকের জন্যেই সাব্যস্ত হইবে। হে লোক সকল! তোমরা একনিষ্ঠভাবে আমল কর। কেননা আল্লাহ তাবরাক ওয়া তা`আলা একনিষ্ঠভাবে যা তার জন্যে করা হয় তা ব্যতীত অন্য কোন আমল কবূল করেন না। তোমরা এরূপ বলো না যে, এ আমলটি আল্লাহর জন্যে এবং আত্মীয়ের জন্যে। কেননা উহা আত্মীয়ের জন্যেই সাব্যস্ত হইবে। তাতে আল্লাহর কোন অংশ থাকিবে না। তোমরা এরূপ বলো না যে, এ আমলটি আল্লাহর জন্যে এবং তোমাদের সন্তুষ্টির জন্যে। কেননা উহা তোমাদের উদ্দেশ্যেই সাব্যস্ত হইবে। তাতে আল্লাহর কোন অংশ থাকিবে না।”
[হাদীছটি বাযযার এবং বায়হাক্বী বর্ণনা করিয়াছেন] সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি
আত তারগীব ওয়াত তারহীব – ৮ – আবু উমামাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর নিকট এসে বললঃ এমন লোক সম্পর্কে আপনি কি মনে করেন, যে ছোয়াব ও প্রশংসা পাওয়ার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে- সে কি প্রতিদান পাবে? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ “তার জন্য কোনই প্রতিদান নেই। লোকটি তিন বার কথাটি পূণরাবৃত্তি করলে প্রতিবারই রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তার জন্য কিছুই নেই। তারপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা`আলা ইখলাছ ও তার সম্ভাষ্টির উদ্দেশ্য ছাড়া কোন আমল কবুল করবেন না।”
[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন আবু দাউদ ও নাসাঈ উত্তম সনদে। এ ধরণের হাদীছ জিহাদ অধ্যায়ে আসবে ইনশাআল্লাহ] সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃহাসান হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -৯ আবু দারদা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
নবী রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন
“দুনিয়া অভিশপ্ত। উহার মধ্যস্থিত সকল বস্তুও অভিশপ্ত। তবে যে কাজের মাধ্যমে আল্লাহ সন্তষ্টি কামনা করা হয়
তা অভিশপ্ত নয়।”
[হাদীছটি ত্বাবরানী বর্ণনা করেন।] হাদিসের তাহকিকঃহাসান লিগাইরিহি
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১০– ওমার বিন খাত্তাব [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে একথা বলিতে শুনেছিঃ `যাবতীয় আমল [শুদ্ধ না অশুদ্ধ তা] নিয়তের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তি যা নিয়ত করে তাই রহিয়াছে তার জন্য। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তার রাসূলের প্রতি হিজরত করিবে তার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি বলেই গণ্য হইবে। আর যে ব্যক্তির হিজরত দুনিয়া অর্জন বা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্য হইবে, তার হিজরত যে উদ্দেশ্য করেছে সে দিকেই গণ্য হইবে।`
[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিয়ী, নাসাঈ] সত্যবাদিতা
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১১ – আয়েশা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “একদল সৈনিক কাবা শরীফে যুদ্ধ করিতে আসবে। তারা যখন “বায়দা` নামক স্থানে পৌছবে কখন তাহাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তিকে নিয়ে যমীন ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। আমি [আয়েশা] বললামঃ কেমন করে তাহাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তিকে যমীনে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে, অথচ তাহাদের মধ্যে এমন লোকও তো রহিয়াছে যারা হাটে-বাজারে বেচা কেনায় লিপ্ত থাকিবে এবং এমনও লোক থাকিবে যারা সে সৈনিক দলের অন্তর্ভুক্ত নয়? তিনি বললেনঃ তাহাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তিকে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। অতঃপর নিয়ত অনুযায়ী তাহাদেরকে পূনরুথিত করা হইবে।”
[হাদীছটি ইমাম বুখারী, মুসলিম প্রমুখ বৰ্ণনা করেন।] হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব – ১২ – আনাস বিন মালেক [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর সাথে তাবুক যুদ্ধ থেকে ফিরে এলাম। এসময় তিনি বললেনঃ “আমাদের পশ্চাতে কতিপয় লোক মদীনায় রয়ে গেছে। আমরা এমন কোন পর্বতময় পথ ও উপত্যকা অতিক্রম করিনি যেখানে তারা আমাদের সাথে ছিল না। [অর্থাৎ আমাদের বরাবর প্রতিদান লাভ করেছে]। কেননা ওযর তাহাদেরকে বের হতে বাধা দিয়েছে।”
হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন ইমাম বুখারী ও আবু দাউদ, তবে আবু দাউদের বর্ণনা এভাবেঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ “তোমরা মদীনায় একদল লোককে ছেড়ে এসেছ। তোমরা যে পথই চলেছো, যে অর্থই খরচ করেছে এবং যে উপত্যকাই পাড়ি দিয়েছো- তারা তোমাদের সাথেই রহিয়াছে। তারা প্রশ্ন করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে তারা আমাদের সাথে থাকল, অথচ তারা তো মদীনাতেই রহিয়াছে? তিনি বললেনঃ [এই কারণে যে] অসুস্থতা তাহাদেরকে তোমাদের সাথে থাকতে বাধা দিয়েছে।” হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১৩ – আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “মানুষকে তাহাদের নিয়ত অনুযায়ী [কিয়ামতের দিন] উঠানো হইবে।”
[ইবনে মাজাহ হাদীছটি হাসান সনদে বর্ণনা করেন।] হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১৪ – ইবনে মাজাহ হতে বর্ণিতঃ
তিনি [ইবনে মাজাহ] জাবের [রাঃআঃ] থেকেও অত্র হাদীছটি বর্ণনা করেছেনঃ তবে তিনি বলেন, “মানুষকে হাশরের মাঠে একত্রিত করা হইবে তাহাদের নিয়ত অনুযায়ী।”
হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১৫ – আবু হুরায়রা হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের দেহ এবং আকার-আকৃতি দেখেন না; বরং তিনি দেখে থাকেন তোমাদের অন্তর।” [একথা বলে তিনি আঙ্গুল দ্বারা নিজের বুকের দিকে ইঙ্গিত করিলেন।] এবং তিনি দেখে থাকেন তোমাদের আমল।”
ইমাম মুসলিম হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন] হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১৬ – আবু কাবশা আল আনমারী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেন, তিনি বলেনঃ “তিনটি বিষয়ের উপর আমি শপথ করছি এবং তোমাদের কাছে একটি হাদীছ বর্ণনা করছি, তোমরা তা মুখস্ত করে রাখ। তিনি বলেনঃ উক্ত তিনটি বিষয় হল [১] সাদকা করলে কোন বান্দার সম্পদ কমে না। [২] কোন বান্দার উপর জুলুম করা হলে সে যদি ধৈর্য ধারণ করে, তবে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। [৩] যখনই কোন বান্দা ভিক্ষার দরজা খুলে দিবে তখনই আল্লাহ তার জন্য অভাবের দ্বার উন্মুক্ত করে দিবেন।” [অথবা তিনি এ জাতীয় একটা কথা বলেছেন] এবং তোমাদের নিকট আরেকটি হাদীছ বর্ণনা করছি, তোমরা উহা মুখস্ত করে রাখঃ “দুনিয়াটা চার প্রকার মানুষের জন্য। [১] একজন বান্দা, আল্লাহ তাকে সম্পদ ও জ্ঞান দান করিয়াছেন। সে তাতে তার পালনকর্তাকে ভয় করে, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে এবং তাতে আল্লাহর হক আছে তাও বুঝে [এবং তা আদায় করে]। এব্যক্তি সর্বোত্তম মর্যাদার অধিকারী। [২] অপর এক বান্দা, আল্লাহ তাকে জ্ঞান দান করিয়াছেন, কিন্তু সম্পদ দেন নাই। কিন্তু সে সৎ নিয়তের অধিকারী। সে বলেঃ আমার যদি সম্পদ থাকত তবে উমুক [প্রথম] ব্যক্তির ন্যায় তা ব্যবহার করতাম। সে তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিদান পাবে। উভয়ে সমান প্রতিদান পাবে। [৩] তৃতীয় বান্দা, আল্লাহ তাকে সম্পদ দান করিয়াছেন, কিন্তু জ্ঞান দেন নাই। সে স্বীয় সম্পদ মুর্খতাবশতঃ অন্যায় কাজে ব্যয় করে। তাতে নিজ পালনকর্তাকেও ভয় করে না, আত্মীয়তার সম্পর্কও রক্ষা করে না, আল্লাহর কোন হকও আদায় করে না। এ ব্যক্তি নিকৃষ্টতম মানের অধিকারী। [৪] চতুৰ্থ বান্দা, আল্লাহ তাকে কোন সম্পদও দেন নাই, জ্ঞানও দান করেন নাই। সে বলেঃ আমার যদি সম্পদ থাকত, তবে উমুক [তৃতীয়] ব্যক্তির মত [অন্যায় কাজে] তা ব্যয় করতাম, সেও তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। আর উভয় ব্যক্তির পাপ এক সমান।”
[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন, আহমাদ, তিরমিয়ী ও ইবনে মাজাহ।] তবে ইবনে মাজার বর্ণনা এভাবেঃ
[সহীহ] রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেনঃ
“এ উম্মতের উদাহরণ চার ব্যক্তির ন্যায়ঃ [১] এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ ও জ্ঞান দান করিয়াছেন। স্বীয় সম্পদে সে ইলম অনুযায়ী আমল করে থাকে। হক পথে তা ব্যয় করে। [২] অপর এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে জ্ঞান দান করিয়াছেন, কিন্তু কোন সম্পদ দেন নাই। সে বলেঃ এই ব্যক্তির মত যদি আমার [সম্পদ] থাকত তবে তার মত আমি তা ব্যবহার করতাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ উভয় ব্যক্তি প্রতিদানের ক্ষেত্রে বরাবর। [৩] তৃতীয় এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু কোন জ্ঞান দান করেননি, ফলে সে তার সম্পদে মূর্খতা সুলভ আচরণ করে, নাহক পথে তা ব্যয় করে। [৪] চতুৰ্থ ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে না দিয়েছেন ধন-সম্পদ না দিয়েছেন জ্ঞান। সে বলেঃ এ ব্যক্তির ন্যায় যদি আমার [সম্পদ] থাকত, তবে এমন ভাবে তা ব্যবহার করতাম, যেমন এ ব্যক্তি করে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ উভয় ব্যক্তি পাপের ক্ষেত্রে এক সমান।” হাদিসের তাহকিকঃসহীহ লিগাইরিহি
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১৭ – ইবনে আব্বাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সম্মানিত মহান পালনকর্তা হতে বর্ণনা করে বলেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহ তা`আলা সৎ কর্মসমূহ এবং অসৎকর্ম সমূহ লিখে রেখেছেন। অতঃপর উহা স্বীয় কিতাবে [কুরআনে] বিশুদ্ধভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন। অতএব যে ব্যক্তি সৎ কাজের ইচ্ছা করে, অতঃপর উহা বাস্তবায়ন করিতে সক্ষম না হয়, তবে আল্লাহ উহা পূর্ণ একটি সৎকর্ম হিসেবে লিখে নেন। আর ইচ্ছা করার পর যদি তা কর্মে বাস্তবায়ন করে, তবে আল্লাহ সে সৎকর্মটিকে দশ থেকে সাতশত থেকে আরো অনেক গুণে বৃদ্ধি করে লিখে নেন। আর যে ব্যক্তি কোন অসৎকর্ম করার ইচ্ছা পোষণ করে। অতঃপর উহা কর্মে বাস্তবায়ন না করে, তবে আল্লাহ উহা একটি পূর্ণ সৎকর্ম হিসেবে লিখে নেন। আর ইচ্ছা করার পর যদি উহা বাস্তবায়ন করে তবে আল্লাহ তা একটি মাত্ৰ পাপ কাজ হিসেবে লিখে থাকেন।”
[হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন বুখারী ও মুসলিম] মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছেঃ
“আল্লাহ তা একটিমাত্ৰ পাপ হিসেবে লিখে থাকেন অথবা তা মিটিয়ে দেন। আর আল্লাহর ব্যাপারে ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যক্তি মাত্ৰই ধ্বংস হয়ে থাকে।” হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১৮ – হতে বর্ণিতঃ
আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “আল্লাহ তা`আলা বলেনঃ আমার বান্দা যখন কোন অসৎ কর্ম করার ইচ্ছা পোষণ করে, তখন তা কর্মে বাস্তবায়ন করা পর্যন্ত তোমরা [ফেরেশতাকুল] কিছুই লিখিও না। যদি কর্মে বাস্তবায়ন করে তবে সে কর্ম অনুরূপ তার পাপ লিখ। আর যদি তা আমার কারণে পরিত্যাগ করে, তবে উহা তার জন্য একটি পূণ্য হিসেবে লিখে নাও। আর যদি কোন সৎকর্মের ইচ্ছা করে অতঃপর তা বাস্তবায়ন না করে তবে তা একটি পূণ্য হিসেবে লিখে নাও। আর যদি তা কর্মে বাস্তবায়ন করে, তবে তা দশ থেকে সাতশতগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে লিখে নাও।”
[বুখারী ও মুসলিম হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন। তবে বাক্যগুলো বুখারী থেকে গৃহীত]
মুসলিমের অপর রেওয়ায়াতে এসেছেঃ রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন সৎ কাজের ইচ্ছা করে, অতঃপর তা বাস্তবায়ন না করে, তবে তার জন্য একটি পূণ্য লেখা হয়। আর যে ব্যক্তি সৎকর্মের ইচ্ছা করার পর তা বাস্তবায়ন করে, তবে তার জন্য দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত নেকী লিখা হয়। আর যে ব্যক্তি অসৎ কাজের ইচ্ছা করে তা বাস্তবায়ন না করে, তবে তার কোন পাপ লিখা হয় না। আর যদি বাস্তবায়ন করে তবে তা লিখা হয়।”
মুসলিমের আর এক বর্ণনায় রয়েছেঃ আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ [সাঃআঃ] বলেনঃ “সম্মানিত মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন মনে মনে বলে যে, সে একটি সৎকাজ করিবে, তখন উহা বাস্তবায়ন না করলে আমি উহা একটি সৎকাজ হিসেবে লিখে নেই। আর যদি বাস্তবায়ন করে, তবে তাকে দশগুণ বৃদ্ধি করে লিখে থাকি। আর যখন আমার বান্দা মনে মনে বলে যে, সে একটি খারাপ কাজ করিবে, তখন উহা বাস্তবায়ন না করলে আমি তাকে ক্ষমা করে দেই। আর যদি বাস্তবায়ন করে, তবে সে কাজের অনুরূপ আমি পাপ লিখে থাকি। আর যদি উহা বাস্তবায়ন করা ছেড়ে দেয় তবে [হে ফেরেশতাকুল] তার জন্য একটি পূণ্য লিখে নাও। কেননা সে উহা একমাত্র আমার কারণেই পরিত্যাগ করেছে।” হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -১৯ – মা`ন বিন ইয়াযীদ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমার পিতা ইয়াযীদ কিছু দীনার বের করিলেন দান করার উদ্দেশ্যে। অতঃপর মসজিদে গিয়ে এক ব্যক্তির নিকট রেখে দিলেন। [ঘটনাক্রমে আমি ছিলাম সে ব্যক্তি] আমি উহা নিয়ে তার নিকট ফিরে এলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম আমি তোমাকে উদ্দেশ্য করি নাই। তখন ব্যাপারটির ফায়সালার জন্য আমি রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের] নিকট পেশ করলাম। তিনি বললেনঃ “হে ইয়ায়ীদ তুমি যা নিয়ত করেছ তার ছোয়াব পেয়ে যাবে। আর হে মা`ন যা তোমার হস্তগত হয়েছে তা তোমারই।”
[ইমাম বুখারী হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন।] সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -২০ – আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “[বনী ইসরাঈলের] জনৈক ব্যক্তি একদা বলিল, অবশ্যই আমি কিছু দান করব। এ উদ্দেশ্যে সে স্বীয় দান নিয়ে বের হল, এবং [গোপনীয়তার কারেণে নিজের অজান্তে] এক চোরের হাতে তা রেখে দিল। সকালে মানুষে বলাবলি করিতে লাগল, [কি আশ্চর্য!] আজ রাতে এক চোরকে দান করা হয়েছে। সে বলিল, হে আল্লাহ চোরের হাতে আমার দান যাওয়ার কারণে সকল প্রশংসা তোমার জন্য। অবশ্যই। [আবার] দান করব। অতঃপর সে তার দান নিয়ে বের হল এবং এক ব্যভিচারিনীর হাতে রেখে দিল। সকালে মানুষ বলাবলি করিতে লাগল, [কি আশ্চর্য!] গত রাতে একজন ব্যভিচারিনীকে দান করা হয়েছে। সে বলিল, হে আল্লাহ ব্যভিচারিনীকে দান করার কারণে সমস্ত প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য। অবশ্যই। [আবার সাদকা করব]। সে তার দান নিয়ে বের হল অতঃপর এক ধনী লোকের হাতে দিয়ে দিল। সকালে মানুষ বলিতে লাগল, [আশ্চর্য ব্যাপার!]। আজ রাতে একজন ধনী মানুষকে দান করা হয়েছে। সে বললঃ হে আল্লাহ যাবতীয় প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য চোরের, ব্যভিচারিনী এবং ধনী লোককে দান করার কারণে। তাকে স্বপ্ন মারফত বলা হল, তোমার দান চোরের হাতে যাওয়ার কারণে- হতে পারে সে চুরি থেকে বিরত থাকিবে। আর ব্যভিচারিনী, হতে পারে সে এ দানের কারণে ব্যভিচার থেকে পবিত্র হইবে। আর ধনী ব্যক্তি এ থেকে শিক্ষা গ্ৰহণ করে হতে পারে, ফলে সেও তার সম্পদ থেকে দান করিবে।”
[বুখারী, মুসলিম ও নাসাঈ হাদীছটি বর্ণনা করিয়াছেন] তবে মুসলিম ও নাসাঈর বর্ণনায় এসেছেঃ তাকে স্বপ্ন মারফত বলা হল, তোমার সাদকা কবূল করা হয়েছে …। তারপর হাদীছের বাকী অংশ উল্লেখ করেন। সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদীস
আত তারগীব ওয়াত তারহীব -২১ – আবু দারদা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
হাদীছটি তিনি নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। তিনি বলেনঃ “যে ব্যক্তি বিছানায় শয়ন করিবে এই নিয়তে যে, সে রাতে কিয়ামুল লায়ল তথা নফল ছালাত আদায় করিবে। কিন্তু তার চোখ তাকে পরাজিত করে দেয় ফলে [জাগ্রত হতে না পারার কারণে নামাযও আদায় করিতে পারে না] সকাল হয়ে যায়। তবে সে যা নিয়ত করেছিল তা তার জন্য লিখে দেয়া হয়। আর নিদ্রা তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সাদকা স্বরূপ হয়ে যায়।
[হাদীছটি নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ উত্তম সনদে বর্ণনা করেন এবং ইবনে হিব্বান স্বীয় সহীহ গ্রন্থে আবু যার অথবা আবু দারদা থেকে বর্ণনা করেন।] সত্যবাদিতা হাদিসের তাহকিকঃহাসান সহীহ
Leave a Reply