শিকার । যেসব প্রানি খাওয়া জায়েজ তাঁর বর্ণনা

শিকার । যেসব প্রানি খাওয়া জায়েজ তাঁর বর্ণনা

শিকার । যেসব প্রানি খাওয়া জায়েজ তাঁর বর্ণনা, হাদীস=১৯ টি ( ১০৪৮-১০৬৬ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ২৫ঃ শিকার সম্পর্কীত অধ্যায়

পরিচ্ছেদ ১ – কাঠ বা পাথর দ্বারা যে প্রাণী হত্যা করা হয়েছে তা খাওয়া জায়েয নয়
পরিচ্ছেদ ২ -প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রাণী দ্বারা শিকার
পরিচ্ছেদ ৩ – জলজ প্রাণী শিকার
পরিচ্ছেদ ৪ -দন্তবিশিষ্ট হিংস্র প্রাণী আহার করা হারাম হওয়া সম্পর্কে
পরিচ্ছেদ ৫ – যে সকল প্রাণী খাওয়া মাকরূহ্
পরিচ্ছেদ ৬ – মৃত প্রাণীর চামড়া
পরিচ্ছেদ ৭ – যে মৃত প্রাণী আহার করিতে বাধ্য হয়

পরিচ্ছেদ ১ – কাঠ বা পাথর দ্বারা যে প্রাণী হত্যা করা হয়েছে তা খাওয়া জায়েয নয়

১০৪১ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

জুরূফ নামক স্থানে পাথর দ্বারা দুইটি পাখি বধ করেছিলাম, একটি তখনই মারা গিয়েছিল। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] উহা ফেলে দেন এবং অপরটিকে যবেহ করিতে দৌঁড়ে গেলেন। উহাও যবেহ করার পূর্বেই মারা যায়। উহাকেও তিনি ফেলে দিলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৪২ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

যে সমস্ত প্রাণী লাঠি বা গোলার আঘাতে হত্যা করা হয়েছে ঐগুলো আহার করা কাসিম ইবন মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ] মাকরূহ বলে মনে করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৪৩ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁহার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাঈদ ইবন মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] বন্য প্রাণীর মত গৃহপালিত প্রাণীকে তীর ইত্যাদি দ্বারা হত্যা করা মাকরূহ বলে মনে করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : কোন লাঠির অগ্রভাগে ছুঁচালো কোন জিনিস লাগান থাকলে, আর ইহা শিকারকৃত প্রাণীকে যখমী করে দিলে উহা আহার করাতে আমি কোন দোষ মনে করি না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَيَبْلُوَنَّكُمْ اللهُ بِشَيْءٍ مِنْ الصَّيْدِ تَنَالُهُ أَيْدِيكُمْ وَرِمَاحُكُمْ .

অর্থাৎ হে মুমিনগণ! তোমাদের হাত ও বর্শা, যা শিকার করে সে বিষয়ে আল্লাহ্ অবশ্য তোমাদেরকে পরীক্ষা করিবেন। {১}

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন: মানুষ তার বর্শা, হাত অথবা অস্ত্র দ্বারা বিদ্ধ করায় যা আহত হয় তাই শিকার, যেইরূপ উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করিয়াছেন।

{১} সূরা: আল-মায়িদাহ, ৯৪ এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৪৪ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

বিজ্ঞ আলিমগণকে বলিতে শুনিয়াছি- কেউ কোন বন্য প্রাণী তীর ইত্যাদি দ্বারা আহত করবার পর উহা অন্য একভাবে যখ্মী হল, যেমন পানিতে পড়ে গেল বা শিকারের উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণ পায়নি এমন কোন কুকুর উহার উপর আক্রমণ চালাল, তবে ঐ ব্যক্তির আঘাতেই উহা মরিয়াছে বলে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঐ প্রাণীর গোশ্ত খাওয়া জায়েয হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : শিকারের প্রাণী আহত হয়ে ভেগে যাওয়ার পর উহা পাওয়া গেলে, উহাতে যদি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের আঘাতের চিহ্ন বা তীর আটকানো পাওয়া যায় তবে উহা খাওয়া জায়েয হইবে। এক রাত্রি অতিবাহিত হওয়ার পর যদি পাওয়া যায় তবে উহা মাকরূহ হইবে।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ২ -প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রাণী দ্বারা শিকার

১০৪৫ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলিতেন : প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর যদি কোন প্রাণী শিকার করে তবে উহা মেরে ফেলুক বা জীবিত ধরুক সকল অবস্থায়ই উহা খাওয়া জায়েয। {১} [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোন হিংস্র প্রাণী যেমন কুকুর, বাজপাখী ইত্যাদি যদি বিসমিল্লাহ বলে শিকারের উদ্দেশ্যে ছাড়া হয় এবং উহা কোন প্রাণী মেরে আনে তবে উহা খাওয়া জায়েয। [ক] হামলা করিতে ইশারা করলে হামলা করে। [খ] থেমে যেতে ইশারা করলে থেমে যায় এবং [গ] শিকারকৃত প্রাণী হইতে কিছু ভক্ষণ করে নাÑ এই তিনটি শর্ত পাওয়া গেলে উহাকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে গণ্য করা হয়।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৪৬ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলিতেন : প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকারকৃত প্রাণীর কিছু ভক্ষণ করুক কিংবা না করুক তবুও উহার শিকার খাওয়া জায়েয হইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৪৭ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, সাদ ইবনি আবী ওয়াক্কাস [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর যদি কোন প্রাণী শিকার করে কিছু ভক্ষণ করে ফেলে তবে কি হইবে ? তিনি বলিলেন : একটি টুকরাও যদি রাখে তবুও তা খেয়ে নিও। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৪৮ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি কোন কোন আহলে ইল্মকে বলিতে শুনেছেন, বাজ, গৃধ্র, ঈগল ইত্যাদি। শিকারী পাখী যদি প্রশিক্ষণ পায় এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের মত বুঝতে পারে তবে বিসমিল্লাহ বলে ছেড়ে থাকলে ঐগুলির শিকার জায়েয বলে গণ্য হইবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : আমি এই বিষয়ে উত্তম যা শুনিয়াছি তা হল, বাজপাখির পাঞ্জা বা কুকুরের মুখ হইতে যদি শিকার ছুটে যায় এবং পরে মারা যায় তবে উহা খাওয়া হালাল হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : অনুরূপ বাজপাখীর পাঞ্জায় বা কুকুরের মুখে যদি শিকারকৃত প্রাণীটি জীবিত পাওয়া যায় এবং শিকারী উহাকে যবেহ করবার পূর্বে উহা মারা যায় তবে উহা খাওয়া হালাল হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : তদ্ররূপ শিকারী যদি কোন প্রাণী শিকার করে, উহাকে জীবিত অবস্থায় পেয়েও যবেহ করিতে বিলম্ব করে এবং শিকারটি মারা গেলে উহা খাওয়া হালাল হইবে না।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি মজূসী [অমুসলিম] দ্বারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকারের উদ্দেশ্যে ছাড়ে এবং উহা শিকার করে অথবা শিকারকৃত প্রাণীটিকে মেরে ফেলে তবুও উহা খাওয়া হালাল হইবে। এতে কোন দোষ নেই, যদিও মুসলমান উহাকে যবেহ না করে থাকে। এর উদাহরণ হল- কোন মুসলিম ব্যক্তি কোন মজূসীর নিকট হইতে ছুরি নিয়ে কোন প্রাণী যবেহ করিল, কিংবা তীর-ধনুক নিয়ে কোন প্রাণী শিকার করিল। ইহা খাওয়া যেমন হালাল উহাও তেমন হালাল হইবে। ইহা আমাদের নিকট সর্বসম্মত।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : কোন মজূসী [অমুসলিম] যদি কোন মুসলমান কর্তৃক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকারের উদ্দেশ্যে ছাড়ে এবং শিকার করে তবে উহা খাওয়া হালাল হইবে না। কিন্তু যদি মুসলমান উহাকে জীবিত অবস্থায় পায় এবং নিজে যবেহ করে তবে হালাল হইবে। এর উদাহরণ হল- কোন মজূসী ব্যক্তি কোন মুসলমান হইতে বর্শা ও তীর নিয়ে কোন প্রাণী শিকার করিল এবং প্রাণীটি মারা গেল কিংবা মুসলমানের নিকট হইতে ছুরি নিয়ে কোন মজূসী প্রাণীটি যবেহ করিল, উভয় অবস্থায় কোনটিই হালাল হইবে না।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ৩ – জলজ প্রাণী শিকার

১০৪৯ আবদুর রহমান ইবনি আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-এর নিকট জিজ্ঞেস করলে তিনি উহা খেতে নিষেধ করেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : অতঃপর আবদুল্লাহ বাড়ী গিয়ে কুরআন শরীফ এনে নিম্নোক্ত আয়াতটি পড়ে শুনান, أُحِلَّ لَكُمْ صَيْدُ الْبَحْرِ وَطَعَامُهُ “তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও উহা আহার করা হালাল করা হয়েছে।” {১}

নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] আমাকে আবদুর রহমান ইবনি আবু হুরায়রা [রাদি.]-এর নিকট এই কথা বলার জন্য পাঠান যে, তাঁর প্রশ্নোল্লিখিত প্রাণী আহার করিতে কোন অসুবিধা নেই।

{১} সূরা: আন-নিসা, ৯৬। এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৫০ উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

এর আযাদকৃত গোলাম সাদুলজারী বর্ণনা করেন- যে সমস্ত মাছ পরস্পরকে হত্যা করে ফেলে বা শীতে মারা যায় সে ধরনের মাছ সম্পর্কে আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি তখন বলিলেন : উহা খাওয়াতে কোন দোষ নেই। পরে আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাহিমাহুল্লাহ]-কে এই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনিও অনুরূপ জবাব প্রদান করেছিলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৫১ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.] জায়েয বলে মনে করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৫২ আবু সালমা ইবনি আবদুর রহমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

মদীনার দিকে সমুদ্র তীরবর্তী গ্রাম জারের বাসিন্দাগণ মারওয়ান ইবনি হাকাম-এর নিকট এসে সমুদ্র-নিক্ষিপ্ত প্রাণী সম্পর্কে প্রশ্ন করিল। মারওয়ান বলিলেন : উহা আহার করায় কোন দোষ নেই। যাইদ ইবনি সাবিত ও আবু হুরায়রা [রাদি.]-কেও এই সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতে পার। তাঁরা কি বলিলেন আমাকে তা জানিয়ে যেও। তারা দুজনের নিকট এসে এতদসম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তাঁরাও বলিলেন : এতে কোন দোষ নেই। মারওয়ানের নিকট তাঁদের এই জবাব শুনালে তিনি বলিলেন : আমি তো পূর্বেই তোমাদেরকে এই কথা বলে দিয়েছিলাম। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : মজূসী [অমুসলিম] ব্যক্তি কর্তৃক শিকারকৃত মাছ আহার করা জায়েয। কারণ রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন : সমুদ্রের পানি পাক এবং উহার মৃত প্রাণীও হালাল।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : মৃত প্রাণীও যখন হালাল, তখন উহা শিকার করে যে-ই আনুক না কেন উহাতে ক্ষতি নেই।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ৪ -দন্তবিশিষ্ট হিংস্র প্রাণী আহার করা হারাম হওয়া সম্পর্কে

১০৫৩ আবু সালাবা খোশানী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন : দন্তবিশিষ্ট সকল হিংস্র প্রাণী আহার করা হারাম। আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন : দন্তবিশিষ্ট সকল হিংস্র প্রাণী হারাম।

[বুখারি ৫৫৩০, মুসলিম ১৯৩২, তবে ঈমাম মুসলিম এই শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন =======]এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১০৫৪ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন : দন্তবিশিষ্ট সকল হিংস্র প্রাণী হারাম। মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমাদের নিকটও মাসআলা অনুরূপ।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ৫ – যে সকল প্রাণী খাওয়া মাকরূহ্

১০৫৫ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধার গোশ্ত আহার করা সম্পর্কে উত্তম যা শুনিয়াছি তা এই- উহা আহার করা যাবে না। কারণ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করিয়াছেন : অশ্ব, অশ্বতর ও গর্দভ আমি আরোহণ এবং শোভার জন্য সৃষ্টি করেছি। [সহীহ, মুসলিম ১৯৩৩]

আল্লাহ তাআলা আনআম সম্বন্ধে ইরশাদ করেন : যাতে তোমরা এগুলোর উপর আরোহণ কর এবং এগুলো আহার কর। আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন : আল্লাহ তাদেরকে জীবনোপকরণস্বরূপ যেসব চতুষ্পদ আনআম দান করিয়াছেন সেই সব প্রাণী যবেহ কালে আল্লাহর নাম নেয়। তখন এগুলো হইতে তোমরা আহার কর এবং প্রার্থীকে আহার করাও।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : আমি আহলে ইলমের নিকট শুনিয়াছি উপরিউক্ত আয়াতে উল্লেখিত বা-ইস শব্দের অর্থ ফকির এবং মুতার শব্দের অর্থ আগন্তুক।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : [এই আয়াতগুলো দ্বারা বুঝা গেল] আল্লাহ্ তাআলা ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধা আরোহণ করার জন্য সৃষ্টি করিয়াছেন। আর আনআম জন্তুসমূহ আহার এবং আরোহণ উভয় কাজের জন্যই সৃষ্টি করিয়াছেন।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন : কানি ভিক্ষুককেও বলা হয়।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ ৬ – মৃত প্রাণীর চামড়া

১০৫৬ আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

একবার রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ একটি মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। উম্মুল মুমিনীন মায়মুনা [রাদি.]-এর জনৈক গোলামকে তিনি ইহা দিয়েছিলেন। তিনি তখন বলিলেন : তোমরা ইহার চামরা কোন কাজে লাগালে না কেন? তারা বলল : হে আল্লাহর রসূল ! ইহা তো মৃত। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বললেনঃ হ্যাঁ, ইহা খাওয়া হারাম [কিন্তু চামড়া দ্বারা অন্য কোন উপকরণ লাভ করা জায়েয]।

[বুখারি ১৪৯২, মুসলিম ৩৬৩]এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১০৫৭ আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন: দাবাগত {১} করার পর চামড়া পাক হয়ে যায়।

[সহীহ, মুসলিম ৩৬৬]{১} দাবাগত: কোন বস্তুর সাহায্যে চামড়ার পানি শুকিয়ে ফেলা।এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১০৫৮ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

দাবাগত করার পর মৃত জন্তুর চামড়া ব্যবহার করিতে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ নির্দেশ দিয়েছেন।

[যয়ীফ, আবু দাঊদ ৪১২৪, নাসাঈ ৪২৫২, ইবনি মাজাহ ৩৬১২, আলবানী হাদীসটি যয়ীফ বলেছেন {সহীহ ও যয়ীফ সুনান আবু দাঊদ}]এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ৭ – যে মৃত প্রাণী আহার করিতে বাধ্য হয়

১০৫৯ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

মুয্তার বা খাদ্যের অভাবে ওষ্ঠাগতপ্রাণ ব্যক্তি মৃত জন্তুর গোশ্ত পেট ভরে আহার করিতে পারে এবং উহা রাখতেও পারে। যখন হালাল খাদ্য পাবে তখন তা ফেলে দিবে।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মুয্তার বা খাদ্যের অভাবে ওষ্ঠাগতপ্রাণ ব্যক্তি যদি মৃত জন্তু বা কারো বাগানের ফল বা ক্ষেতের শস্য বা বকরী খেয়ে ফেলে তবে কি হইবে? মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলিলেন, বাগান, ক্ষেত বা বকরীর মালিক যদি ঐ ব্যক্তিকে মুয্তার হিসেবে সত্য বলে মনে করে এবং চোর মনে করে হাত না কাটে তবে মৃত জন্তু আহার করার তুলনায় এই সমস্ত জিনিস খাওয়াই উত্তম । কিন্তু উহা হইতে বহন করে নিয়ে যাবে না। আর তা না হলে আমার মতে উক্ত ব্যক্তির জন্য মৃত পশু খাওয়া উত্তম। যে কোন অবস্থায়ই যদি অন্যের মাল খাওয়া জায়েজ হত তবে গুণ্ডা-বদমাশরা একে বাহানা করে অন্যের ধন-সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে যেত।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, এই বিষয়ে আমি যা শুনিয়াছি তন্মধ্যে ইহা আমার নিকট উত্তম।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য


by

Comments

One response to “শিকার । যেসব প্রানি খাওয়া জায়েজ তাঁর বর্ণনা”

Leave a Reply