রোজার নিয়ত করা – মাসে কয় দিন এবং কোন কোন দিন সাওম করা যায়
রোজার নিয়ত করা – মাসে কয় দিন এবং কোন কোন দিন সাওম করা যায় >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ২২ সাওম [রোজা] হাদীস (২৩২১-২৪৩৪)
১.পরিচ্ছেদঃ রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করলে পরবর্তী দিনের নফল সাওম [রোজা] পালন হইবে কি?
২.পরিচ্ছেদঃ সাওমের নিয়্যত এবং এ প্রসঙ্গে আয়েশা সিদ্দীকা [রাঃআঃ] সূত্রে বর্ণিত হাদীসে তালহা ইবনি ইয়াহ্য়া ইবনি তালহা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে বিভিন্নতার উল্লেখ
৩.পরিচ্ছেদঃ এ প্রসঙ্গে হাফসা [রাঃআঃ]-এর হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে বর্ণনা পার্থক্যের উল্লেখ
৪.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর নাবী দাঊদ [আঃ]-এর সাওম [রোজা]
৫.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ] এর সাওম [রোজা], তাহাঁর উপর আমার মাতা পিতা উৎসর্গিত হোক
৬.পরিচ্ছেদঃ এ বিষয়ে আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত রেওয়ায়তে বর্ণনার ইখতিলাফ
৭.পরিচ্ছেদঃ সর্বদা সাওম [রোজা] পালন থেকে নিষেধ করা এ বিষয়ে মুতাররিফ ইবনি আব্দুল্লাহ্ থেকে বর্ণনায় রাবীদের ইখতিলাফ
৮.পরিচ্ছেদঃ এ হাদিসের বর্ণনায় গায়লান ইবনি জারীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনাভেদের উল্লেখ
৯.পরিচ্ছেদঃ সর্বদা সাওম [রোজা] পালন করা
১০.পরিচ্ছেদঃ সারা বছরের দুই-তৃতীয়াংশকাল সাওম [রোজা] পালন করা এবং এ বিষয়ে রেওয়ায়ত বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের ইখতিলাফের উল্লেখ
১১.পরিচ্ছেদঃ একদিন সাওম [রোজা] পালন করা এবং একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করা এবং এ প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ]-এর বর্ণনায় রাবীদের শব্দ বর্ণনার পার্থক্যের উল্লেখ
১২.পরিচ্ছেদঃ সাওমে হ্রাস-বৃদ্ধি করা এবং এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ] বর্ণিত হাদিসের বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য-এর উল্লেখ
১৩.পরিচ্ছেদঃ মাসে দশ দিন সাওম [রোজা] পালন করা এবং এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ]-এর হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে শব্দ বর্ণনায় পার্থক্য
১৪.পরিচ্ছেদঃ মাসের পাচ দিন সাওম [রোজা] পালন করা
১৫.পরিচ্ছেদঃ মাসে চার দিন সাওম [রোজা] পালন করা
১৬.পরিচ্ছেদঃ মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা
১৭.পরিচ্ছেদঃ মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা বিষয়ে আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] বর্ণিত হাদীসে আলী ইবনি উসমান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনার বিভিন্ন রূপ
১৮.পরিচ্ছেদঃ প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] কিভাবে পালন করিবে? এবং এ বিষয়ে রেওয়ায়ত বর্ণনাকারীদের বর্ণনার পার্থক্য
১৯.পরিচ্ছেদঃ মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা প্রসঙ্গে মূসা ইবনি তালহা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য
২০.পরিচ্ছেদঃ প্রতি মাসে দুই দিন সাওম [রোজা] পালন করা
১.পরিচ্ছেদঃ রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করলে পরবর্তী দিনের নফল সাওম [রোজা] পালন হইবে কি?
২৩২১. সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে বলেছিলেন, তুমি আশুরার দিন ঘোষণা করে দাওঃ যে ব্যক্তি না খেয়ে থাকে আর যে ব্যক্তি এখনো কিছু খায়নি সে যেন সাওম [রোজা] পালন করে।১
১. ফরয সাওমে রাত্রে নিয়্যত করা জরুরী নয়। দিনে দ্বিপ্রহরের পূর্বে করলেও চলবে। আলোচ্চ্য হাদীসে ঐ সময়ের আশুরার সাওম [রোজা] সম্পর্কে বলা হইয়াছে যখন উহা ফরয ছিল। এখন আশুরার সাওম [রোজা] নফল।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২.পরিচ্ছেদঃ সাওমের নিয়্যত এবং এ প্রসঙ্গে আয়েশা সিদ্দীকা [রাঃআঃ] সূত্রে বর্ণিত হাদীসে তালহা ইবনি ইয়াহ্য়া ইবনি তালহা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে বিভিন্নতার উল্লেখ
২৩২২. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন আমার কাছে আসলেন এবং বললেনঃ তোমার কাছে কি খাওয়ার কিছু আছে? আমি বললামঃ না; তিনি বলিলেন, তাহলে আমি সাওমের নিয়্যত করে নিলাম, এরপর তিনি আরেক দিন আমার কাছে আসলেন এবং সে দিন আমাকে কিছু “হায়স” [খেজুর এবং ঘি ইত্যাদি দ্বারা প্রস্তুত এক প্রকার খাদ্য], উপহার দেওয়া হইয়াছিল, আমি তা থেকে কিছু রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জন্য রেখে দিয়েছিলাম। আর তিনি হায়স খুব পছন্দ করিতেন। তিনি বলিলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হইয়াছিল, আমি সেখান থেকে আপনার জন্য কিছু পৃথক করে রেখে দিয়েছি। তিনি বলিলেন, নিয়ে এসো, আমি তো আজকে সকালে সাওমের নিয়্যত করে ফেলেছিলাম, অতঃপর তা থেকে খেলেন। তারপর বলিলেন, নফল সাওমের দৃষ্টান্ত হল ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে স্বীয় ধন-ম্পদ থেকে দান করার নিয়্যতে কিছু মাল বের করিল। এখন সে ব্যক্তি ইচ্ছা করলে তা দানও করিতে পারে আবার ইচ্ছা করলে রেখেও দিতে পারে।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩২৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একবার আমার কাছে এসে বলিলেন, তোমার কাছে কি খাওয়ার কিছু আছে? আমি বললাম, আমার কাছে তো কিছুই নেই। তিনি বলিলেন, তা হলে আমি সাওমের নিয়ত করে নিলাম। আয়েশা [রাঃআঃ] বলেন, অতঃপর তিনি আরেক বার আমার কাছে আসলেন, তখন আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হইয়াছিল। আমি উহা তাঁকে দিলাম। তিনি তা খেয়ে ফেললেন। আমি তাতে আশ্চার্যানিত হইয়া গেলাম এবং বললাম ইয়া রসুলুল্লাহ! আপনি [একবার] সাওম [রোজা] পালনরত অবস্হায় আমার কাছে এলেন তারপর হায়স খেয়ে ফেললেন। তিনি বলিলেন, হে আয়েশা! হ্যাঁ, যে ব্যাক্তি রমযানের সাওম [রোজা] বা তার কাযা ছাড়া নফল সাওম [রোজা] পালন করে তার তুলনা ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে স্বীয় মাল দান করার জন্য বের করিল এবং সেখান থেকে যা ইচ্ছা দান করিল আর বাকী যা ইচ্ছা ফিরিয়ে নিল।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৩২৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এসে বললেনঃ তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? আমি বললামঃ না; তিনি বলিলেন, তাহলে আমি সাওমের নিয়্যত করে ফেললাম। আরেক দিন তিনি আমার কাছে আসলেন তখন আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হইয়াছিল। তিনি বলিলেন, আমি তো সকালে সাওমের নিয়্যত করে ফেলেছিলাম, অতঃপর খেলেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩২৫. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন আমাদের কাছে আসলেন তখন আমরা বললাম যে, আমাদেরকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া ছিল আমরা তার থেকে আপনার জন্য কিছু রেখে দিয়েছিলাম। তিনি বলিলেন যে, আমি তো সাওমের নিয়্যত করে ফেলেছিলাম অতঃপর তিনি সাওম [রোজা] ভঙ্গ করে ফেললেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩২৬. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] একবার তার কাছে আসলেন তখন তিনি সাওম [রোজা] পালন করছিলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমাদের কাছে আহারের কিছু আছে কি যা আমাকে খাওয়াতে পার? আমরা বললাম, না; তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে আমি সাওমের নিয়্যত করে নিলাম। এরপর আয়েশা [রাঃআঃ]-এর কাছে আবার আসলেন তখন আয়েশা [রাঃআঃ] বলিলেন যে, আমাদেরকে কিছু উপহার দেওয়া হইয়াছে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, কি? তিনি বলিলেন, হায়স, তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি তো সকালে সাওমের নিয়্যত করে ফেলেছিলাম, অতঃপর খেলেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩২৭. মুমিনীন আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ একবার রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করিলেন তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? আমি বললাম, না; তিনি বলিলেন, তাহলে আমি সাওমের [রোজার] নিয়্যত করে ফেললাম।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩২৮. মুজাহিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
একবার রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাহাঁর কাছে এসে বলিলেন, তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? আমি বললাম না; তিনি বলিলেন, তাহলে আমি সাওমের [রোজার] নিয়্যত করে ফেললাম। রাবী বলেন, তিনি আরেক দিন আসলেন তখন আয়িশা [রাঃআঃ] বলিলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হইয়াছে। তিনি তা চেয়ে নিলেন এবং বলিলেন যে, আজকে সকালে তো আমি সাওমের [রোজার] নিয়্যত করে ফেলেছিলাম। অতঃপর তা খেলেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩২৯. মুজাহিদ এবং উম্মে কুলসূম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একবার আয়েশা [রাঃআঃ]-এর কাছে গেলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন যে, তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? রাবী পূর্বের বর্ণনার অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
২৩৩০. মুমিনীন আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একবার তাহাঁর কাছে আসলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার কাছে আহারের কিছু আছে কি? আমি বললাম না; তখন তিনি বলিলেন, তাহলে আমি সাওমের [রোজার] নিয়্যত করে ফেললাম। আয়েশা [রাঃআঃ] বলেন, তিনি আমার কাছে আরেকবার আসলেন, তখন আমি বললামঃ রসুলুল্লাহ! আমাকে কিছু হায়স উপহার দেওয়া হইয়াছে। তিনি বলিলেন, তাহলে আজ আমি সাওম [রোজা] পালন করব না অথচ আমি সাওমের [রোজার] নিয়্যত করে ফেলেছিলাম।১
১. হানাফী আলিমগণের অভিমতঃ প্রথমে কেহ নফল সাওম [রোজা] পালনের নিয়্যত করলে এবং উহা ভঙ্গ করলে উহার কাযা করিতে হইবে।রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
৩.পরিচ্ছেদঃ এ প্রসঙ্গে হাফসা [রাঃআঃ]-এর হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে বর্ণনা পার্থক্যের উল্লেখ
২৩৩১. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি [রমযানের সাওম [রোজা] ব্যতীত] রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন করা হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৩২. হাফসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি রাত্রে ফজরের পূর্বেই সাওমের [রোজার] নিয়্যত [দূঢ় ইচ্ছা] না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৩৩. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ফজর উদয়ের পূর্বেই রাত্রে সাওমের [রোজার] নিয়ত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৩৪. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৩৫. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলিতেনঃ যে ব্যক্তি রাত্রে সাওমের [রোজার] নিয়্যত না করিবে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২৩৩৬. আব্দুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
হাফসা [রাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বেই রাত্রে সাওমের [রোজার] নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
২৩৩৭. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রে সাওমের [রোজার] নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
২৩৩৮. হাফসা [রা] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রেই সাওমের [রোজার] নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
২৩৩৯. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রেই সাওমের [রোজার] নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
২৩৪০. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রেই সাওমের [রোজার] নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
২৩৪১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রে সাওমের নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
২৩৪২. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যদি কোন ব্যক্তি রাত্রেই সাওমের [রোজার] নিয়্যত না করে তবে সে যেন সাওম [রোজা] পালন না করে [তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না]।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
২৩৪৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলিতেন, যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রেই সাওমের [রোজার] নিয়্যত না করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
৪.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর নাবী দাঊদ [আঃ]-এর সাওম [রোজা]
২৩৪৪. আব্দূল্লাহ ইবনি আমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় সাওম [রোজা] দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা]। তিনি একদিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন আর একদিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন না। আর আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় নামাজ দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর নামাজ। তিনি অর্ধরাত্র নিদ্রা যেতেন এবং রাত্রের এক তৃতীয়াংশ নামাজ আদায় করিতেন আবার রাত্রের ষষ্ঠমাংশ নিদ্রা যেতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫.পরিচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ] এর সাওম [রোজা], তাহাঁর উপর আমার মাতা পিতা উৎসর্গিত হোক
২৩৪৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাড়ীতে অবস্হানকালীন অবস্হায় এবং সফরকালীন অবস্থায় আইয়ামে বীযের সাওম [রোজা] পালন করা থেকে বিরত থাকতেন না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৩৪৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সাওম [রোজা] পালন শুরু করিতেন তখন আমরা মনে মনে বলতাম যে, হয়ত আর সাওম [রোজা] ছাড়বেন না আবার যখন সাওম [রোজা] রাখা থেকে বিরত থাকতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম [রোজা] পালন করার ইচ্ছাই রাখেন না। আর মদীনায় আগমনের পর থেকে রমযান মাস ব্যতীত কখনো পূর্ন এক মাস বিরামহীন সাওম [রোজা] পালন করিতেন না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৪৭. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] যখন সাওম [রোজা] পালন শুরু করিতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম [রোজা] পালন থেকে বিরত থাকার ইচ্ছাই রাখেন না। আবার যখন সাওম [রোজা] পালন থেকে বিরত থাকতেন তখনো আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম [রোজা] পাননের ইচ্ছাই রাখেন না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৪৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] কখনো এক রাত্রে পূর্ন কুরআন খতম করিয়াছেন বা কখনো সকাল পর্যন্ত পূর্ণ রাত্র নামাজ আদায় করিয়াছেন। কিংবা রমযান মাস ব্যতীত পূর্ণ এক মাস কখনো সাওম [রোজা] পালন করিয়াছেন বলে আমার জানা নেই।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৪৯. আব্দুল্লাহ ইবনি শকীক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-কে নাবী [সাঃআঃ]-এর সাওম [রোজা] পালন সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলিলেন যে, তিনি যখন সাওম [রোজা] পালন শুরু করিতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত এবার সাওমই [রোজাই] পালন করিতে থাকিবেন। আবার যখন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করা শুরু করিতেন তখনো আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত এবার সাওম [রোজা] ভঙ্গই করিতে থাকিবেন। আর তিনি মদীনায় আগমনের পর থেকে রমযান মাস ব্যতীত কখনো পূর্ণ এক মাস সাওম [রোজা] পালন করেন নি।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫০. আব্দুল্লাহ ইবনি আবু কায়স [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে মাস সমূহের মধ্যে শাবান মাসের সাওম [রোজা] পালন করা সর্বাধিক পছন্দনীয় ছিল। বরং তিনি শাবান মাসকে [সাওম [রোজা] পালনসহ] রমযানের সাথে মিলিরে নিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সাওম [রোজা] পালন শুরু করিতেন তখন আমরা মনে মনে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম [রোজা] ভঙ্গই করবেন না। আবার যখন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করা শুরু করিতেন তখনো আমরা মনে মলে ধারণা করতাম যে, তিনি হয়ত আর সাওম [রোজা] পালনই করবেন না এবং আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে শাবান মাসের চেয়ে বেশী অন্য কোন মাসে সাওম [রোজা] পালন করিতে দেখিনি।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫২. সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] শাবান এবং রমযান মাস ব্যতীত কখনো বিরামহীন দুই মাসের সাওম [রোজা] পালন করিতেন না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫৩. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত যে, তিনি শাবান মাস ব্যতীত কখনো বছরের পূর্ণ মাস সাওম [রোজা] পালন করিতেন না আর উহাকে রমযানের সাথে মিলিয়ে নিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কখনো শাবান মাসের চেয়ে বেশী অন্য কোন মাসে সাওম [রোজা] পালন করিতেন না। তিনি পূর্ণ শাবান মাস অথবা তার অধিকাংশ দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩৫৫. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কয়েক দিন ব্যতীত পূর্ণ শাবান মাসের সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫৬. জুবায়ের ইবনি নূফায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
আয়েশা [রাঃআঃ] বলেছেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] পূর্ণ শাবান মাসই সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৫৭. উসামা ইবনি যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমি আপনাকে তো শাবান মাসে যে পরিমাণ সাওম [রোজা] পালন করিতে দেখি বছরের অন্য কোন মাসে সে পরিমাণ সাওম [রোজা] পালন করিতে দেখি না। তিনি বলিলেন শাবান মাস রজব এবং রমযানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস যে মাসের [গুরুত্ব সম্পর্কে] মানুষ খবর রাখে না অথচ এ মাসে আমলনামা সমূহ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকটে উত্তলোন করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, আমার আমলনামা আল্লাহ তাআলার নিকটে উত্তোলন করা হইবে আমার সাওম [রোজা] পালনরত অবস্হায়।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৩৫৮. উসামা ইবনি যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! আপনি যখন সাওম [রোজা] পালন করা শুরু করেন তখন সহসা আর সাওম [রোজা] ভঙ্গ করেন না আবার যখন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করা শুরু করেন তখন আর সহসা সাওম [রোজা] পালন করা শুরু করেন না। কিন্তু দুইটি দিন; দুই দিন আপনার সাওম [রোজা] পালন করার দিন সমূহের মধ্যে এসে পড়ে [তবে আপনি সে দুদিন সাওম [রোজা] পালন করেনই] তা না হলেও আপনি ঐ দুই দিনের সাওম [রোজা] পালন করে থাকেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করিলেন, সে কোন দুদিন? আমি বললাম, সোমবার এবং বৃহস্পতিবার। তিনি বলিলেন, সেই দুদিন মানুষের আমলনামা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকটে উত্তোলন করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, আমার আমলনামা আল্লাহর নিকটে এমন অবস্থায় উত্তোলন করা হয় যখন আমি সাওম [রোজা] পালনরত থাকি।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩৫৯. উসামা ইবনি যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন বিরামহীন সাওম [রোজা] পালন শুরু করিতেন তখন মনে মনে ধারণা করা হত যে, হয়ত তিনি সাওম [রোজা] ভঙ্গ করবেন না। আবার যখন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করা শুরু করিতেন তখনো মনে মনে ধারণা করা হত যে, তিনি হয়ত আর সাওম [রোজা] পালনই করবেন না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩৬০. জুবায়র ইবনি নুফায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
আয়েশা [রাঃআঃ] বলেছেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম [রোজা] পালন করিতেন। [সাওম [রোজা] পালন করাকে অধিক গুরুত্ব দিতেন]।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬২. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] সর্বদা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৬৫. উম্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন [প্রথম সপ্তাহে] সোমবার, বৃহষ্পতিবার এবং পরবর্তী সপ্তাহে শুধূ সোমবার।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২৩৬৬. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক মাসের সোমবার এবং বৃহস্পতিবার দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন এবং পরবর্তী সপ্তাহে শুধু সোমবার।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৩৬৭. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নিদ্রা যেতেন তখন তাহাঁর পবিত্র ডান হাত গণ্ড মুবারকের নীচে রখেতেন এবং সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৩৬৮. আব্দুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক মাসের শুরুতে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন, আর শুক্রবার দিন খুব কমই সাওম [রোজা] ভঙ্গ করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৩৬৯. আবু হুবায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] চাশতের দুই রাকআত নামাজ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিত্রের নামাজ আদায় না করে নিদ্রা না যাওয়ার এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করারও নির্দেশ দিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭০. উবায়দুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে যখন আশুরার সাওম [রোজা] সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল তখন তিনি তাকে বলিতে শুনেছেনঃ নাবী [সাঃআঃ] রমযান মাসের ও আশুরার সাওম [রোজা] ব্যতীত অন্য কোন দিনের সাওম [রোজা]-কে অন্য দিনের সাওমের [রোজার] উপর গুরত্ব দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭১. হুমায়দ ইবনি আব্দুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি মুআবিয়া [রাঃআঃ]-কে আশুরার দিন মিনারের উপর দাঁড়িয়ে বলিতে শুনিয়াছি যে, হে মদীনাবাসীগন, তোমাদের আলিমগণ কোথায়? আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এদিন সম্পর্কে বলিতে শুনিয়াছি যে, আমি তো সাওম [রোজা] পালন করছি। অতএব যারা সাওম [রোজা] পালন করিতে ইচ্ছুক তারা যেন সাওম [রোজা] পালন করে।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭২. হুনায়দাহ্ ইবনি খালিদ [রাঃআঃ]-এর স্ত্রী হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমার কাছে নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রীগণের মধ্যে কোন একজন বর্ণনা করিয়াছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] আশুরার দিন, জিলহজ্ব মাসের নবম তারিখ এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন মাসের প্রথম সোমবার ও দুবৃহস্পতিবার সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬.পরিচ্ছেদঃ এ বিষয়ে আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত রেওয়ায়তে বর্ণনার ইখতিলাফ
২৩৭৩. আব্দুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম [রোজা] পালন করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।১
১. কেননা দুঈদ এবং আইয়াম-ই তাশরীকে সাওম [রোজা] পালন করা হারাম।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭৪. আব্দুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম [রোজা] পালন করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না এবং ইফতারও গ্রহণযোগ্য হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭৫. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম [রোজা] পালন করে তার সাওম [রোজা] পালন হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম [রোজা] পালন করে তার সাওম [রোজা] পালন গ্রহণযোগ্য হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭৭. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সারা জীবন সাওম [রোজা] পালন করে তার সাওম [রোজা] ও ইফতার গ্রহণযোগ্য হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭৮. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি একবার রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে সংবাদ পৌঁছাল যে, আমি সর্বদা সাওম [রোজা] পালন করি। [ইহা একটি দীর্ঘ হাদীস] রাবী বলেন, আতা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন যে, আমি বলিতে পারব না তিনি সর্বদা সাওম [রোজা] পালনের ব্যাপার কিভাবে উল্লেখ করেছিলেনঃ “যে ব্যক্তি সর্বদা সাওম [রোজা] পালন করে তার সাওম [রোজা] গ্রহণ যোগ্য নয়”। [এভাবে বলেছেন না অন্যভাবে বলেছেন, সঠিক শব্দগুলি আমার মনে নাই।]
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭.পরিচ্ছেদঃ সর্বদা সাওম [রোজা] পালন থেকে নিষেধ করা এ বিষয়ে মুতাররিফ ইবনি আব্দুল্লাহ্ থেকে বর্ণনায় রাবীদের ইখতিলাফ
২৩৭৯. ইমরান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করা হলঃ ইয়া রাসুলল্লাহ্! অমুক ব্যক্তি সারা বছর দিনে খায় না [সাওম [রোজা] পালন করে]। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তার সাওম [রোজা] পালন এবং তার ইফতার গ্রহণযোগ্য হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৮০. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
একদা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে এক ব্যক্তি সস্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছিল যে সর্বদা সাওম [রোজা] পালন করত। তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তার সাওম [রোজা] এবং তার ইফতার গ্রহণযোগ্য নয়।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৮১. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সর্বদা সাওম [রোজা] পালনকারীর ব্যাপারে বলেছেন যে, তার সাওম [রোজা] এবং ইফতার গ্রহণযোগ্য হইবে না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮.পরিচ্ছেদঃ এ হাদিসের বর্ণনায় গায়লান ইবনি জারীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনাভেদের উল্লেখ
২৩৮২. উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা একবার রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। আমরা এক ব্যক্তির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সাহাবীরা বললেনঃ ইয়া নাবী [সাঃআঃ]! এই ব্যক্তি দীর্ঘ দিন পর্যন্ত সাওম [রোজা] ভঙ্গ করে না। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তার সাওম [রোজা]ও গ্রহণযোগ্য নয় আর তার সাওম [রোজা] ভঙ্গও গ্রহণযোগ্য নয়।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
২৩৮৩. আবু কাতাদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তার সাওম [রোজা] সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি রাগান্বিত হইয়া গেলেন, তখন উমার [রাঃআঃ] বলিলেন যে, আমরা রব হিসাবে আল্লাহর উপর, ধর্ম হিসাবে ইসলামের উপর এবং রাসুল হিসাবে মুহাম্মদ [সাঃআঃ]-এর উপর সন্তুষ্ট। আরেকবার সর্বদা সাওম [রোজা] পালনকারী ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বললেনঃ তার সাওম [রোজা] পালনও গ্রহণযোগ্য নয়। তার সাওম [রোজা] ভঙ্গও গ্রহণযোগ্য নয়।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৯.পরিচ্ছেদঃ সর্বদা সাওম [রোজা] পালন করা
২৩৮৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
হামযা ইবনি আমর আসলামী [রাঃআঃ] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রসুলুল্লাহ! আমি সর্বদা সাওম [রোজা] পালনকারী ব্যক্তি। তাই আমি কি সফরকালীন সময়ে সাওম [রোজা] পালন করব? তিনি বললেনঃ যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম [রোজা] পালন করিবে আর যদি ইচ্ছা হয় তবে সাওম [রোজা] ভঙ্গ করে ফেলবে।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১০.পরিচ্ছেদঃ সারা বছরের দুই-তৃতীয়াংশকাল সাওম [রোজা] পালন করা এবং এ বিষয়ে রেওয়ায়ত বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের ইখতিলাফের উল্লেখ
২৩৮৫. মুহাম্মদ ইবনি বাশ্শার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-এর এক সাহাবী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-কে বলা হল যে, এক ব্যক্তি সর্বদা সাওম [রোজা] পালন করে। তিনি বললেনঃ আমার মনে চায় সে যেন কখনো কিছু আহার না করে।১ সাহাবীরা বলিলেন, তাহলে বছেরর দুই তৃতীয়াংশকালে সাওম [রোজা] পালন করুক? তিনি বলিলেন, তাও অধিক। সাহাবীরা বলিলেন, তাহলে সারা বছরের অর্ধেক? তিনি বলিলেন, তাও অধিক। অতঃপর তিনি বলিলেন, আমি কি তোমাদের অন্তরের ওয়াস্ওয়াসা বিদূরীত করার আমল সম্পর্কে অবহিত করব না? তা হল প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা।
১. সারা বছর সাওম [রোজা] পালন করা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর নিকট অপছন্দনীয় ছিল বলে তিনি এরূপ বলেছিলেন।রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৮৬. আমর ইবনি শুরাহবীল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এক ব্যক্তি আসল এবং জিজ্ঞাসা করিল যে, ইয়া রাসুলল্লাহ্! আপনি এমন ব্যক্তি সস্পর্কে কি বলেন, যে সারা বছর সাওম [রোজা] পালন করে? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আমার মনে চায় সে যেন কখনো কিছু আহার করে। তখন আগত ব্যক্তি বলিল, সারা বছরের দুই-তৃতীয়াংশকাল? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন যে, তাও অধিক। সে বলিল, তাহলে সারা বছরের অর্ধেক কাল? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাও অধিক। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের অন্তরের ওয়াসওয়াসা দূর করার আমল সষ্পর্কে অবহিত করব না? সাহাবীগণ বলিলেন, কেন নয়? তিনি বলিলেন, তা হল প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
২৩৮৭. আবু কাতাদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
উমার [রাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! সারা বছর সাওম [রোজা] পালনকারী ব্যক্তির অবস্থা কেমন হইবে? তিনি বলেন, তার সাওমও [রোজাও] গ্রহণযোগ্য হইবে না, আর তার সাওম [রোজা] ভঙ্গও গ্রহণযোগ্য হইবে না। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! দুইদিন সাওম [রোজা] পালনকারী এবং একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গকারীর অবস্থা কেমন হইবে? [উত্তরে] তিনি বলিলেন, এও কি কারো দ্বারা সম্ভব? তিনি [উমার [রাঃআঃ]] জিজ্ঞাসা করিলেন যে, একদিন সাওম [রোজা] পালনকারী এবং একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গকারীর অবস্হা কেমন হইবে? [উত্তরে] তিনি বলিলেন যে, এ হল দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা]। তিনি [উমার [রাঃআঃ]] বলিলেন একদিন সাওম [রোজা] পালনকারী এবং দূইদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গকারীর অবস্হা কেমন হইবে? [উত্তরে] তিনি বলিলেন, আমার ইচ্ছা হয় আমি যেন সেই শক্তি পাই। উমার [রাঃআঃ] বলেন যে, অতঃপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ রমযান মাসের সাওম [রোজা] এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা, ইহাই সারা বছর সাওম [রোজা] পালন করার সমতৃল্য।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১১.পরিচ্ছেদঃ একদিন সাওম [রোজা] পালন করা এবং একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করা এবং এ প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ]-এর বর্ণনায় রাবীদের শব্দ বর্ণনার পার্থক্যের উল্লেখ
২৩৮৮. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সর্বোত্তম সাওম [রোজা] হল দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা]। তিনি একদিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৮৯. আব্দুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমাকে আমার পিতা এক সম্ভ্রান্ত মহিলা বিবাহ করালেন। অতঃপর আমার পিতা তার কাছে এসে তার স্বামী সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করিতেন। আমার স্ত্রী বলত যে, আমার স্বামী খুবই ভাল মানুষ [তবে] তিনি কখনো আমার সাথে বিছানা মাড়ান নি এবং আমি তার কাছে আসা অবধি তিনি কখনো আমার পাশে আসেন নি। আমার পিতা তা নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো। অতঃপর আমি আমার পিতার সাথে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে গেলে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কিভাবে সাওম [রোজা] পালন কর? আমি বললাম, আমি প্রত্যেক দিন সাওম [রোজা] পালন করি। তিনি বললেনঃ তুমি প্রত্যেক সপ্তাহে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিবে। আমি বললাম, [ইয়া রসুলুল্লাহ!] আমি এর চেয়েও বেশী সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি দুইদিন সাওম [রোজা] পালন কর এবং একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ কর। আমি বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমি এর চেয়েও বেশী সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমি সর্বোত্তম সাওম [রোজা] অর্থাৎ দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] পালন কর; একদিন সাওম [রোজা] পালন কর আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ কর।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৯০. আব্দুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে এক মহিলা বিবাহ করালেন এবং তাকে দেখিতে আসলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন যে, তুমি তোমার স্বামীকে কেমন পেলে? সে বলিল খুবই ভাল লোক। তিনি রাত্রে নিদ্রাও যান না আর দিনেও সাওম [রোজা] ভঙ্গ করেন না। তখন আমার পিতা আমাকে তিরস্কার করে বলিলেন, আমি তোমাকে এক মুসলিম মহিলা বিবাহ করালাম আর তুমি তাকে এভাবে ঠেলে রাখলে। [আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] বলেন, আমি নিজের মধ্যে শক্তি অনুভব করার কারণে আমর পিতার তিরস্কারের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছিলাম না। এ সংবাদ নাবী [সাঃআঃ] পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি বলিলেন, আমি তো নামাজও আদায় করি আবার নিদ্রাও যাই, সাওম [রোজা] পালনও করি আবার সাওম [রোজা] ভঙ্গও করি। তাই তুমিও নামাজ আদায় কর, নিদ্রা যাও, সাওম [রোজা] পালন কর এবং সাওম [রোজা] ভঙ্গও কর। তিনি বলিলেন, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন কর। তখন আমি বললাম, আমি তো এরও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] পালন কর। একদিন সাওম [রোজা] পালন কর আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ কর। আমি বললাম আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমি প্রতি মাসে এক খতম করে কুরআন তিলাওয়াত কর। অতঃপর তিনি তা পনের দিনে খতম করার অনুমতি দিলে আমি বলছিলাম, আমি এর চেয়েও অধিক এর চেয়ে অধিক সামর্থ্য রাখি।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৯১. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
একবার রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার কামরায় প্রবেশ করিলেন এবং বলিলেন, আমাকে অবহিত করা হইয়াছে যে, তুমি নাকি সারা রাত্র নামাজ আদায় কর এবং সারাদিন সাওম [রোজা] পালন কর? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তখন তিনি {রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]} বলিলেন, তুমি কখনো এরুপ করিবে না বরং কিছুক্ষণ নিদ্রা যাবে। আর কিছুক্ষন নামাজ আদায় করিবে এবং কখনো কখনো সাওম [রোজা] পালন করিবে আবার কখনো সাওম [রোজা] ভঙ্গও করে ফেলবে। কেননা তোমার চক্ষুর জন্য তোমার উপর হক রয়েছে, তোমার শরীরের জন্য তোমার উপর হক রয়েছে, তোমার স্ত্রীর জন্য তোমার উপর হক রয়েছে, তোমার মেহমানের জন্য তোমার উপর হক রয়েছে, তোমার বন্ধুর জন্য তোমার হক রয়েছে। আশা করি, তুমি দীর্ঘজীবী হও! তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিবে। ইহাই সারা বছর সাওম [রোজা] পালন করার সমান হইবে, যেহেতূ প্রত্যেক ভাল কাজের জন্য তার দশ দশ গুন সওয়াব রয়েছে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সামর্থ্য রাখি। আমি কঠোরতা অবলম্বন করিতে চাইলে তিনি তার অনুমতি দিলেন। তিনি বলিলেন, তুমি প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। আমি কঠোরতা অবলম্বন করিতে চাইলে তিনি তার অনুমাতি দিলেন। তিনি বলিলেন, তুমি আল্লাহর নাবী দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর ন্যায় সাওম [রোজা] পালন কর। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] কিরুপ ছিল? রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, বছরের অর্ধেক সময়।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৯২. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে তার সমন্ধে উল্লেখ করা হলে তিনি বলেনঃ আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন অবশ্যই সারা রাত্র নামাজ আদায় করব এবং অবশ্যই সারা দিন সাওম [রোজা] পালন করব। তখন রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেন, তুমি কি এরুপ বলেছ? আমি তাঁকে বললাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি নিশ্চয়ই এরুপ বলেছি। তখন রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেন, তুমি এ রকম পারবে না। অতএব তুমি কখনো কখনো সাওম [রোজা] পালন কর-আর কখনো সাওম [রোজা] ভঙ্গ করে ফেল এবং কিছু সময় নিদ্রা যাও আর কিছু সময় নামাজ আদায় কর। আর প্রতি মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন কর। কেননা প্রত্যেক ভাল কাজের জন্য তার দশ দশ গুণ সওয়াব রয়েছে। আর এটাই বছর সাওম [রোজা] পালনের সমতুল্য। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেন, তুমি এক দিন সাওম [রোজা] পালন কর এবং দুই দিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ কর। আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি একদিন সাওম [রোজা] পালন কর, একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ কর। আর এটাই দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] এবং এটাই হলো সর্বোত্তম সাওম [রোজা]। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেন, এর চেয়ে উত্তম সাওম [রোজা] আর হয় না। আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] বলেন, যে তিন দিনের সাওম [রোজা] পালন করার কথা বলেছিলেন তা গ্রহণ করাই আমার নিকট আমার পরিবার-পরিজন ও আমার ধন-সম্পদ থেকে অধিকতর প্রিয় মনে হয়।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৯৩. আবু সালামা ইবনি আব্দুর রহমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ]-এর কাছে গিয়ে বললাম, হে চাচা! রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আপনাকে যা বলেছিলেন তা আমাকে বলুন। তিনি বলিলেন, হে আমার ভ্রাতূষ্পুত্র, আমি দৃঢ় সংকল্প করেছিলাম যে, আমি অত্যধিক পবিশ্রম করব, এমনকি মনে মনে বলেছিলাম যে, আমি অবশ্যই সারা জীবন সাওম [রোজা] পালন করব এবং প্রত্যেক দিবা রাত্রে একবার কুরআন খতম করব। এ খবর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কানে ফেললে তিনি আমার কাছে আসলেন এবং ঘরে প্রবেশ করে বলিলেন যে, আমি শুনিয়াছি- তুমি নাকি বলেছ যে, আমি অবশ্যই সারা জীবন সাওম [রোজা] পালন করব এবং সারাক্ষণ কুরআন তিলাওয়াত করব? আমি বললাম, ইয়া রাসুলল্লাহ্! আমি অবশ্যই বলেছি। তিনি বলিলেন, তুমি এরূপ কর না বরং তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি প্রত্যেক সপ্তাহে দুই দিন সাওম [রোজা] পালন করিবে সোমবার এবং বৃহষ্পতিবার। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর ন্যায় সাওম [রোজা] পালন করিবে। কেননা সেটাই আল্লাহ তাআলার নিকট সর্বোত্তম সাওম [রোজা]। একদিন সাওম [রোজা] পালন করিবে আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করে ফেলবে। আর দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন ওয়াদা করিতেন তা পূর্ণ করিতেন আর যখন শক্রর মুখোমুখী হইতেন পলায়ন করিতেন না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১২.পরিচ্ছেদঃ সাওমে হ্রাস-বৃদ্ধি করা এবং এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ] বর্ণিত হাদিসের বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য-এর উল্লেখ
২৩৯৪. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলেছিলেন, তুমি [প্রত্যেক দশ দিনে] একদিন সাওম [রোজা] পালন করিবে তা হলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হইবে। তিনি বলেন, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। রাসুলুল্লাহ, [সাঃআঃ] বলিলেন, তা হলে তুমি দুই দিন সাওম [রোজা] পালন কর তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হইবে। তিনি বলিলেন, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলিলেন, তাহলে তুমি তিন দিন সাওম [রোজা] পালন কর, তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হইবে। তিনি বলিলেন, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমি আল্লাহ তাআালার নিকট সর্বোত্তম সাওম [রোজা]-দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাওম [রোজা] পালন কর। তিনি একদিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৯৫. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে সাওমের উল্লেখ করলে তিনি বলিলেন, তুমি প্রত্যেক দশ দিনে এক দিন সাওম [রোজা] পালন কর তাহলে অবশিষ্ট নয় দিনের সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হইবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমি প্রত্যেক নয়দিনে এক দিন সাওম [রোজা] পালন কর তাহলে অবশিষ্ট আট দিনের সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হইবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পানলের সামর্থ্য রাখি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমি প্রত্যেক আট দিনে এক দিন সাওম [রোজা] পালন কর তাহলে অবশিষ্ট সাত দিনের সওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। তিনি বলিলেন, আমি এরকম বলিতেই থাকলাম, শেষ পর্যন্ত রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি একদিন সাওম [রোজা] পালন কর আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ কর।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৯৬. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ তুমি একদিনের সাওম [রোজা] পালন কর তাহলে তুমি দশ দশ দিন সাওম [রোজা] পালন করার সওয়াব পাবে। আমি বললাম, আরো কিছু বাড়িয়ে দিন। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি দুই দিনের সাওম [রোজা] পালন কর, তাহলে অবশিষ্ট নয়দিনের সাওম [রোজা] পালন করার সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হইবে। আমি বললাম, আরো কিছু বাড়িয়ে দিন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমি তিন দিনের সাওম [রোজা] পালন কর, তাহলে অবশিষ্ট আট দিনের সাওম [রোজা] পালন করার সওয়াবও তোমার অংশে লেখা হইবে। ছাবিত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন যে, আমি এ হাদীস মুতাররিফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বলিলেন, আমার মনে হয় এ হাদিসের অর্থ হল, সাওম [রোজা] পালনকারী আমলের সংখ্যা বাড়ালেও সওয়াব কম হইবে। বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩.পরিচ্ছেদঃ মাসে দশ দিন সাওম [রোজা] পালন করা এবং এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ]-এর হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে শব্দ বর্ণনায় পার্থক্য
২৩৯৭. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, তুমি নাকি সারা রাত্র নামাজ আদায় কর এবং সারা দিন সাওম [রোজা] পালন কর? আমি বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! এর দ্বারা তো আমি ভালই আশা করে থাকি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, সর্বদা সাওম [রোজা] পালনকারীর সাওম [রোজা] গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আমি তোমাকে সর্বদা সাওম [রোজা] পালন করার নিয়ম বলে দিচ্ছি। তা হল প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা। আমি বললাম, ইয়া রাসুলল্লাহ্! আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমি পাঁচ দিন সাওম [রোজা] পালন কর। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে তুমি দশ দিন সাওম [রোজা] পালন কর। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি দাঊদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] পালন কর- তিনি একদিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৯৮. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তারপর দীর্ঘ হাদীস বর্ননা করিলেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
২৩৯৯. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ]! তুমি নাকি সর্বদা সাওম [রোজা] পালন কর এবং সারা রাত্র নামাজ আদায় কর? তুমি যখন এরূপ করিতে থাকিবে তখন তোমার চক্ষু কোটেরাগত হয়ে যাবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। সর্বদা সাওম [রোজা] পালনকারীর সাওম [রোজা] গ্রহণযোগ্য নয়। সারা জীবনের সাওম [রোজা] হল প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি দাউদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] পালন কর- তিনি একদিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন আর একদিন সওম ভঙ্গ করিতেন। এবং [শক্রর] মুখোমুখী হলে পলায়ন করিতেন না।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪০০. আবদুল্লাহ্ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি মাসে একবার কুরআন খতম কর। আমি বললাম, আমি তো এরচেয়েও অধিক পড়তে পারি। আমি তার কাছে আরো বাড়াবার আবেদন করিতে থাকলে শেষ পর্যন্ত তিনি আমাকে পাঁচ দিনে কুরআন খতম করিতে বলিলেন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আরো বলিলেন, তুমি মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন কর। আমি বললাম, আমি তো এরচেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। আমি তার কাছে আরো বাড়াবার আবেদন করিতে থাকলে শেষ পর্যন্ত তিনি আমাকে আল্লাহ তাআলার নিকট সর্বোত্তম সাওম [রোজা] দাউদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] পালন করিতে বলিলেন। তিনি একদিন সওম পালন করিতেন আর একদিন সওম ভঙ্গ করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪০১. আব্দুল্লাহ ইব্ন আমর ইব্ন আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে সংবাদ পৌছল যে, আমি সর্বদা সাওম [রোজা] পালন করে থাকি এবং সারা রাত্র নামাজ আদায় করে থাকি। তখন নাবী [সাঃআঃ] তার কাছে সংবাদ পাঠালেন কিংবা তিনি তাহাঁর সাথে সাক্ষাত করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ আমাকে সংবাদ দেওয়া হয়েছে যে, তুমি সর্বদা সাওম [রোজা] পালন কর; সাওম [রোজা] ভঙ্গ কর না এবং সারা রাত্র নামাজ আদায় করে থাক। তুমি এরূপ করিবে না। কেননা, তোমার চক্ষুর জন্য তোমার উপর হক রহিয়াছে। তোমার শরীরের জন্য তোমার উপর হক রহিয়াছে। তোমার স্ত্রীর জন্য তোমার উপর হক রহিয়াছে। তুমি কখনো কখনো সাওম [রোজা] পালন করিবে আবার কখনো সাওম [রোজা] ভঙ্গও করে ফেলবে। এবং রাত্রের কিছু সময় নামাজ আদায় করিবে আর কিছু সময় নিদ্রা যাবে। তুমি প্রত্যেক দশ দিনে একদিন সাওম [রোজা] পালন করিবে, তাহলে তোমার জন্য অবশিষ্ট নয় দিনের সওয়াবও লেখা হইবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ রাখি। তিনি বলেন, তাহলে তুমি দাউদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] পালন কর। তিনি বলেনঃ দাউদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা] কিরূপ ছিল ইয়া রাসূলাল্লাহ্ [সাঃআঃ]? তিনি বলেন, দাউদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম] একদিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন আর তিনি একদিন সওম ভঙ্গ করিতেন আর তিনি শত্রুর মুখোমুখী হলে পলায়ন করিতেন না। তিনি বলিলেন যে, ইয়া নাবীয়্যাল্লাহ [সাঃআঃ] আমার সেই শক্তি কোথায়?
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৪.পরিচ্ছেদঃ মাসের পাচ দিন সাওম [রোজা] পালন করা
২৪০২. আব্দুল্লাহ ইবৃন আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে আমার সাওম [রোজা] পালন সম্পর্কে উল্লেখ করা হলে তিনি আমার কাছে আসলেন এবং আমি তার জন্য একটি খেজুরের বাকল ভর্তি মধ্যম আকারের চামড়ার বালিশ আগিয়ে দিলাম। তিনি মাটিতে বসে গেলেন এবং বালিশ আমার আর তার মাঝখানে ছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার জন্য কি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন যথেষ্ট নয়? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ [সাঃআঃ]! [আমার জন্য আরো বাড়িয়ে দিন] তিনি বলিলেন, তাহলে পাঁচ দিন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! [আমার জন্য আরো বাড়িয়ে দিন] তিনি বলিলেন, তাহলে সাত দিন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ [সাঃআঃ]! [আমার জন্য আরো বাড়িয়ে দিন] তিনি বলিলেন, নয় দিন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ [সাঃআঃ]! [আমার জন্য আরো বাড়িয়ে দিন] তিনি বলিলেন, তাহলে এগার দিন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ [সাঃআঃ]! [আরো বাড়িয়ে দিন] তিনি বলিলেন, দাউদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওমের উপরে কোন সাওম [রোজা] হইতে পারে না। আর তা হল সারা জীবনের অর্ধেক একদিন সাওম [রোজা] পালন করা আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করা।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৫.পরিচ্ছেদঃ মাসে চার দিন সাওম [রোজা] পালন করা
২৪০৩. আব্দুল্লাহ ইব্ন আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ তুমি প্রত্যেক মাসে একদিন সাওম [রোজা] পালন কর তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। তিনি বলিলেন, তবে তুমি দুইদিন সওম পালন কর, অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ রাখি। তিনি বলিলেন, তবে তুমি তিন দিন সাওম [রোজা] পালন কর, অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ রাখি। তিনি বলিলেন, তবে তুমি চারদিন সাওম [রোজা] পালন কর, তুমি অবশিষ্ট দিনগুলোর সাওয়াবও তুমি পাবে। আমি বললাম, আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, সবোত্তম সাওম [রোজা] হল দাউদ [আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাওম [রোজা]। তিনি একদিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন আর একদিন সাওম [রোজা] ভঙ্গ করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬.পরিচ্ছেদঃ মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা
২৪০৪. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বন্ধু [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]] আমাকে তিনটি আমলের ওসীয়্যত করিয়াছেন; ইনশাআল্লাহ্ আমি সেগুলো কখনো পরিত্যাগ করব না। তিনি আমাকে চাশতের নামাজ এবং নিদ্রা যাওয়ার পূর্বে বিতরের নামাজ আদায় করার আর প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করার ওসীয়্যত করিয়াছেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২৪০৫. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে তিনটি আমলের নির্দেশ দিয়েছেনঃ বিতরের নামাজ আদায় করেই নিদ্ৰা যাওয়ার, শুক্রবার দিন গোসল করার এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করার।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২৪০৬. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে দুই রাকআত চাশতের নামাজ আদায় করার, বিত্রের নামাজ আদায় করার পরই নিদ্রা যাওয়ার এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪০৭. আৰু হুরায়রা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বিতরের নামাজ আদায় করার পরই নিদ্রা যাওয়ার, প্রত্যক শুক্রবার দিন গোসল করার এবং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার
১৭.পরিচ্ছেদঃ মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা বিষয়ে আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] বর্ণিত হাদীসে আলী ইবনি উসমান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনার বিভিন্ন রূপ
২৪০৮. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ ধৈর্যের মাস হল রমযান মাস আর প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা সারা বছর সাওম [রোজা] পালন করার সমতুল্য।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪০৯. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিল সে যেন সারা বছর সাওম [রোজা] পালন করিল। অতঃপর তিনি বলিলেন, আল্লাহ তাআলা কুরআনে সত্যই বলেছেনঃ যে ব্যক্তি একটি ভাল কাজ করিবে তাকে তার দশ গুণ সওয়াব দেওয়া হইবে।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪১০. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিল সে যেন সারা মাস সাওম [রোজা] পালন করিল অথবা তিনি বলেছেনঃ তার জন্য সারা মাস সাওম [রোজা] পালন করার সওয়াব রহিয়াছে।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৪১১. উসমান ইবনি আবুল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ উত্তম সাওম [রোজা] হল প্রতি মাসে তিন দিন সওম পালন করা।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪১২. উসমান ইবনি আবুল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
উসমান ইবনি আবুল আস [রাঃআঃ] অনুরূপ বলেছেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
২৪১৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৮.পরিচ্ছেদঃ প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] কিভাবে পালন করিবে? এবং এ বিষয়ে রেওয়ায়ত বর্ণনাকারীদের বর্ণনার পার্থক্য
২৪১৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন। মাসের প্রথম সপ্তাহে সোমবার, তার পরবর্তী সপ্তাহে বৃহস্পতিবার এবং তার পরবর্তী সপ্তাহে বৃহস্পতিবার।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি
২৪১৫. উন্মুল মুমিনীন [হাফসা [রাঃআঃ]] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন। মাসের প্রথম সোমবার, তারপর বৃহস্পতিবার এবং তার পরবতী বৃহস্পতিবার।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪১৬. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, চারটি আমল নাবী [সাঃআঃ] কখনো পরিত্যাগ করিতেন না। আশুরার দিনের সাওম [রোজা], যিলহজ্জ মাসের নয় দিনের সাওম [রোজা], প্রত্যেক মাসে তিন দিনের সাওম [রোজা] এবং ফজরের দুরাকাআত সুন্নাত।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৪১৭. আহমদ ইবনি ইয়াহইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-এর কোন স্ত্রী থেকে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যিলহজ্জ মাসের নয় দিন, আশুরার দিন এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন-মাসের সোমবার এবং দুই বৃহস্পতিবার।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪১৮. মুহাম্মদ ইবনি উসমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-এর কোন স্ত্রী থেকে বর্ণিত। নাবী [সাঃআঃ] যিলহজ্জ মাসের নবম তারিখ এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করিতেন-সোমবার [দুই-সোমবার] এবং বৃহস্পতিবার।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২৪১৯. উন্মে সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করার নির্দেশ দিতেন। মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার, তারপরে পরবর্তী সোমবার এবং তার পরবর্তী সোমবার।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ শায
২৪২০. জারীর ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা সারা জীবন সাওম [রোজা] পালন করার সমতুল্য। আর আইয়ামে বীয -তের তারিখের সকাল থেকে চোদ্দ এবং পনের তারিখ পর্যন্ত।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
১৯.পরিচ্ছেদঃ মাসে তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করা প্রসঙ্গে মূসা ইবনি তালহা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনা পার্থক্য
২৪২১. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছে একজন বেদুঈন একটি ভুনা খরগোশ নিয়ে আসল এবং তা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সামনে রাখল। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তা খাওয়া থেকে বিরত রইলেন কিন্তু উপস্থিত সাহাবীগণকে তা খেতে বলিলেন। বেদুঈন ব্যক্তিও বিরত রইল। তখন নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তুমি কেন খাওয়া থেকে বিরত রইলে। সে বলিল, আমি মাসের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি সাওম [রোজা] পালনই কর তবে আলোময় দিনের সাওমই [রোজাই] পালন কর [আইয়ামে বীযের সওম পালন কর]।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৪২২. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে প্রত্যেক মাসের আইয়ামে বীযের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন- তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৪২৩. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাদেরকে প্রত্যেক মাসে আইয়ামে বীযের তিন দিন সাওম [রোজা] পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থাৎ তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৪২৪. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে বলেছেনঃ তুমি যখন মাসের কোন সাওম [রোজা] পালন করিবে তখন তের তারিখ, চৌদ্ধ এবং পনের তারিখের সাওম [রোজা] পালন করিবে।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদীস
২৪২৫. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে বলেছিলেনঃ তোমার উপর তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের সাওম [রোজা] পালন করা উচিত।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান লিগাইরিহি
২৪২৬. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের সাওম [রোজা] পালন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান লিগাইরিহি
২৪২৭. ইবনিল হাওতাকিয়্যা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছে এক বেদুঈন ব্যক্তি আসল, তার সাথে একটি ভুনা খরগোশ এবং কিছু রুটি ছিল। সে তা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে রাখল এবং বলিল যে, আমি তাকে রক্তস্রাব অবস্থায় পেয়েছি। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] স্বীয় সাহাবীগণকে বললেনঃ এটা ক্ষতিকর নয়, অতএব তোমরা খাও এবং বেদুঈন ব্যক্তিটিকে বলিলেন, তুমিও খাও। সে বলিল, আমি সাওম [রোজা] পালন করছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করলেনঃ এটা কিসের সাওম [রোজা]? সে বলিল, মাসের তিন দিনের সাওম [রোজা]। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ যদি তুমি সাওম [রোজা] পালন করই তবে উজ্জ্বল আলোময় দিনগুলোয় সাওম [রোজা] পালন কর অর্থাৎ তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৪২৮. মূসা ইব্ন তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে একটি খরগোশ নিয়ে আসল। নাবী [সাঃআঃ] তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন। তখন বাহক বলিল যে, আমি এর সাথে রক্ত দেখেছি তারপর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] নিজ হাত গুটিয়ে নিলেন এবং সাহাবীদের নির্দেশ দিলেন যে, তোমর খাও, উপস্থিত সাহাবীদের মধ্যে একজন পাশে বসা ছিল। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন তোমার কি হল? সে বলিল যে, আমি সাওম [রোজা] পালন করছি। নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তুমি আইয়ামে বীযের তিন দিনের সাওম [রোজা] কখনো পরিত্যাগ করিবে না অর্থাৎ তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের সাওম [রোজা]।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৪২৯. মূসা ইবনি তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এক ব্যক্তি একটি ভুনা খরগোশ রেখে বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি এর সাথে রক্ত দেখেছি। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিরত রইলেন এবং খেলেন না, কিন্তু তাহাঁর সামনে যাঁরা ছিলেন তাঁদেরকে বলিলেন, তোমরা খাও। কেননা আমার আগ্রহ থাকলে আমিও খেতাম। আর এক ব্যক্তি পাশে বসে ছিল। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, এসো এদের সাথে খাও। সে বলিল, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ [সাঃআঃ]! আমি সাওম [রোজা] পালন করছি। তখন তিনি বলিলেন, তুমি আইয়ামে বীযের সাওম [রোজা] কেন পালন করলে না? সে বলিল, আইয়ামে বীয কি? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখ।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৪৩০. আব্দুল মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আইয়ামে বীযের এই তিন দিন সওম পালন করার নির্দেশ দিতেন এবং বলিতেন যে, এই তিন দিনের সাওম [রোজা] সারা মাসের সাওম [রোজা] পালন করার সমতুল্য।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৪৩১. আব্দুল মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তাঁদেরকে আইয়ামে বীযের তিন দিনের সাওম [রোজা] পালন করার নির্দেশ দিতেন এবং বলিতেন যে, এই তিন দিনের সাওম [রোজা] সারা মাস সাওম [রোজা] পালন করার সমতুল্য।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২৪৩২. আব্দুল মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে আলোকোজ্জ্বল রাত বিশিষ্ট আইয়ামের বীযের তিন দিনের সাওম [রোজা] পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন তের, চৌদ্দ এবং পনের তারিখের।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস
২০.পরিচ্ছেদঃ প্রতি মাসে দুই দিন সাওম [রোজা] পালন করা
২৪৩৩. আৰু আকরাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে একবার [নফল] সাওম [রোজা] সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলিলেন, তুমি প্রতি মাসে এক দিন সওম পালন কর। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আরো বাড়িয়ে দিন। আরো বাড়িয়ে দিন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি বলছ, আরো বাড়িয়ে দিন, আরো বাড়িয়ে দিন ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহলে প্রতি মাসে দুদিন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আর একটু বাড়িয়ে দিন, আর একটু বাড়িয়ে দিন, আমি এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বলিলেন, “আর একটু বাড়িয়ে দিন, আর একটু বাড়িয়ে দিন, আমি এর চেয়েও অধিক সওম পালন করার সামর্থ্য রাখি।” একথা বলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] চুপ হয়ে গেলেন। আমি ধারণা করলাম যে, তিনি নিশ্চয়ই আমার আবেদনে সাড়া দিবেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি প্রত্যেক মাসে তিনদিন সওম পালন কর।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪৩৪. আবু আকরাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-কে সাওম [রোজা] সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনি বলিলেন, তুমি প্রত্যেক মাসে একদিন সওম পালন কর। তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে আরো সময় বাড়ানোর আবেদন করে বলিলেন, আপনার উপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালনের সামর্থ্য রাখি। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে সময় আরো বাড়িয়ে দিলেন। তিনি বলিলেন, তুমি প্রতি মাসে দুদিন সাওম [রোজা] পালন কর। তখন তিনি বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আপনার উপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে সময় আরো বাড়িয়ে দিলেন। তিনি বলিলেন, তুমি প্রতি মাসে দুদিন সাওম [রোজা] পালন কর। তখন তিনি বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার উপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। “আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, “আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি।” “আমি তো এর চেয়েও অধিক সাওম [রোজা] পালন করার সামর্থ্য রাখি।” রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার জন্য বাড়াতেই রাজী ছিলেন না। যখন তিনি রাসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর কাছে বারবার মিনতি করছিলেন তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সওম পালন কর।
রোজার ফজিলত ও বর্ণনা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply