তালবীনা তরল খাবার
তালবীনা তরল খাবার
হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৬৮৯ঃ আয়িশাহ (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি রোগীকে এবং কারো মৃত্যুজনিত শোকাহত ব্যক্তিকে তরল জাতীয় খাদ্য খাওয়ানোর আদেশ করিতেন। তিনি বলিতেনঃ আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তালবীনা’ রোগীর কলিজা মযবূত করে এবং নানাবিধ দুশ্চিন্তা দূর করে।
(আধুনিক প্রঃ- ৫২৭৮, ইঃ ফাঃ- ৫১৭৪) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৬৯০ঃ আয়িশাহ (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি তালবীনা খেতে আদেশ দিতেন এবং বলিতেনঃ এটি হল অপছন্দনীয়, তবে উপকারী।
(আধুনিক প্রঃ- ৫২৭৯, ইঃ ফাঃ- ৫১৭৫) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৭১২ঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও আয়িশা (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণনাকারী বলেন, আয়িশা (রাঃ) আরো বলেন, নবী (সাঃআঃ) -এর অসুখের সময় আমরা তাহাঁর মুখে ঔষধ ঢেলে দিলাম। তখন তিনি আমাকে ইঙ্গিত দিতে থাকলেন যে, তোমরা আমার মুখে ঔষধ ঢেল না। আমরা মনে করলাম, এটা ঔষধের প্রতি একজন রোগীর স্বভাবজাত অনীহা মাত্র। এরপর তিনি যখন সুস্থবোধ করিলেন তখন বললেনঃ আমি কি তোমাদের আমার মুখে ঔষধ ঢেলে দিতে নিষেধ করিনি? আমরা বললামঃ আমরাতো ঔষধের প্রতি রোগীর স্বভাবজাত অনীহা ভেবেছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমি এখন যাদেরকে এ ঘরে দেখিতে পাচ্ছি তাহাদের সবার মুখে ওষুধ ঢালা হইবে। আব্বাস (রাঃ) ছাড়া কেউ বাদ যাবে না। কেননা, তিনি তোমাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন না।
(আধুনিক প্রঃ- ৫২৯৪, ইঃ ফাঃ- ৫১৯০))
হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৭৮২ঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারও কোন খাবার পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তাকে পুরোপুরি ডুবিয়ে দিবে, তারপর ফেলে দিবে। কারণ, তার এক ডানায় থাকে আরোগ্য, আরেক ডানায় থাকে রোগ।
(আধুনিক প্রঃ- ৫৩৫৭, ইঃ ফাঃ- ৫২৫৩)
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি -২০৪০ঃ উকবা ইবনু আমির (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের রোগীদেরকে জোরপূর্বক পানাহারে বাধ্য করো না। কেননা, প্রাচুর্যময় আল্লাহ তাআলা তাহাদেরকে পানাহার করান।
সহীহ, ইবনু মাজাহ (৩৪৪৪)। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব । আমরা এ হাদিসটি শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই পেয়েছি । তাহকিক আলবানি । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ ইবনু মাজাহ -৩৪৪০ ঃ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখিতে গেলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কি কিছুর প্রতি লোভ জাগে? সে বললো, আমি গমের রুটি খেতে চাই। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যার গমের রুটি আছে সে যেন তার ভাইকে তা পাঠিয়ে দেয়। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কোন রোগী কিছু খেতে চাইলে সে যেন তাকে তা খাওয়ায়।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল। ৩৪৪০. হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক আলবানি । হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিসঃ সুনান ইবনু মাজাহ -৩৪৪১ঃ আনাস বিন মালিক (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক রোগীকে দেখিতে গিয়ে তার নিকট উপস্থিত হলে বলেনঃ তুমি কি কিছু (খেতে) চাও? সে বললো, আমি পিঠা খেতে চাই। তিনি বলেনঃ আচ্ছা। তারা তার জন্য সেটা তালাশ করে জোগাড় করলো।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল। ৩৪৪১) হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিসঃ ইবনু মাজাহ -৩৪৪৪ঃ উকবাহ বিন আমির আল-জুহানী (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের রোগীকে পানাহার করিতে পীড়াপীড়ি করিবে না। কেননা আল্লাহ তাহাদের পানাহার করান।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। (৩৪৪৪) তিরমিযী ২০৪০, সহীহাহ ৭২৭, মিশকাত ৪৫৩৩। উক্ত হাদিসের রাবী-
১. বাকর বিন ইউনুস বিন বুকায়র সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম যাহাবী তাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং- ৭৫৯, ৪/২৩২ নং পৃষ্ঠা)।
২. মূসা বিন আলী বিন রাবাহ সম্পর্কে আবু হাতিম আর রাযী বলেন, তিনি একজন সালিহ ব্যক্তি ছিলেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান তার সিকাহ গ্রন্থে তার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইবনু আবদুল বার্র আল-আন্দালসী বলেন, তিনি এককভাবে হাদিস বর্ণনা করলে সেক্ষেত্রে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইমাম বুখারী বলেন, তিনি সিকাহ। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং- ৬২৮৪, ২৯/১২২ নং পৃষ্ঠা)। হাদিস এর মানঃ হাসান হাদিস
হাদিসঃ ইবনু মাজাহ -৩৪৪৫ঃ আয়েশা (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিবারের লোকেদের জ্বর হলে, তিনি দুধ ও ময়দা সহযোগে তরল পথ্য তৈরি করার নির্দেশ দিতেন। আয়েশা (রাদিআল্লাহু আঃ) বলেন, তিনি বলিতেনঃ এটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে শক্তি যোগায় এবং রোগীর মনের ক্লেশ ও দুঃখ দূর করে, যেমন তোমাদের কোন নারী পানি দ্বারা তার চেহারার ময়লা দূর করে।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল। (৩৪৪৫) সহীহুল বুখারী ৫৪১৭, মুসলিম ২২১৬, তিরমিযী ২০৩৯, আহমাদ ২৩৯৯১, ২৪৬৯৩, ২৫৫১৯, মিশকাত ৪২৩৪। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিসঃ ইবনু মাজাহ -৩৪৪৬ঃ আয়েশা (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অপ্রিয় কিন্তু উপকারী বস্তুটি তোমরা অবশ্যই গ্রহণ করিবে। তা হলো তালবীনা অর্থাৎ হাসা (দুধ ও ময়দা সহযোগে প্রস্তুত তরল পথ্য)। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসা-এর পাতিল চুলার উপর থাকতো, যতক্ষণ না রোগী সুস্থ হতো অথবা মারা যেত।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সানাদটি দুর্বল। (৩৪৪৬) সহীহুল বুখারী ৫৪১৭, মুসলিম ২২১৬, তিরমিযী ২০৩৯, আহমাদ ২৩৯৯১, ২৪৬৯৩, ২৫৫১৯, মিশকাত ৪২৩৪। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
আদাবুল মুফরাদ – ৫১৫ঃ ইবরাহীম ইবনি আবু ইবলা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমার স্ত্রী রোগাক্রান্ত হলে আমি উম্মু দারদা [রাঃআঃ]-এর নিকট যাতায়াত করতাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করিতেন, তোমার স্ত্রী কেমন আছে? আমি তাকে বলতাম, অসুস্থ। তিনি আমার জন্য খাবার নিয়ে ডাকতেন। আমি আহার করে ফিরে আসতাম। একবার আমি তার বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, [রুগ্নার] অবস্থা কি? আমি বললাম, অনেকটা সুস্থ। তিনি বলেন, তুমি যদি বলিতে তোমার স্ত্রী অসুস্থ, তাহলে আমি তোমার জন্য খাবার আনাতাম। এখন যেহেতু সে সুস্থ, তাই তোমার জন্য আর কিছু আনাচ্ছি না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
তরল পথ্য
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৩৯ঃ আহমাদ ইবনু মানিয়্যি — ইসমাইল ইবনি ইব্রাহীম — মুহাম্মাদ ইবনু সায়িব ইবনু বারাকাহ — উম্মিহি — আইশা (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারের লোকদের জ্বর হলে তিনি দুধ ও ময়দা সহযোগে তরল পথ্য বানানোর নির্দেশ দিতেন। তা বানানো হলে তিনি পরিবারে লোকদের নির্দেশ দিতেন এটা হইতে রোগীকে পান করাতে। তিনি বলিতেনঃ এটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে শক্তি যোগায় এবং রোগীর মনের ক্লেশ ও দুঃখ দূর করে। যেমন তোমাদের কোন মহিলা পানি দ্বারা তার মুখমন্ডলের ময়লা পরিষ্কার করে থাকে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৪৪৫) আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি হাসান সহীহ। এ হাদিসটি ইবনুল মুবারাক-ইউনুস হইতে তিনি যুহরী হইতে তিনি উরওয়া হইতে তিনি আইশা (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতে তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
================
=====================
হাদিসঃ ইবনে মাজাহ -৩৫৪৮ঃ উসমান বিন আবুল আস (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তায়েফের প্রশাসক নিযুক্ত করিলেন। (তথায়) সলাতের মধ্যে আমার সামনে কিছু বাধা আসতে লাগলো। ফলে আমার মনে থাকতো না যে, আমি কত রাকআত নামায পড়েছি। আমার এই অবস্থা লক্ষ্য করে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সাক্ষাত করার জন্য রওয়ানা হলাম। তিনি (আমাকে দেখে) বলেনঃ আবুল আসের পুত্র নাকি? আমি বললাম, হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তুমি কেন এসেছ? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সলাতের মধ্যে আমার সামনে কিছু বাধা আসে। ফলে আমি বলিতে পারি না যে আমি কত রাকআত পড়েছি। ত্তিনি বলেনঃ এটা শয়তান। আমার নিকট এসো। আমি তাহাঁর নিকটে হাঁটু গেড়ে বসলাম। রাবী বলেন, তিনি নিজ হাতে আমার বুকে মৃদু আঘাত করিলেন এবং আমার মুখে লালা দিয়ে তিনবার বলেনঃ আল্লাহর শত্রু! ভেগে যা। অতঃপর তিনি বলেনঃ যাও নিজের কাজে যোগ দাও। উসমান (রাদিআল্লাহু আঃ) বলেন, আমার জীবনের শপথ! এরপর থেকে শয়তান আমার অন্তরে আর তালগোল পাকাতে পারেনি।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply