শহীদদের প্রকারভেদ – রিয়াদুছ সালেহিন হাদিস থেকে সংকলিত

শহীদদের প্রকারভেদ – রিয়াদুছ সালেহিন হাদিস থেকে সংকলিত

শহীদদের প্রকারভেদ – রিয়াদুছ সালেহিন হাদিস থেকে সংকলিত  >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

পরিচ্ছেদ – ২৩৫: শহীদদের প্রকারভেদ

পারলৌকিক সওয়াবের দিক দিয়ে যারা শহীদ, তাঁদেরকে গোসল দিয়ে জানাজার নামায পড়ে সমাধিস্থ করিতে হইবে। পক্ষান্তরে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিহত প্রকৃত শহীদদের যে অবস্থায় নিহত হইবে সেই অবস্থায় দাফন করিতে হইবে।

1/1361 وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «الشُّهَدَاءُ خَمْسَةٌ: المَطْعُونُ وَالمَبْطُونُ، وَالغَرِيقُ، وَصَاحِبُ الهَدْمِ، وَالشَّهِيدُ فِي سَبِيلِ اللهِ». متفقٌ عَلَيْهِ

১/১৩৬১। আবূ হুরায়রা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ  সাঃআঃ বলেছেন, “[পারলৌকিক পুরস্কারে পুরস্কৃত হওয়ার দিক দিয়ে] শহীদ পাঁচ ধরনের; [১] প্লেগ-রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত, [২] পেটের রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত, [৩] পানিতে ডুবে মৃত, [৪] মাটি চাপা পড়ে মৃত এবং [৫] আল্লাহর পথে থাকা অবস্থায় মৃত।” [বুখারী-মুসলিম] [1]

2/1362 وَعَنهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «مَا تَعُدُّونَ الشُّهَدَاءَ فِيكُمْ ؟» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ، مَنْ قُتِلَ فِي سَبيلِ اللهِ فَهُوَ شَهِيدٌ . قَالَ: «إِنَّ شُهَدَاءَ أُمَّتِي إِذَاً لَقَليلٌ» قالوا: فَمَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: «مَنْ قُتِلَ فِي سَبِيلِ الله فَهُوَ شَهِيدٌ، وَمَنْ مَاتَ فِي سَبِيلِ الله فَهُوَ شَهِيدٌ، وَمَنْ مَاتَ فِي الطَّاعُونِ فَهُوَ شَهِيدٌ، وَمَنْ مَاتَ فِي البَطْنِ فَهُوَ شَهِيدٌ، وَالغَرِيقُ شَهِيدٌ». رواه مسلم

২/১৩৬২। উক্ত রাবী রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রসুলুল্লাহ  সাঃআঃ বলিলেন, “তোমরা তোমাদের মাঝে কোন কোন ব্যক্তিকে শহীদ বলে গণ্য কর?” সকলেই বলে উঠল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর পথে যে নিহত হয়, সেই শহীদ।’ তিনি বলিলেন, “তাহলে তো আমার উম্মতের মধ্যে শহীদ খুবই অল্প।” লোকেরা বলিল, ‘তাহলে তাঁরা কে কে হে আল্লাহর রসূল?’ তিনি বলিলেন, “যে আল্লাহর পথে নিহত হয় সে শহীদ, যে আল্লাহর পথে মারা যায় সে শহীদ, যে প্লেগ রোগে মারা যায় সে শহীদ, যে পেটের রোগে প্রাণ হারায়, সে শহীদ এবং যে পানিতে ডুবে মারা যায় সেও শহীদ।” [মুসলিম][2]

3/1363 وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «مَنْ قُتِلَ دُونَ مَالِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ». متفقٌ عَلَيْهِ

৩/১৩৬৩। ‘আব্দুল্লাহ ইবনি ‘আমর ইবনি ‘আস রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ  সাঃআঃ বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার ধন-সম্পদ রক্ষা করিতে গিয়ে খুন হয়, সে শহীদ।” [বুখারী-মুসলিম][3]

4/1364 وَعَن أَبي الأعْوَرِ سَعيدِ بنِ زَيدِ بنِ عَمْرِو بنِ نُفَيْلٍ، أَحَدِ العَشَرَةِ المَشْهُودِ لَهُمْ بِالجَنَّةِ، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: «مَنْ قُتِلَ دُونَ مَالِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ، وَمَنْ قُتِلَ دُونَ دَمِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ، وَمَنْ قُتِلَ دُونَ دِينهِ فَهُوَ شَهِيدٌ، وَمَنْ قُتِلَ دُونَ أَهْلِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ». رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

৪/১৩৬৪। জীবদ্দশায় জান্নাতি হবার শুভ সংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবীদের অন্যতম সাহাবী আবুল আ’ওয়ার সাঈদ ইবনি যায়েদ ইবনি আমর ইবনি নুফাইল হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ  সাঃআঃ-কে বলিতে শুনিয়াছি, “যে ব্যক্তি তার মাল-ধন রক্ষা করিতে গিয়ে খুন হয়, সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজ রক্ত [প্রাণ] রক্ষা করিতে গিয়ে খুন হয়, সে শহীদ। যে তার দ্বীন রক্ষা করিতে গিয়ে খুন হয়, সে শহীদ এবং যে তার পরিবার রক্ষা করিতে গিয়ে খুন হয়, সেও শহীদ। [আবূ দাউদ, তিরমিযী হাসান সহীহ][4]

5/1365 وَعَن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَرَأيتَ إنْ جَاءَ رَجُلٌ يُرِيدُ أَخْذَ مَالِي ؟ قَالَ: «فَلاَ تُعْطِهِ مَالَكَ» قَالَ: أَرَأَيْتَ إِنْ قَاتَلَنِي ؟ قَالَ: «قَاتِلْهُ» قَالَ: أَرَأَيْتَ إِنْ قَتَلَنِي ؟ قَالَ: «فَأَنْتَ شَهِيدٌ» قَالَ: أَرَأيْتَ إِنْ قَتَلْتُهُ ؟ قَالَ: «هُوَ فِي النَّارِ». رواه مسلم

৫/১৩৬৫। আবূ হুরায়রা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাঃআঃ-এর নিকট এসে নিবেদন করিল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন, যদি কেউ আমার মাল [অবৈধভাবে] নিতে আসে তাহলে কি করিতে হইবে?’ তিনি বলিলেন, “তুমি তাকে তোমার মাল দেবে না।” পুনরায় সে নিবেদন করিল, ‘যদি সে আমার সাথে লড়াই করে?’ তিনি বলিলেন, “তাহলে [তুমিও] তার সাথে লড়াই কর।” সে বলিল, ‘বলুন, সে যদি আমাকে হত্যা করে দেয়?’ তিনি বলিলেন, “তাহলে তুমি শহীদ হয়ে যাবে।” সে আবার জিজ্ঞাসা করিল, ‘বলুন, আমি যদি তাকে মেরে ফেলি [তাহলে কি হইবে]?’ তিনি বলিলেন, “তাহলে সে জাহান্নামী হইবে।” [মুসলিম][5]


[1] সহীহুল বুখারী ৬১৫, ৬৫৩, ৭২১, ২৪৭২, ২৬৮৯, ২৮২৯, ৫৭৩৩, মুসলিম ৪৩৭, ৪৩৯, ১৯১৪, তিরমিযী ২২৫, ১০৬৩, ১৯৫৮, নাসায়ী ৪৫০, ৭৭১, আবূ দাউদ ৫২৪৫, ইবনু মাজাহ ৯৭৯, আহমাদ ৭১৮৫, ৭৬৮০, ৭৭৮২, ৭৯৬২, ৮১০৬, ৮২৯৩, ৯২০২, ৯৭৫০, মুওয়াত্তা মালিক ১৫১, ২৯৫

[2] সহীহুল বুখারী ৬৫৪, ২৪৭২, মুসলিম ১৯১৪, ১৯১৫, তিরমিযী ১০৬২, ১৯৫৮, আবূ দাউদ ৫২৪৫, ইবনু মাজাহ ২৮০৪, ৩৬৮২, আহমাদ ৭৭৮২, ৭৯৭৯, ৮১০৬, ৮৩১৫, ৯১১৫, মুওয়াত্তা মালিক ২৯৫

[3] সহীহুল বুখারী ২৪৮০, মুসলিম ১৪১, তিরমিযী ১৪১৯, ১৪২০, নাসায়ী ৪০৮৪-৪০৮৯, আবূ দাউদ ৪৭৭১, আহমাদ ৬৪৮৬, ৬৭৭৭, ৬৭৮৪, ৬৮৮৩, ৬৯১৭, ৭০১৫, ৭০৪৪

[4] আবূ দাউদ ৪৭৭২, তিরমিযী ১৪১৮, ১৪২১, নাসায়ী ৪০৯০, ৪০৯০, ৪০৯৪, ৪০৯৫,াজা ২৫৮০, আহমাদ ১৬৩১, ১৬৩৬, ১৬৫২

[5] মুসলিম ১৪০

Comments

One response to “শহীদদের প্রকারভেদ – রিয়াদুছ সালেহিন হাদিস থেকে সংকলিত”

Leave a Reply